৪ মার্চ থেকে ৪ জানুয়ারি- এই সময়টা গাজীপুরের ভাওয়াল মাদকাসক্ত পুনর্বাসন কেন্দ্রে ছিলেন অভিনেতা অনিক রহমান অভি।
অভিনেতার দাবি, তিনি কখনই মাদকাসক্ত ছিলেন না, তাকে জোর করেই সেখানে রাখা হয়েছিল।
৪ জানুয়ারি গাজীপুরে ভাওয়াল মাদকাসক্ত পুনর্বাসন কেন্দ্রে র্যাব-১-এর অভিযানে উদ্ধার হন অভি এবং সেখানকার কাগজপত্র পর্যবেক্ষণ করে অভিকে মাদকাসক্ত নন বলেই ছাড়িয়ে আনা হয়েছে।
অভিযানের পর সংবাদ সম্মেলনে বাহিনীটির আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক খন্দকার আল মঈন জানান, মাদক নিরাময় অধিদপ্তরের দেয়া নিয়ম এখানে মানা হচ্ছিল না। অভিযানের সময় সেখান থেকে ৪২০ পিস ইয়াবা উদ্ধার করা হয়।
তিনি বলেন, ‘যারা এখানে চিকিৎসা নিতে এসেছেন তাদের শারীরিক, মানসিক নির্যাতন এবং যৌন হয়রানি, ঝুলিয়ে নির্যাতনের অভিযোগ পাওয়া গেছে এবং তার প্রমাণ মিলেছে।’
অভিনেতা অভির দাবি, নেশায় আসক্ত হবেন দূরের কথা, তিনি চা পান করেন না, ধূমপানও করেন না।
তাহলে তিনি কেন মাদকাসক্ত পুনর্বাসন কেন্দ্রে? কী হয়েছে তার সঙ্গে? এসব বিষয় নিয়ে নিউজবাংলার সঙ্গে কথা বলেছেন অভি।
অভি বলেন, ‘করোনার সময় আমি খুব হতাশ হয়ে যাই। আমার তিনটি রেস্টুরেন্ট ছিল, সবগুলোতেই আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হই আমি। তখন থেকে ঘুমের ওষুধ খাওয়া শুরু করি। অনেক করে খেতাম তা না, দু-তিনটা করে খেতাম এবং তা স্থানীয় এক চিকিৎসকের পরামর্শে।’
সম্যাটা শুরু তখন থেকেই। কারণ ব্যবসায় লস এবং ঘুমের ওষুধ খাওয়ার জন্য অভির কিছু সমস্যা সবার চোখে পড়ে।
অভির বাসা রাজধানী লাগোয়া জনপদ টঙ্গী, যেটি প্রশাসনিক সীমানা অনুযায়ী গাজীপুর জেলায়। সেখানে তার মা, স্ত্রী, তিন বছরের মেয়ে এবং ছোট ভাই থাকেন। বাবা পুলিশ বাহিনীতে ছিলেন, এখন থাকেন যুক্তরাষ্ট্রে।
পরিবারের সদস্যরা নোটিশ করেন যে, অভির আচরণ খিটখিটে হয়ে গেছে, ওজন কমে যাচ্ছে। এসব দেখে তাদের নানা কিছুই মনে হতো, কিন্তু কিছু বলতেন না।
অভি বলেন, ‘আমার একটি সিনেমার প্রযোজক ছিলেন গাজীপুরের। তার মাধ্যমে শিপন নামে একজনের সঙ্গে আমার পরিচয় হয়। শিপন হলেন সেই মাদকাসক্ত পুনর্বাসন কেন্দ্রের প্রধান ফিরোজা নাজনীন বাঁধনের তথাকথিত স্বামী।
‘শিপনের আমাদের বাসায় যাতায়াত ছিল। সেই প্রথমে আমার মাকে বলে যে, আমাকে নেশাগ্রস্তের মতো মনে হচ্ছে। আমার কিছু টেস্ট করা প্রয়োজন।
‘সরাসরি আমাকে বললে হয়তো আমি অন্যভাবে নিতে পারি, তাই আমার মায়ের সঙ্গে কথা বলে আমাকে ঘুরতে নিয়ে যাওয়ার কথা বলে আমাকে নিয়ে যায় গাজীপুরে।’
সেখানে নিয়ে যাওয়ার পর ঘটতে থাকে একের পর এক ঘটনা, যা কখনই অভি কল্পনা করতে পারেনি।
অভির পরীক্ষা করা হয় এবং তাকে মাদকাসক্ত প্রমাণ করে তার বাড়িতে ৩ লাখ টাকা চাওয়া হয়। অভির পরিবার সেটা দেয়। অভিকে চিকিৎসা করে ভালো করা হবে, ভালো করে রাখা হবে- এমন কথা বলে প্রতি মাসে আরও ৪০ হাজার টাকা করে নেয়া হতো।
প্রথম দিকে পরিবারকে বলা হয়, তিন মাসের জন্য অভিকে থাকতে হবে সেখানে।
মাদকাসক্ত পুনর্বাসন কেন্দ্রে অভিকে বলা হয়, পরীক্ষা-নিরীক্ষায় ঘুমের ওষুধের ব্যবহার পাওয়া গেছে। এটা ঠিক করতে তিন মাস লাগবে। এরপর অভিকে এক কথা আর তার পরিবারকে বলা হতো আরেক কথা।
অভি বলেন, ‘আমাকে বলা হতো আমার বাবা-মা নাকি আমাকে দেখতে চায় না, এ কথা বলা হতো আমাকে। আর আমার বাসায় বলা হতো, আমার অবস্থা খুব খারাপ, আমি বাসায় গেলে আর আসতে চাইব না। তাই তাদের আমার সঙ্গে দেখা করতে দেয়া হতো না।’
অভির ভাষ্যে, তিনি মাদকাসক্ত পুনর্বাসন কেন্দ্রে গিয়ে ভয় পেয়ে যান। একটা কক্ষে ২৫ থেকে ৩০ জন রাখা হতো সেখানে, খাট নয়, মেঝেতে। কনডেন্স মিল্কের কৌটায় যতটুকু চাল ধরে, ততটুকু চাল ব্যবহার করা হতো তিনজন মানুষের জন্য।
তিন বেলা খাবার দেয়া হতো সেখানে। কিন্তু যা দিত, তা দিয়ে পুষ্টি পূরণ হয় না।
সকাল ৭টায় দিত চাল, হুলুদ রং এবং লবণ দিয়ে তৈরি খাবার, যাকে নাম দেয়া হয় খিচুড়ি। বেলা দেড়টার দিকে দেয়া হতো আলু আর ডিমের একটা খাবার। রাত সাড়ে ৮টায় দিত ডাল, আলু ভর্তা।
প্রথম কয়েক দিন ভালোই খাবার দিচ্ছিল মাদকাসক্ত পুনর্বাসন কেন্দ্রে। এরপর আরেকটি পরীক্ষা করা হয় অভির। আর সেই টেস্টের পর অভিকে বলা হয় তার মানসিক সমস্যা। এটা তিনি নিজে বুঝতে পারছেন না।
এ কথা শুনে অভি তার পরিবারের সঙ্গে কথা বলতে চাইলেও ভুল তথ্য দিয়ে অভি এবং তার পরিবারের মধ্যে দূরত্ব তৈরি করার চেষ্টা করা হতো।
এভাবে আড়াই মাস কাটে অভির। এর মধ্যে তিনি জেনে যান যে সেখানে মাদকের ব্যবসা হয় এবং কেন্দ্রের মালিক এর সঙ্গে জড়িত।
অভি বলেন, ‘ওখানে পুরোনো তাদের অনেকে কাছে জানতে পারি, কেন্দ্রের যে নারী মালিক রয়েছেন তিনি নাকি ছেলেদের অ্যাবিউজ করেন। যারা একটু সুস্থ, তাদের সঙ্গে এ কাজটি করা হতো।
‘আড়াই মাস পর আমার সঙ্গেও এমন একটা ঘটনা ঘটে। সেই নারী আমাকে তার বাসার নিচতলায় যেখানে তিনি থাকেন সেখানে নিয়ে যান।
‘আমি তখন ভয় পাচ্ছি, কারণ সেখানে আমি অনেককে উল্টো করে ঝুলিয়ে মারতে দেখেছি। সেখানে মারা হতো গামছা ভিজিয়ে। একটি মুখে গুঁজে দেয়া হতো, আরেকটি দিয়ে মারা হতো। এতে করে শরীর কাটত না কিন্তু ব্যথাটা রয়ে যেত। আমাকে উল্টো করে মারেনি কিন্তু তিনি আমাকে অ্যাবিউজ করা হয় সে সময়। এ ঘটনা আমার সঙ্গে একবারই হয়েছে।’
বেশ কয়েকজনের সঙ্গে এই ধরনের আচরণ করা হয়েছে, তার সাক্ষী তিনি নিজে।
আড়াই থেকে-তিন মাস পূর্ণ হওয়ার মধ্যে অভিকে নিয়ে যাওয়া হয় খিলক্ষেতে। সেখানে জাকারিয়া নামে এক চিকিৎসককে দেখান হয় তাকে। সেই চিকিৎসক তাকে ছেড়ে দিতে বলেন এবং কিছু ওষুধ দিয়ে তাকে ছেড়ে দেয়ার কথা প্রেসক্রিপশনে লিখে দেন।
তিন মাস পর যখন নিরাময় কেন্দ্র থেকে বাসায় ফেরার কথা, সে সময় অভির পরিবারকে বলা হয়, অভি প্রচণ্ড রেগে আছেন এবং তার মানসিক অবস্থাও ভালো না। তিনি যেকোনো সময় খুন করে ফেলতে পারেন এবং মানসিক চিকিৎসক বলেছেন আরও তিন মাস সেখানে থাকতে হবে।
অভি বলেন, ‘এসব কথা শুনে মা তো কান্নাকাটি। সে আমার জন্য অনেক কিছু পাঠাত, কিন্তু আমি কিছুই পেতাম না। শুক্রবার আমাদের ৫০ গ্রাম করে মুরগির মাংস খাওয়ানো হতো। ওই দিন ফ্যামিলির মানুষরা দেখা করতে পারেন। এ জন্য কেন্দ্রে সেটা ঈদের দিন। কিন্তু আমার মানসিক অবস্থা তো ভালো হচ্ছে না, আমি ওদের অনেক বিরক্ত করা শুরু করি। আর সে জন্য তারা সিদ্ধান্ত নেয় তারা আমাকে ইনজেকশন দেবে।’
ইনজেকশনটা দিলে রোগীর সেন্স কাজ করত না। মুখ থেকে লালা পড়ছে, হাত-পা কাঁপছে, কতটুকু খাচ্ছে-কতটুকু ফেলে দিচ্ছে তার কিছুই বুঝতেন না রোগী। চোখ খুলে তাকাতেও পারতেন না।
এমন তিনটি ইনজেকশন দেয়া হয়েছিল অভিকে। আর ইনজেকশন দিয়ে পরিবারকে দেখা করতে বলা হতো অভির সঙ্গে। তারাও দেখে মনে করত আসলেই অভির অবস্থা খুব খারাপ। এমন সমস্যার কারণে আমেরিকা থেকে অভির বাবাও দেশে চলে আসেন ছেলেকে দেখতে। কিন্তু তিনিও বুঝতে না পেরে ছেলেকে রেখে যান সেখানে।
চতুর্থ ইনজেকশনটা আর নিতে পারব না বলেই অনেক চেষ্টা করে বের হওয়ার উপায় খুঁজে বের করেন অভি।
অভি বলেন, ‘রোগীদের মধ্যে যাদের আর্থিক অবস্থা ভালো না, তাদের কেন্দ্র ছেড়ে দেয়। কারণ তাদের রেখে লাভ নাই। তো যারা ছাড়া পায় তারা আবার মাঝে মাঝে কেন্দ্রে ঘুরতে আসে। তেমন একজনকে আমি খুব অনুরোধ করলাম তার মোবাইল দেয়ার জন্য এবং সে মোবাইলটা দেয়।
‘প্রথম আমি বিডি ফিল্ম বাজ নামের ফেসবুক পেজে গিয়ে সেলিম সাকিবের নম্বরে ফোন করি এবং অভিনেতা জয় চৌধুরীর নাম্বার চাই। কারণ জয়ের সঙ্গে আমার খুব ভালো সম্পর্ক। জয়ের সঙ্গে কথা বলে আমি জায়েদ খানকে ফোন করি।
“জায়েদ ভাই সব শুনে বললেন, ‘তুই টেনশন করিস না আমি আছি।’ তখন মনে হলো, আমি আলো দেখতে পারব। অনেক কষ্ট করে বাথরুমে, কিচেনে গিয়ে কথা বলতাম। কারণ ফোন ধরার কোনো সুযোগ ছিল না। সিসি ক্যামেরা ছিল।”
ভোর সাড়ে ৫টার দিকে র্যাবের একটি টিম কেন্দ্রে আসে। সবাই ছিল নিচে। অভিকে ডেকে আনা হয় দোতলা থেকে।
সেই সময়ের কথা বলতে গিয়ে অভি বলেন, ‘আমি কী করব বুঝতে পারছিলাম না। ওদের ধরে আমি কিছুক্ষণ কাঁদলাম। মনে হচ্ছিল আমার নতুন জন্ম হচ্ছে। একে একে তারা সব কাগজ চেক করল। তারপর সেখান থেকে আমাকে নেয়া হলো র্যাব হেডকোয়ার্টারে। সেখানে রাতে ছিলাম।’
কেন্দ্রের সঙ্গে সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে মামলাও করেছেন অভি। আপাতত টঙ্গী থাকছেন না তিনি। নতুন জীবন ফিরে পাওয়ার পর কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন র্যাব ও চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির প্রতি। নতুন জীবনে আর হতাশা নয়, নতুন করে সাজাতে চান আগামী।
মুক্তির আগ থেকেই তুমুল আলোচনায় ছিল ভারতের দক্ষিণের কন্নড় সিনেমা কেজিএফ চ্যাপ্টার টু।
যেমনটি আলোচনায় ছিল, বাস্তবেও ঠিক তেমনই ঘটছে। গত ১৪ এপ্রিল মুক্তির পর থেকেই বক্স অফিসে দাপিয়ে বেড়াচ্ছে কেজিএফ টু।
ইতোমধ্যে হিন্দি ভার্সনে রেকর্ড গড়েছে সিনেমাটি। ৭ দিনে ২৫৫ কোটি রুপি আয় করেছে। যা বাহুবলি টুর রেকর্ডও ভেঙেছে।
হিন্দি ছাড়াও সিনেমাটি কন্নড়, তেলেগু, তামিল ও মালায়ালাম ভাষায় মুক্তি পেয়েছে। সব মিলিয়ে প্রথম সপ্তাহের শেষে সিনেমাটি বিশ্বব্যাপী ৭০০ কোটি রুপির বেশি ব্যবসা করেছে।
ভারতীয় চলচ্চিত্র বাণিজ্য বিশ্লেষক মনোবালা বিজয়বালান বৃহস্পতিবার দুপুরে এক টুইটে এ তথ্য জানিয়েছেন।
#KGFChapter2 ZOOMS past ₹700 cr milestone mark.
— Manobala Vijayabalan (@ManobalaV) April 21, 2022
২০১৮ সালের শেষের দিকে মুক্তি পায় প্রশান্ত নীল পরিচালিত এই ফ্র্যাঞ্চাইজির প্রথম সিনেমা কেজিএফ চ্যাপ্টার ওয়ান।
মুক্তির পর শুধু ভারতে নয়, বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে থাকা ভারতীয় সিনেমাপ্রেমীদের মধ্যে ব্যাপক সাড়া ফেলেছিল এটি। বক্স অফিসে গড়েছিল ইতিহাস।
গ্যাংস্টারদের নিয়ে গল্পের এই সিনেমায় দুর্দান্ত মারকুটে অভিনয় দিয়ে পুরো ভারত মাতিয়েছিলেন কন্নড় সুপারস্টার যশ। শুধু তা-ই নয়, এই সিনেমা দিয়ে দেশের বাইরেও লাখো ভক্ত-অনুরাগী জুটিয়েছেন এই অভিনেতা।
যশ বাদেও কেজিএফ চ্যাপ্টার টু-তে আরেক মুখ্য ভূমিকায় রয়েছেন বলিউড অভিনেতা সঞ্জয় দত্তকে। এ ছাড়া এতে গুরুত্বপূর্ণ সব চরিত্রে অভিনয় করেছেন রাবিনা ট্যান্ডন, প্রকাশ রাজ, শ্রীনিধি শেট্টির মতো তারকারা।
আরও পড়ুন:করোনাভাইরাস সংক্রমণের কারণে স্থগিত থাকা ২৭তম কলকাতা আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসব শুরু হচ্ছে আগামী ২৫ এপ্রিল নজরুল মঞ্চে। উৎসব চলবে ১ মে পর্যন্ত।
অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করবেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন বলিউড অভিনেতা ও আসানসোল লোকসভা উপনির্বাচনে বিজয়ী তৃণমূল এমপি শত্রুঘ্ন সিনহা।
আরও উপস্থিত থাকবেন অভিনেতা রঞ্জিত মল্লিক, প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায়সহ অনেকে।
উৎসব কমিটির চেয়ারম্যান পরিচালক রাজ চক্রবর্তী বলেন, ‘করোনার বিধিনিষেধ শিথিল হলেও আমাদের সাবধানে থাকতে হবে। সাবধানতার কথা বিবেচনা করেই এবার বাইরের কাউকে আমন্ত্রণ জানানো হয়নি।’
কিংবদন্তি পরিচালক সত্যজিৎ রায়ের জন্মশতবর্ষের শ্রদ্ধায় উৎসবের উদ্বোধনী ফিল্ম হিসেবে একই সঙ্গে নজরুল মঞ্চ ও রবীন্দ্র সদনে দেখানো হবে সত্যজিৎ রায় পরিচালিত অরণ্যের দিনরাত্রি।
পরিচালক অরিন্দম শীল সাংবাদিক সম্মেলনে বলেন, ‘সত্যজিৎ রায়ের জন্মশতবর্ষ উপলক্ষে সত্যজিতের সঙ্গে কাজ করা জীবিত শিল্পী ও কলাকুশলীদের এবার সংবর্ধনা দেয়া হবে।
এবার সত্যজিৎ রায় স্মারক বক্তব্য দেবেন পরিচালক সুজিত সরকার। সত্যজিতের জীবন ও কাজের ওপর প্রদর্শনীও থাকছে উৎসবে।
চলচ্চিত্র উৎসবের থিম ‘কান্ট্রি ফিনল্যান্ড’। কলকাতা শহরের ১০ হলে ৪০ দেশের ১৬৩টি সিনেমা দেখানো হবে এবারের উৎসবে।
২৭তম কলকাতা চলচ্চিত্র উৎসবে আটটি বিলুপ্তপ্রায় ভাষার সিনেমা দেখানো হবে। ভাষাগুলো হলো বোরো, টুলু, রাজবংশী, সান্তাড়, ও কোঙ্কনী ও কুড়ুম্বা।
চিদানন্দ দাশগুপ্ত, বুদ্ধদেব দাশগুপ্ত, দিলীপ কুমার, স্বাতীলেখা সেনগুপ্ত ও নিকোলাস জাঙ্কসোকে নিয়ে প্রদর্শনীর ব্যবস্থা থাকছে।
শিশির মঞ্চে তথ্য ও সংস্কৃতি দপ্তরে কলকাতা চলচ্চিত্র উৎসবের প্রস্তুতি নিয়ে সাংবাদিক সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন সংস্কৃতি দপ্তরের সচিব শান্তনু বসু, মন্ত্রী বিরবাহা হাঁসদা, উৎসব কমিটির চেয়ারম্যান রাজ চক্রবর্তী, পরিচালক গৌতম ঘোষ, পরিচালক অরিন্দম শীল, হরনাথ চক্রবর্তী, অভিনেত্রী জুন মালিয়া।
চলতি বছরের শুরুর দিকে বলিউড অভিনেত্রী প্রিয়াঙ্কা চোপড়া জানান যে, তার এবং নিক জোনাসের জীবনে সন্তান এসেছে। সারোগেসির মাধ্যমে তারা মা-বাবা হয়েছেন। তবে ছেলে না মেয়ে সন্তান তা জানাননি তিনি।
সেসময় বিভিন্ন সূত্রের বরাত দিয়ে ভারতীয় একাধিক সংবাদমাধ্যম জানায়, কন্যা সন্তানের মা-বাবা হয়েছেন তারকা দম্পতি।
কিন্তু কখনো সন্তানের নাম কিংবা ছবি, কোনোটাই প্রকাশ্যে আনেননি অভিনেত্রী।
তবে দেশটির একাধিক সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে, প্রিয়াঙ্কা-নিক তাদের মেয়ের নাম কী রেখেছেন তা এবার প্রকাশ্যে। তারকা দম্পতি কন্যার নাম রেখেছেন মালতী মারি চোপড়া জোনাস।
জন্ম সনদও নাকি হাতে পেয়েছে হলিউড কেন্দ্রিক একটি সংবাদ সংস্থা। সেই সূত্রেই জানা গেছে এই নাম।
সংস্কৃত এবং ল্যাটিন দুই শব্দ মিশিয়ে মেয়ের নাম রেখেছেন প্রিয়াঙ্কা-নিক। সংস্কৃতে ‘মালতী’ শব্দের অর্থ হল একরকম সুগন্ধযুক্ত ছোট সাদা ফুল অথবা চাঁদের আলো।
অন্যদিকে ‘মারি’ শব্দের অর্থ সমুদ্রকে রক্ষা করে যে নারী। মূলত মাতা মেরিকে অনেক সময় এই আখ্যা দেয়া হয়। যিশুর মাতা মেরিকে ফ্রাঞ্চে ‘মারি’ বলা হয়।
যদিও আনুষ্ঠানিকভাবে এখনও মেয়ের নাম বা ছবি কোনোটাই প্রকাশ্যে আনেননি তারকা জুটি।
যুক্তরাষ্ট্রের সান দিয়াগো শহরের এক হাসপাতালে গত ১৫ জানুয়ারি জন্ম হয়েছে নিক-প্রিয়াঙ্কার মেয়ের।
এরপর ২২ জানুয়ারি ইনস্টাগ্রামে এক পোস্টে সারোগেসির মাধ্যমে সন্তান হওয়ার কথা প্রকাশ্যে আনেন প্রিয়াঙ্কা।
প্রিয়াঙ্কার হাতে রয়েছে বেশ কয়েকটি আন্তর্জাতিক প্রোজেক্ট। এর মধ্যে টেক্স অফ ইউ রয়েছে মুক্তির অপেক্ষায়। পাশাপাশি আমাজনের টিভি সিরিজ সিটাডেল-এর শুটিংও শেষ করেছেন অভিনেত্রী।
সম্প্রতি এক পান মসলার কোম্পানির বিজ্ঞাপন করেন বলিউডের অভিনেতা অক্ষয় কুমার। শাহরুখ খান, অজয় দেবগনের মতো বলিউড তারকারা আগে থেকেই সেই সংস্থার ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসেডর।
তবে অক্ষয় এই বিজ্ঞাপনে অংশ হওয়ায় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নানা প্রতিক্রিয়া জানান তার ভক্ত-অনুরাগীরা। তাই তাদের ভাবনাকে সম্মান জানিয়ে ক্ষমা চেয়ে সেই সংস্থা থেকে নিজেকে সরিয়ে নিলেন অভিনেতা।
নিজের স্বাস্থ্য এবং শরীরচর্চা নিয়ে অত্যন্ত সজাগ অক্ষয়। যা তার চারপাশের লোকজন এবং অনুরাগীদেরও অনুপ্রেরণা জোগায়। তাই তিনি এই ধরনের বিজ্ঞাপনে অংশ নেয়ায় রুষ্ট হন অনেকেই।
এ জন্য বুধবার গভীর রাতে এক টুইট বার্তায় বিজ্ঞাপন থেকে সরে দাঁড়ানোর ঘোষণা করেন অক্ষয়।
সেই পোস্টে ক্ষমা প্রার্থনা করে অভিনেতা লেখেন, ‘আমি ক্ষমাপ্রার্থী। আমার অনুরাগী, শুভাকাঙ্ক্ষীসহ সবার কাছে ক্ষমা চাচ্ছি। গত কয়েক দিন ধরে আপনাদের কাছে থেকে যে প্রতিক্রিয়া পেয়েছি তা আমাকে গভীরভাবে প্রভাবিত করেছে। আমি তামাকজাত পণ্যের বিজ্ঞাপন কখনই করিনি এবং কোনো দিন করব না। বিমন ইলাইচির সঙ্গে আমার চুক্তি নিয়ে আপনাদের আবেগ বুঝতে পারছি। সেই আবেগকে সম্মান জানিয়েই বিনয়ের সঙ্গে সরে দাঁড়াচ্ছি।’
ওই বিজ্ঞাপন থেকে পাওয়া টাকা সমাজসেবার কাজে দান করে দেবেন বলেও জানিয়েছেন অক্ষয়।
তিনি লেখেন, ‘বিজ্ঞাপনের পারিশ্রমিক বাবদ পাওয়া টাকা দান করে দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। ওই সংস্থা হয়তো বিজ্ঞাপনটির সম্প্রচার চালিয়ে যাবে, অন্তত আইনিভাবে চুক্তির মেয়াদ শেষ না পর্যন্ত। তার দায় আমারই। তবে কথা দিচ্ছি, আগামী দিনে কাজের ব্যাপারে অত্যন্ত সতর্ক থাকব। বিনিময়ে আপনাদের ভালোবাসা এবং শুভেচ্ছা প্রার্থনা করি।’
তবে সংস্থাটির সঙ্গে চুক্তির মেয়াদ কবে শেষ, তার উল্লেখ করেননি অক্ষয়।
আরও পড়ুন:২০১৮ সালের শেষের দিকে মুক্তি পায় ভারতের দক্ষিণের কন্নড় ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রির বিগ বাজেটের সিনেমা কেজিএফ চ্যাপ্টার ওয়ান।
মুক্তির পর শুধু ভারতে নয়, বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে থাকা ভারতীয় সিনেমাপ্রেমীদের মধ্যে ব্যাপক সাড়া ফেলেছিল এটি। বক্স অফিসে গড়েছিল ইতিহাস।
গ্যাংস্টারদের নিয়ে গল্পের এই সিনেমায় দুর্দান্ত মারকুটে অভিনয় দিয়ে পুরো ভারত মাতিয়েছিলেন কন্নড় রকিং স্টার যশ। শুধু তা-ই নয়, এই সিনেমা দিয়ে দেশের বাইরেও লাখো ভক্ত-অনুরাগী জুটিয়েছেন এই অভিনেতা।
এরপর আবার ১৪ এপ্রিল কেজিএফ চ্যাপ্টার টু মুক্তির পর ঝড় তুলেছে বক্স অফিসে। জনপ্রিয়তা আর খ্যাতির শীর্ষে এখন যশ। তার সঙ্গে যখন অভিনয় করতে মুখিয়ে আছেন একাধিক অভিনেত্রী, কিন্তু তিনি কার সঙ্গে অভিনয় করার অপেক্ষায় রয়েছেন।
সেই অভিনেত্রী আর কেউ নন তিনি বলিউডের মাস্তানি দীপিকা পাডুকোন। ভারতীয় এক সংবাদমাধ্যমের খবরে বলা হয়েছে, সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে এই ইচ্ছা প্রকাশ করেছেন যশ।
সেই সাক্ষাৎকারে যশ জানান, যদি সুযোগ দেয়া হয় তাহলে দীপিকা পাডুকোনের সঙ্গে কাজ করতে চান তিনি। আর তার বিপরীতে অভিনয় করেই বলিউডে পা রাখতে চান তিনি।
শুধু দর্শকদের নয় অনেক তারকারও পছন্দের অভিনেত্রী দীপিকা। তার সঙ্গে স্ক্রিন শেয়ারের ইচ্ছা প্রকাশ করেন অনেকেই। এবার সেই তালিকায় যোগ হল কেজিএফ তারকা যশ।
আরও পড়ুন:বিগত কয়েক বছরে বলিউডের চেয়ে বেশি সাড়া ফেলছে ভারতের দক্ষিণী সিনেমা। তার উদাহরণ বাহুবলী, পুষ্পা, আরআরআর, কেজিএফসহ অনেক সিনেমা। বর্তমানে বক্স অফিসে চলছে দক্ষিণী কন্নড় সিনেমা কেজিএফ টু-এর ঝড়।
কন্নড়, তেলেগু, তামিল, মালয়ালাম ও হিন্দি ভাষায় মুক্তি পেয়েছে সিনেমাটি। এতে প্রধান ভূমিকায় অভিনয় করেছেন কন্নড় রকিং স্টার যশ। আর অন্যতম আরেক প্রধান চরিত্রে অভিনয় করেছেন সঞ্জয় দত্ত।
বলিউড ও দক্ষিণী ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রির মধ্যে পার্থাক্য কোথায়? সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে তা নিজের অভিমত জানিয়েছেন সঞ্জয় দত্ত।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যমকে দেয়া সেই সাক্ষাৎকারে সঞ্জয় দত্ত বলেন, ‘আমার মনে হয় হিন্দি ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রি হিরোইজম ভুলতে বসেছে, কিন্তু দক্ষিণী ইন্ডাস্ট্রি বীরত্বকে এখনও ভুলে যায়নি। আমি বলছি না যে স্লাইস অফ লাইফ খারাপ। কিন্তু আমরা কেন আমাদের উত্তরপ্রদেশ, বিহার, ঝাড়খণ্ড, রাজস্থানের দর্শকদের ভুলে গিয়েছি, যারা আমাদের দর্শকমহলের একটি বড় অংশ।
‘আমি আশা করি, হিন্দি ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রিতে সেই প্রবণতা ফিরে আসবে। আগে আমাদের স্বতন্ত্র প্রযোজক এবং অর্থদাতা ছিল, যা ফিল্ম স্টুডিওগুলোর করপোরেটাইজেশনের অবসান ঘটিয়েছে। করপোরেটাইজেশন ভালো, তবে এটি সিনেমার পছন্দের ক্ষেত্রে হস্তক্ষেপ করা উচিত নয়।’
উদাহরণ দিয়ে তিনি আরও বলেন, ‘দেখুন এস এস রাজমৌলির নির্দিষ্ট প্রযোজক রয়েছেন, যারা তার দৃষ্টিভঙ্গিতে সম্পূর্ণ বিশ্বাস রাখেন। আমাদের সঙ্গে আগেকার দিনে গুলশান রাই, যশ চোপড়া, সুভাষ ঘাই এবং যশ জোহরের মতো প্রযোজকও ছিলেন। তারা যে সিনেমাগুলো তৈরি করেছেন তা দেখুন। দক্ষিণে তারা কাগজে স্ক্রিপ্ট দেখে, এখানে আমরা কাগজে পরিসংখ্যান দেখি।’
সঞ্জয়কে পরবর্তী সময়ে যশ রাজ ফিল্মসের ব্যানারে নির্মিতব্য পৃথ্বীরাজ সিনেমায় দেখা যাবে। এতে আরও রয়েছেন অক্ষয় কুমার, মানুষী চিল্লার, সাক্ষী তানওয়ার এবং সোনু সুদ। এ ছাড়া শামশেরায় দেখা যাবে তাকে।
আরও পড়ুন:ভারতের দক্ষিণী সিনেমার জনপ্রিয় অভিনেত্রী কাজল আগারওয়াল মা হয়েছেন। মঙ্গলবার সকালে তার কোলজুড়ে এসেছে ফুটফুটে পুত্রসন্তান। মা ও সন্তান দুজনেই সুস্থ আছেন।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসকে এ তথ্য জানিয়েছেন অভিনেত্রীর বোন নিশা আগারওয়াল।
এটি জীবনের সেরা সুখবর উল্লেখ করেন নিশা। এর আগে তিনি ইনস্টাগ্রামে লিখেছিলেন, ‘এটি একটি আনন্দের দিন, একটি বিশেষ খবর আপনাদের সঙ্গে ভাগ করে নেয়ার অপেক্ষা সইছে না।’
চলতি বছর জানুয়ারিতে অন্তঃসত্ত্বা হওয়ার খবর জানিয়েছিলেন কাজল। ২০২০ সালের অক্টোবরে প্রেমিক গৌতম কিসলুর সঙ্গে সাত পাকে বাঁধা পড়েন অভিনেত্রী। এবার তাদের পরিবারে এলো নতুন সদস্য। তা নিয়ে ব্যাপক উচ্ছ্বসিত তারকাদম্পতি।
অন্তঃসত্ত্বা অবস্থায় গৌতম কিসলু তাকে যেভাবে দেখভাল করেছেন, তাতে ভীষণ খুশি অভিনেত্রী। গত সপ্তাহে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে স্বামীকে ধন্যবাদ জানিয়ে একটি আবেগঘন বার্তাও লিখেছিলেন কাজল।
সেখানে তাকে তিনি লিখেছিলেন, ‘আমাদের সন্তান আসার আগে কতটা যত্ন নিচ্ছ আমার, আমি জানতে চাই, তুমি ঠিক কতটা অসাধারণ একজন মানুষ আর কতটা অসাধারণ একজন বাবা হতে চলেছ।’
শিগগিরই কাজলকে দেখা যাবে চিরঞ্জীবী এবং রামচরণ অভিনীত আচার্য সিনেমায়। ২৯ এপ্রিল প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পাবে সিনেমাটি।
মন্তব্য