পেশাদার ফটোগ্রাফার আজিম খান রনি। জন্ম ঢাকায়। বাবার চাকরির সুবাদে বেড়ে ওঠা বগুড়ায়।
২০১১ সালে ঢাকা কলেজে ইংরেজিতে মাস্টার্স করেছেন। এর আগে অনার্স ফার্স্ট ইয়ার থেকেই করেন চাকরি। বর্তমানে তিনি কাজ করছেন একটি বেসরকারি টিভি চ্যানেলে ভিডিওগ্রাফার হিসেবে।
পেশাদার ফটোগ্রাফার হিসেবে রনির যাত্রা ২০১৭ সালে। এরপর মাত্র ৫ বছরে ফটোগ্রাফিতে শুধু আন্তর্জাতিক অ্যাওয়ার্ডই জিতেছেন ৫ শতাধিক। এর বেশিরভাগই প্রাইজমানি।
৬০ মাসের যাত্রার বিভিন্ন মুহূর্ত নিউজবাংলার সঙ্গে শেয়ার করেছেন নামী এ ফটোগ্রাফার।
কীভাবে ফটোগ্রাফিতে
ফটোগ্রাফি কখনোই আমার শখ ছিল না। আমি যেহেতু মিডিয়া জব করি ২০০৫ সাল থেকে, ভিজ্যুয়াল মিডিয়াতে, একজন ক্যামেরাপারসন হিসেবে, আমার কাছে মনে হয় হতো যে, ফটোগ্রাফির চেয়ে ক্যামেরাটাই ভালো, যেহেতু অনেক বেশি অপশন।
বিভিন্ন অ্যাসাইনমেন্টে গেলে ফটোগ্রাফার দেখতাম। আমার কখনো মনে হয়নি আমি ফটোজার্নালিস্ট বা ফটোগ্রাফার হব বা মনে হয় নাই ফটোগ্রাফার হব; ফটোগ্রাফি করব, কিন্তু বিভিন্ন সময় জায়গায় ঘুরতে যেতাম তখন একটা ডিএসএলআর মিস করতাম। মনে হতো একটা ডিএসএলআর থাকলে নিজের ছবিগুলো ভালো করে তুলতে পারতাম। সেই থেকে ভাবা, ভাবতে ভাবতে…একটা ডিএসএলআর কিনতে যে বাজেট লাগে তা আমার ছিল না। পরে ২০১৪ সালের ১০ সেপ্টেম্বর আমার জন্মদিনে একটা ক্যামেরা কিনি। এটা মনে রাখার জন্য এই দিনে কেনা।
ওই সময় ডিএসএলআর মানে আমার কাছে অনেক কিছু। আমার কলিগদের দেখেছি ডিএসএলআর দিয়ে ছবি-টবি তুলছে, ফেসবুকে দিচ্ছে।
ক্যামেরা কেনা
ক্যামেরা কেনার পিছনে একটা গল্প আছে, আমার এক কলিগ আছে। তাকে আমি অনেক দিন বলছি, ভাই আমি একটা ক্যামেরা কিনব। আমাকে একটু হেল্প করেন, কী ক্যামেরা কিনব। সে আমাকে খুব নেগলেট করে বলেছিল তুমি ক্যামেরা কিনে কী করবে? সবার সামনে ভরা রুমে। খুব নেগলেট করে বলেছে। এটা আমার খুব ইগোতে লাগছে। আমি খুব জেদি টাইপের একটা ছেলে। একটা মানুষের জেদ যে তাকে কোন জায়গায় নিয়ে আসতে পারে তার একটা উদাহরণ আমি।
পরে আমি নেটে ঘাঁটাঘাঁটি করে আমার পছন্দ মতো ১ লাখ টাকা দামের ক্যানন সেভেনটি ডি, সাথে লেন্সসহ একটা ক্যামেরা কিনলাম। এরপর ছবি-টবি তুলতাম।
শুরুতে আমার ন্যাচার ভালো লাগতো, পোকা-মাকড়, এগুলো ভালো লাগত। প্রকৃতির ছবি তুলতাম। বোটানিক্যাল গার্ডেনে চলে যেতাম। যেকোনো ন্যাচারের ছবি তুলতাম। আমার ফুলের ছবি তুলতে ভালো লাগত, ফুলের ছবি তুলতাম। পরে একটা ম্যাক্রো লেন্স কিনলাম। যেন আরও ক্লোজ আর ডিটেইল ছবিতে পাই। এই ছবিগুলো তোলা শুরু করলাম। ছবিগুলো তুলে বিভিন্ন ফেসবুক গ্রুপে সাবমিট করতাম। তখন অনেকগুলো জনপ্রিয় ফেসবুক গ্রুপ ছিল। সবাই অনেক ভালো ভালো প্রশংসা করত; ক্রিটিক করত। অনেকে আবার নেগেটিভ কমেন্ট করত যে, এই ছবি আমি তুলি নাই, অন্য কারো ছবি। এত ভালো হয়ে যেত দুই-একটা ছবি। এটা খুব নেগেটিভলি নিত তারা। বলত র ফাইল পাঠাও। এমন অনেক নেগেটিভ মন্তব্য করত। নতুন ফটোগ্রাফার এসে এই ছবি তোলার কথা না। তখন আমার ভিতরে আরও একটা জেদ কাজ করল। আমি একবার পাবলিকলি বলছিলাম, ১০ বছর ধরে মিডিয়াতে চাকরি করি, সিনে ফটোগ্রাফির ওপরে। আমার এর ওপর পড়াশোনাও আছে, একসময় ইচ্ছে ছিল বিজ্ঞাপন তৈরি করব। কখনো ফটোগ্রাফি করবো, ফটোগ্রাফার হব এই চিন্তা ছিল না।
জেদ থেকে ফেসবুক স্ট্যাটাস
তখন ফেসবুকে একটা স্ট্যাটাস দিয়েছিলাম, আমি ১০ বছর ধরে ক্যামেরার পেছনে কাজ করি। আমি যদি ১০ বছর ধরে ফটোগ্রাফি করতাম তাহলে আমি ওয়ার্ল্ডের মধ্যে বেস্ট ফটোগ্রাফার হতাম। তখন আবেগ থেকে এই কথাটা বলেছিলাম। এটা নিয়ে অনেকে খুব হাসাহাসি করেছে, কিন্তু আমার এখনও ১০ বছর হয়নি ফটোগ্রাফিতে। আমি ওয়ার্ল্ডের মধ্যে ওয়ান অব দ্য বেস্ট ফটোগ্রাফার হয়েছি কি না বলতে পারবো না, কিন্তু বলতে পারি বাংলাদেশের মধ্যে আমি ওয়ান অব দ্য বেস্ট ফটোগ্রাফার। কারণ আমার ইন্টারন্যাশনালি যত অ্যাওয়ার্ড, যত প্রাইস পেয়েছি, এটা কম ফটোগ্রাফারেরই আছে বাংলাদেশে। আমার বেশিরভাগ অ্যাওয়ার্ডই ছিল মানিটরি প্রাইজ। মানে প্রাইজমানি। ওখান থেকে আমার যাত্রা শুরু।
ন্যাচার থেকে ফেস্টিভ্যাল ফটোগ্রাফিতে
ধীরে ধীরে ডিভাইস আপডেট করলাম। পরে দেখলাম যে না, ন্যাচার ফটোগ্রাফি করে আসলে তেমন কিছু করা যাচ্ছে না। বিভিন্ন কনটেস্টে এসব ছবি দিলে ওদের ওয়ার্ল্ড লাইফ ফটোগ্রাফি এত ভালো ছবি যে, আমরা ফাইট দিয়ে পারছি না। মানে আমার ছবি হচ্ছে না ন্যাচারে।
পরে দেখলাম পরিচিত অনেক ফটোগ্রাফাররা বিভিন্ন ফেস্টিভ্যালে ছবি তোলে। পরে আমি আস্তে আস্তে ওদিকে সুইচ করলাম। বিভিন্ন ইভেন্টে যাই ফেস্টিভ্যালের ছবি তুলি এবং সেগুলো বিভিন্ন কনটেস্টে দেয়া শুরু করলাম। দেখলাম খুব দ্রুতই অনেকগুলো অ্যাওয়ার্ড পেয়ে যাচ্ছি। তখনও আমি ফটোগ্রাফির অনেক কিছুই জানি না। কিন্তু লাকিলি বেশ ভালো ভালো কয়েকটা অ্যাওয়ার্ড পেয়ে যাওয়াতে কনফিডেন্সটা বেড়ে গেল। তখন আমার মনে হলো সিরিয়ালি কিছু করতে হবে।
ফটোগ্রাফি এখন প্যাশন
যে ফটোগ্রাফি কখনোই আমার শখ ছিল না, সে ফটোগ্রাফিই এখন আমার প্যাশন। অনেকটা জেদ নিয়ে ফটোগ্রাফিটা করি আমি। এর জন্য অনেক সেক্রিফাইস করেছি আমি। চাকরি করে, পরিবার সামলিয়ে, দিন-রাত এর পেছনে আমি সময় দিয়েছি। প্রচুর পড়াশোনা করেছি। অনেক মানুষের ছবি দেখেছি। কী ধরণের ছবি তুললে আমি ইন্টারন্যাশনালি বিট দিতে পারব। ওয়ার্ল্ডের ভালো ভালো ফটোগ্রাফার তাদের সঙ্গে ফাইট দিয়ে একটা পুরস্কার আনা অনেক কঠিন একটা বিষয়। সেখানে বাংলাদেশ থেকে একটি ছেলে তার ছবি নিয়ে পার্টিসিপেট করে অ্যাওয়ার্ড আনা অনেক কঠিন। কারণ তাদের ছবি তোলার অনেক স্কোপ থাকে, সুযোগ-সুবিধা থাকে, অনেক দামি দামি ডিভাইস সেটআপ ব্যবহার করে। সেখানে আমাদের এই লিমিটেশনের মধ্যেও আমরা ইন্টারন্যাশনালি ভালো করতেছি। এটা অনেক বড় একটা বিষয়।
আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতায় ছবি জমা
প্রথম ২০১৬ সালের শেষের দিকে ইন্টারন্যাশনাল একটা কনটেস্টে ছবি জমা দিই। সেটা ছিল চায়না-বাংলাদেশ একটা ইন্টারন্যাশনাল কনটেস্ট ছিল। ওটার রেজাল্ট ২০১৭ সালে দিয়েছিল। সেখানে আমি ফার্স্ট প্রাইজ ও থার্ড প্রাইজ পাই। সেখানে আমি পাঁচটি ছবি সাবমিট করেছিলাম। তখন একদম নতুন ফটোগ্রাফিতে। এ অ্যাওয়ার্ড ছিল আমার অনেক বড় প্রেরণা।
পুরস্কার
আসলে প্রত্যেকটা অ্যাওয়ার্ডের পর সেসব একটা এক্সেল শিটে লিখে রেখেছিলাম। সেই হিসাবে কয়েক দিন আগে তাকিয়ে দেখলাম, ৫ শতাধিক অ্যাওয়ার্ড পার হলো। আমি শুরু থেকেই যেসব কনটেস্টে অংশ নিতাম, অ্যাওয়ার্ড পেতাম, সেসব আমার ফেসবুকে সেভ করে রাখতাম। এর কারণ হলো নতুনরা যাতে অনুপ্রাণিত হয়। শুরুর দিকে আমি যাদের বলতাম, ভাই কীভাবে ছবি সাবমিট করব, কীভাবে অংশ নিব, তাদের কাছে ওভাবে সাপোর্ট পাইনি। অনেক সিনিয়রদের ভেতর দেখতাম কেমন গোঁড়ামি টাইপ একটা ভাব। নতুনদের কোনো অর্জন বা অ্যাওয়ার্ড পেলেও তারা ইন্সপায়ার তো করে না; বরং নেগেটিভলি এক্সপোজ করে। সেখান থেকে আমারও মনে হয়, আমিও তো নতুন, কিন্তু আর যারা ফটোগ্রাফিতে আসবে, তারা যেন উৎসাহিত হয়। এ কারণে সব কিছু ফেসবুকে দেই।
ফটোগ্রাফি করতে করতে অনেকে হতাশ হয়ে যায়। আমরা একসঙ্গে যারা ফটোগ্রাফি শুরু করেছিলাম, তারা অনেকেই হারিয়ে গেছে। তার একটা কারণ হলো তারা এখান থেকে রিটার্ন পায়নি। ফটোগ্রাফির এক্সপেন্স যদি বহন করার সক্ষমতা না আসে, কতদিন কন্টিনিউ করা যায়।
ফটোগ্রাফি থেকে উপার্জন
দেখেন এভাবে বলা ঠিক কি না, তবে বলি ফটোগ্রাফি হলো হীরার খনি। এখানে অফুরন্ত হীরা আছে, আপনি যদি প্রপারলি জানেন হীরাটা কত নিচে গেলে তুলতে পারবেন, তাহলে ওই হীরাগুলো তুলে আনতে পারবেন। সেই একেকটি হীরা অনেক মূল্যবান। ফটোগ্রাফি করে যে একটা সাধারণ মানুষ কোথায় যেতে পারে কেউ চাইলে আমার কাছ থেকে সেই গল্প শুনতে পারে।
আমি দেখতাম এই শহরে লক্ষ লক্ষ ফ্ল্যাট, আমার একটা নাই। এই শহরে লক্ষ লক্ষ গাড়ি; আমার একটা পারসোনাল গাড়ি নাই। আমি যে চাকরি করি, তা দিয়ে এই শহরে একটা ফ্ল্যাট, একটা গাড়ি, কত বছর যে লাগত, আমি জানি না, কিন্তু আমি মাত্র দুই বছরের ফটোগ্রাফির প্রাইজমানি দিয়ে একটা ফ্ল্যাট কিনেছি। আমার এক মাসের ইনকাম দিয়ে আমি গাড়ি কিনতে পারি। সেটাও হয়েছে আমার। তো একজন ফটোগ্রাফার ফটোগ্রাফি করে কী পরিমাণ ইনকাম করতে পারে, সেটা অনেকেরই ধারণার বাইরে। এখানে তো মাল্টিপল ইনকাম। শুধু যে কনটেস্টের প্রাইজ মানি, তা নয়। ইন্টারন্যাশনাল ম্যাগাজিন, পত্রিকা, বিভিন্ন জায়গায় পাবলিশ হবে সেখান থেকে আর্ন হবে। আমি অনলাইনে ইন্টারন্যাশনাল বিভিন্ন ইউনিভার্সিটিতে ক্লাস নিই। এখন বিভিন্ন কনটেস্টে জাজিংও করি। আসলে একজন ফটোগ্রাফারের অনেক দিক থেকে সুযোগ থাকে।
নতুনদের উদ্দেশে বার্তা
নতুন যারা ফটোগ্রাফি করবেন তাদের উদ্দেশে বলব, কেন ফটোগ্রাফি করবেন, সেটা আগে ডিসাইড করেন। কেউ যদি ভাবেন শখেই করব, কেউ যদি ভাবেন শুধু শখ না, এখান থেকে রিটার্ন নিব, তাহলে তাকে অন্যভাবে ফটোগ্রাফি করতে হবে। তাকে ইনভেস্ট করতে হবে। এই ইনভেস্ট নট অনলি মানি, এখানে প্রচুর শ্রম দিতে হবে, সময় দিতে হবে, লেগে থাকতে হবে এবং ট্রাই করতে হবে এনিহাউ এখান থেকে ভালো কিছু করব।
নোয়াখালীর সোনাইমুড়ীতে বসত বাড়ির যাতায়াতের পথ পাকা করাকে কেন্দ্র করে বহিরাগত সন্ত্রাসী দিয়ে একই পরিবারের মহিলাসহ ৭ জনকে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে জখম করার অভিযোগ পাওয়া গেছে।
১১ সেপ্টেম্বর (বৃহস্পতিবার) সকাল ১০ টার দিকে উপজেলার বারগাঁও গ্রামের রফিক মাস্টারের পুরাতন বাড়িতে এই ঘটনাটি ঘটে।
এ নিয়ে উপজেলার বারগাঁও গ্রামের মৃত লোকমান মিয়ার পুত্র ব্যবসায়ী তাজুল ইসলাম (৬১) বাদী হয়ে সোনাইমুড়ী থানায় বৃহস্পতিবার দুপুরে মামলা দায়ের করেছেন।
মামলার উল্লেখ করা হয়েছে, ভুক্তভোগী তাজুল ইসলামের মালিকানা সম্পত্তির উপর দিয়ে একই বাড়ির আব্দুল কাদেরের পুত্র গিয়াস উদ্দিন (৪০) ও তার সহযোগীরা জোরপূর্বক ঢালাই দিয়ে যাতায়াতের পথ নির্মাণ করছিল।এসময় বাধা দিলে তাকে অকথ্য ভাষায় গালমন্দ করে। ১১ সেপ্টেম্বর (বৃহস্পতিবার) সকাল ১০ টার গিয়াস উদ্দিন, তার সহযোগী আব্দুল মালেক ও আব্দুল লতিফ বহিরাগত সন্ত্রাসী এনে তাজুল ইসলামদের উপর হামলা চালায়। এ সময় ধারালো অস্ত্রের আঘাতে তাজুল ইসলাম (৬১),তার ছেলে বেলাল হোসেন জিসান( ২৩),তার স্ত্রী ফরিদা আক্তার (৫১),তার মেয়ে উম্মে হানি নিশি (১৮),ভাতিজা খোরশেদ আলম (৩৬),বড় ভাই মোস্তফা (৭০) ও বড় ভাইয়ের স্ত্রী ফাতেমা বেগম (৫৫) গুরুতর আহত হয়। পরে তাদের উদ্ধার করে স্থানীয়রা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে। খবর পেয়ে থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
সোনাইমুড়ী থানার ওসি মোরশেদ আলম জানান, বাড়ির যাতায়াতের পথে ঢালাই দেওয়াকে কেন্দ্র করে হামলা হয়েছে। একই পরিবারের সাতজন গুরুতর আহত হয়েছে। থানায় মামলা হয়েছে।হামলাকারীদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।
আইনের আশ্রয় নিতে গিয়েছিলেন স্ত্রী। কিন্তু সেখানে পৌঁছানোর আগেই স্বামীর নির্মমতার শিকার হয়ে প্রাণ গেল জুথি খাতুন (২৩) নামের এক তরুণ গৃহবধূর। বৃহস্পতিবার (১১ সেপ্টেম্বর) সকাল সাড়ে ১০টার দিকে নওগাঁ সদর উপজেলার কাঠাতলী এলাকায় এই মর্মান্তিক ঘটনা ঘটে।
নিহত জুথি সদর উপজেলার আনন্দনগর মৃধাপাড়া গ্রামের ঝুন্টু প্রামানিকের মেয়ে। প্রেম করে বিয়ে করলেও, ভালোবাসার সেই সম্পর্ক রূপ নেয় বিভীষিকায় শেষ পর্যন্ত প্রাণটাই গেল তরুণীটির।
জুথির বাবা ঝুন্টু প্রামানিক কাঁদতে কাঁদতে বলেন, প্রায় এক বছর আগে প্রেম করে গাজীপুরের তানভীর নামের এক ছেলেকে বিয়ে করেছিল আমার মেয়ে। প্রথম দিকে সব ঠিকঠাকই ছিল। কিন্তু কিছুদিনের মধ্যে জুথি জানতে পারে, তানভীরের আগে থেকেই আরেকজন স্ত্রী রয়েছে। এ নিয়ে শুরু হয় কলহ। মেয়েটা অনেক সহ্য করেছে। শেষে অন্যায় মেনে না নিয়ে নিজ গ্রামে ফিরে আসে এবং আদালতের দ্বারস্থ হয়।
বৃহস্পতিবার ছিল সেই মামলার শুনানির তারিখ। সকালে আদালতে যাওয়ার উদ্দেশ্যে বাড়ি থেকে বের হয় জুথি। কিন্তু তার আর আদালত পর্যন্ত যাওয়া হলো না। কাঠাতলী মোড়ে পৌঁছাতেই ওঁত পেতে থাকা তানভীর আচমকা ছুরি হাতে জুথির ওপর ঝাঁপিয়ে পড়ে। একের পর এক ছুরিকাঘাত করে পালিয়ে যায় সে। আশপাশের লোকজন দ্রুত জুথিকে উদ্ধার করে নওগাঁ সদর হাসপাতালে নিলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
ঘটনার বর্ণনায় চোখের জল ধরে রাখতে পারেননি প্রত্যক্ষদর্শীরাও। সকালের ব্যস্ত সড়ক হঠাৎই থমকে যায় রক্তাক্ত দৃশ্যের সামনে। “মেয়েটা রাস্তায় দাঁড়িয়ে ছিল। হঠাৎ এক ছেলেকে দৌড়ে এসে ছুরি চালাতে দেখি। আমাদের চোখের সামনে সব হয়ে গেল বলেন এক প্রত্যক্ষদর্শী।
এ বিষয়ে নওগাঁ সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নূরে আলম সিদ্দিকী জানান, খবর পেয়েই ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। এটি অত্যন্ত দুঃখজনক ও নিন্দনীয় ঘটনা। তদন্ত চলছে। ঘাতককে দ্রুত গ্রেফতারের জন্য প্রয়োজনীয় সব ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।
স্থানীয় সচেতন মহল বলছেন, এই ঘটনায় শুধু এক তরুণীর জীবনই নিভে গেল না, প্রশ্ন উঠেছে সমাজব্যবস্থার প্রতিও। যেখানে একজন নারী নিজেই অন্যায়ের বিরুদ্ধে সাহস করে আইনের দ্বারস্থ হয়েছিল, সেখানেও নিরাপদ থাকলেন না তিনি। মানুষের মুখে মুখে এখন একটাই কথা, জুথির কী দোষ ছিল? শুধু একজন ভালোবাসা চাওয়া, সম্মান চাওয়া নারী তার জন্যই কি জীবন দিতে হলো।
২০২৫-২৬ অর্থ বছরের খরিপ-২ মৌসুমে কৃষি প্রণোদনা ও পূনর্বাসন কর্মসূচির আওতায় মাসকলাই উৎপাদন বৃদ্ধির লক্ষ্যে টাঙ্গাইলের ভূঞাপুরে ২০০ জন ক্ষুদ্র ও প্রান্তিক কৃষকদের মাঝে বিনামূল্যে মাসকলাই বীজ এবং সার বিতরণ কার্যক্রম উদ্বোধন করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার ( ১১ সেপ্টেম্বর) সকালে উপজেলা পরিষদ চত্বরে উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উদ্যোগে এবং উপজেলা প্রশাসনের সহযোগিতায় সুবিধাভোগী প্রতি কৃষকদের মাঝে ৫ কেজি মাসকলাই বীজ, ১০ কেজি ডিএপি সার ও ৫ কেজি এমওপি সার প্রদান করা হয়।
এ সময় উপজেলা কৃষি অফিসার মো. মোখলেছুর রহমানের সভাপতিত্বে উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা আব্দুল্লাহ আল মাসুদ, উপ-সহকারী উদ্ভিদ সংরক্ষণ কর্মকর্তা নাজমুল হাসান মামুনসহ বিভিন্ন ব্লকের উপসহকারীরা উপস্থিত ছিলেন।
চট্টগ্রাম বোয়ালখালী দাবিকৃত চাঁদা না দিয়ে থানায় অভিযোগ করায় হিজড়াদের ওপর সংঘবদ্ধ হামলা করেছে দুর্বৃত্তরা। এতে অন্তত ১২ জন হিজড়া আহত হয়েছেন।
বুধবার (১০ সেপ্টেম্বর) রাত ৯টার দিকে পৌর সদরের গোমদণ্ডী ফুলতল এলাকায় এ হামলার ঘটনা ঘটেছে।
আহতরা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা নিয়েছেন। তাদের মধ্যে আছেন—সিমি (২৮), অপর্না (১৭), তিশা (২৭), নদী (২৯), লতা (৩০), নাদিয়া (৩৮), মেঘলা (২৯), দুষ্টু (৩০), শিখা (৩০), বদ্দুনি (৪২) সহ আরও কয়েকজন।
দক্ষিণ জেলা হিজড়া সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক সুফিয়া হিজড়া বলেন, 'পৌর সদরের মীরপাড়ার বাসিন্দা ফারুক ওরফে অনিক (৩০) আমাদের কাছ থেকে ১ হাজার টাকা করে মাসোহারা দাবি করে আসছিলো। এজন্য প্রায় সময় ভীতি দেখাতে থাকে। গত ৮ সেপ্টেম্বর বিকেল ৫টার দিকে তৃষ্ণা হিজড়াকে ফারুক জানায় বাজার থেকে সংগ্রহ করা টাকা থেকে ভাগ দিতে হবে নয়তো সে দেখে নিবে।'
'এ বিষয়ে বুধবার সন্ধ্যার পর বোয়ালখালী থানায় অভিযোগ দিয়ে বাসায় ফেরার পথে গাড়ির গতিরোধ করে ফারুকের নেতৃত্বে ২০-২৫ লোক লাঠিসোটা দিয়ে সংঘবদ্ধ হামলা চালিয়েছে।'
'এসময় আমরা ২৪ জন হিজড়া ছিলাম। ওদের মারধরে বেশ কয়েকজন হিড়জা আহত হয়েছে বলে দাবি করেন এ হিজড়া নেত্রী।'
বোয়ালখালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মুহাম্মদ লুৎফুর রহমান বলেন, থানায় অভিযোগ করে হিজড়ারা বাসায় ফেরার পথে হামলার শিকার হয়েছেন বলে জানতে পেরেছি।
খবর পেয়ে পুলিশ তাৎক্ষণিকভাবে ঘটনাস্থলে যায়। এ ঘটনায় মামলা রেকর্ড করা হয়েছে এবং আসামিদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।
প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দিন বলেছেন, আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নিবন্ধিত প্রবাসী ভোটার ও জাতীয় পরিচয়পত্রধারী (এনআইডি) বাংলাদেশিরা পোস্টাল ব্যালটের মাধ্যমে তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারবেন।
এজন্য ‘পোস্টাল ব্যালট বিডি’ নামে একটি অ্যাপ তৈরির কাজ চলমান রয়েছে বলে তিনি জানান।
আজ ঢাকায় প্রাপ্ত এক তথ্যবিবরণীতে জানানো হয়, সম্প্রতি বাংলাদেশ কনস্যুলেট জেনারেল, টরন্টো আয়োজিত ‘স্মার্ট জাতীয় পরিচয়পত্র বিতরণের কার্যক্রমের উদ্বোধন এবং প্রবাসীদের ভোট প্রদানে উদ্বুদ্ধকরণ’ বিষয়ক আলোচনা অনুষ্ঠানে বাংলাদেশি প্রবাসীদের সাথে মতবিনিময়কালে তিনি এসব কথা বলেন।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে প্রধান নির্বাচন কমিশনার বিদেশে প্রবাসী ভোটার নিবন্ধন ও জাতীয় পরিচয়পত্র বিতরণ কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন এবং বাংলাদেশে অনুষ্ঠেয় আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ভোট প্রদানের জন্য প্রবাসীদেরকে আহ্বান জানান।
এসময় তিনি বাংলাদেশের নির্বাচনের সামগ্রিক চিত্র ও নির্বাচন কমিশনের প্রস্তুতি তুলে ধরার পাশপাশি প্রবাসে অবস্থানরত বাংলাদেশিদের ভোটার নিবন্ধন ও আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তারা কীভাবে ভোট প্রদান করবেন সে বিষয়ে আলোচনা করেন।
প্রবাসী বাংলাদেশিরা প্রধান নির্বাচন কমিশনারকে কানাডা সফরে এসে তাদের সাথে মতবিনিময় করার জন্য ধন্যবাদ জ্ঞাপন এবং এ ধরনের মতবিনিময় সভা আয়োজন করায় কনস্যুলেটের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে।
কনসাল জেনারেল মো. ফারুক হোসেনের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত সভায় শতাধিক প্রবাসী বাংলাদেশি অংশগ্রহণ করে এবং প্রবাসীরা নির্বাচন কমিশনারের সাথে বিষয়ভিত্তিক মুক্ত আলোচনা ও প্রশ্নোত্তর পর্বে অংশ নেন।
মতবিনিময় সভায় অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন কানাডায় বসবাসরত ব্যবসায়ী, ডাক্তার, প্রকৌশলী, শিক্ষাবিদ, সাংবাদিক, শিক্ষার্থীসহ বিভিন্ন পেশাজীবী প্রবাসী বাংলাদেশী।
নেপালের সাবেক প্রধান বিচারপতি সুশীলা কার্কি দেশটির অন্তর্বর্তীকালীন নেতা হওয়ার জন্য ‘জেন জি’ বিক্ষোভকারীদের প্রথম পছন্দ।
বৃহস্পতিবার জেন জি’র একজন প্রতিনিধির বরাত দিয়ে কাঠমাণ্ডু থেকে বার্তা সংস্থা এএফপি এ খবর জানিয়েছে।
একজন সামরিক মুখপাত্র বলেন, সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল অশোক রাজ সিগডেল বুধবার সংশ্লিষ্ট স্টেকহোল্ডারদের সঙ্গে পরামর্শ করেছেন এবং জেন জি প্রতিনিধিদের সঙ্গে একটি বৈঠক করেছেন।
তবে তিনি আন্দোলনের এই সংগঠনের বিষয়ে বিস্তারিত কিছু জানাননি।
সেনাবাহিনী ৩ কোটি মানুষের হিমালয়ের এই দেশে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনতে চাইছে।
মঙ্গলবারের সহিংসতায় গত দুই দশকের মধ্যে সবচেয়ে ভয়াবহ পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। প্রধানমন্ত্রী ক্ষমতাচ্যুত হন এবং সংসদ ভবনে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়।
বৈঠকে উপস্থিত থাকা রক্ষা বাম বলেন ‘এ মুহূর্তে সুশীলা কার্কির নামই অন্তর্বর্তী সরকারের নেতৃত্বে আসার জন্য আলোচনায় আছে। আমরা এখন প্রেসিডেন্টের সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় আছি।
তিনি এএফপিকে জানান, আমরা সেনাপ্রধানের সঙ্গে দেশের ভবিষ্যৎ নিয়ে কথা বলেছি। আলোচনাটি ছিল কীভাবে আমরা দেশকে এগিয়ে নিতে পারি, দেশের শান্তি ও নিরাপত্তা বজায় রাখতে পারি— তা নিয়ে।
৭৩ বছর বয়সী নেপালের প্রথম নারী সুপ্রিম কোর্ট প্রধান বিচারপতি কার্কি এএফপিকে বলেন, সংসদ এখনও বহাল আছে। এগিয়ে যাওয়ার পথ খুঁজে বের করার জন্য বিশেষজ্ঞদের একত্রিত হওয়া দরকার।
তবে আন্দোলনকারীদের এই পছন্দ যে সর্বসম্মত নয়, সে বিষয়ে সতর্ক করেছেন অন্যরা। পরস্পরবিরোধী যুক্তি ও বেশ কয়েকটি নাম প্রস্তাব করা হয়েছে।
অনলাইন প্ল্যাটফর্ম ডিসকোর্ডে অনুষ্ঠিত একটি ভার্চুয়াল সভায় হাজারো তরুণ তাদের ভিন্ন ভিন্ন কর্মসূচি নিয়ে আলোচনা করেছেন এবং কে তাদের প্রতিনিধিত্ব করবেন সে বিষয়ে বিতর্ক করেছেন। এসব আলোচনায় বিভিন্ন যুক্তি ও প্রস্তাবিত নাম উঠে এসেছে।
সাংবাদিক প্রণয় রানা বলেন, এখানে বিভাজন আছে। এমন বিকেন্দ্রীভূত আন্দোলনে প্রতিদ্বন্দ্বী স্বার্থ ও ভিন্নমত থাকাই স্বাভাবিক।
বৃহস্পতিবার দ্বিতীয় দিনের মতো সেনারা রাজধানীর রাস্তায় টহল দিয়েছে। শহর শান্ত থাকলেও বিভিন্ন স্থানে একাধিক সেনা চৌকি বসানো হয়েছে।
সোমবার কাঠমাণ্ডুতে সরকারের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম নিষিদ্ধকরণ ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে বিক্ষোভ শুরু হয়।
কিন্তু তা দ্রুত সারাদেশে ক্ষোভের বিস্ফোরণে রূপ নেয় এবং সরকারি ভবনে অগ্নিসংযোগ করা হয়।
এসময় নিরাপত্তা বাহিনীর প্রাণঘাতী দমন অভিযানে অন্তত ১৯ জন নিহত হয় ।
কক্সবাজারের মহেশখালীতে দুর্বৃত্ত গুলিতে পুলিশের ৩সদস্য গুলিবিদ্ধ হয়ে গুরুতর আহত হয়েছে। বুধবার দিবাগত রাতে উপজেলার মাতারবাড়ি কয়লাবিদ্যুৎ প্রকল্প সংলগ্ন কোহেলিয়া সেতুর পাশে এ ঘটনা ঘটে।
গুলিবিদ্ধরা হলেন, মহেশখালী থানার সহকারী উপ-পরিদর্শক (এএসআই) মোহাম্মদ সেলিম (৩৬), কনস্টেবল সোহেল (৪৪) ও কনস্টেবল মো. মাসুদ (৩৬)। এদের মধ্যে দুজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, মাতারবাড়ি কয়লাবিদ্যুৎ প্রকল্প থেকে নিয়মিত চোরাই মালামাল বের হয়। এসব মালামাল বহনকারী গাড়ি আটকিয়ে একদল ডাকাত দীর্ঘদিন ধরে চাঁদাবাজি, ছিনতাই ও ডাকাতি করে আসছে। মঙ্গলবার রাতেও ১০-১৫ জনের একটি সংঘবদ্ধ ডাকাতদল ডাকাতির প্রস্তুতি নেয়।
খবর পেয়ে পুলিশের টহল টিম ঘটনাস্থলে পৌঁছে ডাকাতদের ধাওয়া দিলে তারা পুলিশকে লক্ষ্য করে গুলি চালায়। এতে তিন পুলিশ সদস্য গুলিবিদ্ধ হন। আহতদের দ্রুত বদরখালী জেনারেল হাসপাতালে নেওয়া হয়। প্রাথমিক চিকিৎসার পর তাদের কক্সবাজার সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
মহেশখালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মঞ্জুরুল হক ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, ‘আহত পুলিশ সদস্যরা চিকিৎসাধীন আছেন, ঘটনায় জড়িতদের আটক করতে পুলিশের একাধিক টিম কাজ করছে।
মন্তব্য