ভারত থেকে আসা ২০০ টন তরল অক্সিজেন সিরাজগঞ্জে খালাসের পর নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জের দুপ্তারা এলাকায় লিনডে বাংলাদেশ’র উৎপাদন ও বিক্রয় কেন্দ্রে আসতে শুরু করেছে।
লিনডে বাংলাদেশ এই তরল অক্সিজেনের আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান।
সোমবার বেলা ৩টা পর্যন্ত জরুরি তরল গ্যাস সরবরাহের ১৭টি গাড়ি এসে পৌঁছেছে সিরাজগঞ্জ থেকে।
ভারতের ঝাড়খন্ড প্রদেশের জামশেদপুর থেকে ইন্দো-বাংলা অক্সিজেন এক্সপ্রেস নামের ট্রেন তরল অক্সিজেন নিয়ে বেনাপোল হয়ে রোববার বেলা ১১টার দিকে সিরাজগঞ্জ স্টেশনে পৌঁছায়।
সেখানে সিরাজগঞ্জের জেলা প্রশাসক (ডিসি) ফারুক আহম্মদ, সিভিল সার্জন রামাপদ রায়, লিনডে বাংলাদেশের কর্মকর্তা সুফিয়া আক্তার এবং পুলিশ ও রেলওয়ে কর্মকর্তাদের উপস্থিতিতে দুপুর ১২টার দিকে শুরু হয় খালাস।
ভারত থেকে ১০টি কনটেইনারে এসেছে এই তরল অক্সিজেন।
ভারতের প্রেস ইনফরমেশন ব্যুরোর এক বিবৃতিতে শনিবার বলা হয়েছে, প্রতিবেশী কোনো দেশের জন্য এটাই অক্সিজেন এক্সপ্রেসের প্রথম যাত্রা।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, বাংলাদেশে এলএমও পরিবহনের জন্য ভারতের দক্ষিণ-পূর্ব রেলওয়ের অধীনস্থ চক্রধরপুর বিভাগের টাটানগরে একটি ইনডেন্ট স্থাপন করা হয়।
শনিবার সকাল ৯টা ২৫ মিনিটের দিকে ১০টি কনটেইনারে ২০০ মেট্রিক টন তরল অক্সিজেন ভরার কাজ শেষ হয়েছে। টাটানগর থেকে এটি রওনা দেয়।
চলতি বছরের ২৪ এপ্রিল ভারতের বিভিন্ন রাজ্যে তরল অক্সিজেন সরবরাহের জন্য দেশটির রেলওয়ে অক্সিজেন এক্সপ্রেস সেবাটি চালু করে।
নারায়ণগঞ্জে লিনডে বাংলাদেশের ব্যবস্থাপক মেহবুবা বলেন, অক্সিজেনবাহী ট্রেন থেকে সিরাজগঞ্জে খালাসের পর তা গাড়িতে করে রূপগঞ্জে নেয়া হচ্ছে। এরপর সেখান থেকে সরবরাহ করা হবে।
প্রতিষ্ঠানটির মানবসম্পদ বিভাগের প্রধান সামসুল আলম সরকার নিউজবাংলাকে জানান, ভারত থেকে আসা অক্সিজেন গাড়ি থেকে খালাস করা হচ্ছে। পুনরায় সেই গাড়ি সিরাজগঞ্জে পাঠানো হচ্ছে।
টানা বর্ষণ ও উত্তাল সাগরে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে সেন্টমার্টিন দ্বীপ। বৃহস্পতিবার সকাল থেকে বিরামহীন বৃষ্টিপাতে দ্বীপটির পাঁচটি গ্রাম পানিতে তলিয়ে গেছে। এতে অন্তত দুই শতাধিক ঘরবাড়ি পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। কয়েক হাজার মানুষ আশ্রয় সংকট, খাদ্য সংকট ও পানিবন্দি দুর্ভোগে পড়েছেন। গত বুধবার রাত থেকে শুরু হওয়া প্রবল বর্ষণ বৃহস্পতিবার দুপুর পর্যন্ত অব্যাহত ছিল। জোয়ারের পানির সঙ্গে ঢেউ বেড়ে যাওয়ায় দ্বীপের পূর্বপাড়া, পশ্চিমপাড়া, মাঝেরপাড়া, নজরুলপাড়া ও কোনাপাড়া পুরোপুরি প্লাবিত হয়ে গেছে।
মাঝেরপাড়ার বাসিন্দা ফাহমিদা বলেন, ‘আমাদের ঘর পুরোপুরি পানিতে তলিয়ে গেছে। সকাল থেকে পানিবন্দি অবস্থায় আছি। রান্নার সুযোগ নেই, পরিবারের কেউ খেয়ে উঠতে পারেনি। ঘর ছেড়ে অন্যত্র যাওয়ারও জায়গা নেই। এমন দুর্ভোগের কথা জানান দ্বীপের আরও অনেকে।’
সেন্টমার্টিন ইউপি ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান ফয়েজুল ইসলাম জানান, ‘বৈরী আবহাওয়ার কারণে টানা দুদিন ধরে টেকনাফ-সেন্টমার্টিন নৌযান চলাচল বন্ধ রয়েছে। ফলে দ্বীপের মানুষ সম্পূর্ণভাবে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে।’
তিনি বলেন, ‘টানা বর্ষণে দ্বীপের পাঁচটি গ্রামে কয়েকশ ঘর পানিবন্দি হয়েছে। পাশাপাশি জোয়ারের ধাক্কায় ঘাটে নোঙর করা একটি ফিশিং ট্রলারও ডুবে গেছে।’
তবে অভিযোগ অস্বীকার করে আবুল কালাম বলেন, ‘আমি কোনো স্লুইসগেট বন্ধ করিনি। আমার পাশের বাড়ির খলিল নামের এক ব্যক্তি সীমানা দেওয়ার সময় গেট বন্ধ করে দিয়েছে। আমরা দ্রুত তা খুলে দেওয়ার ব্যবস্থা নিচ্ছি।’
দ্বীপবাসীরা বলছেন, ঝড়-বৃষ্টি বা জলোচ্ছ্বাস এলেই এমন পানিবন্দি দুর্ভোগ নিত্যসঙ্গী হয়ে দাঁড়ায়। তবে এবার স্লুইসগেট বন্ধ থাকায় অবস্থা আরও ভয়াবহ হয়েছে।
টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শেখ এহসান উদ্দিন বলেন, ‘টানা বৃষ্টিতে সেন্টমার্টিনে বেশ কিছু ঘরবাড়ি ডুবে গেছে। মূলত স্লুইসগেট বন্ধ থাকায় এ ধরনের সমস্যা তৈরি হয়েছে। আমরা ইতোমধ্যে গেট খুলে দেওয়ার ব্যবস্থা নিয়েছি। বৃষ্টি থামলে আশা করি পানি নেমে যাবে।’
মাদারীপুরে অনুষ্ঠিত হলো ঢাকা বিভাগ ছাড়ব না, অন্য বিভাগে যাব না-ব্যানার ও স্লোগানে এক উম্মুক্ত আলোচনা সভা। বৃহস্পতিবার বিকেলে মাদারীপুর পৌর কমিনিউটি সেন্টারে আয়োজিত অনুষ্ঠানে অংশ গ্রহণ করে বিভিন্ন সামাজিক, রাজনৈতিক, পেশাজীবী, মানবাধিকার সংগঠন ও সুশীল সমাজের প্রতিনিধিসহ ৪ উপজেলার মানুষ। উল্লেখ্য, সম্প্রতি মাদারীপুর জেলাকে ঢাকা বিভাগ থেকে নবগঠিত ফরিদপুর জেলার সাথে সম্পৃক্ত করে বিভিন্ন গণমাধ্যম, পত্র-পত্রিকায় এ সংক্রান্ত সংবাদ প্রকাশের পরিপ্রেক্ষিতে এমন উম্মুক্ত আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়।
আলোচনা সভায় বক্তারা বলেন, মাদারীপুর জেলা বৃহত্তর ফরিদপুর জেলা থেকে ১৯৮৪ সালে স্বতন্ত্র একটি আলাদা জেলা হিসেবে গঠিত হয়েছিল। তখন থেকে মাদারীপুর একটি সম্পূর্ণ আলাদা জেলা। এ জেলার মানুষের চলাচল, ব্যবসা-বাণিজ্য, অফিসিয়াল কাজ-কর্ম, সংস্কৃতি সবই ঢাকার সাথে হয়ে থাকে। মাদারীপুর থেকে ফরিদপুরে এ জেলার মানুষের তেমন কোনো চলাচল নেই। পদ্মা ব্রিজ মাদারীপুর অংশ থেকে ঢাকার দূরত্ব মাত্র ৩৭ কি. মি. এবং মাদারীপুরের শেষাংশ টেকেরহাট বন্দর থেকে ফরিদপুরের দূরত্ব ৫০ কি.মি.। আলোচনায় বক্তারা আরও বলেন, কোনো অবস্থাতেই আমরা মাদারীপুরবাসী ফরিদপুর বিভাগে যাব না, আমরা ঢাকা বিভাগেই থাকব, প্রয়োজনে এ জন্য যেকোনো ত্যাগ স্বীকার করতে আমরা প্রস্তুত। তারা আরও বলেন, এমন সিদ্ধান্ত থেকে সরকার সরে না এলে বৃহত্তর আন্দোলন গড়ে তুলব, প্রয়োজনে রক্তও যদি দিতে হয় তবে তাই দেব- ঢাকা বিভাগ ছাড়ব না।
মুন্সীগঞ্জের গজারিয়ায় দুই পরিবারের স্বেচ্ছাচারিতায় রাস্তা না থাকায় ভোগান্তিতে পড়েছে শতাধিক পরিবার। বাধ্য হয়ে রাস্তা খুলে দেওয়ার দাবিতে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিল করেছে ভুক্তভোগী পরিবারের সদস্যরা। বৃহস্পতিবার ভবেরচর বাসস্ট্যান্ড সংলগ্ন মোহাম্মদ আলী প্রধান প্লাজার সামনে অনুষ্ঠিত মানববন্ধনে ভুক্তভোগী পরিবারের তিন শতাধিক সদস্য উপস্থিত ছিল। মানববন্ধন শেষে তারা একটি বিক্ষোভ মিছিল বের করে। বিক্ষোভ মিছিলটি আব্দুল্লাহপুর গ্রাম থেকে শুরু হয়ে ভবেরচর বাসস্ট্যান্ডে এসে শেষ হয়।
মানববন্ধনে অংশ নিয়ে স্থানীয় বাসিন্দা দোলোয়ার হোসেন, শুধু দুটি পরিবারের জন্য আমরা প্রায় একশটি পরিবারের ছয় শতাধিক সদস্য অবর্ণীয় দুর্ভোগে রয়েছি। বারবার তাদের রাস্তার জন্য জায়গা ছেড়ে দিতে অনুরোধ করা হলেও তারা আমাদের অনুরোধ প্রত্যাখ্যান করেছেন। এখন জনগণের রাস্তার জায়গা বন্ধ করে ওই জায়গায় স্থাপনা নির্মাণ করার পরিকল্পনা করছে তাই বাধ্য হয়ে আমাদের এই প্রতিবাদ কর্মসূচি।
স্থানীয় বাসিন্দা জসিম উদ্দিন বলেন, ‘মাত্র দুটি পরিবারের জন্য একশ পরিবারের মানুষ জিম্মি হয়ে রয়েছে। দুটি পরিবারে আপত্তিতে ১০০০ ফুট রাস্তার ৮২ ফুট বাদে বাকি অংশের কাজ শেষ হয়েছে দীর্ঘদিন। আমাদের অবস্থা এ রকম একজন মানুষ মারা গেলে তার খাটিয়া বের করা যায় না। একজন লোক হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়লে রাস্তার জন্য তাকে হাসপাতালে নেওয়া যায় না। বাধ্য হয়ে আমরা মাঠে নেমেছি।’
প্রসঙ্গত ভবেরচর বাসস্ট্যান্ড সংলগ্ন বাউশিয়া বহুমুখী উন্নয়ন সমিতি মার্কেটের পিছনে যারা বসতি তৈরি করেছেন তারা মূলত বিভিন্ন গ্রাম থেকে আসা মানুষ। শুরুতে বিক্ষিপ্তভাবে বসতি তৈরি করলেও বর্তমানে এটি একটি গ্রাম যার নাম আব্দুল্লাহপুর। সম্প্রতি ওই দুই পরিবারের সদস্যরা রাস্তাটির এই অংশ দখল করে সীমানা প্রাচীর নির্মাণ করতে থাকলে বিষয়টি নিয়ে আপত্তি জানায় স্থানীয় বাসিন্দারা।
রাজধানী ঢাকাসহ সারাদেশে বিজয়া দশমী ও প্রতিমা বিসর্জনের মধ্য দিয়ে শেষ হয়েছে হিন্দু সম্প্রদায়ের প্রধান ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গাপূজা। গতকাল বৃহস্পতিবার সকালে দর্পণ-বিসর্জনের মাধ্যমে বিদায় জানানো হয় দেবী দুর্গাকে। পরে সন্ধ্যা থেকে শুরু হয় প্রতিমা বিসর্জন।
সনাতন ধর্মাবলম্বীদের বিশ্বাস, মানুষের মনের আসুরিক প্রবৃত্তি কাম, ক্রোধ, হিংসা, লালসা বিসর্জন দেওয়াই মূলত বিজয়া দশমীর মূল তাৎপর্য। এ প্রবৃত্তিগুলোকে বিসর্জন দিয়ে একে অন্যের সঙ্গে ভ্রাতৃত্বের বন্ধনে আবদ্ধ হয়ে বিশ্বে শান্তি প্রতিষ্ঠা করাই এ আয়োজনের উদ্দেশ্য।
চন্ডীপাঠ, বোধন ও অধিবাসের মধ্য দিয়ে ষষ্ঠী তিথিতে ‘আনন্দময়ীর’ আগমনে গত ২৮ সেপ্টেম্বর থেকে হিন্দু সম্প্রদায়ের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গোৎসবের সূচনা হয়। পরবর্তী ৫ দিন রাজধানীসহ দেশব্যাপী পূজামণ্ডপগুলোতে পূজা-অর্চনার মধ্যদিয়ে ভক্তরা দেবী দুর্গার প্রতি শ্রদ্ধার্ঘ্য নিবেদন করেন। দশমী তিথিতে প্রতিমা বিসর্জনের মধ্য দিয়ে তা শেষ হয়।
সনাতন ধর্মের বিশ্বাস অনুযায়ী, বিসর্জনের মধ্য দিয়ে দেবী ফিরে গেলেন স্বর্গলোকের কৈলাসে স্বামীর ঘরে। পরের বছর শরতে আবার তিনি আসবেন এই ধরণীতে যা তার বাবার গৃহ। প্রতিমা বিসর্জনের জন্য সব ধরনের নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী।
কুমিল্লা মহানগর বিএনপির সাবেক সিনিয়র সহ-সভাপতি ও শহর বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক ভিপি জসীম উদ্দীন (৫৬) মারা গেছেন।
তার অকাল মৃত্যুতে জেলা বিএনপি ও মহানগর বিএনপি শোক প্রকাশ করেছেন।
বৃহস্পতিবার (২ অক্টোবর) দুপুর পৌনে ১টার দিকে ঢাকার একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন।
তার মৃত্যুর তথ্য নিশ্চিত করেছেন কেন্দ্রীয় জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য অ্যাডভোকেট সাবেরা আলাউদ্দিন। ভিপি জসীম উদ্দীন তার দেবর।
তিনি জানান, গত রোববার রাত ১১টার দিকে কুমিল্লা সদর উপজেলার ধর্মপুর গ্রামের নিজ বাড়িতে ব্রেনস্ট্রোক করলে দ্রুত তাকে নগরীর একটি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি হৃদরোগে আক্রান্ত হন। পরে আশঙ্কাজনক অবস্থায় তাকে ঢাকায় স্থানান্তর করা হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় বৃহস্পতিবার দুপুরে মারা যান তিনি।
মৃত্যুকালে ভিপি জসীম উদ্দীন এক ছেলে, এক মেয়ে, স্ত্রীসহ অসংখ্য গুণগ্রাহী রেখে গেছেন।
তার মৃত্যুতে গভীর শোক ও সমবেদনা জানিয়েছেন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা হাজী আমিনুর রশিদ ইয়াসিন,বিএনপির সহ সাংগঠনিক সম্পাদক মোস্তাক মিয়া, দক্ষিণ জেলা বিএনপির সভাপতি জাকারিয়া তাহের সুমন, সাধারণ সম্পাদক আশিকুর রহমান মাহমুদ ওয়াসিম, কুমিল্লা মহানগর বিএনপির সভাপতি উদবাতুল বারী আবু ও সাধারণ সম্পাদক ইউসুফ মোল্লা টিপু, সাবেক মহানগর সেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি মাহবুবুল আলম চপল, বিএনপির কুমিল্লা দঃজেলার নব কমিটির সদস্য মোজাহিদ চৌধুরী সহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতৃবৃন্দ।
৫০টি প্রতীক থেকে জাতীয় নাগরিক পার্টিকে (এনসিপি) নিজেদের মার্কা বাছাই করতে চিঠি দিয়েছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। ইসি সচিবালয়ের নির্বাচন সহায়তা শাখার উপ-সচিব মো. রফিকুল ইসলাম দলটির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলামকে এ সংক্রান্ত চিঠি পাঠিয়েছেন। তবে ইসির দেওয়া ৫০টি প্রতীকের তালিকায় নির্বাচন পরিচালনা বিধিমালা অনুযায়ী শাপলা অন্তর্ভুক্ত নেই।
চিঠিতে বলা হয়েছে, এনসিপি নিবন্ধনের জন্য আবেদন করে, যা প্রাথমিক পর্যালোচনায় বিবেচিত হয়েছে। আবেদনপত্রে প্রতীক হিসেবে পছন্দের ক্রমানুযায়ী শাপলা, কলম ও মোবাইল ফোন উল্লেখ করা হয়; যা পরে পরিবর্তন (শাপলা, লাল শাপলা বা সাদা শাপলা) করা হয়। উল্লেখ্য, নির্বাচন পরিচালনা বিধিমালা, ২০০৮-এর বিধি ৯ (১) অনুযায়ী প্রার্থিত প্রতীক শাপলা অন্তর্ভুক্ত নেই।
গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ ও নির্বাচন পরিচালনা বিধিমালার বিধান উল্লেখ করে চিঠিতে আরও বলা হয়েছে, এই আদেশ বা বিধিমালার অধীন অনুষ্ঠিত নির্বাচনে কোনও দল মনোনীত সব প্রার্থীর জন্য নির্ধারিত প্রতীক থেকে পছন্দ করা যেকোনও একটি প্রতীক বরাদ্দ করা হবে এবং এইভাবে বরাদ্দ করা প্রতীক দলটির জন্য সংরক্ষিত থাকবে, যদি না তারা পরবর্তী সময়ে নির্ধারিত প্রতীকগুলোর মধ্য থেকে অন্য কোনও প্রতীক লাভের জন্য ইচ্ছা প্রকাশ করে। দলের নিবন্ধনের বিষয়ে পরবর্তী পদক্ষেপ নিতে নির্বাচন পরিচালনা বিধিমালা, ২০০৮-এর বিধি ৯(১)-এ উল্লিখিত প্রতীকের তালিকা থেকে বরাদ্দ হয়নি এমন একটি প্রতীক পছন্দ করে নির্বাচন কমিশনকে আগামী ৭ অক্টোবরের মধ্যে লিখিতভাবে জানাতে বলা হয়েছে চিঠিতে।
যে ৫০টি প্রতীক থেকে এনসিপিকে তাদের মার্কা পছন্দ করতে বলা হয়েছে সেগুলোর মধ্যে রয়েছে– আলমারি, খাট, উটপাখি, ঘুড়ি, কাপ-পিরিচ, চশমা, দালান, বেগুন, চার্জার লাইট, কম্পিউটার, জগ, জাহাজ, টিউবওয়েল, টিফিন ক্যারিয়ার, টেবিল, টেবিল ঘড়ি, টেলিফোন, ফ্রিজ, তবলা, বক, মোরগ, কলম, তরমুজ, বাঁশি, লাউ, কলস, চিংড়ি, থালা, বেঞ্চ, লিচু, দোলনা, প্রজাপতি, বেলুন, ফুটবল, ফুলের টব, মোড়া, বালতি, কলা, বৈদ্যুতিক পাখা, মগ, মাইক, ময়ূর, মোবাইল ফোন, শঙ্খ, সেলাই মেশিন, সোফা, স্যুটকেস, হরিণ, হাঁস ও হেলিকপ্টার।
ইসি কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, জাতীয় নাগরিক পার্টি প্রথমে শাপলা, কলম ও মোবাইল ফোনের যেকোনও একটি প্রতীক তাদের দেওয়ার জন্য আবেদন জানায়। তার কিছু দিন পর সে আবেদনে সংশোধন এনে শাপলা, সাদা শাপলা বা লাল শাপলা দেওয়ার আবেদন করে।
এদিকে গত ২৩ সেপ্টেম্বর ইসি সচিব বলেছেন, এনসিপি শাপলা প্রতীক পাচ্ছে না। আমাদের ১১৫টার যে শিডিউল করা হয়েছে সেখানে শাপলা প্রতীক নেই। নিয়মটা হলো, সংরক্ষিত প্রতীক যেটা আছে সেটার ভেতর থেকে একটা নিতে হবে। সে প্রতীকে যদি শাপলা না থাকে তাহলে দেওয়ার সুযোগটা কোথায়?
গত ২২ সেপ্টেম্বর এনসিপির মুখ্য সমন্বয়ক নাসিরউদ্দীন পাটওয়ারী বলেছেন, আমরা আজও শাপলা, সাদা শাপলা, লাল শাপলা চেয়েছি। এই সিদ্ধান্ত থেকে সরছি না। এটা নিয়ে ষড়যন্ত্র চলছে। কিন্তু এই তিনটি প্রতীকের মাধ্যমেই নিবন্ধন হতে হবে।
র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটেলিয়ান (র্যাব) এর মহাপরিচালক এ কে এম শহিদুর রহমান বলেন, সারাদেশে ৩৩ হাজারের উপরে পূজামণ্ডপ রয়েছে। আমরা তার নিরাপত্তার ব্যবস্থা করেছি। সেক্ষেত্রে রাজনৈতিক ও স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গসহ সাধারণ মানুষের সক্রিয় অংশগ্রহণের মাধ্যমে নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পেরেছি। এটা শুধুমাত্র আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কাজ না। আপনারা যারা সুধী সমাজের ও রাজনৈতিক নেতারা আমাদের পাশে দাঁড়িয়েছে, পূজামণ্ডপের আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছেন, তাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা। কিছু বিচ্ছিন্ন ঘটনা ছাড়া মোটামোটি ভালোভাবেই পূজা সম্পন্ন হয়েছে। আমাদের সম্প্রীতির বাংলাদেশ ও সকল ধর্মের বাংলাদেশে কোনো নাশকতাকারীকে আমরা কোনোভাবে ছাড় দেব না।
গত বুধবার বিকেলে নারাণগঞ্জ শহরের রামকৃষ্ণ মিশন আশ্রমের পূজামণ্ডপ পরিদর্শন শেষে তিনি এ কথা বলেন।
তিনি আরও বলেন, এ পর্যন্ত ৩৫ হাজার পূজামণ্ডপের মধ্যে ৪৯টি মণ্ডপে কিছু নাশকতাকারী বিচ্ছিন্ন ঘটনা ঘটানোর চেষ্টা করেছিল। তবে আমরা প্রত্যেকটি ক্ষেত্রে কঠোর আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করেছি। এ পর্যন্ত ১৯ জনের বেশি নাশকতাকারীকে আমরা গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হয়েছি। শারদীয় দুর্গাপূজার উৎসব এখন পর্যন্ত যেভাবে চলেছে তাতে আমরা সন্তুষ্ট।
র্যাব মহাপরিচালক বলেন, সবচেয়ে ভালো হতো যদি এই ধরণের ধর্মীয় অনুষ্ঠানগুলো আইন শৃঙ্খলাবাহিনীর বেষ্টনীর মধ্যে না থেকে স্বতঃস্ফূর্তভাবে যেদিন আমরা পালন করতে পারবো, সেদিনই প্রকৃত আনন্দ হবে। এখন আমাদের এভাবেই করতে হচ্ছে। আশা করি, সেদিন আসবে।
এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট সাখাওয়াত হোসেন খান, নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনের মনোনয়ন প্রত্যাশী ও বিএনপি নেতা আবু জাফর আহমেদ বাবুল, জেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা শংকর কুমার দে, সাধারণ সম্পাদক শিখন সরকার শিপনসহ প্রমুখ।
মন্তব্য