রাজধানী থেকে ১৭৫ কিলোমিটার দূরের একটি উপজেলা মদন। নেত্রকোণা জেলার এই উপজেলাতেও সরকারঘোষিত সবচেয়ে কঠোর শাটডাউন চলছে। সেখানে বিধিনিষেধ বাস্তবায়নে উপজেলা প্রশাসন, থানার পুলিশ, র্যাব ও সেনাবাহিনীর সদস্যরা একযোগে কাজ করছেন।
শাটডাউনের বিধিনিষেধ বাস্তবায়নে সন্তুষ্টি প্রকাশ করেছেন মদন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) বুলবুল আহমেদ।
এবারও সরকার কঠোর লকডাউনের কথা জানালে সেটি পরিচিতি পায় শাটডাউন হিসেবে।
শুক্রবার সকাল থেকে দোকানপাট, ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ রয়েছে। কেবল জরুরি সেবা ও নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দোকান খোলা আছে।
উপজেলা শহরের বিভিন্ন পয়েন্ট ঘিরে সাধারণ মানুষের যে জটলা থাকে তা আজকে একেবারেই নেই। তবে ঈদের ছুটিতে যারা গ্রামের বাড়িতে এসেছিলেন, তাদের একটা বড় অংশকে শুক্রবারও হেঁটে, রিকশায় চড়ে, মোটরসাইকেলে এলাকা ছাড়তে দেখা গেছে।
লকডাউনের বিধিনিষেধ বাস্তবায়নে উপজেলা প্রশাসন, থানার পুলিশ, র্যাব ও সেনাবাহিনীর সদস্যরা কাজ করছেন।
হাওরাঞ্চলের এই উপজেলার আয়তন ২২৫.৮৫ বর্গকিলোমিটার। প্রায় দুই লাখ জনসংখ্যার উপজেলাটিতে লকডাউন বাস্তবায়নে একটি পৌরসভা ও ৮টি ইউনিয়নের জনপ্রতিনিধিদের এ কাজে সম্পৃক্ত করা হয়েছে। জনপ্রতিনিধি ও স্থানীয় সচেতন মানুষদের নিয়ে গঠন করা হয়েছে ওয়ার্ড কমিটি। তারাও মদন উপজেলার প্রত্যন্ত অঞ্চলে লকডাউন বাস্তবায়ন ও মানুষের মধ্যে সচেতনতা বাড়াতে কাজ করছে।
শুক্রবার সকাল থেকেই মদন উপজেলার বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ মোড় ঘুরে দেখা গেছে, বিনা কারণে সড়কে বের হওয়া মানুষের সংখ্যা কম। ফার্মেসি, খাদ্যদ্রব্য ও নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দোকান ছাড়া সবকিছু বন্ধ রয়েছে। তবে ঈদের ছুটি শেষে শহরমুখী মানুষের সংখ্যা ছিল চোখে পড়ার মতো। লকডাউনের কারণে সব ধরনের গণপরিবহন বন্ধ থাকায় দুর্ভোগে পড়েছেন তারা।
যদিও আজ (শুক্রবার) থেকে কঠোর লকডাউন থাকবে বলে আগেই জানিয়েছিল সরকারের সংশ্লিষ্ট বিভাগ। যানবাহনের স্বল্পতাসহ নানা কারণে অনেকে ঈদের পরদিন অর্থাৎ বৃহস্পতিবার কর্মস্থলের উদ্দেশে রওনা হতে পারেননি।
তারা শুক্রবার রওনা হয়েছেন। কিছু পথ হেঁটে, কিছু পথ রিকশায়, কখনও অটোতে, কখনোবা মোটরসাইকেলে চড়ে তারা ময়মনসিংহ, কিশোরগঞ্জ, নেত্রকোনা, ঢাকাসহ বিভিন্ন শহরের দিকে ছুটছেন।
আগামী ৫ আগস্ট পর্যন্ত সব অফিস বন্ধ থাকার কথা থাকলেও অনেক প্রতিষ্ঠান বন্ধ করা হয়নি। যে কারণে ঈদের ছুটিতে বাড়ি এলেও লকডাউনের মধ্যে কর্মস্থলে ফিরতে হচ্ছে অনেককে। তেমনি একজন জয়নাল। মদন চৌরাস্তা হয়ে কিশোরগঞ্জ যাওয়ার পথে কথা হয় তার সঙ্গে। তিনি জানান, গতকাল শ্বশুরবাড়ি গিয়েছিলেন।
খারাপ আবহাওয়ার কারণে গতকাল বের হতে পারেননি। আজকে যাচ্ছেন কিশোরগঞ্জ। মদন থেকে অটোতে করে কেন্দুয়া পর্যন্ত যাবেন, সেখান থেকে কিশোরগঞ্জ।
মদন পুরান থানার মোড়ে ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান রয়েছে শাখাওয়াত হোসেন সেতুর। তার প্রতিষ্ঠানে গ্যাসের সিলিন্ডারসহ বেশ কয়েক ধরনের খাদ্যপণ্য রয়েছে। সে জন্য তার প্রতিষ্ঠান খোলা রাখতে হয়েছে বলে জানান তিনি।
পুরান থানা মোড়েই চেকপোস্ট বসিয়েছে পুলিশ। আটক করা হচ্ছে অটোরিকশা, মোটরসাইকেল। দায়িত্বে থাকা এএসআই সোহরাব বলেন, ‘বিধিনিষেধ না মেনে যারা বের হয়েছে, তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিচ্ছি।’
তবে কিছু কিশোর মোটরসাইকেল নিয়ে এদিক-সেদিক ঘুরছে বলে জানান এএসআই সোহরাব। তিনি বলেন, দুজন, তিনজন নিয়ে কিছু কিশোর মোটরসাইকেলে ঘুরছে। তাদের আটকে অভিভাবক ডেকে ছেড়ে দিচ্ছি, আর বলে দিচ্ছি এভাবে যেন আর বের না হয়।
উপজেলার গ্রামাঞ্চলের বিভিন্ন সড়কে টহল দিচ্ছে সেনাবাহিনী। করোনা প্রতিরোধে সচেতনতার বার্তা পৌঁছে দেয়া হচ্ছে।
সেনাবাহিনীর এই দলটির দায়িত্বে আছেন ক্যাপ্টেন সায়মন। গ্রামের মানুষজন আগের তুলনায় অনেক সচেতন হয়েছে বলে জানান তিনি।
তবে ঈদে আসা কর্মজীবীদের অনেকে কর্মস্থলে ফিরতে পারেননি। তাদের একটা অংশ শুক্রবার ফিরছেন। তাদের চলাচল রয়েছে বলে জানান সেনাবাহিনীর এই কর্মকর্তা।
তিনি বলেন, ‘আমরা গ্রামের বাজার ও বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখেছি। সাধারণ মানুষের সঙ্গে কথা বলেছি। তাদের মধ্যে সচেতনতা বেড়েছে। বাজারগুলোতে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য ছাড়া অন্য কোনো দোকানপাট খোলা নেই।’
শাটডাউনের বিধিনিষেধ বাস্তবায়নে সন্তুষ্টি প্রকাশ করেছে মদনের ইউএনও বুলবুল আহমেদ।
তিনি নিউজবাংলাকে বলেন, ‘আমরা সকাল থেকেই মাঠে আছি। থানার পুলিশ, র্যাব ও সেনাসদস্যরা আমাদের সঙ্গে কাজ করছেন। সেনাবাহিনীর টহল টিম গ্রামের বিভিন্ন পথে যাচ্ছে।
‘সকাল থেকে কিছু অটোরিকশার চলাচল ছিল, আমরা সেগুলো জব্দ করেছি। আমাদের এই উপজেলার লকডাউনের সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ে আমরা সন্তুষ্ট। সরকারের যে বিধিনিষেধগুলো আছে, তা সঠিকভাবে পালনের চেষ্টা করছি।’
লকডাউন বাস্তবায়নে পৌরসভা ও ইউনিয়নের প্রতিটি ওয়ার্ডে কমিটি গঠন করা হয়েছে বলে জানান ইউএনও বুলবুল আহমেদ।
তিনি বলেন, ‘পৌরসভার প্রতিটি ওয়ার্ডে আমাদের কমিটি আছে এবং সেখানে জেলা থেকে একজন করে অফিসার ট্যাগ করা আছে। ৮টি ইউনিয়নে ৯টি করে মোট ৭২টি ওয়ার্ড কমিটি আছে। এই কমিটি স্থানীয় বাজার ও এলাকায় সচেতনতামূলক কার্যক্রম পরিচালনা করবে, সেভাবেই নির্দেশনা দেয়া আছে। তাদের কার্যক্রম মনিটরিং করছি আমরা। প্রতিদিনই তাদের কার্যক্রমের ছবি আমাদের দিচ্ছে, আমরা সেগুলো জেলায় পাঠাচ্ছি।’
আরও পড়ুন:জাতীয় রাজস্ব বোর্ড ২০২৫-২০২৬ অর্থবছরের জুলাই মাসে ২৭,২৪৯ কোটি টাকা রাজস্ব আদায় করেছে। বিগত ২০২৪-২০২৫ অর্থ বছরের একই মাসে রাজস্ব আদায়ের পরিমাণ ছিল ২১,৯১৬ কোটি টাকা। জুলাই-২০২৫ মাসে বিগত জুলাই-২০২৪ মাসের তুলনায় ৫,৩৩৩ কোটি টাকা বেশি রাজস্ব আদায় হয়েছে। জুলাই ২০২৫ মাসে রাজস্ব আদায়ের প্রবৃদ্ধির হার ২৪.৩৩%।
জুলাই’২৫ মাসে সবচেয়ে বেশি রাজস্ব আদায় হয়েছে স্থানীয় পর্যায়ের মূসক থেকে। এ খাত থেকে আদায় হয়েছে ১১,৩৫২ কোটি টাকা। গত অর্থবছরের জুলাই’২৪ মাসে এই খাতে আদায়ের পরিমান ছিল ৮,৫৭১ কোটি টাকা। জুলাই ২০২৫ মাসে স্থানীয় পর্যায়ের মূসক আদায়ের প্রবৃদ্ধির হার ৩২.৪৫%।
আয়কর ও ভ্রমন কর খাতে জুলাই’২৫ মাসে রাজস্ব আদায় হয়েছে ৬,২৯৫ কোটি টাকা যা জুলাই’২০২৪ মাসের একই খাতে আদায়কৃত ৫,১৭৫ কোটি টাকার চাইতে ১,১২০ কোটি টাকা বেশি। আয়কর ও ভ্রমন করের ক্ষেত্রে জুলাই ২০২৫ মাসের আদায়ের প্রবৃদ্ধির হার ২১.৬৫%।
২০২৫-২০২৬ অর্থবছরের জুলাই মাসে আমদানি ও রপ্তানি খাতে রাজস্ব আদায় হয়েছে ৯,৬০২ কোটি টাকা। গত অর্থবছরের জুলাই’২৪ মাসে এই খাতে আদায় ছিল ৮,১৭০ কোটি টাকা, প্রবৃদ্ধির হার ১৭.৫২%।
রাজস্ব আদায়ের এ ধারা ভবিষ্যতে অব্যাহত রাখার জন্য আয়কর, মূল্য সংযোজন কর এবং কাস্টমস শুল্ক-কর আদায়ে নিয়োজিত কর্মকর্তা-কর্মচারিদের প্রচেষ্টা আরো জোরদার করার জন্য জাতীয় রাজস্ব বোর্ড নানাবিধ কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণ করবে।
সম্মানিত করদাতাগণ আইনের যথাযথ পরিপালন নিশ্চিত করে যথাযথ পরিমান কর পরিশোধের মাধ্যমে দেশ গড়ার কাজের অন্যতম অংশীদার হবেন মর্মে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড আশাবাদী।
কুমিল্লা নাঙ্গলকোটে ইউপি সদস্য আলাউদ্দিনকে বাড়ির সামনে থেকে তুলে নিয়ে গিয়ে কুপিয়ে ও গুলি করে হত্যার ঘটনায় প্রধান আসামিকে ঢাকার হাতিরঝিল রেল মগবাজার রেলগেট এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করে র্যাব। শুক্রবার দিনগত রাতে অভিযানটি শেষ করে র্যাব।
গ্রেফতারকৃত আসামী শেখ ফরিদ (৪৫) নাঙ্গলকোট উপজেলার বক্সগঞ্জ আলীয়ারা গ্রামের আবুল খায়েরের ছেলে।
শনিবার সকাল সাড়ে দশটার দিকে কুমিল্লা অশোকতলা এলাকায় র্যাব অফিসে সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য দেন
র্যাব ১১ এর কুমিল্লার কোম্পানি কমান্ডার মেজর সাদমান ইবনে আলম।
মেজর সাদমান জানান, নাঙ্গলকোটের আলিয়ারা গ্রামে দুই পরিবারের মধ্যে বংশপরম্পরায় একটি বিরোধ চলে আসছিল। গেল গেল ২৫ জুলাই গরুর ঘাস খাওয়া কে কেন্দ্র করে দুই পরিবারের মধ্যে সংঘর্ষ হয়।
সেদিন দফায় দফায় সংঘর্ষে উভয় পক্ষের ১৫ জন গুলিবিদ্ধসহ ২৫ জন আহত হয়।
এ ঘটনার রেশ ধরে গেলো ৩ আগস্ট দুপুরে আলিয়ারা গ্রামের বাসিন্দা আলাউদ্দিন তার চাচাতো ভাইয়ের জানাজার নামাজ শেষে বাড়ি ফেরার পথে দুর্বৃত্তরা তাকে একটি সিএনজিতে তুলে নিয়ে গুলি ও কুপিয়ে হত্যা করে।
পরে এ ঘটনায় ৫ আগস্ট নিহতের ছেলে বাদী হয়ে নাঙ্গলকোট থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।
কাপ্তাই হ্রদের পানির উচ্চতা বিপদসীমা অতিক্রম করায় নির্ধারিত সময়ের আগেই খোলা হয়েছে কাপ্তাই পানি বিদ্যুৎ কেন্দ্রের সব জলকপাট। সোমবার (৫ আগস্ট) রাত ১২টা ২ মিনিটে হঠাৎ পানি বাড়তে থাকায় জরুরি ভিত্তিতে কেন্দ্রের ১৬টি জলকপাট ৬ ইঞ্চি করে খুলে দেওয়া হয়।
কর্ণফুলি পানি বিদ্যুৎ কেন্দ্রের ব্যবস্থাপক প্রকৌশলী মাহমুদ হাসান জানান, রাতে লেকের পানির উচ্চতা ১০৮.০৫ ফুট ছুঁয়ে গেলে বিপদসীমা অতিক্রম করে। এতে প্রতি সেকেন্ডে ৯ হাজার কিউসেক পানি কর্ণফুলি নদীতে প্রবাহিত হচ্ছে।
তিনি বলেন, “প্রথমে সোমবার (৪ আগস্ট) বিকেল ৩টায় পানি ছাড়ার সিদ্ধান্ত নিয়ে আমরা পরের দিন মঙ্গলবার সকাল ৯টায় জলকপাট খোলার ঘোষণা দিয়েছিলাম। কিন্তু হঠাৎ অতিরিক্ত পানি প্রবাহের কারণে নির্ধারিত সময়ের আগেই সোমবার রাতেই জলকপাট খুলে দিতে হয়। তবে পরিস্থিতি এখন নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।”
তিনি আরও জানান, কাপ্তাই বিদ্যুৎ কেন্দ্রের ৫টি ইউনিট বর্তমানে সচল রয়েছে, যেগুলোর মাধ্যমে আরও ৩২ হাজার কিউসেক পানি লেক থেকে কর্ণফুলিতে গিয়ে পড়ছে। সবমিলিয়ে পানি নিঃসরণের হার এখন প্রতি সেকেন্ডে ৪১ হাজার কিউসেক।
ভাটি এলাকার জনসাধারণের উদ্দেশে তিনি বলেন, “পানি প্রবাহ বাড়লেও আতঙ্কের কোনো কারণ নেই। পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণে রয়েছে, এবং প্রয়োজনে আমরা আগেভাগেই ব্যবস্থা নেব।”
স্থানীয় প্রশাসন এবং সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকেও এ বিষয়ে আগেই অবহিত করা হয়েছে বলে নিশ্চিত করেন কর্তৃপক্ষ।
গাজীপুরের কালীগঞ্জে ‘জুলাই পুনর্জাগরণ’ অনুষ্ঠান উপলক্ষ্যে দেশ ও জাতির কল্যাণে কাজ করার দৃঢ় প্রত্যয় ব্যক্ত করে শপথ গ্রহণ করেছেন বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ। সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে দেশব্যাপী আয়োজিত ‘লাখো কণ্ঠে শপথ পাঠ’ কর্মসূচির অংশ হিসেবে কালীগঞ্জ উপজেলা প্রশাসন এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।
শনিবার (২৬ জুলাই) সকালে উপজেলা পরিষদ সম্মেলন কক্ষে এক ভাবগম্ভীর পরিবেশে এই শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়। অনুষ্ঠানের শুরুতে জুলাই মাসে নিহত শহীদদের স্মরণে বিশেষ দোয়া ও মোনাজাত করা হয়। মোনাজাতে শহীদদের আত্মার মাগফিরাত কামনা এবং দেশের অব্যাহত শান্তি ও সমৃদ্ধির জন্য প্রার্থনা করা হয়।
উপজেলা প্রশাসনের আয়োজনে অনুষ্ঠিত এই শপথ পাঠ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন কালীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) তনিমা আফ্রাদ। তিনি উপস্থিত সকলকে শপথ বাক্য পাঠ করান। দেশের সংবিধান ও সার্বভৌমত্ব রক্ষা, মুক্তিযুদ্ধের চেতনা সমুন্নত রাখা, দুর্নীতি ও সামাজিক অবক্ষয়ের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানো এবং দেশ গঠনে আত্মনিয়োগ করার অঙ্গীকার করেন অংশগ্রহণকারীরা।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে ইউএনও তনিমা আফ্রাদ বলেন, "জুলাই পুনর্জাগরণ কেবল একটি আনুষ্ঠানিকতা নয়, এটি আমাদের চেতনার বাতিঘর। সেই শহীদদের আত্মত্যাগ থেকে শিক্ষা নিয়ে আমাদের নতুন প্রজন্মকে দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ হতে হবে। আজকের এই সম্মিলিত শপথ হোক দেশ ও মানুষের কল্যাণে নিজেদের উৎসর্গ করার একটি নতুন অঙ্গীকার। সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারী থেকে শুরু করে সাধারণ নাগরিক পর্যন্ত সকলের সম্মিলিত প্রচেষ্টাই একটি উন্নত ও সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়তে পারে।"
অনুষ্ঠানে অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) তাসনিম উর্মি, কালীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আলাউদ্দিন, উপজেলার বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তা-কর্মচারীবৃন্দ, বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতৃবৃন্দ, বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতা নেতৃবৃন্দ সহ উপজেলায় কর্মরত গণমাধ্যম কর্মীবৃন্দ।
বক্তারা জুলাইয়ের শহীদদের আত্মত্যাগের কথা স্মরণ করে বলেন, তাদের দেখানো পথ অনুসরণ করে দেশের উন্নয়নে একযোগে কাজ করতে হবে। উপজেলা প্রশাসনের এই সফল আয়োজনে সর্বস্তরের মানুষের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণ অনুষ্ঠানটিকে এক নতুন মাত্রা দেয়। এই শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানটি কালীগঞ্জের মানুষের মধ্যে দেশ ও সমাজের প্রতি দায়িত্ববোধ এবং নতুন উদ্দীপনা সৃষ্টি করবে বলে আশা প্রকাশ করেন আয়োজকরা।
ফেনীতে বন্যার পানি নামতে শুরু করেছে। এর সঙ্গে দেখা দিয়েছে নতুন এক আতঙ্ক। বন্যার কবল থেকে রক্ষা পেতে মানুষের বাড়িঘরে আশ্রয় নিয়েছিল নানা প্রজাতির সাপ। এখন ঘরে ফিরলেও সাপ আতঙ্ক বিরাজ করছে স্থানীয়দের মাঝে। এরই মধ্যে পরশুরামে বিষধর সাপের কামড়ে রোকেয়া আক্তার রিনা (৫০) নামে এক গৃহবধুর মৃত্যু হয়েছে।
শুক্রবার (১১ জুলাই) বিকাল ৫টার দিকে ফেনীর পরশুরামের পৌর এলাকার সলিয়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
নিহত রিনা পৌর এলাকার সলিয়া গ্রামের শফিকুল ইসলাম শহীদের স্ত্রী। তার এক ছেলে দুই মেয়ে রয়েছে।
স্থানীয়রা জানান, বন্যার পানি শুকিয়ে গেলে রান্না করার জন্য রান্নাঘরে গেলে সেখানে একটি অজ্ঞাত বিষধর সাপ রিনাকে কামড় দেয়। তাকে উদ্ধার করে প্রথমে পরশুরাম উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হয়। এরপর ফেনী ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
নিহতের স্বামী শফিকুল ইসলাম জানান, শুক্রবার বিকাল ৫টার দিকে রিনা রান্না ঘরে যায়। এ সময় রান্নাঘরের একটি গর্ত থেকে বিষধর একটি সাপ বের হয়ে তার পায়ে কামড় দেয়। তার চিৎকার শুনে তাকে উদ্ধার করে প্রথমে পরশুরাম উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্রেক্স নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে তার কোনো চিকিৎসা না হওয়ায় ফেনী সদর হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। হাসপাতালে নেওয়ার পর কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
ফেনী ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) ডাক্তার রেদোয়ান বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, হাসপাতালে আনার আগেই ওই গৃহবধূর মৃত্যু হয়েছিল।
টানা ৩ দিনের বৃষ্টিতে বেনাপোল বন্দর এলাকায় জলবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। বন্দর অভ্যন্তরের অনেক স্থানে হাটু পানি জমায় মারাত্বক ভাবে ব্যহত হচ্ছে পণ্য খালাস প্রক্রিয়া। যানবাহন ও নিরাপত্তাকর্মীদের চলাচলে অনুপযোগী হয়ে পড়ায় বন্দরের ৯.১২.১৫.১৬ ও ১৮ নম্বর সেড থেকে লোড আনলোড বন্ধ হয়ে আছে।
ড্রেনেজ ব্যবস্থা না থাকায় সামান্য বৃষ্টি হলেই বন্দরে হাটু পানি জমে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়ে থাকে। কয়েক বছর ধরে এ দূর্ভোগ হলেও নজর নাই বন্দর কর্তৃপক্ষের। তবে বন্দর কর্তৃপক্ষ বলছেন, রেলকর্তৃপক্ষ কালভাট না রেখে মাটি ভরাট করায় পানি নিষ্কাসনে বাধা গ্রুস্থ্য হচ্ছে।
তবে এসব শেড ও ওপেন ইয়ার্ড অধিকাংশই দীর্ঘ মেয়াদি পরিকল্পনা নিয়ে তৈরী হয়নি। বন্দর সড়কের উচ্চতার চেয়ে পণ্যগারগুলো নিচু হওয়ায় একটু বৃষ্টিপাত বেশি হলে পানি নিষ্কাষনের অভাবে পণ্যগার ও ইয়াডে জলবদ্ধতা তৈরী হয়। এতে পানিতে ভিজে যেমন পণ্যের গুনগত মান নষ্ট হয় তেমনি চলাচলের বিঘ্ন ঘটছে। তবে আজ সকাল থেকে সেচ যন্ত্র চালিয়ে পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা করা হচ্ছে।
বেনাপোল বন্দর পরিচালক শামিম হোসেন জানান, বন্দরের জলবদ্ধতা প্রতি বছরে তৈরী হয়। বিশেষ করে রেল বিভাগ কালভাট না রেখে মাটি ভরাট করায় সমস্যার সন্মুখিন হতে হচ্ছে। বন্দরের পানি নিষ্কাসন ব্যবস্থা বন্ধ হয়ে পড়েছে। তবে দ্রুত এ অবস্থা কাটিয়ে তুলতে পাশ্ববর্তী হাওড়ের সাথে বন্দরের ড্রেন তৈরীর পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। প্রেরক: রাশেদুর রহমান রাশু, বেনাপোল যশোর ।
কক্সবাজারের চকরিয়ায় গত রোববার (৬ জুলাই) মালুমঘাট বাজার থেকে পুলিশের উপর হামলা চালিয়ে এক যুবক পালিয়ে যায়। পালিয়ে যাওয়া সে যুবক সাজ্জাদ হোসেন (২০) কে কক্সবাজারের ডিবি পুলিশ কলাতলীর একটি আবাসিক হোটেল থেকে আটক করে।
মঙ্গলবার (৮ জুলাই) দিবাগত রাত তিনটায় কক্সবাজারের একটি আবাসিক হোটেল (ওয়ার্ল্ড বিচ রিসোর্ট) অভিযান পরিচালনা করে কক্সবাজারের ডিবি পুলিশ। রাত প্রায় তিনটায় নেশাগ্রস্ত অবস্থায় ওই হোটেলের একটি কক্ষ থেকে তাকে আটক করা হয়।
চকরিয়া থানা পুলিশের বিশেষ নজরদারি ও কক্সবাজারের গোয়েন্দা পুলিশের শ্বাসরুদ্ধকর অভিযানে আসামি সাজ্জাদ হোসেন কে আটক করতে সক্ষম হয় কক্সবাজার ডিবি পুলিশ।
এবিষয়ে চকরিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শফিকুল ইসলাম বলেন, পলাতক আসামি সাজ্জাদ কে কক্সবাজার ডিবি পুলিশ আটক করেছে। প্রাথমিকভাবে সদর মডেল থানায় নিয়ে যাওয়া হয়। এরপর চকরিয়া থানায় নিয়ে আসা হবে। তার বিরুদ্ধে একটি পুলিশ এসল্ট মামলা করা হয়েছে।
মন্তব্য