চলচ্চিত্র পরিচালক সমিতির গঠনতন্ত্রে বলা আছে, সংগঠনটির লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য হলো দেশের চলচ্চিত্র শিল্পের সামগ্রিক উন্নয়ন, প্রসার ও প্রচারের জন্য কাজ করে যাওয়া এবং নিজেদের মধ্যে গঠনমূলক সমালোচনা ও আত্মসমালোচনার মাধ্যমে নিজেদেরকে ত্রুটিমুক্ত করে উন্নতি ও অগ্রগতির পথে এগিয়ে যাওয়া।
চলচ্চিত্রের সার্বিক উন্নয়নে নান্দনিক ও কারিগরি প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করার কথাও বলা হয়েছে গঠনতন্ত্রে। কিন্তু দেশের নির্মাতারা অনেকে মনে করেন, এসব লক্ষ্য অর্জনে সংগঠনের কোনো পদক্ষেপ চোখে পড়ে না। বরং নিজেদের মধ্যে নিয়মিতই দ্বন্দ্বে জড়িয়ে পড়তে দেখা যায় সমিতির নেতাদের।
তা ছাড়া সদস্যদের নিয়ে তৈরি হওয়া সমস্যায় সমিতির ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন ওঠে অনেক সময়। পরিচালক গ্রেপ্তার হওয়া, এক পরিচালকের সিনেমায় অন্য কারও নাম ব্যবহার করা, সেন্সরে সিনেমা দীর্ঘদিন আটকে থাকা– এসব সংকটে পরিচালক সমিতির সক্রিয়তা চোখে পড়ে না।
এ বিষয়ে পরিচালক সমিতির বর্তমান কমিটির উপমহাসচিব কবিরুল ইসলাম রানা নিউজবাংলাকে বলেন, ‘সেন্সর বোর্ডে আমাদের প্রতিনিধি থাকে এবং তারা থাকেন পরিচালকদের স্বার্থ সংরক্ষণের জন্যই। তবে হ্যাঁ, সিনেমা সেন্সরের সময় সেই সিনেমার পরিচালক যদি সেখানে উপস্থিত থাকেন তাহলে ভালো হয়। কারণ কিছু ছোটখাটো প্রশ্ন তৈরি হয়, সেগুলোর উত্তর সঙ্গে সঙ্গে পাওয়ার সুযোগ থাকে।
‘একজনের সিনেমা আরেকজন কেড়ে নেয়, এমন ঘটনা আছে। একটা অনুদানের সিনেমার নবীন পরিচালকের হাত থেকে সিনেমাটি অন্য আরেকজনের কাছে চলে গেছে, এমন ঘটনা ঘটেছে। এর আমরা তীব্র নিন্দা জানিয়েছি এবং মন্ত্রণালয়ের মিটিংয়ে সচিবের সঙ্গে বেশ কয়েকবার আলোচনা করেছি। এটা নিয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয় নাই।’
রানার মন্তব্য, প্রযোজক নিয়ে আসেন পরিচালকেরাই। তাই সবার উচিত একে অন্যকে সম্মান করা। এসব করে পরিবেশ নষ্ট করা উচিত না।
পরিচালক গ্রেপ্তার বিষয়ে তিনি বলেন, ‘যখন বিষয়টা আইনের মধ্যে চলে যায়, তখন আইনের বিষয়টা আমাদের দেখতে হবে। সে ক্ষেত্রে আমরা যেটা করি যে খোঁজখবর নিই।’
পরিচালক গ্রেপ্তার, সেন্সরে আটকে সিনেমা আটকে যাওয়া বা সিনেমা কেড়ে নেয়া প্রসঙ্গে তরুণ পরিচালক রাশিদ পলাশ নিউজবাংলাকে বলেন, ‘কেউ বিপদে পড়লে অন্যদের গা বাঁচিয়ে চলার একটা ট্রেন্ড এখানে আছে। এটা শুধু আমাদের পরিচালক সমিতির না, সবখানে।
‘আমার ক্ষেত্রে যেটা হয়েছে, তারা আমাকে পাশে রাখার চেষ্টা করে, ভালো পরামর্শ দেয়।’
পরিচালক সমিতির নেতাদের সঙ্গে নবীন ও স্বাধীন নির্মাতাদের মানসিক দূরত্ব আছে বলে শোনা যায়।
বিষয়টির সঙ্গে একমত পোষণ করে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পাওয়া পরিচালক মোস্তাফিজুর রহমান মানিক নিউজবাংলাকে বলেন, ‘হ্যাঁ, নতুনদের সঙ্গে সমিতির সামান্য মানসিক দূরত্ব আছে। তবে এটি শুধু সমিতির দিক থেকে না, এটা তাদের দিক থেকেও, যারা সমিতিতে আসতে চান না। ওনারা মনে করেন, পরিচালক সমিতি কোনো বিষয় না। আবার সমিতির কেবিনেট হয়তো মনে করে যে ওরা যেহেতু আমাদের পাত্তা দিচ্ছে না, আমরা কেন ওদের ডাকব।’
নবীন পরিচালক বুলবুল বিশ্বাস অবশ্য তার সমস্যায় পরিচালক সমিতিকে পাশে পেয়েছেন বলে জানান নিউজবাংলাকে। তবে তিনি কাজের পরিবেশ এবং সামগ্রিকভাবে পরিচালক সমিতির আরও ভূমিকা প্রত্যাশা করেন।
তিনি বলেন, ‘একজন নবীন ও তরুণ নির্মাতা হিসেবে ২০১৫ সাল থেকে আমি এখানে কাজ করছি। সেখান থেকে আজ পর্যন্ত শুধু ১০০ কোটি টাকার কথা শুনে যাচ্ছি, নতুন ইকুইপমেন্টের কথা শুনে যাচ্ছি, কিন্তু চোখে দেখতে পাচ্ছি না। শুধু ভাঙচুরই হচ্ছে, কিন্তু কোনো গঠন বা পুনর্নির্মাণ হচ্ছে না। এখন এসব বিষয় নিয়ে কাকে বলব, এটা কি পরিচালক সমিতির সভাপতিকে বলব না কাকে বলব? আমি তো মনে করি, এসব প্রশ্ন আমার সমিতিকে করা উচিত। তারাই তো আমার সুবিধা-অসুবিধা দেখবে।’
নবীন নির্মাতা সাইফ চন্দন নিউজবাংলাকে বলেন, ‘মাঝে মাঝে মনে হয়, অনেক কিছু করার আছে, কিন্তু কিছুই করছে না সমিতি। যখন এগুলো নিয়ে কথা বলতে যাই, তখন অনেকেই আর ভালো চোখে দেখেন না।’
বুধবার ছিল চলচ্চিত্র পরিচালক সমিতির ৪০ বছর পূর্তি। এ আয়োজন নিয়ে সাইফ বলেন, ‘বিজয়ের ৫০ বছর পূর্তি উপলক্ষে ১৬ ডিসেম্বর একটি আয়োজন যেন করা হয় সেই প্রস্তাব দিয়েছিলাম। নেতারা বললেন, সামনে আমাদের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী আছে, একেবারে বড় করে একটি আয়োজন করব।’
সেই বড় অনুষ্ঠান দেখতে এসে হতাশ হয়েছেন সাইফ চন্দন। বললেন, ‘এই আয়োজনের কথা আমরা জানতে পেরেছি অনুষ্ঠানের আগের দিন রাত ৩টার সময়।’
করোনার পর জনজীবন বিপর্যস্ত হয়েছে। এ চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় সমিতি এখনও কোনো উদ্যোগ না নিলেও কিছু পরিকল্পনা করা হচ্ছে বলে জানান মোস্তাফিজুর রহমান মানিক।
তিনি বলেন, ‘পরিচালকদের অনেককেই ওটিটি বা নতুন সিনেমা ভাষার সঙ্গে কোপ-আপ করতে বেগ পেতে হচ্ছে। দেশের যে প্ল্যাটফর্মগুলো আছে, তাদের কর্তাব্যক্তিদের সঙ্গে আমরা কথা বলার একটা পরিকল্পনা করছি।’
সমিতিতে নিয়মিত সেমিনার ও প্রশিক্ষণের কথা বলা থাকলেও তা নিয়মিত হয় না বলেও অভিযোগ শোনা যায়। উপমহাসচিব কবিরুল ইসলাম রানা বলেন, ‘এগুলো একেবারে হয় না যে তা না। বিগত বছরগুলোতে হয়েছে এবং আগামীতে পরিকল্পনা আছে।’
সিনেমার সেন্সর পেতে হলে পরিচালক সমিতির অনাপত্তিপত্র (এনওসি) লাগবে– এমন একটি প্রস্তাব নিয়ে বেশ সমালোচনা শুরু হয়েছিল কিছুদিন আগে। এ নিয়মটি কেন প্রয়োজন, জানতে চাইলে সমিতির সভাপতি সোহানুর রহমান সোহান জানান, এমন নিয়ম করা হয়নি।
আর সমিতির সঙ্গে নবীন পরিচালকদের মানসিক দূরত্বের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আর কোনো দূরত্ব থাকার অবকাশ নেই। আমরা সব ঠিক করে ফেলেছি।’
সম্প্রতি সমিতির বর্তমান কমিটির আন্তর্জাতিক ও তথ্যপ্রযুক্তি সচিব পদ থেকে নোমান রবিনকে বাতিল এবং সমিতির পূর্ণ সদস্যপদ এক বছরের জন্য স্থগিত করা হয়েছে।
সদস্যপদ স্থগিত হওয়ার পর ৪ নভেম্বর ফেসবুক লাইভে এসে দীর্ঘ আলাপে অংশ নেন নোমান রবিন। সেই আলাপের কিছু কথা নোমান রবিন উল্লেখ করে তার স্ট্যাটাসে বলেন, ‘চলচ্চিত্র পরিচালক সমিতির বর্তমান কার্যনির্বাহী কমিটির মহাসচিবকে অন্য এক সদস্য বলছেন, ভাই, ওটিটি নীতিমালা তো হয়ে যাবে। পরিচালক সমিতির নো অবজেকশন সার্টিফিকেট (এনওসি) নেয়া লাগবে- ওটিটি নীতিমালায় যদি আমরা এই ক্লজ না দিই, তাহলে তো পোলাপান সব ওইদিকে চলে যাবে, আমাদের সদস্য কেউ হবে না।’
এসব নিয়ে সমিতির মহাসচিব শাহিন সুমন নিউজবাংলার সঙ্গে কথা বলতে চাননি।
সোহান-সুমন নির্বাচিত হয়ে সমিতির দায়িত্বে আসেন চলতি মাসের এপ্রিলে। ২০২১-২২ মেয়াদে তারা সমিতি পরিচালনার ক্ষমতায় থাকবেন।
আরও পড়ুন:মুক্তির আগ থেকেই তুমুল আলোচনায় ছিল ভারতের দক্ষিণের কন্নড় সিনেমা কেজিএফ চ্যাপ্টার টু।
যেমনটি আলোচনায় ছিল, বাস্তবেও ঠিক তেমনই ঘটছে। গত ১৪ এপ্রিল মুক্তির পর থেকেই বক্স অফিসে দাপিয়ে বেড়াচ্ছে কেজিএফ টু।
ইতোমধ্যে হিন্দি ভার্সনে রেকর্ড গড়েছে সিনেমাটি। ৭ দিনে ২৫৫ কোটি রুপি আয় করেছে। যা বাহুবলি টুর রেকর্ডও ভেঙেছে।
হিন্দি ছাড়াও সিনেমাটি কন্নড়, তেলেগু, তামিল ও মালায়ালাম ভাষায় মুক্তি পেয়েছে। সব মিলিয়ে প্রথম সপ্তাহের শেষে সিনেমাটি বিশ্বব্যাপী ৭০০ কোটি রুপির বেশি ব্যবসা করেছে।
ভারতীয় চলচ্চিত্র বাণিজ্য বিশ্লেষক মনোবালা বিজয়বালান বৃহস্পতিবার দুপুরে এক টুইটে এ তথ্য জানিয়েছেন।
#KGFChapter2 ZOOMS past ₹700 cr milestone mark.
— Manobala Vijayabalan (@ManobalaV) April 21, 2022
২০১৮ সালের শেষের দিকে মুক্তি পায় প্রশান্ত নীল পরিচালিত এই ফ্র্যাঞ্চাইজির প্রথম সিনেমা কেজিএফ চ্যাপ্টার ওয়ান।
মুক্তির পর শুধু ভারতে নয়, বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে থাকা ভারতীয় সিনেমাপ্রেমীদের মধ্যে ব্যাপক সাড়া ফেলেছিল এটি। বক্স অফিসে গড়েছিল ইতিহাস।
গ্যাংস্টারদের নিয়ে গল্পের এই সিনেমায় দুর্দান্ত মারকুটে অভিনয় দিয়ে পুরো ভারত মাতিয়েছিলেন কন্নড় সুপারস্টার যশ। শুধু তা-ই নয়, এই সিনেমা দিয়ে দেশের বাইরেও লাখো ভক্ত-অনুরাগী জুটিয়েছেন এই অভিনেতা।
যশ বাদেও কেজিএফ চ্যাপ্টার টু-তে আরেক মুখ্য ভূমিকায় রয়েছেন বলিউড অভিনেতা সঞ্জয় দত্তকে। এ ছাড়া এতে গুরুত্বপূর্ণ সব চরিত্রে অভিনয় করেছেন রাবিনা ট্যান্ডন, প্রকাশ রাজ, শ্রীনিধি শেট্টির মতো তারকারা।
আরও পড়ুন:করোনাভাইরাস সংক্রমণের কারণে স্থগিত থাকা ২৭তম কলকাতা আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসব শুরু হচ্ছে আগামী ২৫ এপ্রিল নজরুল মঞ্চে। উৎসব চলবে ১ মে পর্যন্ত।
অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করবেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন বলিউড অভিনেতা ও আসানসোল লোকসভা উপনির্বাচনে বিজয়ী তৃণমূল এমপি শত্রুঘ্ন সিনহা।
আরও উপস্থিত থাকবেন অভিনেতা রঞ্জিত মল্লিক, প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায়সহ অনেকে।
উৎসব কমিটির চেয়ারম্যান পরিচালক রাজ চক্রবর্তী বলেন, ‘করোনার বিধিনিষেধ শিথিল হলেও আমাদের সাবধানে থাকতে হবে। সাবধানতার কথা বিবেচনা করেই এবার বাইরের কাউকে আমন্ত্রণ জানানো হয়নি।’
কিংবদন্তি পরিচালক সত্যজিৎ রায়ের জন্মশতবর্ষের শ্রদ্ধায় উৎসবের উদ্বোধনী ফিল্ম হিসেবে একই সঙ্গে নজরুল মঞ্চ ও রবীন্দ্র সদনে দেখানো হবে সত্যজিৎ রায় পরিচালিত অরণ্যের দিনরাত্রি।
পরিচালক অরিন্দম শীল সাংবাদিক সম্মেলনে বলেন, ‘সত্যজিৎ রায়ের জন্মশতবর্ষ উপলক্ষে সত্যজিতের সঙ্গে কাজ করা জীবিত শিল্পী ও কলাকুশলীদের এবার সংবর্ধনা দেয়া হবে।
এবার সত্যজিৎ রায় স্মারক বক্তব্য দেবেন পরিচালক সুজিত সরকার। সত্যজিতের জীবন ও কাজের ওপর প্রদর্শনীও থাকছে উৎসবে।
চলচ্চিত্র উৎসবের থিম ‘কান্ট্রি ফিনল্যান্ড’। কলকাতা শহরের ১০ হলে ৪০ দেশের ১৬৩টি সিনেমা দেখানো হবে এবারের উৎসবে।
২৭তম কলকাতা চলচ্চিত্র উৎসবে আটটি বিলুপ্তপ্রায় ভাষার সিনেমা দেখানো হবে। ভাষাগুলো হলো বোরো, টুলু, রাজবংশী, সান্তাড়, ও কোঙ্কনী ও কুড়ুম্বা।
চিদানন্দ দাশগুপ্ত, বুদ্ধদেব দাশগুপ্ত, দিলীপ কুমার, স্বাতীলেখা সেনগুপ্ত ও নিকোলাস জাঙ্কসোকে নিয়ে প্রদর্শনীর ব্যবস্থা থাকছে।
শিশির মঞ্চে তথ্য ও সংস্কৃতি দপ্তরে কলকাতা চলচ্চিত্র উৎসবের প্রস্তুতি নিয়ে সাংবাদিক সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন সংস্কৃতি দপ্তরের সচিব শান্তনু বসু, মন্ত্রী বিরবাহা হাঁসদা, উৎসব কমিটির চেয়ারম্যান রাজ চক্রবর্তী, পরিচালক গৌতম ঘোষ, পরিচালক অরিন্দম শীল, হরনাথ চক্রবর্তী, অভিনেত্রী জুন মালিয়া।
চলতি বছরের শুরুর দিকে বলিউড অভিনেত্রী প্রিয়াঙ্কা চোপড়া জানান যে, তার এবং নিক জোনাসের জীবনে সন্তান এসেছে। সারোগেসির মাধ্যমে তারা মা-বাবা হয়েছেন। তবে ছেলে না মেয়ে সন্তান তা জানাননি তিনি।
সেসময় বিভিন্ন সূত্রের বরাত দিয়ে ভারতীয় একাধিক সংবাদমাধ্যম জানায়, কন্যা সন্তানের মা-বাবা হয়েছেন তারকা দম্পতি।
কিন্তু কখনো সন্তানের নাম কিংবা ছবি, কোনোটাই প্রকাশ্যে আনেননি অভিনেত্রী।
তবে দেশটির একাধিক সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে, প্রিয়াঙ্কা-নিক তাদের মেয়ের নাম কী রেখেছেন তা এবার প্রকাশ্যে। তারকা দম্পতি কন্যার নাম রেখেছেন মালতী মারি চোপড়া জোনাস।
জন্ম সনদও নাকি হাতে পেয়েছে হলিউড কেন্দ্রিক একটি সংবাদ সংস্থা। সেই সূত্রেই জানা গেছে এই নাম।
সংস্কৃত এবং ল্যাটিন দুই শব্দ মিশিয়ে মেয়ের নাম রেখেছেন প্রিয়াঙ্কা-নিক। সংস্কৃতে ‘মালতী’ শব্দের অর্থ হল একরকম সুগন্ধযুক্ত ছোট সাদা ফুল অথবা চাঁদের আলো।
অন্যদিকে ‘মারি’ শব্দের অর্থ সমুদ্রকে রক্ষা করে যে নারী। মূলত মাতা মেরিকে অনেক সময় এই আখ্যা দেয়া হয়। যিশুর মাতা মেরিকে ফ্রাঞ্চে ‘মারি’ বলা হয়।
যদিও আনুষ্ঠানিকভাবে এখনও মেয়ের নাম বা ছবি কোনোটাই প্রকাশ্যে আনেননি তারকা জুটি।
যুক্তরাষ্ট্রের সান দিয়াগো শহরের এক হাসপাতালে গত ১৫ জানুয়ারি জন্ম হয়েছে নিক-প্রিয়াঙ্কার মেয়ের।
এরপর ২২ জানুয়ারি ইনস্টাগ্রামে এক পোস্টে সারোগেসির মাধ্যমে সন্তান হওয়ার কথা প্রকাশ্যে আনেন প্রিয়াঙ্কা।
প্রিয়াঙ্কার হাতে রয়েছে বেশ কয়েকটি আন্তর্জাতিক প্রোজেক্ট। এর মধ্যে টেক্স অফ ইউ রয়েছে মুক্তির অপেক্ষায়। পাশাপাশি আমাজনের টিভি সিরিজ সিটাডেল-এর শুটিংও শেষ করেছেন অভিনেত্রী।
সম্প্রতি এক পান মসলার কোম্পানির বিজ্ঞাপন করেন বলিউডের অভিনেতা অক্ষয় কুমার। শাহরুখ খান, অজয় দেবগনের মতো বলিউড তারকারা আগে থেকেই সেই সংস্থার ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসেডর।
তবে অক্ষয় এই বিজ্ঞাপনে অংশ হওয়ায় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নানা প্রতিক্রিয়া জানান তার ভক্ত-অনুরাগীরা। তাই তাদের ভাবনাকে সম্মান জানিয়ে ক্ষমা চেয়ে সেই সংস্থা থেকে নিজেকে সরিয়ে নিলেন অভিনেতা।
নিজের স্বাস্থ্য এবং শরীরচর্চা নিয়ে অত্যন্ত সজাগ অক্ষয়। যা তার চারপাশের লোকজন এবং অনুরাগীদেরও অনুপ্রেরণা জোগায়। তাই তিনি এই ধরনের বিজ্ঞাপনে অংশ নেয়ায় রুষ্ট হন অনেকেই।
এ জন্য বুধবার গভীর রাতে এক টুইট বার্তায় বিজ্ঞাপন থেকে সরে দাঁড়ানোর ঘোষণা করেন অক্ষয়।
সেই পোস্টে ক্ষমা প্রার্থনা করে অভিনেতা লেখেন, ‘আমি ক্ষমাপ্রার্থী। আমার অনুরাগী, শুভাকাঙ্ক্ষীসহ সবার কাছে ক্ষমা চাচ্ছি। গত কয়েক দিন ধরে আপনাদের কাছে থেকে যে প্রতিক্রিয়া পেয়েছি তা আমাকে গভীরভাবে প্রভাবিত করেছে। আমি তামাকজাত পণ্যের বিজ্ঞাপন কখনই করিনি এবং কোনো দিন করব না। বিমন ইলাইচির সঙ্গে আমার চুক্তি নিয়ে আপনাদের আবেগ বুঝতে পারছি। সেই আবেগকে সম্মান জানিয়েই বিনয়ের সঙ্গে সরে দাঁড়াচ্ছি।’
ওই বিজ্ঞাপন থেকে পাওয়া টাকা সমাজসেবার কাজে দান করে দেবেন বলেও জানিয়েছেন অক্ষয়।
তিনি লেখেন, ‘বিজ্ঞাপনের পারিশ্রমিক বাবদ পাওয়া টাকা দান করে দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। ওই সংস্থা হয়তো বিজ্ঞাপনটির সম্প্রচার চালিয়ে যাবে, অন্তত আইনিভাবে চুক্তির মেয়াদ শেষ না পর্যন্ত। তার দায় আমারই। তবে কথা দিচ্ছি, আগামী দিনে কাজের ব্যাপারে অত্যন্ত সতর্ক থাকব। বিনিময়ে আপনাদের ভালোবাসা এবং শুভেচ্ছা প্রার্থনা করি।’
তবে সংস্থাটির সঙ্গে চুক্তির মেয়াদ কবে শেষ, তার উল্লেখ করেননি অক্ষয়।
আরও পড়ুন:২০১৮ সালের শেষের দিকে মুক্তি পায় ভারতের দক্ষিণের কন্নড় ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রির বিগ বাজেটের সিনেমা কেজিএফ চ্যাপ্টার ওয়ান।
মুক্তির পর শুধু ভারতে নয়, বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে থাকা ভারতীয় সিনেমাপ্রেমীদের মধ্যে ব্যাপক সাড়া ফেলেছিল এটি। বক্স অফিসে গড়েছিল ইতিহাস।
গ্যাংস্টারদের নিয়ে গল্পের এই সিনেমায় দুর্দান্ত মারকুটে অভিনয় দিয়ে পুরো ভারত মাতিয়েছিলেন কন্নড় রকিং স্টার যশ। শুধু তা-ই নয়, এই সিনেমা দিয়ে দেশের বাইরেও লাখো ভক্ত-অনুরাগী জুটিয়েছেন এই অভিনেতা।
এরপর আবার ১৪ এপ্রিল কেজিএফ চ্যাপ্টার টু মুক্তির পর ঝড় তুলেছে বক্স অফিসে। জনপ্রিয়তা আর খ্যাতির শীর্ষে এখন যশ। তার সঙ্গে যখন অভিনয় করতে মুখিয়ে আছেন একাধিক অভিনেত্রী, কিন্তু তিনি কার সঙ্গে অভিনয় করার অপেক্ষায় রয়েছেন।
সেই অভিনেত্রী আর কেউ নন তিনি বলিউডের মাস্তানি দীপিকা পাডুকোন। ভারতীয় এক সংবাদমাধ্যমের খবরে বলা হয়েছে, সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে এই ইচ্ছা প্রকাশ করেছেন যশ।
সেই সাক্ষাৎকারে যশ জানান, যদি সুযোগ দেয়া হয় তাহলে দীপিকা পাডুকোনের সঙ্গে কাজ করতে চান তিনি। আর তার বিপরীতে অভিনয় করেই বলিউডে পা রাখতে চান তিনি।
শুধু দর্শকদের নয় অনেক তারকারও পছন্দের অভিনেত্রী দীপিকা। তার সঙ্গে স্ক্রিন শেয়ারের ইচ্ছা প্রকাশ করেন অনেকেই। এবার সেই তালিকায় যোগ হল কেজিএফ তারকা যশ।
আরও পড়ুন:বিগত কয়েক বছরে বলিউডের চেয়ে বেশি সাড়া ফেলছে ভারতের দক্ষিণী সিনেমা। তার উদাহরণ বাহুবলী, পুষ্পা, আরআরআর, কেজিএফসহ অনেক সিনেমা। বর্তমানে বক্স অফিসে চলছে দক্ষিণী কন্নড় সিনেমা কেজিএফ টু-এর ঝড়।
কন্নড়, তেলেগু, তামিল, মালয়ালাম ও হিন্দি ভাষায় মুক্তি পেয়েছে সিনেমাটি। এতে প্রধান ভূমিকায় অভিনয় করেছেন কন্নড় রকিং স্টার যশ। আর অন্যতম আরেক প্রধান চরিত্রে অভিনয় করেছেন সঞ্জয় দত্ত।
বলিউড ও দক্ষিণী ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রির মধ্যে পার্থাক্য কোথায়? সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে তা নিজের অভিমত জানিয়েছেন সঞ্জয় দত্ত।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যমকে দেয়া সেই সাক্ষাৎকারে সঞ্জয় দত্ত বলেন, ‘আমার মনে হয় হিন্দি ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রি হিরোইজম ভুলতে বসেছে, কিন্তু দক্ষিণী ইন্ডাস্ট্রি বীরত্বকে এখনও ভুলে যায়নি। আমি বলছি না যে স্লাইস অফ লাইফ খারাপ। কিন্তু আমরা কেন আমাদের উত্তরপ্রদেশ, বিহার, ঝাড়খণ্ড, রাজস্থানের দর্শকদের ভুলে গিয়েছি, যারা আমাদের দর্শকমহলের একটি বড় অংশ।
‘আমি আশা করি, হিন্দি ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রিতে সেই প্রবণতা ফিরে আসবে। আগে আমাদের স্বতন্ত্র প্রযোজক এবং অর্থদাতা ছিল, যা ফিল্ম স্টুডিওগুলোর করপোরেটাইজেশনের অবসান ঘটিয়েছে। করপোরেটাইজেশন ভালো, তবে এটি সিনেমার পছন্দের ক্ষেত্রে হস্তক্ষেপ করা উচিত নয়।’
উদাহরণ দিয়ে তিনি আরও বলেন, ‘দেখুন এস এস রাজমৌলির নির্দিষ্ট প্রযোজক রয়েছেন, যারা তার দৃষ্টিভঙ্গিতে সম্পূর্ণ বিশ্বাস রাখেন। আমাদের সঙ্গে আগেকার দিনে গুলশান রাই, যশ চোপড়া, সুভাষ ঘাই এবং যশ জোহরের মতো প্রযোজকও ছিলেন। তারা যে সিনেমাগুলো তৈরি করেছেন তা দেখুন। দক্ষিণে তারা কাগজে স্ক্রিপ্ট দেখে, এখানে আমরা কাগজে পরিসংখ্যান দেখি।’
সঞ্জয়কে পরবর্তী সময়ে যশ রাজ ফিল্মসের ব্যানারে নির্মিতব্য পৃথ্বীরাজ সিনেমায় দেখা যাবে। এতে আরও রয়েছেন অক্ষয় কুমার, মানুষী চিল্লার, সাক্ষী তানওয়ার এবং সোনু সুদ। এ ছাড়া শামশেরায় দেখা যাবে তাকে।
আরও পড়ুন:ভারতের দক্ষিণী সিনেমার জনপ্রিয় অভিনেত্রী কাজল আগারওয়াল মা হয়েছেন। মঙ্গলবার সকালে তার কোলজুড়ে এসেছে ফুটফুটে পুত্রসন্তান। মা ও সন্তান দুজনেই সুস্থ আছেন।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসকে এ তথ্য জানিয়েছেন অভিনেত্রীর বোন নিশা আগারওয়াল।
এটি জীবনের সেরা সুখবর উল্লেখ করেন নিশা। এর আগে তিনি ইনস্টাগ্রামে লিখেছিলেন, ‘এটি একটি আনন্দের দিন, একটি বিশেষ খবর আপনাদের সঙ্গে ভাগ করে নেয়ার অপেক্ষা সইছে না।’
চলতি বছর জানুয়ারিতে অন্তঃসত্ত্বা হওয়ার খবর জানিয়েছিলেন কাজল। ২০২০ সালের অক্টোবরে প্রেমিক গৌতম কিসলুর সঙ্গে সাত পাকে বাঁধা পড়েন অভিনেত্রী। এবার তাদের পরিবারে এলো নতুন সদস্য। তা নিয়ে ব্যাপক উচ্ছ্বসিত তারকাদম্পতি।
অন্তঃসত্ত্বা অবস্থায় গৌতম কিসলু তাকে যেভাবে দেখভাল করেছেন, তাতে ভীষণ খুশি অভিনেত্রী। গত সপ্তাহে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে স্বামীকে ধন্যবাদ জানিয়ে একটি আবেগঘন বার্তাও লিখেছিলেন কাজল।
সেখানে তাকে তিনি লিখেছিলেন, ‘আমাদের সন্তান আসার আগে কতটা যত্ন নিচ্ছ আমার, আমি জানতে চাই, তুমি ঠিক কতটা অসাধারণ একজন মানুষ আর কতটা অসাধারণ একজন বাবা হতে চলেছ।’
শিগগিরই কাজলকে দেখা যাবে চিরঞ্জীবী এবং রামচরণ অভিনীত আচার্য সিনেমায়। ২৯ এপ্রিল প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পাবে সিনেমাটি।
মন্তব্য