২০২০ সালের জানুয়ারিতে বাংলাদেশ দলের ফাস্ট বোলিং কোচের দায়িত্ব পান ওটিস গিবসন। বাংলাদেশে যোগ দেয়ার আগে তিনি হেড কোচ হিসেবে কাজ করেছেন ওয়েস্ট ইন্ডিজ ও সাউথ আফ্রিকা দলে। উইন্ডিজের ২০১২ সালের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ জয়ের কোচ ছিলেন এই ক্যারিবিয়ান কোচই। এছাড়াও দায়িত্ব পালন করেছেন ইংল্যান্ডের বোলিং কোচ হিসেবে।
গিবসন কোচ হয়ে আসার পরে বাংলাদেশ দলের পেইসারদের মধ্যে লক্ষ্য করা গিয়েছে উন্নতি। গিবসনের কোচিং সময়ের অনেকখানি কেড়ে নিয়েছে করোনাভাইরাস। তবুও তার কাজের প্রতিফলন দেখা গেছে তাসকিন আহমেদ-মুস্তাফিজুর রহমানদের পারফরমেন্সে।
নিউজবাংলার সঙ্গে একান্ত আলাপচারিতায় ওটিস গিবসন কথা বলেন বাংলাদেশের পেইসারদের নিয়ে। তাদের ভালো করার বাধা নিয়ে। জানান, ঘরোয়া ক্রিকেটে যথাযথ সুযোগ না পেলে, পেইসারদের জন্য আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ভালো করাটা অনেক কঠিন।
নিউজবাংলার সঙ্গে গিবসনের আলাপচারিতার চুম্বক অংশ পাঠকদের জন্য তুলে ধরা হলো -
বাংলাদেশের ফাস্ট বোলিং কোচের দায়িত্ব কেমন উপভোগ করছেন?
কাজ উপভোগ করছি। আমি ফাস্ট বোলিং ভালোবাসি। তাই পেইসারদের উন্নতি করতে ও তাদের লক্ষ্য পূরণে সাহায্য করি। বোলারদের অ্যাকশন দেখে সেটিকে আরও ভালো করার চেষ্টা করি। কোচিংয়ে টেকনিক্যাল দিকগুলো বেশি পছন্দ করি। সঙ্গে কৌশলগত দিকগুলোও, যা তাদের বোলার হিসেবে আরও ভালো করতে সহায়তা করে।
বাংলাদেশ তাদের স্পিনারদের জন্যই পরিচিত। সাম্প্রতিক বেশ কয়েক জন পেইসার উঠে এসেছে। আপনার অধীনে থাকা এই পেইসারদের কীভাবে মূল্যায়ন করবেন?
এখন পর্যন্ত রাহি আমাদের সেরা টেস্ট পেইসার। যখন আমরা ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে মাত্র এক পেইসার খেলাই, তখন সে-ই ছিল আমাদের পছন্দ। সে খুবই ভালো বোলার। দুই দিকেই বল সুইং করাতে পারে। নির্ভুল লাইন-লেংথে বল করে।
তাসকিন গত ছয় মাসে অনেক উন্নতি করেছে। তার যে ভালো করার ইচ্ছা আছে সেটা বোঝা যায়। সে ফিটনেস নিয়ে অনেক কাজ করেছে। তার রানআপ নিয়ে সামান্য কাজ করেছি। সঙ্গে কবজির অবস্থান নিয়েও। যা তাকে দুই দিকে বল সুইং করাতে সাহায্য করছে। সে ঠিক জায়গায় বোলিং করা নিয়েও কাজ করেছে।
হাসান মাহমুদ ও শরিফুল দারুণ প্রতিভা। দুজনেরই তাদের ক্যারিয়ারে দারুণ করার সম্ভাবনা রয়েছে। আরও কিছু পেইসার আছে। এবাদত শ্রীলঙ্কায় দারুণ গতিতে বোলিং করেছে। মুস্তাফিজ সাদা বলের ক্রিকেটে নিজেকে প্রমাণ করেছে। খালেদ একজন দারুণ পেইসার। সাইফুদ্দিন সীমিত ওভারে সব সময়ই দলে থাকে। তরুণ মুকিদুলও শ্রীলঙ্কা সফরে দারুণ সম্ভাবনা দেখিয়েছে। বাংলাদেশের কাছে এখন নয় জনের পেইস বোলিং ইউনিট রয়েছে। যা বাংলাদেশ ক্রিকেটের ভবিষ্যতের জন্য দারুণ ব্যাপার।
আমার কাজ হচ্ছে তাদেরকে যেকোনো সময়ে যেকোনো ফরম্যাট খেলার জন্য প্রস্তুত করা। নির্বাচকদের চিন্তার খোরাক দেয়া যে কাকে বাদ দিয়ে কাকে নেব। আমার কাজ তাদের স্কিলে উন্নতি করানো। এখনের চেয়ে আরও ভালো বোলার হিসেবে তৈরি করা।
বাংলাদেশের পেইসারদের ভালো করার ক্ষেত্রে মূল বাধা কী? আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ভালো করার জন্য তাদের কী ধরণের উন্নতি প্রয়োজন?
বাংলাদেশে পেইসারদের জন্য মূল সমস্যা হলো তারা যথেষ্ট বোলিং করতে পারে না। এমনকি ঘরোয়া ক্রিকেটেও। বাংলাদেশের ঘরোয়া কাঠামো পেইসারদের কেন্দ্র করে বানানো নয়। পেইসাররা হয়তো দিনে বা ইনিংসে ১০ ওভার বল করে। বাকিটা সময় স্পিনাররাই বল করে। তাই পেইসাররা খুব বেশি বল করার অভিজ্ঞতা পায় না। তাদের নিজেদের কাজ বা শরীরের ওপর চাপ সামলানোর ব্যাপারটির অভিজ্ঞতা থাকে না। অনেক ওভার বোলিং করে ম্যাচ জেতানো, এসব বিষয়ের অভিজ্ঞতা বাংলাদেশের পেইসাররা ঘরোয়া ক্রিকেট থেকে পায় না।
যখন শ্রীলঙ্কার মাটিতে, যেখানে পেইসারদের জন্য কোনো সাহায্য নেই, সেখানে তাদেরকে অনেক ওভার করতে বলা হয় ও আশা করা হয় যে তারা উইকেট নিয়ে আপনাকে ম্যাচ জেতাবে, সেটি খুবই কঠিন হয়ে দাঁড়ায়।
এটি তাদের জন্য অবশ্যই শেখার সুযোগ। সাধারণত বাংলাদেশ তাদের স্পিনারদের ওপর নির্ভর করে। এখন আমাদের হাতে বেশ কয়েকজন ভালো পেইসার রয়েছে। হয়তো এটিই এখন সুযোগ বাংলাদেশে পেইসারদের সহায়ক কন্ডিশন তৈরির। যাতে পিচগুলো সিমারদের উৎসাহিত করে জোরে বল করতে ও আরও ভালো বল করতে।
মূল সমস্যা হলো যথেষ্ট বোলিং না করা ও দলকে জেতানোর অবস্থায় না থাকা। তারা যদি ঘরোয়া ক্রিকেটে এটি করে অভ্যস্ত না হয় তাহলে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে এসে সেটি করা তাদের জন্য খুব কঠিন হয়ে দাঁড়ায়।
আপনার অধীনে আমরা মুস্তাফিজকে ইনসুইঙ্গার করতে দেখেছি। তাকে ইনসুইং করাতে শেখানো কতটুকু কঠিন ছিল?
মুস্তাফিজের সঙ্গে কাজ করাটা খুবই উপভোগ করেছি। সে তার কবজির অবস্থান নিয়ে কঠোর পরিশ্রম করেছে, বিশেষ করে নতুন বলে ইনসুইঙ্গার করার জন্য। এর মধ্যেই আমরা তাকে ইনসুইঙ্গার দিয়ে ব্যাটসম্যানদের প্যাডে আঘাত করতে দেখেছি।
সে আমার কাছে এসে বলেছে সে ইনসুইঙ্গার শিখতে চায় ও আমি তাকে সাহায্য করতে পারব কি না? কোচিংয়ের এ বিষয়টিই আমার পছন্দ যে আমি তাকে সাহায্য করতে পেরেছি। সে একজন দারুণ বোলার।
আমি ও রাসেল (ডমিঙ্গো) মিলে সিদ্ধান্ত নিয়েছি যে আমরা মুস্তাফিজকে টেস্টের জন্য তখনই বিবেচনা করব যখন সে ইনসুইং করাতে পারবে। সে সেটি করেছে।
আমরা আইপিএলে মুস্তাফিজকে ভিন্ন ভিন্ন কয়েকটি স্লোয়ার করতে দেখেছি। এগুলো নিয়ে কি আপনি তার সঙ্গে কাজ করেছেন?
যখন আমরা একসঙ্গে থাকি তখন আমরা অনেক কিছু নিয়ে কাজ করি। আমি তাকে এটিও বলি যে আইপিএল একটি দারুণ সুযোগ যেখানে সে অন্যান্য খেলোয়াড় ও কোচদের সংস্পর্শ পাচ্ছে। যখনই কোনো বোলার আইপিএল বা অন্য কোনো টুর্নামেন্ট খেলতে যায় আমি তাকে বলি নতুন কিছু শেখার চেষ্টা করতে। মুস্তাফিজ সেখানে গিয়ে নতুন কিছু স্লোয়ার শিখেছে যা আমাদের জন্য দারুণ হবে। আমি খুব বেশি আইপিএল দেখিনি। যতটুকু দেখেছি, তাতে মনে হয়েছে সে তার স্লোয়ার নিয়ে খুবই আত্মবিশ্বাসী। সেটি বাংলাদেশের জন্য দারুণ হতে পারে।
এবাদত শ্রীলঙ্কায় ১৪৫ কিমি/ঘন্টা গতিতে বল করলেও সঠিক জায়গায় বল করতে পারেননি। সে কি ১৫০ কিমি/ঘন্টা গতিতে বল করতে পারবে? সঠিক জায়গায় বল করতে তার কী কী করা প্রয়োজন?
এবাদত খুবই ভালো বোলার। সে খুবই দ্রুত গতিতে বল করে। আমি সব সময়ই তাকে এবং সব বোলারকে বলি, তুমি যত জোরেই বল করো না কেনো, সেটির চেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ তুমি সঠিক জায়গায় বল করে ব্যাটসম্যানকে সমস্যায় ফেলতে পারছো কি না। আমার মনে হয় সে যত আত্মবিশ্বাসী হবে, সে ১৫০ কিমি তে বল করতে পারবে।
ওয়েস্ট ইন্ডিজের সঙ্গে ওয়ানডে সিরিজে পেইসাররা ভালো করার পরও দুই টেস্টেই মাত্র একজন করে পেইসার খেলে। ফাস্ট বোলিং কোচ হিসেবে সেটি কতখানি হতাশার?
যখন ৫-৬ জন পেইসার নিয়ে কাজ করবেন এবং মাত্র একজন একাদশে থাকবে তখন আপনি অবশ্যই হতাশ হবেন। একই সময়ে যদি কিউরেটর বলে যে কন্ডিশন পেইসারদের সাহায্য করবে না, পিচে স্পিন করবে। তখন আপনি স্পিনারদেরই খেলাবেন। এটি বাংলাদেশে হয়েই থাকে। এভাবেই বাংলাদেশ টেস্টে খেলে। ভবিষ্যতে মানসিকতায় পরিবর্তন আনতে হবে। ঘরের মাটিতেও এমন কন্ডিশন প্রস্তুত করতে হবে যা পেইসারদের সাহায্য করবে। যাতে আমাদের দুই বা তিন জন পেইসার খেলার সুযোগ পায়। কারণ পেইসাররা দ্রুত উন্নতি করছে। তারা দলের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
ঘরের মাঠে যথাযথ পিচ ও কন্ডিশন ছাড়া আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের জন্য ভালো পেইসার গড়ে তোলাটা কতখানি কঠিন?
আগেই পেইসারদের জন্য আন্তর্জাতিক ও ঘরোয়া ক্রিকেটে যথাযথ পিচের কথা বলেছি। আমাদের বেশ কয়েক জন তরুণ পেইসার আছে যাদের পিচ থেকে অনুপ্রেরণা দরকার। বাংলাদেশে অধিনায়করা কীভাবে পেইসারদের ম্যানেজ করে সেটিও একটি ব্যাপার।
বাংলাদেশের ঘরোয়া ক্রিকেটে পেইসাররা বলের শাইন নষ্ট করে। এরপর বাকি সময় স্পিনাররা বল করে। আমার কাছে যেটা গুরুত্বপূর্ণ সেটা হলো ঘরোয়া ক্রিকেটে এমন পিচ তৈরি করা যা তরুণ পেইসারদের জোরে বল করতে উন্নতি করতে অনুপ্রেরণা দেবে। যা তাদেরকে সাহায্য করবে ফাস্ট বোলিংয়ে বাংলাদেশকে এগিয়ে নিতে।
ঘরের মাঠে জানেন আপনি কী পাবেন। আমাদের হয়তো ঘরের মাটিতে মানসিকতা বদলাতে হবে কারণ আমরা যখন দেশের বাইরে যাই, তখন পেইসারদের ওপর ভালো বোলিং করে টেস্ট জেতানোর দায়িত্ব থাকে। ঘরোয়া ক্রিকেটে তারা যখন সে সুযোগ পায় না, তখন বিদেশের মাটিতে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে সেটি করাটা তাদের জন্য কঠিন হয়ে দাঁড়ায়। ঘরোয়া ক্রিকেট নিয়ে অবশ্যই নতুন করে ভাবতে হবে। যেন আমরা আমাদের পেইসারদের সর্বোচ্চ ব্যবহার করতে পারি।
শেষ প্রশ্ন, বিদেশী কোচদের জন্য বাংলাদেশের ঘরোয়া ক্রিকেট অনুসরণ করা বেশ কঠিন কাজ। আপনার কোনো পরামর্শ আছে এ ব্যাপারটিতে, কীভাবে আপনারা সব সময় খেলোয়াড়দের সাহায্য করতে পারেন?
খুব ভালো প্রশ্ন। অবশ্যই আমাদের জন্য কঠিন বাংলাদেশের ঘরোয়া ক্রিকেট অনুসরণ করা। আমি যেটা করার চেষ্টা করি তা হলো যত জন পেইসারের সংস্পর্শে আসি তাদের নিয়ে একটি হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ খুলি। সেখানে আমি তাদের জন্য আমি কিছু কাজ দেই, তাদের কাজের ধরণ ও পরিমাণ পর্যবেক্ষণ করি, যেন তারা কী করছে তা অনুসরণ করতে পারি। আমি যে কারও সাথে কাজ করতে আগ্রহী।
আমার মনে হয় যে যদি বিসিবিতে একজন ফাস্ট বোলিং কোচ থাকে যাকে ভবিষ্যতের জন্য ভাবা হচ্ছে, তাহলে তাকে জাতীয় দলের সঙ্গে রাখা উচিত। যাতে করে সে দেখতে পারে আমরা কীভাবে কাজ করি। শুধু ফাস্ট বোলিং কোচ না, ব্যাটিং কোচ বা ফিল্ডিং কোচের ক্ষেত্রেও এটা হতে হবে। একজন ঘরোয়া কোচ, যে দলের সঙ্গে থেকে সব ধরণের কাজ দেখবে ও পরবর্তীতে ঘরোয়া ক্রিকেটে সেই বার্তাটি পৌছে দেবে। তখন সব জায়গার খেলোয়াড়রা একই বার্তা পাবে।
ঘরোয়া ক্রিকেট কাঠামোর উন্নতির জন্য বিসিবি এই বিষয়টি নিয়ে ভাবতে পারে। এটি গুরুত্বপূর্ণ যে জাতীয় দল থেকে একই বার্তা যেন সব ধরণের ক্রিকেটে ছড়িয়ে পড়ে।
আরও পড়ুন:পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন এবং পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেছেন, জলবায়ু অভিযোজন কার্যক্রমে জবাবদিহিতা, সমন্বয় ও তরুণদের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করা অত্যন্ত জরুরি। তিনি বলেন, পানি উন্নয়ন বোর্ডসহ বিভিন্ন অবকাঠামো ও পানি সংশ্লিষ্ট প্রকল্পের পরিবীক্ষণ ব্যবস্থায় তরুণ প্রতিনিধিদের অন্তর্ভুক্ত করতে হবে। একই সঙ্গে পয়:নিষ্কাশন ও চিকিৎসা বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় ইনসিনারেশনের বিকল্প হিসেবে উন্নত প্রযুক্তির মতো নিরাপদ ও ব্যবহারিক সমাধান গ্রহণের ওপর গুরুত্বারোপ করেন তিনি।
১ জুলাই বাংলাদেশ সচিবালয়ে তার কার্যালয়ে ইউনিসেফ বাংলাদেশের কান্ট্রি রিপ্রেজেন্টেটিভ রানা ফ্লাওয়ার্স-এর নেতৃত্বে একটি উচ্চপর্যায়ের প্রতিনিধিদলের সঙ্গে বৈঠকে তিনি এসব কথা বলেন। বৈঠকে শিক্ষা, সামাজিক খাত ও তরুণদের সম্পৃক্ততার মাধ্যমে জলবায়ু সংকট মোকাবেলায় যৌথ উদ্যোগ জোরদারের ওপর গুরুত্বারোপ করা হয়।
বৈঠকে রানা ফ্লাওয়ার্স শিশু ও কিশোর-কিশোরীদের ওপর জলবায়ু পরিবর্তনের ক্ষতিকর প্রভাব—যেমন বন্যা, অপুষ্টি ও শিক্ষাব্যবস্থার ব্যাহত হওয়া—উল্লেখ করে বলেন, ইউনিসেফ তরুণদের জলবায়ু সমাধানের কেন্দ্রবিন্দুতে রাখতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। তিনি বিভিন্ন জেলায় তরুণদের নিয়ে পরামর্শ সভার পরিসর বাড়ানোর প্রস্তাব দেন এবং নিয়মিতভাবে তরুণদের সঙ্গে মন্ত্রণালয়ের যোগাযোগের জন্য একটি কাঠামোগত ব্যবস্থাপনা গড়ে তোলার আহ্বান জানান।
পরিবেশ সচেতনতা তৈরির অংশ হিসেবে ইউনিসেফ একটি যৌথ ডকুমেন্টারি সিরিজ নির্মাণের প্রস্তাব দেয়, যেখানে শিশুদের পরিবেশবান্ধব বার্তা স্থান পাবে। উপদেষ্টা এ প্রস্তাবকে স্বাগত জানিয়ে বলেন, এটি বিদ্যালয়ের পাঠ্যক্রমে অন্তর্ভুক্ত করা যেতে পারে এবং শিক্ষকদের প্রশিক্ষণ ও শিক্ষার্থীদের সক্ষমতা বৃদ্ধির মাধ্যমে বাস্তবায়ন করা সম্ভব।
বৈঠকে ইউনিসেফ ও মন্ত্রণালয় যৌথভাবে পরিবেশ শিক্ষাভিত্তিক কর্মপরিকল্পনা ও স্থানীয় পর্যায়ে জলবায়ু উদ্যোগ পরিচালনার ব্যাপারে একমত পোষণ করে। পরিকল্পনায় পুনর্ব্যবহার, বর্জ্য পৃথকীকরণ এবং শিক্ষার্থীদের নেতৃত্বে জরুরি প্রস্তুতির কার্যক্রম অন্তর্ভুক্ত থাকবে।
বৈঠকে আরও উপস্থিত ছিলেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. ফারহিনা আহমেদ, অতিরিক্ত সচিব (জলবায়ু পরিবর্তন) মোহাম্মদ নাভিদ শফিউল্লাহ, ইউনিসেফ বাংলাদেশের চিফ অব ওয়াশ পিটার জর্জ এল. ম্যাস, চিফ অব ফিল্ড সার্ভিসেস ফ্রাঙ্কো গার্সিয়া এবং প্রোগ্রাম স্পেশালিস্ট (জলবায়ু) ভ্যালেন্টিনা স্পিনেডি।
পরিবেশ মন্ত্রণালয় ও ইউনিসেফ উভয় পক্ষই জলবায়ুবান্ধব নেতৃত্ব গড়ে তুলতে ও দেশের টেকসই উন্নয়ন ত্বরান্বিত করতে পারস্পরিক সহযোগিতা আরও জোরদারের আশাবাদ ব্যক্ত করে।
রাজধানীর গুলশানে হোলি আর্টিজান বেকারিতে সংঘটিত ভয়াবহ জঙ্গি হামলার নয় বছর পূর্ণ হল আজ।
২০১৬ সালের ১ জুলাই রাতে রাজধানীর গুলশানে হোলি আর্টিজান বেকারিতে নৃশংস হামলা চালায় একদল সশস্ত্র জঙ্গি। সেখানে তারা দেশি-বিদেশি অতিথিদের জিম্মি করে। পরে কুপিয়ে ও গুলি করে ২২ জনকে হত্যা করে। নিহতদের মধ্যে ইতালির নয়, জাপানের সাত, ভারতের এক এবং তিনজন বাংলাদেশি নাগরিক।
অন্যদিকে জিম্মিদের মুক্ত করতে অভিযান পরিচালনার সময় বোমা হামলায় নিহত হন পুলিশের দুই কর্মকর্তা। তারা হলেন বনানী থানার তৎকালীন ওসি সালাহউদ্দিন খান এবং ডিবির সহকারী কমিশনার (এসি) রবিউল ইসলাম।
ওই ঘটনায় সন্ত্রাসবিরোধী আইনে গুলশান থানায় মামলা করেন ওই থানার উপপরিদর্শক (এসআই) রিপন কুমার দাস। পুলিশের কাউন্টার টেররিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম ইউনিটের পরিদর্শক হুমায়ুন কবির মামলাটি তদন্ত করে ২০১৮ সালের ১ জুলাই আদালতে অভিযোগপত্র (চার্জশিট) দাখিল করেন।
মামলার বিচার শেষে ২০১৯ সালের ২৭ নভেম্বর ‘নব্য জেএমবির’ সাত সদস্যকে মৃত্যুদণ্ড দেন ঢাকার সন্ত্রাসবিরোধী বিশেষ ট্রাইব্যুনাল। এরপর মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্তদের ডেথ রেফারেন্স ও আসামিদের আপিল শুনানি শুরু হয় হাইকোর্টে। শুনানি শেষে ২০২৩ সালের ৩০ অক্টোবর বিচারপতি সহিদুল করিম ও বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমানের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট ডিভিশন বেঞ্চ বিচারিক আদালতে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত সাত আসামিকে আমৃত্যু কারাদণ্ড দিয়ে রায় ঘোষণা করেন।
হাইকোর্টের রায়ে আমৃত্যু কারাদণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন, রাকিবুল হাসান ওরফে রিগ্যান, মো. জাহাঙ্গীর হোসেন ওরফে রাজীব গান্ধী, আসলাম হোসেন ওরফে র্যাশ, হাদিসুর রহমান, আবদুস সবুর খান ওরফে সোহেল মাহফুজ, মামুনুর রশীদ ওরফে রিপন ও শরিফুল ইসলাম খালেদ।
নয় বছর আগে রাজধানীর গুলশানের হোলি আর্টিজান বেকারিতে হামলা মামলায় বিচারিক আদালতে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত সাত আসামিকে কেন আমৃত্যু কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে, তা হাইকোর্ট গত ১৭ জুন প্রকাশিত পূর্ণাঙ্গ রায়ে উল্লেখ করেছেন।
সুপ্রিম কোর্টের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত ২২৯ পৃষ্ঠার পূর্ণাঙ্গ রায়ে হাইকোর্ট বলেছেন, ‘ঘটনাস্থলে উপস্থিত না থাকলেও এই সাত আপিলকারী ষড়যন্ত্র ও ঘটনায় সহায়তা করেছেন, যা সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হয়েছে। ষড়যন্ত্র ও ঘটনায় (জঙ্গি হামলা) সহায়তার কারণে সন্ত্রাসবিরোধী আইন, ২০০৯-এর ধারা ৬ এর ১ উপধারা (ক) (আ) দফায় বর্ণিত অপরাধে তারা দোষী। কিন্তু সন্ত্রাসবিরোধী বিশেষ ট্রাইব্যুনাল সংশ্লিষ্ট ধারা-উপধারার সঠিক উপলব্ধি না করে আপিলকারীদের সর্বোচ্চ সাজা মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন, যা সঠিক ও গ্রহণযোগ্য নয়। যে কারণে উক্ত রায়টি হস্তক্ষেপযোগ্য।’
এই মামলার সাক্ষ্য-প্রমাণ, আসামিদের স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি, উভয় পক্ষের আইনজীবীদের বক্তব্যের পর্যালোচনা তুলে ধরে রায়ে বলা হয়েছে, ‘আসামিদের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসবিরোধী আইনে অভিযোগ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হয়েছে গণ্য করে, বিচারিক আদালতের দেওয়া মৃত্যুদণ্ডের পরিবর্তে দণ্ডিতদের শাস্তি যাবজ্জীবন কারাদণ্ডে দণ্ডিত করা হল। তবে হত্যাকাণ্ডের নির্মমতা, নৃশংসতা, ঘটনার সময় ঘটনাস্থলে সন্ত্রাসীদের সামগ্রিক নিষ্ঠুর আচরণ এবং এ ঘটনায় বহির্বিশ্বে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হওয়া বিবেচনায় নিয়ে আসামিদের প্রত্যেককে আমৃত্যু কারাদণ্ড দেওয়া হলে ন্যায়বিচার নিশ্চিত হবে বলে মনে করি।
এছাড়া হাইকোর্টেন রায়ে বলা হয়, ‘বিচারিক আদালতের দেওয়া মৃত্যুদণ্ডাদেশ রদ ও রহিত করে সন্ত্রাসবিরোধী আইনের ৬(২)(আ) ধারায় দোষী সাব্যস্ত করে তাঁদের প্রত্যেককে (সাত আসামি) আমৃত্যু কারাদণ্ড ও ৫০ হাজার টাকা করে অর্থদণ্ড, অনাদায়ে আরো পাঁচ বছর কারাদণ্ডে দণ্ডিত করা হল।’
কি ঘটেছিল সেদিন?
২০১৬ সালের ১ জুলাই, দিনটি ছিল শুক্রবার। রাত পৌনে ৯টার দিকে খবর পাওয়া যায়, রাজধানীর গুলশানের ৭৯ নম্বর সড়কের হোলি আর্টিজান বেকারিতে ‘সন্ত্রাসীদের সঙ্গে’ পুলিশের গোলাগুলি হচ্ছে। ‘নব্য জেএমবি’র পাঁচ জঙ্গি বেকারিতে ঢুকে নির্বিচারে ১৮ জন বিদেশি নাগরিকসহ ২২ জনকে হত্যা করে।
পরে কমান্ডো অভিযানে নিহত হন পাঁচ জঙ্গি। এ ঘটনা দেশ-বিদেশে চাঞ্চল্যের সৃষ্টি করে। দেশের ইতিহাসে এটি অন্যতম নৃশংস হামলার ঘটনা।
সেনাবাহিনীর কমান্ডো অভিযানে নিহত জঙ্গিরা হলেন, মীর সামেহ মোবাশ্বের, রোহান ইবনে ইমতিয়াজ ওরফে মামুন, নিবরাস ইসলাম, খায়রুল ইসলাম পায়েল ও শফিকুল ইসলাম উজ্জ্বল।
এছাড়াও বিভিন্ন সময়ে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর অভিযানে নিহত হয়েছেন ‘নব্য জেএমবি’র আরো আট সদস্য। তাদের অভিযোগ থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। তদন্তে অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক আবুল হাসনাত রেজা করিমও অভিযোগ থেকে অব্যাহতি পান।
জুলাই অভ্যুত্থান স্মরণে মাসব্যাপী কর্মসূচি উদ্বোধন করেছেন প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইউনূস।
আজ মঙ্গলবার প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে তিনি এই কর্মসূচির উদ্বোধন করেন।
ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের মুন্সীগঞ্জের গজারিয়ায় দুটি কাভার্ড ভ্যান ও একটি পিকআপ ভ্যানের ত্রিমুখী সংঘর্ষে এক কাভার্ড ভ্যান চালক নিহত হয়েছে। এঘটনায় আহত হয়েছে আরো ৪জন।
সোমবার (৩০ জুন) দিবাগত রাত সাড়ে বারোটার দিকে মহাসড়কের গজারিয়া অংশের বাউশিয়া হাসান রাবার ইন্ডাস্ট্রির উল্টা পাশে ঢাকাগামী লেনে এই ঘটনা ঘটে।
নিহত কাভার্ড ভ্যান চালকের নাম রনি (৩৮)। সে যশোর জেলার ঝিকরগাছা উপজেলার আলম মিয়ার ছেলে। আহতরা হলেন, কুমিল্লার চান্দিনা উপজেলার আব্দুল হাকিমের ছেলে কামাল হোসেন(৫০), একই এলাকার আব্দুর রব মিয়ার ছেলে বিল্লাল হোসেন(৪৩), বাচ্চু মিয়ার ছেলে রনি(৩০) ও যশোর জেলার কেশবপুর উপজেলার কাটাখালী গ্রামের খালেক মিয়ার ছেলে কামরুল (২৭)। আহতদের মধ্যে কামাল হোসেনকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা মেডিকেল হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
খবর নিয়ে জানা যায়, সোমবার দিবাগত রাত সাড়ে বারোটার দিকে ঢাকামুখী একটি পিকআপ ভ্যান নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে রোড ডিভাইডারে ধাক্কা দিলে পেছন থেকে দ্রুতগতির দুটি কাভার্ড ভ্যান পরপর পিকআপ ভ্যানটিকে ধাক্কা দেয়। এতে পিছনের কাভার্ড ভ্যানের সামনের অংশ দুমড়ে-মুচড়ে যায়। এ সময় কাভার্ড ভ্যানের চালক চাপা পড়েন। খবর পেয়ে ভবেরচর হাইওয়ে পুলিশ ও গজারিয়া ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা আধা ঘন্টার চেষ্টায় আটকে পড়া কাভার্ড ভ্যান চালককে মৃত অবস্থায় উদ্ধার করেন।
ভবেরচর হাইওয়ে পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ মো. শওকত হোসেন জানান, নিহত চালকের মরদেহ পুলিশ ফাঁড়িতে রাখা হয়েছে। দুর্ঘটনা কবলিত গাড়িগুলো মহাসড়ক থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে।আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন'।
পার্বত্য চট্টগ্রাম মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে আজ থেকে ঢাকায় শুরু হচ্ছে পাঁচ দিনব্যাপী পার্বত্য ফল উৎসব ও মেলা।
মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে পার্বত্য চট্টগ্রাম ঐতিহ্য সংরক্ষণ ও গবেষণা কেন্দ্র মেলার সার্বিক তত্ত্বাবধানে থাকছে।
আজ বিকেলে মেলার আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করবেন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক উপদেষ্টা সুপ্রদীপ চাকমা।
রাজধানীর বেইলি রোডে পার্বত্য কমপ্লেক্সে এ মেলার আয়োজন করা হয়েছে। সেখানে বিভিন্ন পাহাড়ি সংস্থা পাহাড়ি ফলমূল নিয়ে পসরা সাজিয়ে বসেছেন।
মেলা উপলক্ষে ঢাকা শহরের গুরুত্বপূর্ণ স্থান- বিজয় সরণি, সার্ক ফোয়ারা, রমনা পার্ক, বেইলি রোডের পশ্চিম পাশে রমনা পার্ক সংলগ্ন ও পূর্ব পাশে অফিসার্স ক্লাব সংলগ্ন, টিএসসি ও দোয়েল চত্বরে পোস্টার, ব্যানার ও ফেস্টুন স্থাপন করা হয়েছে।
এছাড়া পার্বত্য চট্টগ্রাম কমপ্লেক্স-এর সম্মুখে একটি বেলুন স্থাপন করা হয়েছে।
রাজধানীর ৩৩ বেইলি রোডে অবস্থিত পার্বত্য চট্টগ্রাম কমপ্লেক্সে সকাল ১০টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত প্রতিদিন এই মেলা দর্শনার্থীদের জন্য উন্মুক্ত থাকবে।
মুন্সীগঞ্জে সজল হত্যা মামলায় সাবেক সংসদ সদস্য (এমপি) ফয়সাল বিপ্লবের জামিন নামঞ্জুর করে তার ৭ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত।
মঙ্গলবার (১ জুলাই) সকালে পুলিশ ১০ দিনের রিমান্ড আবেদন করলে শুনানি শেষে মুন্সীগঞ্জের ১ নম্বর আমলী আদালতের বিচারক আশিকুর রহমান এই আদেশ দেন।
এদিন মব এড়াতে সেনাবাহিনী ও পুলিশের কঠোর নিরাপত্তার মধ্যে সকাল সাড়ে ৮টায় আদালতে আনা হয় তাকে। আদালতে তোলা হয় ৯টা ৫ মিনিটে।
আসামির পক্ষে জামিন ও রিমান্ড নামঞ্জুরের আবদেন নিয়ে শুনানিতে অংশ নেন অ্যাডভোকেট শাহিন মো. আমানুল্লাহ ও অ্যাডভোকেট হাসান মৃধা। আর রাষ্ট্রপক্ষে আদালত পরিদর্শক ছাড়াও সরকারি কৌঁসুলি (পিপি) অ্যাডভোকেট আব্দুল হালিম ও সহকারী কৌঁসুলি (এপিপি) নূর হোসেন রিমান্ডের পক্ষে যুক্তি তুলে ধরেন। প্রায় ২০ মিনিট ধরে শুনানি হয়। এরপর তাকে ৭ দিন রিমান্ডে নেওয়ার আদেশ দেন আদালত।
আদাশের পর তাকে সরাসরি জেলা কারাগারে নিয়ে যাওয়া হয়। তার কিছুক্ষণ পরেই আদালত এলাকায় তার ফাঁসির দাবিতে বিক্ষোভে অংশ নেয় অর্ধ সহ্রাধিক মানুষ। ছাত্র-জনতা ব্যানারে এই বিক্ষোভ থেকে মুন্সীগঞ্জে ৪ আগস্টের সহিংসতার জন্য তাকে দায়ী করা হয়। বিক্ষোভ থেকে ফয়সাল বিপ্লবের বিরুদ্ধে নানা স্লোগান দেওয়া হয়।
বিক্ষোভকারীরা বলেন, সাধারণত সকাল ১০টার আগে আদালতের কার্যক্রম শুরু হয় না। কিন্তু আজ এত আগে তাকে আদালতে আনা হবে, তা তারা জানতেন না।
গত ২২ জুন রাতে রাজধানীর মনিপুরী পাড়া থেকে গ্রেপ্তার হন মুন্সীগঞ্জ-৩ আসনের সাবেক এই সংসদ সদস্য। পরে ২৩ জুন তাকে ঢাকার আদালতে তোলা হয়। এরপর ৩০ জুন (সোমবার) ফয়সাল বিপ্লবকে মুন্সীগঞ্জ কারাগারে নেওয়া হয়।
মুন্সীগঞ্জে গত বছরের ৪ আগস্টের সহিংসতায় তিনজন নিহত হন। এই তিনটি হত্যা মামলা ও আরও দুইটি হত্যাচেষ্টা মামলার প্রধান আসামি ফয়সাল বিপ্লব।
অবৈধ গ্যাস সংযোগ বিচ্ছিন্নকরণ এবং জ্বালানি সম্পদ রক্ষায় চলমান কার্যক্রমের অংশ হিসেবে সোমবার গাজীপুর ও কুমিল্লা জেলায় মোবাইল কোর্ট অভিযান পরিচালনা করা হয়েছে।
অভিযানে অবৈধ সংযোগ ব্যবহারকারীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণের পাশাপাশি রাষ্ট্রীয় সম্পদ রক্ষা ও পুনরুদ্ধার করা হয়।
কুমিল্লার বুড়িচং উপজেলার সাহেবনগর, ভাদুয়াপাড়া ও কাকিয়ারচর এলাকায় মোবাইল কোর্ট অভিযান পরিচালনা করেন এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট (সিনিয়র সহকারী সচিব) সৈকত রায়হান। বাংলাদেশ গ্যাস ফিল্ডস কোম্পানি লিমিটেড (বিজিডিসিএল)-এর আওতাধীন এসব এলাকার ৩টি স্থানে অভিযান পরিচালনা করে ৩টি মামলায় ৩ জন ব্যক্তিকে মোট ১৩ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়।
এ সময় প্রায় ০.৫ কিলোমিটার অবৈধ গ্যাস পাইপলাইন উচ্ছেদ করা হয়। পাশাপাশি ৫৩টি অবৈধ গ্যাস রাইজার এবং ২২টি অবৈধ গ্যাসচালিত চুলা বিচ্ছিন্ন করা হয়।
গাজীপুরের টঙ্গী এলাকায় এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট (সিনিয়র সহকারী সচিব) মনিজা খাতুনের নেতৃত্বে জোবিঅ-টঙ্গী এবং আবিবি-জয়দেবপুরের একটি যৌথ দল অভিযানটি পরিচালনা করে। এর আওতায় তিনটি নির্ধারিত স্থানে পরিদর্শন চালানো হয়। সেগুলো হল, টঙ্গীর শিলমুন হাইস্কুল রোডের এস.এম.ফ্যাশন, মিরাশপাড়ার নদী বন্দর রোডের মোহাম্মদিয়া কালার ট্রেডিং এবং দত্তপাড়া জহির মার্কেটের মিথিলা লন্ড্রি ওয়াশ।
তবে, তিনটি স্পটেই গ্যাস সংযোগ সংক্রান্ত কোনো অনিয়ম বা অবৈধ ব্যবহার শনাক্ত হয়নি। সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা মনে করছেন, পূর্ববর্তী অভিযানগুলোর কারণে ওই এলাকায় অবৈধ সংযোগ উল্লেখযোগ্যভাবে কমেছে।
জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব মনিরুল ইসলাম বাসস’কে জানান, দেশের জ্বালানি নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে এবং অবৈধ সংযোগের মাধ্যমে সরকারের রাজস্ব ক্ষতি রোধে এ ধরনের অভিযান নিয়মিত পরিচালনা করা হবে।
তিনি আরো বলেন, সবাইকে বৈধ উপায়ে গ্যাস সংযোগ নিয়ে ও এর সঠিক ব্যবহার নিশ্চিত করার জন্য সচেতন হতে হবে। নাগরিক ও শিল্পপ্রতিষ্ঠানগুলোকে জ্বালানি খাতের আইন মেনে চলার আহ্বান জানান তিনি।
মন্তব্য