ঢাকার সাভারে অন্তঃসত্ত্বা নাতনিকে আনতে গিয়ে শ্বশুরবাড়ির লোকের কাছে দুজন নির্যাতনের শিকার হয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।
ভুক্তভোগীরা বলছেন, তাদের মারধরের পর ছিনিয়ে নেয়া হয়েছে মোবাইল ফোন ও টাকা। এখন মারধরের ছবি ও ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে দেয়ার হুমকি দেয়া হচ্ছে।
ভুক্তভোগীদের অভিযোগ, নির্যাতনের ছবি ও ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে পাঠিয়ে ব্ল্যাকমেইলের চেষ্টা করা হচ্ছে। পুলিশ নির্যাতিতদের উদ্ধার করলেও প্রথমে তাদের অভিযোগকে গুরুত্ব দেয়নি। পরে অবশ্য দুইজনকে আটক করেছে।
সাভার মডেল থানার পরিদর্শক (তদন্ত) কামাল হোসেন সন্দেহভাজন দুজনকে উপজেলার বনগাঁও ইউনিয়নের সাদাপুর কাজীপাড়া এলাকা থেকে আটক করার বিষয়টি নিউজবাংলাকে নিশ্চিত করেন।
নির্যাতনের শিকার দুজন হলেন পঞ্চাশোর্ধ আবদুল মান্নান ও শহীদ মোল্লা। তারা দুজন সম্পর্কে আত্মীয়। মানিকগঞ্জ জেলার সিঙ্গাইর থানার ধরলা ইউনিয়নের বাসিন্দা তারা।
তাদেরকে নির্যাতনের অভিযোগে আটক হয়েছেন বনগাঁও ইউনিয়নের সাদাপুর কাজীপাড়া এলাকার গৃহবধূ সোনিয়া আক্তারের স্বামী আবুল কালাম ও শ্বশুর বাশার মহাজন।
১১ মাস আগে সোনিয়ার সঙ্গে পারিবারিকভাবে বিয়ে হয় কালামের।
আবদুল মান্নানের ছেলে ফরিদুল আহমেদ নিউজবাংলাকে বলেন, সোনিয়ার বাবা ১০ বছর আগেই সৌদি আরবে মারা গেছেন। তারপর সে তার নানা আরশাদ আলীর বাড়িতে বড় হয়েছে।
১১ মাস আগে কালামের সঙ্গে যখন সোনিয়ার বিয়ের বিষয়ে কথা চলছিল, তখন কালামের পরিবারের সঙ্গে বিবাদ হয়েছিল বলেও জানান ফরিদুল। দুজনের বিয়ে হলেও মনোমালিন্য চলছিল। এ কারণে সোনিয়াদের বাসার কেউ কালামদের বাসায় আসা-যাওয়া করতেন না।
এরই মধ্যে সোনিয়া সন্তানসম্ভবা হওয়ার কথা জানতে পেরে তাকে মায়ের কাছে আনার কথা চলছিল। এ জন্যই গত মঙ্গলবার দুপুর দেড়টার দিকে সোনিয়ার নানা আবদুল মান্নান ও তার ফুপাতো ভাইকে বনগাঁও পাঠানো হয়। তবে তারা সোনিয়ার শ্বশুরবাড়িতে না গিয়ে সাদাপুর বাজারে বসে স্থানীয় দুজনকে সোনিয়াদের বাড়িতে পাঠান। সোনিয়াকে তার শ্বশুরবাড়ির লোকজন আসতে দেবে কি না সেটা জানার জন্যই এই কাজ করেন তারা।
ফরিদ আহমেদ বলেন, ‘পরে সোনিয়ার স্বামী ও শ্বশুরসহসহ তাদের বাড়ির লোকজন বাজারে এসে আমার বয়স্ক বাবা ও তার ফুপাতো ভাইকে মিছমোড়া করে গামছা দিয়ে বাঁধেন। মারতে মারতে নির্জন স্থানের একটি বিল্ডিংয়ের ছাদে নিয়ে বসিয়ে মোবাইল ফোন ও টাকা কেড়ে নেন।
‘সাদা কাগজে জোরপূর্বক স্বাক্ষর নেন। পরে নির্যাতনের ছবি ও ভিডিও করে আমাদের কাছে পাঠান। ভিডিওতে ওদের পক্ষে জোর করে কথা বলিয়ে নেন তারা। ওই ভিডিও ও ছবি আমাদের এলাকার অনেকের কাছে পাঠিয়ে সামাজিকভাবে হেয় ও ব্ল্যাকমেইল করার চেষ্টা করেন।’
পরে ৯৯৯-এ ফোন করে বিষয়টি জানানো হলে মঙ্গলবার রাত তিনটার দিকে দুজনকে উদ্ধার করা হয় বলে জানান ফরিদ।
তিনি জানান, বুধবার বিকেলে অভিযোগ দিতে সাভার মডেল থানায় গেলে ডিউটি অফিসার পরামর্শ দেন এসআই নাজিউর রহমানের সঙ্গে কথা বলতে। পরে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি-তদন্ত) কামাল হোসেন বিষয়টি জানালে তিনি বৃহস্পতিবার সকালে আবার থানায় ডাকেন।
তবে যাওয়ার আগে এসআই নাজিউরকে ফোন করলে তিনি বলেন বিকেলে আসতে। পরে সাংবাদিকদের বিষয়টি জানানোর পর এসআই ফরিদ ও তার বাবা মান্নানকে ফোন করে ডাকেন। এরপর মান্নান লিখিত অভিযোগ করেন।
তবে সোনিয়ার স্বামী আবুল কালাম নির্যাতনের অভিযোগ অস্বীকার করে নিউজবাংলাকে বলেন, ‘আমি তো নির্যাতন করি নাইকা। ওনারা আমার আত্মীয় না। আমার শ্বশুরও না, নানাশ্বশুরও না। একজনরে তো আমি চিনিই না। আরেকজন দূরসম্পর্কের আত্মীয়। দুইজন আসছেন। আইসা আমার বউরে জোরজবরদস্তি কইরা টাইনা নিয়া যাইতে চাইছে। তখন আমার বউ বাঁচাও বাঁচাও বইলা চিৎকার করছে। পরে দৌড়ায় গিয়া ধইরা আইনা বাইন্ধা রাখছে। পরে তো এখানে মীমাংসার মতো হইছে।’
কী কারণে আপনার স্ত্রীকে ওনারা জোর করে নিয়ে যাবেন- এমন প্রশ্নে অসংলগ্ন আবুল কালাম বলেন, ‘ওনাদের আমি জিজ্ঞেস করছি। তখন ওনারা কয়, বিয়া পড়াইছি ১০ লাখ টাকা কাবিন। এহন ওরে নিয়া মামলা দিমু, ১০ লাখ টাকা নিমু। এটাই হলো প্লান। ওনারা এটা বলছে আমারে।’
কালাম মোবাইল ও টাকা কেড়ে নেয়ার কথা অস্বীকার করলে সাদা কাগজে জোর করে স্বাক্ষর নেয়ার কথা স্বীকার করেন। এর কারণ বলতে পারেননি তিনি।
নির্যাতনের ভিডিও ও ছবির বিষয়ে বলেন, ‘আমি নিজে ছবি, ভিডিও ওনাদের দিছি। ওনাদের চেনেন কি না সে জন্য দিছি।’
সোনিয়ার নানা আরশাদ আলী নিউজবাংলাকে বলেন, ‘আমার নাতনির বাচ্চা হইব দেইখা ওর মায়েরে কয়েক দিন আগে আনতে পাঠাইছিলাম। কিন্তু ওরা সোনিয়ারে আইতে দেয় নাই। পরে পরশু দিনকা আমরা শালা (মান্নান) ও পুতরারে (শহীদ) পাঠাইছিলাম সোনিয়ারে আনবার। কিন্তু ওগো বাইন্ধা মারধর করছে ওরা।’
সোনিয়ার মা আসমা আক্তার অভিযোগ করেন, ‘আমার মাইয়াডা সন্তানসম্ভবা। এই সময়ডায় মাইয়াগো মায়ের কাছে থাকন লাগে। কয়দিন আগে আনবার গেছিলাম আমি। কিন্তু আমরার সাথে জামাইয়ে (কালাম) খারাপ ব্যবহার করছে।
‘প্রথমে কথাও কয় নাই। পরে সোনিয়ার শাশুড়ি অনুরোধ কইরা দুই দিন আমারে ওই বাইত্তে রাখছিল। ১০ লাখ ট্যাকা চায় জামাই। অ্যারপর জামাইয়ে আমার কাছ থাইকা একটা সাদা কাগজ আর স্ট্যাম্পে সই নিছে। তারপরও মাইয়ারে আমার লগে আইতে দেয় নাই। অহন আমার মাইয়াডারে নিয়া আমি চিন্তায় আছি। আমার মাইয়ারে আমার কাছে ফিরায় দেন আপনেরা।’
বনগাঁও ভবানীপুর পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ উপপরিদর্শক (এসআই) নাজিউর রহমান ফোন ধরে সব শোনার পরে বলেন, ‘আমি ব্যস্ত আছি, পরে ফোন দেন।’
সাভার মডেল থানার ওসি (তদন্ত) কামাল হোসেন নিউজবাংলাকে বলেন, ‘আমি তো এতকিছু জানি না। ওনাদের একটু থানায় পাঠায় দেন। আমরা মামলা নেব।’
তিনি বলেন, ‘নির্যাতনের ঘটনায় অভিযুক্ত কালাম ও তার বাবাকে আটক করা হয়েছে।’
সাভার মডেল থানার ওসি কাজী মাইনুল ইসলাম নিউজবাংলাকে বলেন, ‘এ ঘটনায় মামলা নিয়ে দোষীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।’
আরও পড়ুন:গাজীপুর মহানগরীর মোগরখাল এলাকায় ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক আবারও অবরোধ করেছেন তৈরি পোশাক কারখানার কর্মীরা। এক ঘণ্টার ব্যবধানে পুনরায় মহাসড়ক অবরোধের কারণে আবারও যানজট তৈরি হয়েছে।
শ্রমিকদের দাবি, বকেয়া বেতনের জন্য ঢাকায় যাওয়া তাদের প্রতিনিধি দল ফিরে না আসা পর্যন্ত তাদের অবরোধ অব্যাহত থাকবে।
বকেয়া বেতন পরিশোধের দাবিতে গাজীপুরে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক এর আগে টানা প্রায় ৫৩ ঘণ্টা অবরোধ করে রাখেন টিএনজেড গ্রুপের পোশাক কারখানার শ্রমিকরা। অবশেষে বকেয়া পরিশোধের আশ্বাসে সোমবার বেলা আড়াইটার দিকে মহাসড়ক থেকে অবরোধ তুলে নেন শ্রমিকরা।
তবে এক ঘণ্টার ব্যবধানে আবারও ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক অবরোধ করেছেন শ্রমিকরা। তাদের দাবি, বকেয়া বেতনের টাকা হাতে পাওয়ার আগ পর্যন্ত তারা মহাসড়ক ছাড়বেন না।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, দুপুরের দিকে গাজীপুর সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এরশাদ মিয়া ও সেনাবাহিনীসহ পুলিশের একটি দল শ্রমিকদের সঙ্গে আলোচনা করার জন্য কলম্বিয়া গার্মেন্টস এলাকায় যায়। সেনাবাহিনী, পুলিশ ও প্রশাসনের পক্ষ থেকে শ্রমিকদের সঙ্গে আলোচনা শেষে শ্রমিকদের একটি প্রতিনিধি দলকে ঢাকায় নিয়ে যাওয়া হয় তাদের বেতন সংক্রান্ত বিষয়টি সমাধানের জন্য। পরে শ্রমিকদের মহাসড়ক থেকে সরে যাওয়ার জন্য সেনাবাহিনী ও পুলিশের পক্ষ থেকে অনুরোধ জানানো হলে কিছু শ্রমিক মহাসড়ক ছেড়ে চলে যান। তবে কিছু শ্রমিক মহাসড়ক ছেড়ে যেতে অস্বীকৃতি জানান।
একপর্যায়ে পুলিশ ও সেনাবাহিনী ধাওয়া দিলে ওই শ্রমিকরা মহাসড়ক থেকে চলে যান। পরে সেনাবাহিনীর সহায়তায় ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে বেলা আড়াইটার দিকে যানবাহন চলাচল শুরু হয়।
তবে সেনাবাহিনীর সদস্যরা চলে যাওয়ার পর বিক্ষুব্ধ শ্রমিকরা বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে ফের একই স্থানে অবরোধ করেন। এতে মহাসড়কের উভয় পাশে পুনরায় তীব্র যানজট সৃষ্টি হয়েছে।
থানা পুলিশ ও শিল্পাঞ্চল পুলিশ তাদের বুঝিয়ে মহাসড়ক থেকে সরানোর চেষ্টা করলেও শ্রমিকরা মহাসড়ক ছেড়ে যেতে নারাজ। তারা বলছেন, প্রতিনিধি দল ঢাকা থেকে ফেরার পর পরিস্থিতি বুঝে তারা সিদ্ধান্ত নেবেন।
আরও পড়ুন:কুমিল্লা-৬ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য আ ক ম বাহাউদ্দিন বাহার, তার স্ত্রী মেহেরুন্নেছা, মেয়ে কুমিল্লা সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র তাহসীন বাহার সূচনা ও ছেলে আয়মান বাহারের বিদেশ গমনে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে আদালত।
দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে সোমবার ঢাকার মেট্রোপলিটন সিনিয়র স্পেশাল জজ আদালতের বিচারক মো. জাকির হোসেন এই আদেশ দেন।
দুদকের সহকারী পরিচালক আমিনুল ইসলাম এই তথ্য জানিয়েছেন।
এদিন দুদকের উপ-পরিচালক রেজাউল করিম তাদের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা চেয়ে আবেদন করেন। আবেদন বলা হয়েছে, উল্লিখিত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে ক্ষমতার অপব্যবহারপূর্বক নিয়োগ বাণিজ্য, টেন্ডারবাজি, বিভিন্ন অনিয়ম-দুর্নীতির মাধ্যমে বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্পের সরকারি অর্থ আত্মসাৎপূর্বক নিজ নামে ও পরিবারের সদস্যদের নামে জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অনুসন্ধান কার্যক্রম চলমান। গোপন ও বিশ্বস্ত সূত্রে জানা যায় যে, আ ক ম বাহাউদ্দিন ও তার পরিবারের সদস্যদের নামে রাজধানীর উত্তরায় ফ্ল্যাট, কুমিল্লার হাউজিং এস্টেটে একাধিক প্লট, মার্কেটসহ আরও জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ রয়েছে।
অভিযোগ-সংশ্লিষ্ট আ ক ম বাহাউদ্দিন ও তার পরিবারের সদস্যরা দেশ ছেড়ে পলায়ন করতে তাদের স্থাবর-অস্থাবর সম্পদ হস্তান্তরের চেষ্টা করছেন মর্মে অনুসন্ধানকালে বিশ্বস্ত সূত্রে জানা যায়। তারা বিদেশে পালিয়ে গেলে অনুসন্ধান কাজ ব্যাহত হওয়ার সমূহ আশঙ্কা রয়েছে। তাদের বিদেশ গমনে নিষেধাজ্ঞা প্রদান করা একান্ত প্রয়োজন।
এদিন দুদকের পক্ষে প্রসিকিউটর মাহমুদ হোসেন জাহাঙ্গীর আদালতে শুনানি করেন।
আরও পড়ুন:সিলেটের কানাইঘাটে ছয় বছর বয়সী শিশু মুনতাহা আক্তার জেরিনকে হত্যা করেছের তার সাবেক গৃহশিক্ষিকা মার্জিয়া আক্তার। আর এই হত্যাকাণ্ডে সহযোগিতা করেন তার মা। রোববার ভোরে শিশুটি মরদেহ মারজিয়ার মা অন্যত্র সরিয়ে নেয়ার সময় হাতেনাতে ধরা পড়েন।
এমনটি জানিয়েছেন কানাইঘাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আব্দুল আওয়াল। তিনি জানান, এই ঘটনায় গৃ্হশিক্ষিকা মার্জিয়া এবং তার মা আলিফজান বিবি ও তার আরেক দাদি কুতুবজানকে আটক করা হয়। তারা মুনতাহাদের পাশের বাসার বাসিন্দা।
তাদের দেয়া তথ্যের ভিত্তিতে পরে আরও তিনজনকে আটক করে পুলিশ। তাদের মধ্যে নিজাম উদ্দিন ও ইসলাম উদ্দিনের নাম-পরিচয় জানা গেলেও অপরজনের পরিচয় তাৎক্ষণিকভাবে জানা যায়নি।
শিশু মুনতাহা আটদিন নিখোঁজ থাকার পর রোববার ভোর ৪টার দিকে নিজেদের পুকুর থেকে ওর মরদেহ উদ্ধার করা হয়।
পুলিশের ধারণা, পূর্বশত্রুতার জের ধরে মুনতাহার সাবেক প্রাইভেট শিক্ষিকা ওকে অপহরণ করে হত্যা করেন। প্রতিবেশী ও মুনতাহার শিক্ষক সুমিকে শিক্ষকতা থেকে অব্যাহতি দেয়ায় ক্ষোভ ছিল তার পরিবারের ওপর। এছাড়া মার্জিয়ার ওপর চুরির অপবাদ দেয়ায় সেই ক্ষোভ থেকেও তিনি এই হত্যাকাণ্ড ঘটিয়ে থাকতে পারেন।
মুনতাহা কানাইঘাট উপজেলার সদর ইউনিয়নের বীরদলের ভাড়ারিফৌদ গ্রামের শামীম আহমদের মেয়ে। শিশুটি ৩ নভেম্বর নিখোঁজ হওয়ার পর বিষয়টি নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তোলপাড় হয়। তার সন্ধান চেয়ে দেশ-বিদেশে অনেকে পুরস্কারও ঘোষণা করেন।
কানাইঘাট থানার ওসি আব্দুল আওয়াল বলেন, ‘গত রাতেই (শনিবার) সন্দেহবশত আমরা মুনতাহার হাউস টিউটরকে ধরে নিয়ে আসি। তার কথাবার্তা অসংলগ্ন মনে হচ্ছিলো। তখন হাউস টিউটরের বাড়ির দিকে নজর রাখার জন্য রাতেই আমরা মুনতাহার পরিবারের সদস্যদের বলি।
‘ভোরের দিকে মুনতাহার পরিবারের সদস্যরা দেখতে পান বাড়ির পাশের একটি ছড়ার মাটি খুঁড়ে মুনতাহার মরদেহ পাশের পুকুরে ফেলে দেন ওই হাউস টিউটরের মা আলিফজান বিবি। স্থানীয়রা তাকে হাতেনাতে ধরে আমাদের খবর দেন। আমরা ঘটনাস্থলে গিয়ে মরদেহ উদ্ধার করি এবং হাউস টিউটরের মা ও তার নানিকে ধরে নিয়ে আসি।’
মরদেহের গলায় রশি প্যাঁচানো ছিল ও শরীরে ক্ষতচিহ্ন রয়েছে জানিয়ে ওসি বলেন, ‘আমাদের জিজ্ঞাসাবাদে হাউস টিউটর ও তার মা মুনতাহাকে হত্যার কথা স্বীকার করেছেন। এ ব্যাপারে তদন্ত চলছে। পূর্ববিরোধের কারণে এই হত্যাকাণ্ড ঘটে থাকতে পারে।’
মুনতাহার চাচা কয়সর আহমেদ জানান, সাবেক গৃহশিক্ষিকা মার্জিয়া পূর্বশত্রুতার জের ধরে মুনতাহাকে অপহরণ করে হত্যা করে। পরে বাড়ির পাশে ডোবায় কাদায় পুঁতে রাখে। ভোরের দিকে সুমির মা আলিফজান বিবি সেই লাশ সরিয়ে নিতে গেলে জনতার হাতে আটক হয়। এ ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের কঠোর শাস্তির দাবি জানান তিনি।
সিলেটের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম অ্যান্ড অপস্) মো. রফিকুল ইসলাম জানান, মার্জিয়ার স্বীকারোক্তি অনুযায়ী ৩ নভেম্বর রাতেই মুনতাহাকে শ্বাসরোধে হত্যার পর মরদেহ ডোবায় ফেলে রাখা হয়। সুমিকে শিক্ষকতা থেকে অব্যাহতি দেয়ার ক্ষোভ থেকে এই হত্যাকাণ্ড ঘটে থাকতে পারে। এই ঘটনায় আরও কেউ জড়িত আছে কি না তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
গত ৩ নভেম্বর সকালে বাবার সঙ্গে স্থানীয় একটি ওয়াজ মাহফিল থেকে বাড়ি ফিরে মুনতাহা। পরে প্রতিদিনের মতো আশপাশের বাড়ির শিশুদের সঙ্গে খেলাধুলা করতে যায়। কিন্তু বিকেলে বাড়ি না ফিরলে খোঁজাখুঁজি শুরু হয়। তারপর থেকে তাকে আর কোথাও পাওয়া যায়নি।
এদিকে এ ঘটনার পর ক্ষুব্ধ এলাকাবাসী ভোরেই গৃহশিক্ষিকা সুমির ঘরে আগুন ধরিয়ে দেন। আর দুপুরে ময়না তদন্ত শেষে মুনতাহার মরদেহ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করে পুলিশ।
কানাইঘাট সদর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আফসার উদ্দিন আহমদ বলেন, ‘মুনতাহা নিখোঁজ হওয়ার পর থেকে পুলিশ আন্তরিকভাবে চেষ্টা করছিল। কিন্তু কোনো ক্লু পাচ্ছিল না।
‘শনিবার স্থানীয় সাংবাদিকরা ঘটনাস্থলে গেলে তারা মার্জিয়ার আচরণ সন্দেহজনক মনে করেন। পরে রাতে পুলিশ তাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য থানায় নিয়ে যায়। এরপর স্থানীয় ইউপি সদস্যকে মার্জিয়ার বাড়ির আশপাশে মাটি খোঁড়া আছে কী না খোঁজ নিতে বলেন।’
তিনি বলেন, ‘পুলিশের তথ্যমতে মুনতাহার স্বজনসহ স্থানীয়রা রোববার রাতভর মাটিখোড়া কোনো জায়গা আছে কী না খুঁজতে থাকেন। ফজরের আজানের আগ মুহূর্তে মার্জিয়ার মা আলিফজান বিবিকে হঠাৎ অন্ধকারের মধ্যে রাস্তা পার হতে দেখে স্থানীয়রা তাকে আটকানোর চেষ্টা করেন। এ সময় তিনি দৌড়ে পালানোর চেষ্টা করলে স্থানীয়রা তাকে আটক করেন। পরে কাদামাটি মাখা মুনতাহার মরদেহ দেখতে পান তারা।
‘আটকের পর আলিফজান বিবি জানিয়েছেন যে মরদেহ প্রথমে মাটিতে পুঁতে ফেলেছিলেন। রাতে সেখান থেকে মরদেহ তুলে মুনতাহার চাচার বাড়ির পুকুরে ফেলতে চেয়েছিলেন তারা।’
আফসার উদ্দিন আরও বলেন, ‘মার্জিয়া মুনতাহার প্রতিবেশী ছিল। এক সময় ভিক্ষা করতেন মার্জিয়ার মা ও নানি। স্বামী-পরিত্যক্তা মার্জিয়া বাড়ির বাইরে গেলে মুনতাহাকে সঙ্গে নিতেন। সবাই তাকে বিশ্বাসও করতেন।’
আরও পড়ুন:চব্বিশের গণঅভ্যুত্থানে ছাত্র-জনতার গণআন্দোলন চলাকালে মাগুরায় আওয়ামী-সন্ত্রাসীদের গুলিতে নিহত (শহিদ) মেহেদী হাসান রাব্বির পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে মতবিনিময় করেছে ‘আমরা বিএনপি পরিবার’-এর প্রতিনিধি দল।
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান ও ‘আমরা বিএনপি পরিবার’-এর প্রধান পৃষ্ঠপোষক তারেক রহমানের পক্ষ থেকে প্রতিনিধি দলটি রোববার বিকেলে মাগুরা জেলা ছাত্রদল নেতা শহিদ রাব্বির বাসায় গিয়ে তার পরিবারের নিকটাত্মীয়দের সঙ্গে মতবিনিময় করে।
এ সময় শহিদ রাব্বির পরিবারসহ মাগুরায় মোট ১০ জন শহিদের প্রত্যেক পরিবারকে এবং আন্দোলনে আহত একজনের পরিবারকে আর্থিক সহায়তা দেয়া হয়।
মাগুরা পৌরসভার বরুণাতৈল গ্রামে শহিদ রাব্বির বাসায় অনুষ্ঠিত এই মতবিনিময় অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন বিএনপির কোষাধ্যক্ষ ও ‘আমরা বিএনপি পরিবার’-এর উপদেষ্টা এম রশিদুজ্জামান মিল্লাত। বিশেষ অতিথি ছিলেন ‘আমরা বিএনপি পরিবার’-এর আহ্বায়ক ও বিএনপি মিডিয়া সেলের সদস্য আতিকুর রহমান রুমন।
অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে সাবেক ছাত্রনেতা ইঞ্জিনিয়ার হাসনাইন মনজুর মোর্শেদ ইমন, ‘আমরা বিএনপি পরিবার’-এর সদস্য মাসুদ রানা লিটন, মুস্তাকিম বিল্লাহ, ফরহাদ আলী সজীব, শাহাদত হোসেন, ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি হাবিবুল বাশার, যুগ্ম-সম্পাদক হাসনাইন নাহিয়ান সজীব, বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদলের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক মশিউর রহমান মহান, ঢাকা কলেজ ছাত্রদলের সাহিত্য ও প্রকাশনা সম্পাদক আব্দুল্লাহ আল মিসবাহ, মাগুরা জেলা বিএনপির সাবেক আহ্বায়ক আলহাজ্ব আলী আহমেদ, সাবেক সদস্য সচিব বীর মুক্তিযোদ্ধা আকতার হোসেন, জেলা বিএনপির সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক আলমগীর হোসেন ও মাগুরা সদর উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক কুতুবউদ্দিন উপস্থিত ছিলেন।
প্রসঙ্গত, ছাত্র-জনতার গণআন্দোলন চলাকালে ৪ আগস্ট আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে মিছিলের সামনের সারিতে ছিলেন মেহেদী হাসান রাব্বি। ওই মিছিলে ছাত্রলীগ ও যুবলীগের সন্ত্রাসীরা গুলি চালালে মাগুরা জেলা ছাত্রদলের সিনিয়র যুগ্ম-আহ্বায়ক রাব্বি গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত (শহিদ) হন। এ সময় রাব্বির ভাতিজা খালিদ বিশ্বাসসহ অন্তত ২০জন আহত হন।
বরুণাতৈল গ্রামের মৃত ময়েন উদ্দিন বিশ্বাসের ছেলে মেহেদী হাসান রাব্বি। তার স্ত্রী রুমি খাতুন ও ছোট ভাই ইদ্রিস হোসেন বিশ্বাস বলেন, ‘পুলিশ নয়, ছাত্রলীগ-যুবলীগের নেতা-কর্মীদের গুলিতেই রাব্বি প্রাণ হারিয়েছেন।’
চলতি বছরের মে মাসে বিয়ে করেন মেহেদী হাসান রাব্বি। সংসার-জীবন শুরুর আগেই জুলাই-আগস্টের গণঅভ্যুত্থানে ঘাতকের বুলেট কেড়ে নেয় তার প্রাণ। ইতোমধ্যে স্ত্রী রুমী খাতুনের গর্ভে এসেছে রাব্বির রেখে যাওয়া স্মৃতি। অনাগত এই শিশু ভূমিষ্ঠ হওয়ার পর পিতার অনাদরে বেড়ে উঠবে একথা যেমন ধ্রুব-সত্য, তেমনি বড় হয়ে সে জানবে তার বাবা স্বৈরাচারের বিরুদ্ধে গণতান্ত্রিক-আন্দোলনে শহিদ হয়েছেন। দেশে সুষ্ঠু রাজনৈতিক পরিবেশ ও গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার লড়াইয়ে রাব্বির আত্মত্যাগ দেশের মানুষের কাছে চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবে।
আরও পড়ুন:কোনো ষড়যন্ত্রে পা না দিয়ে অন্তর্বর্তী সরকারকে দ্রুত নির্বাচন দেয়ার আহ্বান জানিয়েছেন বিএনপির কেন্দ্রীয় ভাইস চেয়ারম্যান বরকত উল্লাহ বুলু।
তিনি বলেছেন, ভোটের অধিকার আদায়ের জন্য এদেশের আপামর জনসাধারণ আন্দোলন-সংগ্রাম করেছে। জীবন দিয়েছে, রক্ত দিয়েছে। মানুষের আকাঙ্ক্ষা পূরণে অতি শিগগির নির্বাচন দিতে হবে। কারও ষড়যন্ত্রে পা দিয়ে জাতিকে বিভ্রান্ত করবেন না।
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের উদ্ধৃতি দিয়ে বরকত উল্লাহ বুলু বলেন, ‘বিএনপি এককভাবে রাষ্ট্রক্ষমতায় যেতে চায় না। হাসিনাবিরোধী আন্দোলনে যারা ছিলেন সবাইকে নিয়ে সরকার গঠন করা হবে। একটি জাতীয় সরকার গঠিত হবে।’
মহান মুক্তিযুদ্ধে শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের অবদানের কথা তুলে ধরে বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘স্বাধীনতার ঘোষণা দেয়ার পর জিয়াউর রহমান রণাঙ্গনে সশরীরে যুদ্ধ করে দেশ স্বাধীন করেছেন। কাউকে খুন করে কিংবা ক্যু করে তিনি রাষ্ট্র-ক্ষমতায় আসেননি।’
৭ নভেম্বর জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবস উপলক্ষে রোববার কুমিল্লা বিভাগীয় বিএনপির উদ্যোগে শোভাযাত্রা-পূর্ব আলোচনা সভায় বরকত উল্লাহ বুলু এসব কথা বলেন।
কুমিল্লা শহরের কান্দিরপাড়ে বিএনপির কার্যালয়ের সামনে বিকেল ৩টায় আলোচনা সভা শেষে সেখান থেকে একটি বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা বের হয়ে নগরীর বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে।
শোভাযাত্রা ও আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন বিএনপির কেন্দ্রীয় ভাইস চেয়ারম্যান বরকত উল্লাহ বুলু। সভাপতিত্ব করেন কেন্দ্রীয় বিএনপির ত্রাণ ও পুনবার্সন সম্পাদক এবং কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা বিএনপির আহ্বায়ক হাজী আমিন উর রশিদ ইয়াছিন।
প্রধান বক্তা ছিলেন বিনপির কুমিল্লা বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক অধ্যক্ষ সেলিম ভূঁইয়া।
বিশেষ অতিথি ছিলেন চাঁদপুর জেলা বিএনপির সভাপতি শেখ ফরিদ আহমেদ মানিক, বিএনপির কুমিল্লা বিভাগীয় সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক মুস্তাক মিয়া, কেন্দ্রীয় সদস্য সৈয়দ জাহাঙ্গীর আলম, কুমিল্লা মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক উদবাতুল বারী আবু, কেন্দ্রীয় বিএনপির সদস্য অ্যাডভোকেট সাবেরা আলাউদ্দিন হেনা, কুমিল্লা উত্তর জেলা বিএনপির আহ্বায়ক আখতারুজ্জামান ও ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা বিএনপির আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট আবদুল মান্নান।
অনুষ্ঠান সঞ্চালনায় ছিলেন মহানগর বিএনপির সদস্য সচিব ইউসুফ মোল্লা টিপু।
মহানগর বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা আহ্বায়ক আমিরুজ্জামান আমির, সাবেক ভারপ্রাপ্ত আহ্বায়ক শওকত আলী বকুল, বিএনপি নেতা নিজামুদ্দিন কায়সারসহ কুমিল্লা বিভাগীয় বিএনপির আওতাধীন প্রতিটি ইউনিটের নেতৃবৃন্দ এ সময় উপস্থিত ছিলেন।
এর আগে শোভাযাত্রায় অংশগ্রহণের জন্য দুপুরের পর থেকে নানা প্রান্ত থেকে মিছিল সহকারে নেতা-কর্মীরা দলীয় কার্যালয় প্রাঙ্গণে জড়ো হতে থাকেন। তাদের পদচারণায় মুখর হয়ে ওঠে কান্দিরপাড় ও আশপাশের এলাকা।
আরও পড়ুন:খাগড়াছড়ির পানছড়ি উপজেলার সীমান্তবর্তী দুদকছড়ায় ভারতবর্ষ পাড়ায় পাহাড়ি দুই সংগঠনের মধ্যে গোলাগুলিতে একজন নিহত হয়েছেন। নিহত মিটন চাকমা ইউনাইটেড পিপলস ডেমোক্রেটিক ফ্রন্টের (ইউপিডিএফ) প্রসিত দলের পানছড়ির সংগঠক বলে দাবি করেছে সংগঠনটি। মিটন চাকমা রবিবার দুপুর ১২ টার দিকে মারা যায়।
পানছড়ি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ জসিম জানান, রোববার ভোর ৫টা থেকে সকাল ৮টা পর্যন্ত ওই এলাকায় গোলাগুলি হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। তবে কোনো হতাহতের খবর জানা যায়নি।
নিরন চাকমার পাঠানো ইউপিডিএফের জেলা সংগঠক অংগ্য মারমা এক বিবৃতিতে দাবি করেছেন, জনসংহতি সমিতির (সন্তু লারমা) একদল সশস্ত্র সদস্য ইউপিডিএফ সদস্যদের ওপর হামলা চালালে মিটন চাকমা নিহত হন।
বিবৃতিতে জানানো হয়, মিটন চাকমা চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের পালি বিভাগ থেকে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি লাভ করেন। তিনি জেলার দীঘিনালা উপজেলাধীন উদোল বাগান গ্রামের সুশান্ত চাকমার ছেলে। তিনি ইউপিডিএফ সমর্থিত পাহাড়ি ছাত্র পরিষদের চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি ছিলেন। ২০২২ সালের নভেম্বরে ইউপিডিএফে যোগ দেন তিনি।
বিবৃতিতে অবিলম্বে পানছড়িতে অবস্থানরত জেএসএস সন্তু গ্রুপের সশস্ত্র সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ গ্রহণ ও মিটন চাকমা হত্যায় জড়িতদের গ্রেপ্তারের দাবি জানানো হয়েছে।
এর আগে ৩০ অক্টোবর একই উপজেলার লতিবান ইউনিয়নের শুকনাছড়ি শান্তিরঞ্জন পাড়ায় প্রতিপক্ষের হামলায় ইউপিডিএফের তিন কর্মী নিহত হন। তারা প্রসীত খীসার নেতৃত্বাধীন ইউপিডিএফ কর্মী ছিল। ওই ঘটনার জন্য গণতান্ত্রিক ইউপিডিএফকে দায়ী করে প্রসীত খীসার নেতৃত্বাধীন ইউপিডিএফ।
আরও পড়ুন:নিষেধাজ্ঞা শেষে মুন্সীগঞ্জ-শরীয়তপুরে পদ্মা নদীতে জাল ফেলেও আশানুরূপ ইলিশ মিলছে না। তার পরিবর্তে জেলের জালে উঠে আসছে পাঙ্গাস। দাম ভালো পাওয়ায় ইলিশ না পাওয়ার আক্ষেপ কমছে। খুশি জেলেরা।
গত শুক্র ও শনিবার মুন্সীগঞ্জের মাওয়া, হাসাইল ও দিঘিরপাড় মৎস্য আড়তে চার কেজি থেকে শুরু করে প্রায় ১৫ কেজি ওজনের পাঙ্গাস বিক্রি করেছেন জেলেরা। আটশ’ থেকে এক হাজার দরে পাইকারদের কাছে পাঙ্গাস বিক্রি করছেন আড়তদাররা।
হাসাইল এলাকার জেলে হাসান ছৈয়াল বলেন, ‘ইলিশ শিকারে নিষেধাজ্ঞা ওঠার পর বহু আশা নিয়ে নদীতে মাছ ধরতে যাই। কিন্তু জালে তেমন একটা ইলিশ আসছে না। তার পরিবর্তে ধরা পড়ছে বড় বড় পাঙ্গাস। আড়তগুলোতে পাঙ্গাসের ভালো দাম পাওয়ায় আমরা খুশি।’
হাসাইল মৎস্য আড়তের আড়তদার বাবু হাওলাদার বলেন, ‘প্রতি বছরের এই সময়ে নদীতে জেলেরা বড় বড় পাঙ্গাস পেয়ে থাকে। এবারও তার ব্যতিক্রম নয়। গত বছর হাসাইল আড়তের এক জেলে এক খ্যাপে সর্বোচ্চ ৮০ পিস পাঙ্গাস পেয়েছিলো। তবে চলতি মৌসুমে পদ্মায় পাংগাস মাছ বেশি হারে ধরা পড়ছে। এ পর্যন্ত এক খ্যাপে ২৫০ পিস পাঙ্গাস পাওয়ার কথা শুনেছি।’
টঙ্গীবাড়ী থেকে পাঙ্গাস কিনতে আসা গনেশ নামের এক ব্যক্তি বললেন, ৯৫০ টাকা দরে ১১ কেজি ওজনের একটি পাঙ্গাস কিনলাম। নদীর পাঙ্গাসের স্বাদই আলাদা। তাই ভোরে আড়তে এসেছি পাঙ্গাস কিনতে। পছন্দমতো কিনে নিলাম।’
মন্তব্য