পাকিস্তান মোটরওয়ে পুলিশের শুভেচ্ছাদূত নির্বাচিত হয়েছেন সাবেক পাকিস্তানি ফাস্ট বোলার শোয়েব আখতার। শোয়েব নিজেই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এই খবরটি নিশ্চিত করেন।
সোমবার রাতে ৪৫ বছর বয়সী এই সাবেক ফাস্ট বোলার নিজের টুইটার ও ইন্সটাগ্র্যাম অ্যাকাউন্ট থেকে পাকিস্তান মোটরওয়ে পুলিশের সঙ্গে নিজের একটি ছবি পোস্ট করেন ও তাদের শুভেচ্ছাদূত হিসেবে কাজ শুরু করার ঘোষণা দেন।
মোটরওয়ে পুলিশের পক্ষ থেকে শোয়েবকে একটি ক্রেস্ট উপহার দেওয়া হয়। ছবির সঙ্গে পোস্টে শোয়েব লেখেন, ‘মোটরওয়ে পুলিশের সঙ্গে শুভেচ্ছাদূত হিসেবে কাজ করতে পেরে গর্বিত। আশা করি সড়ক দূর্ঘটনা কমাতে মানুষের সচেতনতা বাড়াতে কাজ করতে পারব ও সবাইকে ট্রাফিক আইন নিয়ে জানাতে পারব। আমাদের সবারই সুনাগরিক হিসেবে আইন মেনে চলা উচিত।’
পাকিস্তানের হয়ে ১৯৯৭ সালে ক্যারিয়ার শুরুর পর ৪৬টি টেস্ট ও ১৬৩টি ওয়ানডে খেলেন শোয়েব আখতার। ১৪ বছরের ক্যারিয়ারে ১৭৮টি টেস্ট ও ২৪৭ ওয়ানডে উইকেট শিকার করেন এই ফাস্ট বোলার।
গতির জন্য খ্যাত এই বোলার ২০০৩ সালের বিশ্বকাপে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে একটি ডেলিভারি ঘণ্টায় ১৬১.৩ কিমি (১০০.০২ মাইল) গতিতে করেন। যেটি এখন পর্যন্ত ক্রিকেটে রেকর্ড করা সবচেয়ে দ্রুতগতির ডেলিভারি।
ফাস্ট বোলারদের মধ্যে শোয়েব আখতারই প্রথম ১০০ মাইলের চেয়ে জোরে বল করেন।
ক্যারিয়ার জুড়ে ডোপ, শৃঙ্খলা ভঙ্গের জন্য একাধিক বার নিষেধাজ্ঞায় পড়া শোয়েবের বর্ণিল ক্রিকেট ক্যারিয়ার শেষ হয় ২০১১ বিশ্বকাপের পর।
Proud to be associated with Motorway Police of Pakistan as an ambassador. Will InshAllah play my part in creating awareness about road safety & inform people about traffic laws. We should all become an example for citizens to abide by laws#motorway #pakistan #RawalpindiExpress pic.twitter.com/Z8UaY0310N
— Shoaib Akhtar (@shoaib100mph) June 21, 2021
কানাডিয়ান ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশ-এর স্থায়ী ক্যাম্পাসে রবিবার সফলভাবে আন্তবিভাগ ক্রিকেট টুর্নামেন্টের ফাইনাল অনুষ্ঠিত হয়েছে।
এ টুর্নামেন্টে সিইউবির বিভিন্ন বিভাগের প্রতিযোগী দলগুলো অংশগ্রহণ করে। ব্যতিক্রমী ক্রিকেটিং দক্ষতা ও দলগত কাজ খেলাকে প্রাণবন্ত করে তুলে।
গ্র্যান্ড ফিনালের আয়োজনে ব্ল্যাকআউটস এবং সিইউবি অলস্টারদের মধ্যে দুর্দান্ত ম্যাচ হয়।
সিইউবি ব্ল্যাকআউটস দল চ্যাম্পিয়ন হয়ে শিরোপা অর্জন করে। সেরা খেলোয়াড় নির্বাচিত হন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী শাফিন।
খেলা শেষে পুরস্কার বিতরণ ও চ্যাম্পিয়ন ট্রফি প্রদান করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রাস্টি বোর্ডের ভাইস চেয়ারম্যান চৌধুরী জাফরুল্লাহ শারাফাত, এক্সিকিউটিভ চেয়ারম্যান জাবেদ হোসেন, উপাচার্য প্রফেসর ড. এইচ এম জহিরুল হক এবং উপ-উপাচার্য প্রফেসর ড. গিয়াস উ আহসান।
সিইউবি স্পোর্টস ক্লাব আয়োজিত ইভেন্টটি শিক্ষক, শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের উপস্থিতিতে প্রাণবন্ত হয়ে ওঠে।
আরও পড়ুন:বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগের (বিপিএল) উদ্বোধনী ম্যাচে দুর্বার রাজশাহীকে ৪ উইকেটে হারিয়েছে ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়ন ফরচুন বরিশাল।
সোমবার মিরপুরের শের-ই-বাংলা জাতীয় স্টেডিয়ামে বিপিএলের এবারের আসর শুরু হয়েছে।
আসরের উদ্বোধনী ম্যাচে দুর্বার রাজশাহীর বিপক্ষে সপ্তম উইকেট জুটিতে মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ ও ফাহিম আশরাফের ৮৮ রানের জুটি বরিশালের জয় নিশ্চিত করতে ভূমিকা রাখে।
১৯৮ রানের চ্যালেঞ্জিং লক্ষ্যে পৌঁছতে মাঠে নেমে বরিশাল তাদের ইনিংসের প্রথম বলেই ওপেনার নাজমুল হোসেন শান্তকে হারায়। জিসান আলমের বলে এলবিডব্লিউর ফাঁদে পড়েন তিনি।
পাওয়ার প্লে-র মধ্যেই আরও দুই উইকেট হারিয়ে তিন উইকেটে ৩০ রান তুলতে সক্ষম হন তারা।
এরপর তৌহিদ হৃদয় ২৩ বলে ৩২ রানের ইনিংস খেলে শুরুর ধাক্কা সামলে নেয়। কিন্তু কাইল মেয়ার্স (৫) ও মুশফিকুর রহিম (১৩) দ্রুত আউট হওয়ায় বরিশাল আরও বিপদে পড়ে যায়।
অর্ধেক ওভার মাঠে গড়ানোর আগেই বরিশাল অর্ধেক উইকেট হারিয়ে বসে। ১৩তম ওভারে নিজেদের ষষ্ঠ উইকেট হারায় তারা।
ম্যাচের এই পর্যায়ে মাহমুদউল্লাহ ও আশরাফি শক্তভাবে দাঁড়িয়ে ম্যাচ জয়ের শক্তিশালী জুটি গড়েন। লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে ১১ বল হাতে রেখে চার উইকেট হাতে রেখেই জয়ের বন্দরে পৌঁছে যায় তারা।
এর আগে ইয়াসিরের ৪৭ বলে অপরাজিত ৯৪ ও এনামুলের ৫১ বলে ৬৫ রানের ওপর ভর করে ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়ন ফরচুন বরিশালের বিপক্ষে ৩ উইকেটে ১৯৭ রানের বড় স্কোর করে দুর্বার রাজশাহী।
টস হেরে প্রথমে ব্যাট করতে আসা দুর্বার রাজশাহী ইনিংসের দ্বিতীয় ওভারে জিসান আলমকে শূন্য রানে আউট করেন কাইল মায়ার্স। স্কোর বোর্ডে ২৫ রান উঠতেই রাজশাহী দ্বিতীয় উইকেট হারায়।
বরিশাল ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ নেয়ার চেষ্টা অব্যাহত রাখলে তৃতীয় উইকেট জুটিতে ১৪০ রানের জুটি গড়েন এনামুল ও ইয়াসির। ১৮তম ওভারে পতনের আগে এনামুল ৫১ বলে ৪টি চার ও পাঁচটি ছক্কায় ৬৫ রান করে দলকে এগিয়ে নেন। তবে উইকেটের অপর প্রান্তে ছিলেন ইয়াসির। সাতটি ৪ ও আটটি ছক্কায় ৯৪ রানে অপরাজিত থাকেন তিনি।
বছরের পর বছর ধরে বিপিএল থেকে ছিটকে পড়া মায়ার্স প্রত্যাবর্তন করে রাজশাহীর হয়ে দুটি উইকেট নেন।
এদিকে টিকিট নিয়ে সোমবার মিরপুর শের-ই-বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামের সামনে সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। তারা স্টেডিয়ামের একটি গেট ভেঙে ভেতরে ঢুকে পড়ে। জনতাকে ছত্রভঙ্গ করতে পুলিশ লাঠিচার্জও করে।
আরও পড়ুন:জাকের আলির বিস্ফোরক ইনিংসের সুবাদে টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে প্রথমবারের মতো হোয়াইটওয়াশ করেছে বাংলাদেশ ক্রিকেট দল।
সিরিজের তৃতীয় ও শেষ ম্যাচে শুক্রবার ৮০ রানে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে হারিয়েছে বাংলাদেশ। টি-টোয়েন্টিতে আইসিসি পূর্ণ সদস্য কোনো দেশের বিপক্ষে রান বিবেচনায় সবচেয়ে বড় জয়ের স্বাদ পেল বাংলাদেশ।
আগেরটি ছিল চট্টগ্রামে গত বছর মার্চে আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে ৭৭ রানের।
সিরিজের প্রথম দুই ম্যাচ যথাক্রমে ৭ ও ২৭ রানে জিতেছিল বাংলাদেশ। এই প্রথম তিন ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে হোয়াইটওয়াশ করল টাইগাররা।
২০১২ সালে সর্বশেষ বিদেশের মাটিতে তিন ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজে আয়ারল্যান্ডকে হোয়াইটওয়াশ করেছিল বাংলাদেশ।
সেন্ট ভিনসেন্টে ওপেনার পারভেজ হোসেন ইমনের ঝোড়ো ব্যাটিংয়ে ২৮ বলে ৪৪ রানের সূচনা পায় টস জিতে প্রথমে ব্যাট করতে নামা বাংলাদেশ। ইনিংসের প্রথম ৪ ওভারে ১৫ বলে ২৯ রান তোলেন ইনজুরি আক্রান্ত সৌম্য সরকারের জায়গায় একাদশে সুযোগ পাওয়া ইমন।
পঞ্চম ওভারের চতুর্থ বলে ওয়েস্ট ইন্ডিজ পেসার রোমারিও শেফার্ডের বলে বাংলাদেশের প্রথম ব্যাটার হিসেবে আউট হন ওপেনার ও অধিনায়ক লিটন দাস। তিনটি চারে ১৪ রান করেন লিটন।
দারুণ শুরুর পর পাওয়ার প্লের শেষ বলে বিদায় নেন ইমন। পেসার আলজারি জোসেফের বলে স্কয়ার লেগে জাস্টিন গ্রেভসকে ক্যাচ দেন চারটি চার ও দুটি ছক্কায় ২১ বলে ৩৯ রান করা ইমন।
তিন নম্বরে ব্যাট হাতে নেমে এবারও ব্যর্থ হন তানজিদ হাসান। ৯ রান করে স্পিনার গুদাকেশ মোতির বলে উইকেটরক্ষক নিকোলাস পুরানকে ক্যাচ দেন তানজিদ। এতে দলীয় ৬৫ রানে ৩ উইকেট হারায় বাংলাদেশ।
উইকেট পতন ঠেকিয়ে চতুর্থ উইকেটে ৩১ বলে ৩৭ রান যোগ করে ১৩তম ওভারে দলের রান ১০০ পার করেন মেহেদি হাসান মিরাজ ও জাকের।
উইকেটে সেট হয়ে ১৩তম ওভারে সাজঘরে ফেরেন মিরাজ। স্পিনার রোস্টন চেজের বলে স্লগ সুইপ করতে গিয়ে সীমানার কাছে গ্রেভসকে ক্যাচ দেন তিনটি বাউন্ডারিতে ২৩ বলে ২৯ রান করা মিরাজ।
মিরাজ ফেরার পর ১৫তম ওভারে জোড়া উইকেট হারায় বাংলাদেশ। শামীম হোসেন ২ ও মাহেদি হাসান শূন্যতে রান আউট হন। এর মধ্যে নাটকীয়ভাবে রান আউট হন শামীম।
দ্বিতীয় রান নিতে গিয়ে স্ট্রাইক প্রান্তে থাকা শামীমের দিকে চলে যান জাকের। ওই সময় বল নিয়ে নন স্ট্রাইকের উইকেট ভেঙে দেন চেজ। নিজেকে রান আউট ভেবে মাঠ ছাড়েন জাকের, কিন্তু টিভি আম্পায়ার ভিডিও রিপ্লেতে জানান, স্ট্রাইক প্রান্তে শামীমের আগে ক্রিজে ব্যাট স্পর্শ করেন জাকের। তাই রান আউট হন শামীম। ১৬ বলে ১৭ রানে জীবন পান জাকের।
১১৪ রানে ষষ্ঠ উইকেট হারানোর পর বাংলাদেশের রানের চাকা সচল রাখেন জাকের ও তানজিম হাসান সাকিব। সপ্তম উইকেটে দুজনের ২৭ বলে ৫০ রানের জুটিতে বড় সংগ্রহের পথ পায় টাইগাররা।
১৯তম ওভারের শেষ বলে তানজিমকে আউট করে জুটি ভাঙেন শেফার্ড। একটি করে চার-ছক্কায় ১২ বলে ১৭ রান করেন তানজিম।
৩৪ বলে ৪৮ রান নিয়ে শেষ ওভার শুরু করেন জাকের। আলজারির দ্বিতীয় বলে চার মেরে টি-টোয়েন্টিতে দ্বিতীয় হাফ সেঞ্চুরি পূর্ণ করেন ৩৬ বল খেলা জাকের। এরপর ওভারের তৃতীয়, চতুর্থ ও ষষ্ঠ বলে ছক্কা মারেন জাকের।
শেষ ওভার থেকে ২৫ রান আসায় ২০ ওভারে ৭ উইকেটে ১৮৯ রানের বড় সংগ্রহ পায় বাংলাদেশ।
ওয়েস্ট ইন্ডিজের মাটিতে টি-টোয়েন্টি এটিই সর্বোচ্চ দলীয় রান বাংলাদেশের।
শেষ ১০ ওভারে ১১৩ ও শেষ ৫ ওভারে ৭৫ রান তুলে টাইগাররা। এর মধ্যে জাকেরের সংগ্রহ ছিল ৩৪ বলে ৬৭ রান।
শেষ পর্যন্ত ৩টি চার ও ৬টি ছক্কায় ৪১ বলে ১৭৫ স্ট্রাইক রেটে অপরাজিত ৭২ রান করেন জাকের। ২২ ম্যাচের টি-টোয়েন্টিতে এটিই তার ক্যারিয়ার সেরা ইনিংস।
এ বছরের মার্চে সিলেটে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ৩৪ বলে ৬৮ রান করেছিলেন জাকের।
বল হাতে ওয়েস্ট ইন্ডিজের শেফার্ড দুটি, আলজারি-চেজ ও মোতি একটি করে উইকেট নেন।
জবাবে ইনিংসের দ্বিতীয় বলে পেসার তাসকিন আহমেদের বলে লেগ বিফোর হন ওয়েস্ট ইন্ডিজ ওপেনার ব্র্যান্ডন কিং। পরের ওভারে গ্রেভসকে ৬ রানে ফেরত পাঠান স্পিনার মাহেদি।
৭ রানে ২ উইকেট পতনের পর বাংলাদেশ বোলারদের ওপর পাল্টা আক্রমণ করেন জনসন চালর্স ও নিকোলাস পুরান। মারমুখী ব্যাটিংয়ে বড় জুটির আভাস দিচ্ছিলেন তারা। পাওয়ার প্লের শেষ ওভারে পুরানকে বোল্ড করে জুটি ভাঙেন মাহেদি। ১০ বলে ২টি চার ও ১টি ছক্কায় ১৫ রান করেন পুরান। গ্রেভস-পুরান জুটি ২৪ বলে ৩৮ রান যোগ করেন।
দলীয় ৪৫ রানে পুরান ফেরার পর ব্যাটিং ধস নামে ওয়েস্ট ইন্ডিজের। নিয়মিত বিরতিতে উইকেট হারিয়ে ১৬ দশমিক ৪ ওভারে ১০৯ রানে অলআউট হয় ওয়েস্ট ইন্ডিজ। সাত নম্বরে নামা রোমারিও শেফার্ডের ২৭ বলে ৩৩ রানে কোনোমতে দলীয় ১০০ রান স্পর্শ করতে পারে ওয়েস্ট ইন্ডিজ।
চার ওভারে ২১ রানে ৩ উইকেট নিয়ে বাংলাদেশের পক্ষে সেরা বোলার রিশাদ। এ ছাড়া তাসকিন-মাহেদি দুটি করে এবং তানজিম-হাসান একটি করে উইকেট নেন।
ম্যাচ সেরা হন জাকের। ব্যাট হাতে ৩৭ রান ও বল হাতে ৮ উইকেট নিয়ে সিরিজ সেরা হন মাহেদি।
এবারের ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরে দুই ম্যাচের টেস্ট সিরিজ ১-১ সমতায় শেষ করলেও তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজে হোয়াইটওয়াশ হয়েছিল বাংলাদেশ।
টি-টোয়েন্টি সিরিজে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে হোয়াইটওয়াশ করে সাফল্য নিয়ে বছরটি শেষ করতে পারল লিটন দাসের নেতৃত্বাধীন দলটি।
সংক্ষিপ্ত স্কোর
বাংলাদেশ: ২০ ওভারে ১৮৯/৭ (জাকের ৭২*, ইমন ৩৯, শেফার্ড ২/৩০)।
ওয়েস্ট ইন্ডিজ: ১৬.৪ ওভারে ১০৯/১০ (শেফার্ড ৩৩, চালর্স ২৩, রিশাদ ৩/২১)।
ফল: বাংলাদেশ ৮০ রানে জয়ী।
আরও পড়ুন:আর্নোস ভেল গ্রাউন্ডে দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টিতে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে ২৭ রানে হারিয়ে এক ম্যাচ বাকি থাকতেই তিন ম্যাচের সিরিজ জয় নিশ্চিত করেছে বাংলাদেশ।
২০১৮ সালের পর ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে এটাই বাংলাদেশের প্রথম টি-টোয়েন্টি সিরিজ জয়।
ওয়ানডে সিরিজে ৩-০ ব্যবধানে হতাশাজনক হারের পর সংক্ষিপ্ত ফরম্যাটে দারুণভাবে ঘুরে দাঁড়ায় সফরকারীরা টাইগাররা।
প্রথমে ব্যাট করতে নেমে ধীর ও স্যাঁতসেঁতে পিচে ছন্দ ধরে রাখতে হিমশিম খায় বাংলাদেশ। অধিনায়ক লিটন দাস (১০ বলে ৩) আকিল হোসেনের বলে স্টাম্পড হয়ে বিদায় নিলে ৮ রানের মাথায় প্রথম উইকেট হারিয়ে শুরুতেই সমস্যায় পড়ে বাংলাদেশ।
ওয়েস্ট ইন্ডিজের সুশৃঙ্খল বোলিংয়ের মোকাবিলায় টপ অর্ডার তানজিদ হাসান (২), সৌম্য সরকার (১১) ও মেহেদী হাসান মিরাজ (২৬) হোঁচট খেয়ে শুরুটা কাজে লাগাতে ব্যর্থ হয়। ফলে ১৪তম ওভারে ৬ উইকেটে ৭২ রান করে মনে হচ্ছিল হতাশাজনক স্কোরের দিকে এগোচ্ছে বাংলাদেশ।
শামীম হোসেনের একটি সতর্ক ইনিংস ম্যাচের মোড় ঘুরিয়ে দেয়। বাঁহাতি এ ব্যাটসম্যান ১৭ বলে দুটি চার ও দুটি ছক্কায় ৩৫ রান করে বাংলাদেশকে ২০ ওভারে ৭ উইকেটে ১২৯ রান তুলে দেয়।
ওয়েস্ট ইন্ডিজের হয়ে দুটি উইকেট নেন গুদাকেশ মোতি।
১৩০ রানের সামান্য লক্ষ্য অর্জন করতে নেমে বাংলাদেশের সুশৃঙ্খল বোলিংয়ের চাপে শুরুতেই নড়ে যায় ওয়েস্ট ইন্ডিজের ইনিংস।
তাসকিন আহমেদ তার প্রথম ওভারেই ব্রেন্ডন কিং (৮) ও আন্দ্রে ফ্লেচারকে (০) আউট করে স্বাগতিকদের ১৯ রানের মাথায় দুটি উইকেটের পতন ঘটান। এরপর মেহেদী হাসান ও রিশাদ হোসেন মিলে মিডল অর্ডারের নিকোলাস পুরান (৫) ও রোভম্যান পাওয়েলকে (৬) মাঠ ছাড়া করেন।
স্বাগতিকদের ভরসা ছিল রোস্টন চেজের ওপর। তিনি ৩৪ বলে ৩২ রানের ইনিংস খেলে দারুণ লড়াই করেন। আকিল হোসেইন চূড়ান্ত পর্যায়ে ৩১ বলে ৩১ রানের লড়াকু স্কোর যোগ করলেও অপর প্রান্তে উইকেট পড়তে থাকায় তাদের প্রচেষ্টা ব্যর্থ হয়।
হোসেইনকে আউট করে ১৮ ওভার ৩ বলে ১০২ রানে ওয়েস্ট ইন্ডিজের ইনিংস গুটিয়ে দেন তাসকিন।
আরও পড়ুন:বাসেতেরেতে সিরিজের দ্বিতীয় ওয়ানডেতে মঙ্গলবার বাংলাদেশকে ৭ উইকেটে হারিয়ে তিন ম্যাচ ওয়ানডে সিরিজ জিতে নিয়েছে ওয়েস্ট ইন্ডিজ।
জেডেন সিলসের ২২ রানের বিনিময়ে চার উইকেট এবং ব্র্যান্ডন কিংয়ের ৮২ রানের জাদুকরী ব্যাটিংয়ে ৭৯ বল বাকি থাকতেই ২২৮ রানের লক্ষ্যে পৌঁছে যায় স্বাগতিকরা।
টস জিতে ওয়েস্ট ইন্ডিজ প্রথমে বোলিং করার সিদ্ধান্ত নেয় এবং সিলস তাৎক্ষণিকভাবে বল ডেলিভারি করেন। ১০ ওভারের মধ্যে বাংলাদেশের টপ অর্ডারকে ৫৪-৩ করে দেন এ পেসার।
তানজিদ হাসান ৩৩ বলে ৪৬ রানের ঝোড়ো ইনিংস খেলে শুরুতেই প্রতিরোধ গড়ে তুললেও উইকেট পড়েছে নিয়মিত।
অষ্টম উইকেটে মাহমুদউল্লাহ (৬২) ও তানজিম হাসান সাকিবের (৪৫) মধ্যে রেকর্ড ৯২ রানের পার্টনারশিপ সত্ত্বেও ৪৫.৫ ওভারে ২২৭ রানে গুটিয়ে যায় বাংলাদেশ।
জবাবে ১০৯ রানের জুটি গড়ে শক্ত ভিত গড়েন ওয়েস্ট ইন্ডিজের দুই ওপেনার ব্র্যান্ডন কিং ও এভিন লুইস। তাদের আটটি বাউন্ডারি ও তিনটি ছক্কায় ৭৬ বলে ৮২ রান ইনিংসের গতি বাড়িয়ে দেয়।
রিশাদ হোসেনের বলে ৪৯ রান করে আউট হয়ে হাফ সেঞ্চুরির কাছাকাছি থেকে বিদায় নেন লুইস। কেসি কার্টি নেন ৪৫ রান। আর অধিনায়ক শাই হোপ অপরাজিত ১৭ ও শেরফানে রাদারফোর্ড অপরাজিত ২৪ রান করে জয়ের কাজটি স্বাচ্ছন্দ্যে শেষ করেন।
ম্যাচ শেষে হোপ বলেন, ‘আমরা আজ ঝোড়ো ছিলাম। আমরা ঘরের মাঠে সিরিজ জয়ের জন্য সংগ্রাম করছি। এখন ৩-০ ব্যবধানে শেষ করার আশা করছি।’
১০ বছর পর বাংলাদেশের বিপক্ষে এটি ওয়েস্ট ইন্ডিজের প্রথম ওয়ানডে সিরিজ জয়।
ম্যাচ শেষে দলের ব্যাটিং বিপর্যয় নিয়ে দুঃখ প্রকাশ করেছেন বাংলাদেশ অধিনায়ক মেহেদী হাসান মিরাজ।
তিনি বলেন, ‘মাঝের ওভারগুলোতে আমরা ভালো ব্যাটিং করতে পারিনি। পার্টনারশিপ মিস ছিল। এ উইকেটে তিন শর বেশি রান দরকার ছিল।’
ওয়েস্ট ইন্ডিজের লক্ষ্য ৩-০ ব্যবধানে হোয়াইটওয়াশ। অন্যদিকে বাংলাদেশ তাদের চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির প্রস্তুতির আগে পুনরায় সংগঠিত হতে চায়।
আরও পড়ুন:যুব এশিয়া কাপের ফাইনালে ভারতকে ৫৯ রানে হারিয়ে টানা দ্বিতীয়বারের মতো চ্যাম্পিয়ন হয়েছে বাংলাদেশ। রোববার দুবাই আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে প্রথমে ব্যাটিংয়ে নেমে ৪৯ ওভার ১ বলে সবক’টি উইকেট হারিয়ে ১৯৮ রান সংগ্রহ করে বাংলাদেশের যুবারা। ১৯৯ রানে জয়ের লক্ষ্যে ব্যাট হাতে নেমে ১৩৯ রানে গুটিয়ে যায় ভারত।
বাংলাদেশের যুবারা এদিন শুরু থেকেই নিয়ন্ত্রিত বোলিং করেন। ইনিংসের দ্বিতীয় ওভারেই আসে সাফল্য। আইয়ুস মার্থেকে (১) বোল্ড করে ওপেনিং জুটি ভাঙেন আল ফাহাদ। তাতে কিছুটা ব্যাকফুটে চলে যায় ভারত।
পঞ্চম ওভারে মারুফ মৃধাকে দুটি বাউন্ডারি মেরে পাল্টা আঘাত হানতে চেষ্টা করেন আরেক ওপেনার ভাইভাব সুরিয়াবানশি (৯)। তবে আরও একটি মারতে গিয়ে গ্যালিতে শিহাব জেমসের হাতে ক্যাচ দিয়ে মাঠ ছাড়েন তিনি।
ব্যাটিং অর্ডারে তিনে নামা আন্দ্রে সিদ্ধার্থকে সাজঘরে ফেরান রিজান হোসেন। ক্রিজে মোটামুটি সেট হয়ে যাওয়ার এই ভারতীয় ব্যাটার ৩৫ বলে ২০ রান করে বোল্ড হয়ে যান। টপ অর্ডারের তিন উইকেট তুলে এবার ভারতীয়দের চেপে ধরে বাংলাদেশ।
কেপি কার্থিকেয়াকে নিয়ে প্রতিরোধ গড়ার চেষ্টা করেন ভারতীয় অধিনায়ক মোহামেদ আমান। তবে ২১তম ওভারে জোড়া উইকেট তুলে ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ বাংলাদেশের হাতে এনে দেন ইমন। বিপজ্জনক হয়ে ওঠা কার্থিকেয়াকে উইকেটরক্ষক ফরিদের ক্যাচে পরিণত করে ভাঙেন জুটি। ২১ রান আসে কার্থিকেয়ার ব্যাট থেকে। শূন্য রানে নিখিল কুমারকেও ফেরান ইমন।
পরের ওভারে আবারও ইমনের আঘাত। এবার এই পেসারের শিকার হারভানশ পাঙ্গালিয়া। ৬ রান করা এই ব্যাটারকে উইকেটরক্ষকের ক্যাচে পরিণত করেন তিনি।
ভারতীয় অধিনায়ক আমান এক প্রান্ত আগলে রেখে আশা বাঁচিয়ে রাখেন। ৩২তম ওভারে বল হাতে নিয়েই তাকে ফেরান বাংলাদেশ অধিনায়ক আজিজুল। ব্যক্তিগত ২৬ রানে বোল্ড হয়ে যান আমান।
নয় নম্বরে নামা হার্দিক রাজ ২১ বলে করেন ২৪ রান। তাকেও ফেরান আজিজুল। এলবিডাব্লিউর ফাঁদে হার্দিক রাজ। এরপর চেতন শর্মার আউটের মধ্য দিয়ে নিশ্চিত হয় টাইগার যুবাদের জয়।
লেগস্পিনার দেবাশিস দেবা ছাড়া বাংলাদেশের হয়ে সব বোলারই উইকেট পেয়েছেন। তবে উইকেট না পেলেও দারুণ বোলিং করেন দেবা। ২৪ রান খরচায় ৩ উইকেট নিয়ে সেরা বোলার ইমন। আজিজুলও নেন ৩টি উইকেট। এছাড়া দুটি শিকার আল ফাহাদের।
এর আগে টস হেরে ব্যাট করতে নেমে ১৭ রানে কালাম সিদ্দিকিকে হারায় বাংলাদেশ। একাদশ ওভারে ফেরেন থিতু হওয়া আরেক ওপেনার জাওয়াদ আবরার (২০)। অধিনায়ক আজিজুল হাকিম তামিম আগের ম্যাচগুলোতে দারুণ খেললেও এদিন ২৮ বলে ১৬ রান করে সাজঘরে ফিরলে চাপে পড়ে দল।
এরপর শিহাব-রিজান মিলে চতুর্থ উইকেটে যোগ করেন ৬২ রান। দুজনেই ফেরেন অসময়ে। আয়ুশ হাটরের বলে ক্যাচ দিয়ে থামেন শিহাব। হার্দিক রাজের বলে বোল্ড হয়ে যান রিজান। দেবাশীষ দেবা, সাইমুন বাসির ব্যর্থ হলে দলকে এরপর টানেন ফরিদ। নবম উইকেটে মারুফ মৃধাকে নিয়ে যোগ করেন ৩১ রান।
দলের হয়ে ৬৫ বলে ৩টি চারের সাহায্যে সর্বোচ্চ ৪৭ রান করেছেন রিজান। ৬৭ বলে ৩টি চারে ৪০ আসে শিহাবের ব্যাট থেকে। ১৬৭ রানে ৮ উইকেট হারানোর পর টেল এন্ডারদের নিয়ে দলকে দুশ’র কাছে নিতে ৪৯ বলে গুরুত্বপূর্ণ ৩৯ রানের ইনিংস খেলেন ফরিদ। তিনিও চার মারেন ৩টি।
আরও পড়ুন:ইনজুরির কারণে বাংলাদেশের বিপক্ষে আসন্ন ওয়ানডে সিরিজ থেকে ছিটকে গেলেন ওয়েস্ট ইন্ডিজের দুই পেসার ম্যাথু ফোর্ড ও শামার জোসেফ।
তাদের জায়গায় ওয়েস্ট ইন্ডিজ ওয়ানডে দলে প্রথমবারের মতো সুযোগ পেয়েছেন মার্কিনো মিন্ডলি ও জেডিয়া ব্লেডস।
গত মাসে ঘরের মাঠে অনুষ্ঠিত ইংল্যান্ডের বিপক্ষে টি-টোয়েন্টি সিরিজের প্রথম ম্যাচে ঊরুর ইনজুরিতে পড়েন ফোর্ড।
বাংলাদেশের বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজের আগে ফোর্ড সুস্থ হয়ে উঠবেন বলে ধারণা করা হচ্ছিল। তাই পূর্বঘোষিত ওয়ানডে দলে রাখা হয়েছিল তাকে, কিন্তু ফিট হতে না পারায় পুনবার্সন চালিয়ে যাবেন ফোর্ড।
ইংল্যান্ডের বিপক্ষে টি-টোয়েন্টির আগে তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজে আট উইকেট নিয়ে সেরা খেলোয়াড় নির্বাচিত হন ফোর্ড।
বাংলাদেশের বিপক্ষে সদ্য শেষ হওয়া টেস্ট সিরিজের দ্বিতীয় ও শেষ ম্যাচে পায়ের ইনজুরিতে পড়া শামার থাকবেন চিকিৎসকদের পর্যবেক্ষণে। তাই ওয়ানডে সিরিজের দল থেকে বাদ পড়েছেন ।
দেশের হয়ে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে খেলার অভিজ্ঞতা আছে মিন্ডলির। ২০২২ সালে এডিলেডে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে টেস্ট অভিষেক হয় তার। এরপর জাতীয় দল থেকে বাদ পড়েন মিন্ডলি।
সম্প্রতি ঘরোয়া টুর্নামেন্ট সুপার ফিফটি কাপে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ উইকেট শিকারি ছিলেন মিন্ডলি। সাত ম্যাচে ১৯২ রান খরচায় ২০ উইকেট শিকার করেন তিনি। বল হাতে দারুণ ছন্দে থাকায় ওয়ানডে দলে ডাক পেয়েছেন ২৯ বছর বয়সী এ ক্রিকেটার।
সুপার ফিফটি কাপে চতুর্থ সর্বোচ্চ উইকেট শিকারি ছিলেন ব্লেডস। ৫ ম্যাচে ১৭৭ রানে ১৪ উইকেট নিয়ে প্রথমবারের মতো জাতীয় দলে ডাক পেলেন ২২ বছর বয়সী এ ক্রিকেটার।
আগামী ৮ ডিসেম্বর থেকে বাংলাদেশের বিপক্ষে তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজ শুরু করবে ওয়েস্ট ইন্ডিজ।
বাংলাদেশের বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজে ওয়েস্ট ইন্ডিজ দল: শাই হোপ (অধিনায়ক), ব্র্যান্ডন কিং (সহ-অধিনায়ক), কেসি কার্টি, রোস্টন চেজ, জাস্টিন গ্রেভস, শিমরন হেটমায়ার, আমির জাঙ্গো, আলজারি জোসেফ, মার্কিনো মিন্ডলি, জেডিয়া ব্লেডস, এভিন লুইস, গুডাকেশ মোটি, শেরফানে রাদারফোর্ড, জেইডেন সিলেস ও রোমারিও শেফার্ড।
আরও পড়ুন:
মন্তব্য