২০০৬ সালে জাতীয় দলে অভিষেকের পর থেকে বাংলাদেশের সবচেয়ে ধারাবাহিক ও গুরুত্বপূর্ণ ক্রিকেটার হিসেবে নিজেকে গড়ে তুলেছেন সাকিব আল হাসান। অসংখ্য স্মরণীয় পারফর্মেন্সের উজ্জ্বল তার এই দীর্ঘ ক্রিকেট যাত্রা। ‘ফিরছেন সাকিব’ সিরিজের শুরুতে থাকছে তার দীর্ঘ ক্যারিয়ারের সেরা পাঁচ কীর্তি।
সাকিবের ‘বাংলাওয়াশ’
২০১০ সালে বাংলাদেশে নিউ জিল্যান্ড এসেছিল ওয়ানডে সিরিজ জয়ের স্বপ্ন নিয়েই। সেই স্বপ্ন ব্ল্যাকক্যাপদের জন্য পালটে যায় রীতিমতো দুঃস্বপ্নে।
সিরিজে সাকিব ব্যাটিং ও বোলিং-দুইয়েই ছিলেন সেরা। ব্যাট হাতে ৭১ গড়ে ২১৩ রান। সঙ্গে ১৫.৯ গড়ে ১১ উইকেট। সিরিজের মোস্ট ভ্যালুয়েবল প্লেয়ার হয়েছিলেন সাকিব।
প্রথম ম্যাচে ছিলেন না তামিম ইকবাল। বোলিংয়ের সময় প্রথম ওভারে ইনজুরিতে পড়েন মাশরাফি বিন মোর্ত্তজা। অধিনায়কত্বের বাড়তি চাপ চলে আসে সহ-অধিনায়ক সাকিবের কাঁধে। সেই চাপই যেন বের করে আনে সাকিবের সেরাটা। ব্যাট হাতে ফিফটির পাশাপাশি বোলিংয়ে চার উইকেট নিয়ে একাই বধ করেন সফরকারীদের।
বৃষ্টিতে ভেসে যায় দ্বিতীয় ম্যাচ। তিন নম্বর ম্যাচে দুই উইকেটের পাশাপাশি ব্যাট হাতে ৭ বলে ১৩ রানে অপরাজিত থেকে জয় নিয়ে ফেরেন সাকিব।
সিরিজ নির্ধারণী চতুর্থ ম্যাচে ছিল সাকিব শো। ব্যাট হাতে করেন সেঞ্চুরি। বল হাতে তিন উইকেট। তাতেই ম্লান কেন উইলিয়ামসনের শতক। সিরিজ জয় নিশ্চিত হয় বাংলাদেশের।
শেষ ম্যাচে বাংলাদেশের ১৭৪-এ সাকিবের অবদান ৩৬। বল হাতে নেন দুই উইকেট। সেই ম্যাচ জিতেই নিশ্চিত হয় বাংলাওয়াশ, নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ৪-০তে সিরিজ জেতে বাংলাদেশ।
আক্ষেপের এশিয়া কাপ, সাকিবের এশিয়া কাপ
২০১২ সালের এশিয়া কাপ বাংলাদেশ ক্রিকেটে এক চিরকালীন আফসোস। ফাইনালের দুই রানের আক্ষেপ অনেক দিন পুড়িয়েছে বাংলাদেশকে। সাকিবের আর মুশফিকের কান্নার ছবি ছিল লাখো ভক্তের হৃদয় ভাঙার প্রতিচ্ছবি।
শেষটা হৃদয়বিদারক হলেও পুরো টুর্নামেন্টই ছিল সাকিবময়। চার ম্যাচে করেছিলেন তিন ফিফটি। ভারতের বিপক্ষে করেন ৪৯। দুইবার পেয়েছেন ম্যান অফ দ্য ম্যাচের পুরস্কার।
টুর্নামেন্টের প্রথম ম্যাচে এক প্রান্ত আগলে রেখেছিলেন। সঙ্গীর অভাবে দলকে জেতাতে পারেননি। বাকি দুই ম্যাচে তেমনটি হয়নি। সাকিবের গড়ে দেওয়া ভিতে ভর করে জয় পায় বাংলাদেশ। প্রথমবারের মতো পৌঁছায় এশিয়া কাপ ফাইনালে।
ফাইনালেও ফিফটি করেন সাকিব। তা যথেষ্ট ছিল না বাংলাদেশকে শিরোপা জেতাতে। তারপরও তিন ফিফটিতে ২৩৭ রান ও ছয় উইকেট নিয়ে টুর্নামেন্ট সেরা হয়েছিলেন সাকিব।
রাজসিক প্রত্যাবর্তন
শৃঙ্খলাভঙ্গের অভিযোগে ২০১৪ সালে সাকিব নিষিদ্ধ হন ছয় মাসের জন্য। পরে নিষেধাজ্ঞা কমিয়ে আনা হয় তিন মাসে। জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে সিরিজে ফেরেন আহত বাঘের মতো।
প্রথম টেস্টের প্রথম ইনিংস সাকিব পকেটে পুরেন ছয় উইকেট। দ্বিতীয় টেস্টে যা করেন, তা সাকিবকে নিয়ে যায় ইতিহাসের পাতায়। এক টেস্টে সেঞ্চুরি ও ১০ উইকেটে বিরল রেকর্ড গড়েন এই সব্যসাচী। টেস্টের ১৪৩ বছরের ইতিহাসে যা ঘটে তার আগে মাত্র দুই বার।
খুলনায় দ্বিতীয় টেস্টে সাকিবের ১৩৭ ও তামিমের সেঞ্চুরিতে বাংলাদেশ রান তোলে ৪৩৩। বল হাতে সাকিব তুলে নেন পাঁচ উইকেট।
দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাট হাতে ব্যর্থ হলেও বল হাতে তা হননি সাকিব। তুলে নেন ইনিংসে পাঁচ ও ম্যাচে ১০ উইকেট। নিষেধাজ্ঞা থেকে ফেরেন রাজার মতোই। হয়ে যান ইয়ান বোথাম ও ইমরানের খানের পর এক টেস্টে সেঞ্চুরি ও ১০ উইকেট নেয়া তৃতীয় ক্রিকেটার।
অস্ট্রেলিয়া বধ
আগের বছরই দেশের মাটিতে প্রথমবারের মতো ইংল্যান্ডকে হারায় বাংলাদেশ। ২০১৭ সালে যখন বাংলাদেশ সফরে আসে অস্ট্রেলিয়া, সিরিজ জয়ের বাড়তি চাপ ছিল স্বাগতিকদের ওপর।
প্রথম টেস্টের আগের দিন অজি স্কিপার স্টিভেন স্মিথের গলায় ছিল অন্য সুর। অনেকটা হেয় করেই যেন বললেন, ‘বাংলাদেশ আগের ১০০ টেস্টে জিতেছে মাত্র নয়টি। এখনও অনেক দূরের পথ।’
ম্যাচের শুরুটা দেখে মনে হলো স্মিথ ভুল বলেননি। প্যাট কামিন্সের বোলিং তোপে তিন উইকেট নেই ১০ রানের মাথায়। সেখান থেকে বাংলাদেশকে উদ্ধার করেন সাকিব ও তামিম। দুই জনের ১৫৫ রানের জুটিতে ব্যাটিং বিপর্যয় এড়ায় টাইগাররা। সাকিব আউট হন ৮৪ রানে। ২৬০ রানে শেষ করে বাংলাদেশ।
শের-ই-বাংলার টার্নিং ট্র্যাকে বল হাতে সাকিব হয়ে ওঠেন দানবীয়। বাংলাদেশকে ৪৩ রানের লিড দিয়ে অস্ট্রেলিয়াকে সাকিব মুড়িয়ে দেন ২১৭ রানে, ৬৮ রানে তুলে নেন পাঁচ উইকেট।
বাংলাদেশের দ্বিতীয় ইনিংস শেষে অস্ট্রেলিয়ার সামনে টার্গেট দাঁড়ায় ২৬৫ রানের। তাড়া করতে নেমে ডেভিড ওয়ার্নার ও অধিনায়ক স্মিথের ব্যাটে সহজ জয়ের পথেই ছিল অস্ট্রেলিয়া। আবারও সেই আশায় পানি ঢেলে দেন সাকিব।
সেঞ্চুরি তুলে নেয়া ওয়ার্নারকে এলবিডব্লিউর ফাঁদে ফেলেন। মুশফিকের ক্যাচ বানিয়ে আউট করেন স্মিথকে। একে একে গ্লেন ম্যাক্সওয়েল ও ম্যাথু ওয়েডকেও পথ দেখান প্যাভিলিয়নের। ১০ উইকেট তুলে নেন সাকিব। দল পায় অবিস্মরণীয় এক জয়।
ম্যাচসেরা কে হবেন, সেটি নিয়ে প্রশ্ন ছিল না কোনো। বাংলাদেশের টেস্ট ইতিহাসের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ জয়ে সাকিব নায়ক হবেন এমনটা তো হবারই কথা!
দুঃস্বপ্নের বিশ্বকাপে স্বপ্নের সাকিব
সেমিফাইনাল খেলার স্বপ্ন বুকে চেপে ২০১৯ ক্রিকেট বিশ্বকাপ খেলতে যায় বাংলাদেশ। সাউথ আফ্রিকাকে হারিয়ে দারুণ শুরু করলেও শেষ পর্যন্ত সেই আশা পরিণত হয় হতাশায়। বাংলাদেশ বিশ্বকাপ শেষ করে নয় দলের মধ্যে অষ্টম স্থানে থেকে।
দুঃস্বপ্নের বিশ্বকাপে স্বপ্নময় হয়ে ছিলেন সাকিব। ছুঁয়েছেন একের পর এক রেকর্ডের চূড়া। যখনই মাঠে নেমেছেন সাকিব গড়েছেন কোনো না কোনো রেকর্ড। শেষ পর্যন্ত ছিলেন বিশ্বকাপের সেরা খেলোয়াড় হওয়ার দৌড়ে। দলের ব্যর্থতায় সেই অর্জন আর হয়নি সাকিবের।
সাকিব বিশ্বকাপ শেষ করেন ৬০৬ রান ও ১১ উইকেট নিয়ে। বিশ্বকাপ ইতিহাসে প্রথম ক্রিকেটার হিসেবে এক আসরে পাঁচ শতাধিক রান ও ১০টির বেশি উইকেট লাভ করেন সাকিব। সঙ্গে ঢুকে যান বিশ্বকাপ ইতিহাসের এক এলিট ক্লাবে, যেখানে সদস্য সাকিব একাই।
বিশ্বকাপের ইতিহাসে আর কেউই ১ হাজার রান ও ৩০ উইকেট পাননি। সাকিবই একমাত্র।
আরও একটি রেকর্ড গড়েন সাকিব। এক আসরে সাতটি ফিফটি করেন তিনি। কিংবদন্তি শচীন টেন্ডুলকার বাদে এই কীর্তি নেই আর কারও।
প্রথম ক্রিকেটার হিসেবে টানা চার বিশ্বকাপে দলের প্রথম ম্যাচে ফিফটি করে আরেকটি রেকর্ড গড়েন সাকিব।
সাউথ আফ্রিকার বিপক্ষে ৭৫ দিয়ে শুরু। এরপর নিউ জিল্যান্ডের সঙ্গে ৬৪। শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ম্যাচ ভেসে যাওয়ার পর টানা দুই শতক ইংল্যান্ড ও ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে। উইন্ডিজের সঙ্গে তার অপরাজিত ১২৪ রানের ইনিংসে ৫১ বল আগেই ৩২২ রান তাড়া করে বাংলাদেশ।
একমাত্র অস্ট্রেলিয়ার সঙ্গেই ফিফটি পাননি সাকিব। সেই আক্ষেপ মেটান আফগানিস্তানের বিপক্ষে।
প্রথমে ব্যাট হাতে ৫১। ব্যাট হাতে টুর্নামেন্ট কাঁপানো সাকিব ম্যাচে আগুন ঝরান বল হাতে। ২৯ রানে পাঁচ উইকেট তুলে নিয়ে একাই ধসিয়ে দেন আফগানদের।
ভারত ও পাকিস্তানের সঙ্গে হারতে হলেও সে দুই ম্যাচেই হাসে সাকিবের ব্যাট, আসে আরও দুটো ফিফটি।
রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন সংস্থা বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসেডর হয়েছেন বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার সাকিব আল হাসান। এ বিষয়ে বিমান ও সাকিবের মধ্যে চুক্তি স্বাক্ষর হয়েছে।
রাজধানীর কুর্মিটোলায় বিমানের প্রধান কার্যালয় বলাকায় মঙ্গলবার বিকেলে ব্র্যান্ডিং ইস্যুতে সাকিবের সঙ্গে আনুষ্ঠানিক চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়।
বিমানের জনসংযোগ বিভাগের মহাব্যবস্থাপক তাহেরা খন্দকারের স্বাক্ষর করা এক বিজ্ঞপ্তিতে এসব কথা জানানো হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে বিমান পরিচালনা পর্ষদের চেয়ারম্যান মোস্তাফা কামাল উদ্দীন, ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও সিইও শফিউল আজিম, ক্রিকেটার সাকিব আল হাসান, বিমানের পরিচালকবৃন্দ ও বিভিন্ন স্তরের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা উপস্থিত ছিলেন।
বিকেলে সাকিব আল হাসান বলাকায় এলে তাকে ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানানো হয়। এরপর সংক্ষিপ্ত আলোচনা ও প্রশ্নোত্তর পর্ব শেষে আনুষ্ঠানিকভাবে চুক্তি স্বাক্ষর হয়। এ সময় সাকিবের সৌজন্যে একটি কেক কাটা হয়।
সংক্ষিপ্ত বক্তব্যে সাকিব আল হাসান বিমান নিয়ে তার শৈশবের স্মৃতিচারণ করেন। বলেন, ‘শৈশবে খেলার মাঠে মাথার উপর দিয়ে বিমান উড়ে গেলে এক ধরনের ভালো লাগা কাজ করত।
‘বিমানের অসংখ্য ভালো দিক আছে। এগুলো সবার সামনে তুলে ধরতে পারলে বিশ্বের অন্যান্য এয়ারলাইন্সের সঙ্গে প্রতিযোগিতায় বিমানের সক্ষমতা বাড়বে। বিশেষ করে নিরাপত্তা ইস্যুতে বিমান কখনও আপোষ করে না। এ ধরনের ইতিবাচক বিষয়গুলো প্রচার হওয়া দরকার।’
মোস্তাফা কামাল উদ্দীন বিমানের ব্র্যান্ডিং ও খেলাধুলা বিষয়ে সহযোগিতার জন্য সাকিব আল হাসানকে ধন্যবাদ জানান।
শফিউল আজিম বলেন, ‘সাকিব আল হাসানের কার্যক্রম আমাদের অনুপ্রাণিত করে। আমরা সততা, দক্ষতা ও উন্নত সেবার মাধ্যমে এভিয়েশন খাতে বিমানকে সুপ্রিতিষ্ঠিত করতে একযোগে কাজ করব।’
বিমান জানায়, সাকিব আল হাসান এক সময় বিমান ক্রিকেট টিমের সদস্য ছিলেন। বাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেট টিমের সাবেক চারজন সদস্য বর্তমানে বিমানে বিভিন্ন পদে কর্মরত। বিশ্ববিখ্যাত গ্র্যান্ডমাস্টার নিয়াজ মোর্শেদ, ১৬ বার জাতীয় টেবিল টেনিস চ্যাম্পিয়ন হয়ে গিনেস বুকে নাম লেখানো জোবেরা রহমান লিনু এক সময় বিমানের হয়ে খেলতেন।
আরও পড়ুন:সিলেটে সোমবার মুশফিকুর রহিম আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে যে ইনিংস খেললেন, তাতে মুগ্ধতা সহজে কাটবে না কারও। মুশফিকের এমন ইনিংসের সৌজন্যে বাংলাদেশও গড়েছে ওয়ানডেতে এক ইনিংসে নিজেদের সর্বোচ্চ রানের রেকর্ড। শেষ পর্যন্ত বৃষ্টিতে ম্যাচটা পরিত্যক্ত হয়ে যাওয়ায় আক্ষেপ আছে, তবে মুশফিকের মুগ্ধতা কাটছে না। ম্যাচ শেষে লিটন দাসের কথায় বোঝা গেল, তিনিও মুগ্ধ মুশফিকের এমন ইনিংসে।
৬০ বল, ১৪ চার, ২ ছক্কা, অপরাজিত ১০০ রান। ইনিংসের ৩৪তম ওভারে নেমেও ইনিংসের শেষ বলে পৌঁছে গেলেন সেঞ্চুরিতে। তাও যে-সে সেঞ্চুরি নয়, বাংলাদেশের ওয়ানডে ইতিহাসে দ্রুততম সেঞ্চুরিই এটি।
সংবাদ সম্মেলনে মুশফিকের ইনিংস নিয়ে প্রশ্নে লিটন বলেন, ‘আমি যতদিন ধরে খেলছি, বাংলাদেশের কোনো ক্রিকেটারই এমন শেষের দিকে গিয়ে সেঞ্চুরি করতে পারেননি। কোনো দলে কেউ এমন সেঞ্চুরি করলে অবশ্যই ভালো লাগে, আর সেটা যদি সিনিয়র কেউ করেন, তখন তো আরও বেশি ভালো লাগে।’
আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে প্রথম ওয়ানডেতে মুশফিক ঝোড়ো ইনিংস খেলেছিলেন, কিন্তু সেদিন ২৬ বলে ৪৪ রানে আউট হয়ে গেছেন।
সোমবার সেঞ্চুরির প্রশংসায় লিটন আগের ইনিংসের প্রসঙ্গও টেনে এনে বলেন, ‘মুশফিক ভাইয়ের ইনিংস শুধু সোমবারের না, আগের ইনিংসটিও অসাধারণ ছিল। যদিও রান অত বেশি না, ৪০ এর মতো। তবে সেটা কিন্তু অনেক পার্থক্য গড়ে দেয় ৩০০ রান তোলার জন্য। সোমবারেও মুশফিক ভাইয়ের ইনিংস একদম খেলার মোড় ঘুরিয়ে দিয়েছে।’
শেষে আরেকবার গত কয়েকদিনে বাংলাদেশের দাপুটে ব্যাটিং নিয়ে যখন প্রশ্ন হলো, আবার মুশফিকের ইনিংসের প্রসঙ্গ লিটনের কণ্ঠে।
সোমবার নিজের আর শান্তর ৭০-ঊর্ধ্ব দুই ইনিংসের কথা টেনে লিটন বলেন, ‘মুশফিক ভাই যে ইনিংসটা খেলেছেন, এটা দেখার মতো ছিল। শান্ত এবং আমার ইনিংস থেকেও বেশি ভালো ছিল।’
আরও পড়ুন:সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে সিরিজের বাংলাদেশ ও আয়ারল্যান্ডের মধ্যকার দ্বিতীয় ওয়ানডেটিতে পরিত্যক্ত ঘোষণা করা হয়েছে। এতে তিন ম্যাচ ওয়ানডে সিরিজে ১-০তে এগিয়ে রইলো টাইগাররা।
মুশফিকুর রহিমের দ্রুততম সেঞ্চুরি এবং ওয়ানডেতে নিজেদের ইতিহাসে সর্বোচ্চ সংগ্রহের ম্যাচটি সাড়ে আটটার দিকে পরিত্যাক্ত ঘোষণা করা হয়। ম্যাচটির কাট-অফ টাইম ছিল ৯টা ৩৩ মিনিট। তবে এর ঘণ্টাখানেক বৃষ্টি চলছিল মাঠে।
টসে হেরে ব্যাটিংয়ে নেমে সতর্ক শুরু করেন দুই ওপেনার তামিম ইকবাল ও লিটন দাস। শুরু থেকেই ব্যাটারদের নৈপুণ্যে বড় সংগ্রহের ইঙ্গিত দিয়েছিল বাংলাদেশ। তামিম ইকবাল ২৩ রানে রান আউট হয়ে ফিরলেও আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজের দ্বিতীয় ওয়ানডেতে ফিফটি তুলে পেয়েছেন লিটন দাস ও নাজমুল হোসেন শান্ত। তবে শেষটা রাঙিয়েছেন মুশফিকুর রহিম ও তাওহীদ হৃদয়।
প্রথম বাংলাদেশি ব্যাটসম্যান হিসেবে প্রথম দুই ম্যাচে ১ রানের জন্য ফিফটি মিস করেছেন তাওহীদ। বাংলাদেশের দ্রুততম সেঞ্চুরিয়ান হতে শেষ ওভারে ৯ রান প্রয়োজন ছিল মুশফিকের। তৃতীয় বলে স্ট্রাইক পেয়ে দুই রান নিলেন মুশফিক। পরের বলে অফ স্টাম্পের বাইরের নিচু ফুল টসকে স্কুপ করে সীমানাছাড়া করেন। ইনিংসের শেষ দুই বলে যথাক্রমে ২ এবং ১ রান নিয়ে দেশের হয়ে দ্রুততম ওয়ানডে সেঞ্চুরির কীর্তি গড়া হয়ে যায়।
মুশফিক যখন বীরের বেশে মাঠ ছাড়ছেন, স্কোরবোর্ডে তখন বাংলাদেশের রান দেখাচ্ছে ৬ উইকেটে ৩৪৯।
এ ম্যাচে আয়ারল্যান্ডের পক্ষে সর্বোচ্চ তিনটি উইকেট পেয়েছেন গ্রাহাম হিউম।
প্রথম ম্যাচ জিতে সিরিজ নিশ্চিতে মুখিয়ে থাকা বাংলাদেশ এ ম্যাচে বিশ্রাম দেয় পেসার মুস্তাফিজুর রহমানকে। তার স্থলাভিষিক্ত হন হাসান মাহমুদ।
আরও পড়ুন:আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে সিরিজের দ্বিতীয় ওয়ানডেতে নিজেদের সর্বোচ্চ রানের রেকর্ড ভাঙল বাংলাদেশ দল। মুশফিকুর রহিমের ঝোড়ো সেঞ্চুরি আর লিটন দাসের ৭০ রানের ইনিংসে আয়ারল্যান্ডকে ৩৫০ রানের টার্গেট দিয়েছে টাইগাররা।
এর আগের ম্যাচেই নিজেদের দলীয় সংগ্রহের ৩৩৮ রানের সংগ্রহ গড়েছিল স্বাগতিকরা, এবার ছাপিয়ে গেলো সেটি।
সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে সোমবার সিরিজের দ্বিতীয় ওয়ানডেতেও বাংলাদেশের বিপক্ষে টস জিতে বোলিংয়ের সিদ্ধান্ত নেয় আয়ারল্যান্ড।
ব্যাটিংয়ে নেমে সতর্ক শুরু করেন দুই ওপেনার তামিম ইকবাল ও লিটন দাস। শুরু থেকেই ব্যাটারদের নৈপুণ্যে বড় সংগ্রহের ইঙ্গিত দিয়েছিল বাংলাদেশ। তামিম ইকবাল ২৩ রানে রান আউট হয়ে ফিরলেও আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজের দ্বিতীয় ওয়ানডেতে ফিফটি তুলে পেয়েছেন লিটন দাস ও নাজমুল হোসেন শান্ত। তবে শেষটা রাঙিয়েছেন মুশফিকুর রহিম ও তাওহীদ হৃদয়।
প্রথম বাংলাদেশি ব্যাটসম্যান হিসেবে প্রথম দুই ম্যাচে ১ রানের জন্য ফিফটি মিস করেছেন তাওহীদ। বাংলাদেশের দ্রুততম সেঞ্চুরিয়ান হতে শেষ ওভারে ৯ রান প্রয়োজন ছিল মুশফিকের। তৃতীয় বলে স্ট্রাইক পেয়ে দুই রান নিলেন মুশফিক। পরের বলে অফ স্টাম্পের বাইরের নিচু ফুল টসকে স্কুপ করে সীমানাছাড়া করেন। ইনিংসের শেষ দুই বলে যথাক্রমে ২ এবং ১ রান নিয়ে দেশের হয়ে দ্রুততম ওয়ানডে সেঞ্চুরির কীর্তি গড়া হয়ে যায়।
মুশফিক যখন বীরের বেশে মাঠ ছাড়ছেন, স্কোরবোর্ডে তখন বাংলাদেশের রান দেখাচ্ছে ৬ উইকেটে ৩৪৯।
এ ম্যাচে আয়ারল্যান্ডের পক্ষে সর্বোচ্চ তিনটি উইকেট পেয়েছেন গ্রাহাম হিউম।
প্রথম ম্যাচ জিতে সিরিজ নিশ্চিতে মুখিয়ে থাকা বাংলাদেশ এ ম্যাচে বিশ্রাম দেয় পেসার মুস্তাফিজুর রহমানকে। তার স্থলাভিষিক্ত হন হাসান মাহমুদ।
আরও পড়ুন:সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে সোমবার সিরিজের দ্বিতীয় ওয়ানডেতে বাংলাদেশের বিপক্ষে টস জিতে বোলিংয়ের সিদ্ধান্ত নিয়েছে আয়ারল্যান্ড।
প্রথম ম্যাচ জিতে সিরিজ নিশ্চিতে মুখিয়ে থাকা বাংলাদেশ এ ম্যাচে বিশ্রাম দেয় পেসার মুস্তাফিজুর রহমানকে। তার স্থলাভিষিক্ত হন হাসান মাহমুদ।
দুপুর ২টা থেকে শুরু হওয়া ম্যাচে আয়ারল্যান্ড দলেও আনা হয় এক পরিবর্তন। গ্যারেথ ডেল্যানির জায়গায় মাঠে নামেন ম্যাথু হামফ্রিস, এ ম্যাচের মধ্য দিয়ে যার অভিষেক হয়।
বাংলাদেশ একাদশ: তামিম ইকবাল (অধিনায়ক), লিটন দাস, নাজমুল হোসেন শান্ত, মুশফিকুর রহিম, সাকিব আল হাসান, ইয়াসির আলী, তৌহিদ হৃদয়, তাসকিন আহমেদ, এবাদত হোসেন, নাসুম আহমেদ ও হাসান মাহমুদ।
আয়ারল্যান্ড একাদশ: পল স্টার্লিং, স্টিফেন দোহেনি, অ্যান্ড্রু ব্যালবিরনি (অধিনায়ক), হ্যারি টেকটর, লরক্যান টাকার, জর্জ ডকরেল, কুর্তিস ক্যামফার, অ্যান্ডি ম্যাকব্রিন, মার্ক অ্যাডায়ার, ম্যাথু হামফ্রিস ও গ্রাহাম হিউম।
বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় আমেরিকান ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি-বাংলাদেশ (এআইইউবি) থেকে গ্র্যাজুয়েশন শেষ করলেন বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার সাকিব আল হাসান।
বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০০৯-১০ সেশন থেকে ব্যাচেলর অফ বিজনেস অ্যাডমিনিস্ট্রেশন (বিবিএ) বিষয়ে ডিগ্রি সম্পন্ন করা সাকিব রোববার অনুষ্ঠিত বিশ্ববিদ্যালয়টির ২১তম সমাবর্তন থেকে সনদ পেয়েছেন।
রাজধানীতে প্রতিষ্ঠানের নিজস্ব ক্যাম্পাসে সমাবর্তন অনুষ্ঠানে সাকিবের হাতে সনদ তুলে দেন শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি।
অনুষ্ঠানে সাকিব বলেন, ‘আমি খুব খুশি আর গর্বিত যে অবশেষে আমার স্বপ্ন পূরণ করতে পেরেছি। টেস্ট ক্যাপ পাওয়ার সময় যে অনুভূতি হয়েছিল, আমার এখনকার অনুভূতিটা সে রকমই।
তিনি বলেন, ‘আমি ক্রিকেটে অনেক কিছু অর্জন করতে পারি। কিন্তু পড়াশুনার ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ সার্টিফিকেট পাওয়ার স্বপ্নটা আমার সব সময়ই ছিল।’
সমাবর্তনে ডা. আনোয়ারুল আবেদীন লিডারশিপ পদকও পান সাকিব। তার গলায় এ পদক পরিয়ে দেন শিক্ষামন্ত্রী।
এআইইউবি থেকে এ বছর সমাবর্তন অনুষ্ঠানে বিভিন্ন অনুষদের মোট ৪ হাজার ৭২২ জন শিক্ষার্থীকে স্নাতক ও স্নাকোত্তর ডিগ্রি দেয়া হয়।
আরও পড়ুন:
সংযুক্ত আরব আমিরাতের দুবাইয়ে আরাভ জুয়েলার্স নামের একটি দোকান উদ্বোধন ইস্যুতে সৃষ্ট বিতর্কে নিজেদের বক্তব্য জানাল বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড-বিসিবি। বাংলাদেশ ক্রিকেটের নিয়ন্ত্রক সংস্থাটির মতে, সব দিক বিচার বিবেচনা না করে সাকিবকে ভিলেন বানানোর চেষ্টা হচ্ছে।
জাতীয় ক্রিকেট দলের টেস্ট ও টি-টোয়েন্টি অধিনায়ক সাকিব আল হাসান ১৫ মার্চ দুবাইয়ে আরাভ জুয়েলার্স নামের একটি দোকান উদ্বোধন করেন। বাংলাদেশের মিডিয়া জগতের আরও অনেক তারকায় সমৃদ্ধ সে অনুষ্ঠানের আগেই খবর আসে যে, এই দোকান খুনের মামলার পলাতক আসামি রবিউল ইসলাম ওরফে আরাব খানের।
সাকিব আল হাসান ওই উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে অংশ নেন। এ নিয়ে তোলপাড় চলছে। অনুষ্ঠানে দেশি-বিদেশি আরও অনেক তারকা যুক্ত হলেও তারকাখ্যাতিতে বাংলাদেশি অলরাউন্ডার এগিয়ে বলে আলোচনাটাও বেশি হচ্ছে সাকিবকে নিয়ে। এ নিয়ে তার পক্ষ থেকে কিছু জানা না গেলেও বিসিবি শনিবার তাদের অবস্থান জানিয়েছে।
সাংবাদিকদের প্রশ্নের মুখে বিসিবির ক্রিকেট অপারেশনস বিভাগের চেয়ারম্যান ও বিসিবি পরিচালক জালাল ইউনুস বলেন, ‘বোর্ডের নিয়ম পর্যবেক্ষণ করে তবেই সিদ্ধান্ত নেয়া হবে। আমরা ক্রিকেট অপারেশনস বিভাগ থেকে দেখব এটা কেন্দ্রীয় চুক্তির কোনো শর্ত ভঙ্গ করছে কি না। তেমন কিছু হলে আমরা শৃঙ্খলা কমিটিকে দায়িত্ব দিতে পারি। কোনো কিছু না জেনে, সবাইকে জিজ্ঞেস না করে, ব্যাপারটা পুরোপুরি তদন্ত না করে আমরা কোনো মন্তব্য করতে পারছি না।
‘সাকিব শুধু বিসিবির না, সে দেশের গর্ব। তার খেয়াল রাখা আমাদের দায়িত্ব।’
ইউনুস জানিয়েছেন, যা-ই হোক না কেন, বোর্ডের সহযোগিতা পাচ্ছেন দেশসেরা অলরাউন্ডার। নিয়ম অনুযায়ী ভুল করে থাকলেও সাকিবকে সমর্থন করার ইঙ্গিত দিয়েছেন তিনি। বলেছেন, ‘এমন একটা পরিস্থিতিই (সাকিবকে ভিলেন বানানো) তো তৈরি হচ্ছে। এটা নিয়ে না জেনে বেশি মাতামাতি করলে পারফরম্যান্সেও তো সমস্যা হবে। আগে সবাই ব্যাপারটা জানি। তার জন্য সবার সমর্থন দরকার। যদি না জেনে থাকে তাহলে তাকে যেসব পরামর্শ বা উপদেশ দেয়া দরকার, সেসব বিষয়ে আলোচনা করব।’
মন্তব্য