নিউজিল্যান্ডে প্রায় দেড় মাসের সফরে তিন ম্যাচের ওয়ানডে ও তিন ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজ খেলা শেষে দেশে ফিরেছে বাংলাদেশ ক্রিকেট দল।
রোববার সকাল সাড়ে এগারোটা নাগাদ সিঙ্গাপুর এয়ারলাইনসের একটি ফ্লাইটে করে দেশে ফেরে তারা। তবে দলের সঙ্গে ছিলেন না ওয়ানডে অধিনায়ক তামিম ইকবাল ও তরুণ পেইসার হাসান মাহমুদ। ওয়ানডের সিরিজের পরই দেশে ফিরে আসেন তারা।
দলের সঙ্গেই ফিরেছেন মুস্তাফিজুর রহমান। বাংলাদেশ থেকে গিয়ে ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগে (আইপিএল) রাজস্থান রয়্যালসের সঙ্গে যোগ দেবেন এই পেইসার।
নিউজিল্যান্ডে এবারও জয় পাওয়া হয়নি বাংলাদেশের। ওয়ানডে ও টি-টোয়েন্টি দুই সিরিজেই ৩-০ ব্যবধানে হেরেছে তারা। দ্বিতীয় ওয়ানডে ছাড়া আর কোনো ম্যাচে প্রতিদ্বন্দ্বিতাও গড়তে পারেনি বাংলাদেশ।
দেশে ফিরে বাঁহাতি স্পিনার নাসুম আহমেদ সাংবাদিকদের জানান, নিউজিল্যান্ডের কন্ডিশনে মানিয়ে নিতে আরেকটু সময় প্রয়োজন ছিল। দেড়-দুই মাস সেখানে থাকলে ফিল্ডিংয়ে উন্নতি হতো।
‘প্রস্তুতি ভালো ছিল। কিন্তু আমাদের আরেকটু সময় দরকার ছিল ওদের কন্ডিশনের জন্য। দেড়-দুই মাস থাকলে আমাদেরও ফিল্ডিংয়ে উন্নতি হতো। কারণ, ওখানের আকাশ অনেক পরিষ্কার। আর ওখানের আবহাওয়া পুরোপুরি আলাদা। আমাদের একটু সময় লাগত। হয়তোবা আমরা যদি ১৫ দিন বা আরেকটু ক্যাম্প করতে পারতাম, তাহলে আরেকটু ভালো হতো।’
এই সিরিজের মধ্য দিয়ে অভিষেক হওয়া নাসুম আরও জানান, তাদের পরিকল্পনা ছিল ম্যাচ জেতার কিন্তু পারেননি।
তিনি বলেন, ‘আমাদের চিন্তাভাবনা ছিল যে আমরা ম্যাচ জিতব। কিন্তু হয়নি। তারপরও আমরা চেষ্টা করেছি। আমাদের দ্বারা হয়নি। আমরা পারতাম, আমাদের দ্বারা হয়নি।’
দেশে খুব বেশি দিন থাকা হবে না খেলোয়াড়দের। শ্রীলঙ্কায় দুই টেস্টের সিরিজ খেলতে ১২ এপ্রিল রওনা দেয়ার কথা তাদের।
আরও পড়ুন:রাজবাড়ীর গোয়ালন্দে নুরাল পাগলার ভক্ত রাসেল মোল্লা হত্যা মামলায় নুরাল পাগলার দরাবার থেকে জেনারেটর চুরির দায়ে মো. মিজানুর রহমান (২৪) নামে এক যুবককে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
গ্রেফতারকৃত মিজানুর রহমান রাজবাড়ীর লক্ষীকোল সোনাকান্দা এলাকার হারুনার রশিদ এর ছেলে।
বুধবার (১৭ সেপ্টেম্বর) রাত সাড়ে ১০ টার দিকে জেলা গোয়েন্দা ডিবি ও গোয়ালন্দ থানা পুলিশের যৌথ অভিযানে তাকে জেনারেটর সহ গ্রেফতার করা হয়।
বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ৯টার দিকে গ্রেফতারের বিষয়টি নিশ্চিত করেন জেলা অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম এন্ড অপস্) শরীফ আল রাজীব।
তিনি জানান, ভিডিও ফুটেজ দেখে ও পর্যালোচনা করে দেখা গেছে মিজানুর রহমান নুরাল পাগলার দরবার থেকে একটি জেনারেটর নিয়ে যাচ্ছে। ফুটেজের উপর ভিত্তি করে তাকে শনাক্ত করা হয়। পরে তাকে নুরাল পাগলার দরবারের ভক্ত রাসেলের পিতা আজাদ মোল্লার দায়ের করা মামলায় গুরুতর জখম, লুটপাট, অগ্নিসংযোগ, হত্যা, কবর থেকে লাশ উত্তোলন, পোড়ানো মামলায় গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতারকৃত নজরুল ইসলামকে বিজ্ঞ আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে। তিনি আরও জানান, দুটি মামলায় এ পর্যন্ত মোট ২৫ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। এ মামলায় এখন পর্যন্ত ৯ জন আসামিকে গ্রেফতার করল পুলিশ।
বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় (বাকৃবি) ৪৭তম বিসিএস প্রিলিমিনারি পরীক্ষায় অংশগ্রহণকারী আবাসিক শিক্ষার্থীদের জন্য বিশেষ বাস সেবা দেয়ার ঘোষণা দিয়েছে।
বৃহস্পতিবার (১৮ সেপ্টেম্বর) বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবহন শাখার পরিচালক অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ গোলজারুল আজিজ স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে এ তথ্য জানানো হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়, আগামী ১৯ সেপ্টেম্বর ময়মনসিংহ কেন্দ্রে অনুষ্ঠিতব্য পরীক্ষায় শিক্ষার্থীদের যথাসময়ে পৌঁছে দিতে সকাল ৮টা ১৫ মিনিটে জব্বারের মোড় থেকে দুটি বাস টাউন হলের উদ্দেশ্যে রওনা দেবে। পরীক্ষা শেষে দুপুর ১২টা ২০ মিনিটে একই স্থান থেকে বাসগুলো শিক্ষার্থীদের ক্যাম্পাসে ফিরিয়ে আনবে।
পরিবহন শাখার পরিচালক অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ গোলজারুল আজিজ জানান, উপাচার্যের নির্দেশে এ উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের স্থবির পরিস্থিতির কারণে প্রথমে বাস চালুর পরিকল্পনা না থাকলেও পরে উপাচার্যের নির্দেশে সার্ভিসটি চালু করা হয়।
হলদে রঙের শাড়ি, খোপায় সাদা কাঠগোলাপ, পায়ে আলতা, নুপুর সাজে সেজেছে ওড়াওঁ সম্প্রদায়ের নারীরা। পুরুষের ঢোল ও মন্দিরার তালে নেচে গেয়ে নিজেদের বড় ধর্মীয় আয়োজন কারাম পূজা ও সামাজিক উৎসবের আমেজে মাতোয়ারা হয়ে উঠেছে ঠাকুরগাঁওয়ের ওড়াওঁ সম্প্রদায়ের মানুষ।
আয়োজকরা জানান, বাংলা খ্রিষ্টাব্দের ভাদ্র মাসের শেষ রাত বুধবার থেকে তাদের পূজা আর্চনা শুরু হয়ে পরদিন পহেলা আশ্বিন বৃহস্পতিবার দুপর পর্যন্ত চলে আনন্দ উৎসব। এ সময় নিজ ধর্মীয় বিশ্বাসের আলোকে কারাম গাছের ডাল এনে পূজা আর্চনা ও নাচগানে মাতোয়ারা থাকে এ সম্প্রদায়ের আদিবাসী মানুষরা।
সদর উপজেলার সালন্দর পাঁচপীর ডাঙ্গা গ্রামে উৎসবের রাতে সরজমিনে গিয়ে দেখা যায় এমন আয়োজন।
ওড়াওঁ সম্প্রদায়ের ধর্মীয় এ উৎসবে প্রধান অতিথি হিসেবে আমন্ত্রিত অতিথি ছিলেন জেলা প্রশাসক ইশরাত ফারজানা। বিশেষ অতিথি হিসেবে আমন্ত্রিত অতিথি ছিলেন সদর উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা(ইউএনও) মো: খাইরুল ইসলাম। বিভিন্ন ধর্মের রাজনীতিক নেতা, সমাজ ওসাংস্কৃতিক কর্মী ও বিভিন্ন শ্রেণিপেশার মানুষও আমন্ত্রিত ছিলেন।
এছাড়াও গ্রামের সকল ধর্মের মানুষ এই কারাম উৎসব দেখতে আসেন। এদিন সম্প্রিতির বন্ধনে আরও একবার আবদ্ধ হন গ্রামের মানুষ।
শুরুতেই আমন্ত্রিত অতিথিদের নাচ ও গানের তালে তালে বরণ করে নেন ওড়াওঁ সম্প্রদায়ের মানুষ। পরে ফুল দিয়ে সকল ধর্মের মানুষদের বরণ করেন তারা। এরপর নাচ ও গান পরিবেশন করেন অতিথিদের সামনে। পরে উৎসবের তাৎপর্য তুলে ধরে বক্তব্য করেন আয়োজকরা এবয় নিজেদের অনুভূতি প্রকাশ করে বক্তৃতা করেন আমন্ত্রিত অতিথিরা।
শুভেচ্ছা বক্তব্যে জাতীয় আদিবাসী পরিষদ, ঠাকুরগাঁও জেলা শাখার উপদেষ্টা আইনজীবী ইমরান হোসেন চৌধুরী বলেন, কারাম উৎসব দুই রকম ভাবে উদযাপন করা হয়। একটি নিজ কারাম ও অপরটি দশ কারাম। নিজ কারাম হলো যারা একটু স্বচ্ছল তারা নিজেদের বাড়িতে এ উৎসবের আয়োজন করে থাকে। আর দশ কারাম হলো যেখানে সবার সহযোগিতায় একখানে এ উৎসবের আয়োজন করা হয় এবং তাদের ধর্মীয় বিশ্বাস মতে কারাম গাছের পূজা করা হয়। ওড়াওঁ সম্প্রদায়ের মানুষ বিশ্বাস করে কারাম গাছ প্রাকৃতিক নানা রকম দূর্যোগ মোকাবেলায় তাদের সহযোগিতা করেছে। এ গাছের ডালকে আঁকড়ে ধরে তারা যুগ যুগ ধরে বেঁচে ছিলো। তিনি বলেন, এটি ওড়াওঁ সম্প্রদায়ের ধর্মীয় বড় উৎসব হলেও এইখানে গ্রামের সকল ধর্মের মানুষ আসেন। সম্প্রীতির মিলবন্ধনে আবদ্ধ হয়। এ সময় তিনি এখানকার আদিবাসীদের জীবন মান উন্নয়নের জন্য সরকার সহ সকলের এগিয়ে আসার আহ্বান করেন।
কারাম উৎসবে এসে নিজের অনুভূতির কথা জানিয়েছেন মো: জসিম উদ্দীন। বলেন, এ সম্প্রদায়ের মানুষের জীবন যাপন খুব সহজ সরল। তারা অনেক পরিশ্রমী। তাদের উৎসবের আমেজ অত্যন্ত মনোমুগ্ধকর। আমি দারুন উপভোগ করছি। তাদের সরল আতিথিয়েতা আমাকে খুব আপন করে নেয় তাদের।
ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার নির্বাহী অফিসার(ইউএনও) মো: খাইরুল ইসলাম উৎসবমুখোর পরিবেশ পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের জানান, ওড়াওঁ সম্প্রদায় একটি অনন্য জাতিসত্ত্বা। তাদের নিজস্ব সংস্কৃতি ও সৃষ্টি কালচার রয়েছে। তাদের ধর্মীয় উৎসব চমৎকার। তাদের নিজস্ব সত্ত্বা যেন কালের বিবর্তনে হারিয়ে না যায়। যেন সহস্র বছর ধরে তারা টিকে থাকে এবং স্বাবলম্বী হতে পারে এর জন্য প্রশামনের পক্ষ থেকে সহযোগিতা থাকবে।
বুধবার, ১৭ সেপ্টেম্বর বিকেলে এই সহায়তা প্রদান করা হয়। প্রতিটি পরিবারকে চাল, ডাল, তেল, লবণ, চিনি এবং অন্যান্য নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী দেওয়া হয়।
উল্লেখ্য, গত ১০ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যায় পদ্মা নদীর প্রবল ভাঙনে উদয়নগর বিওপির দুই-তৃতীয়াংশ এলাকা, ফসলি জমি ও বহু বসতবাড়ি নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যায়। ১৫ সেপ্টেম্বর সকালে অবশিষ্ট অংশটিও নদীতে তলিয়ে যায়।
ঝুঁকি বিবেচনায় বিজিবির সদর দপ্তরের নির্দেশে ১৩, ১৪ ও ১৫ আগস্ট তারিখে উদয়নগর বিওপির অধিকাংশ স্থানান্তরযোগ্য সরঞ্জাম পাশ্ববর্তী চরচিলমারী বিওপিতে সরিয়ে নেওয়া হয়। পরবর্তীতে ১১ সেপ্টেম্বর ভোরে অবশিষ্ট অস্ত্র, গোলাবারুদ, অফিসিয়াল নথিপত্র, যানবাহন ও জনবল নৌকা, ট্রলার ও স্পিডবোটের মাধ্যমে নিরাপদে স্থানান্তর করা হয়।
বর্তমানে উদয়নগর বিওপির সকল সদস্য ও গুরুত্বপূর্ণ কন্ট্রোল আইটেম নিরাপদে রয়েছে বলে বিজিবি জানিয়েছে।
বিজিবি আরও জানায়, প্রাকৃতিক দুর্যোগের মধ্যেও সীমান্ত সুরক্ষা কার্যক্রম স্বাভাবিক রয়েছে এবং কোনো ধরনের বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হয়নি। বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) সবসময় মানবিক দৃষ্টিকোণ থেকে ক্ষতিগ্রস্তদের পাশে রয়েছে এবং ভবিষ্যতেও থাকবে।
সীমান্ত সুরক্ষার স্বার্থে উদয়নগর বিওপি সংলগ্ন এলাকায় অস্থায়ী ক্যাম্প স্থাপন করে টহল কার্যক্রম অব্যাহত রাখা হয়েছে। বড় ইঞ্জিনচালিত নৌকা, স্পিডবোট ও রেসকিউ বোটের মাধ্যমে টহল আরও জোরদার করা হয়েছে। এছাড়া, পূর্ববর্তী অবস্থানের নিকটবর্তী এলাকায় একটি নতুন ও উন্নত মানের বিওপি নির্মাণের প্রক্রিয়াও শুরু হয়েছে।
৪৭ বিজিবি ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মাহবুব মোর্শেদ রহমান জানান, “বিজিবি দেশের সীমান্ত সুরক্ষায় সবসময় অটল ও প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। প্রাকৃতিক দুর্যোগ অবকাঠামো নষ্ট করতে পারে, কিন্তু আমাদের মনোবল বা দায়িত্ব পালনের অঙ্গীকার কখনোই দুর্বল করতে পারবে না ইনশাআল্লাহ। সীমান্ত নিরাপত্তা, চোরাচালান প্রতিরোধ এবং জনগণের স্বার্থে বিজিবি আগের মতোই নিরলসভাবে কাজ করে যাবে।”
সপ্তাহের সবচেয়ে ব্যস্ত দিন বৃহস্পতিবার। রাজধানী ঢাকার রাস্তায় আজ নামছে সাতটি রাজনৈতিক দল। একই দাবিতে ঘোষিত এই সমাবেশ ও বিক্ষোভে বিকেল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত শহরের বিভিন্ন এলাকায় ব্যাপক যানজটের শঙ্কা তৈরি হয়েছে।
আগামীকাল শুক্রবার অনুষ্ঠিত হবে বিসিএস প্রিলিমিনারি পরীক্ষা। শুধু ঢাকাতেই কয়েক লাখ পরীক্ষার্থী ইতোমধ্যে অবস্থান নিচ্ছেন। তাদের সঙ্গে আজকের রাজনৈতিক কর্মসূচি মিলিয়ে রাজধানীর সড়কগুলোতে চরম ভোগান্তির আশঙ্কা করছে সাধারণ মানুষ ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী।
কোন এলাকায় কর্মসূচি
জানা যায়, জামায়াতে ইসলামী, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ, খেলাফত আন্দোলন, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস (মামুনুল হক), খেলাফত মজলিস (ড. আহমদ আবদুল কাদের), নেজামে ইসলাম পার্টি ও জাতীয় গণতান্ত্রিক পার্টি (জাগপা)—এই সাত দল আজ ঢাকায় প্রথম দিনের সমাবেশ করছে।
বায়তুল মোকাররম, পল্টন, প্রেসক্লাব, বিজয়নগর, কাকরাইল, নাইটিঙ্গেল ও শাহবাগ এলাকায় এসব সমাবেশ ও মিছিল অনুষ্ঠিত হবে। দুপুর থেকে রাত পর্যন্ত চলবে কর্মসূচি।
জামায়াতে ইসলামী: বিকেল সাড়ে ৪টায় দক্ষিণ গেটে সমাবেশ; এরপর পল্টন, বিজয়নগর, কাকরাইল হয়ে শাহবাগে মিছিল।
ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ: জোহরের পর বায়তুল মোকাররমের উত্তর গেটে সমাবেশ; প্রেসক্লাব হয়ে পল্টন মোড়ে কর্মসূচির সমাপ্তি।
বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস (মামুনুল হক): আসরের পর সমাবেশ; এরপর পল্টন–বিজয়নগর–কাকরাইল–নাইটিঙ্গেল পর্যন্ত মিছিল।
খেলাফত আন্দোলন: প্রেসক্লাবের সামনে বিকাল ৩টায় সমাবেশ; এরপর মিছিল নিয়ে বায়তুল মোকাররম।
জাগপা: বিকেল সাড়ে ৪টায় বিজয়নগরে সমাবেশ; মিছিল নিয়ে প্রেসক্লাব এবং আবারও বিজয়নগরে ফেরা।
নেজামে ইসলাম: বিকেল ৫টায় প্রেসক্লাবে সমাবেশ।
অন্য দলগুলোও পল্টন–গুলিস্তান–প্রেসক্লাব ও শাহবাগ ঘিরে অবস্থান নেবে।
যানজট ও জনভোগান্তি
রাজধানীর ব্যস্ততম এলাকায় কর্মসূচি হওয়ায় অফিসগামী ও ফেরত কর্মচারীরা ভোগান্তিতে পড়বেন। মতিঝিলের ব্যাংকপাড়া, সচিবালয়ের কর্মকর্তা, গুলিস্তান ও শাহবাগ হয়ে যাতায়াতকারীরা বিকল্প রাস্তায় চাপ সৃষ্টি করবেন।
শাহবাগ বন্ধ হয়ে গেলে নিউমার্কেট, ধানমন্ডি, কারওয়ান বাজার, বাংলামোটরসহ আশপাশের এলাকায়ও অচলাবস্থা দেখা দিতে পারে। সবচেয়ে বিপাকে পড়বে হাসপাতালগামী রোগীরা। ঢাকা মেডিকেল, বারডেম, বিএসএমএমইউ, ল্যাবএইডসহ একাধিক হাসপাতালে রোগী আনা–নেওয়া ব্যাহত হতে পারে।
পুলিশের সতর্কতা
ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) ট্রাফিক বিভাগের উপ–কমিশনার মো. রফিকুল ইসলাম জানান, ট্রাফিক পুলিশ যানবাহন নিয়ন্ত্রণে রাখতে সর্বোচ্চ চেষ্টা করছে। তবে রাজনৈতিক সমাবেশ ও মিছিল শুরু হলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখা কঠিন হয়ে পড়ে।
তিনি বলেন, “ঢাকা এমনিতেই ব্যস্ত শহর। যেকোনো রাস্তায় কর্মসূচি মানেই জনদুর্ভোগ। এতে সময়ের অপচয়, আর্থিক ক্ষতি, এমনকি জরুরি রোগী পরিবহনও ব্যাহত হয়।” রাজনৈতিক দলগুলোকে জনদুর্ভোগ এড়াতে বিকল্প কর্মসূচি নিতে অনুরোধ করা হলেও বড় দলগুলোর কর্মসূচি ঠেকানো সম্ভব হয় না বলেও জানান তিনি।
জুলাই জাতীয় সনদের সংবিধান সম্পর্কিত প্রস্তাবগুলো সংবিধান আদেশের মাধ্যমে বাস্তবায়নের চূড়ান্ত সুপারিশ দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা। আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনের দিন গণভোটের মাধ্যমে জনগণের বৈধতা নেওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন তারা।
গতকাল বুধবার ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে জুলাই সনদ বাস্তবায়ন পদ্ধতির উপায় নির্ধারণে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে হওয়া তৃতীয় ধাপের সংলাপের তৃতীয় দিনে এটি উত্থাপন করে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন।
কমিশন গত রোববার বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে বৈঠক করে। সেখানে তারা জুলাই ঘোষণাপত্রের ২২ ধারা অনুযায়ী সংবিধান আদেশের মাধ্যমে জুলাই সনদের সংবিধান সম্পর্কিত বিষয়গুলো বাস্তবায়ন করতে বলে।
বিশেষজ্ঞদের প্রস্তাবে বলা হয়েছে, অন্তর্বর্তীকালীন সরকার জুলাই সনদ ২০২৫ এ মূল সংস্কারগুলো অন্তর্ভুক্ত করে জুলাই ঘোষণাপত্রের ২২ অনুচ্ছেদের ক্ষমতাবলে একটি ‘সংবিধান আদেশ’ (কনস্টিটিউশনাল অর্ডার) জারি করতে পারে। ওই সংবিধান আদেশ তাৎক্ষণিকভাবে কার্যকর হবে।
এ বিষয়ে বিশেষজ্ঞরা আরও বলেন, সংবিধান আদেশকে একটি গণভোটে উপস্থাপন করা যেতে পারে, যা আগামী সাধারণ নির্বাচনের একই দিনে অনুষ্ঠিত হবে। সংবিধান আদেশে গণভোটের বিধানও অন্তর্ভুক্ত করা যেতে পারে। যদি সংবিধান আদেশ জনগণের অনুমোদন পায় গণভোটের মাধ্যমে, তবে তা প্রণয়নের তারিখ থেকেই বৈধ বলে গণ্য হবে।
উল্লেখ্য, বিশেষজ্ঞ প্যানেল একাধিক বৈঠকে বিভিন্ন ধরনের বিকল্প বিবেচনা করে প্রাথমিক পর্যায়ে পাঁচ পদ্ধতিতে বাস্তবায়নের জন্যে সুপারিশ করে। এগুলো হচ্ছে: অধ্যাদেশ, নির্বাহী আদেশ, গণভোট, বিশেষ সাংবিধানিক আদেশ এবং ১০৬ অনুচ্ছেদের মাধ্যমে সুপ্রিম কোর্টের মতামত চাওয়া।
পরবর্তীতে আরও বিস্তারিত আলোচনার পরিপ্রেক্ষিতে ‘জুলাই জাতীয় সনদ ২০২৫-এ অন্তর্ভুক্ত হওয়া বিষয়গুলো (যার মধ্যে ভিন্নমত বা নোট অব ডিসেন্ট আছে) সেগুলো চারভাবে বাস্তবায়নের জন্যে পরামর্শ দিয়েছেন আলোচকরা। এগুলো হচ্ছে: অধ্যাদেশ, নির্বাহী আদেশ, গণভোট এবং বিশেষ সাংবিধানিক আদেশ।
এক মাসের মধ্যেই বাস্তবায়ন শুরুর আশা আলী রীয়াজের
এক মাসের মধ্যে জুলাই সনদ প্রকাশের পাশাপাশি বাস্তবায়ন প্রক্রিয়ায় শুরু করার আশা প্রকাশ করেছেন জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহসভাপতি আলী রীয়াজ। গতকাল বুধবার দুপুরে ফরেন সার্ভিস একাডেমির মিলনায়তনে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে বৈঠকের স্বাগত বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
আলী রীয়াজ বলেন, ‘কমিশনের মেয়াদ এক মাস বৃদ্ধি করা হয়েছে। আমরা কোনো অবস্থাতেই এক মাস সময় নিয়ে এই আলোচনা অব্যাহত রাখতে উৎসাহী নই। আমরা মনে করি না যে আগামী এক মাস ধরে এ বিষয়ে আমাদের আলোচনা করতে হবে। আমরা খুব দ্রুত একটা ঐকমত্যের জায়গায় উপনীত হতে পারব।’
১৫ ফেব্রুয়ারি থেকে কাজ শুরু করা এ কমিশনের মেয়াদ ছিল ১৫ অগাস্ট পর্যন্ত। এরপর প্রথমবার এক মাস সময় বাড়িয়ে ১৫ সেপ্টেম্বর করা হয়। গত সোমবার দ্বিতীয় দফা মেয়াদ বাড়ানো হয় আরও এক মাস।
সময় বাড়ানোর কারণ ব্যাখ্যা করে তিনি বলেন, ‘যেকোনো কার্যালয় যদি প্রায় এক বছর ধরে অব্যাহত থাকে, সেটা গুটিয়ে তুলতেও খানিকটা সময় লাগে। আমরা যেন মেয়াদের মধ্যেই সেটা গুটিয়ে তুলতে পারি, সেটাও সরকারের পক্ষ থেকে বিবেচনা করা হয়েছে। সেই পরিস্থিতিতেই আমরা এখানে আজকে (বুধবার) উপস্থিত হয়েছি।’
এতদিনের আলোচনায় রাজনৈতিক দলগুলো মোট ৮৪টি সংস্কার প্রস্তাবের বিষয়ে (নোট অব ডিসেন্টসহ) একমত হলেও বাস্তবায়ন প্রক্রিয়া নিয়ে স্পষ্ট মতবিরোধ রয়েছে রয়েছে এনসিপি, জামায়াত এবং বিএনপির মধ্যে।
চলতি বছর জুন থেকে আগস্ট পর্যন্ত বাংলাদেশসহ বিশ্বের বহু দেশে অস্বাভাবিক তাপপ্রবাহে কোটি কোটি মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এর মধ্যে বাংলাদেশ অন্যতম ক্ষতিগ্রস্ত দেশ। শুধু বাংলাদেশেই ৬ কোটি মানুষ (৫৭ মিলিয়ন) এক মাসেরও বেশি সময় ধরে ‘ঝুঁকিপূর্ণ তাপমাত্রার মুখোমুখি হয়েছে। গতকাল বুধবার আন্তর্জাতিক গবেষণা সংস্থা ক্লাইমেট সেন্ট্রালের প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে এ তথ্য ওঠে এসেছে।
প্রতিবেদন অনুযায়ী, জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে বাংলাদেশে ৩০ মিলিয়ন মানুষ অতিরিক্ত ৩০ দিন পর্যন্ত চরম গরম সহ্য করেছেন। বিশ্বব্যাপী ‘ঝুঁকিপূর্ণ তাপমাত্রায় ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকায় বাংলাদেশ রয়েছে দশম স্থানে।
রাজধানী ঢাকা বিশ্বের মেগাসিটিগুলোর মধ্যে দশম স্থানে, যেখানে ৫২ দিন তাপমাত্রা জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে দ্বিগুণ হারে সম্ভাব্য হয়ে উঠেছে। এর মধ্যে ২৩ দিন ছিল স্বাস্থ্য ঝুঁকিপূর্ণ, যার মধ্যে ১৫ দিন সরাসরি জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে।
ঢাকায় ৫২ দিন তাপমাত্রা দ্বিগুণ সম্ভাবনাময়, ২৩ দিন ঝুঁকিপূর্ণ গরম, যার ১৫ দিন জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে। চট্টগ্রামে দেশে সর্বোচ্চ ৫৯ দিন জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব (CSI 2+) দেখা গেছে। খুলনা, রাজশাহী ও গাজীপুরে প্রত্যেক শহরেই দ্বিঅঙ্কের সংখ্যায় ঝুঁকিপূর্ণ গরমের দিন বৃদ্ধি পেয়েছে।
এই গ্রীষ্মে প্রতিদিন বিশ্বের প্রতি ৫ জন মানুষের একজন, অর্থাৎ ১৮০ কোটির বেশি মানুষ, তাপপ্রবাহে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। এর মধ্যে প্রায় ৯৫৫ মিলিয়ন মানুষ ৩০ দিনের বেশি সময় ঝুঁকিপূর্ণ তাপমাত্রা সহ্য করেছেন।
মোট ১৮৩টি দেশে কমপক্ষে এক মাসের মতো সময় ধরে এমন তাপমাত্রা দেখা গেছে, যা জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে দ্বিগুণ সম্ভাব্য ছিল। ইউরোপ ও এশিয়ায় এই গরম ছিল সবচেয়ে অস্বাভাবিক।
ক্লাইমেট সেন্ট্রালের ভাইস প্রেসিডেন্ট ড. ক্রিস্টিনা ডাহল বলেন, ‘এই বিশ্লেষণ প্রমাণ করে জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব এখনই দেখা দিচ্ছে। এটি ভবিষ্যতের হুমকি নয়, বর্তমান বাস্তবতা।’
তিনি আরও বলেন, ‘অস্বাভাবিক গরম এখনই মানুষের স্বাস্থ্য, অর্থনীতি ও পরিবেশকে ক্ষতিগ্রস্ত করছে। কার্বন নিঃসরণ কমাতে বিলম্ব হলে ক্ষতির মাত্রা আরও বাড়বে।’
রিপোর্টে তাপপ্রবাহের বৈশ্বিক অবস্থা সম্পর্কে বলা হয়েছে, এই মৌসুমে প্রতিদিন বিশ্বের প্রতি ৫ জন মানুষের ১ জন বা অন্তত ১.৮ বিলিয়ন মানুষ- জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে তীব্র প্রভাবিত তাপমাত্রার মুখোমুখি হয়েছে। প্রায় ৯৫৫ মিলিয়ন মানুষ অতিরিক্ত ৩০ দিনেরও বেশি ঝুঁকিপূর্ণ গরম সহ্য করেছে।
মোট ১৮৩টি দেশের মানুষ অন্তত ৩০ দিন এমন তাপমাত্রার সম্মুখীন হয়েছে, যা জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে অন্তত দ্বিগুণ সম্ভাবনাময় ছিল। ইউরোপ ও এশিয়ায় সবচেয়ে অস্বাভাবিক গরম রেকর্ড করা হয়েছে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা না থাকলে এবং তাপপ্রবাহের মতো জলবায়ু সংকটে প্রস্তুতি না থাকলে ভবিষ্যতে জনস্বাস্থ্য, কৃষি ও অর্থনীতি আরও বিপর্যয়ের মুখে পড়বে।
মন্তব্য