রাত পোহালেই ‘সবচেয়ে কঠোর’ শাটডাউন। সরকারি নির্দেশনা অনুযায়ী বন্ধ থাকবে গণপরিবহন। চলবে না ফেরি-লঞ্চও। এ কারণে ঈদের আমেজ কাটতে না-কাটতে রাজধানীতে ফিরছে মানুষ।
সংসারের চাকা সচল রাখতে ও চাকরি বাঁচাতে তারা ছুটছেন। অথচ ঈদের আগের দিন ভোগান্তি মাথায় করে গ্রামের বাড়িতে ফিরেছিলেন কর্মজীবীরা।
হঠাৎ সড়কে চাপ বাড়ায় মহাসড়কের বিভিন্ন স্থানে এসে কমে যাচ্ছে গাড়ির চাকার গতি। তবে যানজটের খবর পাওয়া যায়নি। পরিবহন কম থাকায় গাড়িতে নেই স্বাস্থ্যবিধি মানার বালাই। সবাই যেন ছুটছেন হন্যে হয়ে।
ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক
গাজীপুরের একটি ওষুধ কোম্পানিতে চাকরি করেন শাহ নেওয়াজ। ময়মনসিংহের গৌরীপুর উপজেলার ৬ নম্বর বোকাইনগর ইউনিয়নে পরিবার নিয়ে উদযাপন করেছেন ঈদ।
ছুটি শেষ হতে না হতেই কাজে যোগ দিতে রওনা হয়েছেন গাজীপুরের উদ্দেশে।
বৃহস্পতিবার বিকেল চারটার দিকে ময়মনসিংহের পাটগুদাম বাস টার্মিনালে গিয়ে দেখা যায়, তিনি একটি ঢাকাগামী বাসে বসে আছেন।
কথা হয় শাহ নেওয়াজের সঙ্গে। তিনি জানান, প্রতিবছর দুটি ঈদে পাঁচ থেকে ছয় দিন ছুটি পান। সরকারি সিদ্ধান্তে শুক্রবার থেকে আবারও সারা দেশে দুই সপ্তাহের কঠোর বিধিনিষেধ শুরু হচ্ছে। তাই ছুটিও পেয়েছেন তিন দিন।
‘ঈদের আগের দিন এসেছিলাম। ইচ্ছে করলে অনুমতি নিয়ে আরও দুই দিন ছুটি বেশি কাটাতে পারতাম। তবে আগামীকাল থেকে যদি গাড়ি না পাই, পরে আর যেতে পারব না। তাই রওনা হয়েছি।’ যোগ করে শাহ নেওয়াজ।
পাশের সিটের থাকা আজগর আলী বলেন, ঢাকার আব্দুল্লাহপুরে একটি বাসার কেয়ারটেকার তিনি। সাত দিনের ছুটি পেয়েছিলেন। কিন্তু কাল থেকে গণপরিবহন বন্ধ হয়ে গেলে, ঢাকায় যেতে পারবেন না। এ জন্য আজই রওনা দিয়েছেন।
‘আগে ময়মনসিংহ থেকে মহাখালী পর্যন্ত বাস ভাড়া ২৫০ থেকে ৩০০ টাকা লাগত। আইজক্যা অসংখ্য যাত্রী থাকায় ভাড়া নিতাছে ৩৫০ টাকা। সবগুলো সিটেই দুইজন বইয়্যা রইছে। তবু সিট পাওন যাইতাছে না।’
শহরের মাসকান্দা আন্তজেলা বাস টার্মিনালে দেখা গেছে, যাত্রীতে কানায় কানায় ঠাসা টার্মিনাল। প্রতিটি বাসে পাশাপাশি দুটি সিটেই বসানো হচ্ছে যাত্রী।
আসাদুল নামে এক যাত্রী বলেন, ‘আধা ঘণ্টা লাইনে দাঁড়িয়ে থেকে টিকিট কেটে সিট পেয়েছি। সরকারি নির্দেশে দুই সিটে একজন করে নেয়ার কথা থাকলেও দুই সিটেই যাত্রীকে বসতে দেয়া হচ্ছে। নেই হাত ধোয়ার কোনো ব্যবস্থা।’
এনা বাসের চালক আসাদুল ইসলাম বলেন, ‘স্বাস্থ্যবিধি মেনে যাত্রী নিচ্ছি। কাউন্টারের সামনে হাত ধোয়ার ব্যবস্থা থাকলেও হাত ধুতে যাত্রীদের অনীহা রয়েছে। এ ছাড়া গাড়ি ছাড়ার আগে প্রতিটি সিটে জীবাণুনাশক স্প্রে করা হয়েছে।’
দুই সিটে দুজনকে বসিয়ে দ্বিগুণ ভাড়া নেয়ার বিষয়ে তিনি বলেন, যেসব যাত্রী পরিবার নিয়ে এসেছে, তাদের একসঙ্গে বসতে দেয়া হচ্ছে। আর যারা একা এসেছে তাদের দুই সিটে একজনকেই বসতে দেয়া হয়েছে।
গত ১ জুলাই থেকে দেশের সব সরকারি-বেসরকারি অফিস বন্ধ করে কঠোর বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়। কিন্তু এরপরও বেড়েই চলেছে করোনায় আক্রান্ত ও মৃত্যু।
তারপরও ঈদ সামনে রেখে সাত দিনের জন্য বিধিনিষেধ শিথিল করে সরকার। সেই সময়েই ঘোষণা আসে ২৩ জুলাই থেকে ফের আরোপ হবে ১৪ দিনের কঠোর লকডাউন।
ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক
বৃহস্পতিবার বেলা ৩টার পর থেকে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের ঢাকামুখী লেনে দূরপাল্লার বাসসহ নানা ধরনের যানবাহনের চাপ বেড়েছে।
মহাসড়কের সাইনবোর্ড, শিমরাইল, মদনপুর ও মোগরাপাড়া এলাকায় দূরপাল্লার গাড়ি থেকে নামছেন অনেকেই। তবে বেশির ভাগ মানুষের যাত্রা ঢাকার দিকে।
গাড়ির চাপ থাকলেও মহাসড়কে যানজট দেখা যায়নি। তবে অতিরিক্ত গাড়ির কারণে চাকা ঘুরছে ধীর গতিতে।
যাত্রী হারুন মিয়া নিউজবাংলাকে বলেন, ‘ঈদের আগের দিন গ্রামের বাড়িতে গিয়েছিলাম। আজ (বৃহস্পতিবার) চলে আসলাম। কারণ আগামীকাল (শুক্রবার) থেকে ঢাকার দিকে গাড়ি চলবে না। কষ্ট হলেও চলে আসতে হলো।’
নোয়াখালী থেকে ঢাকার দিকে যাচ্ছেন ইসতিয়াক আহমেদ নামের এক যাত্রী।
তিনি বলেন, ‘অফিসের কাজে কোথায় যেতে হয় তার ঠিক নেই। তাই গ্রাম থেকে ঢাকার ভাড়া বাড়ির দিকে যাচ্ছি।’
যেসব চালক গাড়ি নিয়ে ঈদের আগে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের দিকে গেছেন তারাও ঢাকায় ফিরছেন।
লক্ষ্মীপুর থেকে আসা মাইক্রোবাস চালক পঞ্চু মিয়া বলেন, ‘ঈদের আগের রাতে যাত্রী নিয়ে লক্ষ্মীপুর গেছিলাম। কাল থেকে শাটডাউন, তাই আজই চলে আসলাম। কারণ গাড়ির মালিকের কাছে তার গাড়ি বুঝায় দিতে হবে।’
চট্টগ্রাম থেকে যাত্রী নিয়ে আসা চালক ফারুক হোসেন বলেন, ‘ঢাকার দিকে যাওয়ার মানুষের চাপ অনেক। আসার সময় মহাসড়কের মোড়ে মোড়ে দেখলাম অনেক মানুষ ঢাকার দিকে যাইতে গাড়িতে উঠতাছে। আমার গাড়ির স্ট্যান্ডও ঢাকায়। তাই যাত্রী নিয়ে ঢাকার দিকে যাচ্ছি।’
ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক
একই চিত্র ঢাক-সিলেট মহাসড়কেও।
এ সড়কের বরাব, রূপসী এলাকায় স্বাভাবিক গতিতেই ঢাকার দিকে যাচ্ছে যানবাহন।
সিলেটের সুনামগঞ্জ থেকে প্রাইভেট কারে ঢাকার দিকে যাচ্ছেন সুতা ব্যবসায়ী কবির হোসেন।
তিনি বলেন, ‘১৪ দিনের লকডাউন, তাই নানা বাড়ি থেকে ঢাকায় চলে যাচ্ছি। কারণ কাল থেকে তো সব বন্ধ।’
কাঁচপুর হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মনিরুজ্জামান বলেন, ‘কাল থেকে আবার লকডাউন। তাই যারা ঈদে বাড়িতে গেছেন তাদের মধ্যে অনেকই রাজধানীর দিকে ছুটে আসছেন। এ কারণেই আজ মহসড়কে অনেক যাবাহন চলাচল করছে। দুই মহাসড়কেই বেড়েছে গাড়ির চাপ। তবে কোনো যানযট নেই, এটাই স্বস্তি।’
তবে এদিনও রাজধানী ছাড়তে দেখা গেছে অনেকে। ঈদের আগে নানা কারণে বাড়িতে ফিরতে না পেরে ও কঠোর লকডাউনের খবরে গ্রামে ফিরছেন অনেকে।
কিশোরগঞ্জের ব্যবসায়ী রাসেল আহম্মদে বলেন, ‘স্ত্রীকে নিয়ে ঢাকায় শ্বশুরবাড়ি এসেছিলাম। কাল থেকে আরও কঠোর লকডাউন শুনে বাড়ি যাওয়ার জন্য বের হয়েছি। সাইনবোর্ডে থেকে গাড়িতে উঠব।’
সানারপাড় থেকে চট্টগ্রামের ইপিজেড এলাকায় পরিবার নিয়ে বাড়ি ফিরছেন ব্যবসায়ী হাবিবুর রহমান।
তিনি বলেন, ‘করোনার কারণে ব্যবসায় মন্দা। এর ওপর শাটডাউনে ব্যবসার একেবারেই চলে না। শহরে থাকলে অনেক খরচ। তাই সবাইকে নিয়ে গ্রামে যাচ্ছি।’
আরও পড়ুন:আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচন সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করার লক্ষ্যে উপজেলা নির্বাহী অফিসারদের (ইউএনও) জন্য নির্বাচন প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটে (ইটিআই) প্রশিক্ষণ কর্মসূচি শুরু হচ্ছে। নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ের পাঠানো চিঠির পরিপ্রেক্ষিতে ইউএনওদের এই প্রশিক্ষণে অংশগ্রহণের জন্য অনুমতি দিয়েছে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ।
বৃহস্পতিবার (১৬ অক্টোবর) মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সিনিয়র সহকারী সচিব নুসরাত আজমেরী হক এর স্বাক্ষরিত চিঠি নির্বাচন কমিশনের সিনিয়র সচিবের কাছে পাঠানো হয়েছে।
চিঠিতে জানানো হয়, আগামী ২০ অক্টোবর থেকে প্রশিক্ষণ শুরু করা হবে। যা চলবে আগামী ১১ নভেম্বর ২০২৫ তারিখ (সম্ভাব্য) পর্যন্ত। প্রশিক্ষণটি হবে ১২টি সেশনে দুই দিনব্যাপী। দুটি করে ব্যাচে মোট ৫০ জন উপজেলা নির্বাহী অফিসার (প্রতি ব্যাচে ২৫ জন) অংশগ্রহণ করবেন।
চিঠিতে সংযুক্ত তালিকা অনুযায়ী নির্ধারিত তারিখ ও সময়ে নির্বাচনী প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউট, ঢাকায় ব্যাচভিত্তিক প্রশিক্ষণে অংশগ্রহণের জন্য সংশ্লিষ্ট উপজেলা নির্বাহী অফিসারদেরকে নির্দেশক্রমে অনুমতি দেওয়া হয়েছে। এই প্রশিক্ষণের মাধ্যমে উপজেলা পর্যায়ের গুরুত্বপূর্ণ এই কর্মকর্তারা নির্বাচন ব্যবস্থাপনার বিভিন্ন দিক সম্পর্কে প্রশিক্ষণ নিয়ে নিজেদের প্রস্তুত করতে পারবেন।
পঞ্চগড়ের আটোয়ারীতে দুরারোগ্য ব্রেইন স্টোক রোগে আক্রান্ত তৃতীয় শ্রেণির শিক্ষার্থী শিশু মুক্ত শর্মা (১১) বাঁচতে চায়।
সে উপজেলার রাধানগর ইউনিয়নের রঘুনাথপুর গ্রামের হতদরিদ্র দীপক শর্মা ও মুক্তা রাণী শর্মা দম্পতির ছেলে এবং রঘুনাথপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের তৃতীয় শ্রেণির ছাত্র। অসুস্থতার কারণে তার স্কুলে যাওয়া বন্ধ রয়েছে।
উন্নত চিকিৎসার অভাবে যত দিন যাচ্ছে স্কুল ছাত্র শিশু মুক্ত শর্মা’র অসুস্থতা ততই বেড়ে যাচ্ছে। দুর্বল হয়ে পড়ছে সে। এভাবে সময় পার হলে এ সুন্দর পৃথিবীর মায়া ত্যাগ করবে এমন আশঙ্কা করছে মুক্ত শর্মা’র পরিবার। মুক্তা শর্মা’র বাবা সেলুন ব্যবসায়ী দীপক শর্মা আবেগাপ্লুত কন্ঠে জানান, ২০২৪ সালে ছেলের ব্রেইন স্টোক হয়।
রংপুর মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের মেডিসিন বিশেষজ্ঞ নিউরোলজি বিভাগের সহযোগি অধ্যাপক ডা. সুকুমার মজুমদারের চিকিৎসা করেছি। তার পরামর্শ নিয়ে বর্তমানে ঢাকা মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের নিউরোলজি বিভাগের স্টোক এন্ড ইন্টারভেনশনালহেড অধ্যাপক ডা. সুভাষ কান্তি দে’র চিকিৎসাধীন রয়েছে। বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের পরামর্শ অনুয়ায়ী, মুক্ত শর্মাকে বাঁচাতে হলে দ্রত ব্রেইন অপারেশন করতে হবে। এতে প্রায় ৮ লক্ষ টাকা খরচ হতে পারে।
মুক্ত শর্মা’র বাবা-মা কেঁদে কেঁদে বলেন, ছেলের চিকিৎসা খরচ মেটাতে গিয়ে নি:স্ব হয়ে গেছি। ভিটেবাড়ীর জমিটুকুও বিক্রি করে তার চিকিৎসা খরচ চালিয়েছি। পরিবারের পক্ষ থেকে চিকিৎসা করানোর মত আর কোন সহায় সম্বল নাই। শিশুটির বাবা-মা সন্তানের এমন অবস্থায় বাকরুদ্ধ। চোখে মুখে অন্ধকার ছাড়া কিছুই দেখছেন না। তার আপন সন্তানের চিকিৎসায় এত টাকা কোথায় পাবে তা নিয়ে চিন্তিত। কে দেবে এতটাকা, তাও বলতে পারছেন না।
এমতাবস্থায় ফুট ফুটে ১১ বছর বয়সী এ শিশুটির জীবন বাঁচাতে পরিবারের পক্ষ থেকে সমাজের বিত্তবান, দানশীল,বিভিন্ন সাহায্য সংস্থা সহ দেশ-বিদেশের স্ব-হৃদয়বান মানুষদের কাছে আর্থিক সহযোগিতা কামনা করেছেন।
রোগাক্রান্ত শিশু মুক্ত শর্মা’র আকুতি, আপনারা আমাকে বাঁচাতে সাহায্য করুন, আমি বাঁচতে চাই। আমি ভালো হয়ে স্কুলে পড়তে যাবো।
শিশু মুক্ত শর্মাকে চিকিৎসায় সহযোগিতা করতে যোগাযোগ : মুক্ত’র পিতা দীপক শর্মা: ০১৭৬৪৯৭০৪৭৮ (নগদ/বিকাশ)।
রাজবাড়ীর পাংশায় জুয়েলার্সের কারখানায় দুর্ধর্ষ চুরির ঘটনায় শহরে চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। পাংশা পৌরশহরের স্টেশন রোডের কাজী সুপার মার্কেটের তৃতীয় তলায় অবস্থিত ‘সিকদার জুয়েলার্সের কারখানা’তে বুধবার (১৫ অক্টোবর) দিবাগত রাতে এই চুরির ঘটনা ঘটে।
জানা যায়, বুধবার (১৫ অক্টোবর) রাত সাড়ে ১০টার দিকে
কারখানার কারিগররা প্রতিদিনের ন্যায় কাজ শেষ করে কারখানা বন্ধ করে চলে যান। গভীর রাতে কোনো একসময় সংঘবদ্ধ চোরের দল জানালার গ্রীল কেটে কারখানার ভিতরে প্রবেশ করে এ চুরি সংঘটিত করে।
বৃহস্পতিবার সকালে কারিগররা দোকান খুলে দেখেন, ড্রয়ারগুলো ভাঙা ও কারখানার সবকিছু এলোমেলো অবস্থায় পড়ে আছে। বিষয়টি সঙ্গে সঙ্গে দোকান মালিক সঞ্জীব সিকদার পাংশা মডেল থানায় জানান।
সিকদার জুয়েলার্সের মালিক সঞ্জীব সিকদার বলেন, "কারিগররা কাজ শেষ করে রাত সাড়ে ১০টার দিকে কারখানা বন্ধ করে চলে যায়। সকালে এসে কারখানা খুলে দেখে সবকিছু এলোমেলো ও কারিগরদের ড্রয়ার ভাঙা।" তিনি আরও জানান, "কারখানা থেকে প্রায় ১০ ভরি স্বর্ণ ও ৩০ থেকে ৩৫ ভরি রূপা চুরি হয়েছে।"
একই রাতে শহরের অনুপ দত্ত নিউ মার্কেটের ছাদে অবস্থিত মৌচাক রেস্টুরেন্টেও চুরির ঘটনা ঘটে। রেস্টুরেন্টের মালিক নাজমুল আলম বলেন, "রাতে আমার দোকানের জানালা দিয়ে চোর ভিতরে ঢুকে প্রায় ২ হাজার ২ শত টাকার সিগারেট নিয়ে গেছে।"
খবর পেয়ে সহকারী পুলিশ সুপার (পাংশা সার্কেল) দেবব্রত সরকার এবং পাংশা মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোহাম্মদ সালাউদ্দিন ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন।
সহকারী পুলিশ সুপার দেবব্রত সরকার বলেন, “সিকদার জুয়েলার্সের একটি কারখানায় গত রাতে চুরির ঘটনা ঘটেছে। আমরা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি এবং তদন্ত শুরু করেছি। বাজারের বিভিন্ন স্থানের সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহ করা হয়েছে। আশা করছি খুব দ্রুতই ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের শনাক্ত করতে পারব।”
এ ঘটনায় স্থানীয় ব্যবসায়ী মহলে আতঙ্ক ও ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।
বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর মন্তব্য করে বলেছেন অন্তর্বর্তী সরকারকে সবাই ব্যতিব্যস্ত করে রেখেছে- যেন নির্বাচন না হয়; ভোট নিয়ে কোনো আপোষ নয়।
বৃহস্পতিবার (১৬ অক্টোবর) ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার বেগুনবাড়ি ইউনিয়নের দানার হাটে এক সভাতে ইউনিয়নবাসীর সাথে মতবিনিময়কালে তিনি এ কথা বলেন।
মির্জা ফখরুল বলেন, জনগণের ভোট দেয়ার সুযোগ তৈরি হয়েছে নতুন করে। জনগণ তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগের সুযোগ পাচ্ছে। সামনের ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন। বিএনপি ৩১দফায় সংস্কারের প্রস্তাব করেছে। সরকার যা এখন করছে।
তিনি আরও বলোন, কয়েকটা দল পিআর নিয়ে চিৎকার করছে। পিআর বোঝেনা কেউ। ভোট হবে এক ব্যক্তি এক ভোট। যা মানুষ বোঝেনা তা কেনো হবে? সবাই একমত হলে বিএনপি চিন্তা করে দেখবে। দাবি দাওয়া নিয়ে আলোচনা হবে নির্বাচিত সংসদে।
আইনি ভিত্তি ছাড়া জুলাই সনদে সই করবে না বলে জানিয়েছে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)। আজ বৃহস্পতিবার সকাল ১১টার দিকে রাজধানীর বাংলামোটরে দলের অস্থায়ী কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এ কথা জানান দলটির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম। তিনি বলেন, ‘আইনি ভিত্তি ছাড়া কোনো নাটকীয়তায় অংশ নেবে না এনসিপি।’
নাহিদ ইসলাম বলেন, ‘জুলাই গণঅভ্যুত্থান কোনো ক্ষমতা পরিবর্তনের জন্য হয়নি। বরং একটি ফ্যাসিবাদী কাঠামো সংস্কারের জন্য হয়েছিল। সেই সূত্র ধরেই আমরা একটি নতুন বাংলাদেশের কথা বলেছিলাম।’
এনসিপি আহ্বায়ক বলেন, ‘জুলাই সনদ বাস্তবায়ন আদেশ সনদ স্বাক্ষরের আগেই প্রকাশ করতে হবে। জনগণের সার্বভৌম অভিপ্রায়কে প্রাধান্য দিয়ে এ আদেশ প্রধান উপদেষ্টা জারি করবেন।’
তিনি বলেন, ‘স্বাক্ষরের আগেই সনদ বাস্তবায়ন আদেশের খসড়ায় দলগুলোর ঐক্যমত হতে হবে। এর ওপর ভিত্তি করেই আমরা জুলাই সনদে স্বাক্ষরের বিষয়টা বিবেচনা করব। আদেশের টেক্সটের খসড়া আমরা আগে দেখতে চাই। প্রধান উপদেষ্টা যেহেতু জুলাই গণঅভ্যুত্থানের শক্তিতে সরকার গঠন করেছেন, সেই জায়গা থেকে সেটা প্রেসিডেন্ট নয় বরং সরকার প্রধান হিসেবে তিনি সেটি জারি করবেন।’
নাহিদ ইসলাম আরও বলেন, ‘গণভোট দ্বারা জনগণ সনদের পক্ষে ভোট দিলে পরের সংসদকে কনস্টিটিউট পাওয়ার দেওয়া হবে। সনদ অনুযায়ী সংবিধান সংস্কার করতে এই দাবির সঙ্গে মোটামুটি সবাই একমত। এটার সংশোধনী হবে কিনা আমাদের কাছে কিন্তু তা এখনও স্পষ্ট হয়নি।’ তিনি বলেন, ‘জুলাই সনদে ৮৪টি সংস্কারের বিষয়ে গণভোট হবে। এতে নোট অব ডিসেন্টের আলাদা কোনো কার্যকারিতা থাকবে না। গণভোটের প্রশ্ন কি হবে তা আগেই চূড়ান্ত করতে হবে।’
সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন এনসিপির সদস্যসচিব আখতার হোসেন, সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক আরিফুল ইসলাম আদিব ও আহ্বায়ক জাবেদ রাসিনসহ কেন্দ্রীয় নেতারা।
২০২৬ সালে হজে যেতে ৬৬টি এজেন্সি থেকে ৫৩৭ জন প্রাক-নিবন্ধন করলেও একজনও প্রাথমিক নিবন্ধন করেননি। তাই এই এজেন্সিগুলোকে সতর্ক করেছে ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয়। এ ইস্যুতে সম্প্রতি ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয় থেকে চিঠি দেওয়া হয়েছে।
এতে বলা হয়, সৌদি সরকার ঘোষিত হজের রোডম্যাপ অনুযায়ী ২০২৬ সালের হজযাত্রী নিবন্ধনের সময় ১২ অক্টোবর শেষ হয়েছে। নিবন্ধনের সময় বিশেষ বিবেচনায় ১৬ অক্টোবর পর্যন্ত বৃদ্ধি করা হয়েছে। কিন্তু ৬৬টি এজেন্সিতে ৫৩৭ জন প্রাক-নিবন্ধিত হজযাত্রী থাকা সত্ত্বেও অদ্যাবধি কোনো হজযাত্রীর নিবন্ধন করা হয়নি।
‘হজ প্যাকেজ ও গাইডলাইন ২০২৬’ এর অনুচ্ছেদ ১৩ (১৩) অনুযায়ী একটি এজেন্সি ন্যূনতম ৪৬ জন হজযাত্রী নিবন্ধন করবে এবং এজেন্সির যোগ্য তালিকা প্রকাশের পত্রে উল্লিখিত শর্ত অনুযায়ী কোনো এজেন্সি হজ ২০২৬ মৌসুমে যৌক্তিক কারণ ছাড়া হজযাত্রীর নিবন্ধন (প্রাক-নিবন্ধন নয়) না করলে সেই এজেন্সির বিরুদ্ধে প্রশাসনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলেও চিঠিতে উল্লেখ করা হয়।
ধর্ম মন্ত্রণালয় চিঠিতে আরও জানিয়েছে, সংযুক্ত তালিকার ৬৬টি এজেন্সির ৫৩৭ জন প্রাক-নিবন্ধিত হজযাত্রীর মধ্যে হজে গমনেচ্ছুদের নিবন্ধন সম্পন্ন বা অন্য এজেন্সিতে স্থানান্তরপূর্বক হজে গমন নিশ্চিত করার জন্য নির্দেশক্রমে অনুরোধ করা হলো। এজেন্সির কারণে কোনো হজযাত্রীর হজে গমন বিঘ্নিত হলে তার দায়-দায়িত্ব সংশ্লিষ্ট এজেন্সিকে বহন করতে হবে।
২০২৫ সালের এইচএসসি ও সমমান পরীক্ষার ফল প্রকাশ করা হয়েছে। নয়টি সাধারণ শিক্ষা বোর্ড, মাদরাসা ও কারিগরি শিক্ষা বোর্ড মিলিয়ে গড় পাসের হার ৫৮.৮৩ শতাংশ। এবার গত বছরের তুলনায় পাসের হার কমেছে ১৮ দশমিক ৯৫ শতাংশ। এ বছর জিপিএ৫ পেয়েছেন ৬৯ হাজার ৯৭ জন শিক্ষার্থী। সে হিসাবে এবার জিপিএ-৫ পাওয়া শিক্ষার্থীর সংখ্যা কমেছে ৭৬ হাজার ৮১৪ জন।
এবারের ফলাফলে বিশ্লেষণে দেখা যায়, এইচএসসি পরীক্ষায় এবার শিক্ষার্থীর তিন বিষয়ে বেশি ফেল করেছেন। এইচএসসি পরীক্ষায় এবার বেশি ফেল করেছেন হিসাব বিজ্ঞান বিষয়ে। এবার এই বিষয়ে ফেল করেছেন ৪১ দশমিক ৪৬ শতাংশ। আর ইংরেজিতে ফেল করেছেন ৩৮ দশমিক ৮ শতাংশ। আইসিটিতে ২৭ দশমিক ২৮ শতাংশ শিক্ষার্থী।
বুধবার (১৬ অক্টোবর) মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ড, ঢাকার সভাকক্ষে বাংলাদেশ আন্তঃশিক্ষা বোর্ড সমন্বয় কমিটি ও ঢাকা বোর্ডের চেয়ারম্যান প্রফেসর ড. খন্দোকার এহসানুল কবির বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
ফলাফল বিশ্লেষণে আরও দেখা যায়, এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষার ফলাফলে এ বছর বরাবরই এগিয়ে রয়েছেন ছাত্রীরা। মোট পাস এবং জিপিএ-৫ এর দিক দিয়ে এগিয়ে রয়েছেন তারা। ১১টি শিক্ষা বোর্ডে মোট ছাত্রের চেয়ে ৮৭ হাজার ৮১৪ জন বেশি ছাত্রী উত্তীর্ণ হয়েছেন। ছাত্রের চেয়ে ৫ হাজার ৯৭ জন বেশি ছাত্রী জিপিএ-৫ পেয়েছেন। ১২ লাখ ৩৫ হাজার ৬৬১ জন অংশ নেন। উত্তীর্ণ হন ৭ লাখ ২৬ হাজার ৯৬০ জন। ছাত্র উত্তীর্ণ হয়েছেন ৩ লাখ ৩৩ হাজার ৮৬৪ জন। ছাত্রী উত্তীর্ণ হয়েছেন ৩ লাখ ৯৩ হাজার ৯৬ জন। ছাত্রদের পাসের হার ৫৪ দশমিক ৬০ শতাংশ। ছাত্রীদের পাসের হার ৬২ দশমিক ৯৭ শতাংশ। ৩২ হাজার ৫৩ জন ছাত্র জিপিএ-৫ পেয়ছেন, আর ৩৭ হাজার ৪৪ জন ছাত্রী জিপিএ-৫ পেয়ছেন।
মন্তব্য