পূর্ব বগুড়ার বাসিন্দাদের কাছে শহরের প্রবেশদ্বার হিসেবে পরিচিত ফতেহ আলী সেতু। করতোয়া নদীর উপর নির্মিত সেতুটি প্রায় চার বছর ধরে ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় থাকলেও তা সংস্কারে দৃশ্যমান কোনো অগ্রগতি নেই।
হালকা যান চললেও ভারী যান চলাচল ঠেকাতে সেতুটির দুই পাশে দেয়া হয়েছে সিমেন্টের খুঁটি। এতে তৈরি হয়েছে নতুন সমস্যা। পণ্য আনা-নেয়ায় ভারী যানগুলোকে প্রায় আট কিলোমিটার ঘুরে শহরে আসতে হচ্ছে। এতে সময় বেশি লাগার পাশাপাশি গুনতে হচ্ছে অতিরিক্ত ভাড়া।
সেতু সংস্কারে ধীরগতির জন্য নদীর দূষণ ও কাজের পদ্ধতিগত জটিলতাকে দায়ী করছেন বগুড়া জেলা সড়ক ও জনপথ বিভাগের (সওজ) কর্মকর্তা। তারা বলছেন, সেতুটির তলদেশে ময়লা-আবর্জনা জমে থাকায় নকশা তৈরি করতে সময় বেশি লাগছে।
বগুড়া সওজের তথ্যানুযায়ী, ১৯৬২ সালে করতোয়া নদীর ওপর ৭১ মিটার দৈর্ঘ্যের ফতেহ আলী সেতু নির্মাণ করা হয়। ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তানি বাহিনী এই সেতুসহ রেলসেতু যুদ্ধবিমান থেকে বোমা ফেলে ধ্বংস করে দেয়। দেশ স্বাধীন হওয়ার পর ক্ষতিগ্রস্ত রেল ও সড়ক সেতু সংস্কার করা হয়।
প্রায় ৬০ বছরের পুরনো সেতুটির আয়ুষ্কাল শেষ হয়েছে। ঝুঁকিপূর্ণ হওয়ায় ফতেহ আলী বাজার এলাকায় সেতুটির পাটাতন ও গার্ডারের কিছু অংশ দুই বছর আগে সংস্কার করা হয়। প্রায় সোয়া পাঁচ লাখ টাকা ব্যয়ে সংস্কার কাজে ‘বিশেষভাবে তৈরি’ সিমেন্ট ব্যবহার করা হয়।
সওজ আরও জানায়, সংস্কারের পর সেতুটি দিয়ে ভারি যান চলাচল সম্ভব কি না তা জানাতে সংস্থাটির কয়েকজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা ও সেতু বিশেষজ্ঞরা পরিদর্শন করেন। তারা সেতুটি দিয়ে ভারী যানবাহন চলাচল সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ করে হালকা যান চলার অনুমতি দেন।
সেই নির্দেশনা লঙ্ঘন করেই ঝুঁকিপূর্ণ সেতুটি দিয়ে ভারী যান চলছিল। বাধ্য হয়ে প্রায় দুই বছর আগে সেতুর দুই পাশের মাঝামাঝিতে সিমেন্টের পিলার দেয়া হয়।
এরপর থেকে ভারি যান শহরে ঢুকছে প্রায় ৮ কিলোমিটার ঘুরে মাটিডালি এলাকা হয়ে। এতে ভোগান্তিতে পড়েছেন জেলার পূর্বাঞ্চলের মানুষরা।
রিকশা, অটোরিকশা চললেও বাস বন্ধ থাকায় যাতায়াতে সমস্যায় পড়ছেন বাসিন্দারা। কৃষিপণ্য থেকে যেকোনো মালপত্র পরিবহনে সংকট হচ্ছে আরও বেশি। বেশি ভাড়ার পাশাপাশি সময়ও লাগছে বেশি।
বগুড়া শহরের মাঝ দিয়ে বয়ে গেছে করতোয়া নদী। তবে ফতেহ আলী সেতু পার হয়েই মূল শহর। সেতুটি পূর্বাংশের চেলাপাড়া, নারুলী, সাবগ্রাম আকাশতারার বিশাল এলাকাকে নগরীতে সংযুক্ত করেছে। একই সঙ্গে পূর্ব বগুড়ার গাবতলী, সোনাতলা, সারিয়াকান্দি, ধুনট (আংশিক) উপজেলার বাসিন্দারা এ পথে শহরে যাতায়াত করেন।
সেতুটিতে গিয়ে দেখা যায়, দুই পাশে তিন ফুট উঁচু চারটি পিলার দেয়া হয়েছে। এগুলোর কারণে ভারি কোনো যান সেতুতে উঠতে পারছে না। তবে রিকশা, অটোরিকশার মতো ছোট যান চলছে। এতে ট্রাক, মিটি ট্রাকের পাশাপাশি বাস, মাইক্রোবাসের মতো যাত্রীবাহী গাড়ি পারাপারও বন্ধ হয়ে গেছে।
বগুড়ার মাছের মূল আড়ত ফতেহ আলী সেতুর পূর্বপাশের চাষী বাজারে। প্রতিদিন এ আড়তে অর্ধশত ট্রাক-মিনি ট্রাক, কাভার্ড ভ্যানে মাছ বিক্রি করতে আসেন খামারি ও ব্যবসায়ীরা। দূর দূরান্ত থেকে আসা মাছের গাড়িগুলো ফতেহ আলী সেতু হয়ে চাষী বাজারে যায়। সেতুটিতে ভারী যান চলাচলে বন্ধ থাকায় তাদের অন্য পথে বাজারে যেতে হচ্ছে। আবার যানজটেও পড়তে হচ্ছে।
চাষী বাজারের ফেলুরাম মৎস্য আড়তের ব্যবসায়ী রঞ্জন কুমার বলেন, ‘সেতু বন্ধ থাকায় আড়তদার ও ব্যবসায়ীদের চরম ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে।’
গাবতলী উপজেলার কৃষি কর্মকর্তা জান্নাতুল মহল বলেন, ‘পূর্ব বগুড়া থেকে ফতেহ আলী সেতু দিয়ে যোগাযোগ সবচেয়ে ভালো। এই পথে আরও কয়েকটি উপজেলার মানুষ শহরে যাওয়া-আসা করে। এক অর্থে ফতেহ আলী সেতুকে পূর্ব বগুড়ার প্রবেশদ্বার বলা হয়।
‘অথচ এতো গুরুত্বপূর্ণ একটি সেতু ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে আছে দীর্ঘদিন ধরে। গুরুত্ব বিবেচনায় এখানে দ্রুত নতুন সেতু নির্মাণ দরকার।’
শহরের রাজা বাজারের আড়তদার ও ব্যবসায়ী মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক পরিমল প্রসাদ রাজ বলেন, ‘প্রায় চার বছর ধরে ব্রিজটি ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে আছে। বাজারে আমাদের প্রায় সব পণ্য আনতে বা নিয়ে যেতে গাড়িগুলোকে অনেক দূর ঘুরতে হয়।
‘এতে এক হাজার টাকার ভাড়ার বদলে বাড়তি গুনতে হয় ৫০০ টাকা। এটা আমাদের জন্য বড় একটি ক্ষতি। এ ছাড়া ব্রিজের পূর্ব পাশে বেশ কয়েকটি ফ্যাক্টরি আছে। যেগুলো মালপত্র আনা-নেয়ায় সবচেয়ে বেশি ভোগান্তিতে পড়ছে।’
জেলার পরিবেশবিষয়ক নাগরিক কমিটির সাধারণ সম্পাদক আব্দুল খালেক বলেন, ‘করতোয়া নদীর ওপর ফতেহ আলী ব্রিজের তলদেশ যেন ময়লার ভাগাড়। অথচ ঐতিহ্যবাহী এই ব্রিজ বগুড়ার কয়েকটি উপজেলার মানুষদের শহরে যাতায়াতের প্রধান পথ।
‘দুঃখজনক যে, এটি কবে সংস্কার হবে, কবে চালু করা হবে সে বিষয়েও কিছুই জানতে পারছে না বগুড়াবাসী। ব্রিজটি ঝুঁকিপূর্ণ হওয়ায় সাধারণ মানুষ নাগরিক সুবিধা থেকে বঞ্চিত হওয়া ছাড়াও অর্থনৈতিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের দাবি, শুধু ব্রিজ সংস্কার নয়। নদীর প্রাকৃতিক পরিবেশ ফিরিয়ে দিয়ে ব্রিজটি যেন শহরের সৌন্দর্যবর্ধন করে এমনভাবে নির্মাণ করা হোক।’
বগুড়া সওজ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী আসাদুজ্জামান প্রথম বলেন, ‘আমরা চাচ্ছি এটাকে পুনর্নির্মাণ করব। এ জন্য আমাদের নতুন করে নকশা তৈরি করতে হবে।
‘এখন ব্রিজ তৈরি করতে বিআইডব্লিউ থেকে ভার্টিকাল ক্লিয়ারেন্স নিতে হয়। তাদেরকে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র দেয়া হয়েছিল। সেগুলোর ভিত্তিতে আমরা ব্রিজের উচ্চতা পেয়ে গেছি। এই উচ্চতা নকশা তৈরির ইউনিটকে দেয়া হয়েছে। তারা নকশা তৈরির কাজ করছেন। নকশা হয়ে গেলেই কাজ শুরু হয়ে যাবে।’
তার দাবি, নদীর তলদেশে দীর্ঘ দিনের ময়লা-আবর্জনা জমে রয়েছে। এ জন্য ব্রিজের ভার্টিকাল ক্লিয়ারেন্সের জন্য করতে একটু বেশি সময় লেগেছে।
আরও পড়ুন:ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচনে ১২টি সম্পাদকীয় পদের মধ্যে ৯টিতে ছাত্রশিবির সমর্থিত প্যানেলের প্রার্থীরা জয়লাভ করেছেন। বাকি তিনটি পদে স্বতন্ত্র প্রার্থীরা জয়ী হয়েছেন।
ডাকসুতে ভিপি, জিএস, এজিএসসহ পদ আছে ২৮টি। এর মধ্যে সদস্যপদ রয়েছে ১৩টি।
বুধবার সকালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সিনেট ভবনে নির্বাচন কমিশন থেকে ঘোষিত চূড়ান্ত ফলাফল থেকে এ তথ্য জানা যায়।
সম্পাদকীয় পদগুলোতে যারা জয়ী হলেন–
সহ-সভাপতি (ভিপি) পদে— আবু সাদিক কায়েম, সাধারণ সম্পাদক (জিএস) পদে— এস এম ফরহাদ, সহ-সাধারণ সম্পাদক (এজিএস) পদে— মুহা মহিউদ্দীন খান, মুক্তিযুদ্ধ ও গণতান্ত্রিক আন্দোলন সম্পাদক— ফাতেমা তাসনিম জুমা, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি সম্পাদক— ইকবাল হায়দার, কমন রুম রিডিং রুম ও ক্যাফেটেরিয়া সম্পাদক— উম্মে ছালমা, আন্তর্জাতিক সম্পাদক— জসীমউদ্দিন খান, সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক সম্পাদক— মুসাদ্দিক আলী ইবনে মোহাম্মদ (স্বতন্ত্র), গবেষণা ও প্রকাশনা সম্পাদক— সানজিদা আহমেদ তন্বি (স্বতন্ত্র), ক্রীড়া সম্পাদক— আরমান হোসেন, ছাত্র পরিবহন সম্পাদক— আসিফ আব্দুল্লাহ, সমাজসেবা সম্পাদক— যুবাইর বিন নেছারী (স্বতন্ত্র), ক্যারিয়ার ডেভেলপমেন্ট সম্পাদক— মাজহারুল ইসলাম, স্বাস্থ্য ও পরিবেশ সম্পাদক— এম এম আল মিনহাজ, মানবাধিকার ও আইন বিষয়ক সম্পাদক পদে মো. জাকারিয়া জয়ী হয়েছেন।
খাগড়াছড়ির তিন সড়কে আজ বুধবার আধা বেলা সড়ক অবরোধ চলছে। সকাল ৬টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত খাগড়াছড়ি-ঢাকা, খাগড়াছড়ি-চট্টগ্রাম ও খাগড়াছড়ি-সাজেক সড়কে এই অবরোধ কর্মসূচি পালিত হচ্ছে।
জানা গেছে, জেলার মানিকছড়ির তবলা পাড়ায় অপ্রীতিকর ঘটনার প্রতিবাদ এবং জড়িতদের গ্রেপ্তারের দাবিতে ইউপিডিএফ সমর্থিত পাহাড়ি ছাত্র পরিষদ, হিল উইমেন্স ফেডারেশন ও নারী আত্মরক্ষা কমিটি; এই তিনটি পাহাড়ি সংগঠন এই অবরোধের ডাক দিয়েছে। মঙ্গলবার রাতে পাহাড়ি ছাত্র পরিষদের জেলা শাখার দপ্তর সম্পাদক স্বপন চাকমার পাঠানো বিবৃতিতে এই তথ্য জানানো হয়।
অবরোধের কারণে তিন সড়কে দুরপাল্লার সব যানবাহন চলাচল বন্ধ রয়েছে। তবে, অবরোধকে কেন্দ্র করে বুধবার সকাল ৯টা পর্যন্ত জেলার কোথাও অপ্রীতিকর ঘটনার খবর পাওয়া যায়নি।
খাগড়াছড়ি সদর থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আব্দুল বাতেন মৃধা জানান, রাস্তায় দুই একটা আগুন দেওয়া ছাড়া এখনও পর্যন্ত কোথাও কোনো ধরনে অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি। পুলিশ সর্তক স্থানে রয়েছে।
উল্লেখ্য, গত ৭ সেপ্টেম্বর সকালে মানিকছড়ির তবলা পাড়ায় সন্দেহভাজন কয়েকজন ব্যক্তিকে গ্রামবাসী আটক করে। তাদেরকে ছাড়িয়ে আনতে গেলে প্রতিরোধের মুখে পড়েন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা। তখন লাঠিচার্জ ও গুলিবর্ষণের ঘটনা ঘটে বলে দাবি করেছে পাহাড়ি ছাত্র পরিষদ।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচনের ফলাফল ঘোষণা করা হয়েছে। এতে ভূমিধ্স জয় হয়েছে ছাত্রশিবির সমর্থিত ঐক্যবদ্ধ শিক্ষার্থী জোট প্যানেলের। নির্বাচনে সহসভাপতি (ভিপি) পদে সাদিক কায়েম, সাধারণ সম্পাদক (জিএস) পদে এস এম ফরহাদ এবং সহ-সাধারণ সম্পাদক (এজিএস) পদে মহিউদ্দীন খান বিপুল ভোটে জয়লাভ করেছেন।
বুধবার (১০ সেপ্টেম্বর) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনেট ভবন থেকে চূড়ান্ত ফলাফল ঘোষণা করেন চিফ রিটার্নিং কর্মকর্তা অধ্যাপক মোহাম্মদ জসীম উদ্দিন।
ফলাফলে দেখা যায়, ছাত্রশিবিরের সাদিক কায়েম ১৪ হাজার ৪২ ভোট পেয়ে ভিপি পদে নির্বাচিত হয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ছাত্রদলের আবিদুল ইসলাম খান পেয়েছেন ৫ হাজার ৭০৮ ভোট।
স্বতন্ত্র শিক্ষার্থী ঐক্য প্যানেলের প্রার্থী উমামা ফাতেমা পেয়েছেন ৩ হাজার ৩৮৯ ভোট। আরেক স্বতন্ত্র প্রার্থী শামীম হোসেন পেয়েছেন ৩ হাজার ৮৮৪ ভোট।
জিএস পদে ছাত্রশিবিরের নেতা এস এম ফরহাদ ১০ হাজার ৭৯৪ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ছাত্রদল নেতা তানভীর বারী হামীম পেয়েছেন ৫ হাজার ২৮৩ ভোট। এ ছাড়া প্রতিরোধ পর্ষদের মেঘমল্লার বসু ৪ হাজার ৯৪৯ ভোট, গণতান্ত্রিক ছাত্রসংসদ সমর্থিত বৈষম্যবিরোধী শিক্ষার্থী সংসদের আবু বাকের মজুমদার ২ হাজার ১৩১ ভোট, আশিকুর ৫২৬ ভোট ও স্বতন্ত্র শিক্ষার্থী ঐক্য প্যানেলের আল সাদী ভূঁইয়া ৪৬ ভোট পেয়েছেন।
এজিএস পদে ছাত্রশিবিরের নেতা মুহা. মহিউদ্দীন খান ১১ হাজার ৭৭২ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন।
ছাত্রদলের এজিএস প্রার্থী তানভীর আল হাদী মায়েদ পেয়েছেন ৫ হাজার ৬৪ ভোট।
সোমবার বিকেল ৪টায় ভোটগ্রহণ শেষ হলেও সারারাত ধরে ভোটগণনা চলে। রাতেই বিভিন্ন হল থেকে ভোটের ফলাফল আসতে শুরু করে। এর মধ্যেই কারচুপির অভিযোগ তুলে নির্বাচন বর্জনের ঘোষণা দেন ছাত্রদলের আবিদুল ইসলাম খান ও স্বতন্ত্র শিক্ষার্থী ঐক্যের ভিপি প্রার্থী উমামা ফাতেমা।
নেপালে অবস্থানরত বাংলাদেশ জাতীয় ফুটবল দলের নিরাপদ প্রত্যাবর্তনে সর্বোচ্চ প্রচেষ্টা চালাচ্ছে সরকার।
নেপালে চলমান বিক্ষোভ পরিস্থিতির কারণে বাংলাদেশ জাতীয় ফুটবল দলের দেশে প্রত্যাবর্তন সাময়িকভাবে বিলম্বিত হয়েছে। আজ স্থানীয় সময় দুপুর ৩টায় ত্রিভুবন আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে দলের দেশে ফেরার কথা থাকলেও পরিস্থিতির অবনতির কারণে বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ সব ফ্লাইট বাতিল করে। ফলে দলের খেলোয়াড় ও কর্মকর্তাবৃন্দ বর্তমানে টিম হোটেলে অবস্থান করছেন।
প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং এক বার্তায় জানিয়েছে, দলের নিরাপত্তা ও নির্বিঘ্ন প্রত্যাবর্তন নিশ্চিত করতে যুব ও ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া সার্বক্ষণিকভাবে পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছেন।
বর্তমানে প্রধান উপদেষ্টার দপ্তর এবং যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা দলের দ্রুত ও নিরাপদ প্রত্যাবর্তনের লক্ষ্যে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণে সক্রিয়ভাবে কাজ করছেন। এ বিষয়ে নেপালস্থ বাংলাদেশ দূতাবাসের সাথে নিয়মিত যোগাযোগ রাখা হচ্ছে।
উল্লেখ্য, নেপালের সাম্প্রতিক রাজনৈতিক পরিবর্তন, বিশেষ করে প্রধানমন্ত্রীর পদত্যাগের প্রেক্ষাপটে দলের নির্বিঘ্ন প্রত্যাবর্তন নিশ্চিত করতে বাংলাদেশ সরকারের পক্ষ থেকে নেপালের সেনাবাহিনীর সাথে ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ রাখা হচ্ছে।
এছাড়া যুব ও ক্রীড়া উপদেষ্টা দলের অধিনায়ক জামাল ভূঁইয়া এবং টিম ম্যানেজার আমের খানের সাথে ফোনে যোগাযোগ করে দলের সার্বিক পরিস্থিতি সম্পর্কে খোঁজখবর নিয়েছেন এবং দেশে দ্রুত প্রত্যাবর্তনে প্রয়োজনীয় সকল ব্যবস্থা নিশ্চিত করার আশ্বাস দিয়েছেন।
ধর্ষণে ব্যর্থ হয়ে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী সুমাইয়া আফরিন ও তার মা তাহমিনা বেগমকে হত্যা করা হয়েছে বলে পুলিশ দাবি করেছে। হত্যার মূল আসামি মো. মোবারক হোসেনকে (২৯) গ্রেপ্তার করেছে গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। ঢাকায় পালিয়ে যাবার সময় কুমিল্লা নগরীর বাগিচাগাঁও রেলস্টেশন এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। মঙ্গলবার কুমিল্লার পুলিশ সুপার (এসপি) মোহাম্মাদ নাজির আহমেদ খাঁন সাংবাদিকদের এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। মোবারক হোসেন জেলার দেবিদ্বার উপজেলার কাবিলপুর গ্রামের মৃত. আবদুল জলিলের ছেলে।
পুলিশ সুপার (এসপি) মোহাম্মাদ নাজির আহমেদ খাঁন বলেন, ঝাড়-ফুক করার সুবাদে মোবারক হোসেন সুমাইয়া আফরিনদের বাসায় যাতায়াত করতেন। গত রবিবার সকাল সাড়ে ৮টায় সুমাইয়াদের ভাড়া বাসা নগরীর কালিয়াজুরি এলাকায় নেলি কটেজ নামক বাসায় প্রবেশ করেন মোবারক। এরই মধ্যে মোবারক তাদের বাসায় ঝাড়ফুঁক করে পানি ছিটিয়ে বেরিয়ে যান। আবার বেলা সাড়ে ১১ টায় ওই বাড়িতে প্রবেশ করেন। যা সিসিটিভি ক্যামেরায় দেখা যায়।
পুলিশ সুপার বলেন, মোবারক তাদের বাসায় থাকাকালীন সময়ে এক পর্যায়ে সুমাইয়া আফরিনকে ধর্ষণের চেষ্টা করে। এ সময় সুমাইয়ার মা বাধা দেন। এতে মোবারক ক্ষুব্ধ হয়ে সুমাইয়াকে এক ঘরে আটকে মা তাহমিনা বেগমকে অন্য একটি রুমে নিয়ে বালিশ চাপায় হত্যা করেন। এরপর সুমাইয়াকে তার রুমে গিয়ে ধর্ষণের চেষ্টা করেন। এ সময় সুমাইয়া প্রতিরোধ করলে তাকে গলা টিপে হত্যা করেন। হত্যার পর মোবারক সুমাইয়াদের ঘর থেকে ৪টি মোবাইল ফোন ও একটি ল্যাপটপ নিয়ে পালিয়ে যান। তিনি আরো বলেন, ধর্ষণ হয়েছে কিনা বিষয়টি ময়নাতদন্ত ও ফরেনসিক রিপোর্ট হাতে পাওয়ার পর নিশ্চিত হওয়া যাবে।
নিহত সুমাইয়া আরফিন (২৩) কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের লোক প্রশাসন বিভাগের ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের ১৬তম ব্যাচের শিক্ষার্থী। তিনি কুমিল্লা নগরীর সুজানগর এলাকার বাসিন্দা ও কুমিল্লা আদালতের সাবেক হিসাবরক্ষক মৃত নুরুল ইসলামের মেয়ে। গত সোমবার সকালে ওই বাসা থেকে সুমাইয়া আফরিন ও তার মা তাহমিনা বেগমের মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়।
বর্ষা মৌসুমে টইটম্বুর পানির সঙ্গে উজান থেকে ভেসে আসা দেশীয় মাছ—বজুরী, টেংরা, ঢেলা, দারখিলা, কটকটি, বাইলা, পুটি, সেলবেলা, চান্দা, বৈইচা, পাবদা, শিং, কৈ, টাকি, চেধূরী, এলকোনা, খৈইলশা, ভাংলা, কাটাইড়া, বাতাইয়া, চিংড়ি, বাইম, গুতুমসহ নানান প্রজাতির মাছ একসময় খাল-বিল-জমিতে ডিম ছাড়ার জন্য ছুটে আসত। সেই সময়ে গ্রামের ছেলেরা মাছ ধরার জন্য নানান ফাঁদ পাতত। এর মধ্যে অন্যতম ছিল আনতা, বেউর ও চাই, আনতা। যা আজ বিলুপ্তির পথে।
তবে এখনো কুমিল্লার মুরাদনগর উপজেলার ঐতিহ্যবাহী রামচন্দ্রপুর আনতা হাট সেই পুরনো স্মৃতি ধরে রেখেছে। রামচন্দ্রপুর, দক্ষিণ বাঙ্গরা ও মালাই বাঙ্গরা বাজার, হাটখোলা, ইলিয়াটগঞ্জ, চান্দিনার নোয়াবপুর, বর্ষা মৌসুমে বাঁশের তৈরি আনতা বিক্রির ধুম পড়ে যেত কিন্তু পূর্বে ন্যায় দেশীয় মাছ না থাকায় আস্তে আস্তে এসব মাছ ধরার ফাঁদ তৈরিতে কৃষক, জেলে আগ্রাহ হাচ্ছে। শুধুই মাছ ধরার ফাঁদ নয়, আনতা হয়ে উঠেছে গ্রামীণ ঐতিহ্যের অংশ, যা এ সময় স্থানীয়দের মধ্যে উৎসবের আমেজ ছড়িয়ে দেয়।
বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা গেছে, আকার ও মানভেদে প্রতিটি আনত ৩০০ টাকা থেকে ১২০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। বর্ষার শেষ দিকে এ ফাঁদের চাহিদা আরও বেড়ে যেত। ব্যবসায়ীরাও মৌসুমে ভালো লাভের আশা করত। এন তেমন একটা চোখে পড়ে না, রামচন্দ্রপুরের আনতা ব্যবসায়ী কবির হোসেন বলেন, ‘প্রতি হাটে আমি ৬০ থেকে ৭০টি আনতা বিক্রি করি কিন্তু যখন মাছের ভরা মৌসুম ছিল তখন সারাবছর লোক নিয়োগ করে বিভিন্ন বাড়িতে আনতা তৈরি করতাম। দূর-দূরান্ত থেকেও ক্রেতারা আসত। আর তেমন বিক্রি না থাকায় ব্যাবসা অনেক কমে গেছে। পানি কমার সঙ্গে সঙ্গে মাছ জমির আইল ধরে নামতে শুরু করে, তখন আইলে আনতা পুঁতে রাখলেই সহজে মাছ ধরা পড়ে। বিক্রি বেড়ে যাওয়ায় আমরা খুশি হতাম, আমাদের দাবি আনতা, বেউর, চাই, উছা, পেলুন।এই ফাঁদ তৈরিতে সরকার ভর্তুকি দিয়ে অল্প আয়ের মানুষ দের বাচিয়ে রাখা উচিত। পাশাপাশি বাঁশ শিল্প বেচে থাকবে।
স্থানীয় মাছ বিক্রেতা মতিন মিয়া জানান, তিনি প্রতি মৌসুমে ৫-৬টি আনতা কেনেন। আনতা দিয়ে প্রতিদিন ২-৩ কেজি মাছ ধরা পড়ে। নিজেদের চাহিদা মেটানোর পাশাপাশি বাজারে বিক্রি করে তিনি ৩০০-৪০০ টাকা পর্যন্ত আয় করেন।
শুধু মাছ ধরার ফাঁদ নয়, আনতা হয়ে উঠেছে অনেকের জীবিকার উৎস। আনতা তৈরি ও বিক্রি করে বহু পরিবার জীবিকা নির্বাহ করছে। আবার এর সাহায্যে ধরা মাছ বিক্রি করে অনেকেই বাড়তি আয় করছে। ছোট-বড় সবাইকে মাছ ধরার আনন্দে মাতিয়ে তোলে এই দেশীয় কৌশল, যা আজও মুরাদনগরের গ্রামীণ জীবনের অনন্য ঐতিহ্য বহন করে চলেছে।
‘ব্যাচেলর পয়েন্ট’ ধারাবাহিকের ৫ নম্বর সিজন চলছে। ভক্তদের মুখে মুখে কাজল আরেফিন অমি পরিচালিত এ সিরিজটি। নাটকটির শুরু থেকেই সিজন ১, ২, ৩ এবং ৪ দিয়ে ব্যাপকভাবে আলোচিত হন নির্মাতা কাজল আরেফিন অমি ও তার টিম। ‘ব্যাচেলর পয়েন্ট’ সিজনগুলোর ব্যাপক সাফল্যের পর এবার ‘ব্যাচেলর পয়েন্ট’-এর ফাইভ সিজন প্রচার হচ্ছে।
এই সিরিজে কাবিলা, শুভ, জাকির, শিমুল, পাশা, আরেফিন, হাবু ভাই নামের চরিত্রগুলোর মতো নেহাল চরিত্রটি নিয়ে দর্শকদের আগ্রহ সর্বদা তুঙ্গে। যেই নেহাল চরিত্রে অভিনয় করেছিলেন তৌসিফ মাহবুব। এত দিন ব্যক্তিগত কিছু কারণে এ সিরিজ থেকে দূরে ছিলেন। তবে এ সিজনে ফিরছেন তিনি নেহাল হয়েই, যেটা তিনি নিজেই প্রতিবেদককে জানিয়েছেন।
বললেন, ‘দর্শক সর্বদা চান নেহাল চরিত্রটি ফিরে আসুক। তাই ফের এ চরিত্রটির মাধ্যমে ব্যাচেলর পয়েন্টে দর্শক আমাকে দেখতে পাবেন।’ এর আগে নির্মাতা অমি বলেছিলেন, বাস্তব জীবনের মতোই হয়তো ভবিষ্যতে কোনো একসময় দেখা যাবে তাদের আবার একসঙ্গে। তাই সেই অপেক্ষার পালা মনে হয় শেষ হলো তৌসিফের ফেরার মাধ্যমে।
মন্তব্য