বঙ্গবন্ধু টি-টোয়েন্টি কাপ শুরুর ঠিক আগে আগে অনুশীলনে গা গরমের ফুটবল খেলার সময় গোড়ালির চোটে পড়েন মিনিস্টার গ্রুপ রাজশাহীর অলরাউন্ডার মোহাম্মদ সাইফুদ্দিন। ছিটকে যান প্রায় দুই সপ্তাহের জন্য।
সেই চোট থেকে যতদিনে সেরে উঠে মাঠে ফিরেছেন, তত দিনে পাঁচ ম্যাচ খেলে ফেলেছে রাজশাহী। তাতে দুই জয় ও তিন হার প্রমাণ করে, যাকে ঘিরে সাজানো হয়েছিল দল, তার অভাবে বেশ ভুগেছে রাজশাহী।
এই চোট আবারও তুলে নিয়ে এসেছে একটি প্রশ্ন। গা গরম করার জন্য ফুটবল কি আদৌ জরুরি?
ফুটবল খেলতে গিয়ে চোট নতুন কিছু নয় বাংলাদেশের ক্রিকেটে। ২০১৮ সালে ফুটবল খেলতে গিয়ে চোটে পড়েন মুশফিকুর রহিম ও নাসির হোসেন। মুশফিকের চোট বড় না হলেও হ্যামস্ট্রিংয়ের চোটে পড়ে নাসির ছিটকে গিয়েছিলেন লম্বা সময়ের জন্য। সেই ইনজুরি থেকে ফেরার পর আর জাতীয় দলে নিয়মিত হতে পারেননি এক সময় ‘দ্য ফিনিশার’ খ্যাতি পাওয়া এই অলরাউন্ডার।
এই বছরের শুরুতেই অনুশীলনে ফুটবল নিষিদ্ধ করে ইংল্যান্ড। বিশ্বচ্যাম্পিয়নদের এই সিদ্ধান্ত আসে যখন ফুটবল খেলতে গিয়ে চোটে পড়ে যখন সাউথ আফ্রিকার বিপক্ষে সিরিজ থেকে ছিটকে যান ররি বার্নস।
২০১৮ সালে মুশফিকের ইনজুরির পর বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি) কিছু বিধি-নিষেধ এনেছিল ফুটবল খেলার ওপর।
সাবেক বাংলাদেশ পেসার তালহা জুবায়ের জানালেন, আগের মতো নিয়মিত খেলা হয় না ফুটবল, ইনজুরির ভয়েই।
‘আগে যেমন নিয়মিত হতো, ফুটবল এখন অনেক কমে গিয়েছে ইনজুরির ভয়ে। ঘরোয়াতে হলেও জাতীয় দল বা অনুর্ধ্ব ১৯ পর্যায়ে কিন্তু ফুটবল হয় না, ফুটসালের মত কিছু একটা হয়’, বলেন তালহা।
ফুটবলে বিপদ
গা গরমের ফুটবলে সাধারণত খেলা হয় ধীরে-সুস্থে। বিসিবির প্রধান চিকিৎসক দেবাশীষ চৌধুরি জানালেন, সমস্যাটা হয় যখন খেলোয়াড়রা কঠোরভাবে খেলা শুরু করে।
‘ফুটবল একটা ভালো ওয়ার্ম আপ পদ্ধতি। আপনি যদি নিয়ম মেনে খেলেন, তাহলে অত বেশি সমস্যা হবে না। খেলোয়াড়রা যখন খেলতে যায় তখন অনেকে মনে রাখতে পারে না যে এটা ওয়ার্ম আপ গেম। ওরা সিরিয়াসলি খেলা শুরু করে। তখন গিয়ে ঝামেলাগুলো হয়’, বলেন দেবাশীষ।
তালহাও জানান, আগে গুরুত্ব দিয়ে খেলার কারণে ইনজুরি হতো বেশি। তিনি বলেন, ‘আগে যেমন হতো যে সিরিয়াস খেলছে, ইনজুরিও হয়। ওই রিস্ক থেকে চিন্তা করে অনেকেই ফুটবলটাকে এড়িয়ে যায়।’
বিকেএসপির ক্রিকেট উপদেষ্টা নাজমুল আবেদীন ফাহিম জানান, কোন খেলার দিন সকালে হুট করে কারও চোটে পড়াটা কাম্য নয়। খেলোয়াড়রা বরং চান, চাপহীন পরিবেশে প্রস্তুতি নিতে।
‘অবশ্যই, এটা (চোট) হতেই পারে। এবং হয়নি যে তা না কিন্তু। ওয়ার্ম আপের সময় চোটের কারণে একটা বড় ম্যাচ খেলতে পারলো না, এমন কিন্তু হয়েছে। আমরা কেউ চাইব না একটা আন্তর্জাতিক ম্যাচের আগে ফিট একটা প্লেয়ার ওয়ার্ম আপের সময় ইনজুরড হয়ে গেল। সবাইকে একটা বিপদহীন একটা পরিবেশ চাইবে। সেক্ষেত্রে ফুটবল অবশ্যই ঝুঁকিপূর্ণ’, বলেন ফাহিম।
ফুটবল খেলা জরুরী নয়
গা গরম করতে হলে ফুটবলই খেলতে হবে, এমন কোনো নিয়ম নেই। তবে ওয়ার্ম আপের সময় কিছু মুভমেন্টের মধ্যে থাকতে হয় দেখেই ফুটবল খেলা অভিমত দেশের অন্যতম সেরা ক্রিকেট কোচ নাজমুল আবেদীন ফাহিমের।
‘এটা (ফুটবল খেলে গা গরম) করতেই হবে এমন কোন কথা নেই। পৃথিবীর অনেক দল আছে যারা কখনই ফুটবল খেলে না। আমাদের দেশে ছেলেরা ফুটবল খেলতে পছন্দ করে। এটা ওয়ার্ম আপের একটা প্রয়োজনীয় অংশ হিসেবে করে তা না। ওয়ার্ম আপের সময় একটু মুভমেন্টের মধ্যে থাকতে হয়, সেটা ওরা ফুটবল খেলে করে নেয়। এটা আবশ্যিক নয় যে ফুটবল খেলেই ওয়ার্ম আপ করতে হবে’, জানান ফাহিম।
তালহা জানান, ফুটবলটা ঠিক গা গরমের অংশ নয়। ফুটবলটা বরং খেলা হয় আনন্দের জন্য।
‘ওয়ার্ম আপ তো বেসিক্যালি ফুটবল দিয়ে হয় না, ট্রেনার সেটি করায়। ফুটবলটা ফান গেমের মত থাকে। টিমের মধ্যে একটু আনন্দ দরকার থাকে। একটা প্রেশার ম্যাচে নামার আগে যদি সবাই একটু হালকা থাকে’, বলেন তালহা।
সাবেক পেসার হাসিবুল হোসেন শান্তও জানালেন, টিম স্পিরিট বাড়াতে সাহায্য করে ফুটবল। তিনি বলেন, ‘সাবধান থেকে ফুটবল খেলতে পারলে গা গরমের সাথে টিমের স্পিরিটটাও একটু বাড়বে। এটা নির্ভর করে। আমি বলছি না যে ফুটবল খেলাই যাবে না।’
ফুটবল বাদ দেওয়াই কি সমাধান?
ইংল্যান্ড যেমন ফুটবল নিষিদ্ধ করেছে তাদের অনুশীলন থেকে, তেমনি করে বাদ দিয়ে দিলে ইনজুরি-ভীতি কমে আসবে অনেকটাই।
তবে সেটি এখনই করতে রাজি নন বিসিবির ফিটনেস ট্রেনার তুষার কান্তি হাওলাদার। তার মতে, বাদ দিলে তার আপত্তি নেই, কিন্তু নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারলে ফুটবলে তেমন সমস্যা নেই।
‘আমি বলব, ফুটবল বিনোদন হিসেবে খেললে সেটা খারাপ না, কিন্তু সেটাকে নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। যদি না খেলে তাহলে অবশ্যই ভালো। তাহলে তো কোন ঝুঁকিই থাকল না’, বলেন তুষার।
তুষার ভারতের অনুশীলন দেখার অভিজ্ঞতা নিয়ে জানালেন, তারা ফুটবলটা খেলে নিয়ন্ত্রণ করে। শচীন বল পায়ে এগিয়ে যাচ্ছেন, কিন্তু তাকে কড়া ট্যাকেল করতে এগুচ্ছেন না কেউ। এমন ফুটবলে আপত্তি নেই তুষারের।
‘আমার দেখার সৌভাগ্য হয়েছে ভারত দল ফুটবল খেলে। শচীন বল নিয়ে দৌড়াচ্ছে, কেউ তাকে চার্জ করছে না। চার-পাচ স্টেপ যাচ্ছে, বল ছেড়ে দিচ্ছে, খেলছে। যে খেলাটা নিয়ন্ত্রণ করবে সে যদি বিনোদন হিসেবে নিয়ন্ত্রণ করতে পারে, সেটা ঠিক আছে’, যোগ করেন তুষার।
পরিত্রাণের উপায় কী?
নাজমুল আবেদিন ফাহিমের মতে, এমন কোনো খেলা বেছে নেওয়া উচিত গা গরমের জন্য, যেটা সবাই উপভোগ যেমন করবে, তেমনি শারীরিক কোন সংস্পর্শ হবে না।
‘যে কোনো মুভমেন্ট যেটায় শারীরিক সংস্পর্শ হবে না, এমন যেকোন মুভমেন্ট, যে কোনো খেলাই চলবে। অন্য কোনো একটা খেলার মধ্য দিয়ে হলে, সবাই সেটা উপভোগ করতে পারে। কিন্তু এমন কিছু করা উচিত যেটায় শারীরিক সংস্পর্শ হবার সম্ভাবনা নেই। তাহলে কোনো সমস্যা নেই, যে কোনো অ্যাকটিভিটি হতে পারে’, বলেন ফাহিম।
ড. দেবাশীষ অবশ্য বাদ দেওয়ার পক্ষপাতি নন। তার মতে, তার চেয়ে বরং একটু পরিবর্তন আনা যায় গা গরমের ফুটবলে।
‘এখন ওয়ার্ম আপের অন্যান্য অংশ থেকে কি ইনজুরি হচ্ছে না? আপনি যখন ব্যাটিং, বোলিং বা থ্রোয়িং প্র্যাকটিস করছেন, তখন মানুষের হাতে ফ্র্যাকচার হচ্ছে, ব্যথা হচ্ছে, তাহলে কি আপনি ট্রেনিং বন্ধ করে দেবেন? যেটা আপনি করছেন, সেটার গতি নিয়ন্ত্রণ করাটা গুরুত্বপূর্ণ। এটা বাদ দেয়ার কিছু নেই। এটাকে পরিশ্রুত করতে পারেন’, বলেন বিসিবির প্রধান চিকিৎসক।
আরও পড়ুন:দুই ম্যাচ সিরিজের প্রথম টেস্টের প্রথম ইনিংসে ভারতের ৩৭৬ রানের জবাব দিতে নেমে ব্যাটিং বিপর্যয়ে পড়েছে সফরকারী বাংলাদেশ।
৯ ওভারে ৩ উইকেটে ২৬ রান তুলে দ্বিতীয় দিনের মধ্যাহ্ন-বিরতিতে যায় টাইগাররা। সাত উইকেট হাতে নিয়ে তখনও ৩৫০ রানে পিছিয়ে ছিল বাংলাদেশ।
আজ দ্বিতীয় দিন ভারতের ইনিংস শেষ হওয়ার পর ব্যাট হাতে নেমে শুরুতেই চাপে পড়ে বাংলাদেশ। প্রথম ওভারের শেষ বলে ভারতীয় পেসার জসপ্রিত বুমরাহর শিকার হন ওপেনার সাদমান ইসলাম (২)।
এরপর নবম ওভারে প্রথম দুই বলে দুই উইকেট নেন ভারতের আরেক পেসার আকাশ দীপ।
ওপেনার জাকির হাসানকে ৩ ও মোমিনুল হককে খালি হাতে বিদায় করেন আকাশ। ২২ রানে তৃতীয় উইকেট হারায় টাইগাররা।
অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্ত ১৫ ও মুশফিকুর রহিম ৪ রান নিয়ে প্রথম সেশন শেষ করেন। ভারতের আকাশ দুটি ও বুমরাহ একটি উইকেট নেন।
এর আগে বাংলাদেশের দুই পেসার হাসান মাহমুদ ও তাসকিন আহমেদের বোলিং নৈপুণ্যে প্রথম ইনিংসে ৩৭৬ রানে অলআউট হয় স্বাগতিক ভারত। স্বাগতিক দলের পক্ষে রবীচন্দ্রন অশ্বিন ১০২ ও রবীন্দ্র জাদেজা ৮৬ রান করেন।
বল হাতে বাংলাদেশের হাসান ৮৩ রানে ৫ এবং তাসকিন ৫৫ রানে ৩ উইকেট নেন।
৪ ম্যাচের টেস্ট ক্যারিয়ারে দ্বিতীয়বার এবং ভারতের মাটিতে প্রথম বাংলাদেশি বোলার হিসেবে ইনিংসে ৫ উইকেট নিলেন হাসান।
আরও পড়ুন:ভারতের বিপক্ষে চেন্নাই টেস্টের প্রথম ঘণ্টায় তিন উইকেট শিকার করেছেন বাংলাদেশের ডানহাতি পেসার হাসান মাহমুদ।
টস জিতে প্রথমে বোলিং করার সিদ্ধান্ত নেয় বাংলাদেশ। উইকেটের আর্দ্রতা কাজে লাগাতে এ সিদ্ধান্ত বলে জানান বাংলাদেশ অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্ত।
হাসানের প্রথম শিকার হন রোহিত শর্মা। বল ব্যাটের কানায় লেগে বল গিয়ে পড়ে অধিনায়ক শান্তর হাতে। ছয় রান করে সাজঘরে ফেরেন ভারত অধিনায়ক।
এরপর ফুল লেংথ ডেলিভারিতে শুভমান গিলকে আউট করেন হাসান। উইকেটকিপার লিটনের হাতে ক্যাচ দিয়ে শূন্য রানে মাঠ ছাড়েন ওয়ান ডাউন ব্যাটার।
দুই উইকেট পাওয়ার পর দুর্দান্ত বোলিংয়ে হাসান নিয়ে নেন বিরাট কোহলির মোস্ট ওয়ান্টেড উইকেট। অফ স্টাম্পের বাইরের বল মারতে গিয়ে উইকেটকিপারের গ্লাভসে বল তুলে দেন কোহলি। সাজঘরে ফেরার আগে ছয় রান করেন তিনি।
ম্যাচের প্রথম ঘণ্টায় তিন উইকেট নিয়ে নেয় বাংলাদেশ। রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত মাঠে লড়ছিলেন যশস্বী ও ঋষভ। ২৩ ওভার শেষে ৩ উইকেট হারিয়ে ভারতের সংগ্রহ ৮৮ রান।
বাংলাদেশের প্রথমে বোলিং করার সিদ্ধান্তে বিস্মিত হয়েছেন ক্রিকেটবোদ্ধারা। কেননা ১৯৮২ সালের পর এই প্রথম কোনো দল চেন্নাইয়ে টেস্টে প্রথমে বোলিংয়ের সিদ্ধান্ত নিল।
প্রথম ঘণ্টায় হাসানের দুর্দান্ত বোলিংই প্রমাণ করে দিল যে, টসে জিতে বোলিং নেয়ার সিদ্ধান্ত ভুল হয়নি।
আরও পড়ুন:ভারতের বিপক্ষে দুই ম্যাচ সিরিজের প্রথম টেস্টে টস জিতে শুরুতে বোলিংয়ের সিদ্ধান্ত নিয়েছে বাংলাদেশ।
বাংলাদেশের প্রথমে বোলিংয়ের এ সিদ্ধান্ত বিস্ময়ের সৃষ্টি করেছে। চেন্নাইয়ে শেষবার ১৯৮২ সালে টস জিতে কোনো দল প্রথমে বোলিং করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল।
বোলিং বেছে নিয়ে বাংলাদেশ অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্ত জানান, উইকেটে আর্দ্রতা আছে এবং তারা ম্যাচের প্রথম ঘণ্টায় একে কাজে লাগাতে চান।
সফরকারীরা তিন পেসার ও দুই অলরাউন্ডার নিয়ে মাঠে নেমেছে। পাকিস্তানের বিপক্ষে জয় পাওয়া সিরিজেও তারা একই পদ্ধতিতে এগিয়েছিল।
স্বাগতিক ভারতও তিন পেসার নিয়ে খেলছে। সঙ্গে আছে দুই স্পিনার।
এর আগে ভারতের বিপক্ষে ১৩টি টেস্ট খেললেও একটিতেও জয় পায়নি বাংলাদেশ, তবে সম্প্রতি পাকিস্তানের মাটিতে ঐতিহাসিক সিরিজ জয়ের পর ভারতকে কঠিন চ্যালেঞ্জ উপহার দেয়ার বিষয়ে আশাবাদী বাংলাদেশ।
বাংলাদেশ একাদশ: সাদমান ইসলাম, জাকির হাসান, নাজমুল হোসেন শান্ত (অধিনায়ক), মুমিনুল হক, মুশফিকুর রহিম, সাকিব আল হাসান, লিটন দাস (উইকেটরক্ষক), মেহেদী হাসান মিরাজ, হাসান মাহমুদ, নাহিদ রানা ও তাসকিন আহমেদ।
ভারত একাদশ: রোহিত শর্মা (অধিনায়ক), যশস্বী জয়সওয়াল, শুভমান গিল, বিরাট কোহলি, লোকেশ রাহুল, ঋষভ পন্থ (উইকেটরক্ষক), রবীন্দ্র জাদেজা, রবিচন্দ্রন অশ্বিন, জাসপ্রিত বুমরাহ, আকাশ দীপ ও মোহাম্মদ সিরাজ।
আরও পড়ুন:চলতি সপ্তাহেই ভারতের বিপক্ষে দুই ম্যাচের টেস্ট সিরিজ শুরু করবে বাংলাদেশ।
আসন্ন সিরিজটি বাংলাদেশের জন্য সহজ হবে না বলে মনে করেন ভারতের সাবেক অধিনায়ক সৌরভ গাঙ্গুলী।
তার মতে, পাকিস্তানের বিপক্ষে সিরিজ জিতলেও ভারতের সামনে কঠিন চ্যালেঞ্জের মুখে পড়তে হবে বাংলাদেশকে। কারণ পাকিস্তান ও ভারত দলের মধ্যে পার্থক্য আছে।
সদ্য পাকিস্তানের মাটিতে দুই ম্যাচের টেস্ট সিরিজ ২-০ ব্যবধানে জিতেছে বাংলাদেশ। দলটির বিপক্ষে প্রথমবারের মতো ঐতিহাসিক সিরিজ জয়ের নজির গড়ে টাইগাররা।
পাকিস্তানের বিপক্ষে প্রথম টেস্ট সিরিজ জয়ে আত্মবিশ্বাস টগবগ করছে বাংলাদেশ দলে, কিন্তু ভারত সিরিজ বাংলাদেশের জন্য কঠিন হবে বলে মন্তব্য করেন গাঙ্গুলী।
সিএবির বার্ষিক পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠান শেষে শনিবার স্থানীয় গণমাধ্যমে বাংলাদেশ-ভারত টেস্ট সিরিজ নিয়ে গাঙ্গুলী বলেন, ‘ভারতের বিপক্ষে বাংলাদেশের লড়াই সহজ হবে না। বাংলাদেশকে সম্পূর্ণ সমীহ করেই বলছি, বর্তমানে পাকিস্তান আর ভারত এক রকম দল নয়।
‘দুই দলের মধ্যে পার্থক্য আছে। ভারতকে শুধু নিজেদের দেশেই নয়, বিদেশেও খেলা কঠিন।’
তিনি আরও বলেন, ‘পাকিস্তানের বিপক্ষে সিরিজ জয়ে আত্মবিশ্বাসী বাংলাদেশ, কিন্তু ভারতের বর্তমান দলটি অনেক বেশি শক্তিশালী। তারপরও বাংলাদেশের বিপক্ষে সেরা প্রস্তুতি নিতে হবে ভারতকে।’
১৯ সেপ্টেম্বর থেকে চেন্নাইয়ে সিরিজের প্রথম টেস্ট খেলতে নামবে বাংলাদেশ-ভারত। চেন্নাইয়ের উইকেট নিয়ে জল্পনা-কল্পনা শুরু হয়ে গেছে। সাধারনত ঘরের মাঠের সিরিজে স্পিন সহায়ক উইকেটেই তৈরি করে ভারত।
আরও পড়ুন:বাংলাদেশ ক্রিকেট দলকে অভিনন্দন জানিয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস।
পাকিস্তানে ঐতিহাসিক টেস্ট সিরিজ জয়ী ক্রিকেট দল বৃহস্পতিবার প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে সাক্ষাৎ করতে গেলে ক্রিকেটারদের অভিনন্দন জানান তিনি। এ সময় উপস্থিত ছিলেন যুব ও ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া।
এছাড়া বিসিবির নতুন সভাপতি ফারুক আহমেদ, পরিচালক নাজমুল আবেদীন ফাহিম ও প্রধান নির্বাহী নিজামউদ্দিন চৌধুরী সুজন সেখানে ছিলেন।
ড. ইউনূস ক্রিকেটারদের ব্যক্তিগতভাবে শুভেচ্ছা জানান। তিনি প্রত্যেকের সঙ্গে কুশল বিনিময় করেন এবং সামনের দিনগুলোতে আরও ভালো খেলার জন্য তাদেরকে উৎসাহ দেন।
প্রসঙ্গত, সম্প্রতি পাকিস্তানের মাটিতে স্বাগতিকদের বিপক্ষে দুই ম্যাচের টেস্ট সিরিজ জিতেছে লাল-সবুজের দল। টেস্ট স্ট্যাটাস অর্জনের ২৪ বছর পর এই সিরিজেই এসেছে পাকিস্তানের বিপক্ষে প্রথম টেস্ট ম্যাচ জয়। প্রথম টেস্টে ১০ উইকেটের বিশাল জয়ের পর দ্বিতীয় টেস্টেও এসেছে ৬ উইকেটের অসামান্য এক জয়।
প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস ঐতিহাসিক ওই জয়ের পরপরই জাতীয় ক্রিকেট দলের অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্তকে ফোনে করে তাকে এবং দলকে অভিনন্দন জানান।
আরও পড়ুন:বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) পরিচালকের পদ থেকে পদত্যাগ করেছেন জাতীয় দলের সাবেক অধিনায়ক খালেদ মাহমুদ সুজন। বুধবার বিসিবিতে তিনি পদত্যাগপত্র জমা দিয়েছেন।
সুজন ২০১৩ সালে নির্বাচনে গাজী আশরাফ হোসেনকে হারিয়ে বিসিবি পরিচালক হন। তারপর থেকে গত ১১ বছরে বিসিবির বিভিন্ন কমিটিতে গুরুত্বপূর্ণ পদে দায়িত্ব পালন করেন তিনি।
সবশেষ বিসিবির গেম ডেভেলপমেন্ট বিভাগের প্রধান ছিলেন ৫৩ বছর বয়সী এই সাবেক ক্রিকেটার। সঙ্গে বিসিবির ক্রিকেট অপারেশন্স বিভাগের সহ-সভাপতির ভূমিকায়ও দেখা গেছে তাকে।
বিসিবিতে খালেদ মাহমুদ সুজনের মেয়াদকালে ২০২০ সালে দক্ষিণ আফ্রিকায় অনুষ্ঠিত অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপ জেতে বাংলাদেশ অনূর্ধ্ব-১৯ দল। এছাড়া চলতি বছর সংযুক্ত আরব আমিরাতে অনুষ্ঠিত অনূর্ধ্ব-১৯ এশিয়া কাপও জিতেছে যুবাদের দল।
বোর্ড পরিচালক থাকাকালে সুজন আরও কিছু দায়িত্ব পালন করেছেন। বাংলাদেশ জাতীয় দলের অন্তর্বর্তীকালীন কোচ ও ম্যানেজারের ভূমিকায় কাজ করেছেন তিনি।
পরিচালক হিসেবে বোর্ডের দায়িত্ব পালনের পাশাপাশি বেশ কয়েকবার বাংলাদেশ জাতীয় দলের পরিচালক হিসেবেও তিনি দায়িত্ব পালন করেন। তবে, বহুদিন ধরে বিসিবির একাধিক কমিটির বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পদে থাকায় তাকে নিয়ে সমালোচনাও হয়েছে। একজন ব্যক্তি একসঙ্গে এতগুলো দায়িত্ব কীভাবে পালন করছেন, এ নিয়ে নানা সময়ে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে থেকেছেন তিনি।
গত ৫ আগস্ট সরকার পতনের পর থেকে বিসিবিতে পদত্যাগের মিছিল চলছে। সুজনের আগে পরিচালকের পদ থেকে সরে দাঁড়িয়েছেন জালাল ইউনুস, আহমেদ সাজ্জাদুল আলম, শফিউল আলম চৌধুরী নাদেল ও নাঈমুর রহমান দুর্জয়।
আরও পড়ুন:হারারে বোল্টসের সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ হয়ে জিম আফ্রো টি-টেনে জায়গা নিশ্চিত করেছেন জাতীয় ক্রিকেট দলের লেগ স্পিনার রিশাদ হোসেন।
গত সপ্তাহে বিগ ব্যাশ লিগের (বিবিএল) জন্য হোবার্ট হারিকেন্সও রিশাদকে দলে নিয়েছিল।
সাকিব আল হাসানের পরে দ্বিতীয় বাংলাদেশি হিসেবে বিবিএল দলে যোগ দিয়েছিলেন তিনি।
গত বছর জিম আফ্রো টি-টেনেও অংশ নিয়েছিলেন মুশফিকুর রহিম ও তাসকিন আহমেদ।
যুক্তরাষ্ট্র ও ওয়েস্ট ইন্ডিজে অনুষ্ঠিত সর্বশেষ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে বাংলাদেশের সেরা বোলার ছিলেন রিশাদ।
অভিষেক বিশ্বকাপে ১৪ উইকেট নিয়ে অনন্য পারফরম্যান্সের জন্য ক্রিকেট কিংবদন্তিদের প্রশংসা কুড়িয়েছেন এ লেগ স্পিনার।
আরও পড়ুন:
মন্তব্য