একটি চার দিনের ম্যাচ এবং পাঁচটি এক দিনের ম্যাচ খেলতে সেপ্টেম্বরে বাংলাদেশে আসছে আফগানিস্তানের অনূর্ধ্ব ১৯ ক্রিকেট দল। বৃহস্পতিবার এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বিষয়টি নিশ্চিত করে আফগানিস্তান ক্রিকেট বোর্ড (এসিবি)।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয় ৫ সেপ্টেম্বর থেকে শুরু হবে সিরিজ। শেষ হবে ২০ সেপ্টেম্বর। সব খেলা অনুষ্ঠিত হবে সিলেটে।
সফর নিশ্চিত হলেও সিরিজের চূড়ান্ত সূচি এখনও করা হয়নি।
সবকিছু ঠিক থাকলে অনূর্ধ্ব ১৯ বিশ্বকাপের পর এটিই হতে যাচ্ছে টাইগার যুবাদের প্রথম সিরিজ। গত বছর ফেব্রুয়ারিতে বিশ্বকাপের পর করোনাভাইরাস মহামারির কারণে বন্ধ হয়ে যায় দেশের সকল ক্রিকেট ইভেন্ট।
করোনার বিরতি কাটিয়ে জাতীয় দল ক্রিকেটে ফিরলেও আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ফেরা হয়নি যুবাদের। নিজেদের ভেতর দুই দলে ভাগ হয়ে খেলেই সন্তুষ্ট থাকতে হয় তাদের।
আরও পড়ুন:Afghanistan U19 is scheduled to face Bangladesh U19 in a series consisting of five One-day matches and a four-day match in Sylhet. The series will commence with an OD match on 5th September and will conclude on 20th September 2021. #AFGU19 pic.twitter.com/RzTWYnT9hs
— Afghanistan Cricket Board (@ACBofficials) August 10, 2021
চট্টগ্রাম টেস্টে দক্ষিণ আফ্রিকার কাছে ইনিংস ও ২৭৩ রানের বিশাল ব্যবধানে হেরে হোয়াইটওয়াশ হয়েছে বাংলাদেশ।
প্রথম ইনিংসে সফরকারীদের করা ৫৭৫ রানের বিপরীতে নিজেদের প্রথম ইনিংসে ১৫৯ রানে অলআউট হয় নাজমুল শান্তর দল। স্বাভাবিক হিসাবেই ফলো-অনে পড়ে স্বাগতিকরা। ৪১৬ রানে পিছিয়ে থেকে নিজেদের দ্বিতীয় ইনিংসেও খেই হারান বাংলাদেশের ব্যাটাররা।
প্রথম ইনিংসের চেয়েও ভয়ানক ব্যাটিং বিপর্যয়ের কবলে পড়ে বাংলাদেশ। দ্বিতীয় ইনিংসে ১৪৩ রানে অলআউট হলে বিশাল হারের মুখ দেখার পাশাপাশি ২-০ ব্যবধানে সিরিজ হারে টাইগাররা।
টেস্টের তৃতীয় দিনেই লজ্জার পরাজয় দেখতে হলো বাংলাদেশকে। তৃতীয় দিনের শুরুতেই ব্যাটিং বিপর্যয়ে পড়ে ৪৮ রানে ৮ উইকেট হারিয়েছিল বাংলাদেশ। এরপর অবশ্য মুমিনুল-তাইজুল জুটিতে দারুণ এক প্রতিরোধ গড়ে তোলে বাংলাদেশ।
বৃহস্পতিবার লাঞ্চের পরপরই প্রথম ইনিংসে ১৫৯ রানে অলআউট হয়ে ফলোঅনে পড়ে বাংলাদেশ। প্রথম ইনিংসে দক্ষিণ আফ্রিকার চেয়ে ৪১৬ রানে পিছিয়ে থেকে আবারও ব্যাটিংয়ে নামে স্বাগতিকরা।
আগের দিনের ৪ উইকেট খুইয়ে ৩৮ রান পুঁজিতে খেলতে নিয়ে তৃতীয় দিনের শুরুতে ফের খেই হারায় নাজমুল শান্তর দল। স্কোর বোর্ডে ১০ রান যোগ হতেই বিদায় নেযন আরও চার ব্যাটার। দলীয় ৪৬ রানের পর স্কোর বোর্ডে ২ রানের মাঝে সাজঘরে ফেরেন শান্ত, মুশফিক, মিরাজ ও অঙ্কন। এর মাঝে রাবাদা একাই নেন ৩ উইকেট।
অধিনায়ক নাজমুল শান্তকে বিদায় করে দিয়ে বাংলাদেশের মিডল অর্ডারে প্রথম আঘাত হানেন রাবাদা। ব্যক্তিগত ৯ ও দলীয় ৪৬ রানে সাজঘরে ফেরেন তিনি। এরপর ডাক মেরে প্যাভিলিয়নের পথ ধরেন মুশফিক। পিটারসনের বলে জর্জির তালুবন্দি হন তিনি। এরপর মিরাজ-অঙ্কন দুজনকেই বিদায় করেন রাবাদা।
অভিষিক্ত অঙ্কনের শূন্য রানে বিদায়ের পর ক্রিজে আসেন তাইজুল। তাকে সঙ্গে নিয়ে মোটামুটি বড় জুটি গড়েন মুমিনুল হক। অর্ধশতক তুলে নেন মুমিনুল হক।
৮ উইকেটে ১৩৭ রান নিয়ে লাঞ্চের পর নেমে আরও ১৪ রান যোগ করে ফেরেন মুমিনুল। মুথুসামির বলে এলবিডব্লিউ হয়ে তার ৮১ রানের ইনিংস শেষ হয়। এরপর নবম উইকেটে ১০৩ রানের জুটি গড়া তাইজুলও দ্রুত ফিরে যান। কেশব মহারাজকে তার বলেই ক্যাচ দিয়ে ৩০ রানে থামেন তিনি। শেষ হয় বাংলাদেশের প্রথম ইনিংস।
আরও পড়ুন:প্রথম ইনিংসে দক্ষিণ আফ্রিকার ৫৭৫ রানের পাহাড়সম সংগ্রহের পর ব্যাটিংয়ে নেমে বিপর্যয়ে পড়েছে বাংলাদেশ। আলোক-স্বল্পতায় দিনের খেলা আগেভাগে শেষ না হলে ক্ষত হয়তো আরও বড় হতো।
চট্টগ্রামের ব্যাটিং স্বর্গে সাবলীল ব্যাটিং করে ৬ উইকেট হারিয়ে পৌনে ছয়শ’ রান সংগ্রহ করেছে সফরকারী দক্ষিণ আফ্রিকা।
অন্যদিকে প্রথম ইনিংসে ব্যাট হাতে নেমে মাত্র ৯ ওভার খেলতে গিয়েই চার ব্যাটারকে খুইয়ে বসেছে বাংলাদেশ, সংগ্রহ মাত্র ৩৮ রান। অর্থাৎ এখনও ৫৩৭ রান পিছিয়ে আছে শান্তর দল। ফলো-অন এড়াতেও প্রয়োজন আরও অন্তত ৩৩৮ রান। বৃহস্পতিবার তৃতীয় দিনে ব্যাট হাতে নামবেন মুমিনুল হক (৬) ও নাজমুল হোসেন শান্ত (৪)।
সাগরিকায় সিরিজের দ্বিতীয় টেস্টের প্রথম ইনিংসে তিনটি শতক ও দুটি পঞ্চাশোর্ধ্ব ইনিংসে ভর করে ৬ উইকেট হারিয়ে ৫৭৫ রান তুলে ইনিংস ঘোষণা করে দক্ষিণ আফ্রিকা। দলটির হয়ে সর্বোচ্চ ১৭৭ রানের ইনিংস খেলেন ওপেনার টনি ডি জর্জি।
এছাড়া ট্রিস্টান স্টাবস ১০৬ ও দিনের শেষভাগে টেস্ট ক্যারিয়ারের প্রথম সেঞ্চুরির দেখা পান ভিয়ান মুল্ডার। ১০৫ রান করে অপরাজিত ছিলেন তিনি। আর তার সঙ্গে ৬৮ রানে অপরাজিত ছিলেন সেনুরান মুথুসামি। তিনিও টেস্টে নিজের প্রথম হাফ সেঞ্চুরির দেখা পেয়েছেন আজ। এছাড়া ৫৯ রানের ইনিংস খেলেন ডেভিড বেডিংহ্যাম।
বাংলাদেশের পক্ষে ১৯৮ রানের বিনিময়ে ৫ উইকেট নেন তাইজুল। অপর উইকেটটি পেয়েছেন নাহিদ।
এরপর ব্যাটিংয়ে নেমেই শুরু হয়ে যায় বাংলাদেশি ব্যাটারদের যাওয়া-আসার খেলা। রাবাদার বলে প্রথম ওভারেই উইকেটের পেছনে ক্যাচ দিয়ে শূন্য রানে ফেরেন সাদমান। এরপর পঞ্চম ওভারে ফের রাবাদার শিকার হন জাকির। কট বিহাইন্ড হন তিনিও। অথচ বুঝতেই পারেননি বল তার ব্যাটে লেগেছে। উল্টো একটি রিভিউ নষ্ট করে ফেরেন এই বাঁহাতি ব্যাটার।
২১ রানে দুই উইকেট হারিয়ে স্কোরবোর্ডে আর আট রান যোগ করতে না করতেই স্লিপে দাঁড়ানো প্রোটিয়া অধিনায়ক এইডেন মার্করামের হাতে ক্যাচ দিয়ে প্যাভিলিয়নের পথ ধরেন মাহমুদুল হাসান জয়। ফেরার আগে তিনি অবশ্য এ পর্যন্ত ইনিংস-সর্বোচ্চ ১০ রান করতে সক্ষম হন।
২৯ রানে তিন উইকেট হারিয়ে নাইটওয়াচম্যান হিসেবে হাসান মাহমুদকে ক্রিজে পাঠায় বাংলাদেশ। তবে প্রতিরোধ গড়তে গড়তে ব্যর্থ হয়েছেন তিনিও। কেশভ মহারাজের বলে বোল্ড হয়ে ফেরার আগে ৩ রান আসে তার ব্যাট থেকে।
হাসানের বিদায়ের পর মাঠে নামেন অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্ত। ৬ বল খেলে একটি বাউন্ডারির সাহায্যে ৪ রানে অপরাজিত তিনি। তার সঙ্গে অপরাজিত রয়েছেন মুমিনুল হক। ১০ বলে তিনিও একটি বাউন্ডারি মেরে করেছেন ৬ রান। এ দুই ব্যাটারের দিকেই আগামীকাল তাকিয়ে থাকবে বাংলাদেশ।
সংক্ষিপ্ত স্কোর
দক্ষিণ আফ্রিকা প্রথম ইনিংস: ৫৭৫/৬ ডিক্লে. (ডি জর্জি ১৭৭, স্টাবস ১০৬, মুল্ডার ১০৫*; তাইজুল ৫২.২-৫-১৯৬-৫, নাহিদ ২৪-২-৮৩-১)।
বাংলাদেশ প্রথম ইনিংস: ৩৮/৪ (৯ ওভার) (অতিরিক্ত ১৩, জয় ১০, মুমিনুল ৬*; রাবাদা ৩-০-৮-২, প্যাটারসন ৩-০-১৫-১, মহারাজ ২-১-৪-১)।
আরও পড়ুন:চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে দুই ম্যাচ সিরিজের দ্বিতীয় ও শেষ টেস্টে টসে জয়ী হয়ে ব্যাটিংয়ের সিদ্ধান্ত নিয়েছে সফরকারী দক্ষিণ আফ্রিকা।
মিরপুরে প্রথম টেস্টের একাদশ থেকে তিনটি পরিবর্তন এনেছে বাংলাদেশ।
জ্বরের কারণে লিটন দাস এবং ইনজুরিতে পড়ে একাদশে নেই জাকের আলি। দল থেকে বাদ পড়েছেন স্পিনার নাঈম হাসান।
এ তিনজনের জায়গায় একাদশে সুযোগ হয়েছে জাকির হাসান, মাহিদুল ইসলাম অঙ্কন ও নাহিদ রানার।
বাংলাদেশের ১০৬তম খেলোয়াড় হিসেবে টেস্ট অভিষেক হলো উইকেটরক্ষক-ব্যাটার অঙ্কনের। ৪৩টি প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে তিনটি সেঞ্চুরি ও ৯টি হাফ সেঞ্চুরিতে ৩০.৬৯ গড়ে ১ হাজার ৯৩৪ রান করেছেন ২৫ বছর বয়সী অঙ্কন।
প্রথম টেস্টের একাদশ থেকে দুটি পরিবর্তন এনেছে দক্ষিণ আফ্রিকা। ম্যাথু ব্রিটস্কি ও ড্যান পিয়েটের জায়গায় একাদশে নেয়া হয়েছে সেনুরান মুথুসামি ও ড্যান পিটারসনকে।
দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে এ পর্যন্ত ১৫টি টেস্টে মুখোমুখি হলেও কোনো ম্যাচ জিততে পারেনি বাংলাদেশ। ১৩টিতে হার ও দুটি টেস্ট ড্র করেছে টাইগাররা।
বাংলাদেশ একাদশ: নাজমুল হোসেন শান্ত (অধিনায়ক), সাদমান ইসলাম, মাহমুদুল হাসান জয়, মোমিনুল হক, মুশফিকুর রহিম, জাকির হাসান, মাহিদুল ইসলাম অঙ্কন (উইকেটরক্ষক), মেহেদি হাসান মিরাজ, নাহিদ রানা, তাইজুল ইসলাম ও হাসান মাহমুদ।
দক্ষিণ আফ্রিকা একাদশ: এইডেন মার্কর্যাম (অধিনায়ক), টনি ডি জর্জি, ট্রিস্টান স্টাবস, ডেভিড বেডিংহ্যাম, রায়ান রিকেলটন, কাইল ভেরেইনি, উইয়ান মুল্ডার, কেশব মহারাজ, কাগিসো রাবাদা, সেনুরান মুথুসামি ও ড্যান পিটারসন।
আরও পড়ুন:বাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেট দলের অধিনায়ক হিসেবে আর দায়িত্ব পালন করতে চান না নাজমুল হোসেন শান্ত।
ক্রিকেটবিষয়ক আন্তর্জাতিক একটি সংবাদমাধ্যম শনিবার এ খবর প্রকাশ করেছে।
চট্টগ্রামে ২৯ অক্টোবর থেকে শুরু হতে যাওয়া দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে দ্বিতীয় টেস্টের জন্য বাংলাদেশ দল প্রস্তুতি নিচ্ছে। এ সময়ে খবরটি এসেছে।
ক্রিকেট ওয়েবসাইট ক্রিকবাজ জানায়, শান্ত তার ভূমিকায় থাকতে অনিচ্ছুক এবং তিনি এ বিষয়ে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডকে (বিসিবি) অবহিত করেছেন।
শান্ত ওয়েবসাইটটিকে নিশ্চিত করেছেন যে, তিনি এখন বোর্ডের উত্তরের অপেক্ষা করছেন।
বাঁহাতি ব্যাটসম্যান শান্ত ২০২৪ সালের ফেব্রুয়ারিতে সব ফরম্যাটে বাংলাদেশের অধিনায়কের দায়িত্ব গ্রহণ করেন।
দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে আসন্ন দ্বিতীয় টেস্টের পর অধিনায়কত্ব ছেড়ে দিতে চান বলে বোর্ডকে জানিয়েছেন শান্ত।
ঠিক কী কারণে তিনি এমন সিদ্ধান্ত নিচ্ছেন, তা স্পষ্ট নয়। সম্প্রতি ব্যাট হাতে বাজে পারফরম্যান্স নিয়ে তাকে সমালোচনার মুখে পড়ার পাশাপাশি অধিনায়ক হিসেবেও তিনি নতুন কিছু করতে পারেননি।
শান্তর অধিনায়কত্ব ছাড়ার সিদ্ধান্ত সম্পর্কে বোর্ড এখনও কিছু বলেনি। তিনি যদি শেষ পর্যন্ত পদত্যাগ করেন, তবে কে অধিনায়কের দায়িত্ব নেবেন, তা স্পষ্ট নয়।
শান্ত ৯টি টেস্ট, ৯টি ওয়ানডে এবং ২৪টি টি-টোয়েন্টিতে বাংলাদেশের নেতৃত্ব দিয়েছেন। পাকিস্তানের বিপক্ষে ২-০ ব্যবধানে টেস্ট সিরিজ জেতাই এখন পর্যন্ত তার অধিনায়কত্বে বাংলাদেশের সেরা সাফল্য।
আরও পড়ুন:দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে মিরপুর টেস্টে দ্বিতীয় দিন শেষে ১০১ রান পিছিয়ে রয়েছে বাংলাদেশ। দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাট করতে নেমে শঙ্কার মধ্যে পড়লেও ওপেনার মাহমুদুল হাসান জয় ও মুশফিকুর রহিমের ব্যাটে কিছুটা স্বস্তি নিয়ে দিন শেষ করেছে স্বাগতিকরা। দ্বিতীয় ইনিংসে বাংলাদেশের সংগ্রহ ৩ উইকেটে ১০১ রান।
স্বাগতিকরা মঙ্গলবার ২০২ রানের লিডের বোঝা মাথায় নিয়ে দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাট করতে নামে। জয় ৩৮ ও মুশফিকুর রহিম ৩১ রানে অপরাজিত রয়েছেন। এর আগে অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্ত ২৩ এবং সাদমান ইসলাম ও মমিনুল হক যথাক্রমে ১ ও শূন্য রানে আউট হন। দুই বাঁ-হাতিকেই ফেরান দক্ষিণ আফ্রিকার পেসার কাগিসো রাবাদা। তৃতীয় ওভারের প্রথম ও চতুর্থ বলে তাদেরকে সাজঘরের পথ দেখান এই ডানহাতি পেসার।
সাদমান ক্যাচ তোলেন শর্ট লেগে টনি ডি জর্জির হাতে। আর মুমিনুল বলে খোঁচা দিয়ে তৃতীয় স্লিপে ফিল্ডিং করা উইয়ান মুলদারের তালুবন্দি হন।
প্রথম ইনিংসেও ব্যর্থ ছিলেন সাদমান আর মুমিনুল। ডাক মেরেছিলেন সাদমান। মুমিনুল আউট হয়েছিলেন ৪ রানে।
বাংলাদেশ অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্তর দৃষ্টিকটু আউটের নজির ভুরি ভুরি। ভালো খেলতে খেলতে অনেক সময়ই দেখা যায়, খুব সাধারণ একটি বলে উইকেট বিলিয়ে দিয়ে প্যাভিলিয়নের পথ ধরেন তিনি।
মিরপুরে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে প্রথম টেস্টের প্রথম ইনিংসে করেছিলেন ৭ রান। দ্বিতীয় ইনিংসে তার উইলো থেকে এলো ২৩ রান। কেশভ মহারাজের ঘূর্ণি ডিফেন্ড করতে গিয়ে সরাসরি পা দিয়ে বল আটকে দেন তিনি।
৪৯ বলে ২ বাউন্ডারিতে ২৩ রান করেন শান্ত। তার আগে মাহমুদুল হাসান জয়কে নিয়ে ৯৮ বলে ৫৫ রানের জুটি গড়েছিলেন তিনি।
মিরপুর স্টেডিয়ামে মঙ্গলবার ৬ উইকেটে ১৪০ রান নিয়ে দ্বিতীয় দিনের খেলা শুরু করে সফরকারী দক্ষিণ আফ্রিকা। কাইল ভেরেইনের দুর্দান্ত সেঞ্চুরিতে প্রথম ইনিংসে ৩০৮ রান করে অলআউট হয় দক্ষিণ আফ্রিকা। ১৪৪ বলে ১১৪ রানের ইনিংস খেলেন ভেরেইন।
বাংলাদেশের হয়ে ১২২ রান খরচায় ৫ উইকেট নেন তাইজুল ইসলাম। ৩ উইকেট নেন হাসান মাহমুদ ও ২টি উইকেট শিকার করেন মেহেদী হাসান মিরাজ।
এর আগে ব্যাটিং ব্যর্থতায় প্রথম ইনিংসে মাত্র ১০৬ রানে অলআউট হয়ে যায় স্বাগতিকরা।
আরও পড়ুন:জাতীয় দলের কোচের পদ থেকে চন্দ্রিকা হাথুরুসিংহেকে আনুষ্ঠানিকভাবে বরখাস্ত করেছে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি)। সেসঙ্গে নতুন কোচ হিসেবে ফিল সিমন্সের সঙ্গে চুক্তির অনুমোদন দেয়া হয়েছে।
রাজধানীর মিরপুরে বৃহস্পতিবার বিসিবির পরিচালনা পর্ষদের বৈঠকে এই সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। দেশে না থাকায় দুবাই থেকে ভার্চুয়ালি সভায় যোগ দেন বিসিবি সভাপতি ফারুক আহমেদ।
এর আগে মঙ্গলবার (১৫ অক্টোবর) হাথুরুসিংহেকে বরখাস্ত করার সিদ্ধান্ত নেয় বিসিবি। এ নিয়ে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তাকে কারণ দর্শানোর নোটিশও পাঠায় তারা।
এ বিষয়ে বিসিবি সভাপতি ফারুক আহমেদ বলেছিলেন, ‘আইনি জটিলতার কারণে প্রাথমিকভাবে তাকে শো-কজ ও সাসপেন্ড করা হয়েছে। পরে আনুষ্ঠানিকভাবে বরখাস্ত করা হবে।’
বিসিবি সভাপতি জানান, মূলত অসদাচরণের জন্যই হাথুরুসিংহেকে বরখাস্ত করা হচ্ছে। এমনকি চুক্তি নিয়ে বিসিবির সঙ্গেও তিনি অসদাচরণে জড়িয়েছিলেন।
ফারুক বলেন, ‘দুই-তিনটি ঘটনা ঘটেছে, যেগুলো একজন সাবেক খেলোয়াড় হিসেবে আমার জন্য খুব পীড়াদায়ক ছিল। পাশাপাশি এটা দলের জন্যও খুব একটা ভালো উদাহরণ ছিল না। সেসব বিবেচনা করে আজকে আমরা তাকে একটা কারণ দর্শাও নোটিশ এবং দায়িত্ব থেকে অব্যাহতির চিঠি দিয়েছি।’
প্রসঙ্গত, বিসিবি সভাপতি হওয়ার আগেই হাথুরুসিংহেকে ছাঁটাই করবেন বলে জানিয়েছিলেন ফারুক আহমেদ। পরবর্তীতে পাকিস্তান সফরে টাইগারদের দারুণ সাফল্যের কারণে টিকে গিয়েছিলেন ৫৬ বছর বয়সী এই কোচ। তবে ভারত সফরে ভরাডুবির পর শেষ রক্ষা আর হলো না তার।
বাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেট দলের কোচ হিসেবে এটা ছিল হাথুরুসিংহের দ্বিতীয় অধ্যায়। এর আগে, ২০১৪ সালের জুন থেকে ২০১৭ সালের অক্টোবর পর্যন্ত প্রথম দফায় টাইগারদের কোচ হন তিনি। তবে, শ্রীলঙ্কার কোচ হতে সে সময় দক্ষিণ আফ্রিকা সফরের মাঝপথেই বাংলাদেশের দায়িত্ব ছাড়েন তিনি। এ নিয়ে তখন ব্যাপক সমালোচনা হয়েছিল। অবশ্য নিজ দেশেও তিনি বেশিদিন স্থায়ী হতে পারেননি।
এরপর ২০২৩ সালে তৎকালীন বিসিবি সভাপতি নাজমুল হোসেন পাপন দ্বিতীয় মেয়াদে হাথুরুসিংহকে ফিরিয়ে আনলে বিষয়টি আবারও সমালোচনার জন্ম দেয়।
দ্বিতীয় দফায় তার সঙ্গে ২০২৫ সালের চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি পর্যন্ত চুক্তি করা হয়েছিল। অর্থাৎ সেই মেয়াদ ছিল আগামী বছরের ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত। তার আগেই বরখাস্ত করা হলো এই কোচকে।
হাথুরুসিংহের কোচিংয়ে ১০ টেস্ট, ৩৫ ওয়ানডে ও ৩৫ টি-টোয়েন্টি খেলেছে বাংলাদেশ। টেস্টে জয়-হার সমান পাঁচটি করে। তবে ওয়ানডেতে জয় এসেছে মাত্র ১৩টি, আর হার ১৯টিতে। এছাড়া টি-টোয়েন্টিতে ১৯টি ম্যাচে জয় ও ১৫টিতে হার এবং পরিত্যক্ত হয়েছে একটি ম্যাচ।
অন্যদিকে দু’দফায় ওয়েস্ট ইন্ডিজ দলের দায়িত্বে ছিলেন সিমন্স। তার অধীনেই ২০১৬ সালের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ জয় করে ক্যারিবীয়রা। এছাড়া জিম্বাবুয়ে ও আয়ারল্যান্ডের প্রধান কোচ ছিলেন তিনি। এরপর আফগানিস্তান দলের ব্যাটিং কোচের ভূমিকায় দেখা গেছে তাকে। এ ছাড়াও বিভিন্ন দলের পরামর্শক ও বিশেষজ্ঞ কোচ হিসেবে দায়িত্ব পালনের অভিজ্ঞতা রয়েছে সিমন্সের।
আরও পড়ুন:টেস্ট ম্যাচ খেলতে ঢাকায় ফিরছেন না বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেট দলের অলরাউন্ডার সাকিব আল হাসান।
এর আগে তার শেষ টেস্ট ম্যাচ খেলতে ঢাকায় আসবেন বলে জানালেও ছাত্র আন্দোলনে তার ভূমিকার জন্য জনরোষের আশঙ্কায় তিনি আসছেন না বলে জানান।
এর ফলে কানপুরে অনুষ্ঠিত ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যকার সিরিজের টেস্টটিই ছিল সাকিবের ক্যারিয়ারের শেষ টেস্ট।
কানপুরে সেই ম্যাচের আগে সাকিব আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের দীর্ঘতম ফরম্যাট থেকে অবসরের ঘোষণা দেন।
ঢাকায় দেশের দর্শকদের সামনে তার শেষ টেস্ট খেলার ইচ্ছা প্রকাশ করেন, কিন্তু সেই ইচ্ছা অপূর্ণ থেকে যাচ্ছে।
সংযুক্ত আরব আমিরাতের দুবাই থেকে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোরকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে ট্রানজিট স্টপেজে থাকা সাকিব নিজের পরিকল্পনা পরিবর্তনের কথা জানান।
তিনি বলেন, ‘আমার দেশে ফেরার কথা ছিল, কিন্তু এখন নিরাপত্তাজনিত কারণে, নিজের নিরাপত্তার কারণে আমি হয়তো তা করতে পারব না।’
এটা দৃশ্যমান যে, সাকিবের দেশে ফেরা নিয়ে চলমান বিক্ষোভের কারণে তার পরিকল্পনা বাতিল করতে বাধ্য হয়েছেন।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে বুধবার তার কুশপুত্তলিকা দাহ করেন একদল শিক্ষার্থী।
আরেক দল সাকিবকে স্টেডিয়ামে ঢুকতে না দেয়ার অনুরোধ জানিয়ে বিসিবিকে চিঠি দেয়ার পরিকল্পনা করেছিল।
শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন সরকারের বিরুদ্ধে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে সাকিবের নীরবতার কারণেই শিক্ষার্থীদের এ প্রতিরোধ। শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন প্রশাসন পতনের আগে মারণাস্ত্র ব্যবহার করে বিক্ষোভ দমনের চেষ্টা করেছিল এবং শেষ পর্যন্ত কমপক্ষে ১ হাজার জনকে হত্যা করে।
বাংলাদেশের ইতিহাসের অন্যতম সেলিব্রেটি ক্রিকেটার হওয়া সত্ত্বেও সাকিব আন্দোলনের সময় নীরব ছিলেন। এর কারণে আন্দোলনকারীদের মধ্যে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া দেখা দেয়।
তারা আশা করেছিলেন, সাকিব তাদের পাশে দাঁড়াবেন, কিন্তু আওয়ামী লীগ সরকারের সংসদ সদস্য সাকিব আন্দোলন চলাকালে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নিজের হাসিখুশি ছবি পোস্ট করেন, যা তার বিরুদ্ধে ক্ষোভ উসকে দেয়।
কানপুরে অবসরের ঘোষণা দেয়ার সময় সাকিব দেশে ফেরার পর নিজের নিরাপত্তা নিয়েও শঙ্কা প্রকাশ করেছিলেন।
ঢাকায় অবস্থানকালে তার নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে বোর্ডের প্রতি আহ্বান জানান তিনি, কিন্তু বোর্ড ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয় কড়া ভাষায় প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে।
ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে রয়েছেন আন্দোলনের অন্যতম শীর্ষ সংগঠক আসিফ মাহমুদ।
পরে ক্রীড়া উপদেষ্টা জানান, সাকিব দেশে ফিরলে তার নিরাপত্তা নিশ্চিত করবেন তারা, তবে সাকিবের বিরুদ্ধে চলমান আন্দোলনের প্রতিক্রিয়ায় সরকার তাদের অবস্থান পরিবর্তন করেছে।
সরকারের একজন উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা বুধবার রাতে নিশ্চিত করেন, বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতির কারণে সাকিবকে তার দেশে ফেরার পরিকল্পনা বাদ দেয়ার পরামর্শ দেয়া হয়েছিল। এ অবস্থা থেকে বোঝা যায়, সাকিবের টেস্ট ক্যারিয়ার এখন হয়তো অনানুষ্ঠানিকভাবে শেষ হয়ে গেছে।
আরও পড়ুন:
মন্তব্য