বঙ্গোপসাগরে লঘুচাপের কারণে কক্সবাজারে ৩ নম্বর সতর্কসংকেত অব্যাহত আছে। বৈরী পরিস্থিতি আরও কয়েক দিন অব্যাহত থাকবে। জেলেরা মাছ ধরতে সাগরে যেতে পারছেন না।
টানা বর্ষণ ও পাহাড়ি ঢলে কক্সবাজারে বন্যার পানি ধীরে নামায় দুর্ভোগ বাড়ছে। বিস্তীর্ণ নিম্নাঞ্চলের হাটবাজার ও রাস্তাঘাট তলিয়ে আছে। বানভাসিদের রাতদিন কাটেছে নৌকায়।
জেলা প্রশাসন জানায়, কক্সবাজারের ৯ উপজেলায় ৭১ ইউনিয়ন ও ৪ পৌরসভার মধ্যে ৪১ ইউনিয়ন প্লাবিত হয়েছে। ৪১৩টি গ্রামের ৫৫ হাজার ১৫০ পরিবারের আড়াই লাখের বেশি মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে।
এদিকে বৈরী আবহাওয়ার কারণে কক্সবাজার উপকূলে নোঙর করে পড়ে আছে মাছ ধরার ট্রলার।
জেলেরা জানান, উত্তাল সাগরে বাতাসের বেগ বাড়ায় মাছ ধরতে যাওয়া যাচ্ছে না, আর যারা গেছেন তারাও উপকূলে ফিরতে বাধ্য হয়েছেন।
কক্সবাজারে বন্যায় প্রাথমিকভাবে ক্ষতির পরিমাণ তিন কোটি টাকা হবে বলে ধারণা করছে জেলা প্রশাসন। এসব প্লাবিত এলাকায় ৩০টি আশ্রয়কেন্দ্র খোলা হয়েছে। আশ্রয়কেন্দ্রে ছয় হাজারের বেশি মানুষ আশ্রয় নিয়েছে।
সদর উপজেলার ছয় ইউনিয়নের ৫৮ গ্রাম, রামুর ছয় ইউনিয়নের ৩৫ গ্রাম, চকরিয়ার ১৫ ইউনিয়নের ১০০ গ্রাম, পেকুয়ার দুই ইউনিয়নের ৬ গ্রাম, মহেশখালীর ছয় ইউনিয়নের ৩৮ গ্রাম, উখিয়ার দুই ইউনিয়নের ১২০ গ্রাম, টেকনাফের চার ইউনিয়নের ৫৬ গ্রাম প্লাবিত হয়েছে।
বন্যার পানি কমতে শুরু করায় বাড়িঘরে ফিরছেন কেউ কেউ। বন্যাকবলিত মানুষের জীবনে দেখা দিয়েছে নতুন দুর্ভোগ। ঘরের বেড়া, চাল, খাবার, ওষুধ কিছুই নেই তাদের। গরু-ছাগল, পুকুরের মাছ, ক্ষেতের ফসল সব ভেসে গেছে।
বানভাসিদের আয়রোজগার বন্ধ। নিরুপায় হয়ে পড়েছেন তারা। রামুর দক্ষিণ মিঠাছড়ি ও সদরের ঝিলংজায় বন্যার্তরা এসব কথা জানান।
তারা জানান, বন্যার পানিতে ঘরবাড়ি, স্কুল-কলেজ, রাস্তাঘাট ও হাটবাজার ডুবে গেছে। এতে পানিবন্দি হয়ে দুর্ভোগে পড়েছেন হাজার হাজার মানুষ।
গৃহপালিত পশুপাখি নিয়েও তারা পড়েছেন বিপদে। অনেকে আশ্রয় নিয়েছেন অন্যের বাড়ি, উঁচু স্থানে। অনেকের রাত-দিন কাটেছে নৌকায়। হাটবাজার ও রাস্তাঘাট তলিয়ে যাওয়ায় তাদের ভোগান্তির শেষ নেই।
দুর্গতরা জানান, এবারের বন্যায় রোপা আমন ধানের আবাদ ও সবজিক্ষেত ভেসে গেছে। হাঁস-মুরগি, গরু-ছাগল কম দামে বেচে দিয়েছেন কেউ কেউ। টিউবওয়েল ডুবে যাওয়ায় দেখা দিয়েছে খাওয়ার পানির সংকট।
যেসব টিউবওয়েল জেগেছে সেগুলো দিয়ে পানি ওঠে না। নদী ও খাল-বিলের পানিতে আবর্জনা ভাসছে। পানি ফুটিয়ে বা অন্য কোনও উপায়ে খাওয়ার উপযোগী করার উপায় নেই।
বন্যাকবলিত এলাকায় ছড়িয়ে পড়েছে বিভিন্ন রোগবালাই। ডায়রিয়াসহ পানিবাহিত রোগের সঙ্গে দেখা দিয়েছে চর্মরোগ।
বিদ্যুতের খুঁটির গোড়ার মাটি সরে যাওয়ায় সংযোগ বন্ধ রাখা হয়েছে বিভিন্ন এলাকায়। অন্ধকারে আছেন বানভাসিরা।
রামুর দক্ষিণ মিঠাছড়ির শাহাদত হোসেন বলেন, ‘পানি কমতে শুরু করায় ঘরে ফিরেছি। কিন্তু বাড়িতে বসবাসের উপায় নাই। ঘরের খুঁটির গোড়ার মাটি সরে গেছে। বেড়া পানিতে বিলীন। সব নতুন করে বানাতে হবে। কিন্তু হাতে কোনও টাকাপয়সা নাই।’
শাহাদত বলেন, ‘মাঠের ফসল তলিয়ে গেছে। মাছ চাষ করেছিলাম, তাও ভেসে গেছে। হাঁস-মুরগি আগেই বেচে দিয়েছি। আয়ের কোনো পথ খোলা নাই। ঘর-দুয়ার ঠিক করব কী দিয়ে, ভেবে পাই না। বন্যার পানি কমলেও রোগবালাই দেখা দেয়ায় বিপদে আছি। ওষুধপত্র নিতে পারছি না টাকার অভাবে।’
ঝিলংজার চান্দেরপাড়ার বাসিন্দা নুরুল আবছার বলেন, ‘করোনা মহামারি শুরুর পর থেকে কাজকর্ম বন্ধ। চারদিকে বিপদ, আয়রোজগার নাই, শুধু খরচ। ঋণ করে সংসারের খরচ চালাচ্ছি। এভাবে কত দিন চলব। বন্যায় চারদিক তলিয়ে গেছে। ঘরবাড়ি নিয়ে পানির ওপর ভেসে আছি।’
সদরের মুহুরীপাড়ার বাসিন্দা কফিল উদ্দিন বলেন, ‘কয়েক দিন ধরে পানিবন্দি হয়ে আছি। ঘরে-বাইরে সবখানেই শুধু পানি আর পানি। আরও কতদিন এভাবে কষ্ট করে থাকতে হবে কে জানে। বিগত কয়েক বছরে এখানে বন্যায় এত পানি হয়নি।’
একই রকম হতাশা প্রকাশ করেন ঝিলংজার মুক্তারকুল এলাকার আব্দুল করিম। তিনি বলেন, ‘বন্যার পানি বৃদ্ধির সঙ্গে বাড়িঘর ছেড়ে যাইনি। মাচা করে ছিলাম। একপর্যায় মাচা কোনও কাজে আসেনি। ঘরের চাল বরাবর পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় স্ত্রী-সন্তানদের নিয়ে উপজেলা সদরে আত্মীয়ের বাড়িতে আশ্রয় নিয়ে এতদিন ছিলাম।
‘শুক্রবার ভোররাত থেকে পানি কমতে শুরু করায় সকালে বাড়ি ফিরেছি। কিন্তু ঘরে থাকার তো কোনও উপায় নাই। বেশির ভাগ বাড়িতে বিদ্যুৎ নাই। রোগব্যাধি তো আছেই।’
রোগব্যাধি দেখা দেয়ার বিষয়টি নজরে আছে বলে জানান কক্সবাজারের সিভিল সার্জন ডা. মাহবুবুর রহমান।
তার দাবি, ‘বিভিন্ন উপজেলা থেকে সামান্য রিপোর্ট পাচ্ছি। তবে রোগবালাই এখনও প্রকট আকার ধারণ করেনি। আমরা প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছি।’
কক্সবাজারের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) জাহিদ ইকবাল জানান, বন্যাকবলিত এলাকাগুলো পরিদর্শন করা হচ্ছে। ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হয়েছে। একই সঙ্গে ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে ক্ষতিগ্রস্ত রাস্তাঘাট মেরামতেরও।
তিনি জানান, এরই মধ্যে জেলার বন্যাকবলিত মানুষের সহায়তায় ৩০০ টন চাল, ২ হাজার প্যাকেট শুকনো খাবার এবং ১৫ লাখ টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। বন্যা ও পাহাড়ধসে নিহতদের পরিবারকে জনপ্রতি ২৫ হাজার টাকা দেয়া হয়েছে।
কক্সবাজার দক্ষিণ বন বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা হুমায়ূন কবির জানান, দক্ষিণ বন বিভাগের পাহাড়ি অঞ্চলে ৩ হাজার ৫২৫টি পরিবার অতি ঝুঁকিপূর্ণভাবে বসবাস করছে।
তার মধ্যে কক্সবাজার শহরে রয়েছে ৯৪৫টি পরিবার। তাদের দিনে উচ্ছেদ করলে রাতে ফের দখল করে।
সূত্র জানায়, গেল ১০ বছরে কক্সবাজারে পাহাড়ধসের ঘটনায় অন্তত ২৫০ জনের মৃত্যু হয়েছে। আহত হয়েছেন দেড় শতাধিক।
এদিকে কক্সবাজারের জেলেরা জানান, বৈরী আবহাওয়ার কারণে উপকূলে বসে আছে শত শত মাছ ধরার ট্রলার। উত্তাল সাগরে মাছ ধরতে যেতে পারছে না কেউ।
নুনিয়ারছড়ার এলাকার জেলে সৈয়দ মাঝি বলেন, ‘সাগরে মাছ ধরা বন্ধ ছিল দীর্ঘদিন, তারপর শঙ্কা নিয়েই সাগরে গেছিলাম। কিন্তু আবহাওয়া অনুকূলে না থাকায় ফিরে আসতে বাধ্য হয়েছি।’
কুতুবদিয়া পাড়ার জাফর আলম বলেন, ‘বন্ধের সময় চরম কষ্টে দিনাতিপাত করেছি। নিষেধাজ্ঞা শেষে ভেবেছিলাম কয়েক দিন সাগরে মাছ ধরে দেনা-পাওনা পরিশোধ করব। তা আর হলো কই, সাগরে যেতে পারছি না। বন্ধের সময়ে সরকার থেকে যা সাহায্য পেয়েছি, তা দিয়ে আর কতদিন চলে।’
কক্সবাজার আবহাওয়া অফিসের সহকারী আবহাওয়াবিদ আব্দুর রহমান বলেন, বঙ্গোপসাগরে লঘুচাপের কারণে ৩ নম্বর সতর্কসংকেত অব্যাহত আছে। বৈরী পরিস্থিতি আরও কয়েক দিন থাকবে।
এ সময়ে সাগরে সাবধানে চলাচলের পরামর্শ দেন আবহাওয়াবিদ আব্দুর রহমান।
আরও পড়ুন:‘মোখলেছ ও মিজান ঘনিষ্ঠ বন্ধু। শৈশব ও কৈশোরের বেড়ে ওঠা সব একসঙ্গে, একই গ্রামে। সম্প্রতি গ্রামের একটি রাস্তা নির্মাণকে কেন্দ্র করে দ্বন্দ্ব বাধে তাদের দুই পরিবারে। ওই ঘটনার পর তাদের মধ্যে মারামারি হয়েছে একাধিকবার। চারটি মামলাও চলছে তাদের মধ্যে। তারপরও তাদের বন্ধুত্ব ছিল অটুট; নিয়মিত মেলামেশা ছিল তাদের। মারামারিতে মিজান আহত হলে গোপনে তাকে হাসপাতালে দেখতে গিয়েছিলেন মোখলেছ।
‘সবশেষ ২৯ মার্চ রাতে তারা পাগলা মসজিদে একসঙ্গে তারাবি পড়েন। এক পর্যায়ে সেই সম্পর্কই কাল হয়ে দাঁড়ালো মোখলেছের জীবনে। ওইদিন রাতেই তাকে গলা কেটে হত্যা করে বন্ধু মিজান।’
কান্নাজড়িত কণ্ঠে কথাগুলো বলছিলেন মোখলেছের বড় ভাই মিজান ভূঁইয়া।
হত্যাকাণ্ডের শিকার ২৮ বছর বয়সী মোখলেছ ভূঁইয়া কিশোরগঞ্জের মিঠামইন উপজেলার কেওয়ারজোড় ইউনিয়নের ফুলপুর গ্রামের মৃত হোসেনের ছেলে। তিনি কেওয়ারজোড় ইউনিয়ন ছাত্রলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক। সম্প্রতি শহরের গুরুদয়াল সরকারি কলেজের বাংলা বিভাগ থেকে স্নাতকোত্তর সম্পন্ন করেন তিনি।
অভিযুক্ত ২৮ বছর বয়সী মিজান শেখও একই গ্রামের বাসিন্দা।
গত ২৯ মার্চ রাতে কিশোরগঞ্জের ঐতিহাসিক পাগলা মসজিদে তারাবির নামাজের পর নিখোঁজ হন ছাত্রলীগ নেতা মোখলেছ। পরিবারের সদস্যরা তার ব্যবহৃত মোবাইল নম্বরে ফোন করে সাড়া না পেয়ে যোগাযোগ করেন নানাজনের সঙ্গে। তারপরও খোঁজ না পেয়ে পরদিন সকালে বাড়ি থেকে স্বজনরা ছুটে আসেন শহরের হারুয়া এলাকায় তাদের ভাড়া বাসায়। সেটি তালাবদ্ধ দেখে কক্ষের তালা ভেঙে ভেতরে প্রবেশ করে দেখেন, মোখলেছের মোবাইলটি রয়েছে বালিশের নিচেই। এরপরই মনে সন্দেহ জাগে তাদের।
৩১ মার্চ রাতে কিশোরগঞ্জ মডেল থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন মোখলেছের বড় ভাই মিজান ভূঁইয়া। থানায় জিডি হলে হারুয়া এলাকার বেশ কয়েকটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহ করে পুলিশ। ফুটেজে ২৯ মার্চ রাত পৌনে ১০টার দিকে মোখলেছকে গুরুদয়াল সরকারি কলেজের দিকে হেঁটে যেতে দেখা যায়। সে সময় মোখলেছের সঙ্গে যে কয়েকজনকে দেখা যায়, তাদের মধ্যে মিজান শেখও ছিলেন।
সিসিটিভি ফুটেজের বর্ণনা দিয়ে নিখোঁজের বড় ভাই মিজান ভূঁইয়া বলেন, ‘সে যে বাসায় থাকত তার কাছাকাছি একটা ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের ফুটেজে দেখা গেছে, ২৯ মার্চ রাত ৯টা ৪৪ মিনিটে মোখলেছ হেঁটে বাসায় ফিরছে। কিছুটা দূরত্ব বজায় রেখে পেছন থেকে মিজানও হেঁটে আসছে। অথচ মিজান হারুয়া এলাকায় থাকে না।’
তিনি জানান, আদরের ছেলের সন্ধান না পেয়ে ১৩ এপ্রিল হার্ট অ্যাটাক করে মারা গেছেন তাদের বাবা মকবুল হোসেন।
এ ঘটনায় ১৬ এপ্রিল কিশোরগঞ্জ মডেল থানায় মিজান ও অজ্ঞাত ৪-৫ জনকে আসামি করে অপহরণের মামলা করেন মিজান ভূঁইয়া। মামলার পর ২০ এপ্রিল সিলেটের শায়েস্তাগঞ্জ থেকে মিজানকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
এদিকে নিখোঁজ হওয়ার দিনের সিসিটিভি ফুটেজে মিজানকে দেখা যাওয়ায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তার পরিবারের তিনজনকে হেফাজতে নেয় পুলিশ।
আটককৃতরা হলেন— মিজানের বাবা শেফুল শেখ এবং দুই ভাই মারজান শেখ ও রায়হান শেখ। শনিবার তাদের আটক করা হয়।
আটকদের জিজ্ঞাসাবাদে চাঞ্চল্যকর তথ্য পায় পুলিশ। মোখলেছকে গলা কেটে হত্যার পর তার শরীরে সিমেন্টের ব্লক বেঁধে নদীতে ফেলে দেয়া হয়েছে বলে প্রাথমিকভাবে তথ্য দেন মিজান শেখ। এ তথ্যের ভিত্তিতে সোমবার থেকে নরসুন্দা নদীতে উদ্ধার অভিযান চালায় ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরি দল। মঙ্গলবার বিকেল ৪টার দিকে ওয়াচ টাওয়ারের সামনে থেকে ভাসমান অবস্থায় তার মাথাবিহীন অর্ধগলিত মরদেহ উদ্ধার করা হয়।
পুলিশ সুপার মোহাম্মদ রাসেল শেখ বলেন, ‘যে ছোরা দিয়ে মোখলেছকে গলা কেটে হত্যা করা করা হয়, সেটিও উদ্ধার করা হয়েছে। ছোরাটি ২৩০ টাকা দিয়ে যার কাছ থেকে কেনা হয়েছিল, তিনিও স্বীকারোক্তি দিয়েছেন।’
যাদের সঙ্গে নিয়ে হত্যাকাণ্ড ঘটানো হয়েছে তাদের বিষয়েও মিজান তথ্য দিয়েছেন উল্লেখ করে পুলিশ সুপার বলেন, ‘এসব পর্যালোচনা করে পরবর্তী পদক্ষেপ নেয়া হবে।’
মরদেহ বিকৃত হয়ে যাওয়ায় অধিকতর নিশ্চিত হওয়ার জন্য ডিএনএ পরীক্ষা করা হবে বলেও জানান পুলিশের এই কর্মকর্তা।
নোয়াখালী-৪ (সদর-সুবর্ণচর) আসনের সংসদ সদস্য একরামুল করিম চৌধুরীর বিরুদ্ধে একাট্টা হয়েছেন জেলা আওয়ামী লীগের নেতারা। যেকোনো মূল্যে তাকে প্রতিহত ও সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেয়ার ঘোষণা দিয়েছেন তারা।
মঙ্গলবার নোয়াখালী প্রেসক্লাবে জেলা আওয়ামী লীগের ব্যানারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ ঘোষণা দেয়া হয়। এ সময় দলীয় প্রধানের আদেশ অমান্য করে নিজের ছেলেকে সুবর্ণচর উপজেলা নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে প্রার্থী করায় একরামুল করিম চৌধুরীর সংসদ সদস্যপদ স্থগিতের দাবি জানান তারা।
সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য দেন জেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি ও সুবর্ণচর উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান প্রার্থী খায়রুল আনাম সেলিম, জেলা আওয়ামী লীগের সহ সভাপতি শিহাব উদ্দিন শাহিন, সাধারণ সম্পাদক মেয়র সহিদ উল্যাহ খান সোহেল, সুবর্ণচর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি বাহার উদ্দিন খেলন ও সাধারণ সম্পাদক হানিফ চৌধুরী।
বক্তারা অভিযোগ করে বলেন, ‘এমপি একরামুল করিম চৌধুরীর বাড়ি কবিরহাট উপজেলায়। তিনি নিজ ছেলের জাতীয় পরিচয়পত্র স্থানান্তর করে সুবর্ণচরে নিয়ে উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি, প্রবীণ নেতা খায়রুল আনম সেলিমের বিরুদ্ধে প্রার্থী করেছেন।
‘প্রতীক পাওয়ার আগে থেকে ভোটের মাঠে নেমে এমপি একরাম আওয়ামী লীগের নেতাদের হুমকি দিচ্ছেন, বিষোদ্গার করছেন। ভোট না দিলে উন্নয়ন করবেন না বলে সাধারণ মানুষকে শাসাচ্ছেন।’
‘জেলা সাধারণ সম্পাদক ও নোয়াখালী পৌর মেয়র সহিদ উল্যাহ খান সোহেলকে অফিস থেকে বের হতে দেবেন না বলেও হুমকি দিচ্ছেন, যা রাজনৈতিক শিষ্টাচারবহির্ভূত। একজন আইনপ্রণেতা হয়ে তিনি আইনবহির্ভূত কর্মকাণ্ড চালিয়ে যাচ্ছেন।’
জেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি এইচ এম খায়রুল আনাম সেলিম বলেন, ‘দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের সময় একরাম চৌধুরী নোয়াখালী পৌরসভার মেয়রের কক্ষে আমাকে নেতা-কর্মীদের সামনে চরমভাবে অপমান করেন। একপর্যায়ে তেড়ে আসেন এবং আমাকে দেখে নেবেন বলে হুমকি দেন।’
তিনি আরও বলেন, ‘এমপি একরাম তার ছেলে সাবাব চৌধুরীকে পরিকল্পিতভাবে আমার বিরুদ্ধে উপজেলা চেয়ারম্যান পদে প্রার্থী করেছেন। অঢেল টাকা, পেশিশক্তি, সন্ত্রাসী বাহিনী, অবৈধ অস্ত্র এবং ক্ষমতার প্রভাব খাটিয়ে ছেলেকে জয়ী করতে উঠেপড়ে লেগেছেন তিনি।
‘এমপি একরামের এমন কর্মকাণ্ডের জন্য তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে প্রধানমন্ত্রীকে অনুরোধ জানাচ্ছি।’
অন্ধকার ঘরে চৌকির ওপর বসে আছে ১৫ বছর বয়সী রিয়াজ। গলায় শেকল পরিয়ে ঝুলানো বড় তালা। শেকলের অন্য প্রাপ্ত চৌকির সঙ্গে প্যাঁচানো। কোনোভাবে যেন শেকল খুলে বা চৌকি ভেঙে বাইরে যেতে না পারে তা নিশ্চিত করেছে পরিবারের সদস্যরা।
দীর্ঘ তিন বছর ধরে এভাবেই শেকলবন্দি রিয়াজ। মাঝে-মধ্যে বাবা ও মায়ের সঙ্গে বাইরে যাওয়ার সুযোগ মিললেও ছাড়া মেলে না এই কিশোরের।
ঝিনাইদহ শহরের আরাপপুর এলাকার একটি ভাড়া বাড়িতে মা নার্গিস খাতুন ও বাবা লিটন হোসেনের সঙ্গে এভাবেই দিন কাটছে ছেলেটির।
পরিবারের সদস্যরা জানান, সাত বছর আগে শহরের আরাপপুর এলাকায় থাকা অবস্থায় কিছু বখাটে ছেলের পাল্লায় পড়ে চুরি করা শুরু করে রিয়াজ। এরপর থেকে সুযোগ পেলেই চুরি করে সে। বাড়ি থেকে পালিয়ে গিয়ে শহরসহ আশপাশের জেলাতে গিয়েও সে চুরি করেছে।
চুরি করা অনেকটা নেশার মতো রিয়াজের কাছে। বিভিন্ন সময় পুলিশ ওকে বাড়িতে দিয়ে গেলেও তার চুরি বন্ধ হয়নি। নানা স্থান থেকে একের পর এক অভিযোগ পেয়ে অতিষ্ঠ হয়ে পড়েন বাবা-মা। উপায়ান্তর না পেয়ে সন্তানকে শেকলে তালাবদ্ধ করে রাখা শুরু করেন তারা। এভাবেই কেটে গেছে দীর্ঘ তিনটি বছর। তারপরও সুযোগ পেলেই পালিয়ে যায় রিয়াজ। আবারও জড়িয়ে পড়ে চুরি ঘটনায়।
লিটন হোসেন বলেন, ‘রিয়াজ সুযোগ পেলেই চুরি করে। চুরি করাটা যেন ওর নেশা। উপায় না পেয়ে বাবা হয়েও তিন বছর ধরে সন্তানকে গলায় শেকল পরিয়ে ঘরের মধ্যে বেঁধে রেখেছি। কী করব বলেন! যেখানে যায় সেখান থেকেই চুরি করে।
‘আমরা উপায় না পেয়ে বেঁধে রেখেছি। কতবার পুলিশ এসে বাড়িতে দিয়ে গেছে। কত ডাক্তার দেখিয়েছি, কোনো সমাধান হচ্ছে না।’
মা নার্গিস খাতুন বলেন, ‘আমার দুটি সন্তান। বড় সন্তান মেয়ে। ছেলেকে এভাবে রাখতে আমার খুব খুবই কষ্ট। আমি কিচ্ছু চাই না। শুধু চাই ও পড়াশোনা করুক। অন্য ছেলেদের মতো খেলা করুক, ঘুরে বেড়াক।’
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, মানসিক কোনো সমস্যার কারণে রিয়াজ এমন কাজ বার বার করছে। নিয়মিত কাউন্সেলিংয়ের পাশাপাশি চিকিৎসা সেবা দিলে এ সমস্যার সমাধান হতে পারে।
রংপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের সহকারী অধ্যাপক ডা. মো. আব্দুল মতিন বলেন, ‘কয়েকটি কারণে শিশু রিয়াজ একই কাজ বার বার করছে। পরিবারে যদি এমন কেউ চুরির সঙ্গে জড়িত থাকত তাহলে এমনটা হতে পারে।
‘ওর মানসিক বিকাশ না হওয়ার কারণেও এমনটা হতে পারে। নিয়মিত চিকিৎসা সেবার পাশাপাশি মোটিভেশন দিলে ছেলেটির এই সমস্যার সমাধান হতে পারে।’
কদিন ধরেই দাবদাহে পুড়ছে জনজীবন। গরমে অতিষ্ঠ মানুষ। দিনভর তীব্র তাপপ্রবাহ, তবে রাতে কিছুটা স্বস্তি মিলছে। এই অবস্থা থেকে আপাতত মুক্তি মিলছে না।
আবহাওয়া অধিদপ্তর বলছে, দেশের বিভিন্ন স্থানে তাপপ্রবাহ যেভাবে বয়ে যাচ্ছে, আরও কটা দিন এভাবেই তা চলবে। কোথাও কোথাও সামান্য বৃষ্টির সম্ভাবনা আছে। তবে এতে গরম তেমন একটা কমবে না।
মঙ্গলবার সন্ধ্যা ৬টা থেকে পরবর্তী ২৪ ঘণ্টার পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, রাজশাহী, পাবনা, খুলনা, বাগেরহাট, যশোর ও পটুয়াখালী জেলাসমূহের উপর দিয়ে তীব্র তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। এছাড়া মৌলভীবাজার, রাঙ্গামাটি, চাঁদপুর, বান্দরবান জেলাসহ ঢাকা, রংপুর ও ময়মনসিংহ বিভাগ এবং রাজশাহী, খুলনা ও বরিশাল বিভাগের অবশিষ্টাংশের উপর দিয়ে মৃদু থেকে মাঝারী ধরনের তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে এবং তা বিস্তার লাভ করতে পারে।
তবে চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের দুয়েক জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা/ঝড়ো হাওয়াসহ বৃষ্টি/বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে এবং সেই সঙ্গে কোথাও কোথাও বিক্ষিপ্তভাবে শিলা বৃষ্টি হওয়ারও পূর্বাভাস দিয়েছে আবহাওয়া অফিস।
এছাড়া দেশের অন্যত্র অস্থায়ীভাবে আংশিক মেঘলা আকাশসহ আবহাওয়া প্রধানত শুষ্ক থাকতে পারে।
সারা দেশে দিনের তাপমাত্রা সামান্য বৃদ্ধি পেলেও রাতের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে জানিয়ে আবহাওয়ার খবরে বলা হয়েছে, আগামী ২৪ ঘণ্টা বাতাসে জলীয়বাষ্পের আধিক্য থাকবে। এর ফলে ভ্যাপসা গরমে জনজীবনে অস্বস্তি বিরাজ করতে পারে।
পরবর্তী পাঁচ দিনের আবহাওয়াও প্রায় একই থাকতে পারে জানিয়েছে অধিদপ্তর।
এর আগে সোমবার চলমান তাপপ্রবাহের পরিপ্রেক্ষিতে ৭২ ঘণ্টার জন্য দেশজুড়ের রেড অ্যালার্ট জারি করে আবহাওয়া অধিদপ্তর। তার আগেও গত ১৯ এপ্রিল তিন দিনের হিট অ্যালার্ট দেয়া হয়। অ্যালার্ট থাকবে ২৫ এপ্রিল সকাল পর্যন্ত।
টানা কদিন দেশের বিভিন্ন এলাকায় তাপমাত্রা বেড়েছে। বিশেষ করে চুয়াডাঙ্গায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে। এ ছাড়া রাজশাহী, পাবনা, বরিশালেও প্রচণ্ড গরম। সোমবার খুলনা, যশোর ও চুয়াডাঙ্গায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ৪০ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
আবহাওয়া অধিদপ্তরের হিসাব অনুসারে, সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৩৬ থেকে ৩৭ দশমিক ৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস হলে মৃদু তাপপ্রবাহ, ৩৮ থেকে ৩৯ দশমিক ৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস হলে মাঝারি তাপপ্রবাহ, ৪০ থেকে ৪১ দশমিক ৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস হলে তীব্র তাপপ্রবাহ এবং ৪২ ডিগ্রি সেলসিয়াস বা তার বেশি হলে অতি তীব্র তাপপ্রবাহ।
আরও পড়ুন:ফরিদপুরের মধুখালী উপজেলার ডুমাইনের পঞ্চপল্লীতে সহোদর দুই শ্রমিককে পিটিয়ে হত্যার প্রতিবাদ এবং দোষীদের গ্রেপ্তার ও শাস্তির দাবিতে মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেছে এলাকাবাসী।
মঙ্গলবার সকাল ১০টার দিকে ঢাকা-মাগুরা মহাসড়কের মধুখালীতে বিক্ষুদ্ধ জনতা সড়কে মানববন্ধন করে গাছের গুড়ি ফেলে মহাসড়ক অবরোধ করে।
মধুখালী থানার ওসি মিরাজ হোসেন জানান, সকাল সাড়ে ৯টার পর থেকে ঢাকা-মাগুরা মহাসড়কের পাইলট স্কুলের সামনে থেকে নওপাড়া পর্যন্ত কয়েক কিলোমিটার এলাকার বিভিন্ন স্থানে কিছু বিক্ষুব্ধ মানুষ ডুমাইনের ঘটনার প্রতিবাদে সড়কে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিলসহ সড়ক অবরোধ করে রাখে। পুলিশ দোষীদের গ্রেপ্তার করে শাস্তির আওতায় আনার আশ্বাস দেয়ার চেষ্টা করে, কিন্তু মধুখালীতে তারা গাছের গুড়ি ফেলে সড়কে বসে পড়ে।
এ সময় সড়কের দুই পাশে যানজটের সৃষ্টি হয়। পরে রাবার বুলেট ও টিয়ারশেল নিক্ষেপ করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনা হয় বলে জানান ওসি।
মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জে বিনা ধান-২৫ এর পরীক্ষামূলক চাষাবাদে সফলতা পাওয়া গেছে। স্বল্প সময়ে ধানের বাম্পার ফলনে স্থানীয় কৃষকদের মাঝে এ ধান উৎসাহ-উদ্দীপনা যুগিয়েছে।
নতুন উদ্ভাবিত প্রিমিয়াম কোয়ালিটির ধান বোরো জাতের বিনা ধান-২৫। উচ্চ ফলনশীল হলেও ধানটি হাইব্রিড নয় বলে দাবি করা হচ্ছে। বাসমতি চালের বিকল্প হিসেবে এ ধানের চাষ বাড়লে দেশে চিকন চালের আমদানি কমতে পারে বলে দাবি কৃষি বিভাগের।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, কমলগঞ্জ উপজেলার মুন্সীবাজার ইউনিয়নের জলালপুর গ্রামে এ বছর বিনা ধান-২৫ এর পরীক্ষামূলক চাষাবাদ করা হয়েছে। মুন্সীবাজার ইউনিয়নের সাবেক ইউপি সদস্য মো. নওরোজ মিয়াসহ এলাকার তিনজন কৃষক চার একর জমিতে বিনা ধান-২৫ এর চাষাবাদ করেছেন।
জেলা কৃষি বিভাগ সূত্র জানায়, বিনা ধান-২৫ বোরোর উন্নতমানের নতুন একটি জাত। নতুন উদ্ভাবিত এই ধানের জাতটি সর্বাধিক লম্বা ও সরু। এর চালের আকার চিকন ও লম্বা। বিদেশ থেকে যে বাসমতি চাল আমদানি করা হয় এটাও অবিকল সেই চালের মতো। এজন্য এই চালের চাহিদা ক্রেতাদের কাছে বেশি।
এর বাজারমূল্যও বেশ ভালো জানিয়ে সূত্র আরও জানায়, উৎপাদন ব্যয় অন্য ধানের মতোই। তবে ফলন অন্য ধানের চেয়ে ভালো হওয়ায় কৃষকেরা লাভবান হচ্ছেন। দেশের চাহিদা পুরণের পাশাপাশি এই ধান রপ্তানিও করা যাবে বলে আশা করা হচ্ছে।
কৃষক নওরোজ মিয়া বলেন, প্রাকৃতিক দুর্যোগে ক্ষতিগ্রস্ত না হলে বিঘা প্রতি ২০ থেকে ২৫ মণ ধান পাওয়ার আশা করছি। এই প্রথম নতুন জাতের বিনা ধান-২৫ চাষাবাদে বাম্পার ফলন হয়েছে। প্রতি শীষে ৩০০ থেকে সাড়ে ৩০০টি ধান ধরেছে।
‘অন্যান্য জাতের তুলনায় বিনা ধান-২৫ জাতে শীষ প্রতি ধানের পরিমাণও বেশি। চাষাবাদে আশানুরূপ ফলন হওয়ায় নিজেকে আরও উদ্বুদ্ধ করে তুলছে বলে মনে হচ্ছে।’
কমলগঞ্জ উপজেলা উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা বিপ্লব দেব বলেন, ‘পরীক্ষামূলক চাষাবাদে এবং কৃষি বিভাগের সার্বিক তত্ত্বাবধানে বাম্পার ফলন হয়েছে। কিছুদিনের মধ্যে ধান কাটা হবে।’
ঝিনাইদহ জেলা আনসার ও ভিডিপি কার্যালয়ে সংবাদ সংগ্রহ করতে গিয়ে লাঞ্ছিত হয়েছেন ভোরের কাগজ পত্রিকার সাংবাদিক রোকনুজ্জামান মিলন। আনসারের জেলা কমান্ড্যান্ট সোহাগ হোসেন ও মহেশপুর উপজেলা টিআই হুসাইনসহ আনসার সদস্যরা তাকে মারধর করে একটি ঘরে আটকে রাখেন। পরে স্থানীয় সংবাদকর্মীরা পুলিশের সহযোগিতায় তাকে উদ্ধার করেন।
সংবাদকর্মীরা জানান, ৮ মে অনুষ্ঠেয় উপজেলা পরিষদ নির্বাচন উপলক্ষে আনসার অফিসে নির্বাচনকালীন অস্থায়ী সদস্য নিয়োগ দেয়া হচ্ছে। সেই খবর সংগ্রহের জন্য সাংবাদিক রোকনুজ্জামান মিলন সেখানে গেলে তার সঙ্গে অসদাচরণ করেন জেলা কমান্ড্যান্ট সোহাগ। এক পর্যায়ে তাকে টেনেহিঁচড়ে একটি কক্ষে আটকে রাখা হয়। খবর পেয়ে ঝিনাইদহে কর্মরত সাংবাদিকরা সেখানে উপস্থিত হয়ে পুলিশের সহযোগিতায় তাকে উদ্ধার করেন।
এ ঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে দোষীদের শাস্তির দাবি জানিয়েছেন জেলায় কর্মরত সংবাদকর্মীরা।
ভুক্তভোগী রোকনুজ্জামান মিলন বলেন, ‘আমি সংবাদ সংগ্রহের জন্য ওই অফিসের বাইরে অপেক্ষা করছিলাম। জেলা কমান্ড্যান্ট সোহাগ হোসেন এক নারীর সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করছিলেন। আমি এগিয়ে গেলে আমাকে সেখান থেকে চলে যেতে বলেন সোহাগ।
‘আমি সাংবাদিক পরিচয় দেয়ার সঙ্গে সঙ্গে তিনি আমার ওপর ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন। পরে অন্য আসনার সদস্যরা আমাকে টেনে-হিঁচড়ে একটি কক্ষে নিয়ে কিল-ঘুষি মারেন। আমাকে সেখানে এক ঘণ্টা আটকে রাখার পর মোবাইল ফোন ফেরত দেয়া হয়। পরে মোবাইলে সহকর্মীদের ফোন করলে তারা এসে আমাকে উদ্ধার করেন। আমি ওই কর্মকর্তাসহ ঘটনায় জড়িত অন্যদের শাস্তির দাবি জানাচ্ছি।’
এ ব্যাপারে অভিযুক্ত জেলা কমান্ড্যান্ট সোহাগ হোসেন বলেন, ‘যেভাবে বলা হচ্ছে তেমন কিছু ঘটেনি। সে প্রথমে পরিচয় না দেয়ায় তাকে রুমের মধ্যে বসিয়ে রেখেছিলাম। তাকে মারধর বা লাঞ্ছিত করা হয়নি।’
আরও পড়ুন:
মন্তব্য