নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে তিন ওয়ানডে ও তিন টি-টোয়েন্টি খেলতে এখন ক্রাইস্টচার্চে অবস্থান করছে বাংলাদেশ। সাত দিন কোয়ারেন্টিনে থাকার পর করোনা পরীক্ষায় সবার নেগেটিভ এলে বৃহস্পতিবার অনুশীলন শুরু করেন তারা।
প্রথম দিন অনুশীলনে মূলত ফিল্ডিং নিয়েই কাজ করেছে টাইগাররা। বাংলাদেশ অলরাউন্ডার মোহাম্মদ সাইফুদ্দিন জানান, নিউজিল্যান্ডের আবহাওয়ার সঙ্গে মানিয়ে নিতেই ফিল্ডিং নিয়ে বেশি কাজ করেছেন তারা।
‘আজকে প্র্যাকটিসে সবার আগে আমরা ফিল্ডিংটা নিয়ে কাজ করেছি; শর্ট ক্যাচ এবং হাই ক্যাচ নিয়ে। কারণ, এখানে আবহাওয়া এবং বাতাসের একটা ব্যাপার থাকে, এটা মানিয়ে নেওয়ার জন্য। এরপর আমরা ছোট ছোট সেশনে ব্যাটিং এবং বোলিং করি এবং শেষে একটু ফিটনেস নিয়ে কাজ করি, যেহেতু আমরা সাত দিন খুব বেশি করতে পারিনি’, বলেন ডানহাতি এ পেইসার।
নিউজিল্যান্ডে বাংলাদেশের ইতিহাস ইতিবাচক নয়। নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে তাদের মাটিতে ১৩ ওয়ানডে ও চার টি-টোয়েন্টি মধ্যে সবগুলোই হেরেছে টাইগাররা। সাইফুদ্দিন চান সেটিতে বদল আনতে; চান দেশে কিছু নিয়ে যেতে।
‘প্রত্যাশা অবশ্যই থাকবে। কারণ, ওয়ানডেতে আমরা অনেক ভালো দল। আমরা যদি সবাই ভালো খেলতে পারি, দিনটা যদি আমাদের হয়, অবশ্যই ফলাফল আমাদের পক্ষে কথা বলবে। যেহেতু এর আগে আমাদের প্রাপ্তির খাতা একদমই শূন্য, তো আমাদের চেষ্টা থাকবে এ সিরিজ থেকে কিছু নিয়ে যেন দেশে যেতে পারি’, বলেন এই অলরাউন্ডার।
নিউজিল্যান্ডে এসে ৭ দিন হোটেলে কোয়ারেন্টিনে থাকতে হয়েছে বাংলাদেশ দলকে। সাইফুদ্দিন জানালেন, নতুন অভিজ্ঞতা হলেও মানিয়ে নেয়ার চেষ্টা করেছেন তারা।
তিনি বলেন, ‘প্রথম সাত দিন হোম কোয়ারেন্টিন করার পর আজকে অষ্টম দিনে প্রথম অনুশীলনে গেলাম। প্রথমবারের মতো অভিজ্ঞতা হলো, এ রকম হোম কোয়ারেন্টিন মেইনটেইন করার। স্পোর্টসম্যান হিসেবে সব ধরনের পরিস্থিতিতে নিজেদের মানিয়ে নিতে চেষ্টা করি।’
প্রাথমিক কোয়ারেন্টিন শেষে কুইন্সটাউনে পাঁচ দিনের প্রস্তুতি ক্যাম্প করবে দল। দুই দলের ওয়ানডে সিরিজ শুরু হবে ২০ মার্চ ডানেডিনে।
ক্রাইস্টচার্চ ও ওয়েলিংটনে ২৩ ও ২৬ মার্চ বাকি দুই ওয়ানডের পর হ্যামিল্টনে ২৮ মার্চ প্রথম টি-টোয়েন্টি খেলবে বাংলাদেশ। বাকি দুই টি-টোয়েন্টি হবে নেপিয়ার ও অকল্যান্ডে ৩০ মার্চ ও ১ এপ্রিল।
আরও পড়ুন:এক সপ্তাহের ব্যবধানে রাজধানীর সায়েন্স ল্যাব মোড়ে ঢাকা কলেজ ও ঢাকা সিটি কলেজের শিক্ষার্থীদের মধ্যে ফের ইটপাটকেল নিক্ষেপ ও পালটাপালটি ধাওয়ার ঘটনা ঘটেছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে লাঠিপেটাসহ কাঁদানে গ্যাস ছোড়ে পুলিশ। পরে ঘটনাস্থলে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়। গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে এ ঘটনা ঘটে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
এদিকে এ ঘটনায় আজ বুধবার ও আগামীকাল বৃহস্পতিবার সিটি কলেজ বন্ধ রাখার ঘোষণা দিয়েছে কলেজ কর্তৃপক্ষ।
প্রত্যক্ষদর্শী শিক্ষার্থীরা জানিয়েছেন, প্রথমে ঢাকা কলেজের একদল শিক্ষার্থী সিটি কলেজে গিয়ে হামলা চালায়। এ সময় ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থীরা সিটি কলেজে হামলা চালিয়ে কলেজটির নামফলক খুলে নিয়ে আসে। তবে ঠিক কী কারণে এই হামলা ও ভাঙচুরের ঘটনা তা তাৎক্ষণিকভাবে জানা যায়নি। ধারণা করা হচ্ছে, পূর্ব শত্রুতার জেরে এ ঘটনা ঘটে থাকতে পারে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা আরও জানান, সকাল থেকেই ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থীদের মধ্যে উত্তেজনা চলছিল। পৌনে ১২টার দিকে ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থীরা সিটি কলেজের কাছাকাছি চলে আসে। তখন দুই পক্ষের মধ্যে ইটপাটকেল নিক্ষেপ, পালটাপালটি ধাওয়া হয়। পুলিশকে লাঠিপেটা করে ও কাঁদানে গ্যাস ছুড়ে শিক্ষার্থীদের সরিয়ে দিতে দেখা গেছে।
সিটি কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মোবারক হোসেন বেলা ৩টা ২০ মিনিটের দিকে শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে বক্তব্য দেন। এ সময় তিনি আজ বুধবার ও আগামীকাল বৃহস্পতিবার সিটি কলেজ বন্ধ রাখার ঘোষণা দেন।
ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ শিক্ষার্থীদের বাসায় ফিরে যাওয়ার অনুরোধ জানান । তিনি বলেন, সিটি কলেজের স্থাপনায় যে হামলা হয়েছে, শিক্ষার্থীদের ওপর যে হামলা হয়েছে, সেটির অবশ্যই তদন্ত হওয়া উচিত। এ ঘটনাগুলোর তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়ার অনুরোধ জানান তিনি। মারামারি করে এসব সমস্যার সমাধান হবে না বলেও জানান। তিনি বলেন, ‘এতে সিটি কলেজের স্থাপনার ক্ষতি হবে, শিক্ষার্থীদের ক্ষতি হবে এবং আশপাশের শান্তি-শৃঙ্খলা বিঘ্নিত হবে।’
এদিকে জানা গেছে, এর আগে গতকাল ঢাকা কলেজের এক শিক্ষার্থীকে মারধর করে সিটি কলেজের শিক্ষার্থীরা। এ ঘটনা ঢাকা কলেজের বিভিন্ন ফেসবুক গ্রুপে ছড়িয়ে পড়ে।
এর আগে গত ১৫ এপ্রিল এই দুই কলেজের শিক্ষার্থীদের মধ্যে তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে পালটাপালটি ধাওয়া ও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছিল। এই দুই কলেজের শিক্ষার্থীদের মধ্যে এমন ঘটনা প্রায়ই ঘটছে বলেও জানিয়েছে পুলিশ।
নিউমার্কেট থানার পরিদর্শক (তদন্ত) হাফিজুল ইসলাম বলেন, দুই কলেজের শিক্ষার্থীদের মধ্যে যে উত্তপ্ত পরিস্থিতি ছিল, এখন সেটা আর নেই। শিক্ষার্থীদের সড়ক থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়।
বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ১৯৯৯ সালে দেওয়া সম্মানসূচক ডিগ্রি পুনর্বিবেচনা করছে অস্ট্রেলিয়ার শীর্ষস্থানীয় শিক্ষা প্রতিষ্ঠান অস্ট্রেলিয়ান ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি (এএনইউ)।
প্রতিবেদন বলছে, বাংলাদেশের ক্ষমতাচ্যুত সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে দেওয়া সম্মানসূচক আইন ডিগ্রির বিষয়টি পর্যালোচনা করছে অস্ট্রেলিয়ার শীর্ষস্থানীয় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান অস্ট্রেলিয়ান ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি (এএনইউ)। অর্থাৎ তাকে দেওয়া ডিগ্রিটি বহাল থাকবে কি থাকবে না, তা নিয়ে ভাবছে তারা। হাসিনার বিরুদ্ধে গণহত্যা ও গুমের মতো মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগ ওঠার কারণে এ পদক্ষেপ নিয়েছে এএনইউ কর্তৃপক্ষ।
জানা গেছে, ১৯৯৯ সালে শেখ হাসিনাকে দেওয়া সম্মানসূচক আইন ডিগ্রি নিয়ে বর্তমানে বিশ্ববিদ্যালয়ের অনারারি কমিটি আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছে। তবে তারা এখনই কোনো সিদ্ধান্তে পৌঁছায়নি। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, ডিগ্রি প্রত্যাহারের ব্যাপারে তারা বড় পরিসরের একটি নীতিমালা তৈরির কাজ করছে, যেটির ভিত্তিতে ভবিষ্যতেও সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
বিশ্লেষকদের মতে, এএনইউ যদি সত্যিই শেখ হাসিনার সম্মানসূচক ডিগ্রি প্রত্যাহার করে, তবে তা একটি ঐতিহাসিক সিদ্ধান্ত হবে, যা ভবিষ্যতের রাজনৈতিক ও কূটনৈতিক ক্ষেত্রে গভীর প্রভাব ফেলতে পারে।
এএনইউয়ের এক মুখপাত্র অস্ট্রেলিয়ান অ্যাসোসিয়েট প্রেসকে (এএপি) বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের সাম্প্রতিক ইতিহাসে এমন ডিগ্রি প্রত্যাহারের ঘটনা ঘটেনি এবং এ ধরনের সিদ্ধান্ত নেওয়ার জন্য কোনো সুস্পষ্ট প্রক্রিয়াও বিদ্যমান নেই। এখন আমরা একটি স্পষ্ট ‘প্রত্যাহার নীতি’ তৈরি করছি, যার মাধ্যমে ভবিষ্যতেও সিদ্ধান্ত নেওয়া যাবে।
এএনইউয়ের এ ঘোষণা এমন এক সময়ে এল, যখন বাংলাদেশের দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) এক মামলায় শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হয়েছে। মামলায় তার বিরুদ্ধে ক্ষমতার অপব্যবহার ও দুর্নীতির অভিযোগ আনা হয়েছে। এরই মধ্যে বাংলাদেশ পুলিশ ইন্টারপোলের কাছে ভারতে অবস্থানরত হাসিনার বিরুদ্ধে রেড নোটিশ জারির অনুরোধ জানিয়েছে।
এর আগে, ২০২৪ সালের অক্টোবর মাসে, বাংলাদেশে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল মানবতাবিরোধী অপরাধ ও গণহত্যার অভিযোগে শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করে।
বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের স্বাস্থ্য উপদেষ্টা জানিয়েছেন, শেখ হাসিনার শাসনামলে আন্দোলন দমনে চালানো অভিযানে ১ হাজার জনেরও বেশি মানুষ নিহত হন। মানবাধিকার সংস্থা হিউম্যান রাইটস ওয়াচ অভিযোগ তোলে, কারফিউ জারি করার পর সেনাবাহিনীকে আন্দোলনকারীদের ‘দেখামাত্রই গুলি করার’ নির্দেশ দিয়েছিলেন শেখ হাসিনা।
অভ্যুত্থান চলাকালে হিউম্যান রাইটস ওয়াচের এশিয়া অঞ্চলের উপপরিচালক মীনাক্ষী গাঙ্গুলি আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেছিলেন, শেখ হাসিনাকে তার বাহিনীর বর্বরতা থামাতে চাপ দিতে হবে। সেই সঙ্গে অস্ত্রহীন ছাত্র আন্দোলনকারীদের ওপর সহিংসতা চালানোর দায় সেনাবাহিনীকে নিতে হবে।
প্রসঙ্গত, গত বছরের জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার নজিরবিহীন অভ্যুত্থানের মুখে প্রধানমন্ত্রিত্ব ছেড়ে ভারতে পালিয়ে যান শেখ হাসিনা। বর্তমানে তিনি সেখানেই অবস্থান করছেন।
ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত দল আওয়ামী লীগ কীভাবে রাজনীতি করবে, সেই দায়িত্ব বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারের বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।
বুধবার (২৩ এপ্রিল) বেলা ১১টায় মানিকগঞ্জ সদর উপজেলার চারু শিল্পী মানবেন্দ্র ঘোষের অগ্নিদগ্ধ বাড়ি পরিদর্শন শেষে তিনি এসব কথা বলেন।
রিজভী বলেন, ‘সমস্ত গণতন্ত্রকামী মানুষ আপনাদের (অন্তর্বর্তী সরকার) সমর্থন দিয়েছে। কিন্তু কনস্টিটিউশনালি বা আইনগতভাবে অন্তর্বর্তী সরকারের কোনো ভিত্তি নেই।’
‘যারা গণতন্ত্রের জন্য লড়াই করেছেন, তারা প্রত্যেকেই আপনাদের সমর্থন করেছে। সে অনুযায়ী আপনারা দেশ চালাচ্ছেন। এখন আওয়ামী লীগ কীভাবে রাজনীতি করবে, সে দায়িত্ব অন্তর্বর্তী সরকারের,’ যোগ করেন তিনি।
বিএনপির এই জ্যেষ্ঠ নেতা বলেন, ‘প্রশাসন আপনাদের হাতে, অন্য সব স্টেট মেশিনারি আপনাদের হাতে। আওয়ামী লীগকে নিয়ে আপনারা কী করবেন, সেটা আপনাদেরই ঠিক করতে হবে।’
‘আওয়ামী লীগের দোসরদের অনুসারীরা ঘাপটি মেরে আছে নানা জায়গায়। ওদের কাছে পেট্রোল কিনে বাড়ি পুড়িয়ে দেওয়ার যে অর্থ, মানুষকে হত্যা করার জন্য যে অস্ত্র লাগে, সেসব তাদের কাছে আছে।’
তিনি বলেন, ‘সেটাকে দমন করতে আপনাদের কী আইন প্রণয়ন করতে হ,বে সেটা আপনারা জনগণের কাছে খোলাসা করুন। যেহেতু প্রশাসন আপনাদের হাতে। দোসরদের অনেকেই পালিয়ে গেছে পার্শ্ববর্তী দেশসহ অনেক জায়গায়। কিন্তু যারা নৈরাজ্য ছড়াচ্ছে তারা প্রশ্রয় পাচ্ছে কার দ্বারা?’
‘যারা ১৫ বছর যাবত শেখ হাসিনাকে পাহারা দিয়েছে, ব্যাংক লুট করেছে, অন্যের সম্পদ লুট করেছে, টাকা পাচার করেছে, তারা আজ এই জনসমুদ্রের ভিতর কোথায় লুকিয়ে আছে। অন্তর্বর্তী সরকার যদি খুঁজে বের করতে না পারে, তাহলে তো এই সরকারকে মানুষ ব্যর্থ সরকার বলবে,’ ভাষ্য রিজভীর।
এ সময় মানিকগঞ্জ জেলা বিএনপির আহবায়ক ও সাবেক সভাপতি আফরোজা খানম রিতা, আহ্বায়ক কমিটির সদস্য অ্যাডভোকেট আজাদ খান, গোলাম আবেদীন কায়সার, বিএনপির সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক রফিক উদ্দিন ভূঁইয়া হাবু, যুবদলের যুগ্ম আহবায়ক তুহিনুর রহমান তুহিন, মাসুদ পারভেজ, স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক জিন্নাহ খান, ছাত্রদলের সভাপতি আব্দুল খালেক শুভ, সাধারণ সম্পাদক সিরাজুল ইসলাম খান সজীব প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা মো. রাশেদ খান হত্যা মামলার ডেথ রেফারেন্স ও আসামিদের আপিল শুনানি শুরু হয়েছে।
বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমান ও বিচারপতি মো. সগীর হোসেনের সমন্বয়ে গঠিত একটি হাইকোর্ট ডিভিশন বেঞ্চে আজ এই শুনানি শুরু হয়।
২০২০ সালের ৩১ জুলাই রাতে টেকনাফ মেরিন ড্রাইভ সড়কের শামলাপুর চেকপোস্টে পুলিশের গুলিতে নিহত হন মেজর সিনহা মোহাম্মদ রাশেদ খান। এই ঘটনায় করা মামলার বিচার শেষে ২০২২ সালের ৩১ জানুয়ারি কক্সবাজার জেলা ও দায়রা জজ আদালত দুজনকে মৃত্যুদণ্ড, ছয়জনকে যাবজ্জীবন ও সাতজনকে খালাস দিয়ে রায় দিয়েছিলেন। মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন- বাহারছড়া পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের তৎকালীন পরিদর্শক বরখাস্ত লিয়াকত আলী ও টেকনাফ থানার বরখাস্তকৃত ওসি প্রদীপ কুমার দাশ।
যাবজ্জীবন কারাদণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন- বাহারছড়া পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের বরখাস্ত উপ-পরিদর্শক (এসআই) নন্দ দুলাল রক্ষিত, সাগর দেব, রুবেল শর্মা, টেকনাফ থানায় পুলিশের করা মামলার সাক্ষী টেকনাফের বাহারছড়া ইউনিয়নের শামলাপুরের মারিশবুনিয়া গ্রামের নুরুল আমিন, মো. নেজামুদ্দিন ও আয়াজ উদ্দিন।
বিচারিক আদালতের রায়ের পরে নিয়ম অনুসারে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্তদের দণ্ডাদেশ অনুমোদনের জন্য ডেথ রেফারেন্স হাইকোর্টে আসে। অন্যদিকে, দণ্ডিত আসামিরা আপিল ও জেল আপিল করেন।
প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস আজ বুধবার কাতারের দোহায় আর্থনা শীর্ষ সম্মেলনের দ্বিতীয় দিনে একটি গোলটেবিল বৈঠকে অংশ নিয়েছেন।
‘বাধ্যতামূলকভাবে বাস্তুচ্যুত জনগণের সামাজিক ও পরিবেশগত চ্যালেঞ্জ - রোহিঙ্গা ইস্যু’ শীর্ষক এই বৈঠকে তিনি বক্তব্য দেবেন।
বৈঠকে প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে জ্বালানি উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান, প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ের এসডিজি বিষয়ক মুখ্য সমন্বয়ক লামিয়া মোরশেদ, প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম প্রমুখ উপস্থিত রয়েছেন।
সাবেক পুলিশ মহাপরিদর্শক (আইজিপি) বেনজীর আহমেদের বিরুদ্ধে ‘রেড নোটিশ’ জারি করেছে দ্য ইন্টারন্যাশনাল ক্রিমিনাল পুলিশ অর্গানাইজেশন (ইন্টারপোল)। সম্প্রতি এই রেড নোটিশ জারি করা হয়।
পুলিশ সদর দপ্তরের এআইজি (মিডিয়া অ্যান্ড পিআর) মো. ইনামুল হক সাগর গতকাল গণমাধ্যমকে জানান, ‘তদন্ত সংস্থার অনুরোধের পরিপ্রেক্ষিতে পুলিশ সদর দপ্তরের ন্যাশনাল সেন্ট্রাল ব্যুরো (এনসিবি) শাখা ইন্টারপোলে রেড নোটিশ জারির আবেদন করে থাকে। আমরা সম্প্রতি জানতে পেরেছি সাবেক আইজিপি বেনজীর আহমেদের বিরুদ্ধে ‘রেড নোটিশ’ জারি করেছে দ্য ইন্টারন্যাশনাল ক্রিমিনাল পুলিশ অর্গানাইজেশন (ইন্টারপোল)।’
জুলাই গণঅভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ ১২ জনের বিরুদ্ধে ‘রেড নোটিশ’ জারির জন্য আন্তর্জাতিক পুলিশ সংস্থা ইন্টারপোলের কাছে আবেদন করা হয়েছে। বিদেশে পলাতক ওই ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে রেড নোটিশ জারি করতে ইন্টারপোলের কাছে পৃথক তিনটি ধাপে আবেদন করে বাংলাদেশ পুলিশের ন্যাশনাল সেন্ট্রাল ব্যুরো (এনসিবি)।
পুলিশের সংশ্লিষ্ট একটি সূত্র জানিয়েছে, শেখ হাসিনাসহ যে ১২ জনের বিরুদ্ধে রেড নোটিশ জারির আবেদন করা হয়েছে, তাদের মধ্যে বেনজীর আহমেদের বিরুদ্ধে করা আবেদনে আর্থিক অপরাধের অভিযোগ তুলে ধরা হয়েছে। অন্যদের বিরুদ্ধে করা আবেদনে মানবতাবিরোধী অপরাধে জড়িত থাকার তথ্য-উপাত্ত যুক্ত করা হয়েছে।
উল্লেখ্য, বেনজীর আহমেদ ২০২০ সালের এপ্রিল থেকে ২০২২ সালের সেপ্টেম্বর পর্যন্ত পুলিশ প্রধান (আইজিপি) ছিলেন। এর আগে ২০১৫ সালের জানুয়ারি থেকে ২০২০ সালের এপ্রিল পর্যন্ত ছিলেন র্যাবের মহাপরিচালক। এসব পদে দায়িত্ব পালনকালে বিচারবহির্ভূত হত্যা ও গুমের ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগ ওঠে বেনজীর আহমেদের বিরুদ্ধে।
বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের শাসনামলেই ব্যাপক অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগে বেনজীর আহমেদের বিরুদ্ধে অনুসন্ধান শুরু করেছিল দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। অনুসন্ধান চলাকালে গত বছরের ৪ মে সপরিবার দেশ ছাড়েন বেনজীর। তিনি ২০২০ সালের এপ্রিল থেকে ২০২২ সালের সেপ্টেম্বর পর্যন্ত আইজিপি ছিলেন। এর আগে তিনি ২০১৫ সালের জানুয়ারি থেকে ২০২০ সালের এপ্রিল পর্যন্ত র্যাবের মহাপরিচালক ছিলেন।
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলেছেন, প্রাথমিক শিক্ষার পাশাপাশি সংস্কৃতি ও খেলাধুলা একটি বড় বিষয়। পড়াশোনার পাশাপাশি শিশুরা যাতে বাধ্যতামূলকভাবে সংস্কৃতি ও খেলাধুলাসহ সব অ্যাক্টিভিটিসে যুক্ত থাকে। এর ফলে শিশুদের যেমন মানসিক বিকাশ ঘটবে তেমনই তাদের শারীরিক বিকাশও ঘটবে।
তিনি আরও বলেন, পত্র-পত্রিকা খুললেই সংস্কার আর সংস্কার। সংস্কার কিন্তু শুরু করেছে বিএনপি। শহীদ জিয়া প্রথম সংস্কার শুরু করেছেন খাল খননের মধ্য দিয়ে। বিএনপি যদি জনগণের ভোটে ক্ষমতায় আসে তাহলে বাংলাদেশের সব খাল খনন করে জীবিত করা হবে। বিএনপি ক্ষমতায় এলে প্রথম কাজ হবে খাল খনন কর্মসূচি। নদীগুলোও খনন করা হবে।
গতকাল মঙ্গলবার লালমনিরহাট জেলা পরিষদ মিলনায়তন অডিটোরিয়ামে বিএনপির প্রশিক্ষণ বিষয়ক দিনব্যাপী কর্মশালায় দলটির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে এসব কথা বলেন।
কেন্দ্রীয় বিএনপির প্রশিক্ষণবিষয়ক কমিটির আয়োজিত এই কর্মশালায় প্রধান অতিথি হিসেবে কর্মশালার শেষ বেলায় বিকেলে ভার্চুয়ালি যোগ দেন দলটির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান।
কর্মশালায় অংশ নেওয়া নেতাকর্মীদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তরে তারেক রহমান আরও বলেন, বাংলাদেশ যদিও ল্যান্ড ওয়াইজ (আয়তনের ক্ষেত্রে) বড় দেশ না, তবুও জনসংখ্যার ভিত্তিতে অনেক বড়। লালমনিরহাটের যেমন সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক কিছু বৈশিষ্ট্য আছে তেমনই কুড়িগ্রামের আছে, চট্টগ্রামের আছে, কুষ্টিয়ার ওইদিকেও আছে। বাংলাদেশের বিভিন্ন জায়গায় বিভিন্ন কৃষ্টিকালচার সংস্কৃতি আছে। সে রকম আলাদা আলাদা কিছু বৈশিষ্ট্যও আছে। আর এই বৈশিষ্ট্যটাই হচ্ছে আমাদের ঐতিহ্য।
তিনি আরও বলেন, বিএনপি যতবার দেশ পরিচালনার সুযোগ পেয়েছে দেশীয় কৃষ্টি-কালচারকে সামনে এগিয়ে নিয়ে আসার চেষ্টা করেছে। আমরা জানি গত ১৭ বছর বহু সংস্কৃতিকর্মী কষ্টে জীবনযাপন করেছেন। চিকিৎসার অভাবে কষ্টে দিনযাপন করেছেন। যখন দেশনেত্রী খালেদা জিয়ার কাছে সুযোগ ছিল এমন অনেক সংস্কৃতিকর্মীকে সহযোগিতা করা হয়েছিল। আমাদের সামগ্রিক চিন্তার মধ্যে যেটি রয়েছে তা হচ্ছে আমাদের এই কালচারকে এগিয়ে নিয়ে যাব। প্রাথমিক শিক্ষার ক্ষেত্রেও কালচারাল একটি বিষয় থাকবে। খেলাধুলার বিষয় থাকবে। পড়াশোনার পাশাপাশি শিশুরা যেন বাধ্যতামূলকভাবে সব অ্যাক্টিভিটিসে যুক্ত থাকে। এর ফলে তাদের যেমন মানসিক বিকাশ ঘটবে তেমনই শারীরিক বিকাশও ঘটবে।
তারেক রহমান বলেন, রাষ্ট্রকাঠামো মেরামতের লক্ষ্যে দেশের জনগণের স্বার্থে বিএনপির ৩১ দফা বাস্তবায়ন অত্যন্ত জরুরি।
কেন্দ্রীয় বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক আসাদুল হাবিব দুলুর সভাপতিত্বে দলের যুগ্ম মহাসচিব শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানি, বিএনপির প্রশিক্ষণ বিষয়ক সম্পাদক রাশেদা বেগম হীরা, নেওয়াজ হালিমা আরলি প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন কেন্দ্রীয় ছাত্রদল নেতা ইকবাল হোসেন শ্যামল। প্রশিক্ষণ কর্মশালায় লালমনিহাট জেলার পাঁচ উপজেলার দুই শতাধিক নেতৃবৃন্দ অংশ নেন।
কর্মশালায় অংশ নেওয়া বিএনপি ও অঙ্গ সহযোগী সংগঠনের নেতৃবৃন্দ মনে করেন, তারেক রহমানের ৩১ দফার মধ্য দিয়েই বাংলাদেশে শান্তি ফিরে আসবে, সব সেক্টর দুর্নীতিমুক্ত হবে, দেশে থাকবে না একনায়কতন্ত্র শাসন ব্যবস্থা।
এর আগে কর্মশালার প্রথম অধিবেশনে শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানি বলেন, তারেক রহমানের ৩১ দফার মধ্য দিয়েই বাংলাদেশে ফ্যাসিবাদের মূলোৎপাটন হবে। একদলীয় শাসনের মাধ্যমে দেশের মানুষ আর জিম্মি থাকবে না। ৩১ দফার মাধ্যমেই দেশে শান্তি ফিরে আসবে।
তিনি আরও বলেন, পাশ্ববর্তী দেশ ভারত বাংলাদেশের মানুষকে মানুষ মনে করেনি, তারা তাদের মনঃপুত একটি দলকে প্রাধান্য দিয়েছে। জুলাইয়ে ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশের জনগণ দেখিয়ে দিয়েছে, তারা বাইরের প্রভুত্ব মানে না।
মন্তব্য