ভারতের কিংবদন্তি অধিনায়ক ও ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিসিআই) সভাপতি সৌরভ গাঙ্গুলির এনজিওপ্লাস্টি করানো হয়েছে।
শনিবার সকালে কলকাতার নিজ বাড়িতে ব্যায়াম করার সময় মাথা ঘুরে পড়ে যান সৌরভ। সঙ্গে বুকে ব্যথা অনুভব করলে তাকে দ্রুত নিয়ে যাওয়া হয় কলকাতার উডল্যান্ড হাসপাতালের জরুরি বিভাগে।
সৌরভকে ইমার্জেন্সিতে ভর্তি করানোর পর তার এনজিওগ্রাম করানো হয়। চিকিৎসকেরা এরপর তার এনজিওপ্লাস্টি করার সিদ্ধান্ত নেন। অর্থাৎ হার্টে রিং পরানো হয় তার। কলকাতার দৈনিক আনন্দবাজার সাবেক ভারতীয় অধিনায়কের পরিবারের বরাত দিয়ে জানায় তার হার্টে তিনটি ব্লক পাওয়া গেছে।
এর আগে উডল্যান্ড হাসপাতালের চিকিৎসক সরোজ মন্ডল এনজিওপ্লাস্টির বিষয়টি নিশ্চিত করেন। ভারতীয় দৈনিক হিন্দুস্তান টাইমসকে তিনি বলেন, ‘তিনি (সৌরভ) স্থিতিশীল। এনজিওপ্লাস্টি করা হবে। তার চেতনা আছে; তার পরীক্ষা করছি আমরা।’
কিংবদন্তি এই ক্রিকেটারের অসুস্থতার খবরে পুরো ভারতের নানা প্রান্ত থেকে আসতে থাকে প্রার্থনা ও সুস্থতার বার্তা। সৌরভের সুস্থতা কামনা করে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি টুইট করেন।
টুইটে মমতা লেখেন, ‘সৌরভ গাঙ্গুলির মাইল্ড হার্ট অ্যাটাকের খবরে দুঃখ পেলাম। আশা করি তিনি দ্রুত সুস্থ হয়ে উঠবেন। তিনি ও তার পরিবারের প্রতি আমার প্রার্থনা।’
সৌরভের দীর্ঘদিনের সতীর্থ এবং কাছের বন্ধু শচীন টেন্ডুলকার সুস্থতা কামনা করে টুইট করেন। নিজের ও সৌরভের একটি ছবি টুইট করে শচীন লেখেন, ‘এইমাত্র তোমার অসুস্থতার খবর পেলাম। আশা করি প্রতিটা দিনই তোমাকে পূর্ণ সুস্থতার কাছে নিয়ে আসবে।’
সৌরভের পরিবারের সঙ্গে কথা বলে বিসিসিআইয়ের সেক্রেটারি জয় শাহ টুইট করেন, ‘সৌরভ গাঙ্গুলির দ্রুত আরোগ্য কামনা করছি। তার পরিবারের সঙ্গে কথা হয়েছে। তিনি ভালো আছেন ও চিকিৎসায় ভালো সাড়া দিচ্ছেন।’
সৌরভের সুস্থতা কামনা করেছেন ভিরাট কোহলিও। টুইটে ভারতের অধিনায়ক লেখেন, ‘আপনার দ্রুত আরোগ্যের জন্য প্রার্থনা করছি। দ্রুত সেরে উঠুন।’
একই রকম টুইট করেন আনিল কুম্বলে, কুলদীপ ইয়াদভ ও মোহাম্মদ শামিরা।
ক্রিকেট মাঠ থেকে ২০০৮ সালে অবসর নেয়ার পর ক্রিকেট প্রশাসন ও টিভি ক্যারিয়ার নিয়েই ব্যস্ত তিনি। গত নভেম্বরে সৌরভ ভারতীয় মিডিয়াকে জানান, করোনা মহামারির সময়ে তাকে ২২ বার পরীক্ষা করাতে হয়েছিল আইপিএলসহ নানা ক্রিকেটীয় ইভেন্ট ও টিভি শোর কারণে।
ভারতের ইতিহাসে অন্যতম সফল অধিনায়ক সৌরভ গাঙ্গুলি দলকে ৪৯টি টেস্টে নেতৃত্ব দিয়ে জিতেছেন ২১টিতে।
১৯৯২ থেকে ২০০৮ সালে পর্যন্ত জাতীয় দলের জার্সিতে খেলেন এই বাঁহাতি। ১১৩টি টেস্ট, ৩১১ ওডিআইয়ে ১৮ হাজারেরও বেশি আন্তর্জাতিক রান করেছেন তিনি।
আরও পড়ুন:Sad to hear that @SGanguly99 suffered a mild cardiac arrest and has been admitted to hospital.
— Mamata Banerjee (@MamataOfficial) January 2, 2021
Wishing him a speedy and full recovery. My thoughts and prayers are with him and his family!
নরসিংদীর মনোহরদীতে ছাগল চুরির অভিযোগ উঠেছে ১৮ বছর বয়সী ছাদিকুল নামে এক কিশোরের বিরুদ্ধে। পরিবারের দাবি, মিথ্যা অপবাদ দিয়ে কিশোরকে না পেয়ে তার বাবা আঙ্গুর মিয়াকে বাড়ি থেকে তুলে নেয় চেয়ারম্যানের লোকেরা। পরে মঙ্গলবার সকাল থেকে রাত পর্যন্ত ইউনিয়ন পরিষদে বন্দি করে নির্যাতন করা হয়।
রাত পৌনে ১টার দিকে নির্যাতিত আঙ্গুর মিয়াকে ইউনিয়ন পরিষদ থেকে বাড়িতে নিয়ে আসেন তার পরিবারের লোকজন। স্বজনদের অভিযোগ, আপোষের জন্য এক লাখ টাকা দাবি করেন চেয়ারম্যানের লোকজন।
ঘটনাটি ঘটেছে উপজেলার খিদিরপুর ইউনিয়ন পরিষদে। মঙ্গলবার রাতে ওই ইউনিয়ন পরিষদের সামনে সাংবাদিকদের কাছে এমন অভিযোগ করেন আটকে রাখা আঙ্গুরের স্ত্রী রিমা আক্তার।
এ বিষয়ে রাত পৌনে ১২টার দিকে আঙ্গুরের মেয়ে ময়না আক্তার নিউজবাংলাকে বলেছিলেন, ‘সকাল ১০টার দিকে খিদিরপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানের লোক পরিচয় দিয়ে নিজ বাড়ি থেকে তুলে নেয় বাবাকে। তারা দুই দফায় ১০/১২জন লোক আসে তাদের মধ্যে মামুন, সাদ্দাম, নাজমুল নামে তিনজনকে চিনেছি বাকিদের চেহারা চিনি নাম জানি না। সঙ্গে আমার মাকেও নিয়ে যায়। পরে মাকে বাড়িতে পাঠিয়ে দেয়। আমার ভাইকে নিয়ে গেলে বাবাকে ছাড়া হবে। ভাই কোথায় জানিনা। এখনো মা ইউনিয়ন পরিষদের সামনে আছে বাবা বন্দি পরিষদের ভেতরে। এ ঘটনার বিচারের জন্য আমরা সকালে পুলিশের কাছে যাব।
অভিযুক্ত খিদিরপুর ইউপি চেয়ারম্যান কাউছার হোসেন বিপ্লব নিউজবাংলাকে বলেন, ‘আমাকে হেয় করতে অনেকে মাছ শিকারের চেষ্টা করছে। মূল বিষয়টা হলো আমার এলাকা থেকে গরু-ছাগল চুরির হচ্ছে ঘনঘন। গত বৃহস্পতিবার আঙ্গুরের ছেলে ছাদিকুল ছাগল চুরি করে ধরা খেয়েছে কটিয়াদি গ্রামে।
‘আজ আমার পরিষদে বিচার আসে চরসবুদ্ধি, পাড়াতলা, চরআহম্মদপুর গ্রামে থেকে ছাগল চুরি হয়েছে। এর মধ্যে চুরি হওয়া ছাগলের মালিক সোহাগ মিয়া, মানিক মিয়া ও শাহজাহান মিয়া বলেন পাড়াতলা গ্রামে আঙ্গুরের ছেলে ছাদিকুল তা চুরি করে পালিয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘পরে স্থানীয় লোকজন ক্ষিপ্ত হয়ে আঙ্গুরের বাড়িতে গিয়ে তার ছেলেকে না পেয়ে আঙ্গুর মিয়াকে জিঙ্গাসা করতে পরিষদে নিয়ে আসে। এ খবর বিকেলে ৫টার দিকে পেয়েছি। পরে পরিষদে এসে তাদের বলে যাই ইফতার, তারাবী নামাজ শেষে শালিসে বসব। এরপর আমি থানা পুলিশকে বিষয়টা অবগত করে রাত ১০টার দিকে পরিষদে আসি।’
ইউপি চেয়ারম্যানের দাবি, তার হুকুমে আঙ্গুরকে তুলে আনা হয় নাই। বরং তার আসতে দেরি হওয়ায় গ্রাম-পুলিশের পাহারায় আঙ্গুরকে আটকে রাখা হয়েছে।
তিনি বলেন, ‘তাকে কোনো নির্যাতন করা হয় নাই। আর টাকা চাওয়ার কোনো প্রমাণ দেখাতে বলেন আঙ্গুরের স্ত্রীকে।’
এদিকে খিদিরপুর ইউপির সাবেক চেয়ারম্যান মাহবুবুর রহমান জামিলের নিউজবাংলাকে বলেন, গত তিনদিন আগে ছাগল চুরি হয়ে যায় চরআহম্মদপুর গ্রামে। এ ঘটনায় ছাদিকুলকে সন্দেহ করে চেয়ারম্যান বিপ্লবের কাছে লোকজন যায়। পরে সকাল ১০টার দিকে বিল্পবের লোকেরা সন্ত্রাসী কায়দায় ছাদিকুলের বাবা আঙ্গুরকে পরিষদে নিয়ে বন্দি করে রাখে।
এ বিষয়ে মনোহরদী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. ফরিদ উদ্দিন নিউজবাংলাকে বলেন, ‘রাত ১০টার দিকে চেয়ারম্যান বিল্পব আমাকে বিষয়টা জানান। ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে।’
আরও পড়ুন:সৌদিতে সড়ক দুর্ঘটনায় প্রাণ হারানো কুমিল্লার মুরাদনগরের মামুন মিয়ার বাড়িতে চলছে মাতম।
ওমরাহ পালনের উদ্দেশ্যে স্থানীয় সময় সোমবার বিকেলে পবিত্র নগরী মক্কায় যাওয়ার পথে সৌদি আরবের আসির অঞ্চলের আবহা জেলায় ৪৭ যাত্রী নিয়ে একটি বাস ভয়াবহ দুর্ঘটনার শিকার হয়। যাত্রীদের মধ্যে ৩৫ বাংলাদেশি ছিলেন।
জেদ্দায় বাংলাদেশ কনস্যুলেট জানায়, দুর্ঘটনাস্থলটি জেদ্দা থেকে আনুমানিক ৬০০ কিলোমিটার দূরে। সবশেষ পাওয়া খবর অনুযায়ী, এই দুর্ঘটনায় ২২ জন নিহত হন।
প্রাণ হারানো ব্যক্তিদের মধ্যে ৮ বাংলাদেশি রয়েছেন। ওই আটজনের মধ্যে তিনজন কুমিল্লার। তারা হলেন জেলার মুরাদনগরের মামুন, রাসেল মোল্লা ও দেবিদ্বার উপজেলার রাজামেহার এলাকার গিয়াস হামিদ।
মামুনের বাড়ি মুরাদনগরের মোস্তাপুর গ্রামে। সৌদি আরবে ২২ বছর বয়সী এ যুবকের নিহত হওয়ার খবর পেয়ে বুধবার সকাল থেকে প্রতিবেশী ও স্বজনরা ভিড় করতে থাকেন তার বাড়িতে।
বাড়িতে দেখা যায়, মামুনের বাবা আবদুল আওয়াল তেমন কথা বলছেন না। মা মমতাজ বেগম ছেলের জন্য হাউমাউ করে কাঁদছেন। মোবাইলে ছবি দেখে বুক চাপড়াতে দেখা যায় তাকে।
আবদুল আওয়ালের তিন মেয়ে, দুই ছেলের মধ্যে মামুন মিয়া চতুর্থ। ছয় মাস আগে মামুন তার মামা ইয়ার হোসেনের মাধ্যমে সৌদিতে যান। সেখানে হোটেল বয় হিসেবে কাজ করতেন।
নিহত মামুনের মামী তাসলিমা বেগম জানান, মামুন, তার মামা ইয়ার হোসেন এবং মামুনের ভাগ্নে জাহিদুল ইসলাম বাসে করে ওমরাহ করার জন্য মক্কার উদ্দেশে রওনা হন। পথে তারা সড়ক দুর্ঘটনার শিকার হন।
তাসলিমা আরও জানান, মামুন ও স্বজনদের বহন করা বাসটি ব্রেকফেল করে একটি ব্রিজের সঙ্গে ধাক্কা খায়। পরে এতে আগুন ধরে যায়। মামুন গাড়ি থেকে বের হতে পারেননি; আগুনে পুড়ে তার মৃত্যু হয়।
এ দুর্ঘটনায় মামুনের মামা ইয়ার হোসেন ও ভাগ্নে জাহিদ গুরুতর আহত হন। তারা মক্কার একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
মামুনের বাবা আবদুল আওয়াল জানান, অন্তত ৯ মাস আগে মামুন ভিসার জন্য আবেদন করেন। বয়স কম হওয়ায় সে আবেদন বাদ দেয়া হয়। পরে ৬ মাস আগে ফের আবেদন করেন মামুন। ৫ লাখ টাকা খরচ করে তাকে সৌদিতে আরবে পাঠানো হয়। পুরো টাকা আত্মীয়স্বজন ও প্রতিবেশীদের কাছ থেকে ধার করা।
তিনি বলেন, ‘সৌদিতে সোমবার বিকেল সাড়ে ৩টায় এ দুর্ঘটনা ঘটে। আমরা খবর পাই রাত ১টার দিকে। আমার নাতি জাহিদ ফোন করে বলে নানা, মামুন মামা তো নাই। কলিজাডা ফাইট্টা গেছে কথাডা হইন্না। আমার ছেলের লাশটা আইন্না দাও; আমি দেখমু।’
ওই সময় তিনি চিৎকার করে বলেন, ‘আমার পোলাডা ১২ দিনের ছুটি পাইয়া চির ছুটিতে চইলা গেল।’
মুরাদনগর উপজেলা নির্বাহী অফিসার আলাউদ্দিন ভূঁইয়া জনি বলেন, ‘আমি নিহতের পরিবারের সঙ্গে কথা বলেছি। প্রশাসনিকভাবে পরিবারটির জন্য যা করার দরকার আমরা তাই করব।’
কুমিল্লা জনশক্তি ও কর্মসংস্থান দপ্তরের কর্মকর্তা দেব্রবত ঘোষ বলেন, ‘আমরা ঘটনা শুনেছি। মরদেহ দেশে নিয়ে আসার জন্য যা যা করতে হয়, তার সবই করব।’
আরও পড়ুন:রাজধানীর যাত্রাবাড়ীতে কিল-ঘুষিতে এক যুবক মারা গেছে। এ ঘটনায় একজনকে আটক করেছে পুলিশ।
গোলাপবাগের মানিক নগর এলাকায় মঙ্গলবার রাত সাড়ে ৮টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। আহত অবস্থায় তাকে মুগদা জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়।
২৮ বছর বয়সী আব্দুল্লাহ আল সোহানের বাড়ি পটুয়াখালী জেলার, বাউফল উপজেলার গোলাবাড়ি গ্রামে। ড্যাফোডিল ইউনিভার্সিটি থেকে লেখাপড়া শেষ করে কানাডায় যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন তিনি। তার বাবা বাউফল ২ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর।
যাত্রাবাড়ী থানার পরিদর্শক (তদন্ত) আজহারুল ইসলাম নিউজবাংলাকে এসব তথ্য জানান।
তিনি বলেন, ‘মুগদা জেনারেল হাসপাতালে যেয়ে সেখানে জানতে পারি রাত সাড়ে ৮টার দিকে গোলাপবাগ মনোয়ারা হাসপাতালের সামনে কিলঘুষির ঘটনায় সোহান নামে এক যুবক গুরুতর আহত হন। পরে এলাকার লোকজন তাকে উদ্ধার করে মুগদা হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
‘পরে সেখান থেকে মরদেহ উদ্ধার করে আইনি প্রক্রিয়া শেষে ময়নাতদন্তের জন্য ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়। তবে কী কারণে তাকে মারধর করা হলো এ বিষয়ে তদন্ত চলছে।’
নিহতের চাচতো ভাই সাগর মিয়া বলেন, ‘আমার চাচতো ভাই সোহান গত দুই বছর আগে দোলা আক্তার নামে এক মেয়েকে বিয়ে করেন কোর্ট ম্যারেজের মাধ্যমে। বিষয়টি উভয় পরিবারের লোকজন জানতেন, রাত সাড়ে ৮টার দিকে স্ত্রী দোলাকে নিয়ে তার বাবার গোলাপবাগের ভাড়া বাসায় যান। বাসা থেকে ফেরার সময় বাড়িওয়ালা জামাল মিয়ার সঙ্গে দেখা হয়, তখন জামাল মিয়া ক্ষিপ্ত হয়ে সোহানকে কিলঘুষি মারতে থাকেন। এতে সোহান অচেতন অবস্থায় মাটিতে লুটিয়ে পড়েন, পরে তাকে দ্রুত মুগদা জেনারেল হাসপাতাল নিয়ে গেলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
তিনি আরও বলেন, ‘বিয়ের বিষয়টা বাড়িওয়ালা ও আশেপাশের লোকজন জানতেন না। এ ঘটনায় মধ্যরাতে অভিযুক্ত বাড়িওয়ালা জামালকে আটক করেছে যাত্রাবাড়ী থানা পুলিশ।’
আরও পড়ুন:স্বাধীন বাংলা ছাত্র সংগ্রাম পরিষদের আহ্বায়ক ও সাবেক সংসদ সদস্য নূরে আলম সিদ্দিকীর মৃত্যু হয়েছে।
রাজধানীর একটি বেসরকারি হাসপাতালে বুধবার ভোরে তার মৃত্যু হয়।
নূরে আলম সিদ্দিকীর প্রেস সচিব অনিকেত রাজেশ নিউজবাংলাকে এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
হেলিকপ্টারে করে সকাল ১০টায় তার মরদেহ নির্বাচনী এলাকা ঝিনাইদহে নেওয়া হবে। সেখানে জানাজার পর আছরের নামাজের পর গুলশানের আজাদ মসজিদে তার জানাজা হবে। এ সময় নূরে আলম সিদ্দিকীকে ‘গার্ড অব অনার’ দেওয়া হবে। এরপর সাভারে নিজের করা মসজিদের পাশে তাকে দাফন করা হবে।
নূরে আলম সিদ্দিকীকে মুক্তিযুদ্ধের ‘চার খলিফার একজন’ হিসেবে উল্লেখ করা হয়। মুজিববাহিনীর অন্যতম কর্ণধার ছিলেন তিনি। তিনি প্রাক্তন ছাত্রলীগ ফাউন্ডেশনের আহ্বায়ক ছিলেন।
নূরে আলম সিদ্দিকী ছয় দফা আন্দোলন, ভাষা আন্দোলনে অংশগ্রহণসহ তৎকালীন সব রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে সক্রিয় ভূমিকা রাখেন। তিনি ১৯৭০-১৯৭২ মেয়াদে ছাত্রলীগের সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৭৩ সালের প্রথম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে তৎকালীন যশোর-২ আসন থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন।
এ ছাড়া ১৯৯৬ ও ২০০১ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে তিনি ঝিনাইদহ-২ আসন থেকে অংশ নিয়েছিলেন।
সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুরে তেলবাহী ট্যাংকলরির চাপায় সিএনজিচালিত অটোরিকশার দুই যাত্রী নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন আরও একজন।
উপজেলার পোতাজিয়া ইউনিয়নের গঙ্গাপ্রসাদ এলাকায় হাটিকুমরুল-নগরবাড়ী মহাসড়কে মঙ্গলবার সন্ধ্যায় এ দুর্ঘটনা ঘটে।
নিহতদের একজন অটোরিকশাচালক উপজেলার নরিনা ইউনিয়নের নাববিলা গ্রামের আব্দুল হাই। অপরজনের নাম-পরিচয় পাওয়া যায়নি। আহত মিজানুর রহমান পৌর এলাকার ছয়ানিপাড়ার বাসিন্দা। তাকে শাহজাদপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়, পরে অবস্থা গুরুতর হলে রাতেই বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিক্যাল কলেজে ভর্তি করা হয়েছে।
শাহজাদপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নজরুল ইসলাম জানান, বাঘাবাড়ী থেকে যাত্রীবাহী একটি অটোরিকশা শাহজাদপুর যাওয়ার পথে গঙ্গাপ্রসাদ এলাকায় পৌঁছালে বিপরীত দিক থেকে আসা একটি ট্যাংকলরি সেটিকে চাপা দেয়। এতে ঘটনাস্থলেই চালকসহ তিনজন আহত হন।
আহত তিনজনকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেয়া হলে সেখানে চালকের মৃত্যু হয়। পরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রাতেই আরেকজনের মৃত্যু হয়। নিহত অটোরিকশা চালকের মরদেহ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।
আরেকজনের মরদেহ হাইওয়ে পুলিশের কাছে দেয়া হয়েছে। আহত মিজানুর রহমানের অবস্থা আশংকাজনক বলে জানা গেছে।
আরও পড়ুন:চট্টগ্রামে নিখোঁজের ৮ দিন পর চতুর্থ শ্রেণি পড়ুয়া আবিদা সুলতানা আয়নীর বস্তাবন্দি মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ।
এ ঘটনায় রুবেল নামের এক সবজি ব্যবসায়ীকেও আটক করা হয়েছে।
পাহাড়তলী থানার পুকুরপাড়া মুরগীর ফার্ম এলাকা থেকে বুধবার ভোরে ওই শিশুর মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)।
আবিদা সুলতানা আয়নী নগরীর পাহাড়তলী থানার কাজীর দিঘি এলাকার আব্দুল হাদী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে চতুর্থ শ্রেণিতে পড়ত। আটক সবজি ব্যবসায়ী রুবেলও একই এলাকার বাসিন্দা।
বিষয়টি নিশ্চিত করে পিবিআই চট্টগ্রাম মেট্রোর পরিদর্শক ইলিয়াস খান বলেন, ‘১০ বছর বয়সী স্কুলছাত্রী আবিদা সুলতানা আয়নী নিখোঁজের পর পিবিআই ছায়া তদন্ত শুরু করে ঘটনার রহস্য উন্মোচন করে একজনকে আটক করে। তার দেখানো মতে পাহাড়তলী থানার আলমতারা পুকুরপাড়া মুরগীর ফার্ম এলাকা থেকে আয়নীর মরদেহ পাওয়া যায়।’
পিবিআই চট্টগ্রাম মেট্রোর পুলিশ সুপার (এসপি) নাঈমা সুলতানা সাংবাদিকদের বলেন, ‘শিশুটিকে অপহরণের পর ধর্ষণ করে রুবেল। এ সময় আয়নী চিৎকার করায় শ্বাসরোধে হত্যা করে সে। পরবর্তী সময়ে মরদেহটি বস্তাবন্দির পর সবজির ঝুড়িতে করে রাতেই পুকুরপাড়া মুরগীর ফার্ম এলাকায় ফেলে দিয়ে যায়।’
তিনি জানান, ঘটনার পর দাড়ি কেটে বেশ পরিবর্তন করলেও এলাকায় থেকে সবজি বিক্রি করে যাচ্ছিলেন রুবেল। তার আচরণে সন্দেহজনক কিছু না পাওয়ায় ঘটনার রহস্য উন্মোচনে সময় লেগেছে।
গত ২১ মার্চ আরবি পড়তে বের হয়ে নিখোঁজ হয় ১০ বছর বয়সী আবিদা সুলতানা আয়নী। অনেক খোঁজাখুঁজির পরও কোথাও না পেয়ে থানায় মামলার চেষ্টা করেন স্বজনরা, কিন্তু থানায় মামলা না নেয়ায় মঙ্গলবার সকালে চট্টগ্রামের নারী শিশু নির্যাতন দমন বিশেষ ট্রাইব্যুনাল-২- এ মামলার আবেদন করেন শিশুটির মা।
মামলায় মো. রুবেল নামের সবজি বিক্রেতাকে আসামি করা হয়। আবেদনের শুনানি শেষে আদালতের বিচারক শরমিন জাহান পাহাড়তলী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে (ওসি) সরাসরি এজাহার গ্রহণের নির্দেশ দেন।
মামলার আবেদনে বলা হয়, ওই শিশুর মা চট্টগ্রামে ও বাবা ঢাকায় পোশাক কারখানায় চাকরি করেন। মা চাকরিতে গেলে শিশুটি তার দাদির কাছে থাকত। কয়েক দিন আগে শিশুটি তার মাকে জানায়, স্কুলের এক বান্ধবী বিড়ালছানা কিনেছে, সেও কিনবে। পাশাপাশি জানায়, রাস্তায় বসা এক সবজি বিক্রেতা তাকে আরেকজনের কাছ থেকে বিড়ালের বাচ্চা এনে দেবে বলেছে, তবে শিশুটির মা তাকে জানিয়ে দেয়, কারও কাছে যেতে হবে না, বেতন পাওয়ার পর তিনিই কিনে দেবেন। এর কয়েক দিনের মাথায় শিশুটি বিকেলে আরবি পড়তে যাওয়ার পর আর ফিরে না এলে তার দাদি ফোনে কর্মস্থলে মাকে বিষয়টি জানান। এরপর শিশুটির মা দ্রুত এসে সম্ভাব্য সব স্থানে খুঁজেও তার মেয়েকে পাননি।
পরে শিশুটির মা আশপাশের ভিডিও ফুটেজ সংগ্রহ করেন। সেখানে দেখতে পান, ঘটনার আগের দিন ১২টা ৫০ মিনিটের দিকে স্কুলে বিরতির সময় রুবেল কৌশলে শিশুটিকে তার বাসায় নিয়ে যান। আর ঘটনার দিনের ভিডিও ফুটেজে দেখতে পান, বিকেল ৪টা ২৫ মিনিটের দিকে শিশুটি বোরকা পরে আরবি পড়তে যাচ্ছিল। ওই সময় রুবেলের সঙ্গে সে কথা বলছিল। একপর্যায়ে রুবেল বাজারের থলেতে একটি বিড়ালছানা শিশুটির হাতে তুলে দেয়। এরপর রুবেল ও শিশুটিকে আর দেখা যায়নি।
শিশুটির পরিবারের ধারণা, বিড়ালছানার নাম করেই বাসায় নিয়ে যাওয়া হয়েছিল শিশুটিকে।
সিসিটিভি ফুটেজ দেখে অজ্ঞাত ব্যক্তিদের সহযোগিতায় আয়নীকে রুবেল অপহরণ করেছে বলে অভিযোগ করে আসছিলেন শিশুটির মা।
চট্টগ্রামে গত বছরের অক্টোবর ও নভেম্বরে নিখোঁজের পর দুটি শিশুর মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ।
২৪ অক্টোবর চিপস কিনতে বের হয়ে নগরীর জামালখান এলাকায় নিখোঁজ হয় ৭ বছর বয়সী মার্জনা হক বর্ষা। এর তিন দিন পর একই এলাকার একটি নালা থেকে বর্ষার বস্তাবন্দি মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। ওই শিশুকে ধর্ষণের পর হত্যার দায়ে লক্ষণ দাশ নামের এক দোকান কর্মচারীকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
এরপর ১৫ নভেম্বর নগরীর ইপিজেড থানার বন্দরটিলা নয়ারহাট বিদ্যুৎ অফিস এলাকার বাসা থেকে পার্শ্ববর্তী মসজিদে আরবি পড়তে যাওয়ার সময় নিখোঁজ হয় আলিনা ইসলাম আয়াত। পরদিন এ ঘটনায় ইপিজেড থানায় নিখোঁজের ডায়েরি করেন তার বাবা সোহেল রানা।
নিখোঁজের ৯ দিন পর সিসিটিভি ফুটেজ দেখে জড়িত সন্দেহে আয়াতের পরিবারের ভাড়াটিয়া আবির আলীকে গ্রেপ্তার করে পিবিআই। মুক্তিপণ আদায়ের উদ্দেশ্যে আয়াতকে অপহরণের পর শ্বাসরোধে হত্যা করেছিলেন বলে আদালতে জবানবন্দি দেয় আবির। এরপর পিবিআইয়ের কয়েক দফা চেষ্টায় নগরীর আকমল আলী সড়কের আশেপাশে বিভিন্ন জলাশয় থেকে আয়াতের খণ্ডিত পা ও মাথা উদ্ধার করা হয়।
আরও পড়ুন:ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের মুন্সীগঞ্জের গজারিয়া অংশে ঢাকামুখী লেনে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের অষ্টমী স্নানের কারণে যানবাহনের চাপে তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়েছে। দীর্ঘ সময় যানজটে আটকে থেকে দুর্ভোগ পোহাচ্ছে মানুষ।
গজারিয়া ভবেরচর হাইওয়ে পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ এ.এস.এম. রাশেদুল ইসলাম বলেন, সনাতন ধর্মাবলম্বীদের অষ্টমী স্নানের কারণে মহাসড়কে যানবাহনের চাপ স্বাভাবিকের তুলনায় অনেক বেড়ে গেছে। যানবাহনের চাপে প্রথমে নারায়ণগঞ্জ সোনারগাঁও অংশে সৃষ্টি হয় যানজট।
মঙ্গলবার রাত ১টার দিকে গজারিয়া অংশে যানজট চলে আসে যা পরবর্তীতে দাউদকান্দির টোল প্লাজা পেরিয়ে দাউদকান্দি মোহন সিএনজি পাম্পের সামনে পর্যন্ত পৌঁছে যায়। যানজট নিয়ন্ত্রণে পুলিশ সদস্যরা চেষ্টা করে যাচ্ছেন।
যানজটে আটকে থাকা আসলাম হোসেন জানান, তার বাসা গজারিয়ায়। তিনি বাড়ি থেকে আসা-যাওয়া করে ঢাকাতে চাকরি করেন। প্রতিদিনই পৌনে ৭টার দিকে বাড়ি থেকে বের হন এবং যথাসময়ে অফিসে পৌঁছে যান। তবে আজকে মহাসড়কে তীব্র যানজটের কারণে ৮টা বাজলেও তিনি মেঘনা টোল প্লাজা পার হতে পারেননি। সেজন্য বাড়ি ফিরে যাচ্ছেন।
সনাতন ধর্মাবলম্বীদের অন্যতম ধর্মীয় উৎসব মহাতীর্থ লাঙ্গলবন্দের অষ্টমী স্নান শুরু হয় মঙ্গলবার। এদিন সন্ধ্যা ৭টা ৫ মিনিটে লগ্ন শুরু হয়। একবারের অষ্টমী স্নান উৎসব দেশ-বিদেশ মিলিয়ে ১০ লাখের বেশি পুণ্যার্থীর আগমন ঘটেছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
হিন্দু শাস্ত্র মতে, দেবতা পরশুরাম হিমালয়ের মানস সরোবরে স্নান করে পাপমুক্ত হন। হিমালয়ের মানস সরবরের পানি ব্রহ্মপুত্র নদে মিশেছে। প্রতি বছর চৈত্র মাসে পূণ্য লাভের আশায় হিন্দু ধর্মাবলম্বীরা জড়ো হন নারায়ণগঞ্জের লাঙ্গলবন্দের ব্রহ্মপুত্র নদে। সেখানে স্নান করে নিজেদের পাপমোচন করেন। দেশের বাইরে থেকেও অনেকে আসেন এই অষ্টমী স্নানে।
আরও পড়ুন:
মন্তব্য