তিন ম্যাচ সিরিজের প্রথম ওয়ানডেতে শ্রীলঙ্কাকে ৩৩ রানে হারিয়েছে বাংলাদেশ। এই জয়ে সিরিজে ১-০ ব্যবধানে এগিয়ে গেল স্বাগতিক দল। বাংলাদেশের দেয়া ২৫৮ রানের টার্গেটে ব্যাট করতে নেমে ২২৪ রানে থামে লঙ্কানদের ইনিংস।
লঙ্কানদের ব্যাটিং ধসের পেছনে মূল কারিগর মেহেদী মিরাজ। তার স্পিনেই একে একে ফেরেন দানুস্কা গুনাতিলাকা, কুশাল পেরেরা, ধনঞ্জয়া ডি সিলভা ও আসেন বান্দেরা। তবে স্লো উইকেটে অনবদ্য হাফ সেঞ্চুরির জন্য ম্যাচসেরার পুরস্কার পান মুশফিকুর রহিম।
সিরিজের প্রথম ম্যাচ জেতায় বাংলাদেশ ক্রিকেট দলকে অভিনন্দন জানান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
মিরপুরের স্লো উইকেটে ব্যাট করতে নেমে দ্রুতগতিতে শুরু করে সফরকারী দল। ওপেনার দানুস্কা গুনাতিলাকার ব্যাটে ওভারপ্রতি ছয় রান করে তুলতে থাকে লঙ্কানরা।
ইনিংসের পঞ্চম ওভারের শেষ বলে আক্রমণাত্মক খেলতে থাকা গুনাতিলাকাকে কট অ্যান্ড বোল্ড করেন মিরাজ। ১৯ বলে পাঁচটি চারে ২১ রান করে আউট হন তিনি।
এর কিছু পরই পাথুম নিসাঙ্কাকে ফেরান মুস্তাফিজুর রহমান। অষ্টম ওভারের চার নম্বরে বলে ফিজকে পুল করতে গিয়ে মিড উইকেটে আফিফ হোসেনের হাতে ধরা পড়েন নিসাঙ্কা। ১৩ বল খেলে আট রান আসে তার ব্যাট থেকে।
শ্রীলঙ্কার ইনিংসে প্রথম ১৫ ওভার বল করেননি। ১৭তম ওভারে তার হাতে বল তুলে দেন অধিনায়ক তামিম ইকবাল। সাকিব আল হাসান ব্যাট হাতে সফল ছিলেন না। ১৫ রান করেই ফিরতে হয় বিশ্বসেরা অলরাউন্ডারকে।
বল হাতে যেন সেটি পুষিয়ে দেয়ার চেষ্টা তার শুরু থেকেই। প্রথম ওভারে দিলেন মাত্র ৩ রান। প্রথম ওভারের দ্বিতীয় বলে কুশল পেরেরা ক্যাচ উঠিয়েছিলেন ঠিকই। সাকিব ঝাঁপিয়ে পড়েও নাগালে পাননি।
দ্বিতীয় ওভারে উইকেট ঠিকই পেলেন বাংলাদেশের সাবেক অধিনায়ক। ১৯তম ওভারের প্রথম বলেই পয়েন্টে মেহেদী মিরাজের ক্যাচ বানিয়ে ফেরালেন কুশল মেন্ডিসকে। ৩৬ বল খেলা মেন্ডিস ফেরেন ২৪ রান করে।
২২তম ওভারে লঙ্কান অধিনায়ক কুশল পেরেরাকে বোল্ড করে ম্যাচের লাগাম বাংলাদেশের হাতে তুলে দেন মেহেদী মিরাজ। ৫০ বল খেলে ৩০ রান করেন পেরেরা।
দুই ওভার পর আবারও আঘাত হানেন এই অফস্পিনার। এবারে বোল্ড করেন ৯ রান করা ধনঞ্জয়া ডি সিলভাকে।
আর নিজের নবম ও ইনিংসের ২৮তম ওভারে বোল্ড করেন ৩ রান করা বান্দেরাকে। ১০ ওভারের স্পেলে ৩০ রান দিয়ে চার উইকেট নেন মিরাজ।
১০২ রানে ছয় উইকেট হারানোর পর একাই লঙ্কানদের হয়ে লড়াই করেন ওয়ানিন্দু হাসারাঙ্গা। দাশুন শানাকাকে নিয়ে জুটি গড়ে বিপর্যয় সামাল দেয়ার চেষ্টা করেন তিনি।
দলীয় ১৪৯ রানে সাউফউদ্দিনের বলে বোল্ড হন শানাকা। এরপরই লঙ্কানদের হয়ে ম্যাচের সবচেয়ে সফল জুটি গড়েন হাসারাঙ্গা ও ইসুরু উদানা।
৫৯ বলে ৬১ রান যোগ করেন দুই লঙ্কান। ৬০ বলে ৭৪ রান করা হাসারাঙ্গাকে আউট করে জুটি ভাঙেন সাইফউদ্দিন।
৩৯তম ওভারে পায়ের পেশিতে টান পড়ায় মাঠের বাইরে চলে যান মুস্তাফিজ। এর পাঁচ ওভার পর ফিরে এসে শিকার করেন উদানাকে। সেই সঙ্গে শেষ হয়ে যায় শ্রীলঙ্কার শেষ আশা।
লঙ্কান ইনিংসও গুটিয়ে দেন ফিজ। ৪৯তম ওভারের প্রথম বলে দুষ্মন্ত চামিরাকে ৫ রানে আউট করে নিশ্চিত করেন বাংলাদেশের জয়। মিরাজ ৩০ রানে চারটি ও মুস্তাফিজ ৩৪ রানে তিন উইকেট নেন। সাইফউদ্দিন দুটি আর সাকিব শিকার করেন এক উইকেট।
এর আগে দুপুরে ব্যাট করতে নেমে নির্ধারিত ৫০ ওভার শেষে বাংলাদেশ তুলতে পারে ২৫৭। সর্বোচ্চ ৮৪ রান করেন মুশফিক। সঙ্গে ফিফটি তুলে নেন তামিম ইকবাল ও মাহমুদুল্লাহ। শেষ দিকে আফিফ হোসেনের ২১ বলে ২৩ রানের ইনিংসে ২৫০ ছাড়ায় বাংলাদেশ।
টসে জিতে ব্যাটিংয়ে নেমে অবশ্য শুরুটা মোটেও ভালো হয়নি বাংলাদেশের। ইনিংসের নবম বলে দুষ্মন্ত চামিরার বলে স্লিপে ক্যাচ দিয়ে আউট হন লিটন দাস। তিন বল খেলে শূন্য রান করেন তিনি।
৫ রানে এক উইকেট হারানো বাংলাদেশকে কিছুক্ষণ সামাল দেন তামিম ও তিন নম্বরে নামা সাকিব আল হাসান।
দ্বিতীয় উইকেটে ৩৮ রানের জুটি গড়েন এই দুই অভিজ্ঞ ব্যাটসম্যান। ১০ ওভারের প্রথম পাওয়ার প্লেতে আর উইকেট হারাতে দেননি সাকিব-তামিম।
পাওয়ার প্লে শেষ হওয়ার পরপরই আউট হন সাকিব। ১৩ তম ওভারের প্রথম বলে দানুস্কা গুনাতিলাকাকে উড়িয়ে মারতে গিয়ে লং অনে পাথুম নিশাঙ্কার বলে আউট হন এই অলরাউন্ডার। ৩৪ বল খেলে ১৫ রান করেন সাকিব।
এরপর তৃতীয় উইকেটে ৫৬ রানের জুটি গড়ে বাংলাদেশকে শত রানের দিকে এগিয়ে নিচ্ছিলেন মুশফিক-তামিম।
লঙ্কান বোলারদের অক্লেশে খেলে ক্যারিয়ারের ৫১তম ফিফটি তুলে নেন তামিম। ৬৬ বলে একটি ছক্কা ও ছয়টি চারে পঞ্চাশ পূর্ণ করেন বাংলাদেশ অধিনায়ক।
২৩তম ওভারে জোড়া আঘাত হানেন ধনঞ্জয়া ডি সিলভা। লঙ্কান এই স্পিনারের পঞ্চম বলে লেগ সাইডে খেলতে গিয়ে লাইন মিস করেন তামিম। ইয়র্কার লেংথের বল আঘাত হানে তার প্যাডে। রিভিউ নিয়েও বাঁচতে পারেননি তামিম। ৭০ বলে ৫২ রান করে এলবিডব্লিউ হন অভিজ্ঞ এই ব্যাটসম্যান।
তার পরের বলেই আবারও আঘাত ধনঞ্জয়ার। নতুন ব্যাটসম্যান মোহাম্মদ মিঠুন তাকে সুইপ করতে গেলে বল প্যাডে আঘাত করে তার। বোলারের লেগ বিফোরের আবেদনে সাড়া দেন আম্পায়ার। মিঠুন রিভিউ নিলেও রক্ষা পাননি। ফলে দুই বলে দুই উইকেটে পাশাপাশি দুটি রিভিউ হারায় বাংলাদেশ।
সেই বিপদ থেকে বাংলাদেশকে উদ্ধার করেন মুশফিক ও মাহমুদুল্লাহ। দুজনের ১০৯ রানের জুটিতে দারুণ এক ভিত্তি পায় বাংলাদেশ।
সেই জুটিতে নিজের ৪০তম ফিফটি তুলে নেন মুশফিক। ফিফটির পরে এগোচ্ছিলেন নিজের অষ্টম ওয়ানডে সেঞ্চুরির দিকে।
কিন্তু ৮৪ রানে হয় মতিভ্রম। লাকশান সান্দাকানের বলে রিভার্স সুইপ খেলতে গিয়ে শর্ট থার্ড ম্যানে ইসুরু উদানাকে সহজ ক্যাচ দিয়ে ফেরেন মুশফিক।
মুশফিকের বিদায়ের পর নিজের ১৬তম ফিফটি তুলে নিলেও প্রায় সঙ্গে সঙ্গেই ফেরেন মাহমুদুল্লাহ। ধনঞ্জয়ের বলে নিজের স্টাম্প খুইয়ে ৫৪ রানে ফিরতে হয় তাকে।
এরপর শেষ পর্যন্ত আফিফ ও মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন মিলে বাংলাদেশকে নিয়ে যান ২৫৭ রানে।
শ্রীলঙ্কার হয়ে তিনটি উইকেট শিকার করেন ধনঞ্জয়া। একটি করে উইকেট পান চামিরা, সান্দাকান ও গুনাথিলাকা।
আরও পড়ুন:Bangladesh come out on top in crucial moments to win go 1-0 up in the #BANvSL ODI series
— ESPNcricinfo (@ESPNcricinfo) May 23, 2021
বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস নেপালের নতুন প্রধানমন্ত্রী সুশীলা কার্কিকে অভিনন্দন জানিয়েছেন ।
আজ এক বার্তায় তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশ সরকার ও জনগণের পক্ষ থেকে এবং আমার নিজের পক্ষ থেকেও আমি নেপালের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে আপনার নিয়োগে আন্তরিক অভিনন্দন জানাই।’
অধ্যাপক ইউনূস উল্লেখ করেন, নেপালের জনগণের আস্থা ও বিশ্বাসের প্রতিফলন হিসেবে সুশীলা কার্কির দায়িত্বগ্রহণকে বাংলাদেশ গুরুত্ব সহকারে দেখছে।
তিনি বলেন, ‘একজন দীর্ঘদিনের বন্ধু ও প্রতিবেশী হিসেবে আমরা দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি, আপনার দক্ষ নেতৃত্বে নেপাল ও এর দৃঢ়চেতা জনগণ শান্তি, উন্নয়ন ও স্থিতিশীলতার পথে এগিয়ে যাবে।’
প্রধান উপদেষ্টা নেপালের সাম্প্রতিক রাজনৈতিক ঘটনাবলীতে প্রাণহানির ঘটনায় গভীর শোক প্রকাশ করেন।
বার্তায় তিনি বলেন, ‘আমরা নিহতদের পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জানাই এবং আহতদের দ্রুত ও পূর্ণ আরোগ্য কামনা করি।’
অধ্যাপক ইউনূস আশা প্রকাশ করেন যে বাংলাদেশ ও নেপালের মধ্যে বিদ্যমান বন্ধুত্ব, সহযোগিতা ও পারস্পরিক শ্রদ্ধার সম্পর্ক তাঁর নেতৃত্বে আরও জোরদার হবে।
তিনি সুশীলা কার্কির সুস্বাস্থ্য ও সফলতা এবং নেপালের জনগণের শান্তি ও সমৃদ্ধি কামনা করেন।
মৌলভীবাজারে বাংলাদেশ প্রেস কাউন্সিলের আয়োজনে ‘গণমাধ্যমে অপসাংবাদিকতা প্রতিরোধ এবং বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ পরিবেশন’ শীর্ষক দিনব্যাপী প্রশিক্ষণ কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়েছে। শনিবার (১৩ সেপ্টেম্বর) জেলা প্রশাসনের সহযোগিতায় মৌলভীবাজার সার্কিট হাউজ কনফারেন্স রুমে এ কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়।
অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) শাহিনা আক্তারের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ প্রেস কাউন্সিলের চেয়ারম্যান বিচারপতি একেএম আব্দুল হাকিম। তিনি বলেন, অপসাংবাদিকতা গণমাধ্যমের বিশ্বাসযোগ্যতা নষ্ট করে। সাংবাদিকদের দায়িত্বশীল থেকে জনগণের কাছে সত্য ও বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ উপস্থাপন করতে হবে।
কর্মশালায় রিসোর্স পার্সন ছিলেন প্রেস কাউন্সিলের সচিব মো. আব্দুস সবুর। স্বাগত বক্তব্য রাখেন জেলা তথ্য অফিসার মো. আনোয়ার হোসেন। বিশেষ অতিথি ছিলেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) আবুল খায়ের।
দিনব্যাপী এ কর্মশালায় মৌলভীবাজার জেলার প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার সাংবাদিকরা অংশগ্রহণ করেন। শেষে সার্টিফিকেট প্রদান করা হয়। বক্তারা সাংবাদিকতার নীতি-নৈতিকতা, তথ্য যাচাইয়ের গুরুত্ব ও বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ পরিবেশনের ওপর গুরুত্বারোপ করেন।
ময়মনসিংহের ভালুকায় বন বিভাগের দুর্নীতি নিয়ে সংবাদ প্রকাশ করায় চার সাংবাদিকের বিরুদ্ধে দায়ের করা প্রতিহিংসামূলক মামলা প্রত্যাহারের দাবিতে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে। শনিবার (১৩ সেপ্টেম্বর) সকালে ভালুকা বাসস্ট্যান্ড এলাকায় স্থানীয় সাংবাদিকদের উদ্যোগে এ মানববন্ধন কর্মসূচি পালিত হয়।
মানববন্ধনে অংশ নেন জেলার জ্যেষ্ঠ ও স্থানীয় বিভিন্ন গণমাধ্যমের সাংবাদিকরা। তারা জানান, দৈনিক যুগান্তরের সাংবাদিক জহিরুল ইসলাম জুয়েল, নয়া দিগন্তের আসাদুজ্জামান ফজলু, মানবকণ্ঠের শফিকুল ইসলাম ও গ্লোবাল টিভির শাহিদুজ্জামান সবুজের বিরুদ্ধে বন বিভাগ কর্তৃক দায়ের করা মামলাটি সম্পূর্ণ হয়রানিমূলক ও প্রতিহিংসার অংশ।
বক্তারা অভিযোগ করে বলেন, ভালুকা রেঞ্জের বিট অফিসার আনোয়ার হোসেন ও হারুন অর রশিদের বিভিন্ন অনিয়ম ও দুর্নীতি নিয়ে সংবাদ প্রকাশ করায় তাদের প্রভাব খাটিয়ে সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দেওয়া হয়েছে। প্রকৃতপক্ষে সাংবাদিকরা তথ্য-প্রমাণের ভিত্তিতে দায়িত্বশীলভাবে সংবাদ প্রকাশ করেছেন।
বক্তারা আরও বলেন, দুর্নীতিবাজদের বিরুদ্ধে সংবাদ প্রকাশ করলেই এ ধরনের মামলা দায়ের করা গণমাধ্যমের কণ্ঠরোধের অপচেষ্টা। অতীতে এমন চেষ্টা ব্যর্থ হয়েছে, ভবিষ্যতেও ব্যর্থ হবে।
মানববন্ধনে অবিলম্বে মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার এবং দুর্নীতির সঙ্গে জড়িত বন কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানানো হয়।
যশোরের কেশবপুরে ভবদহ অঞ্চলে পরিবেশ বান্ধব টেকসই মাছ চাষে আগ্রহী হয়ে পড়েছে ঘের ব্যবসায়ীরা। মাছ রোগবালাই থেকে রক্ষা করতে মালিকরা প্রাকৃতিক খাদ্য সরবরাহে ঘেরে শ্যাওলার ব্যবহারে ঝুকে পড়ছে। মৎস্য অধিদপ্তর এটি একটি ইতিবাচক দিক হিসেবে দেখছে।
সংশ্লিষ্ট উপজেলা মৎস্য অফিস সূত্রে জানা গেছে, কেশবপুরে ৪ হাজার ৬৫৮ টি, মণিরামপুরে ৪ হাজার ৮৮৯ টি ও অভয়নগরে ১ হাজার ২০৫টি মাছের ঘের রয়েছে। বর্তমানে ঘের মালিকরা উপজেলার বিভিন্ন জলাবদ্ধ বিল থেকে পাটা শ্যাওলাসহ জলজ জাতীয় উদ্ভিদ সংগ্রহ করে মাছের ঘেরে ব্যবহার করছে। প্রাকৃতিক খাদ্য হিসেবে শ্যাওলা ব্যবহার করায় ঘের মালিকদের বাণিজ্যিক খাদ্যের খরচও কম হচ্ছে। এ সকল উপজেলায় ১ লাখ ৪৩ হাজার ৯০২ বিঘা জমিতে মোট ১০ হাজার ৭৫২টি মৎস্য ঘের রয়েছে।
সরেজমিন কেশবপুর, মণিরামপুর ও অভয়নগর উপজেলার বিভিন্ন জলাবদ্ধ বিল এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, সকাল থেকেই ঘের মালিকদের পাটা নামক এক প্রকার চিকন শ্যাওলা সংগ্রহ করতে। পাঁজিয়া জলাবদ্ধ বিল থেকে শ্যাওলা সংগ্রহ করার সময় বাগডাঙ্গা এলাকার ঘের ব্যবসায়ী পরেশ মন্ডল বলেন, ঘেরের মাছ মোটাতাজাসহ রোগ বালাই থেকে রক্ষা করতে শ্যাওলা খুবই উপকারী। মণিরামপুরের গৌরীপুর বিল থেকে শ্যাওলা সংগ্রহ করাকালীন ঘের ব্যবসায়ীর শ্রমিক তাজুল ইসলাম বলেন, ঘের মালিকরা মাছ চাষে বিলের শ্যাওলা ব্যবহার করায় তারা প্রতিদিন কাজ পাচ্ছে। মণিরামপুর উপজেলার হাসাডাঙ্গা গ্রামের মৎস্য ঘের ব্যবসায়ী সুলতান হোসেন বলেন, ঘেরে প্রাকৃতিক খাদ্য সরবরাহ করা গেলে মাছ সতেজ হয়ে উঠে। শ্যাওলা ব্যবহারে পরিবেশের কোন ক্ষতি হয় না। তাছাড়া যে সমস্ত বিল থেকে শ্যাওলা তোলা হয় সে সমস্ত বিলেও দেশী প্রজাতি মাছ সহজে চলা ফেরা করে প্রজননে সুষ্ঠু পরিবেশ গড়ে তুলতে পারে। অভয়নগরের ভবদহ এলাকার ঘের ব্যবসায়ি মোস্তাক হোসেন বলেন, মাছের খাদ্য হিসেবে পাটা শ্যাওলা এখন খুবই জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। এই শ্যাওলা খাদ্য হিসেবে ব্যবহার করলে মাছের রোগ বালাই এয় না। তা ছাড়া বানিজ্যিক খাদ্যের খরচের হাত থেকেও অনেকটা রক্ষা পাওয়া যায়। জলাবদ্ধ বিল থেকে শ্যাওলা সংগ্রহ করে ঘের মালিকরা প্রতিদিন মাছের খাদ্য হিসেবে ব্যবহার করছে। পাটা শ্যাওলা মাছো শ্যাওলা নামেও পরিচিত। চিংড়ি মাছ ছাড়া সব ধরণের সাদা মাছের প্রিয় খাদ্য শ্যাওলা।
এ ব্যাপারে কেশবপুর উপজেলা মৎস্য অফিসার সুদীপ বিশ্বাস বলেন, বিল থেকে শ্যাওলা তুলে ঘেরে মাছকে খেতে দেওয়ায় মাছের বৃদ্ধি ঘটে। এ পদ্ধতি পরিবেশ বান্ধব ও টেকসই। ঘেরে প্রাকৃতিক খাদ্য ব্যবহার করতে পারলে মালিকদের বাণিজ্যিক খাদ্যের খরচ কম হয়। এ পদ্ধতি ব্যবহার করায় প্রতিদিন শ্রমজীবী মানুষের কর্মসংস্থান হয়। এটি স্থানীয় মৎস্যজীবীদের আয় বৃদ্ধিসহ মাছ উৎপাদনে ইতিবাচক ভূমিকা রাখে। শ্যাওলা মাছের খুবই পুষ্টিকর খাদ্য।
জয়পুরহাট সদর উপজেলায় পারিবারিক কলহের জেরে স্বামীর হাঁসুয়ার কোপে রোকেয়া বেগম (৬০) নামে এক নারী স্বামীর হাতে খুন হয়েছেন। এ ঘটনায় ঘাতক স্বামী জহির উদ্দীনকে আটক করেছে পুলিশ।
শনিবার (১৩ সেপ্টেম্বর) ভোরে উপজেলার পুরানাপৈল ইউনিয়নের বড় তাজপুর মৌলভীপাড়া গ্রামে এ হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটে।
স্থানীয়রা জানান, ভোরে প্রকৃতির ডাকে ঘুম থেকে উঠলে স্ত্রী রোকেয়ার সঙ্গে স্বামী জহির উদ্দীনের কথা কাটাকাটি হয়। একপর্যায়ে ঘরে থাকা হাঁসুয়া দিয়ে রোকেয়ার মাথায় বেশ কয়েকটি কোপ দেন জহির। এতে ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয়। রক্তাক্ত অবস্থায় তার মরদেহ ঘরের মেঝেতে পড়ে থাকতে দেখে পুলিশকে খবর দেয় স্থানীয়রা। পুলিশ এসে লাশ উদ্ধার করে হাসপাতালর মর্গে পাঠায়।
নিহতের পরিবারের দাবি, পরিকল্পিতভাবে তাকে হত্যা করা হয়েছে। আগেও হত্যার চেষ্টা করেছেন স্বামী।
জয়পুরহাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) তামবিরুল ইসলাম বলেন, এ ঘটনায় জহির উদ্দিনকে আটক করা হয়েছে। হত্যা মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে এবং তদন্ত সাপেক্ষে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
“ফজরের নামাজের পর হাটতে বের হলে শিয়াল কুকুরের জ¦ালায় কোথাও যেতে পারি না। একটু নিরিবীলি জায়গা পেলেই দলবেধে ওরা এসে কামড়ে দেয়ার চেষ্ঠা করে। শুক্রবার ভোরে জলসিঁড়ির বালুতে হাটতে গেলে একদল শিয়াল আক্রমন করে বসে, কোন রকমে প্রাণপনে দৌড়ে রক্ষা পাই।” এমনি করে কথাগুলো বলেন কাজী আবুল হোসেন।
মহসিন মিয়া বলেন, রাতের আধারে আমার খামারে শিয়ালের দল ডুকে ৪ টা ছাগলকে কামড়ে মেরে ফেলেছে। এতে আমার লক্ষাধিক টাকার ক্ষতি হয়ে গেছে। দিনে কুকুরে কামড়ায় আর রাতে শিয়ালে। এ থেকে আমাগো কেউ বাঁচান।
“কি আর কমু গো ভাই? নগর পাড়া ব্রিজ, কেওডালা ব্রিজ অদৃশ্য শক্তির ছোয়ায় আটকে আছে। ভয়ঙ্কর ঝুকিপূর্ন চনপাড়া সেতুর মেরামত হচ্ছে না একযুগ ধরে। আমরা রূপগঞ্জের শীতলক্ষ্যা নদীর পশ্চিম তীরের বাসিন্দারা অনেক বিপদে আছি। আমাগো দেখার কেউ নেই। আমরা নিজ দেশে পরবাসীর মত। নদীতে পচা পানি। দুর্গন্ধে ঘরে থাকা যায় না। মশার জ¦ালার কথা আর কি কমু? দিনে দুপুরেই কামড়ায়। রাত হলে তো কথাই নাই। একটু বাতাস ছুটলে বালির জ¦ালায় ঘরে বাহিরে থাকা দায়। এরওপর নতুন আরো জ¦ালা, দিনে কুকুরের জ¦ালা আর রাতের বেলায় শিয়ালের খেলা/ উপদ্রব। আর ভাল লাগে না। আল্লাহ ছাড়া আমাগো দেখার আর কেউ নাই।” এমনি করে মনের দুঃখে কথাগুলো বলছিলেন উপজেলার আমজাদ হোসেন।
দিনে কুকুর আর রাতে শিয়ালের উপদ্রবে অতিষ্ঠ নারায়ণগঞ্জ জেলার রূপগঞ্জবাসী। জলাতঙ্ক প্রতিরোধে কুকুরকে ভ্যাকসিন দেয়া হলেও কুকুরের কামড়ে আহত হওয়ার শঙ্কায় উপজেলার বিভিন্ন গ্রামের মানুষ। বেশি আতঙ্ক ছোট শিশুদের নিয়ে। ছোট্ট শিশু নুশাইবা বলেন, কুকুরের ভয়ে দিনের বেলায় ঘর থেকে বের হতে পারি না। দলবেধে যেভাবে খা খা করে এগিয়ে আসে ভয়েই সামনে দিয়ে যাওয়া যায় না। আরেকজন হামিম বলেন, বেওয়ারিশ কুকুরের সংখ্যা অনেক বেড়ে গেছে। কি কারণে জানি না দলবদ্ধ কুকুর ভয়ঙ্কর আচরন করছে। বিগত ১ মাসে ২০ জনকে কামড়েছে এ কুকুর। উপজেলার বিভিন্ন গ্রামের ১২ টি ছাগলকেও কামড়ে দিয়েছে ভয়ঙ্কর কুকুরদল।
এ তো গেল দিনের চিত্র, রাতের চিত্র ভিন্ন। উপজেলার প্রত্যন্ত গ্রামের নানী দাদীরা ছোট শিশুদের ঘুম পাড়াতে রাক্ষস-খোক্কস, দৈত্য-দানবের গল্প না বলে শেয়ালের গল্প বলছে। শুধু গল্প নয়, শঙ্কাও আছে। এখানে সন্ধ্যা নামলেই শিয়ালের উপদ্রব বেড়ে যায়। দল বেঁধে শেয়াল বাড়ি-ঘরের আনাচে কানাচে ঘোরাফেরা শুরু করে। এতে হাঁস, মুরগি, গরু, ছাগল এমনকি ছোট শিশুদের নিয়েও ভয়ে আছে বাসিন্দারা। সন্ধ্যার আগেই গবাদিপশু ও ছোট শিশুদের নিয়ে ঘরে চলে আসতে হয়।
শেয়াল-কুকুরের উপদ্রব নিয়ে সিয়াম মিয়া বলেন, কী আর করমু ভাই, দিনের বেলা কুত্তা আর রাইতে হিয়ালের (শিয়াল) তা-বে আমরা আছি বড়ই যন্ত্রণায়। এসবের কারণে পশু-পাখিসহ বাচ্চাদের নিয়ে সারা দিন দুশ্চিন্তায় থাকতে হয়।
উপজেলার তালাশকুট এলাকার সারমিন আক্তার নামের এক গৃহবধূ বলেন, ছোট বাচ্চাটাকে নিয়ে ভয়ে থাকি। যে পরিমাণ শেয়াল-কুকুর বেড়েছে এলাকায়, না জানি কখন কাকে কামড়ে দেয়! সন্ধ্যার পর শেয়াল বেড়ে যায়। বেশ কিছু দিন আগে উপজেলার খামারপাড়া এলাকার এক মাদ্রাসার ছাত্র শিয়ালের কামড়ে ভোগে অবশেষে মৃত্যুবরণ করে।
রূপগঞ্জ উপজেলার পৌর এলাকাগুলোতে কুকুর বেশি থাকলেও শেয়াল তেমন একটা নেই। তবে উপজেলার কায়েতপাড়া ইউনিয়নের খামারপাড়া , নগরপাড়া, কামসাইর, দেইলপাড়া, বাঘবাড়ী, পিরুলিয়া, ছনেরটেক, কায়েতপাড়া সহ বিভিন্ন গ্রামে শেয়াল-কুকুরের উপদ্রব বেশি।
উপজেলা স্বাস্থ্যকমপ্লেক্সের ডাঃ আইভী ফেরদৌস বলেন, শিয়াল কুকুরের কামড়েরর রোগী আসে। আমাদের সাধ্যমত চিকিৎসা করি। ওষুধ সাপ্লাই স্বল্পতা রয়েছে। আর এ চিকিৎসা সংশ্লিষ্ট হাসপাতালে নেয়াই ভাল।
এ ব্যাপারে রূপগঞ্জ উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. সজল কুমার দাস বলেন, ভাদ্র মাসে কুকুরের উপদ্রব একটু বেড়ে যায়। মানুষকেও কামড়ে দেয়। শুনেছি শিয়ালের উপদ্রবও বেড়ে গেছে। তাই আমরা উপজেলার প্রতিটি এলাকায় কুকুরকে ভ্যাকসিন দিয়েছি। ভয়ের কিছু নেই। সচেতন থাকতে হবে।
এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সাইফুল ইসলাম জয় বলেন, শেয়াল কুকুরের উপদ্রব বৃদ্ধি সত্যিই আতঙ্কের বিষয়। বিশেষ করে শিশুরা অনেক ভয়ে থাকে। প্রাণি সম্পদ কর্মকর্তার সাথে আলাপ করে বিষয়টি সমাধানে কথা বলব। তবে সবাইকে সচেতন থাকতে হবে। সর্বক্ষেত্রেই সচেতনতার বিকল্প নেই।
ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের মুন্সীগঞ্জের গজারিয়া অংশের আনারপুরা বাস স্ট্যান্ড এলাকায় ইউটার্নে যাত্রীবাহী বাস ও রেডিমিক্সের গাড়ির মধ্যে সংঘর্ষ উভয় পরিবহনের ১২জন আহত হয়েছে বলে জানা গেছে।
শনিবার (১৩ সেপ্টেম্বর) সকাল সাড়ে নয়টায় মহাসড়কের আনারপুরা বাস স্ট্যান্ড এলাকায় এই ঘটনা ঘটে।
আহতদের মধ্যে তাৎক্ষণিকভাবে ১০ জনের নাম জানা গেছে গেছে। তারা হলোঃ আয়াজ(৩৫), ইউনুস মুন্সী (৪৫), মাইন উদ্দিন (৪২), রাসেল(৪০), ওমর ফারুক (২৫), মারুফ(৪০), তারেক রহমান(৩০), হারুন-অর-রশিদ(৪০), হাবিবুর রহমান (৪৫) ও জেমস(২৮)।
ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী কয়েকজনের সাথে কথা বলে জানা যায়, চট্টগ্রাম থেকে যাত্রী নিয়ে ঢাকার দিকে যাচ্ছিল শ্যামলী পরিবহনের একটি বাস। পথে সকাল সাড়ে নয়টার দিকে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের গজারিয়া অংশের আনারপুরা এলাকায় প্রিমিয়ার সিমেন্ট কোম্পানির একটি রেডিমেক্সের গাড়ি ইউটার্ন নেওয়ার সময় সেটিকে ধাক্কা দেয় বাসটি। এতে বাসের সামনের অংশ দুমড়ে মুচড়ে যায়। এ ঘটনায় রেডিমিক্সের গাড়ির চালক-হেলপার ও বাসের ১০জন যাত্রী আহত হয়। আহতদের উদ্ধার করে গজারিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে পাঠায় স্থানীয়রা।
গজারিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সূত্রে জানা যায়, সড়ক দুর্ঘটনায় আহতদের মধ্যে ১০ জন গজারিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা গ্রহণ করেছেন। গুরুতর অবস্থায় ইউনুস মুন্সী, মাইন উদ্দিন, মারুফ ও রাসেলকে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। বাকিরা প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়ে চলে গেছে।
এ বিষয়ে গজারিয়া ভবেরচর হাইওয়ে পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ মো. শওকত হোসেন বলেন,' সড়ক দুর্ঘটনায় কয়েকজন আহত হয়েছে। দুর্ঘটনা কবলিত গাড়িগুলো মহাসড়ক থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। যান চলাচল স্বাভাবিক রয়েছে'।
মন্তব্য