২০০১ সালের কথা। বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) অনুরোধের ঢেঁকি গিলে বাংলাদেশের উদীয়মান পেইসারদের ঢাকায় দুই সপ্তাহের ক্যাম্প করাতে আসেন ওয়েস্ট ইন্ডিয়ান কিংবদন্তি অ্যান্ডি রবার্টস।
সেই ক্যাম্পে ছিলেন মাশরাফি মোর্ত্তজা ও তালহা জুবায়ের। ক্যাম্পের শুরুতেই রবার্টস সব বোলারকে একটি করে নতুন বল দিলেন। জানিয়ে দিলেন, দুই সপ্তাহ পর দেখবেন বলের কী অবস্থা।
দুই সপ্তাহ পর দেখা গেল, বাকি সবার বল প্রায় পুরোটাই সবুজ। মাশরাফির শুধু সিমটুকু সবুজ, তালহারও প্রায় তাই। বিকেএসপির ঘাসের উইকেটে বল যেখানে পড়ে সেখানে দাগ পড়ে যায় ঘাসের। তাতে প্রমাণ মেলে মাশরাফি ও তালহার নিয়ন্ত্রণে সিম। রবার্টসও বললেন, এমনটিই চাচ্ছিলেন তিনি।
রবার্টস সেই ক্যাম্প শেষে বিসিবিকে অনুরোধ জানিয়ে গিয়েছিলেন এই দুজনকে চোখে চোখে রাখতে। সেই রবার্টসকে আজও মনে পড়ে তালহার।
সাবেক ক্রিকেটারদের নিয়ে ‘লেজেন্ডস চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি’ খেলতে কক্সবাজারে এসে তাই আক্ষেপ ঝড়ে তালহার কণ্ঠে। নতুন বলে এখনও সামান্য সুইং পান। শরীর সায় দেয় না কিন্তু চেষ্টা করেন। মার খেয়ে রেগেও যান। আফসোস করে বলেন রবার্টসের কথা। বলেন মাশরাফি ও তার কথা।
‘অ্যান্ডি রবার্টসকে অবশ্যই মনে পড়ে। জীবনের শুরুটা ওখান থেকেই। ঐ ক্যাম্পের পর ও আমার আর মাশরাফির কথাই বলে গিয়েছিল। আমাদের দুজনের দিকে খেয়াল রাখার জন্য। দুর্ভাগ্যজনকভাবে আমার হয়নি, মাশরাফির হয়েছে। আমার ইনজুরিগুলো সাপোর্ট করেনি আমাকে। ওই দিনগুলোর কথা মনে পড়লে অনেক কষ্ট লাগে’, বলেন তালহা।
হ্যাঁ, মাশরাফির হয়েছে। তালহার হয়নি।
একজন পেরেছেন, আরেকজন পারেননি। একজন হয়েছেন দেশের সর্বকালের সেরা পেইসার। আরেকজন অনন্ত আক্ষেপের নাম। দুজনের পথের কাঁটাও ছিল এক। চোট। একজন সেটিতে বারবার ছিটকে যেয়েও ফিরে এসেছেন। আরেকজন পারেননি।
দুজনের পথের মিলটা দেখুন! তালহার টেস্ট অভিষেক ২০০২ সালে শ্রীলংকার বিপক্ষে। কার বদলে? চোটে ছিটকে যাওয়া মাশরাফির!
অথচ দুজনের একসঙ্গে হওয়ার কথা ছিল কত কিছু! নতুন বলে সুইংয়ের সঙ্গে গতির মিশেলে পেইসার খরার দেশে মরুদ্যান হয়ে থাকতে পারতেন দুজনে। অথচ দুজনে একসঙ্গে খেলেছেন এমন ম্যাচ মাত্র একটি।
ভারতের বিপক্ষে সেই টেস্টে উইকেট পাননি তালহা। মাশরাফি ভারতের একমাত্র ইনিংসে তিন উইকেট পেয়েছিলেন। সেই ম্যাচ স্মরণীয় অবশ্য মোহাম্মদ আশরাফুলের ১৫৮ রানের ইনিংসের জন্য। সেটির সাহায্যে ফলো অন অবশ্য এড়াতে পারেনি বাংলাদেশ।
চেন্নাইয়ের এমআরএফ পেইস ফাউন্ডেশনে গিয়ে অ্যাকশন শুধরে আসেন মাশরাফি। পুরনো অ্যাকশনে চোটে পড়ার সম্ভাবনা বেশি ছিল। তাই এই পরিবর্তন।
তালহারও সমস্যা ছিল অ্যাকশনে। কিন্তু সেটি ঠিক করা হয়নি। তালহা জানান, চোটের ব্যাপারে সাহায্যও পাননি তেমন।
‘অ্যাকশনের সমস্যা ছিল। আমার মিক্সড অ্যাকশন ছিল। এই ইনজুরি নিয়ে যারা দায়িত্বে ছিলেন তাদের কাছ থেকে সাহায্য পাইনি। পাইনি ট্রিটমেন্ট বা গাইডলাইন। নিজের খরচে করিয়েছি। ওটা যথেষ্ট ছিল না’, তালহার আক্ষেপ।
তালহার আক্ষেপ শুধু সেখানেই নয়। বাংলাদেশের ক্রিকেটে পেইসাররা এক এক জন একাকী যোদ্ধা নিঃসঙ্গ শেরপা। সর্বশেষ উদাহরণ ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে বাংলাদেশের টেস্ট সিরিজ। দুই টেস্টেই একাদশে ছিলেন মাত্র একজন করে পেইসার। প্রথম টেস্টে মুস্তাফিজুর রহমান। দ্বিতীয় টেস্টে আবু জায়েদ রাহি।
বাংলাদেশের উইকেট সাধারণত হয়ে থাকে স্পিন বান্ধব। পেইসারদের জন্য সেখানে সাহায্য সামান্য। জোরে বল করেও বল যথেষ্ট বাউন্স পাওয়া যায়, এখানেই তালহার হতাশা।
‘অনেক পেসার আগেও ছিল। এখনো আছে ভবিষ্যতেও আসবে। আপনি যদি উইকেট না দেন তাহলে আমরা কোথায় বোলিং করব? এত ফ্ল্যাট উইকেটে খেললে আসলে ঐ গতিটা থাকেনা। শরীরও সহায়তা করেনা। পেইস বোলিং অনেক কষ্টের ব্যাপার। এত দূর থেকে দৌড়ে আসবেন কিন্তু দেখলেন বল হাঁটুর উপরে উঠছেনা। কিপার পর্যন্ত বল পৌছাচ্ছে না। এটা দেখে হতাশ হয়ে যায় বোলাররা। ছন্দও নষ্ট হয়ে যায়’, তালহার অভিযোগ।
নিজের ক্যারিয়ারের উদাহরণ টেনে এনে তালহা বলেন, ‘সাউথ আফ্রিকা থেকে দেড় মাসের সফর শেষে দেশে ফিরে আবাহনী মাঠে টানা অনেকদিন উইকেটকিপার ৩০ গজ দূরে রেখে বল করেছি। যত সময় গেছে ছন্দ নষ্ট হতে হতে কিপার আবার ১৫ গজের মধ্যে চলে এসেছে।
‘আমি বলছিনা সাউথ আফ্রিকার মত উইকেট বানাতে। কিন্তু অন্তত পেস বোলারদের বলটা যেন ক্যারি করে। তাতে ভালো বল হবে। ব্যাটসম্যানকেও কোয়ালিটি বল বেশি খেলতে হবে। এখন স্পিনে ভালো। তখন পেসেও ভালো হবে’, উপায় বাতলান তালহা।
তালহার ক্যারিয়ার টিকেছে তিন বছর। ২০০২ সালে অভিষেক, ২০০৪ সালে ইতি। টেস্ট ও ওয়ানডে মিলিয়ে ১৩ ম্যাচ। সেখানে উইকেট মাত্র ২০টি। প্রথম শ্রেণীর ক্রিকেটে ৭৩ ম্যাচ খেলে ২২২ উইকেট নেওয়া তালহা হয়ে গেছেন আক্ষেপের নাম।
অ্যান্ডি রবার্টসের ক্যাম্পে পরিচয় হওয়া দুই উদীয়মান পেইসারের ক্যারিয়ারের গতিপথের শুরুটা ছিল অভিন্ন। চোট, ধাক্কা, এরপর আবার ফিরে আসার চেষ্টা। শেষ পর্যন্ত দুজনের পথ চলে গেছে ভিন্ন দুই দিকে।
মাশরাফি যখন তাই দেশের ক্রিকেটের সর্বকালের সেরাদের একজন হয়ে ক্যারিয়ারের ক্রান্তিলগ্নে, তাকে দলে নেওয়া হচ্ছে না কেনো সেই প্রশ্ন আসে।
তালহা হয়ে থাকেন হতাশার নাম। হয়ে থাকেন সাবেক। তালহা জুবায়ের হয়ে থাকেন বাংলাদেশের, আরেক জন হতে পারত দারুণ ক্রিকেটার।
আরও পড়ুন:আগামী জুনে যুক্তরাষ্ট্র ও ওয়েস্ট ইন্ডিজে অনুষ্ঠিতব্য টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের শুভেচ্ছাদূত হিসেবে অলিম্পিকে আটটি স্বর্ণজয়ী কিংবদন্তি জ্যামাইকান স্প্রিন্টার উসাইন বোল্টের নাম ঘোষণা করেছে ক্রিকেটের সর্বোচ্চ নিয়ন্ত্রক সংস্থা ইন্টারন্যাশনাল ক্রিকেট কাউন্সিল (আইসিসি)।
বুধবার এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বিশ্বকাপের জন্য বোল্টকে দূত করার কথা জানায় আইসিসি।
বিশ্বকাপের মতো বড় মঞ্চের শুভেচ্ছাদূত হতে পেরে উচ্ছসিত বোল্ট। এ বিষয়ে দেয়া এক বিবৃতিতে জ্যামাইকায় ক্রিকেট খেলে বেড়ে উঠা বোল্ট বলেন, ‘ক্যারিবীয় অঞ্চলে ক্রিকেট হচ্ছে জীবনের অংশ। ক্রিকেট আমার হৃদয়ে সব সময়ই এটি বিশেষ জায়গা জুড়ে আছে এবং আমি এমন একটি মর্যাদাপূর্ণ টুর্নামেন্টের অংশ হতে পেরে সম্মানিত।
‘বিশ্বকাপে শক্তি ও উদ্যম নিয়ে কাজ করতে এবং সারা বিশ্বে খেলাটির উন্নয়নে অবদান রাখতে উন্মুখ হয়ে আছি।’
এবারই প্রথম ক্রিকেটের কোনো বৈশ্বিক আসর বসবে যুক্তরাষ্ট্রে। ৩৭ বছর বয়সী বোল্ট মনে করেন, ‘টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ আয়োজনের মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্রে খেলাধুলার বাজার ধরতে পারবে ক্রিকেট।’ এতে ক্রিকেট খেলাটা নতুন উচ্চতায় উঠবে বলেও বিশ্বাস তার।
তিনি বলেন, ‘তারা (যুক্তরাষ্ট্র) যখন কোনো খেলা অনুসরণ করে, তখন তারা ওই খেলাটিকে সঠিকভাবে অনুসরণ করে এবং তারা সর্বোচ্চটা দেয়। আমার মনে হয়, যদি তারা এটি ধরতে পারে তাহলে তারা ঠিক পথেই এগোবে। আমি যেমনটা বুঝি, আমরা যদি টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে সেই উদ্যম আনতে পারি, তাহলে দারুণ হবে।’
২০২৮ সালের অলিম্পিকে ফিরবে ক্রিকেট। খেলাধুলার এ বিশ্ব আসরে প্রথম ক্রিকেট খেলা হয়েছিল ১৯০০ সালের প্যারিস আসরে এবং সেটিই অলিম্পিকে ক্রিকেটের একমাত্র প্রদর্শনী।
দীর্ঘ বিরতির পর অলিম্পিকে ক্রিকেট ফেরায় উচ্ছ্বসিত ১০০ ও ২০০ মিটারের বিশ্ব রেকর্ডধারী বোল্ট।
তার ভাষ্যে, ‘একটা স্বর্ণপদক পাওয়া অনেক বড় ব্যাপার। প্রতিটি খেলাই অলিম্পিকের অংশ হতে চেষ্টা করে। কারণ এটা বিশাল একটা ব্যাপার এবং এর পদকের মঞ্চে স্বর্ণপদক জিততে পারাটা দারুণ অনুভূতি।’
বিশ্বখ্যাত স্পিন বোলিং কোচ মুশতাক আহমেদকে জাতীয় দলে নিয়োগ দিয়েছে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি)।
পাকিস্তানের সাবেক লেগ স্পিনার ও বিশ্বকাপজয়ী এই খেলোয়াড়ের এ পদে কাজ করার প্রচুর অভিজ্ঞতা ও সাফল্যের রেকর্ড রয়েছে।
৫৩ বছর বয়সী মুশতাক এর আগে ইংল্যান্ড, ওয়েস্ট ইন্ডিজ ও পাকিস্তানসহ বিখ্যাত ক্রিকেট দলের দেশগুলোর স্পিন বোলিং কোচ হিসেবে কাজ করেছেন। তার চিত্তাকর্ষ জীবনবৃত্তান্ত পাকিস্তানের বোলিং পরামর্শদাতা হিসাবেও গর্বিত।
নিয়োগের বিষয়ে মুশতাক বলেন, ‘স্পিন বোলিং কোচ হিসেবে বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের অংশ হতে পারাটা আমার জন্য অনেক গর্বের। আমি এই ভূমিকার জন্য আগ্রহী এবং আমার অভিজ্ঞতা খেলোয়াড়দের দিতে চাই। কারণ, তারা খুব কোচিং যোগ্য এবং আমি সবসময় বিশ্বাস করি যে, তারা বিশ্বের সবচেয়ে বিপজ্জনক দলগুলোর মধ্যে একটি।’
চলতি মাসের শেষের দিকে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে টি-টোয়েন্টি সিরিজের জন্য বাংলাদেশের প্রস্তুতি ক্যাম্পের আগে মুশতাককে নিয়োগ দেয়া হলো। ২০২৪ সালে ওয়েস্ট ইন্ডিজ ও যুক্তরাষ্ট্রে অনুষ্ঠিতব্য আইসিসি টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের সমাপ্তি পর্যন্ত দলের সঙ্গে কাজ করবেন তিনি।
চলমান ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগে (আইপিএল) দারুণ ফর্মে আছেন পেসার মুস্তাফিজুর রহমান। ৫ ম্যাচ থেকে ১০ উইকেট নিয়ে আছেন উইকেট শিকারিদের তালিকার ৩ নম্বরে। প্রথম ম্যাচেই হয়েছিলেন ‘ম্যান অফ দ্য ম্যাচ’ও। বোলারদের শ্মশানঘাটখ্যাত আইপিএলে মুস্তাফিজের এমন পারফরম্যান্স বেশ ভালোভাবেই দেখছেন ক্রিকেটবোদ্ধারা। ফিজের এমন পারফরম্যান্স এ বছরই অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে বেশ কাজে দেবে বলে মত তাদের।
তবে বিপত্তি বেঁধেছে আগামী মাসে জিম্বাবুয়ে ক্রিকেট দলের বাংলাদেশ সফর নিয়ে। জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে পাঁচ ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজ খেলবে বাংলাদেশ। সেই সিরিজের জন্য মুস্তাফিজকে অনাপত্তিপত্র দেওয়া হয়েছে আগামী ৩০ এপ্রিল পর্যন্ত। এরপর দেশে ফিরে ফিজকে খেলতে হবে জাতীয় দলের হয়ে। তবে অনেকেই মনে করেন বিশ্বকাপের জন্য সঠিক প্রস্তুতি নিতে মুস্তাফিজকে জিম্বাবুয়ে নয় আইপিএলে খেলতে দেওয়া উচিত। সেজন্য এ বাঁহাতি পেসারের অনাপত্তিপত্রের মেয়াদ বাড়ানো উচিত বিসিবির।
যদিও একদিন বাড়িয়ে ১ মে পর্যন্ত করা হয়েছে ফিজের ছুটি। তবে মুস্তাফিজকে পুরো সময়ের জন্যই আইপিএলে খেলানোর পক্ষে বাংলাদেশ জাতীয় দলের সাবেক অধিনায়ক ও বিসিবি পরিচালক আকরাম খান। তার মতে, মোস্তাফিজ আইপিএলে থাকলে বাংলাদেশই লাভবান হবে। গতকাল মিরপুরে গণমাধ্যমকে বলেন আকরাম খান।
তিনি বলেন, ‘সত্যি কথা বলতে, সে চেন্নাইয়ের হয়ে যত ম্যাচ খেলবে, ব্যক্তিগতভাবে লাভবান হবে, তার সঙ্গে বাংলাদেশও লাভবান হবে। কারণ, জিম্বাবুয়ের সঙ্গে খেলার চেয়ে সেখানে খেললে অনেক কিছু শিখতে পারবে। ড্রেসিংরুমের ব্যাপার আছে, বড় খেলোয়াড়দের সঙ্গে খেলবে। সেখানকার মান ভালো, বিভিন্ন উইকেট, বিভিন্ন মানের খেলোয়াড়ের সঙ্গে খেলবে। আমার মনে হয়, ওর সুযোগ পাওয়া উচিত।’
আকরাম খান আরও বলেন, ‘আমার কাছে যেটা মনে হচ্ছে, মোস্তাফিজের পারফরম্যান্স নিয়ে আমরা চিন্তিত ছিলাম। কারণ, সে গত এক বছর ধরে ধুঁকছিল। আইপিএলে কিন্তু ওর পারফরম্যান্স ভালোর দিকেই যাচ্ছে, একদম যে ভালো হচ্ছে, তা না।’
সাবেক এ অধিনায়কের মতে, ‘যেহেতু সে (মুস্তাফিজ) লঙ্গার ভার্সনে খেলে না, আইপিএলে গিয়ে যদি এ রকম ভালো করতে থাকে তাহলে বিশ্বকাপে আমরা বেশি লাভবান হব। এই জিনিসটা চিন্তা করতে পারে বোর্ড। তারপরও এটা নির্ভর করছে কোচিং স্টাফ, নির্বাচকদের চিন্তা-ভাবনার ওপর। কিন্তু সে যে ভালো করছে, এটা বাংলাদেশের জন্য ভালো।’
আরও পড়ুন:দক্ষিণ আফ্রিকা, জিম্বাবুয়ে ও নামিবিয়ার যৌথ আয়োজনে অনুষ্ঠিত হবে আসন্ন ২০২৭ সালের ওয়ানডে ক্রিকেট বিশ্বকাপ। টুর্নামেন্ট শুরুর তিন বছর আগেই নিজেদের ৮ ভেন্যু চূড়ান্ত করেছে দক্ষিণ আফ্রিকা।
ক্রিকেট দক্ষিণ আফ্রিকার প্রধান নির্বাহী ফোলেতসি মোসেকি এ খবর নিশ্চিত করেছেন।
বৃহস্পতিবার দক্ষিণ আফ্রিকান নিউজ ২৪ ওয়েবসাইটকে মোসেকি বলেন, ‘বৈজ্ঞানিক কারণ বিবেচনা করে দক্ষিণ আফ্রিকার আট ভেন্যু বাছাই করা হয়েছে। বিমানবন্দর থেকে দূরত্ব ও হোটেল রুমের সহজলভ্যতা বিবেচনায় রাখা হয়েছে।’
দেশটির নিয়মিত টেস্ট ভেন্যু জোহানেসবার্গের ওয়ান্ডারার্স, সেঞ্চুরিয়নের সুপারস্পোর্ট পার্ক, কেপটাউনের নিউল্যান্ডস, ডারবানের কিংসমিড ও গেবেরার সেন্ট জর্জে’স পার্কে অনুষ্ঠিত হবে বিশ্বকাপের অধিকাংশ ম্যাচ।
অন্য ভেন্যুগুলো হচ্ছে, ব্লুমফন্টেইনের মানগাউং ওভাল, পার্লের বোল্যান্ড পার্ক ও ইস্ট লন্ডনের বাফেলো পার্ক।
এ নিয়ে দ্বিতীয়বারের মতো বিশ্বকাপের আসর আয়োজন করতে চলেছে দক্ষিণ আফ্রিকা এবং জিম্বাবুয়ে। এর আগে ২০০৩ সালে বিশ্বকাপ আয়োজন করেছিল তারা। তবে এ টুর্নামেন্টের আয়োজনে নামিবিয়া এবারই প্রথম।
আয়োজক দেশ হিসেবে দক্ষিণ আফ্রিকা ও জিম্বাবুয়ে বিশ্বকাপে সরাসরি খেলার যোগ্যতা অর্জন করলেও আসরের টিকিট পেতে আফ্রিকান কোয়ালিফায়ারে খেলতে হবে নামিবিয়াকে।
তিনজন স্বাধীন নারী পরিচালক নিয়োগ দিয়ে ইতিহাস গড়েছে ক্রিকেট ওয়েস্ট ইন্ডিজ (সিডব্লুআই)। ক্রিকেট বিশ্বে এই প্রথম এমন ঘটনা ঘটল।
নিয়োগ পাওয়া তিন নারী পরিচালক হলেন- ডায়ান ক্যাম্পবেল, লুইস ভিক্টর-ফ্রেডেরিক ও ডেবরা করিয়াট-প্যাটন। এক বছরের মেয়াদে আগামী বছরের মার্চ পর্যন্ত কাজ করবেন তারা।
এক বিজ্ঞপ্তিতে সিডব্লুআই জানিয়েছে, ক্যাম্পবেল, ভিক্টর-ফ্রেডেরিক ও করিয়াট-প্যাটনকে পরিচালক হিসেবে নিয়োগ দিয়েছে বোর্ড। আপাতত তাদের মেয়াদ এক বছর, যা শেষ হবে আগামী বছরের মার্চ।
তিনজনের মধ্যে প্রথমবার পরিচালকের দায়িত্ব পেলেন ক্যাম্পবেল ও ভিক্টর-ফ্রেডেরিক। অন্যদিকে ২০১৯ থেকে ২০২১ মেয়াদে দায়িত্ব পালন করেছেন করিয়াট-প্যাটন।
বাংলাদেশের নারী ক্রিকেট দলকে উপহার প্রদানের মাধ্যমে অনুপ্রাণিত করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বুধবার গণভবনে আমন্ত্রণ করে নিয়ে এসে নারী দলের প্রত্যেককে উপহার তুলে দেন প্রধানমন্ত্রী।
এদিন বাংলাদেশ দলের ক্রিকেটারদের পাশাপাশি অস্ট্রেলিয়া নারী ক্রিকেটারদেরও গণভবনে ডেকে নেন প্রধানমন্ত্রী। তার আমন্ত্রণে দুই দলের নারী ক্রিকেটাররা ক্রীড়াপ্রেমী প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন।
অস্ট্রেলিয়ার পুরো ক্রিকেট দলের সঙ্গে বাংলাদেশের টি-টোয়েন্টি দলের ১৫ স্কোয়াডের সদস্যরা গিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রীর আমন্ত্রণে। এর বাইরে ক্রীড়ামন্ত্রী ও বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) সভাপতি নাজমুল হাসান পাপন ও নারী বিভাগের চেয়ারম্যান শফিউল আলম চৌধুরী নাদেল উপস্থিত ছিলেন সেখানে।
সেখানে নারী ক্রিকেটারদের সঙ্গে কথা বলে সবাইকে নিয়ে ছবি তোলেন প্রধানমন্ত্রী। এরপর ক্রিকেটারদের হাতে উপহার তুলে দেন তিনি। সাদা রংয়ের একটি প্যাকেট তুলে দেওয়া হয় মারুফা-নিগারদের হাতে।
বিসিবির পরিচালক এবং আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক নাদেল জানান, ‘প্রধানমন্ত্রী দুই দলের নারী ক্রিকেটারদের সঙ্গে কথা বলেছেন। বাংলাদেশের ক্রিকেটারদের সুযোগ সুবিধার খোঁজ খবরও নিয়েছেন। অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে ভালো খেলতে না পারলেও প্রধানমন্ত্রী মেয়েদের অনুপ্রাণিত করেছেন। ক্রিকেটারদের হাতে উপহারও তুলে দিয়েছেন।’
তিনি জানান, ‘সবাইকে ঈদের পর আবার দাওয়াত দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। সেসময় আমাদের সাবেক অনেক ক্রিকেটারসহ পুরো দলকে যেতে বলেছেন তিনি।’
প্রথমবারের মতো বাংলাদেশের বিপক্ষে দ্বিপাক্ষিক সিরিজ খেলতে এসেছে অস্ট্রেলিয়া নারী ক্রিকেট দল। ওয়ানডে সিরিজের পর টি-টোয়েন্টি সিরিজও জিতেছে অজিরা। মঙ্গলবার এক ম্যাচ হাতে রেখেই অস্ট্রেলিয়া টি-টোয়েন্টি সিরিজ নিজেদের করে নিয়েছে।
গত ১৭ মার্চ ঢাকায় পা রাখে অ্যালিসা হিলির দল। ২১ মার্চ থেকে শুরু হয় তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজ।
আইসিসি উইমেন্স চ্যাম্পিয়নশিপের অন্তর্ভুক্ত এই সিরিজে বাংলাদেশ ধবলধোলাই হয়েছে। এরপর এক ম্যাচ হাতে রেখে টি-টোয়েন্টি সিরিজও ২-০ ব্যবধানে জিতে নিয়েছে অজিরা। বৃহস্পতিবার সিরিজের শেষ ম্যাচটিতে মুখোমুখি হবে দুই দল।
মাঠের খেলায় অস্ট্রেলিয়ার সঙ্গে কোনোভাবেই সুবিধা করতে পারেনি বাংলাদেশের মেয়েরা। তবে সম্পর্কের দিক থেকে এগিয়ে থাকল। বন্ধুত্বের জায়গা থেকে অস্ট্রেলিয়া অধিনায়ক অ্যালিসা হিলিকে ঢাকাইয়া জামদানি শাড়ি উপহার দিয়েছেন বাংলাদেশের অধিনায়ক।
সিলেটে প্রথম টেস্টে ৩২৮ রানে হারের পর চট্টগ্রামে দ্বিতীয় টেস্টেও বড় পরাজয় বরণ করতে হয়েছে বাংলাদেশকে।
জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে সিরিজ নির্ধারণী এ ম্যাচের পঞ্চম দিন বুধবার ১৯২ রানের জয় তুলে নিয়েছে সফরকারীরা।
টস জিতে আগে ব্যাট করতে নেমে প্রথম ইনিংসে ছয় ব্যাটারের অর্ধশতকে ৫৩১ রান করে শ্রীলঙ্কা। জবাবে প্রথম ইনিংসে সব উইকেট হারিয়ে ১৭৮ রান তুলতে সক্ষম হয় স্বাগতিকরা।
প্রথম ইনিংসে সাড়ে তিন শর বেশি লিড নেয়া শ্রীলঙ্কা দ্বিতীয়টিতে সাত উইকেট হারিয়ে ১৫৭ রান করে ইনিংস ঘোষণা করে। তাতে ৫১১ রানের লক্ষ্য পায় বাংলাদেশ।
বিশাল এ লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে প্রথম ইনিংসের মতো হতাশাজনক ব্যাটিং না করলেও বিজয় থেকে অনেক দূরেই থেমে যায় টাইগারদের রানের চাকা। মমিনুল হক ও মেহেদি হাসান মিরাজের জোড়া অর্ধশতকে ৩১৮ রান তুলতে সক্ষম হয় সফরকারী।
এ জয়ের মধ্য দিয়ে ২-০তে সিরিজ জিতে নিল শ্রীলঙ্কা। ব্যাটে-বলে নৈপুণ্য দেখিয়ে প্লেয়ার অফ দ্য ম্যাচ ও প্লেয়ার অফ দ্য সিরিজ হওয়ার গৌরব অর্জন করেন কামিন্দু মেন্ডিস।
আরও পড়ুন:
মন্তব্য