অনুমোদনহীন আইপি টিভি জয়যাত্রা টেলিভিশনে কাজ করার জন্য ২০১৯ সালের আগস্টে নিয়োগ পেয়েছিলেন ময়মনসিংহের রবিউল আওয়াল রবি। মাঝেমধ্যেই তাকে লাইভসহ উন্নয়নমূলক প্রতিবেদন করতে বলা হতো।
এ জন্য অগ্রিম কিংবা প্রতিবেদনের পর দিতে হতো ৫০০ থেকে ১০০০ টাকা। এতদিন এসব তথ্য গোপন রাখলেও এবার হেলেনা জাহাঙ্গীরের ‘গোপন বাণিজ্য’ নিউজবাংলার কাছে ফাঁস করে দিলেন তিনি। এ ছাড়া জয়যাত্রার ফেসবুক গ্রুপসহ অন্যান্য ফেসবুক মেসেঞ্জারে টাকা লেনদেনের প্রমাণ নিউজবাংলার হাতে এসেছে।
সেখানে দেখা যায়, ‘দেশ জয়যাত্রা’ নামে একটি ফেসবুক গ্রুপে সারা দেশে জয়যাত্রা টেলিভিশনের সাংবাদিকদের টাকা লেনদেনের জন্য সুনির্দিষ্ট মোবাইল নম্বর দেয়া হয়েছে। নিউজবাংলার পাঠকদের জন্য লেখাটি হুবহু তুলে ধরা হলো-
জরুরি বিজ্ঞপ্তি: জয়যাত্রা টিভির সব প্রতিনিধিদের অবগতির জন্য জানানো যাচ্ছে যে, শুধুমাত্র ০১৯৫৮৩১৫০০২ নম্বর ছাড়া অন্য কোনো নম্বরে লেনদেন করলে অফিস কর্তৃপক্ষ দায়ী থাকবে না। দুর্নীতি করে কেউ ধরা পড়লে প্রাতিষ্ঠানিকভাবে কঠোর শাস্তির ব্যবস্থা নেয়া হবে।
প্রিয় প্রতিনিধিবৃন্দ, আপনাদের অক্লান্ত পরিশ্রমের ফসল আজকের জয়যাত্রা টেলিভিশন। দু’চারজন কুচক্রীর কারণে কোনোভাবেই জয়যাত্রার সুনাম নষ্ট হতে দেয়া হবে না। ঈদের পরই জয়যাত্রা নতুন রূপে দর্শকের সামনে আবির্ভূত হবে। আপনাদের সুস্থতা কামনা করছি। সিও।
গত ২১ অক্টোবর জয়যাত্রা অফিসে কর্মরত একজন লিখেছেন- প্রিয় প্রতিনিধিবৃন্দ শুভেচ্ছা জানবেন। এখন পর্যন্ত যারা যারা প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর ফি জমা দেননি দ্রুত সময়ের মধ্যে ০১৯৫৮৩১৫০০২ নম্বরে পেমেন্ট করার জন্য অনুরোধ কারা হলো...কর্তৃপক্ষ।
এই কথার উত্তরে মফস্বলে কর্মরত জয়যাত্রা টিভির একজন সাংবাদিক লেখেন, এটা কিসের ফি বুঝলাম না ভাই।
আরেক লেখায় দেখা যায়, অফিস থেকে কমার্শিয়াল নিউজ করতে বলা হচ্ছে। এ জন্য প্রতিনিধিদের কাছে কৌশলে টাকা চাওয়া হচ্ছে।
এ ছাড়া গত ৩১ ডিসেম্বর জয়যাত্রা অফিসে কর্মরত আরেকজন লিখেছেন- জয়যাত্রা টেলিভিশনের প্রতিনিধিদের আগের নির্দেশনা মোতাবেক জানানো যাচ্ছে যে, জানুয়ারি মাসের ১ থেকে ৫ তারিখের মধ্যে প্রত্যেকে ৩ হাজার টাকা করে অফিসের বিকাশ পেমেন্ট নম্বরে পাঠাবেন এবং আমাকে জানাবেন।
এখানে আরও বলা হয়, যদি কোনো প্রতিনিধি টাকা পাঠাতে ব্যর্থ হন তাহলে নিজ নিজ উদ্যোগে আইডি কার্ড ও নিয়োগপত্র অফিসে জমা দিয়ে পাওনাদি নিয়ে যাবেন। দুঃসময়ে আপনার সহযোগিতাই অফিস কর্তৃপক্ষের একমাত্র কাম্য।
এভাবে টাকা লেনদেনের বিষয়ে জয়যাত্রা টিভির সাবেক ময়মনসিংহের সাংবাদিক রবিউল ইসলাম রবির সঙ্গে কথা হয় নিউজবাংলার।
তিনি বলেন, ‘জয়যাত্রা নামে একটি স্যাটেলাইট টেলিভিশন পর্দায় আসবে এমন তথ্য পাই। এরপর ২০১৯ সালের আগস্ট মাসে জয়যাত্রা টিভির প্রধান কার্যালয়ে কর্মরত একজনের সঙ্গে যোগাযোগ করি৷ তিনি সরাসরি অফিসে এসে হেলেনা জাহাঙ্গীরের সঙ্গে কথা বলতে বলেন। তখন তার কথামতো আমি অফিসে চলে যাই।’
রবিউল বলেন, ‘অফিসে যাওয়া পর আমি আগে কোথায় কাজ করেছি এবং বিভিন্ন বিষয়ে কথাবার্তা বলে নিয়োগপত্র দেন। তবে নিয়োগ দেয়ার আগে হেলেনা জাহাঙ্গীর কয়েকটি শর্ত দিয়ে বলেন, আমরা তো সামনে সরকারি অনুমোদন নিয়ে স্যাটেলাইটে চলে আসব। এখন তো ময়মনসিংহে এই টিভি দেখা যাচ্ছে না। এ জন্য ক্যাবলে লাইন দিতে হবে। এটি আপনাদেরকেই ব্যবস্থা করতে হবে।
রবিউল বলেন, ‘নিয়োগের পরপরই আমাকে বলা হয় তাদের অফিসে কর্মরতদের বেতন দিতে হিমশিম খাচ্ছেন হেলেনা। এ সংকট সব প্রতিনিধিকে একসঙ্গে মোকাবিলা করতে হবে। এ জন্য কয়েক মাস ২ হাজার টাকা করে তাদের বিকাশ নম্বরে পাঠাতে বলেন। তখন আমিসহ সব প্রতিনিধি ২ থেকে ৩ হাজার করে টাকা পাঠাতে শুরু করি। কয়েক মাস এভাবে টাকা পাঠানোর পর আবারও বেশি টাকা পাঠাতে বলা হয়। ব্যুরো চিফ প্রতি মাসে ৩ হাজার, জেলা প্রতিনিধি ২ হাজার ও উপজেলা প্রতিনিধি ১ হাজার টাকা বাধ্যতামূলক দিতে হবে। তখন সবাই টাকা দিতে থাকেন।
‘আমাকে কয়েক মাস আগে বলা হয়েছিল আইডি কার্ডের মেয়াদ চলে গেছে। সে ক্ষেত্রে তারা নতুন আইডি কার্ড দেবে এবং আমাকে এ জন্য ৫ হাজার টাকা দিতে হবে। জয়যাত্রা টিভিতে ভেঙে ভেঙে টাকা নেয়াসহ ব্যুরো অফিস ও ক্যামেরা দেয়ার কথা বলে আমার কাছ থেকে টাকা নেয়া হয়েছে প্রায় ৫০ হাজার। কয়েক মাস আগে তাদের ফাঁদ বুঝতে পেরে নিজ থেকেই এই আইপি টিভি থেকে সরে এসেছি।’
অফিস থেকে বেতন দেয়নি, তারা বললেই আপনারা টাকা পাঠাতেন কেন? এমন প্রশ্নে রবিউল বলেন, ‘আসলে সব সময় আমাদের হেলেনা জাহাঙ্গীর আশ্বাস দিয়ে বলতেন স্যাটেলাইট হয়ে গেলেই আমাদের ভালো বেতন দেয়া হবে। এমন আশ্বাস বুঝতে না পেরে ধাপে ধাপে প্রতারণার শিকার হয়েছি।’
তিনি আরও বলেন, ‘জয়যাত্রা টেলিভিশনের নামে দেশ-বিদেশে অগণিত সাংবাদিক নিয়োগ দিয়ে মোটা অঙ্কের টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন হেলেনা জাহাঙ্গীর। আমরা মফস্বলে জয়যাত্রাতে যারা কাজ করেছি সবার সঙ্গেই প্রতারণা করা হয়েছে। আগে হেলেনা জাহাঙ্গীরের এসব প্রতারণার ফাঁদ কেউ না বললেও এখন তা পরিষ্কার। আমাদের সঙ্গে এমন প্রতারণা করার কারণে হেলেনার উপযুক্ত শাস্তির দাবি জানাই।’
আওয়ামী লীগের নামের সঙ্গে মিল রেখে নামসর্বস্ব সংগঠন ‘চাকরিজীবী লীগ’ নিয়ে আলোচিত-সমালোচিত ব্যবসায়ী হেলেনা জাহাঙ্গীর। তিনি এই সংগঠনকে সামনে নিয়ে আসার পর ক্ষমতাসীন দলের কর্মী-সমর্থকদের কাছ থেকে তুমুল সমালোচনার মুখে পড়েন।
এ ঘটনায় আওয়ামী লীগের পদ হারান হেলেনা। ক্ষমতাসীন দলের মহিলাবিষয়ক কেন্দ্রীয় উপকমিটির সদস্যপদ ছাড়াও কুমিল্লা উত্তর আওয়ামী লীগের উপদেষ্টার পদ থেকেও অব্যাহতি দেয়া হয় তাকে। ওই ঘটনায় পিছুটান দেন হেলেনা। বলেন, তিনি ‘আওয়ামী চাকরিজীবী লীগ’ নামে এই সংগঠনের কেউ না। তাকে সম্প্রতি সভাপতি হওয়ার প্রস্তাব দেয়া হয়েছিল।
গত বৃহস্পতিবার তার গুলশানের বাসায় অভিযান চালায় র্যাব-১-এর একটি দল। অভিযানে জব্দ করা হয় ১৯ বোতল বিদেশি মদ, একটি ক্যাঙ্গারুর চামড়া, একটি হরিণের চামড়া, দুটি মোবাইল ফোন, ১৯টি চেকবই ও বিদেশি মুদ্রা, দুটি ওয়াকিটকি সেট এবং জুয়া (ক্যাসিনো) খেলার ৪৫৬টি চিপস।
পরে মধ্যরাতে তার জয়যাত্রা টেলিভিশনেও অভিযান পরিচালনা করা হয়। শুক্রবার রাতে তার বিরুদ্ধে গুলশান থানায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে এবং পল্লবী থানায় টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ আইনে মামলা হয়।
এর মধ্যে গুলশান থানায় করা ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মামলাটিতে তাকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়। পরে এই মামলায় তাকে তিন দিনের রিমান্ডে পাঠায় আদালত।
হেলেনার মালিকানাধীন জয়যাত্রা টিভিতে ভোলা প্রতিনিধি হিসেবে নিয়োগ দেয়ার নামে আব্দুর রহমান তুহিনের কাছ থেকে মোটা অঙ্কের টাকা নেয় কর্তৃপক্ষ। এ জন্য সোমবার বিকেলে পল্লবী থানায় মামলা করেন আব্দুর রহমান।
এই মামলায় হেলেনার পাশাপাশি আসামি করা হয়েছে জয়যাত্রা টিভির জেনারেল ম্যানেজার হাজেরা, প্রধান বার্তা সম্পাদক কামরুজ্জামান আরিফসহ অজ্ঞাত ১০-১২ জনকে।
রাজধানীর গাবতলী এলাকা থেকে সোমবার রাতে হাজেরা খাতুন ও সানাউল্ল্যাহ নূরী নামে হেলেনা জাহাঙ্গীরের দুই সহযোগীকে গ্রেপ্তার করে র্যাব।
টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ আইনে করা মামলায় সাত দিন এবং চাঁদাবাজি মামলায় সাত দিনের রিমান্ড আবেদন করা হয়। শুনানি শেষে দুই মামলায় চার দিন করে মোট আট দিনের রিমান্ড দেন বিচারক।
ঝালকাঠি পৌর এলাকার পুরাতন কলেজ ও পৌরসভা খেয়াঘাটের উন্মুক্ত ইজারায় উচ্চ আদালতের স্থগিতাদেশ জারি হয়েছে।
রিটকারী আইনজীবী তরিকুল ইসলাম শুক্রবার এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
উন্মুক্ত ইজারা স্থগিত করায় মাঝিমাল্লা সম্প্রদায়ের ইজারা পেতে আর কোনো বাধা থাকল না।
মাঝিমাল্লা বহুমুখী সমবায় সমিতি সূত্রে জানা যায়, প্রতি বছর শতকরা ১০ ভাগ মূল্য বৃদ্ধিতে এ সমিতি ইজারা নিয়ে ঘাট পরিচালনা করে আসছে। এ বছর উন্মুক্ত ইজারা আহ্বান করায় উচ্চ আদালতে রিট পিটিশন করে মাঝিমাল্লা বহুমুখী সমবায় সমিতি। পিটিশনের প্রেক্ষিতে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে এ স্থগিতাদেশ জারি করা হয়েছে।
উচ্চ আদালতের আদেশের অ্যাডভোকেট প্রত্যয়ন কপিসহ ইজারাদার কর্তৃপক্ষ ঝালকাঠি পৌর মেয়র বরাবরে আবেদন করেন মাঝিমাল্লা সমিতির নেতারা। পরে নির্বাহী প্রকৌশলীকে বিধি মোতাবেক ব্যবস্থা নেয়ার নির্দেশ দেন মেয়র লিয়াকত আলী তালুকদার।
রিটকারী আইনজীবী তরিকুল ইসলাম জানান, ঝালকাঠির খেয়াঘাট সমূহের জন্য ঝালকাঠি পৌরসভা একটি উন্মুক্ত ইজারা আহ্বান করেছে। নীতিমালা অনুযায়ী মাঝিমাল্লা (পাটনি) সম্প্রদায়ের পাওয়ার কথা। উন্মুক্ত ইজারাকে চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে রিট পিটিশন করা হয়। পিটিশনের শুনানি শেষে আদালত উন্মুক্ত ইজারা স্থগিত করেছে।
তিনি আরও জানান, এখন থেকে প্রথমে মাঝিমাল্লা সমিতি ইজারা নেবে। যদি কোনো কারণে সমিতির পক্ষ থেকে ইজারা নিতে অস্বীকার বা অপারগতা প্রকাশ করে তাহলে উন্মুক্ত ইজারা আহ্বান করতে পারবে। উচ্চ আদালতের স্থগিতাদেশের মাধ্যমে মাঝিমাল্লা সম্প্রদায় তাদের ন্যায্য অধিকার ফিরে পেয়েছে।
পৌর সচিব শাহিন সুলতানা বলেন, ‘আমরা শুধু আবেদিত দরপত্রসমূহ উন্মুক্ত করে প্রকাশ করছি। বাছাই করে গুছিয়ে রাখছি। আমরা এর বেশি কিছুই করতে পারব না।’
নির্বাহী প্রকৌশলী অলোক সমদ্দার নিউজবাংলাকে বলেন, ‘ঝালকাঠির পুরাতন কলেজ ও পৌর খেয়াঘাটের ইজারা বিষয়ে উচ্চ আদালতের নির্দেশনা আছে। এ মুহূর্তে আমরা কোনো সিদ্ধান্ত নিচ্ছি না। দরপত্র আহ্বানের পরে টেক কমিটি আছে তারাই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে।’
পৌরসভার নির্বাহী প্রকৌশলী অলোক সমদ্দার, পৌর সচিব শাহিন সুলতানাসহ পৌর কর্মচারী ও সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারদের উপস্থিতিতে বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ দুপুরে এসব ঘাট ইজারার দরপত্র বাক্স উন্মুক্ত করা হয়।
আরও পড়ুন:নাটোরের নলডাঙ্গায় এক স্কুলছাত্রকে বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে কুপিয়ে হত্যা করেছে দুর্বৃত্তরা।
উপজেলার পিপরুল ইউনিয়ন পরিষদের পরিত্যক্ত ভবনে বৃহস্পতিবার রাতে এ ঘটনা ঘটে।
প্রাণ হারানো হিমেল হোসেন (১৫) উপজেলার পিপরুল গ্রামের ফারুক সরদারের ছেলে। সে পাটুল-হাপানিয়া স্কুল ও কলেজের নবম শ্রেণির ছাত্র ছিল।
নলডাঙ্গা থানার ওসি মো. মনোয়ারুজ্জামান জানান, বৃহস্পতিবার বিকেল ৫টার দিকে হিমেলকে তার সহপাঠী ফোন করে বাড়ি থেকে ডেকে নেয়। এরপর থেকে হিমেলের মোবাইল ফোনটি বন্ধ পান তার স্বজনরা। পরে রাত হলেও বাড়িতে না ফিরলে পরিবারের লোকজন তাকে খোঁজাখুঁজি শুরু করেন এবং বিষয়টি পুলিশকে জানান।
ওসি বলেন, পুলিশ হিমেলকে উদ্ধারে অভিযানে নামে। অভিযানে হিমেলের বন্ধু পার্থকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করা হয়। পার্থের দেয়া তথ্য অনুযায়ী বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ১২টার দিকে পিপরুল ইউনিয়ন পরিষদের পরিত্যক্ত ভবনে রক্তাক্ত ও ক্ষতবিক্ষত অবস্থায় হিমেলের মরদেহ উদ্ধার করা হয়। হিমেলের মাথায় আঘাত, গলা ও শরীরের বিভিন্ন স্থানে ধারালো অস্ত্রের আঘাতের চিহ্ন পাওয়া গেছে।
তিনি আরও জানান, এ ঘটনায় মেহেদি, শিমুল ও সুজন নামে আরও তিনজনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করে থানায় নিয়ে আসা হয়। কী কারণে এ হত্যাকাণ্ড ঘটেছে তা অনুসন্ধান করা হচ্ছে। এ বিষয়ে একটি মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে।
মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে বলে জানান পুলিশের এ কর্মকর্তা।
আরও পড়ুন:যশোরের বেনাপোল পোর্ট থানার পুটখালী সীমান্তে পায়ুপথে স্বর্ণের বার পাচারের ঘটনায় একজনকে আটক করেছে খুলনা-২১ বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) সদস্যরা।
মসজিদবাড়ী এলাকার বিজিবি চেকপোস্টের সামনে থেকে বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ১১টার দিকে তাকে আটক করা হয়।
আটক হওয়া মনোর উদ্দিনের বাড়ি বেনাপোল পোর্ট থানার পুটখালী গ্রামে।
খুলনা-২১ বিজিবির সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ‘খুলনা-২১ বিজিবি ব্যাটালিয়নের পুটখালী ক্যাম্পের কমান্ডার সুবেদার মাহবুবুর রহমানের নেতৃত্বে সীমান্তের মেইন পিলার ১৭ এর ৭ এস এর ১৬৮ আর পিলার হতে ৫০০ গজ বাংলাদেশের ভেতরে মসজিদবাড়ী বিজিবি চেকপোস্ট এলাকায় গোপন অবস্থান করে।
‘স্বর্ণ পাচারকারী মনোর উদ্দিন একটি ইজিবাইকে করে স্বর্ণের চালানটি ভারতে পাচারের উদ্দেশে সীমান্তের দিকে যাচ্ছিল। তখন মনোর উদ্দিনকে সন্দেহজনকভাবে আটক করা হয়।’
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ‘প্রথমে তার শরীর তল্লাশি করে কোনো স্বর্ণ পাওয়া যায়নি। পরে তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করলে সে স্বীকার করে তার পায়ুপথে স্বর্ণের বারগুলো আছে।
‘এ সময় তাকে আটক করে বেনাপোল বাজারে রজনী ক্লিনিকে শরীর স্ক্যানিং করে পায়ুপথে ছয় পিস স্বর্ণের বারের অস্তিত্ব পাওয়া যায়। তারপর তার কাছ থেকে স্বর্ণের বার উদ্ধার করা হয়, যার ওজন ৭০০ গ্রাম।’
খুলনা-২১ বিজিবির অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল খুরশিদ আনোয়ার স্বর্ণসহ এক পাচারকারী আটকের বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, উদ্ধারকৃত স্বর্ণের চালানটি যশোর ট্রেজারিতে আছে। আটক ব্যক্তিকে বেনাপোল পোর্ট থানায় পাঠানো হয়েছে।
আরও পড়ুন:আগামী জুনের মধ্যে ১০ হাজার প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ সম্পন্ন করবে সরকার। সে জন্য সব প্রস্তুতি সম্পন্ন করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী অধ্যাপক রুমানা আলী।
কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া সরকারি কলেজে শুক্রবার সকাল পৌনে ১১টার দিকে প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষার কেন্দ্র পরিদর্শন শেষে এ কথা জানান তিনি।
প্রতিমন্ত্রী রুমানা আলী বলেন, শিক্ষক নিয়োগ প্রক্রিয়ায় কেউ যেন প্রতারিত না হয় কিংবা কেউ যেন প্রতারণা না করতে পারে সে জন্য সরকার সব ব্যবস্থা নেবে। আগামী জুনের মধ্যেই ১০ হাজার প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ সম্পন্ন করা হবে।
তিনি বলেন, ‘আমি কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া সরকারি কলেজ কেন্দ্রে পরিদর্শন করেছি। সেখানে খুব ভালোভাবে পরীক্ষা সম্পন্ন হয়েছে, তবে এ বছর নিয়োগ পরীক্ষায় প্রার্থীর সংখ্যা কিছুটা কম।’
এ সময় প্রতিমন্ত্রী কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া কলেজে বঙ্গবন্ধুর ম্যুরালে পুস্পস্তবক অর্পণ করেন।
সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সহকারী শিক্ষক নিয়োগের তৃতীয় ও শেষ ধাপের পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয় আজ। ঢাকা ও চট্টগ্রাম বিভাগের জেলাগুলোতে শুক্রবার সকাল ১০টা থেকে শুরু হয়ে বেলা ১১টা পর্যন্ত চলে লিখিত পরীক্ষা।
এ ধাপে কুমিল্লা জেলায় ৩২ হাজার ১৯৯ জন পরীক্ষার্থী অংশ নিয়েছেন। এর মধ্যে নারী ১৪ হাজার ৭৬৭ জন এবং পুরুষ ১৭ হাজার ৪৩২ জন।
আরও পড়ুন:কুমিল্লার বরুড়ায় ভাইকে হত্যার দায়ে ছোট ভাই, বোন ও ভগ্নিপতিসহ তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
উপজেলার শালুকিয়া গ্রাম থেকে বৃহস্পতিবার তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। এর আগে বুধবার সকালে নিজ বসতঘর থেকে শরিফ হোসেন (৩৫) নামে এক যুবকের মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ।
গ্রেপ্তার তিনজন হলেন শরিফের ছোট ভাই আরিফ হোসেন, বড় বোন খুকি আক্তার ও ভগ্নিপতি নাছির উদ্দিন।
কুমিল্লার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার নাজমুল হাসান এসব তথ্য নিশ্চিত করে জানান, মরদেহ উদ্ধারের পর বুধবার নিহত শরীফের মা বরুড়া থানায় একটি হত্যা মামলা করেন।
পুলিশ কর্মকর্তা নাজমুল বলেন, ‘শরীফ মাদকাসক্ত ছিল। কিছুদিন আগে শরীফ মাদকের টাকা যোগাড়ের জন্য ভাই আরিফের অটোরিকশা বিক্রি করে দেয়। মাদকের টাকার জন্য মাকেও মারধর করত সে।’
তিনি আরও বলেন, ‘এমন পরিস্থিতি থেকে পরিত্রাণ পেতে শরিফের ছোট ভাই আরিফ ও তার বোন খুকি মিলে পরিকল্পনা করে শরীফকে পঙ্গু করে ঘরে রেখে দেবে। বাকি জীবন তাকে ঘরে বসিয়ে খাওয়াবে। পরিকল্পনা মোতাবেক ২৬ মার্চ রাত ১ টার দিকে পুকুরপাড়ে শরীফকে হাত পা বেঁধে পেটানো হয়। বাড়িতে এনে আরেক দফা পেটানো শেষে হাত পা বেঁধে ঘরের ভেতর ফেলে রাখা হয়। এ অবস্থায় শরীফ মারা যায়।’
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার নাজমুল জানান, তথ্য প্রযুক্তিসহ নিজস্ব গোয়েন্দা ব্যবহার করে হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত তিনজনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। পরে তাদের আদালতে প্রেরণ করলে সেখানে তারা ১৬৪ ধারায় খুনের সঙ্গে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে জবানবন্দি দেয়।
আরও পড়ুন:মৌলভীবাজার শহরে বুধবার ডাচ-বাংলা ব্যাংকের ভেতরে গ্রাহককে অজ্ঞান করে ৮১ হাজার টাকা লুটের অভিযোগ পাওয়া গেছে।
তানভীর হাবিব চৌধুরী রুমেল নামের ওই গ্রাহক মৌলভীবাজার মডেল থানায় অভিযোগটি করেন।
ব্যাংকের ক্লোজড সার্কিট টেলিভিশন (সিসিটিভি) ক্যামেরার ফুটেজে দেখা যায়, বুধবার বেলা ১১টা সাত মিনিটে ঘটনাটি ঘটে।
অভিযোগের বিষয়ে মৌলভীবাজার মডেল থানার ওসি কে এম নজরুল বলেন, ‘মৌলভীবাজারের শহরের সেন্ট্রাল রোডে অবস্থিত ডাচ-বাংলা ব্যাংক পিএলসিতে বুধবার সকালে ১১টার দিকে প্রবাস থেকে আসা টাকা তুলতে যান ব্যবসায়ী তানভীর। দুই লাখ টাকা তুলে তানভীর এক হাজার টাকার নোট দেয়ার জন্য ব্যাংক কর্মকর্তাকে বলেন। এ সময় ব্যাংক কর্মকর্তা এক হাজার টাকার বান্ডিল দিতে অনিচ্ছা প্রকাশ করে তাকে ৫০০ টাকা নোটের বান্ডেল প্রদান করেন।
‘তখন কাউন্টারের সামনে দাঁড়িয়ে থাকা একজন রুমেলকে বলেন, তিনি এক হাজার টাকার বান্ডেল এক্সচেঞ্জ করবেন। তখন রুমেলের কাছ থেকে টাকা নিয়ে তিনি গুনতে থাকেন। টাকা হাতে নেয়ার পর রুমেল কিছু সময়ের জন্য অজ্ঞান অনুভব করেন। তখন ওই চক্র ৮১ হাজার টাকা নিয়ে চলে যায়।’
অভিযোগকারী রুমেল বলেন, ‘ওই ব্যক্তির হাতে থাকা টাকার বান্ডেল আমাকে গুনতে দিয়ে আমাকে একটি চেয়ারে নিয়ে বসান। আমি টাকা হাতে নেয়ার পর নিস্তেজ অনুভব করি। সবকিছু আমার কাছে কিছু সময়ের মধ্যে এলোমেলো মনে হয়। প্রায় পাঁচ মিনিট পরে একটু স্বাভাবিক হলে গুনে দেখি, তারা আমার কাছ থেকে ৮১ হাজার টাকা নিয়ে চলে যায়।
‘পরবর্তী সময়ে সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজে দেখা যায়, তারা ১১টা সাত মিনিটে আমার কাছ থেকে টাকা নিয়ে যায়। সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজ থেকে ওই চক্রের ছবি শনাক্ত করা হয়।’
ডাচ-বাংলা ব্যাংক পিএলসির মৌলভীবাজার শাখা ব্যবস্থাপক আবদুল কাদের বলেন, ‘সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজে দেখলাম, ব্যাংকের একজন গ্ৰাহকের সঙ্গে কয়েকজন লোক গল্পগুজব করে উনার সঙ্গে বিদায় নিয়ে চলে গেছে। এরপর তিনি বুঝতে পারেন, উনার টাকা নিয়ে চলে গেছে। তিনি পুলিশে অভিযোগ করেন।’
মৌলভীবাজার মডেল থানার ওসি কে এম নজরুল বলেন, ‘একজন ব্যাংক গ্ৰাহক অভিযোগ করেন। বিষয়টি আমরা তদন্ত করে দেখছি।’
মুন্সীগঞ্জের গজারিয়ায় নদীতে গোসল করতে নেমে বজ্রপাতে এক কিশোরের মৃত্যু হয়েছে।
উপজেলার চর বাউশিয়া বড়কান্দি গ্রাম সংলগ্ন গোমতী নদীতে বৃহস্পতিবার বিকেল ৪টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। প্রাণ হারানো শাহেদ (১৪) ওই গ্রামের মোশারফ মিয়ার ছেলে।
ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী ও নিহতের স্বজনদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, বিকেলে গোমতী নদীতে বন্ধুদের সঙ্গে গোসল করতে যায় শাহেদ। ওই সময় হঠাৎ করে বজ্রসহ বৃষ্টি শুরু হলে বজ্রপাতে মারা যায় সে। স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে গজারিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে পাঠালে চিকিৎসক তাকে মৃত বলে জানান।
গজারিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সূত্র জানা যায়, বিকেল সাড়ে পাঁচটার দিকে তাদের হাসপাতালে শাহেদকে নিয়ে যাওয়া হয়। প্রাথমিক পর্যবেক্ষণ শেষে তাকে মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসক।
ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে গজারিয়া থানার ইন্সপেক্টর (অপারেশন) আজাদ রহমান বলেন, ‘বিষয়টি আমরা অবগত রয়েছি, নিহতের লাশ গজারিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে রয়েছে।’
নিহতের পরিবারের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে বিনা ময়নাতদন্তে মরদেহ হস্তান্তরের প্রক্রিয়া চলছে বলে জানান তিনি।
আরও পড়ুন:
মন্তব্য