মিশরের পিরামিড বিশ্বজুড়ে নান্দনিকতার এক আশ্চর্যের নাম। কিন্তু অনেকেই জানেন না আফ্রিকার অনেক স্থাপত্যের মধ্যেও আছে ঠিক একই নান্দনিকতা।
স্থপতি আদিল ডালবাই এবং মুকাসা তাই পুরো দুনিয়াকে এর জানান দিতে চান সাব-সাহারান আফ্রিকা প্রকাশিত সাত খণ্ডের আর্কিটেকচারাল গাইডের মাধ্যমে। সম্প্রতি তারা এ দলের অংশ হিসেবে কাজ করছেন।
তাদের গভীর গবেষণায় অন্তর্ভুক্ত ছিল পূর্বযুগের ভবনগুলো। ঔপনিবেশিক সময়ে সেনেগালের রাজধানী ডাকারে নির্মিত সম্প্রতি সংস্কার করা রেলওয়ে স্টেশন থেকে শুরু করে আধুনিক মাস্টারপিসের জন্য কাজ করেছেন এ দুই স্থপতি।
আফ্রিকার ১২টি উদ্ভাবনী, ঐতিহাসিক এবং আইকনিক ভবনগুলো হলো-
১. কাসুবি সমাধি, উগান্ডা– ১৮৮২
উগান্ডার রাজধানী কামপালায় কয়েক হেক্টর কৃষি জমি জুড়ে তৈরি কাসুবির রয়েল কমপ্লেক্স হলো বুগান্ডা রাজ্যের রাজাদের সমাধিস্থল। মূলত কাঠ এবং অন্যান্য জৈব পদার্থ থেকে নির্মিত হয়েছিল এটি।
ভেতরে একটি পবিত্র বন প্রতিলিপি করার জন্য ডিজাইন করা হয়েছে। ৫২টি বুগান্ডা গোষ্ঠীকে প্রতিনিধিত্ব করার জন্য উপরের দিকে রয়েছে ৫২টি বৃত্তাকার রিং।
২. লিডেটা মার্কেট, ইথিওপিয়া– ২০১৭
শপিং সেন্টারটি ইথিওপিয়ার রাজধানী আদ্দিস আবাবায় ‘ভিলাল্টা স্টুডিও’ তৈরি করেছে, যা হালকা ওজনের কংক্রিট দিয়ে তৈরি। নকশায় ছিদ্রযুক্ত মুখোমুখি রয়েছে যা প্রাকৃতিক আলো-বাতাস চলাচল নিয়ন্ত্রণ করতে পারে।
মজার ব্যাপার হচ্ছে, ভবনের চকচকে সাদা খোলকে সাজানো কাট-আউট প্যাটার্নটি একটি ঐতিহ্যবাহী ইথিওপীয় কাপড়ের অনুকরণ করে বানানো।
৩. হিকমা কমপ্লেক্স, নাইজেরিয়া- ২০১৮
আর্কিটেকচার স্টুডিও এটেলিয়ার মাসোমির নাইজেরিয়ান প্রতিষ্ঠাতা মরিয়ম কামারা, স্টুডিও চাহারের ইয়াসামান ইসমাইলির যৌথ উদ্যোগে সাবেক একটি হাউসা মসজিদকে পুনরুদ্ধার করা হয়।এতে একটি কমিউনিটি স্পেস আর লাইব্রেরিও রয়েছে।
ডালবাইয়ের জন্য প্রকল্পটি পুরাতন এবং নতুনের অবিচ্ছিন্ন মিশ্রণে বিশেষভাবে তৈরি।
জার্মান এই স্থপতি বিবিসিকে বলেন, ‘এটি স্পষ্টতই একটি সমসাময়িক ভবন যা নাইজেরিয়ান ঐতিহ্যকে গভীরভাবে প্রকাশ করে।
‘শুধুমাত্র সাংস্কৃতিকভাবে নয়, প্রযুক্তিগতভাবেও এটি পুরানো ভবনগুলোর কৌশল ও উপকরণের উপর নির্ভর করে।’
৪. মারোপেং ভিজিটরস সেন্টার, সাউথ আফ্রিকা– ২০০৬
মারোপেং একটি অত্যাধুনিক পর্যটন কেন্দ্র যা আধুনিক মানুষের প্রাথমিক বিকাশ সম্পর্কে জানতে সাহায্য করতে তৈরি করা হয়েছে।
এই আইকনিক স্ট্রাকচারটি সাউথ আফ্রিকার প্রতিষ্ঠান (GAPP Architects ও MMA Studio) দিয়ে ডিজাইন করা।
৫. মেরোস এর পিরামিড, সুদান–৩০০খৃস্টাব্দ
এই ইউনেস্কো ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ সাইটটি একসময় প্রাচীন কুশাইট সাম্রাজ্যের রাজধানী ছিল। এর খনন থেকে প্রাসাদ, মন্দির এবং রাজকীয় গোসলখানার ধ্বংসাবশেষ পাওয়া যায়।
এই পিরামিডগুলো বেলেপাথরের ব্লক দিয়ে নির্মিত হয়েছিল।
৬. বাসোথো হাউস, লেসোথো
লেসোথোতে ‘লিটেমা’ হলো একটি ম্যুরাল, ডেকোরেশন খোদাই করা আর মোজাইক দিয়ে তৈরি।
মাটি ইট, প্লাস্টার দিয়ে নির্মিত ঘরটি উর্বরতা এবং ত্যাগের রক্তের প্রতীক লাল রঙে আঁকা। বিশুদ্ধতা ও শান্তির প্রতিনিধিত্ব করছে সাদা। পূর্বপুরুষদের উল্লেখ করার জন্য কালো, আর বৃষ্টির প্রতিশ্রুতি দিয়ে আঁকা অন্ধকার মেঘ।
৭. কেনেথ ডাইক লাইব্রেরি, নাইজেরিয়া–১৯৫৪
গ্রন্থাগারটি নকশা করেছিলেন ইংল্যান্ডে আধুনিক আন্দোলনের পথিকৃৎ ম্যাক্সওয়েল ফ্রাই এবং জেন ড্রু। এটি ইবাদান বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসের অংশ।
১৯৪৮ সালে ব্রিটিশ উপনিবেশিক কর্তৃপক্ষ এটি প্রতিষ্ঠা করে। বিশেষ বৈশিষ্ট্যের গ্রন্থাগারটি সূর্যের আলোকে প্রতিফলিত করে একটি ভবনের মধ্যে তাপ কমিয়ে আনে।
৮. মালির বিখ্যাত মসজিদ জেনি, ত্রয়োদশ শতাব্দী
এ মসজিদটি পৃথিবীর সবচেয়ে বড় মাটির তৈরি কাঠামো। মসজিদটি জেনি শহরের প্রতীক,যা থেকে ৮০০ থেকে ১২৫০ সালের মধ্যে বাণিজ্য কেন্দ্র হিসেবে বিকশিত হয়েছিল।
ভবনটির মসৃণ ভাস্কর্যযুক্ত দেয়ালগুলো রোদে শুকানো ইট, বালি, মর্টার ও প্লাস্টারের একটি কোট দিয়ে নির্মিত।
প্রতি বছর শহরের অধিবাসীরা সাম্প্রদায়িকভাবে একটি একদিনের ইভেন্টের সময় মসজিদটি পুনরায় প্লাস্টার করে যা ক্র্যাপিসেজ দে লা গ্র্যান্ড মসজিদ (গ্রেট মসজিদের প্লাস্টারিং) নামে পরিচিত।
৯.সম্রাট ফ্যাসিলাইডের প্রাসাদ, ইথিওপিয়া- ১৭ শতকের শুরু
প্রাসাদটি ইথিওপিয়ার উত্তরাঞ্চলীয় শহর গন্ডারে অবস্থিত, যা ‘ফাসিল ঘেবি’ (রয়েল এনক্লোসার) নামে পরিচিত।
এতে রয়েছে একটি দুর্গযুক্ত প্রাঙ্গন।রয়েছে ২০টি প্রাসাদ, রাজকীয় ভবন, বিস্তৃতভাবে সাজানো গীর্জা, মঠ ও অন্য কিছু ভবন।
এই ভবনগুলোর নকশা জেসুইট মিশনারিদের গন্ডারে আনা বারোক শৈলী দিয়ে প্রভাবিত হয়েছিল।
১০. ডোমিনিকান চ্যাপেল, নাইজেরিয়া-১৯৭৩
শিল্পী দেমাস নোভোকো ভাস্কর্য উপাদান, আর আধুনিকতার সঙ্গে নাইজেরিয়ান স্থানীয় ভাষাশৈলীর স্থাপত্যের মিশ্রণ ঘটিয়েছেন।
আছে খোদাই করা কাঠের কলাম। ছোট রেলিং আর গেটগুলোতে বিস্তৃত ধাতব কাজও রয়েছে।
১১. গ্রেট মসজিদ, বেনিন–(১৯১২-১৯৩৫)
বেনিনের রাজধানী পোর্ট-নভোতে অবস্থিত মসজিদটি উত্তর-পূর্ব ব্রাজিলীয় রাজ্য বাহিয়াতে ১৭ ও ১৮ শতকের গির্জার আদলে নির্মিত আফ্রো-ব্রাজিলীয় স্থাপত্যের একটি আকর্ষণীয় উদাহরণ।
উজ্জ্বল হলুদ, বাদামী, সবুজ এবং নীল রঙের এ প্যালেট বাহিয়ার ঐতিহাসিক স্থাপত্যকে স্মরণ করিয়ে দেয়।
এটি পশ্চিম আফ্রিকার উপকূল বরাবর আফ্রো-ব্রাজিলিয়ান মসজিদের একটি।
বিংশ শতাব্দীর শুরুর দিকে মুক্তি পাওয়া ক্রীতদাসদের বংশধর দিয়ে বানানো হয় এ মসজিদ।
১২. মাপুংগুবে ইন্টারপ্রিটেশন সেন্টার, সাউথ আফ্রিকা-২০০৯
মাপুংগুয়ে ন্যাশনাল পার্কের মধ্যে একটি পাথুরে ল্যান্ডস্কেপে অবস্থিত কেন্দ্রটি। ওয়ার্ল্ড আর্কিটেকচার ফেস্টিভালে সাউথ আফ্রিকার স্থপতি পিটার রিচ ২০০৯ ওয়ার্ল্ড বিল্ডিং অফ দ্য ইয়ার অ্যাওয়ার্ড জিতেছে এই স্থাপত্যের জন্য।
মাটির মিশ্রণ তৈরির জন্য নির্মাণস্থল থেকে মাটি ও পাঁচ শতাংশ অতিরিক্ত সিমেন্ট ব্যবহার করে ইট তৈরি করা হয়েছিল এর জন্য।
আরও পড়ুন:আইভরি কোস্টের পশ্চিমাঞ্চলে শুক্রবার দুটি মিনিবাসের সংঘর্ষে কমপক্ষে ২৬ জন নিহত ও ২৮ জন আহত হয়েছেন।
পরিবহন মন্ত্রণালয়ের উদ্ধৃতি দিয়ে এএফপি এ খবর জানায়।
সড়ক পরিবহনের মহাপরিচালক ওমর সাকো এক বিবৃতিতে বলেন, ডালোয়া-ইসিয়া সড়কে দুটি মিনিবাসের সংঘর্ষে ২৬ জন নিহত ও ২৮ জন আহত হন। নিহত যাত্রীদের মধ্যে ১০ জন দগ্ধ হয়ে প্রাণ হারান।
বিবৃতিতে আর বলা হয়, ‘দুর্ঘটনাস্থলে মন্ত্রণালয়ের একটি দলকে তদন্ত করার জন্য পাঠানো হয়েছে এবং তদন্ত শুরু হয়েছে।’
কিছু রাস্তা ও যানবাহনের খারাপ অবস্থার কারণে এবং চালকরা ড্রাইভিং পরীক্ষায় উত্তীর্ণ না হওয়ায় আইভরি কোস্টে প্রায়ই মারাত্মক সড়ক দুর্ঘটনা ঘটে ৷
গত মাসে গাগনোয়া শহরের কাছে দুর্ঘটনায় ২০ জন নিহত হয়। গত সেপ্টেম্বরে আইভরি কোস্টের উত্তরে একটি গাড়ি ও একটি ট্যাংকারের সংঘর্ষে ১৩ জন দগ্ধ হন।
পরিবহন মন্ত্রণালয়ের মতে, আইভরি কোস্টে সড়ক দুর্ঘটনায় প্রতি বছর গড়ে ১ থেকে দেড় হাজার মানুষের মৃত্যু হয়।
সাম্প্রতিক বছরগুলোতে সরকার চালকদের লাইসেন্সের পয়েন্ট, পাঁচ বছরের বেশি পুরোনো গাড়ি আমদানির ওপর নিষেধাজ্ঞা, রাস্তার রক্ষণাবেক্ষণ এবং ভিডিও ক্যামেরা স্থাপনসহ মারাত্মক দুর্ঘটনা কমাতে একাধিক ব্যবস্থা চালু করেছে।
আরও পড়ুন:নাইজেরিয়ার উত্তরাঞ্চলে নাইজার নদীতে শুক্রবার ২০০ যাত্রীবাহী নৌকা ডুবে ২৭ জনের প্রাণহানি হয়েছে।
এ ঘটনায় নিখোঁজ রয়েছে শতাধিক যাত্রী, যাদের বেশির ভাগই নারী।
নাইজেরিয়ার আবুজা থেকে এএফপি এ খবর জানায়।
নাইজার স্টেট ইমার্জেন্সি ম্যানেজমেন্ট এজেন্সির মুখপাত্র ইব্রাহিম অদু এএফপিকে জানান, নৌকাটি কোগি রাজ্য থেকে পাশের নাইজার রাজ্যের একটি বাজারে যাওয়ার পথে ডুবে যায়।
কোগি রাজ্যের জরুরি পরিষেবার মুখপাত্র সান্দ্রা মুসা জানান, উদ্ধারকারীরা শুক্রবার সন্ধ্যায় নদী থেকে ২৭ জনের মরদেহ উদ্ধার করে। নিখোঁজদের উদ্ধারে ডুবুরিরা তল্লাশি চালাচ্ছে।
তিনি আরও জানান, ১২ ঘণ্টা অভিযান চালিয়ে জীবিত কাউকে পাওয়া যায়নি।
কর্তৃপক্ষ নিশ্চিত করে বলতে পারেনি কী কারণে নৌকাটি ডুবে গেছে, তবে স্থানীয় সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে, ধারণক্ষমতার বাইরে অতিরিক্ত যাত্রী বোঝাইয়ের কারণে নৌকাটি ডুবে যায়।
নাইজেরিয়ার প্রত্যন্ত অঞ্চলে ভালো সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থা না থাকায় নৌকাই ওইসব অঞ্চলের চলাচলের একমাত্র বাহন।
আরও পড়ুন:উত্তর আফ্রিকার দেশ সুদানে পাঁচ বছরের কম বয়সী অন্তত ৩৪ লাখ শিশু মারাত্মক মহামারি রোগের উচ্চ ঝুঁকিতে রয়েছে বলে জানিয়েছে জাতিসংঘের শিশুবিষয়ক তহবিল ইউনিসেফ।
এক বিবৃতিতে সুদানে ইউনিসেফের প্রতিনিধি শেলডন ইয়েট মঙ্গলবার জানান, ভারি বৃষ্টিপাত ও বন্যার কারণে কলেরা, ম্যালেরিয়া, ডেঙ্গু জ্বর, হাম ও রুবেলার মতো রোগ আরও দ্রুত ছড়িয়ে পড়তে পারে এবং আক্রান্ত রাজ্য ও এর বাইরে শিশুদের অবস্থা মারাত্মকভাবে খারাপ হতে পারে।
তিনি আরও বলেন, চলমান অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্বের কারণে টিকাদানের হার উল্লেখযোগ্যভাবে কমে যাওয়া এবং স্বাস্থ্য, পানি, স্যানিটেশন ও স্বাস্থ্যবিধি অবকাঠামো ধ্বংসের কারণে এ সংকট দেখা দিয়েছে। সুদানের অনেক শিশুর পুষ্টির অবস্থার অবনতি তাদের আরও বেশি ঝুঁকিতে ফেলেছে।
বিবৃতিতে বলা হয়, ইউনিসেফ গত ৯ সেপ্টেম্বর সুদানে ৪ লাখ ৪ হাজার ডোজ ওরাল কলেরা টিকা সরবরাহ করে। অভ্যন্তরীণ সংঘাতের কারণে সুদানে টিকা দেয়া ৮৫ শতাংশ থেকে প্রায় ৫০ শতাংশে নেমে এসেছে।
এতে বলা হয়, সংঘাতপূর্ণ এলাকাগুলোর ৭০ শতাংশের বেশি হাসপাতালেই কার্যকম বন্ধ রাখতে হয়েছে। কয়েক মাস ধরে বেতনও পাচ্ছেন না স্বাস্থ্যসেবা কর্মীরা।
গত বছরের এপ্রিলে সুদানের সশস্ত্র বাহিনী এসএএফ এবং র্যাপিড সাপোর্ট ফোর্সেসের (আরএসএফ) মধ্যে লড়াই শুরুর পর থেকে কমপক্ষে ১৬ হাজার ৬৫০ জন মারা গেছে এবং লক্ষ লক্ষ মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছে। এ সময় কলেরা, ম্যালেরিয়া, হাম ও ডেঙ্গু জ্বরের মতো মহামারি রোগ ছড়িয়ে পড়েছে, যেসব রোগের কারণেও অনেক মানুষের মৃত্যু হয়েছে।
গত ১৭ আগস্ট দেশটিতে কলেরার প্রাদুর্ভাব ঘোষণা করেন সুদানের স্বাস্থ্যমন্ত্রী হাইথাম মোহাম্মদ ইব্রাহিম। কলেরা ছড়িয়ে পড়ার জন্য সংঘাতের কারণে সৃষ্ট পরিবেশগত অবস্থার অবনতি এবং অপরিষ্কার পানির ব্যবহারকে দায়ী করেছে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়।
মন্ত্রণালয়টি মঙ্গলবার জানায়, গত ১৫ জুলাই থেকে ১৬ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত দেশটিতে ৩২৮ জনের মৃত্যুসহ ১০ হাজার ২২ জন কলেরায় আক্রান্ত হয়েছে।
আরও পড়ুন:কেনিয়ার মধ্যাঞ্চলে একটি বোর্ডিং স্কুলের ছাত্রাবাসে আগুনে ১৭ শিক্ষার্থীর প্রাণহানি ও ১৩ জন গুরুতর আহত হয়েছে বলে শুক্রবার জানিয়েছে আল জাজিরা।
স্থানীয় পুলিশের বরাতে কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যমটি জানায়, নিয়েরি কাউন্টির হিলসাইড এনদারাশা একাডেমি নামের বিদ্যালয়ের ছাত্রাবাসে আগুনে মৃতের সংখ্যা বাড়তে পারে। আহতদের একাধিক হাসপাতালে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে।
আগুনে হতাহতদের পরিচয় তাৎক্ষণিকভাবে জানা যায়নি, তবে তাদের বেশির ভাগ শিশু বলে জানিয়েছে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ।
প্রাথমিক স্কুলটিতে আট শর মতো শিক্ষার্থী আছে, যাদের বয়স পাঁচ থেকে ১২ বছর।
পুলিশের মুখপাত্র রেসিলা ওনিয়াঙ্গো জানান, বৃহস্পতিবার রাতের আগুনের কারণ জানতে তদন্ত চলছে। এ বিষয়ে ‘প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা’ নেয়া হবে।
তিনি বার্তা সংস্থা এএফপিকে জানান, ঘটনাস্থল থেকে উদ্ধার করা মরদেহগুলো এমনভাবে পুড়ে গেছে যে, সেগুলো দেখে শনাক্তের উপায় নেই।
কেনিয়ার হট ৯৬ নামের এফএম রেডিওকে ওনিয়াঙ্গো জানান, আগুনে ক্ষয়ক্ষতি নিরূপণে ঘটনাস্থলে কাজ করছে সরকারের একটি দল।
পূর্ব আফ্রিকার দেশটির প্রেসিডেন্ট উইলিয়াম রুটো আগুনে প্রাণহানির খবরে দুঃখ প্রকাশ করে বলেন, এ ঘটনায় জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
আরও পড়ুন:পশ্চিম আফ্রিকার দেশ মালিতে দুটি গাড়ির সংঘর্ষে ১৪ জন নিহত ও ২৯ জন আহত হয়েছে বলে জানিয়েছে ইউএনবি।
বার্তা সংস্থাটির খবরে বলা হয়, বৃহস্পতিবার স্থানীয় সময় ভোর ছয়টার দিকে দেশটির মধ্যাঞ্চলীয় ফুগানি গ্রামের কাছে ৬ নম্বর জাতীয় সড়কে এ দুর্ঘটনা ঘটে।
মালির পরিবহন ও অবকাঠামো মন্ত্রণালয়ের বিবৃতিতে বলা হয়, রাজধানী বামাকোর দিকে যাওয়ার সময় বিপরীত দিক থেকে আসা ট্রেইলার ট্রাকের সঙ্গে একটি গাড়ির সংঘর্ষ হয়। এতে হতাহতদের সবাইকে ফানা স্বাস্থ্য কেন্দ্রে নিয়ে যাওয়া হয়।
ইউএনবির খবরে আরও জানানো হয়, দুর্ঘটনার কারণ ও ক্ষয়ক্ষতি নির্ধারণে তদন্ত চলছে বলে জানিয়েছে মালির পরিবহন ও অবকাঠামো মন্ত্রণালয়।
সড়কের দুরাবস্থা ও নিম্নমানের যানবাহনের কারণে মালিতে প্রায়ই সড়ক দুর্ঘটনা ঘটে বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়।
উত্তর আফ্রিকার দেশ সুদানের উত্তর-পূর্বাঞ্চলে একটি বাঁধ ধসে কমপক্ষে ৬০ জন নিহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে স্থানীয় সংবাদমাধ্যমগুলো।
সুদানের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের রোববার রাতের বিবৃতির বরাত দিয়ে আল জাজিরার খবরে বলা হয়, পোর্ট সুদানের উত্তরে আরবাত বাঁধ ধসের ফলে বন্যার পানিতে চারজন নিহত হন; ভেসে যায় ঘরবাড়ি।
বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়, বন্যায় আটকে পড়া লোকজনকে উদ্ধারে জনবল মোতায়েন করা হয়েছে।
স্থানীয় কর্মকর্তাদের বরাত দিয়ে আল-তাঘির ও মেদামিকসহ কয়েকটি সংবাদমাধ্যম জানায়, বাঁধ ধসে প্রাণহানি বেড়ে কমপক্ষে ৬০ জনে দাঁড়িয়েছে।
বাঁধ দুর্ঘটনায় অনেকেই নিখোঁজ হয়েছেন।
জাতিসংঘের ভাষ্য, ধসের ঘটনায় ২০টি গ্রাম ধ্বংস হয়েছে। একই সঙ্গে ধ্বংস বা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ৫০ হাজার মানুষের ঘরবাড়ি।
আলি ইসা নামের স্থানীয় এক বাসিন্দা আল জাজিরাকে জানান, বন্যার পানির কারণে লোকজনের গাড়িতে আটকা পড়ার বার্তা পেয়েছেন তিনি।
আরও পড়ুন:নাইজেরিয়ার প্লাটো রাজ্যে দুই তলা স্কুলের ভবন ধসে ২২ জন নিহত হয়েছে বলে শনিবার জানিয়েছে স্কাই নিউজ।
সংবাদমাধ্যমটির খবরে বলা হয়, ভবনের ধ্বংসস্তূপের নিচে চাপা পড়েছিল ১৫৪ জন মানুষ। তাদের মধ্যে প্রাণ হারানো ২২ জন বাদে বাকি সবাইকে উদ্ধার করা হয়েছে।
পুলিশের এক মুখপাত্রের বরাতে স্কাই নিউজের খবরে বলা হয়, উদ্ধারকৃতদের বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে।
নাইজেরিয়ার জাতীয় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা সংস্থা এনইএমএ এক ফেসবুক পোস্টে জানায়, এখনও হাসপাতালে আছেন ৩০ জন।
সংস্থাটি আরও জানায়, উদ্ধার তৎপরতা শেষ হয়েছে। দুর্ঘটনাস্থল পরিষ্কার করা হয়েছে।
প্লাটো রাজ্যের জস উত্তর জেলার বুসা বুজি সম্প্রদায়ের সেন্ট অ্যাকাডেমির নিয়ন্ত্রণাধীন ছিল দুই তলা স্কুল ভবনটি। স্কুলের কার্যক্রম চলাকালে ভবনটি ধসে পড়ে।
নিরাপত্তা তদারকিতে শৈথিল্য ও মানহীন নির্মাণসামগ্রী ব্যবহারের কারণে নাইজেরিয়ায় প্রায়ই ভবন ধসে পড়ে।
আরও পড়ুন:
মন্তব্য