গান, সিনেমা নিয়ে মাঝে মাঝেই দ্বন্দ্ব দেখা যায় মালিকানা নিয়ে, কখনও আবার অর্থ নিয়ে। অনেক সময় এই দ্বন্দ্ব চলতে থাকে বছরের পর বছর। অনেক সময় নিজেদের মধ্যে সমঝোতার মাধ্যমে সেসব সমস্যার সমাধান হয়।
সম্প্রতি বাংলাদেশ কপিরাইট অফিস অনেক বিষয়ের সমাধান করছে। কপিরাইট ইস্যু নিয়ে বিভিন্ন উদ্যোগ, আলোচনার মাধ্যমে আইন প্রতিষ্ঠা করতে চাইছেন তারা। আগের অ্যানালগ সিস্টেম থেকে বর্তমানের ইউটিউব- সব বিষয় নিয়েই কাজ করছেন তারা।
বুধবার তেমন কিছু সমস্যার শুনানি ছিল কপিরাইট অফিসে। যার মধ্যে যুবতী রাধে, শেলী কাদের, আসিফ আকবর-শফিক তুহিন ইস্যু অন্যতম।
ইমপ্রেস টেলিফিল্ম প্রযোজিত ‘নিঝুম অরণ্যে’ সিনেমার গানের ভিসিডি ও ডিভিডি রাইট বাজারজাতকরণের চুক্তি জি-সিরিজের থাকলেও ২০১৭ সালে পুরো চলচ্চিত্রটি জি-সিরিজের কর্ণধার নাজমুল হক ভূঁইয়া তাদের প্রতিষ্ঠানের ইউটিউব চ্যানেলে প্রচার করে।
এটি নিয়ে কপিরাইট অফিসে ইমপ্রেস টেলিফিল্মের বিরুদ্ধে আপিল করেন নাজমুল হক ভূঁইয়া।
শুনানিতে ইমপ্রেস টেলিফিল্মের পক্ষ থেকে কেউ ছিলেন না। নাজমুল হক ভূঁইয়ার পক্ষ থেকে কপিরাইট অফিসকে জানানো হয়, চ্যানেল আইয়ের সঙ্গে তাদের মৌখিক একটা সমঝোতা হয়েছে। পরবর্তী সময়ে তারা কপিরাইট অফিসে লিখিতভাবে বিষয়টি জানাবে।
আসিফের বিরুদ্ধে অন্যের গান ডিজিটালে রূপান্তর করে প্রতারণার মাধ্যমে বিপুল অর্থ উপার্জন করার অভিযোগ আনেন শফিক তুহিন। এ ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে কপিরাইট অফিসে আপিল করেন আসিফ আকবর।
সেই আপিলের শুনানি ছিল বুধবার। শুনানিতে আসিফ আকবের পক্ষ থেকে আইনজীবী উপস্থিত থাকলেও ছিলেন না শফিক তুহিন। তিনি সময়ের আবেদন করেছেন। বোর্ড শফিক তুহিনের আবেদন মঞ্জুর করেছে।
নিউজবাংলাকে কপিরাইট অফিসার জাফর রাজা চৌধুরী বলেন, আগামী মাসেই আরেকটা সভা করা হবে।’
২০০১ সালের ৩০ জানুয়ারি প্রকাশ পায় আসিফ আকবরের গাওয়া তুমুল জনপ্রিয় গান ‘ও প্রিয়া তুমি কোথায়’। গানটি নিয়ে ঝামেলা চলছে লেবেল প্রতিষ্ঠান সাউন্ডটেক এবং গীতিকার-সুরকার ইথুন বাবুর।
সাউন্ডটেকের করা আপিলের শুনানিতে বুধবার ‘ও প্রিয়া তুমি কোথায়’ গানটির সুরকার-গীতিকার সময় বাড়ানোর দাবি করেন এবং তাকে সময় বাড়িয়ে দেয়া হয়।
আব্বাজান, স্বামী স্ত্রীর যুদ্ধ, লুটতরাজ, পিতা মাতার আমানত, মনের সাথে যুদ্ধ, আমি জেল থেকে বলছি, দুই বধূ এক স্বামী নামক সাতটি পূর্ণদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্রের কপিরাইট চুক্তিপত্র বাতিল আবেদন করেছেন প্রয়াত মান্নার স্ত্রী শেলী কাদের। নাজমুল হক ভূঁইয়ার সঙ্গে শেলীর এ চুক্তি ছিল।
সাতটি পূর্ণ্যদৈর্ঘ্য সিনেমার কমার্শিয়াল রাইট শেলীই দিয়েছেন নাজমুল হক ভূঁইয়াকে। যার বিনিময়ে তিনি প্রথমে ২০ লাখ, পরে ৫ লাখ এবং শেষে ২ লাখ ১০ হাজার টাকা নিয়েছেন। তিনি নিজেই চুক্তিতে স্বাক্ষর করেছেন এবং সেই চুক্তিপত্র সঠিক বলে নিশ্চিত করেছেন।
এখন শেলীর দাবি, সেই চুক্তিপত্র তিনি বাতিল করতে চান। কারণ সেই সব কনটেন্ট ২০১০ থেকে বা ২০১২ থেকে এখন পর্যন্ত মিলিয়ন মিলিয়ন ভিউ হয়েছে। সেখান থেকে তিনি অনেক টাকা পেতে পারতেন। অনলাইন মিডিয়া সম্পর্কে তার ভালো ধারণা ছিল না। তাই না বুঝেই তিনি সে চুক্তি করে দিয়েছেন।
কপিরাইট আইনের সেকশন ২০ ধারার সাবসেকশন ২-এ বলা আছে, কোনো কপিরাইট প্রণেতা যদি মনে করেন যে কপিরাইটের চুক্তিটা তার জন্য ভালো হয়নি, তা হলে তিনি তা বাতিলের আবেদন করতে পারবেন।
এ ক্ষেত্রে কপিরাইট বোর্ড দুই পক্ষের শুনানি নেবে। যদি তা যুক্তিসঙ্গত হয়, তা হলে বোর্ড অবশ্যই সেটি বাতিলের সিদ্ধান্ত দেবে।
শেলীর এমন আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে অন্যপক্ষ জানিয়েছে, যদি এই ধরনের চুক্তি বাতিল হয় তা হলে এ অঙ্গনে মারাত্মক অরাজকতা তৈরি হবে। অনেকেই এটা করতে চাইবে। কেউ আজ চুক্তি করে এক বছর পরেই বলবে যে, সে চুক্তি বাতিল করতে চায়।
এ বিষয়ে কপিরাইট বোর্ড সিদ্ধান্ত দিয়েছে যে, ‘বিষয়টি পরীক্ষা-নিরীক্ষা করার জন্য একটি কমিটি গঠন করে দেব। সেই কমিটি শেলীর আবেদন পর্যালোচনা করে দেখবে, কেন শেলী কাদের এটি চাচ্ছেন এবং যদি চুক্তি বাতিল হয়, সে ক্ষেত্রে কী কী সমস্যা হতে পারে। এসব অ্যানালাইসিস করে কমিটি একটা রিপোর্ট দাখিল করবে পরের বোর্ডসভায়। এর ভিত্তিতে বোর্ড একটি পরিপূর্ণ সিদ্ধান্ত দেবে।’
‘যুবতী রাধে’ গান নিয়ে সরলপুর ব্যান্ডের সঙ্গে আইপিডিসির সমস্যার পরিপ্রেক্ষিতে কপিরাইট অফিসে শুনানি হয় বুধবার।
শুনানিতে আইপিডিসির পক্ষে বলা হয়, ‘যুবতী রাধে’ গানটি বিভিন্ন অনলাইন প্ল্যাটফর্মে পাওয়া যায়। গানটির মোট ৩২টি লাইনের মধ্যে ১১টি লাইন বিভিন্ন জায়গা থেকে হুবহু কপি করা, তিনটি লাইনের ভাবার্থসহ আংশিক মিল আছে, তা ছাড়া গানটির সুর প্রাচীন কীর্তন সুরের সঙ্গে যথেষ্ট মিলে যায়।’
সরলপুরের বক্তব্য ছিল, আপনারা (আইপিডিসি) যদি কপিরাইট অফিসে খোঁজ নিতেন, তা হলে তো জানতে পারতের গানটি কপিরাইট করা। আর যখন কেউ কোনো কিছু অবলম্বন করে সৃষ্টি করে, তখন সেই অভিযোজিত বিষয়টিও নতুন হয়ে ওঠে এবং সেই রাইটটাই আমরা নিয়েছি। সে কারণে কপিরাইটটি আমাদের এবং আইপিডিসি নতুন করে কাজটি করার কারণেই কপিরাইট লঙ্ঘিত হয়েছে।
তবে সমস্যা হয়েছে সরলপুরের দেয়া অঙ্গীকারনামায়। যখন কেউ কপিরাইটের জন্য রেজিস্ট্রেশন করে, তখন একটা স্টেটমেন্ট দিতে হয় সবাইকে। সরলপুর ব্যান্ডটি যথন ‘যুবতী রাধে’ গানটির কপিরাইট করে তখন তারাও স্টেটমেন্ট দিয়েছিল। সেখানে বলা হয়েছে, ‘আমরা (সরলপুর) কোথাও থেকে গানটি নকল বা অনুকরণ বা অনুসরণ করিনি।’
আইপিডিসি বলছে, এই যে তারা কপিরাইট রেজিস্ট্রেশনের সময়ই মিথ্যে স্টেটমেন্ট দিয়েছে। তারা তো ১১ লাইন হুবহু কপি করেছে; কিন্তু বলেছে যে কোথাও থেকে কপি করেনি। আর তারা (সরলপুর) ২-৩ বছর আগে গানটি কপিরাইট করে নিয়ে গেছে কিন্তু যখন ওয়েবে তুলেছে, তখন কোনো নোটিশ দেয়নি যে তাদের গানটি কপিরাইটকৃত, কপিরাইট আইন লঙ্ঘন হলে তারা ব্যবস্থা নিতে পারে।
প্রতিষ্ঠানটি আরও বলে, গানটি যেহেতু ময়মনসিংহ গীতিকা বা বিভিন্ন লোকগানের সঙ্গে মিলে যায় এবং সুরও কীর্তনের সঙ্গে মিলে যায় এবং আরও অনেক প্ল্যাটফর্মেই গানটি রয়েছে, তাই আমরা গানটি ইউটিউবে তুলেছিলাম। আমরা গানটি তোলার পর যখন প্রচুর ভিউ হয়, তখন সরলপুরের সমস্যা হলো, তারা শুধু আমাদের ব্যাপারে কপিরাইট লঙ্ঘনের অভিযোগ আনল এবং আমরা জানতে পারলাম যে গানটির কপিরাইট করা আছে। সঙ্গে সঙ্গে তাদের প্রতি সম্মান জানিয়ে আমরা গানটি নামিয়ে ফেলেছি।
কপিরাইট বোর্ড বলছে, আপনি (সরলপুর) অঙ্গীকারনামায় বলেছেন, আপনি কোনো অনুকরণ, অনুসরণ করেননি, এটা তো মিথ্যা স্টেটমেন্ট দিয়েছেন, বিভ্রান্ত করেছেন। তখন কেন বলেননি যে আপনারা আংশিক কপি করেছেন।
বিষয়টি ভালো করে বোঝাতে কপিরাইট অফিসার জাফর রাজা চৌধুরী নিউজবাংলাকে বলেন, ‘পাবলিক ডমেইনটাকে কেউ যদি কিছু কপি করে নিজের মতো তৈরি করে এবং তা যদি স্বীকার করে বা উল্লেখ করে, তা হলে নীতিগতভাবে তারা ঠিক থাকে। যেমন, রবীন্দ্রনাথের কোনো লেখা নিলে সেখানে তার ক্রেডিট দেয়া। কিন্তু যুবতী রাধে গানের ক্ষেত্রে তো সরলপুর সেটা করেনি।’
এমন প্রশ্নের উত্তরে সরলপুর ব্যান্ড পরিপূর্ণ কোনো জবাব দিতে পারেনি এবং তারা কিছু সময় চেয়েছে। সাত দিনের মধ্যে এর জবাব চাওয়া হয়েছে। সাত দিন পর এটার একটা জবাব কপিরাইট বোর্ড দিয়ে দিতে পারবে বলে জানানো হয়।
আরও পড়ুন:মুক্তির আগ থেকেই তুমুল আলোচনায় ছিল ভারতের দক্ষিণের কন্নড় সিনেমা কেজিএফ চ্যাপ্টার টু।
যেমনটি আলোচনায় ছিল, বাস্তবেও ঠিক তেমনই ঘটছে। গত ১৪ এপ্রিল মুক্তির পর থেকেই বক্স অফিসে দাপিয়ে বেড়াচ্ছে কেজিএফ টু।
ইতোমধ্যে হিন্দি ভার্সনে রেকর্ড গড়েছে সিনেমাটি। ৭ দিনে ২৫৫ কোটি রুপি আয় করেছে। যা বাহুবলি টুর রেকর্ডও ভেঙেছে।
হিন্দি ছাড়াও সিনেমাটি কন্নড়, তেলেগু, তামিল ও মালায়ালাম ভাষায় মুক্তি পেয়েছে। সব মিলিয়ে প্রথম সপ্তাহের শেষে সিনেমাটি বিশ্বব্যাপী ৭০০ কোটি রুপির বেশি ব্যবসা করেছে।
ভারতীয় চলচ্চিত্র বাণিজ্য বিশ্লেষক মনোবালা বিজয়বালান বৃহস্পতিবার দুপুরে এক টুইটে এ তথ্য জানিয়েছেন।
#KGFChapter2 ZOOMS past ₹700 cr milestone mark.
— Manobala Vijayabalan (@ManobalaV) April 21, 2022
২০১৮ সালের শেষের দিকে মুক্তি পায় প্রশান্ত নীল পরিচালিত এই ফ্র্যাঞ্চাইজির প্রথম সিনেমা কেজিএফ চ্যাপ্টার ওয়ান।
মুক্তির পর শুধু ভারতে নয়, বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে থাকা ভারতীয় সিনেমাপ্রেমীদের মধ্যে ব্যাপক সাড়া ফেলেছিল এটি। বক্স অফিসে গড়েছিল ইতিহাস।
গ্যাংস্টারদের নিয়ে গল্পের এই সিনেমায় দুর্দান্ত মারকুটে অভিনয় দিয়ে পুরো ভারত মাতিয়েছিলেন কন্নড় সুপারস্টার যশ। শুধু তা-ই নয়, এই সিনেমা দিয়ে দেশের বাইরেও লাখো ভক্ত-অনুরাগী জুটিয়েছেন এই অভিনেতা।
যশ বাদেও কেজিএফ চ্যাপ্টার টু-তে আরেক মুখ্য ভূমিকায় রয়েছেন বলিউড অভিনেতা সঞ্জয় দত্তকে। এ ছাড়া এতে গুরুত্বপূর্ণ সব চরিত্রে অভিনয় করেছেন রাবিনা ট্যান্ডন, প্রকাশ রাজ, শ্রীনিধি শেট্টির মতো তারকারা।
আরও পড়ুন:করোনাভাইরাস সংক্রমণের কারণে স্থগিত থাকা ২৭তম কলকাতা আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসব শুরু হচ্ছে আগামী ২৫ এপ্রিল নজরুল মঞ্চে। উৎসব চলবে ১ মে পর্যন্ত।
অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করবেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন বলিউড অভিনেতা ও আসানসোল লোকসভা উপনির্বাচনে বিজয়ী তৃণমূল এমপি শত্রুঘ্ন সিনহা।
আরও উপস্থিত থাকবেন অভিনেতা রঞ্জিত মল্লিক, প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায়সহ অনেকে।
উৎসব কমিটির চেয়ারম্যান পরিচালক রাজ চক্রবর্তী বলেন, ‘করোনার বিধিনিষেধ শিথিল হলেও আমাদের সাবধানে থাকতে হবে। সাবধানতার কথা বিবেচনা করেই এবার বাইরের কাউকে আমন্ত্রণ জানানো হয়নি।’
কিংবদন্তি পরিচালক সত্যজিৎ রায়ের জন্মশতবর্ষের শ্রদ্ধায় উৎসবের উদ্বোধনী ফিল্ম হিসেবে একই সঙ্গে নজরুল মঞ্চ ও রবীন্দ্র সদনে দেখানো হবে সত্যজিৎ রায় পরিচালিত অরণ্যের দিনরাত্রি।
পরিচালক অরিন্দম শীল সাংবাদিক সম্মেলনে বলেন, ‘সত্যজিৎ রায়ের জন্মশতবর্ষ উপলক্ষে সত্যজিতের সঙ্গে কাজ করা জীবিত শিল্পী ও কলাকুশলীদের এবার সংবর্ধনা দেয়া হবে।
এবার সত্যজিৎ রায় স্মারক বক্তব্য দেবেন পরিচালক সুজিত সরকার। সত্যজিতের জীবন ও কাজের ওপর প্রদর্শনীও থাকছে উৎসবে।
চলচ্চিত্র উৎসবের থিম ‘কান্ট্রি ফিনল্যান্ড’। কলকাতা শহরের ১০ হলে ৪০ দেশের ১৬৩টি সিনেমা দেখানো হবে এবারের উৎসবে।
২৭তম কলকাতা চলচ্চিত্র উৎসবে আটটি বিলুপ্তপ্রায় ভাষার সিনেমা দেখানো হবে। ভাষাগুলো হলো বোরো, টুলু, রাজবংশী, সান্তাড়, ও কোঙ্কনী ও কুড়ুম্বা।
চিদানন্দ দাশগুপ্ত, বুদ্ধদেব দাশগুপ্ত, দিলীপ কুমার, স্বাতীলেখা সেনগুপ্ত ও নিকোলাস জাঙ্কসোকে নিয়ে প্রদর্শনীর ব্যবস্থা থাকছে।
শিশির মঞ্চে তথ্য ও সংস্কৃতি দপ্তরে কলকাতা চলচ্চিত্র উৎসবের প্রস্তুতি নিয়ে সাংবাদিক সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন সংস্কৃতি দপ্তরের সচিব শান্তনু বসু, মন্ত্রী বিরবাহা হাঁসদা, উৎসব কমিটির চেয়ারম্যান রাজ চক্রবর্তী, পরিচালক গৌতম ঘোষ, পরিচালক অরিন্দম শীল, হরনাথ চক্রবর্তী, অভিনেত্রী জুন মালিয়া।
চলতি বছরের শুরুর দিকে বলিউড অভিনেত্রী প্রিয়াঙ্কা চোপড়া জানান যে, তার এবং নিক জোনাসের জীবনে সন্তান এসেছে। সারোগেসির মাধ্যমে তারা মা-বাবা হয়েছেন। তবে ছেলে না মেয়ে সন্তান তা জানাননি তিনি।
সেসময় বিভিন্ন সূত্রের বরাত দিয়ে ভারতীয় একাধিক সংবাদমাধ্যম জানায়, কন্যা সন্তানের মা-বাবা হয়েছেন তারকা দম্পতি।
কিন্তু কখনো সন্তানের নাম কিংবা ছবি, কোনোটাই প্রকাশ্যে আনেননি অভিনেত্রী।
তবে দেশটির একাধিক সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে, প্রিয়াঙ্কা-নিক তাদের মেয়ের নাম কী রেখেছেন তা এবার প্রকাশ্যে। তারকা দম্পতি কন্যার নাম রেখেছেন মালতী মারি চোপড়া জোনাস।
জন্ম সনদও নাকি হাতে পেয়েছে হলিউড কেন্দ্রিক একটি সংবাদ সংস্থা। সেই সূত্রেই জানা গেছে এই নাম।
সংস্কৃত এবং ল্যাটিন দুই শব্দ মিশিয়ে মেয়ের নাম রেখেছেন প্রিয়াঙ্কা-নিক। সংস্কৃতে ‘মালতী’ শব্দের অর্থ হল একরকম সুগন্ধযুক্ত ছোট সাদা ফুল অথবা চাঁদের আলো।
অন্যদিকে ‘মারি’ শব্দের অর্থ সমুদ্রকে রক্ষা করে যে নারী। মূলত মাতা মেরিকে অনেক সময় এই আখ্যা দেয়া হয়। যিশুর মাতা মেরিকে ফ্রাঞ্চে ‘মারি’ বলা হয়।
যদিও আনুষ্ঠানিকভাবে এখনও মেয়ের নাম বা ছবি কোনোটাই প্রকাশ্যে আনেননি তারকা জুটি।
যুক্তরাষ্ট্রের সান দিয়াগো শহরের এক হাসপাতালে গত ১৫ জানুয়ারি জন্ম হয়েছে নিক-প্রিয়াঙ্কার মেয়ের।
এরপর ২২ জানুয়ারি ইনস্টাগ্রামে এক পোস্টে সারোগেসির মাধ্যমে সন্তান হওয়ার কথা প্রকাশ্যে আনেন প্রিয়াঙ্কা।
প্রিয়াঙ্কার হাতে রয়েছে বেশ কয়েকটি আন্তর্জাতিক প্রোজেক্ট। এর মধ্যে টেক্স অফ ইউ রয়েছে মুক্তির অপেক্ষায়। পাশাপাশি আমাজনের টিভি সিরিজ সিটাডেল-এর শুটিংও শেষ করেছেন অভিনেত্রী।
সম্প্রতি এক পান মসলার কোম্পানির বিজ্ঞাপন করেন বলিউডের অভিনেতা অক্ষয় কুমার। শাহরুখ খান, অজয় দেবগনের মতো বলিউড তারকারা আগে থেকেই সেই সংস্থার ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসেডর।
তবে অক্ষয় এই বিজ্ঞাপনে অংশ হওয়ায় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নানা প্রতিক্রিয়া জানান তার ভক্ত-অনুরাগীরা। তাই তাদের ভাবনাকে সম্মান জানিয়ে ক্ষমা চেয়ে সেই সংস্থা থেকে নিজেকে সরিয়ে নিলেন অভিনেতা।
নিজের স্বাস্থ্য এবং শরীরচর্চা নিয়ে অত্যন্ত সজাগ অক্ষয়। যা তার চারপাশের লোকজন এবং অনুরাগীদেরও অনুপ্রেরণা জোগায়। তাই তিনি এই ধরনের বিজ্ঞাপনে অংশ নেয়ায় রুষ্ট হন অনেকেই।
এ জন্য বুধবার গভীর রাতে এক টুইট বার্তায় বিজ্ঞাপন থেকে সরে দাঁড়ানোর ঘোষণা করেন অক্ষয়।
সেই পোস্টে ক্ষমা প্রার্থনা করে অভিনেতা লেখেন, ‘আমি ক্ষমাপ্রার্থী। আমার অনুরাগী, শুভাকাঙ্ক্ষীসহ সবার কাছে ক্ষমা চাচ্ছি। গত কয়েক দিন ধরে আপনাদের কাছে থেকে যে প্রতিক্রিয়া পেয়েছি তা আমাকে গভীরভাবে প্রভাবিত করেছে। আমি তামাকজাত পণ্যের বিজ্ঞাপন কখনই করিনি এবং কোনো দিন করব না। বিমন ইলাইচির সঙ্গে আমার চুক্তি নিয়ে আপনাদের আবেগ বুঝতে পারছি। সেই আবেগকে সম্মান জানিয়েই বিনয়ের সঙ্গে সরে দাঁড়াচ্ছি।’
ওই বিজ্ঞাপন থেকে পাওয়া টাকা সমাজসেবার কাজে দান করে দেবেন বলেও জানিয়েছেন অক্ষয়।
তিনি লেখেন, ‘বিজ্ঞাপনের পারিশ্রমিক বাবদ পাওয়া টাকা দান করে দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। ওই সংস্থা হয়তো বিজ্ঞাপনটির সম্প্রচার চালিয়ে যাবে, অন্তত আইনিভাবে চুক্তির মেয়াদ শেষ না পর্যন্ত। তার দায় আমারই। তবে কথা দিচ্ছি, আগামী দিনে কাজের ব্যাপারে অত্যন্ত সতর্ক থাকব। বিনিময়ে আপনাদের ভালোবাসা এবং শুভেচ্ছা প্রার্থনা করি।’
তবে সংস্থাটির সঙ্গে চুক্তির মেয়াদ কবে শেষ, তার উল্লেখ করেননি অক্ষয়।
আরও পড়ুন:২০১৮ সালের শেষের দিকে মুক্তি পায় ভারতের দক্ষিণের কন্নড় ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রির বিগ বাজেটের সিনেমা কেজিএফ চ্যাপ্টার ওয়ান।
মুক্তির পর শুধু ভারতে নয়, বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে থাকা ভারতীয় সিনেমাপ্রেমীদের মধ্যে ব্যাপক সাড়া ফেলেছিল এটি। বক্স অফিসে গড়েছিল ইতিহাস।
গ্যাংস্টারদের নিয়ে গল্পের এই সিনেমায় দুর্দান্ত মারকুটে অভিনয় দিয়ে পুরো ভারত মাতিয়েছিলেন কন্নড় রকিং স্টার যশ। শুধু তা-ই নয়, এই সিনেমা দিয়ে দেশের বাইরেও লাখো ভক্ত-অনুরাগী জুটিয়েছেন এই অভিনেতা।
এরপর আবার ১৪ এপ্রিল কেজিএফ চ্যাপ্টার টু মুক্তির পর ঝড় তুলেছে বক্স অফিসে। জনপ্রিয়তা আর খ্যাতির শীর্ষে এখন যশ। তার সঙ্গে যখন অভিনয় করতে মুখিয়ে আছেন একাধিক অভিনেত্রী, কিন্তু তিনি কার সঙ্গে অভিনয় করার অপেক্ষায় রয়েছেন।
সেই অভিনেত্রী আর কেউ নন তিনি বলিউডের মাস্তানি দীপিকা পাডুকোন। ভারতীয় এক সংবাদমাধ্যমের খবরে বলা হয়েছে, সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে এই ইচ্ছা প্রকাশ করেছেন যশ।
সেই সাক্ষাৎকারে যশ জানান, যদি সুযোগ দেয়া হয় তাহলে দীপিকা পাডুকোনের সঙ্গে কাজ করতে চান তিনি। আর তার বিপরীতে অভিনয় করেই বলিউডে পা রাখতে চান তিনি।
শুধু দর্শকদের নয় অনেক তারকারও পছন্দের অভিনেত্রী দীপিকা। তার সঙ্গে স্ক্রিন শেয়ারের ইচ্ছা প্রকাশ করেন অনেকেই। এবার সেই তালিকায় যোগ হল কেজিএফ তারকা যশ।
আরও পড়ুন:বিগত কয়েক বছরে বলিউডের চেয়ে বেশি সাড়া ফেলছে ভারতের দক্ষিণী সিনেমা। তার উদাহরণ বাহুবলী, পুষ্পা, আরআরআর, কেজিএফসহ অনেক সিনেমা। বর্তমানে বক্স অফিসে চলছে দক্ষিণী কন্নড় সিনেমা কেজিএফ টু-এর ঝড়।
কন্নড়, তেলেগু, তামিল, মালয়ালাম ও হিন্দি ভাষায় মুক্তি পেয়েছে সিনেমাটি। এতে প্রধান ভূমিকায় অভিনয় করেছেন কন্নড় রকিং স্টার যশ। আর অন্যতম আরেক প্রধান চরিত্রে অভিনয় করেছেন সঞ্জয় দত্ত।
বলিউড ও দক্ষিণী ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রির মধ্যে পার্থাক্য কোথায়? সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে তা নিজের অভিমত জানিয়েছেন সঞ্জয় দত্ত।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যমকে দেয়া সেই সাক্ষাৎকারে সঞ্জয় দত্ত বলেন, ‘আমার মনে হয় হিন্দি ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রি হিরোইজম ভুলতে বসেছে, কিন্তু দক্ষিণী ইন্ডাস্ট্রি বীরত্বকে এখনও ভুলে যায়নি। আমি বলছি না যে স্লাইস অফ লাইফ খারাপ। কিন্তু আমরা কেন আমাদের উত্তরপ্রদেশ, বিহার, ঝাড়খণ্ড, রাজস্থানের দর্শকদের ভুলে গিয়েছি, যারা আমাদের দর্শকমহলের একটি বড় অংশ।
‘আমি আশা করি, হিন্দি ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রিতে সেই প্রবণতা ফিরে আসবে। আগে আমাদের স্বতন্ত্র প্রযোজক এবং অর্থদাতা ছিল, যা ফিল্ম স্টুডিওগুলোর করপোরেটাইজেশনের অবসান ঘটিয়েছে। করপোরেটাইজেশন ভালো, তবে এটি সিনেমার পছন্দের ক্ষেত্রে হস্তক্ষেপ করা উচিত নয়।’
উদাহরণ দিয়ে তিনি আরও বলেন, ‘দেখুন এস এস রাজমৌলির নির্দিষ্ট প্রযোজক রয়েছেন, যারা তার দৃষ্টিভঙ্গিতে সম্পূর্ণ বিশ্বাস রাখেন। আমাদের সঙ্গে আগেকার দিনে গুলশান রাই, যশ চোপড়া, সুভাষ ঘাই এবং যশ জোহরের মতো প্রযোজকও ছিলেন। তারা যে সিনেমাগুলো তৈরি করেছেন তা দেখুন। দক্ষিণে তারা কাগজে স্ক্রিপ্ট দেখে, এখানে আমরা কাগজে পরিসংখ্যান দেখি।’
সঞ্জয়কে পরবর্তী সময়ে যশ রাজ ফিল্মসের ব্যানারে নির্মিতব্য পৃথ্বীরাজ সিনেমায় দেখা যাবে। এতে আরও রয়েছেন অক্ষয় কুমার, মানুষী চিল্লার, সাক্ষী তানওয়ার এবং সোনু সুদ। এ ছাড়া শামশেরায় দেখা যাবে তাকে।
আরও পড়ুন:ভারতের দক্ষিণী সিনেমার জনপ্রিয় অভিনেত্রী কাজল আগারওয়াল মা হয়েছেন। মঙ্গলবার সকালে তার কোলজুড়ে এসেছে ফুটফুটে পুত্রসন্তান। মা ও সন্তান দুজনেই সুস্থ আছেন।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসকে এ তথ্য জানিয়েছেন অভিনেত্রীর বোন নিশা আগারওয়াল।
এটি জীবনের সেরা সুখবর উল্লেখ করেন নিশা। এর আগে তিনি ইনস্টাগ্রামে লিখেছিলেন, ‘এটি একটি আনন্দের দিন, একটি বিশেষ খবর আপনাদের সঙ্গে ভাগ করে নেয়ার অপেক্ষা সইছে না।’
চলতি বছর জানুয়ারিতে অন্তঃসত্ত্বা হওয়ার খবর জানিয়েছিলেন কাজল। ২০২০ সালের অক্টোবরে প্রেমিক গৌতম কিসলুর সঙ্গে সাত পাকে বাঁধা পড়েন অভিনেত্রী। এবার তাদের পরিবারে এলো নতুন সদস্য। তা নিয়ে ব্যাপক উচ্ছ্বসিত তারকাদম্পতি।
অন্তঃসত্ত্বা অবস্থায় গৌতম কিসলু তাকে যেভাবে দেখভাল করেছেন, তাতে ভীষণ খুশি অভিনেত্রী। গত সপ্তাহে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে স্বামীকে ধন্যবাদ জানিয়ে একটি আবেগঘন বার্তাও লিখেছিলেন কাজল।
সেখানে তাকে তিনি লিখেছিলেন, ‘আমাদের সন্তান আসার আগে কতটা যত্ন নিচ্ছ আমার, আমি জানতে চাই, তুমি ঠিক কতটা অসাধারণ একজন মানুষ আর কতটা অসাধারণ একজন বাবা হতে চলেছ।’
শিগগিরই কাজলকে দেখা যাবে চিরঞ্জীবী এবং রামচরণ অভিনীত আচার্য সিনেমায়। ২৯ এপ্রিল প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পাবে সিনেমাটি।
মন্তব্য