বাংলাদেশের ইতিহাসে সফলতম উইকেটকিপার কে, এই প্রশ্নের জবাব খুঁজতে গবেষণা করতে হবে না। তিনি মুশফিকুর রহিমই।
আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে উইকেটকিপার হিসেবে ৩৮৮ ইনিংস খেলেছেন মুশফিক, তাতে তার মোট ডিসমিসাল ৪০৬টি। এর মধ্যে ৩১৬টি ক্যাচ ও ৯০টি স্ট্যাম্পিং। ওয়ানডেতে ২৩৪টি ডিসমিসাল রয়েছে তার, এতে ১৮৮টি ক্যাচ ও ৪৬ স্ট্যাম্পিং। টেস্টে ক্যাচ ও স্ট্যাম্পিং যথাক্রমে ১০৬ ও ১৫টি, টি-টোয়েন্টিতে ৬২ ও ৩৩টি।
বাংলাদেশের ইতিহাসে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ডিসমিসাল খালেদ মাসুদের, কিন্তু ২১৩টি ডিসমিসাল নিয়ে তিনি মুশফিক থেকে পিছিয়ে আছেন বিরাট ব্যবধানে।
তাই, বাংলাদেশের ইতিহাসের সফলতম উইকেটকিপার কে, এই প্রশ্ন নিয়ে কোনো রকম সন্দেহ নেই। কিন্তু প্রশ্ন আসে, মুশফিক কী আদৌ বাংলাদেশ দলের সেরা উইকেটকিপার?
সেরা এবং সফলতম- এই দুটির মধ্যে পার্থক্যের প্রশ্নটা এ কারণেই যে, কেউ সফল হলেই তিনি সেরা হবেন এমনটি নয়। উইকেটকিপিংয়ের সঙ্গে ব্যাটিং মিলিয়ে যে উইকেটকিপার-ব্যাটসম্যান, তাতে মুশফিক সফলতম এবং সেরাও। কিন্তু স্রেফ উইকেটকিপিংয়ের কৌশলের বিচারে মুশফিকই সেরা কি না, তা নিয়ে নানা সময়ে উঠেছে প্রশ্ন।
নানা সময়ের এই প্রশ্নগুলো সামনে আসার কারণ মুশফিক নিজেই। মুশফিক সহজ সুযোগ নিতে গিয়ে গুবলেট পাকিয়ে ফেলেছেন, এমন দৃশ্য নিয়মিতই আসছে বাংলাদেশ সমর্থকদের সামনে।
২০১৬ সাল পর্যন্ত এক হিসাবে দেখা যায়, টেস্টে মুশফিকুর রহিম তার পাওয়া সুযোগগুলোর মধ্যে মিস করেছেন ৩২ শতাংশ! তার সমসাময়িক উইকেটকিপারদের মধ্যে পাকিস্তানের সরফরাজ আহমেদ মিস করেছেন ২১ শতাংশ, বিজে ওয়াটলিং মাত্র ১১ শতাংশ।
২০১৬-এর পরও বেশ কিছু সাধারণ সুযোগ হাতছাড়া করেছেন মুশফিক। শেষ পর্যন্ত অবশ্য টেস্টে উইকেটকিপিং ছাড়েন ২০১৯ সালে, আফগানিস্তানের বিপক্ষে টেস্ট হারের পর। তার পর দায়িত্ব নেন লিটন দাস।
সেই লিটন আছেন ওয়ানডে দলেও, নিয়মিত মুখ হিসেবেই। কিন্তু লিটন সুযোগ পাচ্ছেন না উইকেটকিপার হিসেবে। কেন? এ প্রশ্নের জবাবে বাংলাদেশ হেড কোচ রাসেল ডমিঙ্গো বলেছিলেন, মুশফিকের তুলনায় লিটন ভালো ফিল্ডার হওয়ায়ই এমন সিদ্ধান্ত। কিন্তু কিপিংয়ে কি এগিয়ে মুশফিক?
এমন প্রশ্নের জবাবে বাংলাদেশ দলের সাবেক অধিনায়ক ও কিংবদন্তি উইকেটকিপার খালেদ মাসুদ বলেন, মুশফিক ভালো কিপার হলেও সেরার বিচারে আসবেন না। সে জায়গা নুরুল হাসান সোহান এবং লিটনের জন্যই বরাদ্দ।
‘মুশফিক ভালো কিপার। কিন্তু সে বাংলাদেশের সেরা না। সেরা কিপার বললে বলব সোহান এবং লিটন’, বলেন তিনি।
মুশফিক ভুল করছেন নিয়মিতই। ২০১৯ বিশ্বকাপে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে তামিম ইকবালের থ্রো থেকে তাদের অধিনায়ক কেইন উইলিয়ামসনকে আউট করার সুবর্ণ সুযোগ ছিল, কিন্তু আগেই হাত দিয়ে স্ট্যাম্প ভেঙে দিয়ে তা নষ্ট করেন মুশফিক। সেই সুযোগ পেয়ে রস টেইলরকে নিয়ে নিউজিল্যান্ডের জয়ের ভিত গড়ে দেন উইলিয়ামসন। অথচ সেই ম্যাচ জিততে পারলে বাংলাদেশ বিশ্বকাপ শুরু করতো টানা দুই জয় দিয়ে!
নিউজিল্যান্ডের মাটিতে শুক্রবার শেষ হওয়া ওয়ানডে সিরিজেও একের পর এক ভুল করেছেন মুশফিক। দ্বিতীয় ওয়ানডেতে ৭২ করা ডেভন কনওয়ের বিদায়ের পর সুযোগ ছিল চাপ বাড়ানোর। সুযোগ তৈরিও করেছিলেন তাসকিন আহমেদ, জিমি নিশামকে বাধ্য করেছিলেন উইকেটের পেছনে ক্যাচ দিতে। কিন্তু সেই ক্যাচ ফেলে দেন মুশফিক। নিশামের সঙ্গে জুটি গড়ে দলকে জয়ের দ্বারপ্রান্তে নিয়ে যান নিউজিল্যান্ড অধিনায়ক টম ল্যাথাম।
তৃতীয় ম্যাচে ভুলের সংখ্যা একাধিক। পাওয়ারপ্লেতেই তাসকিনের বলে হেনরি নিকোলসের ক্যাচ ছাড়লেন, যে ক্যাচ ধরার চেয়ে হয়তো ছাড়াটাই কঠিন। বল দুয়েকের মধ্যে অবশ্য তাসকিনের বলেই গালিতে ক্যাচ দিয়ে ফিরলেন নিকোলস। ক্যাচ নিলেন কে? লিটন!
নিউজিল্যান্ড ইনিংসের শেষ বলে ড্যারেল মিচেল দুই রান নেওয়ার চেষ্টা করছিলেন, কিন্তু যখন বাউন্ডারি থেকে বল চলে এসেছে মুশফিকের কাছে, মিচেল ক্রিজ থেকে অনেক দূরে। দুই হাতের বদলে এক হাত দিয়ে বল ধরতে গেলেন মুশফিক, তাতে বল ধরতে পারলেন না। মিচেলও তাতে দুই রান নিয়ে তুলে নেন নিজের সেঞ্চুরি।
মুশফিকের আত্মবিশ্বাসে ঘাটতিকেই এমন ভুলের কারণ হিসেবে দেখছেন খালেদ মাসুদ। তিনি বলেন, মুশফিকের শরীর নড়ছে না ঠিকভাবে।
‘সাম্প্রতিক সময়ে হয়ত তার আত্মবিশ্বাসে ঘাটতি আছে। তার এই সময়টা ভালো যাচ্ছে না। ওর কিপিংয়ে সমস্যা হচ্ছে, ওর শরীর বলের লাইনে যাচ্ছে না। সে নিজের জায়গা থেকেই ডাইভ দিচ্ছে। ফার্স্ট স্লিপের কাছে যে বলটা যাচ্ছে, সে নিজের জায়গা থেকে ডাইভ দিচ্ছে। ডাইভ দিয়ে হয়তো মাঝেমধ্যে ধরে ফেলবে, কিন্তু তার চেয়েও ভালো হয় যদি এক পা সরে এসে বলের লাইনে যাওয়া যায়। তাহলে বলটা খুব কাছে পাওয়া যায়, ক্যাচ ধরাটা সহজ হয়ে যায়। আমার যা মনে হয়, যখন আত্মবিশ্বাস হারিয়ে যায়, তখন এ রকম হতে থাকে, শরীর নড়ে না’, বলেন বাংলাদেশের দলের সাবেক উইকেটকিপার খালেদ মাসুদ।
এর সমাধান হিসেবে তিনি দেখছেন লিটনকে কিপিং এবং মুশফিককে একটু স্বস্তি দেয়া।
খালেদ মাসুদ বলেন, ‘লিটনকে কিপিংয়ে দিয়ে মুশফিককে ফিল্ডিংয়ে একটু রিল্যাক্স করানো উচিত। কারণ কিপিং এমন একটা ব্যাপার, এই যে মানসিকভাবে একটু পর্যুদস্ত হয়েছেন, তা থেকে ফিরতে বেশ সময় লাগে। যতক্ষণ পর্যন্ত না ও ভালো ক্যাচ বা স্ট্যাম্পিং করবে, ওর এখান থেকে ফেরাটা খুব কঠিন হয়ে যাবে। তার সময় লাগবে। এখন তার কিপিংয়ের আশায় কী বসে থাকবে দল? সেটা অনেক দেরি হয়ে যাবে।’
বাংলাদেশ দলের সাবেক এই অধিনায়ক বলেন, শেষ পর্যন্ত বিষয়টি অধিনায়ক ও ম্যানেজমেন্টের সিদ্ধান্ত। তিনি বলেন, ‘এটা (কে কিপিং করবে) কোচ এবং অধিনায়কের মত। অধিনায়ককে তার দলের স্বার্থে সিদ্ধান্ত নিতে হবে। তাকে সিদ্ধান্ত নিতে হবে দলের পারফরম্যান্সের জন্য কোন খেলোয়াড়ের কাছে থেকে কী ধরনের পারফরম্যান্স আশা করছেন তিনি।’
আপাতত নিউজিল্যান্ডে ওয়ানডে সিরিজ শেষ করে বাংলাদেশের অপেক্ষা টি-টোয়েন্টি সিরিজের। সেখানেও কিপার হিসেবে দেখা যাওয়ার কথা মুশফিককেই। টেস্টে উইকেটকিপিং ছাড়লেও রঙিন পোশাকে এখনও গ্লাভসজোড়া তার হাতেই। ৩৩ বছর বয়সী মুশফিক আর মিস করবেন না, এমনটিই প্রত্যাশা রাখবেন সমর্থকরা!
আরও পড়ুন:জয়পুরহাটের ক্ষেতলালে একটি পুকুরে মাছের খাবার হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে অস্বাস্থ্যকর মরা মুরগির বাচ্চা ও পঁচা ডিম। পুকুরের মাছকে সস্তা খাবার দিতে ব্যবহার করা হচ্ছে এসব উপায়। এতে দুর্গন্ধে দূষিত হচ্ছে আশপাশের পরিবেশ। দিনের পর দিন ভোগান্তিতে পড়ছেন স্থানীয় গ্রামবাসীরা। স্বাস্থ্যবিভাগ বলছে, মানবদেহের স্বাস্থ্যের জন্য যা মারাত্মক হুমকি। এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার কথা জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ।
জানা গেছে, জয়পুরহাটের ক্ষেতলাল উপজেলার পশ্চিম দূর্গাপুর গ্রামের এমদাদুল হক তার পুকুরে বিভিন্ন জাতের মাছের চাষ করেছেন। সেই পুকুরটি পরিচালনা করেন তার ছেলে আবু সালেক। সেই পুকুরের মাছকে সাধারণ খাবারের বদলে খাওয়ানো হচ্ছে জীবন্ত, মরা মুরগির বাচ্চা ও নষ্ট-পঁচা ডিম। জেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে এসব সংগ্রহ করে পুকুর পাড়ে নিয়ে এসে রাখা হয়। এরপর সেগুলো একটি ব্রেন্ডার মেশিনে সেদ্ধ করে পুকুরে মাছকে খাবার হিসেবে দেওয়া হয়। এতে পুকুরের আশেপাশে ছড়াচ্ছে তীব্র দুর্গন্ধ। দূষিত হচ্ছে পরিবেশ। এই দৃশ্য যেন এখন নিত্যদিনের সঙ্গী এই এলাকার মানুষ।
তাদের অভিযোগ, এ বিষয়ে পুকুরের মালিককে বারবার বলেও কোন লাভ হয়নি। উল্টো ভয়ভীতি ও হুমকি দেওয়া হয় তাদের। এদিকে পঁচা ডিম ও মুরগির বাচ্চার অভিযোগ পুকুরের কর্মচারিরা স্বীকার করলেও অস্বীকার করছেন পুকুর মালিক।
পশ্চিম দূর্গাপুর গ্রামের মোহন কুমার বলেন, হ্যাচারী থেকে নষ্ট ও পঁচা ডিম নিয়ে এসে মাছকে খাওয়ায়। এতে করে পুকুরের পানি খারাপ হয়ে যাচ্ছে। গোসল করা যায়না। প্রচুর দুর্গন্ধ হয়। নিষেধ করলে উল্টো হুমকি দেওয়া হয়।
স্থানীয় বাসিন্দা আরিফ হোসেন বলেন, পঁচা ডিম ও মুরগির বাচ্চা নিয়ে এসে পুকুরের পাড়ে রাখা হয়। তখন দুর্গন্ধ ছড়ায়। এছাড়া এরপর যখন আগুনে জ্বাল দেওয়া হয় তখন প্রচুর দুর্গন্ধ ছড়ায়। বাড়িতে থাকায় মুশকিল হয়ে পড়ে। আমরা অনেক বার নিষেধ করেছি, কিন্তু আমাদের কথা শোনেনা।
স্থানীয় আরেক বাসিন্দা রিফাত ইসলাম বলেন, দিনের পর দিন আমরা এই দুর্গন্ধে ভোগান্তির শিকার হচ্ছি। এই পঁচা ডিম আমাদের এখানকার পরিবেশ দূষণ করছে। এর থেকে আমরা মুক্তি চাই। এজন্য কর্তৃপক্ষকে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য অনুরোধ করছি।
পুকুরের কর্মচারী বিশ্বনাথ চন্দ্র বলেন, আমরা জামালগঞ্জসহ বিভিন্ন এলাকার হ্যাচারী থেকে পঁচা ডিম নিয়ে আসি। সেই ডিমের সাথে কিছু বাচ্চাও থাকে। তারপর সেগুলো ব্রেন্ডারে সেদ্ধ করে মাছকে খাওয়াই।
পুকুরের মালিক আবু সালেক বলেন, এই পুকুরটি আমি পরিচালনা করি। এখানে রুই, কাতলা, পাঙাসসহ বিভিন্ন মাছ চাষ করেছি। গ্রামবাসীরা যে মরা মুরগি বা পঁচা ডিমের অভিযোগ করছে তা সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন।
জয়পুরহাট জেলা সিভিল সার্জন ডা. মো. আল মামুন বলেন, আমাদের পুষ্টির বিশাল একটা অংশ পূরণ করে মাছ। যদি মাছকে অস্বাস্থ্যকর কোন খাবার দেওয়া হয় তাহলে সেই মাছ খেলে মানবদেহে জীবাণু ও বিষাক্ত উপাদান প্রবেশের সম্ভাবনা থাকে। এটা মানবদেহের স্বাস্থ্যের জন্য মারাত্মক হুমকি। এছাড়া দুর্গন্ধে মানুষের বিভিন্ন রোগের উৎপত্তি হতে পারে।
পরিবেশ অধিদপ্তরের জেলা কার্যালয়ের সহকারি পরিচালক মোহাম্মদ ফারুক হোসেন বলেন, কোথাও পরিবেশ দূষণ সংস্ক্রান্ত অভিযোগ প্রমাণিত হলে বাংলাদেশ পরিবেশ সংরক্ষণ আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
জয়পুরহাট জেলা মৎস্য কর্মকর্তা মাসুদ রানা বলেন, মাছ চাষের ক্ষেত্রে কোন চাষী যদি সরকারি বিধি বিধান অনুসরণ না করে বা অপদ্রব্য ব্যবহার করে, সেক্ষেত্রে অভিযুক্তের সর্বোচ্চ ২ বছরের কারাদন্ড অথবা ৮ লাখ টাকা পর্যন্ত জরিমানা বা উভয় দন্ডে দন্ডিত হতে পারেন। কোন মাছ চাষীর বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত হলে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেছেন, সংখ্যানুপাতিক (পিআর) নির্বাচন পদ্ধতির মতো বড় পরিবর্তন জনগণের মতামত নিয়ে সংসদের মাধ্যমে পাশ করতে হবে। সংসদ ছাড়া এই পরিবর্তন কেউ করতে পারবে না।
বুধবার রাজধানীর গুলশানে বিএনপির চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে ‘লিয়াজোঁ কমিটির বৈঠক শেষে তিনি সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন।
এক প্রশ্নের জবাবে আমীর খসরু বলেন, ‘সংখ্যানুপাতিক পদ্ধতিতে নির্বাচন পরিবর্তনের কথা কথা বলা হচ্ছে, তবে এটা আগামী সংসদ ছাড়া কেউ করতে পারবে না। আমরা যখন প্রেসিডেন্সিয়াল পদ্ধতি থেকে সংসদীয় পদ্ধতিতে আসি, তখন সব দলগুলো ঐকমত্য হয়ে, সংসদে সেটা পাস করতে হয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘এই পদ্ধতির বিষয়ে কোন দলের ইচ্ছা থাকলে তাদের মতামতের উপর শ্রদ্ধা রেখেই বলছি জনগণের কাছ থেকে তারা যেন সেই ম্যান্ডেড নিয়ে সংসদে আসে। যে কোন বিষয়ে মৌলিক পরিবর্তনের ক্ষেত্রে জনগণের কাছে যেতে হবে। আগামী নির্বাচনে সেটা সংসদে নিয়ে, সংসদের মাধ্যমে পাশ করতে হবে। এই পর্যায়ে এটা কোন আলোচনার বিষয় হতে পারে না।’
সংস্কারের বিষয়ে ঐকমত্য নিয়ে বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘বিএনপি কোথায় কোথায় ঐকমত্য হয়েছে, ইতিমধ্যে সবকিছু বলা হয়েছে। অনেকগুলো তো বিএনপি প্রস্তাব, সংসদ দ্বিকক্ষ বিশিষ্ট, দুই বারের বেশি প্রধানমন্ত্রী থাকবে না এসব বিএনপি'রই প্রস্তাব। সুতরাং ঐকমত্য হওয়া নয় কোথায়? তবে একটা কথা মনে রাখতে হবে সব বিষয়ে ঐকমত্য হবে না। ’
তিনি বলেন, ‘আমরা এটা বাকশাল করতে চাচ্ছি না। এটা বাকশাল না। সব বিষয়ে ঐকমত্য হবে না। যে বিষয়গুলোতে ঐকমত্য হবে, সেগুলো এখন ঐক্যমত্যের মাধ্যমে, এর বাইরে যেগুলো থাকবে প্রত্যেকটি দলকে জনগণের কাছে গিয়ে তাদের মতামতের মাধ্যমে করতে হবে।’
লিয়াজোঁ কমিটির বৈঠক সম্পর্কে আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, জুলাই আগস্ট এর আন্দোলন তো দেড় দুই মাস ছিল, তার আগে থেকে বছরের পর বছর যারা রাস্তায় ছিল শেখ হাসিনা স্বৈরাচারের বিরুদ্ধে, তাদের সঙ্গে আমরা কথাবার্তা বলছি। কারণ এই ঐক্যটা আমাদের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এবং এটা শুধু নির্বাচন বলে কোন কথা নয়, আমাদের ৩১ দফার উপরে যে ঐকমত্য সংস্কারের বিষয়ে যে ঐকমত্য, এগুলো আমরা কীভাবে আগামী দিনে বাস্তবায়ন করব নির্বাচনের পরে জনগণ যদি আমাদেরকে রায় দেয়, সবাই মিলে এটা বাস্তবায়ন করতে হবে। ’
তিনি বলেন, ইতোমধ্যে নির্বাচনের কর্মকাণ্ড শুরু হয়ে গেছে। ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধে যে নির্বাচনের কথা বলা হয়েছে সেটা নিয়ে আলোচনা হয়েছে।
বৈঠকে আরও উপস্থিত ছিলেন, জাতীয় পার্টির (জেপি) চেয়ারম্যান ব্যারিস্টার আন্দালিব রহমান পার্থ এবং বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান বরকত উল্লাহ বুলু।
ফরিদপুরের সদর উপজেলার চরমাধবদিয়া ইউনিয়নের আছিরউদ্দিন মুন্সির ডাঙ্গী গ্রামে পরকীয়ার জের ধরে প্রবাসী স্বামী আলমাস খান কে (৪০) হত্যা করার অভিয়োগ উঠেছে খোদ স্ত্রী হোসনেয়ারা বেগম (৩৩) এর বিরুদ্ধে। গত শনিবার দিবাগত রাতে স্বামীকে হত্যার অভিযোগে স্ত্রী হোসনেয়ারা বেগমকে আটক করেছে পুলিশ । ঘটনার পর থেকে আরেক আসামী পরকীয়া প্রেমিক আলী শেখ (৫৫) রয়েছে আত্ম গোপনে ।এ নিয়ে নিহতের পিতা হাতেম খান বাদী হয়ে ফরিদপুর কোতয়ালী থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেছেন। এদিকে হত্যার সঙ্গে জড়ীত পরকীয়া প্রেমিক আলী শেখকে আটকসহ তাদের ফাঁসির দাবিতে বুধবার (০২ জুলাই) মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিল করেছে এলাকাবাসী।
এ সময় নিহতের পিতা হাতেম খান, বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী প্রবাসীদল ফরিদপুর জেলা শাখার সভাপতি মির্জা প্রিন্স আলী সহ অন্যরা বক্তব্য রাখেন ।
তারা বলেন, পুলিশ ঘটনার সাথে জড়ীত থাকার সন্দেহে স্ত্রী হোসনেয়ারা বেগম কেআটক করলেও কথিত পরকীয়া প্রেমিক আলী শেখকে এখনো গ্রেফতার করতে পারেনি। অতি দ্রত আলী শেখকে গ্রেফতার করে তাদের ফাঁসিতে ঝোলানোর দাবি জানান মানববন্ধন থেকে।
পরে এলাকার কয়েকশত নারীপুরুষ বিচারের দাবিতে একটি বিক্ষোভ মিছিল বের করে এলাকা প্রদক্ষিণ করে।
ফরিদপুরের কোতয়ালী থানার উপ-পরিদর্শক মোঃ আসাদুজ্জামান তালুকদার জানিয়েছেন, ঘটনার সঙ্গে সঙ্গেই মামলার প্রধান আসামি হোসনেয়ারা বেগমকে আটক করা হয়েছে। এছাড়াও অন্য আসামি আলী শেখকে ধরতে বিভিন্ন জায়গায় অভিযান চলছে। হোসনেয়ারা বেগমের রিমান্ডের জন্য আবেদন করা হয়েছে । এই ঘটনার ব্যাপারে পুলিশ তৎপর রয়েছে বলেও তিনি জানিয়েছেন।
ঢাকার কেরানীগঞ্জ উপজেলার তারানগর ইউনিয়নের কাঠালতলী গ্রামে একটি ডুপ্লেক্স বাড়িতে সংঘবদ্ধ ডাকাতির ঘটনা ঘটেছে। বুধবার (০২ জুলাই) গভীর রাতে এ ঘটনা ঘটেছে।
জানা যায়, আব্দুল আজিজের মালিকানাধীন ডুপ্লেক্স বাড়িতে ছাদের মাধ্যমে ৬-৮ জনের একটি ডাকাতদল প্রবেশ করে। তারা ঘরের সদস্যদের হাত-পা, চোখ-মুখ বেঁধে ফেলে। এসময় আগ্নেয়াস্ত্রের ভয় দেখিয়ে তারা বাড়ির চাবি আদায় করে এবং ঘরের ভেতরে থাকা স্বর্ণালঙ্কার ও নগদ অর্থ লুট করে নেয়।
ডাকাত দল প্রায় ৬.৫ ভরি স্বর্ণালঙ্কার, ৬ লাখ ৬৮ হাজার ৫ টাকা নগদ অর্থ এবং একটি সনি ব্র্যান্ডের ক্যামেরা নিয়ে যায়। তবে সৌভাগ্যবশত এই ঘটনায় বাড়ির কোনো সদস্য শারীরিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়নি।
ভুক্তভোগী ও বাড়ির মালিক আব্দুল আজিজ ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, রাত আনুমানিক ৩টা ২০ মিনিটের দিকে ছাদের দিক থেকে কয়েকজন লোক ঘরে ঢুকে পড়ে। মুহূর্তেই আমাদের সবাইকে হাত-পা বেঁধে ফেল পরে আগ্নেয়াস্ত্রের ভয় দেখিয়ে ঘরের চাবি নিয়ে যায়। তারা ঘর তছনছ করে স্বর্ণালঙ্কার ও নগদ অর্থ নিয়ে যায়। আল্লাহর রহমতে তারা আমাদের কোনো শারীরিক ক্ষতি করেনি। তবে পরিবারের সবাই এখন আতঙ্কে আছে।
ঘটনার খবর পেয়ে সকালে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন কেরাণীগঞ্জ সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলম, ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মনিরুল হক ডাবলু, সিআইডি এবং অন্যান্য গোয়েন্দা সংস্থার কর্মকর্তারা। তারা ঘটনাস্থল থেকে বিভিন্ন আলামত সংগ্রহ করে তদন্ত শুরু করেছেন।
কেরানীগঞ্জ মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মনিরুল হক ডাবলু জানান, অপরাধীদের শনাক্ত করতে আশপাশের সিসিটিভি ফুটেজ পর্যালোচনা এবং তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় অনুসন্ধান চলছে। খুব শিগগিরই ডাকাত চক্রকে আইনের আওতায় আনা সম্ভব হবে।
ময়মনসিংহের পাগলায় ব্রহ্মপুত্র নদে নৌকাডুবির ২২ ঘন্টা পর নিখোঁজ দুই শিশু মরদেহ উদ্ধার করেছে নিহতের স্বজনেরা। বুধবার (০২ জুলাই) পাগলা থানার টাংগাব ইউনিয়নের বাঁশিয়া এলাকার ব্রহ্মপুত্র নদ থেকে তাদের মরদেহ দুটি উদ্ধার করা হয়।
নিহত শিশুরা হলো, কিশোরগঞ্জের পাকুন্দিয়া উপজেলার চরআলগী এলাকার বাসিন্দা হাবিব মিয়ার ছেলে আবির (৬) এবং মুমতাজ উদ্দিনের ছেলে জুবায়েদ (৬)। তারা দুজনই বিরুই নদীর পাড় দাখিল মাদ্রাসার শিক্ষার্থী।
জানা গেছে, মঙ্গলবার (০১ জুলাই) সকাল সাড়ে ৯ টার কিশোরগঞ্জের পাকুন্দিয়া উপজেলার চরআলগী এলাকা থেকে ব্রহ্মপুত্র নদ পাড়ি দিয়ে মাদ্রাসায় যেতে ছোট একটি নৌকায় উঠেন ৯ শিক্ষার্থী। ময়মনসিংহের পাগলা থানার দত্তের বাজার সংলগ্ন এলাকায় পৌঁছানোর পূর্বেই ডুবে যায় নৌকাটি। এর মধ্যে ৬ জন সাঁতরে তীরে উঠতে পারলেও ডুবে যায় তিন শিক্ষার্থী। তাদের মধ্যে মঙ্গলবার দুপুরে শাপলা আক্তারের (১৫) মরদেহটি ঘটনাস্থলের খানিকটা দুর থেকে উদ্ধার করে ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরি দল।
পাকুন্দিয়া উপজেলার চরফরাদী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আবদুল মান্নান মরদেহ উদ্ধারের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, ভোরে নিহতের স্বজনরা নৌকা নিয়ে ব্রহ্মপুত্র নদে নিখোঁজ আবির ও জুবায়েদকে খোঁজতে বের হয়। খোঁজাখুজির একপর্যায়ে টাংগাব ইউনিয়নের বাঁশিয়া এলাকায় ব্রক্ষ্মপুত্র নদে দুজনের মরদেহ ভাসতে দেখে। ঘটনাস্থল থেকে প্রায় দুই কিলোমিটার দূর থেকে তাদের মরদেহ দুটি উদ্ধার করা হয় বলেও জানান এই জনপ্রতিনিধি।
চুয়াডাঙ্গা সীমান্তে বিএসএফের গুলিতে এক বাংলাদেশি যুবক নিহত হয়েছেন। বুধবার (০২ জুলাই) দুপুরে দামুড়হুদা উপজেলার ঝাঁঝাডাঙ্গা সীমান্তে ওই ঘটনা ঘটে। নিহত ইব্রাহিম বাবু (৩২) ঝাঁঝাডাঙ্গা গ্রামের নুর ইসলামের ছেলে। ওই ঘটনায় পতাকা বৈঠকের আহ্বান জানিয়েছে বিজিবি।
নিহতের পিতা নুর ইসলাম জানান, দুপুরে আমার ছেলেসহ ৪-৫ জন গরুর ঘাস কাটার জন্য সীমান্তের গালার মাঠে যায়। এ সময় অসাবধনতাবশত সীমান্তের ৭৯ নম্বর মেন পিলার পার হয়ে ভারতে ঢুকে পড়লে সেখানকার ৩২ বিএসএফ হালদারপাড়া ক্যাম্পের সদস্যরা ২ রাউন্ড গুলিবর্ষণ করে। এতে বিদ্ধ হয়ে ঘটনাস্থলেই নিহত হয় বাবু।
চুয়াডাঙ্গা-৬ বিজিবির অধিনায়ক লে. কর্নেল নাজমুল হাসান গুলিবর্ষণের ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে জানান, কয়েকজন স্বর্ণ চোরাকারবারির ওপর বিএসএফ গুলিবর্ষণ করেছে বলে জানা গেছে।
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগর থানার সলিমগঞ্জ পুলিশ ফাঁড়ির পুলিশ অভিযান চালিয়ে মঙ্গলবার (০১ জুলাই) বিকালে শ্রীঘর বাজারের নজরুল ইসলামের দোকানের সন্মুখ থেকে ১৮ কেজি গাঁজা উদ্ধার করে। এ সময় আক্কাছ মিয়া (৩২) ও ছিদ্দিকুর রহমান (২১) নামের দুই মাদক ব্যবসায়িকে গ্রেপ্তার করা হয়।
জানা যায়- সলিমগঞ্জ ফাঁড়ির পুলিশ শ্রীঘর বাজারের চেকপোস্টে দায়িত্ব পালন কালে সন্দেহ জনক একটি সিএনজিকে থামিয়ে তল্লাশি করে। আক্কাছ মিয়া কুমিল্লার ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলার বাঙ্গরা বাজার এলাকার মৃত শহীদ মিয়ার ছেলে। ছিদ্দিকুর রহমান নবীনগর উপজেলার বড়াইল গ্রামের আতিকুর রহমানের ছেলে।
নবীনগর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) শাহিনুর ইসলাম জানান- এ ঘটনায় নবীনগর থানায় মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে মামলা দায়ের করা হয়েছে।
মন্তব্য