লম্বা সময় ধরে বাংলাদেশ দলের মিডল অর্ডারে ভরসার নাম মুশফিকুর রহিম। সেটির ব্যতিক্রম হয়নি শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ঘরের মাঠে ওয়ানডে সিরিজে।
৩ ম্যাচ মিলিয়ে করেছেন ২৩৭ রান। জিতে নিয়েছেন সিরিজ সেরার পুরস্কার। প্রথম ম্যাচে ৮৪ করার পর দ্বিতীয় ম্যাচে করেন ১২৫। শেষ ম্যাচে করেন মাত্র ২৮। আর সেই ম্যাচেই হেরে বসে বাংলাদেশ। তার আগেই দুটি ম্যাচে ম্যাচসেরা হয়ে দলকে জিতিয়েছেন। সেটির জোরে ২-১ ব্যবধানে সিরিজ জিতে নিয়েছে টাইগাররা।
তৃতীয় ম্যাচ শেষে সিরিজ সেরার পুরস্কার নেয়ার সময় মুশফিক বলেন, প্রতিপক্ষ তাকে বড় খেলোয়াড় হিসেবে ভাবে, যা তাকে সাহায্য করে।
‘ শ্রীলঙ্কা প্রতিপক্ষ হিসেবে সহজ দল নয়। তারা কখনও হাল ছেড়ে দেয় না ও সবসময় দারুণ কামব্যাক করে। আমি চাপ সবসময়ই উপভোগ করি। যখনই চাপ বা প্রত্যাশার বিষয় চলে আসে। আমি শান্ত থাকার চেষ্টা করি। আমি জানি, প্রতিপক্ষ আমাকে বড় খেলোয়াড় হিসেবেই চিন্তা করে। এটা আমাকে খানিকটা এগিয়ে দেয়,’ বলেন এ উইকেটকিপার ব্যাটসম্যান।
মুশফিক আরও জানান, প্রতি ম্যাচেই দলের জন্য সর্বোচ্চটা করার চেষ্টা করেন তিনি। বলেন, ‘ গত কয়েক মাস আমরা নিজেদের সেরা ক্রিকেটটা খেলতে পারিনি। তবে সৌভাগ্যক্রমে প্রথম দুই ম্যাচে নিজেদের পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করতে পেরেছি। দূর্ভাগ্যবশত ভালোভাবে শেষ করতে পারলাম না। ১৫ বছর ধরে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট খেলতে হলে আপনাকে নিজের দেশের জন্য যত বেশি সম্ভব অবদান রাখতে হবে। প্রতি ম্যাচে তার-ই চেষ্টা করি।’
সিরিজের তৃতীয় ম্যাচে যে দুই দলের জন্যই সমান সুযোগ থাকবে- এটা বোঝা গিয়েছিল ম্যাচের সূচি দেখেই। কিন্তু ম্যাচের আগে ঘটল অন্যকিছু। পিচ রিপোর্টে দেখা গেল দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাট করতে বেশ বেগ পোহাতে হবে। যেখানে বাঘের ভয়, সেখানেই যেন রাত হয়।
বাংলাদেশেরও হলো তাই, রান তাড়া করতে হবে বাংলাদেশকেই। সেটা করতে নেমে শুরুর দিকে একটু কঠিন হলেও শেষদিকে গিয়ে রিশাদ হোসাইনের তাণ্ডবে সেটা সহজেই করেছে বাংলাদেশ। সিরিজ নির্ধারণী ম্যাচে ৫৮ বল আর ৪ উইকেট হাতে রেখেই লঙ্কানদের কাঁদিয়ে সিরিজ বাগিয়ে নিল টাইগাররা।
মিরাজ আউট হওয়ার পর হারের শঙ্কা কিছুটা হলেও চোখ রাঙানি দিচ্ছিল বাংলাদেশকে। কারণ এরপর আর কোনো স্বীকৃত ব্যাটার নেই মুশফিকুর রহিম বাদে। এরপর উইকেটে আসেন রিশাদ। নিজের আগ্রাসী ব্যাটিংয়ের জানান দিলেন হাসারাঙ্গাকে প্রথম বলেই ছক্কা হাঁকিয়ে। সেই ওভারেই মারলেন আরেকটি চার। হাসারাঙ্গাকে তুলাধোনা করলেন তার পরের ওভারে। টানা ২ ছক্কা ও ৩ চারে ওই ওভার থেকে নিলেন ২৪ রান। রিশাদ অপরাজিত ছিলেন ১৮ বল থেকে ৪৮ রানে। এই জয়ে বাংলাদেশ গড়ল এক নতুন উপাখ্যান। ধরে রাখল এক দশকের একটি রেকর্ড। যেখানে ওয়ানডেতে প্রথম ম্যাচ জিতলে রেকর্ড নেই সিরিজ হারের।
প্রথমে ব্যাট করতে নেমে ব্যাটিং ব্যর্থতায় পড়ে লঙ্কানরা। বাংলাদেশকে ব্রেক-থ্রু এনে দেন পেসার তাসকিন আহমেদ। মাত্র ১৫ তুলতেই ফেরান দুই ওপেনার পাথুম নিশাঙ্কা (১) ও আভিস্কা ফার্নান্দোকে (৪)। প্রতিরোধ গড়ার চেষ্টা করেও ইনিংস বড় করতে পারেননি কুশল মেন্ডিস (২৯) আর সাদিরা সামিরা বিক্রমা (১৪)। তাড়াতাড়িই ফিরে যান আশালঙ্কাও (৩৭)। ১৫৪ রানেই ৭ উইকেট হারিয়ে ধুঁকতে থাকে শ্রীলঙ্কা।
একটা সময় শঙ্কা জেগেছিল ২০০ রান করার। কিন্তু লিনাংগের দৃঢ়চেতা ব্যাটিংয়ে সেটা উতরে যায় লঙ্কানরা। বাকি ব্যাটারদের আসা-যাওয়ার ভিড়ে তিনি ছিলেন উইকেট কামড়ে। শেষ পর্যন্ত সেঞ্চুরি করে দলের স্কোর ২০০ পার করে অপরাজিত থেকেই মাঠ ছেড়েছেন তিনি। ১০২ বল থেকে খেলেন ১০১ রানের দুর্দান্ত ইনিংস। লঙ্কানরা দাঁড় করায় ২৩৫ রানের পুঁজি।
জবাবে ব্যাট করতে নেমে শুরুটা ভালো হয়নি বাংলাদেশেরও। লিটন দাসের পরিবর্তে সুযোগ পাওয়া এনামুল হক বিজয় করেছেন মোটে ১২ রান। ব্যর্থ ছিলেন অধিনায়ক নাজমুল শান্ত (১), তৌহিদ হৃদয় (২২), মাহমুদউল্লাহ রিয়াদও (১)। তবে ব্যতিক্রম ছিলেন সৌম্য সরকারের কনকাশন সাব খেলতে নামা তানজিদ তামিম। ওপেনিংয়ে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে রাখলেন লিটন দাসকে। পুরো ইনিংসেই তিনি পরিচয় দিয়েছেন দায়িত্বশীলতার। ৮১ বল থেকে ৮৪ রান করে দলকে ভালো অবস্থানে রেখেই বিদায় নেন তিনি।
এরপর মুশফিকুর রহিম আর মেহেদী মিরাজ দলের হাল ধরেন। কিন্তু ১৭৮ রানের সময় হাসারাঙ্গার বলে ক্যাচ দিয়ে ফিরে যান মিরাজ। এতে কিছুটা হারের শঙ্কা জেগেছিল বাংলাদেশের। কিন্তু সেসব আর হতে দেননি রিশাদ হোসাইন। শুরুর বল থেকেই চড়াও হন লঙ্কান বোলারদের ওপর। তাদের তুলাধোনা করে হেসেখেলেই ৪ উইকেটের জয় তুলে নেয় টাইগাররা।
এই জয়ে তিন ম্যাচের সিরিজ ২-০ ব্যবধানে নিজেদের করে নিল নাজমুল শান্ত বাহিনী। ১৮ বল থেকে ৪৮ রান আর ৯ ওভার বল করে ১ উইকেট নিয়ে ম্যাচসেরা হয়েছেন রিশাদ হোসাইন। আর ৩ ইনিংসে একটি সেঞ্চুরি ও ফিফটিসহ ১৬৩ রান করে সিরিজসেরা হয়েছেন অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্ত।
আরও পড়ুন:লক্ষ্য খুব বেশি বড় না হলেও নিয়মিত উইকেটের পতন আর স্লো রান রেটের কারণে তৃতীয় ম্যাচেও বিপদে পড়ার শঙ্কা জেগেছিল টাইগারদের। তবে তানজিদ তামিমের ধৈর্য্যশীল ব্যাটিং আর রিশাদ হোসেনের শেষের ঝড়ে চার উইকেটের জয় তুলে নিয়েছে বাংলাদেশ।
এর ফলে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজটি ২-১ এ জিতেছে বাংলাদেশ। দলের হয়ে তানজিদ তামিম করেন সর্বোচ্চ ৮৪। তার ৮১ বলে খেলা ইনিংসটি ছিল চারটি ছক্কা ও ৯টি চারে সাজানো। অষ্টম ব্যাটার হিসেবে ক্রিজে নামা রিশাদ করেন ১৮ বলে ৪৮ রান। এই রান সংগ্রহ করতে গিয়ে চারটি ছক্কা ও পাঁচটি চারের মার মারেন।
আগের দুই ম্যাচের মতো এদিনও টস ভাগ্য যায় শ্রীলঙ্কার কাছে। তবে শুরুতো ব্যাটিংয়ের সিদ্ধান্ত নেন লঙ্কান অধিনায়ক কুশল মেন্ডিস। জানিথ লিয়ানাগের শতকে ভর করে ২৩৬ রানে অলআউট হয়ে যায় শ্রীলঙ্কা।
জবাবে খেলতে নেমে ৪০.২ ওভারে ৬ উইকেট হারিয়ে জয়ের বন্দরে পৌঁছায় বাংলাদেশ।
অসাধারণ বোলিং ও ব্যাটিং প্রদর্শনীর জন্য ম্যাচসেরার পুরস্কারও উঠেছে রিশাদের হাতে।
তিন ম্যাচ ওয়ানডে সিরিজের তৃতীয়টিতে বাংলাদেশের বিপক্ষে ২৩৬ রানের টার্গেট দিয়েছে সফরকারী শ্রীলঙ্কা।
চট্টগ্রামে সিরিজ নির্ধারণী এ ম্যাচে সোমবার টসে হেরে আগে বোলিংয়ে নেমেছে স্বাগতিক বাংলাদেশ।
তৃতীয় দিনের ম্যাচে ৫০ ওভারে ১০ উইকেট হারিয়ে ২৩৫ রানের সংগ্রহ পান লঙ্কানরা। শেষ ২ বলে এসে ২ উইকেট হারিয়ে শ্রীলঙ্কা অলআউট হয়েছে।
ওয়ানডে সিরিজের প্রথম দুই ম্যাচই ছিল দিবা-রাত্রির, যেখানে প্রথম ওয়ানডেতে জয় পেয়েছিল বাংলাদেশ। দ্বিতীয় ম্যাচটা নিজেদের করে নিয়েছে শ্রীলঙ্কা, তবে দুই ম্যাচেই একটা মিল ছিল। পরের ইনিংসে যারা ব্যাট করেছে, তারাই জয়ের স্বাদ পেয়েছে। এর পেছনে বড় কারণ ছিল চট্টগ্রামের আবহাওয়ার।
সিরিজ জেতার লক্ষ্যে আজ সকাল ১০টায় চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে তৃতীয় ও শেষ ওয়ানডেতে মুখোমুখি হয়েছে বাংলাদেশ ও শ্রীলঙ্কা।
তিন ম্যাচ ওয়ানডে সিরিজের তৃতীয়টিতে সোমবার টস জিতে ব্যাটিংয়ের সিদ্ধান্ত নিয়েছে সফরকারী শ্রীলঙ্কা।
চট্টগ্রামে সিরিজ নির্ধারণী এ ম্যাচে আগে বোলিংয়ে নেমেছে স্বাগতিক বাংলাদেশ।
ওয়ানডে সিরিজের প্রথম দুই ম্যাচই ছিল দিবা-রাত্রির, যেখানে প্রথম ওয়ানডেতে জয় পেয়েছিল বাংলাদেশ। দ্বিতীয় ম্যাচটা নিজেদের করে নিয়েছে শ্রীলঙ্কা, তবে দুই ম্যাচেই একটা মিল ছিল। পরের ইনিংসে যারা ব্যাট করেছে, তারাই জয়ের স্বাদ পেয়েছে। এর পেছনে বড় কারণ ছিল চট্টগ্রামের আবহাওয়ার।
প্রচুর শিশির দেখা গেছে দুই ম্যাচেই, যেটা ব্যাটিং দলকে বেশ খানিকটা সুবিধা দিয়েছে। আর সেটাই কাজে লাগিয়েছে তারা। সিরিজের শেষ ম্যাচটা অনুষ্ঠিত হবে সকাল ১০টায়। তাই এ ম্যাচে আবহাওয়া দুই দলের জন্যই সমান থাকবে।
ম্যাচের ফলে ভূমিকা থাকবে না শিশিরের। সে ক্ষেত্রে নিজেদের শক্তিকেই কাজে লাগিয়ে যারা ভালো খেলতে পারবে, জয়টা হবে তাদেরই প্রাপ্য।
বাংলাদেশ একাদশ: এনামুল হক, সৌম্য সরকার, নাজমুল হোসেন শান্ত (অধিনায়ক), তৌহিদ হৃদয়, মাহমুদুল্লাহ, মুশফিকুর রহিম, মেহেদি হাসান মিরাজ, রিশাদ হোসেন, তাসকিন আহমেদ, শরিফুল ইসলাম ও মুস্তাফিজুর রহমান।
শ্রীলঙ্কা একাদশ: পথুম নিশাঙ্কা, আভিশকা ফার্নান্দো, কুশল মেন্ডিস (অধিনায়ক), সাদিরা সামারাবিক্রমা, চারিথ আসালাঙ্কা, জানিথ লিয়ানাগে, দুনিথ ওয়েলালাগে, ওয়ানিন্দু হাসারাঙ্গা, প্রমোদ মদুশান, লাহিরু কুমারা ও মাহিশ থিকশানা।
আরও পড়ুন:প্রথম ম্যাচের আত্মবিশ্বাস নিয়েই দ্বিতীয় ওয়ানডেতে মাঠে নেমেছিল টাইগাররা। নানা উত্থান-পতন ছিল ব্যাটিং ইনিংসে। সব মিলিয়ে লড়াকু এক পুঁজিই গড়েছিল টাইগাররা। বোলিং ইনিংসে জয়ের আশাও জাগিয়েছিল তাসকিন-শরিফুলরা, কিন্তু শেষ পর্যন্ত পাথুম নিশাঙ্কা আর চারিথ আশালঙ্কার জুটিতে জয়টা অধরাই থেকে গেছে।
অপেক্ষা বেড়েছে সিরিজ জয়ের। সোমবার সকাল ১০টায় আবারও চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে সিরিজ জয়ের লক্ষ্যে তৃতীয় ওয়ানডেতে শ্রীলঙ্কার মুখোমুখি হবে বাংলাদেশ। খেলার চলতি ধারাবিবরণী সরাসরি সম্প্রচার করবে বাংলাদেশ বেতার।
ওয়ানডে সিরিজের প্রথম দুই ম্যাচই ছিল দিবা-রাত্রির, যেখানে প্রথম ওয়ানডেতে জয় পেয়েছিল বাংলাদেশ। দ্বিতীয় ম্যাচটা নিজেদের করে নিয়েছে শ্রীলঙ্কা, তবে দুই ম্যাচেই একটা মিল ছিল। পরের ইনিংসে যারা ব্যাট করেছে, তারাই জয়ের স্বাদ পেয়েছে। এর পেছনে বড় কারণ ছিল চট্টগ্রামের আবহাওয়ার।
প্রচুর শিশির দেখা গেছে দুই ম্যাচেই, যেটা ব্যাটিং দলকে বেশ খানিকটা সুবিধা দিয়েছে। আর সেটাই কাজে লাগিয়েছে তারা। সিরিজের শেষ ম্যাচটা অনুষ্ঠিত হবে সকাল ১০টায়। তাই এ ম্যাচে আবহাওয়া দুই দলের জন্যই সমান থাকবে।
ম্যাচের রেজাল্টে ভূমিকা থাকবে না শিশিরের। সে ক্ষেত্রে নিজেদের শক্তিকেই কাজে লাগিয়ে যারা ভালো খেলতে পারবে, জয়টা হবে তাদেরই প্রাপ্য।
প্রথম দুই ম্যাচে শূন্য রানে আউট হওয়ায় তৃতীয় ম্যাচের দল থেকে বাদ পড়েছেন ওপেনার লিটন দাস। সে ক্ষেত্রে আজকের ম্যাচে নিশ্চিতভাবেই পরিবর্তন আসবে বাংলাদেশ দলে। লিটনের পরিবর্তে দলে সুযোগের অপেক্ষায় রয়েছে অন্য দুই ওপেনার এনামুল হক বিজয় আর তানজিদ হাসান তামিম। দুইজনই আছেন ফর্মে, তবে ওপেনিং পজিশনে দেখা যেতে পারে এনামুল হক বিজয়কেই।
পরিবর্তন আসবে বোলিং লাইনেও। ইনজুরিতে পড়েছেন পেসার তানজিম হাসান সাকিব। তার পরিবর্তে একাদশে দেখা যেতে পারে পেসার হাসান মাহমুদকে।
ডিপিএলে দুর্দান্ত সময় পার করছিলেন তিনি। সাম্প্রতিক ফর্ম বিবেচনায় তাই হাসান মাহমুদের একাদশে জায়গা পাওয়ার সম্ভাবনাই বেশি।
ইনজুরিতে ছিটকে গেছেন শ্রীলঙ্কার বামহাতি পেসার দিলশান মাদুশঙ্কাও, যেটা কিছুটা হলেও স্বস্তি দেবে বাংলাদেশকে।
শেষ দুই ম্যাচেই বাংলাদেশের ব্যাটিং লাইনআপে একটা জিনিসে বেশ মিল দেখা গেছে। দুই ম্যাচেই বাকিরা ছিল মোটামুটি ব্যর্থদের কাতারেই। দলের এক থেকে দুজন হাল ধরেছে। প্রথম ম্যাচে ছিল টপ অর্ডার আর দ্বিতীয় ম্যাচে ছিল মিডল অর্ডার। তৃতীয় ম্যাচে একই ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঘটতে দেয়া যাবে না কোনোভাবেই।
চট্টগ্রামের মাঠকে বরাবরই বলা হয় রানের স্বর্গরাজ্য, যেখানে ওয়ানডেতে ম্যাচে জয়ের জন্য তিন শর বেশি রানের পুঁজি দাঁড় করাতে হবে। সে ক্ষেত্রে বাংলাদেশ যদি আগে ব্যাট করে তাহলে ৩২০ থেকে ৩৩০ রানের স্কোর করতে হবে। আর প্রথমে বোলিং করলে লঙ্কানদের আটকে রাখতে হবে ২৭০ থেকে ২৮০ রানের মধ্যে।
আজকের ম্যাচে জয়ের জন্য ব্যাটিংয়ে দায়িত্ব নিতে হবে টপ অর্ডার ব্যাটারদের। বিশেষ করে সৌম্য সরকার, নাজমুল হোসেন শান্ত আর তৌহিদ হৃদয়কে ব্যাটিংয়ে ধারাবাহিকতা আনতে হবে। একই সঙ্গ রানে ফিরতে হবে মুশফিকুর রহিমকেও। ওপেনিং জুটিকে পার করতে হবে অন্তত ১০ থেকে ১৫ ওভার।
এ ম্যাচে বোলিংয়ের নেতৃত্বটা থাকবে বাঁহাতি পেসার শরিফুল ইসলামের হাতেই। গত কিছুদিন ধরে দারুণ পারফরম্যান্স দেখাচ্ছেন এ পেসার। বিপিএলে সবার কম ম্যাচ খেলেও ছিলেন সর্বোচ্চ উইকেট শিকারি। লঙ্কানদের বিপক্ষে পার করছেন ভালো সময়। সেটারই ধারাবাহিকতা ধরে রাখতে হবে আজকের ম্যাচে।
আজকের ম্যাচে বাংলাদেশকে সবচেয়ে বেশি উজ্জীবিত করবে একটি পরিসংখ্যান। সেটা হলো গত এক দশকে তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজের প্রথম ম্যাচ জয়ের পর বাংলাদেশ আর সিরিজ হারেনি।
এ সময়ের মধ্যে যে সিরিজগুলো বাংলাদেশ হেরেছে, তার সবগুলোতেই বাংলাদেশ হেরেছিল প্রথম ম্যাচ, তবে খাতা-কলমের হিসাব বাইরে রেখে বাংলাদেশকে পারফর্ম করতে হবে মাঠে। জয়ের জন্য সমান গুরুত্ব দিতে হবে সব বিভাগেই। ব্যাটিং, বোলিং, ফিল্ডিং তিন বিভাগেই দিতে হবে ১২০ শতাংশ।
ওয়ানডে সিরিজ জয় করে টেস্টের জন্য বাংলাদেশ আত্মবিশ্বাস বাড়িয়ে তুলুক, সেটাই প্রত্যাশা।
আরও পড়ুন:ইনিংসের দ্বিতীয় বলেই উইকেট; এরপর ৪৩ রানে তিন লঙ্কান ব্যাটারকে প্যাভিলিয়নে ফেরত পাঠিয়ে শুরুতেই দারুণ প্রতিদ্বন্দ্বিতার আভাস দিয়েছিল বাংলাদেশ। তবে চতুর্থ উইকেটে ১৮৫ রানের জুটি গড়ে বাংলাদেশকে ম্যাচ থেকে একপ্রকার ছিটকে দেয় শ্রীলঙ্কা। শেষ পর্যন্ত ফলাফলও গিয়েছে তাদের পক্ষেই।
শেষের দিকে অল্প রানের ব্যবধানে তিন উইকেট তুলে নিয়ে ম্যাচে ফেরার আশা জাগালেও সিরিজ নিশ্চিত করতে ব্যর্থ হয়েছেন টাইগাররা। হেরেছেন তিন উইকেটের ব্যবধানে।
দ্বিতীয় ম্যাচেও টস জিতে এদিন শুরুতে বাংলাদেশকে ব্যাটিংয়ে পাঠান লঙ্কান অধিনায়ক কুশল মেন্ডিস। তৌহিদ হৃদয়ের অপরাজিত ৯৬ রানে ভর করে প্রথম ইনিংসে ২৮৬ রান সংগ্রহ করে বাংলাদেশ। জবাবে খেলতে নেমে ১৭ বল হাতে রেখেই জয়ের বন্দরে পৌঁছায় শ্রীলঙ্কা।
লঙ্কানদের জয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে পাথুম নিশাঙ্কার ১১৪ ও চরিথ আসালঙ্কার ৯১ রানের ইনিংস দুটি। এ দুই ব্যাটারের ব্যাটিং দৃঢ়তার কাছেই মূলত হারতে হয়েছে বাংলাদেশকে।
শ্রীলঙ্কার এ জয়ে আগামী সোমবার অনুষ্ঠিতব্য সিরিজের তৃতীয় ও শেষ একদিনের ম্যাচটিই সিরিজ নির্ধারণী ম্যাচ হতে চলেছে।
মাত্র চার রানের জন্য ওয়ানডে ক্যারিয়ারে প্রথম সেঞ্চুরির দেখা পাননি তৌহিদ হৃদয়। তবে তার অপরাজিত ৯৬ রানে ভর করেই প্রথম ইনিংসে ২৮৬ রান সংগ্রহ করেছে বাংলাদেশ।
দ্বিতীয় ম্যাচেও টস জেতে শ্রীলঙ্কা, তবে এদিন আর আগে ব্যাট করেনি তারা। ফলে শ্রীলঙ্কার আমন্ত্রণে শুরুতে ব্যাট করে সাত উইকেট হারিয়ে ২৮৬ রান তোলেন টাইগার ব্যাটাররা।
দলের হয়ে তৌহিদের ৯৬ রান ছাড়াও ওপেনার সৌম্য সরকারের ব্যাট থেকে ৬৮ ও অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্তর ব্যাট থেকে এসেছে ৪০ রান।
মন্তব্য