ছোট পর্দার পরিচিত মুখ মনোজ কুমার প্রামাণিক। ওভার দ্য টপ (ওটিটি) প্ল্যাটফর্মেও বিচরণ বাড়ছে তার। এর বাইরেও পরিচয় আছে তার। ময়মনসিংহের ত্রিশালে জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ফিল্ম অ্যান্ড মিডিয়া স্টাডিজ বিভাগে পড়ান তিনি।
এ মুহূর্তে ওটিটি প্ল্যাটফর্মের জন্য বেশ কিছু কাজে ব্যস্ত মনোজ। ওয়েব ফিল্মের পাশাপাশি সম্প্রতি একটি ওয়েব সিরিজেও কাজ করেছেন। তবে কোন প্ল্যাটফর্মের জন্য কাজ করছেন, তা বড় বিষয় নয় মনোজের কাছে। তার আগ্রহের বিষয় শুধু অভিনয়।
অভিনয় ও সংশ্লিষ্ট বিষয় নিয়ে নিউজবাংলার সঙ্গে আলাপকালে এসব কথা জানান মনোজ।
কোন চরিত্র কেমন লাগে
এ পর্যন্ত অনেক চরিত্রেই অভিনয় করেছেন মনোজ। এর মধ্যে কোনটি সবচেয়ে বেশি কঠিন লেগেছে, তা জানতে চাওয়া হয় অভিনেতার কাছে।
জবাবে নিউজবাংলাকে তিনি বলেন, ‘আমার কাছে কোনো চরিত্রই কঠিন বা সহজ লাগে না। সব একটা প্রসেসের মধ্য দিয়ে যায়। সবগুলো সম্পর্কে একটু গবেষণার দরকার আছে; চিন্তাভাবনার দরকার আছে। কখনো সেটা করতে পারি, কখনো সেটা সঠিকভাবে করতে পারি না সময়ের অভাবে। সব চরিত্র আমার কাছে একই রকম মনে হয়।’
বেছে বেছে কাজ করেন কি না, জানতে চাইলে মনোজ বলেন, ‘সত্যিকার অর্থে এত বাছাই করে কাজ করার সুযোগ আমাদের ইন্ডাস্ট্রিতে এখনও তৈরি হয়নি। আমাদের কাজের পরিমাণ বাড়ছে, কিন্তু ভালো কাজের পরিমাণ আসলে এখনও অনেক কম। বিশেষ করে টেলিভিশনে আমরা যারা কাজ করি, আমাদের বাজেট-সময় সবকিছু মিলিয়ে আসলে বেছে...
‘অনেকেই আমরা বলি বেছে বেছে কাজ করছি, কিন্তু সত্যিকার অর্থে এত বেছে কাজ করার সুযোগ থাকে না। এখন দেখা যাচ্ছে, যদি ৮০-৯০ পারসেন্ট গল্পই খারাপ হয়, ডিরেকশন খারাপ হয় বা ৮০-৯০ পারসেন্টই যদি আমাদের অল্প সময়, অল্প বাজেটের মধ্যে করতে হয়, তাহলে এর মধ্যে যদি আমি বাদ দিয়ে যাই, বেছে করতে হয়, তাহলে বেশির ভাগই বাদ পড়ে যাবে। যদি ভাবি শুধু ভালোগুলো করব, তখন তো পেট চলবে না। তো এত বেছে আমাদের কাজ করা হয় না।’
তিনি বলেন, ‘অনেক ক্র্যাশ কাজ তো আমারও আছে। সবারই আছে। কোনো কাজ খাটো করে বলছি না। এটা আমাদের করতে হয়। আমরা যারা অভিনয় করি সবাই আসলে চাই অভিনয়টা ভালো করে করতে এবং এমন কোনো অভিনয় করতে যেটাতে দর্শক আমাদেরকে ভালোবাসবে; দর্শকের ভালো লাগবে।’
‘টেলিভিশন নাটকের অবস্থা খুবই খারাপ’
নাটকের সার্বিক প্রতিশ্রুতি নিয়ে জনপ্রিয় ও প্রতিশ্রুতিশীল অভিনেতা মনোজ বলেন, ‘আমাদের নাটকের বাজেট নাই। আমাদের নাটকের যারা ডিরেকশন দিচ্ছেন তাদের কোয়ালিটি যথেষ্ট ভালো না। সবার না; বেশির ভাগেরই। এমন অল্প আয়োজনের মধ্যে তাদের কাজ করতে হয়। ডিরেক্টর যদি ভালো করতে চানও, যদি টাইম দিতে চান, তাহলে সেই বাজেট নেই। একটা প্রোডাকশনের পেছনে সময় এক মাস, দুই মাস, পাঁচ মাস যে দেবেন, চলবে কীভাবে। সো এই কন্ডিশনের মধ্যে টেলিভিশন নাটকের অবস্থা খুবই খারাপ।
‘তারপরও আমরা করে যাচ্ছি। কারণ আমাদের জীবিকা; এটা প্রয়োজন। এর মধ্যে থেকেই কিছু কাজ হয়তো ভালোও হচ্ছে। বাজারে ১০টা হলে তার মধ্যে হয়তো তিনটা-চারটা ভালো হচ্ছে। আর বাকি সাতটাই হয়তো সে রকমভাবে মানের হচ্ছে না।’
‘সিনেমার ডিরেক্টরদের আরও টেকনিক্যাল হতে হবে’
নিউজবাংলার সঙ্গে আলাপের একপর্যায়ে সিনেমা নিয়ে নিজ ভাবনার কথা জানান মনোজ।
তিনি বলেন, ‘সিনেমার ক্ষেত্রে আমি বলব, লকডাউনের কারণে সিনেমা দেড়-দুই বছর যাবৎ বন্ধই আছে। আমরা কোনো সিনেমা দেখতে পাচ্ছি না। সিনেমার ক্ষেত্রে আমি বলব যে, টেকনিক্যালি আরও ডেভেলপ করতে হবে। আমার তাই মনে হয়। আমাদের আইডিয়া আছে অনেক ভালো। তারপরে ডিরেক্টরিয়াল হেড আছে, ক্রিয়েটিভ আছে, অভিনেতা-অভিনেত্রী আছে, কিন্তু টেকনিক্যাল ক্রু টিম যেটা সেইটা নাই বা ডিরেক্টরদেরকেও আরও টেকনিক্যাল হতে হবে। অনেক ম্যাথমেটিক্যাল হতে হবে।
‘ম্যাথমেটিক্স বলছি। অবশ্যই এটা একটা টেকনিক্যাল কাজ, কিন্তু একই সাথে অনেক কিছুর ম্যাথমেটিক্সের ফলে ফিল্ম তৈরি হয়। তো সেই জায়গা থেকে আমার মনে হয় তাদেরকে আরও টেকনিক্যাল হওয়া উচিত। ফিল্ম ল্যাঙ্গুয়েজটা সম্পর্কে আরও বোঝা উচিত, জানা উচিত এবং ওই প্র্যাকটিসটা হওয়া উচিত। তাহলে আরও ভালো সিনেমা এখানে হবে। হচ্ছে না, তা না। অনেকেই খুব ভালো করছেন। কান, বুসান লেগেই আছে। আমাদের অনেক সিনেমা অনেক দেশে প্রশংসিত হচ্ছে।’
‘অভিনেতাদের কাছে ওটিটি, টেলিভিশন, ফিল্মের পার্থক্য নাই’
মনোজের কথায় উঠে আসে ওটিটি প্ল্যাটফর্মের বিষয়টি। তিনি মনে করেন, অভিনেতাদের কাছে প্ল্যাটফর্ম নয়, অভিনয়ই মুখ্য বিষয়।
‘একসময় মানুষ তো মাঠেঘাটে অভিনয় করত, একসময় মঞ্চ তৈরি করে সেখানে অভিনয় করেছে। তারপরে টেলিভিশন বা ফিল্মের ক্যামেরার সামনে অভিনয় করেছে। অভিনয় দেখানো হয়েছে প্রজেক্টরে; টেলিভিশনে দেখেছি আমরা। তারপর আমরা ইন্টারনেটের মাধ্যমে দেখছি’, বলেন মনোজ।
‘আসলে মাধ্যমটা সব সময় চেঞ্জ হয়। যারা অভিনয় করেন তাদের কাছে ওটিটি, টেলিভিশন, ফিল্ম—এগুলোর কোনো পার্থক্য নাই। যদি কাজটা ভালো হয় তাহলে ভালো, যদি ভালো না হয় ভালো না। ওটিটি মানেই যে সব ভালো হয়ে যাবে বা হচ্ছে তা নয়’, যোগ করেন তিনি।
তিনি বলেন, ‘অনেক ওটিটি এখন দেখা যায় যে, কোয়ালিটি অ্যাচিভ করতে পারি নাই। আবার অনেকগুলো বেশ ভালো যাচ্ছে আরকি। তো অভিনেতাদের কাছে কোনো প্ল্যাটফর্ম কোনো বিষয় না।’
ওটিটির ভবিষ্যৎ নিয়ে এ অভিনেতা বলেন, ‘এখন যদি বলেন ওটিটির ভবিষ্যৎ কী? ডেফিনেটলি, একসময় মহাকাব্য রচিত হতো; মাঝখানে কোনো মহাকাব্য রচিত হয়নি। অনুকাব্য হয়ে গেছে, অনুকবিতা হয়ে গেছে। এখন কিন্তু আবার দেখবেন ওয়েব সিরিজ নামের যা হচ্ছে, এটা আবার এপিসোডি মহাকাব্যিক। তাই না? এটা আসলে ঘুরে ঘুরে আসে। ওটিটি এখন আছে, এখন ওটিটিতেই সবাই কাজ করবে। জানি না বিজ্ঞান কী আবিষ্কার করবে তারপরে।’
‘নীতিমালা দিয়ে কাকে আটকাবেন?’
ওটিটির নীতিমালা নিয়ে মনোজ বলেন, ‘নীতিমালা দিয়ে মানুষের নীতিকে, বিবেককে আসলে বেঁধে রাখা যায় না বা মানুষের খারাপ কোনো কিছুকে নীতি দিয়ে বাঁধা যায় না। তাহলে এত এত যে আইনের বই তৈরি হইছে পৃথিবীতে বা এত এত যে নীতি তৈরি হইছে পৃথিবীতে, কই আমি দেখি না যে পৃথিবীর মানুষ খুন করা বন্ধ রাখছে। ইন অ্যা ওয়ে দ্য কিল, ইন অ্যা ওয়ে দ্য লাভ টু।
‘সো যিনি শিল্পী, যিনি কিছু বানাচ্ছেন, ধরেই নিতে হবে যে তিনি শুদ্ধ একজন মানুষ। তিনি ভালোর জন্য, মঙ্গলের জন্যই কিছু করছেন। তাকে আসলে নীতিমালা দিয়ে বাঁধা যাবে না। যদি নীতিমালা দিয়ে বাঁধতেই হয় তাহলে তো সিনেমায় এখন…।’
নীতিমালা সব ক্ষেত্রে প্রয়োগযোগ্য কি না, সে প্রশ্নও তোলেন মনোজ।
তিনি বলেন, ‘এটা আসলে খুব কনফিউজিং একটা ব্যাপার। নীতিমালা দিয়ে বলা হলো যে, ধরেন সিগারেট খাওয়ার দৃশ্য দেখানো যাবে না। কোনো চরিত্র যদি সিগারেটখোর হয়, তখন কী করবেন? সো তখন নীতিমালাটা কীভাবে অ্যাপ্লাই করবেন বা ধরেন অনেক ক্ষেত্রে আছে যৌনতা দেখানো যাবে না বলা হয়। যৌনতা তো জীবনের একটা অংশ। সেটা কেন দেখানো যাবে না? আর মানুষ কি ইন্টারনেটে পর্নো মুভি দেখতেছে না? ইন্টারনেটে ঢুকলে তারা যেকোনো ধরনের যৌন দৃশ্য দেখতে পাচ্ছে।
‘তো কাকে আটকাবেন এই নীতিমালা দিয়ে? আমি বলতেছি না যে এ ধরনের দৃশ্যে গল্প ভরে দাও। তা না। কিন্তু এই দৃশ্যগুলো আমাদের জীবনের অংশ। এই দৃশ্যগুলো দেখানোই যাবে না, এটা আসলে মুশকিল।’
নীতিমালার অসুবিধা তুলে ধরে মনোজ বলেন, ‘এই প্রতিবন্ধকতা কীভাবে উতরানো যাবে? প্রথমত, আমি মনে করি নীতিমালা দিয়ে কোনো লাভ হয় না। দ্বিতীয়ত, নীতিমালা যতই কঠিন হোক না কেন, যিনি ক্রিয়েটিভ, যার মাথায় সৃষ্টিশীলতা আছে, তিনি কোনো না কোনো ওয়ে আউট করে নেন। সমস্যাটা এই দৃশ্য দেখানো যাবে বা এই দৃশ্য দেখানো যাবে না, এটাতে না; সমস্যা হচ্ছে একটা মানুষ কী বলতে চায়, সেটা সে কোনো না কোনোভাবে বলার ওয়ে খুঁজে নিতে পারে বুদ্ধি থাকলে।
‘এখন কী বলতে চাই সেটাকে থামানোই হচ্ছে নীতিমালার কাজ। কী দেখানো হচ্ছে এটা গুরুত্বপূর্ণ না, যখন মূলে গিয়ে আঘাত লাগে তখন আসলে নীতিমালার প্রয়োজন হয়। আমি সরকারকে, দেশের নিয়মকে কোনো কিছুকে খাটো করে বলছি না। কিন্তু জাস্ট একজন শিল্পী যে জায়গা থেকে অনুভব করে, সে জায়গা থেকে বলছি।’
তিনি বলেন, ‘নীতিমালার কোনো প্রয়োজন আছে মনে করি না। আবার নীতিমালা যদি দেয়ও, শিল্পীর তাতে কিছু যায় আসে না। সে একটা ওয়ে খুঁজে নিবে।’
অভিনয় নিয়ে কোনো পরিকল্পনা নেই বলে জানান এ অভিনেতা।
তিনি বলেন, ‘অভিনয় নিয়ে কোনো পরিকল্পনা নেই। ভালো ভালো কাজ করতে চাই, ভালো গল্পে, ভালো ডিরেক্টরদের সঙ্গে। আর চ্যালেঞ্জিং চরিত্রে কাজ করতে চাই।’
মুক্তির আগ থেকেই তুমুল আলোচনায় ছিল ভারতের দক্ষিণের কন্নড় সিনেমা কেজিএফ চ্যাপ্টার টু।
যেমনটি আলোচনায় ছিল, বাস্তবেও ঠিক তেমনই ঘটছে। গত ১৪ এপ্রিল মুক্তির পর থেকেই বক্স অফিসে দাপিয়ে বেড়াচ্ছে কেজিএফ টু।
ইতোমধ্যে হিন্দি ভার্সনে রেকর্ড গড়েছে সিনেমাটি। ৭ দিনে ২৫৫ কোটি রুপি আয় করেছে। যা বাহুবলি টুর রেকর্ডও ভেঙেছে।
হিন্দি ছাড়াও সিনেমাটি কন্নড়, তেলেগু, তামিল ও মালায়ালাম ভাষায় মুক্তি পেয়েছে। সব মিলিয়ে প্রথম সপ্তাহের শেষে সিনেমাটি বিশ্বব্যাপী ৭০০ কোটি রুপির বেশি ব্যবসা করেছে।
ভারতীয় চলচ্চিত্র বাণিজ্য বিশ্লেষক মনোবালা বিজয়বালান বৃহস্পতিবার দুপুরে এক টুইটে এ তথ্য জানিয়েছেন।
#KGFChapter2 ZOOMS past ₹700 cr milestone mark.
— Manobala Vijayabalan (@ManobalaV) April 21, 2022
২০১৮ সালের শেষের দিকে মুক্তি পায় প্রশান্ত নীল পরিচালিত এই ফ্র্যাঞ্চাইজির প্রথম সিনেমা কেজিএফ চ্যাপ্টার ওয়ান।
মুক্তির পর শুধু ভারতে নয়, বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে থাকা ভারতীয় সিনেমাপ্রেমীদের মধ্যে ব্যাপক সাড়া ফেলেছিল এটি। বক্স অফিসে গড়েছিল ইতিহাস।
গ্যাংস্টারদের নিয়ে গল্পের এই সিনেমায় দুর্দান্ত মারকুটে অভিনয় দিয়ে পুরো ভারত মাতিয়েছিলেন কন্নড় সুপারস্টার যশ। শুধু তা-ই নয়, এই সিনেমা দিয়ে দেশের বাইরেও লাখো ভক্ত-অনুরাগী জুটিয়েছেন এই অভিনেতা।
যশ বাদেও কেজিএফ চ্যাপ্টার টু-তে আরেক মুখ্য ভূমিকায় রয়েছেন বলিউড অভিনেতা সঞ্জয় দত্তকে। এ ছাড়া এতে গুরুত্বপূর্ণ সব চরিত্রে অভিনয় করেছেন রাবিনা ট্যান্ডন, প্রকাশ রাজ, শ্রীনিধি শেট্টির মতো তারকারা।
আরও পড়ুন:করোনাভাইরাস সংক্রমণের কারণে স্থগিত থাকা ২৭তম কলকাতা আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসব শুরু হচ্ছে আগামী ২৫ এপ্রিল নজরুল মঞ্চে। উৎসব চলবে ১ মে পর্যন্ত।
অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করবেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন বলিউড অভিনেতা ও আসানসোল লোকসভা উপনির্বাচনে বিজয়ী তৃণমূল এমপি শত্রুঘ্ন সিনহা।
আরও উপস্থিত থাকবেন অভিনেতা রঞ্জিত মল্লিক, প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায়সহ অনেকে।
উৎসব কমিটির চেয়ারম্যান পরিচালক রাজ চক্রবর্তী বলেন, ‘করোনার বিধিনিষেধ শিথিল হলেও আমাদের সাবধানে থাকতে হবে। সাবধানতার কথা বিবেচনা করেই এবার বাইরের কাউকে আমন্ত্রণ জানানো হয়নি।’
কিংবদন্তি পরিচালক সত্যজিৎ রায়ের জন্মশতবর্ষের শ্রদ্ধায় উৎসবের উদ্বোধনী ফিল্ম হিসেবে একই সঙ্গে নজরুল মঞ্চ ও রবীন্দ্র সদনে দেখানো হবে সত্যজিৎ রায় পরিচালিত অরণ্যের দিনরাত্রি।
পরিচালক অরিন্দম শীল সাংবাদিক সম্মেলনে বলেন, ‘সত্যজিৎ রায়ের জন্মশতবর্ষ উপলক্ষে সত্যজিতের সঙ্গে কাজ করা জীবিত শিল্পী ও কলাকুশলীদের এবার সংবর্ধনা দেয়া হবে।
এবার সত্যজিৎ রায় স্মারক বক্তব্য দেবেন পরিচালক সুজিত সরকার। সত্যজিতের জীবন ও কাজের ওপর প্রদর্শনীও থাকছে উৎসবে।
চলচ্চিত্র উৎসবের থিম ‘কান্ট্রি ফিনল্যান্ড’। কলকাতা শহরের ১০ হলে ৪০ দেশের ১৬৩টি সিনেমা দেখানো হবে এবারের উৎসবে।
২৭তম কলকাতা চলচ্চিত্র উৎসবে আটটি বিলুপ্তপ্রায় ভাষার সিনেমা দেখানো হবে। ভাষাগুলো হলো বোরো, টুলু, রাজবংশী, সান্তাড়, ও কোঙ্কনী ও কুড়ুম্বা।
চিদানন্দ দাশগুপ্ত, বুদ্ধদেব দাশগুপ্ত, দিলীপ কুমার, স্বাতীলেখা সেনগুপ্ত ও নিকোলাস জাঙ্কসোকে নিয়ে প্রদর্শনীর ব্যবস্থা থাকছে।
শিশির মঞ্চে তথ্য ও সংস্কৃতি দপ্তরে কলকাতা চলচ্চিত্র উৎসবের প্রস্তুতি নিয়ে সাংবাদিক সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন সংস্কৃতি দপ্তরের সচিব শান্তনু বসু, মন্ত্রী বিরবাহা হাঁসদা, উৎসব কমিটির চেয়ারম্যান রাজ চক্রবর্তী, পরিচালক গৌতম ঘোষ, পরিচালক অরিন্দম শীল, হরনাথ চক্রবর্তী, অভিনেত্রী জুন মালিয়া।
চলতি বছরের শুরুর দিকে বলিউড অভিনেত্রী প্রিয়াঙ্কা চোপড়া জানান যে, তার এবং নিক জোনাসের জীবনে সন্তান এসেছে। সারোগেসির মাধ্যমে তারা মা-বাবা হয়েছেন। তবে ছেলে না মেয়ে সন্তান তা জানাননি তিনি।
সেসময় বিভিন্ন সূত্রের বরাত দিয়ে ভারতীয় একাধিক সংবাদমাধ্যম জানায়, কন্যা সন্তানের মা-বাবা হয়েছেন তারকা দম্পতি।
কিন্তু কখনো সন্তানের নাম কিংবা ছবি, কোনোটাই প্রকাশ্যে আনেননি অভিনেত্রী।
তবে দেশটির একাধিক সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে, প্রিয়াঙ্কা-নিক তাদের মেয়ের নাম কী রেখেছেন তা এবার প্রকাশ্যে। তারকা দম্পতি কন্যার নাম রেখেছেন মালতী মারি চোপড়া জোনাস।
জন্ম সনদও নাকি হাতে পেয়েছে হলিউড কেন্দ্রিক একটি সংবাদ সংস্থা। সেই সূত্রেই জানা গেছে এই নাম।
সংস্কৃত এবং ল্যাটিন দুই শব্দ মিশিয়ে মেয়ের নাম রেখেছেন প্রিয়াঙ্কা-নিক। সংস্কৃতে ‘মালতী’ শব্দের অর্থ হল একরকম সুগন্ধযুক্ত ছোট সাদা ফুল অথবা চাঁদের আলো।
অন্যদিকে ‘মারি’ শব্দের অর্থ সমুদ্রকে রক্ষা করে যে নারী। মূলত মাতা মেরিকে অনেক সময় এই আখ্যা দেয়া হয়। যিশুর মাতা মেরিকে ফ্রাঞ্চে ‘মারি’ বলা হয়।
যদিও আনুষ্ঠানিকভাবে এখনও মেয়ের নাম বা ছবি কোনোটাই প্রকাশ্যে আনেননি তারকা জুটি।
যুক্তরাষ্ট্রের সান দিয়াগো শহরের এক হাসপাতালে গত ১৫ জানুয়ারি জন্ম হয়েছে নিক-প্রিয়াঙ্কার মেয়ের।
এরপর ২২ জানুয়ারি ইনস্টাগ্রামে এক পোস্টে সারোগেসির মাধ্যমে সন্তান হওয়ার কথা প্রকাশ্যে আনেন প্রিয়াঙ্কা।
প্রিয়াঙ্কার হাতে রয়েছে বেশ কয়েকটি আন্তর্জাতিক প্রোজেক্ট। এর মধ্যে টেক্স অফ ইউ রয়েছে মুক্তির অপেক্ষায়। পাশাপাশি আমাজনের টিভি সিরিজ সিটাডেল-এর শুটিংও শেষ করেছেন অভিনেত্রী।
সম্প্রতি এক পান মসলার কোম্পানির বিজ্ঞাপন করেন বলিউডের অভিনেতা অক্ষয় কুমার। শাহরুখ খান, অজয় দেবগনের মতো বলিউড তারকারা আগে থেকেই সেই সংস্থার ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসেডর।
তবে অক্ষয় এই বিজ্ঞাপনে অংশ হওয়ায় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নানা প্রতিক্রিয়া জানান তার ভক্ত-অনুরাগীরা। তাই তাদের ভাবনাকে সম্মান জানিয়ে ক্ষমা চেয়ে সেই সংস্থা থেকে নিজেকে সরিয়ে নিলেন অভিনেতা।
নিজের স্বাস্থ্য এবং শরীরচর্চা নিয়ে অত্যন্ত সজাগ অক্ষয়। যা তার চারপাশের লোকজন এবং অনুরাগীদেরও অনুপ্রেরণা জোগায়। তাই তিনি এই ধরনের বিজ্ঞাপনে অংশ নেয়ায় রুষ্ট হন অনেকেই।
এ জন্য বুধবার গভীর রাতে এক টুইট বার্তায় বিজ্ঞাপন থেকে সরে দাঁড়ানোর ঘোষণা করেন অক্ষয়।
সেই পোস্টে ক্ষমা প্রার্থনা করে অভিনেতা লেখেন, ‘আমি ক্ষমাপ্রার্থী। আমার অনুরাগী, শুভাকাঙ্ক্ষীসহ সবার কাছে ক্ষমা চাচ্ছি। গত কয়েক দিন ধরে আপনাদের কাছে থেকে যে প্রতিক্রিয়া পেয়েছি তা আমাকে গভীরভাবে প্রভাবিত করেছে। আমি তামাকজাত পণ্যের বিজ্ঞাপন কখনই করিনি এবং কোনো দিন করব না। বিমন ইলাইচির সঙ্গে আমার চুক্তি নিয়ে আপনাদের আবেগ বুঝতে পারছি। সেই আবেগকে সম্মান জানিয়েই বিনয়ের সঙ্গে সরে দাঁড়াচ্ছি।’
ওই বিজ্ঞাপন থেকে পাওয়া টাকা সমাজসেবার কাজে দান করে দেবেন বলেও জানিয়েছেন অক্ষয়।
তিনি লেখেন, ‘বিজ্ঞাপনের পারিশ্রমিক বাবদ পাওয়া টাকা দান করে দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। ওই সংস্থা হয়তো বিজ্ঞাপনটির সম্প্রচার চালিয়ে যাবে, অন্তত আইনিভাবে চুক্তির মেয়াদ শেষ না পর্যন্ত। তার দায় আমারই। তবে কথা দিচ্ছি, আগামী দিনে কাজের ব্যাপারে অত্যন্ত সতর্ক থাকব। বিনিময়ে আপনাদের ভালোবাসা এবং শুভেচ্ছা প্রার্থনা করি।’
তবে সংস্থাটির সঙ্গে চুক্তির মেয়াদ কবে শেষ, তার উল্লেখ করেননি অক্ষয়।
আরও পড়ুন:২০১৮ সালের শেষের দিকে মুক্তি পায় ভারতের দক্ষিণের কন্নড় ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রির বিগ বাজেটের সিনেমা কেজিএফ চ্যাপ্টার ওয়ান।
মুক্তির পর শুধু ভারতে নয়, বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে থাকা ভারতীয় সিনেমাপ্রেমীদের মধ্যে ব্যাপক সাড়া ফেলেছিল এটি। বক্স অফিসে গড়েছিল ইতিহাস।
গ্যাংস্টারদের নিয়ে গল্পের এই সিনেমায় দুর্দান্ত মারকুটে অভিনয় দিয়ে পুরো ভারত মাতিয়েছিলেন কন্নড় রকিং স্টার যশ। শুধু তা-ই নয়, এই সিনেমা দিয়ে দেশের বাইরেও লাখো ভক্ত-অনুরাগী জুটিয়েছেন এই অভিনেতা।
এরপর আবার ১৪ এপ্রিল কেজিএফ চ্যাপ্টার টু মুক্তির পর ঝড় তুলেছে বক্স অফিসে। জনপ্রিয়তা আর খ্যাতির শীর্ষে এখন যশ। তার সঙ্গে যখন অভিনয় করতে মুখিয়ে আছেন একাধিক অভিনেত্রী, কিন্তু তিনি কার সঙ্গে অভিনয় করার অপেক্ষায় রয়েছেন।
সেই অভিনেত্রী আর কেউ নন তিনি বলিউডের মাস্তানি দীপিকা পাডুকোন। ভারতীয় এক সংবাদমাধ্যমের খবরে বলা হয়েছে, সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে এই ইচ্ছা প্রকাশ করেছেন যশ।
সেই সাক্ষাৎকারে যশ জানান, যদি সুযোগ দেয়া হয় তাহলে দীপিকা পাডুকোনের সঙ্গে কাজ করতে চান তিনি। আর তার বিপরীতে অভিনয় করেই বলিউডে পা রাখতে চান তিনি।
শুধু দর্শকদের নয় অনেক তারকারও পছন্দের অভিনেত্রী দীপিকা। তার সঙ্গে স্ক্রিন শেয়ারের ইচ্ছা প্রকাশ করেন অনেকেই। এবার সেই তালিকায় যোগ হল কেজিএফ তারকা যশ।
আরও পড়ুন:বিগত কয়েক বছরে বলিউডের চেয়ে বেশি সাড়া ফেলছে ভারতের দক্ষিণী সিনেমা। তার উদাহরণ বাহুবলী, পুষ্পা, আরআরআর, কেজিএফসহ অনেক সিনেমা। বর্তমানে বক্স অফিসে চলছে দক্ষিণী কন্নড় সিনেমা কেজিএফ টু-এর ঝড়।
কন্নড়, তেলেগু, তামিল, মালয়ালাম ও হিন্দি ভাষায় মুক্তি পেয়েছে সিনেমাটি। এতে প্রধান ভূমিকায় অভিনয় করেছেন কন্নড় রকিং স্টার যশ। আর অন্যতম আরেক প্রধান চরিত্রে অভিনয় করেছেন সঞ্জয় দত্ত।
বলিউড ও দক্ষিণী ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রির মধ্যে পার্থাক্য কোথায়? সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে তা নিজের অভিমত জানিয়েছেন সঞ্জয় দত্ত।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যমকে দেয়া সেই সাক্ষাৎকারে সঞ্জয় দত্ত বলেন, ‘আমার মনে হয় হিন্দি ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রি হিরোইজম ভুলতে বসেছে, কিন্তু দক্ষিণী ইন্ডাস্ট্রি বীরত্বকে এখনও ভুলে যায়নি। আমি বলছি না যে স্লাইস অফ লাইফ খারাপ। কিন্তু আমরা কেন আমাদের উত্তরপ্রদেশ, বিহার, ঝাড়খণ্ড, রাজস্থানের দর্শকদের ভুলে গিয়েছি, যারা আমাদের দর্শকমহলের একটি বড় অংশ।
‘আমি আশা করি, হিন্দি ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রিতে সেই প্রবণতা ফিরে আসবে। আগে আমাদের স্বতন্ত্র প্রযোজক এবং অর্থদাতা ছিল, যা ফিল্ম স্টুডিওগুলোর করপোরেটাইজেশনের অবসান ঘটিয়েছে। করপোরেটাইজেশন ভালো, তবে এটি সিনেমার পছন্দের ক্ষেত্রে হস্তক্ষেপ করা উচিত নয়।’
উদাহরণ দিয়ে তিনি আরও বলেন, ‘দেখুন এস এস রাজমৌলির নির্দিষ্ট প্রযোজক রয়েছেন, যারা তার দৃষ্টিভঙ্গিতে সম্পূর্ণ বিশ্বাস রাখেন। আমাদের সঙ্গে আগেকার দিনে গুলশান রাই, যশ চোপড়া, সুভাষ ঘাই এবং যশ জোহরের মতো প্রযোজকও ছিলেন। তারা যে সিনেমাগুলো তৈরি করেছেন তা দেখুন। দক্ষিণে তারা কাগজে স্ক্রিপ্ট দেখে, এখানে আমরা কাগজে পরিসংখ্যান দেখি।’
সঞ্জয়কে পরবর্তী সময়ে যশ রাজ ফিল্মসের ব্যানারে নির্মিতব্য পৃথ্বীরাজ সিনেমায় দেখা যাবে। এতে আরও রয়েছেন অক্ষয় কুমার, মানুষী চিল্লার, সাক্ষী তানওয়ার এবং সোনু সুদ। এ ছাড়া শামশেরায় দেখা যাবে তাকে।
আরও পড়ুন:ভারতের দক্ষিণী সিনেমার জনপ্রিয় অভিনেত্রী কাজল আগারওয়াল মা হয়েছেন। মঙ্গলবার সকালে তার কোলজুড়ে এসেছে ফুটফুটে পুত্রসন্তান। মা ও সন্তান দুজনেই সুস্থ আছেন।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসকে এ তথ্য জানিয়েছেন অভিনেত্রীর বোন নিশা আগারওয়াল।
এটি জীবনের সেরা সুখবর উল্লেখ করেন নিশা। এর আগে তিনি ইনস্টাগ্রামে লিখেছিলেন, ‘এটি একটি আনন্দের দিন, একটি বিশেষ খবর আপনাদের সঙ্গে ভাগ করে নেয়ার অপেক্ষা সইছে না।’
চলতি বছর জানুয়ারিতে অন্তঃসত্ত্বা হওয়ার খবর জানিয়েছিলেন কাজল। ২০২০ সালের অক্টোবরে প্রেমিক গৌতম কিসলুর সঙ্গে সাত পাকে বাঁধা পড়েন অভিনেত্রী। এবার তাদের পরিবারে এলো নতুন সদস্য। তা নিয়ে ব্যাপক উচ্ছ্বসিত তারকাদম্পতি।
অন্তঃসত্ত্বা অবস্থায় গৌতম কিসলু তাকে যেভাবে দেখভাল করেছেন, তাতে ভীষণ খুশি অভিনেত্রী। গত সপ্তাহে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে স্বামীকে ধন্যবাদ জানিয়ে একটি আবেগঘন বার্তাও লিখেছিলেন কাজল।
সেখানে তাকে তিনি লিখেছিলেন, ‘আমাদের সন্তান আসার আগে কতটা যত্ন নিচ্ছ আমার, আমি জানতে চাই, তুমি ঠিক কতটা অসাধারণ একজন মানুষ আর কতটা অসাধারণ একজন বাবা হতে চলেছ।’
শিগগিরই কাজলকে দেখা যাবে চিরঞ্জীবী এবং রামচরণ অভিনীত আচার্য সিনেমায়। ২৯ এপ্রিল প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পাবে সিনেমাটি।
মন্তব্য