বরিশাল নগরীতে এক ডাক্তারকে দেখাতে এসে দালালের খপ্পরে পড়েছিলেন পটুয়াখালীর গলাচিপা উপজেলার বাউরিয়া গ্রামের এক নারী। ওই দালাল মিথ্যা বলে তাকে আরেক ডাক্তারের কাছে নিয়ে যান। সেখানে বিভিন্ন পরীক্ষার নামে তার কাছ থেকে পাঁচ হাজার টাকা রেখে দেয়া হয়। পরে স্থানীয় লোকজন ও থানা-পুলিশের সহায়তায় ওই টাকা ফেরত পেয়েছেন তিনি।
খাদিজা বেগম নামে ওই নারী জানিয়েছেন, গলাচিপা থেকে বরিশাল নগরীর সদর রোডের শুভ ডায়াগনস্টিক সেন্টারের ডা. ভাস্কর সাহাকে দেখাতে শনিবার সকালে রূপাতলী বাসস্ট্যান্ডে নামেন তিনি। এর পরপরই দালাল চক্রের খপ্পরে পড়েন। এক দালাল তাকে বলেন, ডা. ভাস্কর সাহার দাদি মারা গেছেন। এ জন্য তিনি রোগী দেখতে পারবেন না।
এ কথা বলে ওই দালাল তাকে সদর রোডেরই কাকলি মোড়ে সাউথ ইবনে সিনা ডায়াগনস্টিক সেন্টারে ডা. সুমন্ত কুমারের কাছে নিয়ে যান। তিনি তাকে সাত হাজার টাকার বিভিন্ন টেস্ট দেন। কিন্তু তার কাছে অত টাকা ছিল না। আবার শ্বশুরকেও নিয়ে এসেছেন ডাক্তার দেখাতে। একপর্যায়ে সাউথ ইবনে সিনা ডায়াগনস্টিক সেন্টার তার কাছ থেকে পাঁচ হাজার টাকা রেখে দেয় টেস্টের নাম করে।
টাকা রেখে দেয়ায় তিনি কান্নাকাটি করতে থাকলে স্থানীয় লোকজন এগিয়ে যান। তারা খাদিজা বেগমকে থানায় গিয়ে অভিযোগ করতে বলেন।
খাদিজা বেগম আরও জানান, তাকে মিথ্যা বলে যে লোকটি (দালাল) সাউথ ইবনে সিনা ডায়াগনস্টিক সেন্টারে নিয়ে গিয়েছিলেন, তিনি সেন্টারের ব্যবস্থাপনা পরিচালক শাওনের সঙ্গেই ছিলেন। পরে পুলিশ দেখে পালিয়ে গেছেন।
নিউজবাংলার কাছে আক্ষেপ করে তিনি বলেন, ‘আমরা গ্রামের লোক। ধারদেনা করে টাকা এনে ডাক্তার দেখাতে এসে এভাবে হয়রানির শিকার হলে কাকে বিশ্বাস করব? কোথায় যাব? প্রতারকদের উপযুক্ত বিচার হওয়া উচিত।’
তার এ অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে সাউথ ইবনে সিনা ডায়াগনস্টিক সেন্টারের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. শাওন বলেন, ‘রোগীর সব টেস্টের টাকা ফেরত দিয়েছি। কেবল ডাক্তারের ভিজিট রেখেছি।’
কোতোয়ালি থানার উপপরিদর্শক (এসআই) রেজাউল করিম নিউজবাংলাকে বলেন, ‘আমরা চেষ্টা করেছি এবং টাকা উদ্ধার করে দিয়েছি। দালালকে আটক করার চেষ্টা চলছে।’
এর আগে ২০১৮ সালে কনিকা ডায়াগনস্টিক সেন্টারের ডাক্তার অসিৎ ভূষণ দাস মারা গেছেন বলে এক দালাল রোগী নিয়ে গিয়েছিলেন আরেক ডায়াগনস্টিক সেন্টারের ডাক্তারের কাছে। পরে জানা যায়, ডাক্তার অসিৎ মারা যাননি।
আরও পড়ুন:লক্ষ্মীপুরের রামগতি উপজেলার প্রাথমিক ও মাধ্যমিক শিক্ষকদের কোচিং বাণিজ্য, ক্লাস ফাঁকিবাজি, শিক্ষকদের মধ্যে গ্রুপিং, বিভিন্ন সংগঠন তৈরী করে নেতা সেজে ক্লাস কামাই সহ নানান কারণের শিক্ষার পরিবেশ বেহাল দশায় পরিণত হয়েছে। প্রায় সময় দেখা যায়, ক্লাস ফাঁকি দিয়ে সারাক্ষণ অফিস পাড়ায় তদবির নিয়ে ব্যস্ত থাকেন প্রধান শিক্ষক ও শিক্ষক সংগঠনগুলোর নেতারা। লেখাপড়ার মান খারাপ হওয়ায় দিন দিন স্কুলে শিক্ষার্থীর সংখ্যা কমতে শুরু করছে। অভিভাবকরা তাদের ছেলে মেয়েদের স্কুল থেকে নিয়ে বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে স্কুলে ভর্তি করান।
জানা যায়, উপজলার ৯৬টি প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলার মধ্যে রয়েছে- প্রধান শিক্ষকদের দুটি আর সহকারী শিক্ষকদের একটি সংগঠন। প্রধান শিক্ষকদের সংগঠনের একটির নেতৃত্ব দেন আলেকজান্ডার মডেল সপ্রাবির সেলিনা আক্তার ও বালুরচর সপ্রাবির প্রধান শিক্ষক মোশারফ হোসেন। আরেকটির নেতৃত্বে বিবিরহাট সপ্রাবির প্রধান শিক্ষক এবিএম ওসমান ও চরহাসান হোসেন সপ্রাবির সোহেল সামাদ। সহকারী শিক্ষকদের রয়েছে উপজেলা সহকারী শিক্ষক সমিতি। এর নেতৃত্বে রয়েছেন-আলেকজান্ডার (২) সপ্রাবির সহকারী শিক্ষক আবু সায়েদ ও মোমিন উল্লাহ।
স্কুল চলাকালীন সময়ে প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার আবু সায়েদ স্বপনকে প্রায়ই দেখা যায়, মধ্য আলেকজান্ডার (২) সপ্রাবির সহকারী শিক্ষক আবু সায়েদের মোটরসাইকেলের পিছনে বসে ঘুরাঘুরি করতে। আবু সায়েদ শিক্ষক নেতা হওয়াতে কখনো স্কুলে যেতে হয়না। একই স্কুলের আরেক শিক্ষক জাফর স্কুলে যান কালেভদ্রে। এভাবেই চলছে বছরের পর বছর ধরে এ অঞ্চলের প্রাথমিক শিক্ষা ব্যবস্থা।
এছাড়া উপজেলার ১৮ টি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের রয়েছে উপজলা মাধ্যমিক শিক্ষক কর্মচারী সমিতি নামের একটি সংগঠন। এর সভাপতি হলেন বিবিরহাট রশিদিয়া উচ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক তুহিনা আক্তার। তার বিরুদ্ধে অভিযোগ রয়েছে সংগঠনের নাম ভাঙিয়ে প্রভাব বিস্তার করে শিক্ষক কর্মচারীদের প্রায় বছর খানিকের বকেয়া বেতন নিয়ে করেন কারসাজি, স্কুলের টাকা রাখেন তার একাউন্টে। বিভিন্ন উনয়ন প্রকল্প দিয়ে করেন আর্থিক লুট। স্কুল ফাঁকি দিয়ে বেশিরভাগ সময় থাকেন ঢাকায়। খামখেয়ালি ভাবে কর্মচারীদের করেন বহিষ্কার। তার স্কুলের সহকারী শিক্ষকদের বেতন নিয়েও নয়ছয় করার অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে। তুহিনা আক্তারের এসব অনিয়ম লুটপাটের বিরুদ্ধে তার স্কুলের ৪র্থ শ্রেণীর কর্মচারী কারিমুল হক প্রতিকার চেয়ে বিভিন্ন দপ্তরে অভিযোগও করেছেন।
সম্প্রতি উপজলার আইনশৃঙ্খলা কমিটির সভায় আলেকজান্ডার মডেল সরকারি পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক বদরুল হাসান এসব অভিযোগ এনে রামগতির বর্তমান শিক্ষা ব্যবস্থা ও শিক্ষকদের গ্রুপিং, দলাদলি, ক্লাস ফাঁকি ও নানান অনিয়মের বিষয়ে উদ্বেগ উৎকণ্ঠার কথা জানিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করে প্রতিকারের জন্য সহযোগিতা প্রত্যাশা করেন। এসময় তিনি তার বক্তব্যে বলেন, আমাদের প্রতিষ্ঠানের শিক্ষকরা নিজেদের মধ্যে গ্রুপিং, দলাদলি, ক্লাস ফাঁকি ও প্রাইভেট কোচিং নিয়ে ব্যস্ত থাকেন। এতে এ উপজেলার শিক্ষাব্যবস্থা নিয়ে অভিভাবক সহ সাধারণ মানুষের মধ্যে নানা সমালোচনা হচ্ছে। অধিকাংশ প্রধান শিক্ষক স্কুলের কোন ক্লাসই করছে না। সারাদিন অফিসপাড়ায় ঘুরাঘুরি ও তদবির বাণিজ্য নিয়ে দৌড়াদৌড়ি করছেন। ফলে ক্লাস চলাকালীন ছাত্ররা স্কুল গেইটের বিভিন্ন দোকানে, বাজারে ঘোরাফেরা করতে দেখা যায়। এসব গ্রুপিং দলাদলি ও তদবির বাণিজ্য বন্ধে উপজেলা শিক্ষা অফিসের হস্তক্ষেপ কামনা করে বক্তব্য দেন তিনি।
সব মিলিয়ে উপজলার প্রাথমিক ও মাধ্যমিক শিক্ষা ব্যবস্থা এখন হ য ব র ল অবস্থায় বিরাজ করছে। এসকল গ্রুপিং ও দলাদলি বন্ধে সংশ্লিষ্ট দপ্তরের নেই কার্যকর কোন উদ্যোগ। এতে বেপরোয়া হয়ে উঠেছে প্রাথমিক ও মাধ্যমিক স্কুলের প্রধান শিক্ষকরা।
এ বিষয়ে উপজেলা শিক্ষা অফিসার আবু সায়েদ স্বপন বলেন, গ্রুপিং ও দলাদলি নিরসনে প্রাথমিক শিক্ষকদের বিরুদ্ধে অচিরেই কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
আর উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার মোহাম্মদ দিদার হোসেনের দাবি কোচিং সারা দেশেই চলছে।শিক্ষকদের মধ্যে গ্রুপিং ও দলাদলির কথা স্বীকার করে তিনি বলেন, এগুলো বন্ধে খুব দ্রুত পদক্ষেপ নেয়া হচ্ছে।
যমুনা সেতু থেকে সরিষাবাড়ী রেললাইনের পশ্চিম পাশে, গরিল্যা বিলের মাঝে আনুমানিক ১০ শতাংশ জমির উপর ভেসে থাকা দ্বীপ স্থানীয়দের কাছে “জুগীর ঘোপা” নামেই পরিচিত। এটি টাঙ্গাইলের গোপালপুর উপজেলার ঝাওয়াইল ইউনিয়নের মোহাইল গ্রামে অবস্থিত। জুগীর ঘোপা নিয়ে আধ্যাত্মিকতা সহ বিভিন্ন অলৌকিক কল্পকাহিনী স্থানীয়দের মাঝে ছড়িয়ে, অপরাধের একটি বিশাল সিন্ডিকেট গড়ে উঠেছে।
স্থানীয়দের দাবি, আধ্যাত্মিকতার আড়ালে এখানে বসে জুয়ার আসর, মাদক বিক্রি ও মাদক সেবন, এবং পলাতক আসামিদের নিরাপদ আশ্রয়। এসব কর্মকাণ্ড নিরাপদে পরিচালনা করতে বেশ কিছুদিন আগে ঝাওয়াইল ইউনিয়ন পরিষদ থেকে চার চালা টিনের ছাউনি, পাকা দেয়াল ও ফ্লোরসহ একটি ঘর নির্মাণ করে দেওয়া হয়েছে। নির্দিষ্ট নৌকা ছাড়া জুগীর ঘোপায় পৌঁছানোর অন্য কোনো উপায় নেই, তাই ইচ্ছে করলেই সেখানে পৌঁছানো কঠিন ব্যাপার।
স্থানীয়রা জানান, প্রতি বৃহস্পতিবার সারাদিন এখানে সবচেয়ে বড় গাঁজা সেবনের আসর বসে। ওইদিন বিরতিহীনভাবে ৩টি নৌকা দিয়ে হাজার হাজার মাদকসেবীকে পারাপার করা হয়। সেদিন মান্নতের খিচুড়ি বিতরণ করা হয়। দেশের বিভিন্ন স্থান, পার্শ্ববর্তী উপজেলা এবং গোপালপুর উপজেলার বিভিন্ন গ্রাম থেকে ২ থেকে ৩ হাজার মাদকসেবীর আগমন ঘটে। শত শত মোটরসাইকেলসহ বিভিন্ন ধরনের যানবাহন রেললাইনের পাশে রেখে তারা জুগীর ঘোপায় যায়। আগত মানুষের সিংহভাগ তরুণ ও যুবক।
এসবকে কেন্দ্র করে স্থানীয় এলাকায় জিনিসপত্র চুরি বেড়েছে। এছাড়াও, স্লিপারের সাথে রেললাইনের পাত আটকানোর ক্লিপ অধিকাংশ খুলে নিয়ে নেশাখোররা বিক্রি করে দিচ্ছে।
সত্যতা স্বীকার করে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় একজন জনপ্রতিনিধি জানান, মোহাইল গ্রামের ছাত্রসমাজ কিছুদিন আগে মাদকসেবীদের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলেছিল। কিন্তু জুগীর ঘোপা নিয়ন্ত্রণকারী সিন্ডিকেট এতটাই শক্তিশালী যে তাদের চাপে ছাত্রসমাজকে চুপ হতে হয়েছিল। এরা খুবই ক্ষমতাবান। ওখানে বছরের পর বছর কোটি কোটি টাকার মাদক ব্যবসা চলছে। আমি ওখানকার কর্মকাণ্ডের ঘোর বিরোধী। ইউনিয়ন পরিষদ থেকে ঘর নির্মাণের ব্যাপারে জানতে চাইলে বলেন, বর্তমান পরিষদের আমলে ঘর দেওয়া হয়নি, অনেক আগে হয়তো দিয়েছে। খতিয়ে দেখে বিস্তারিত জানাতে পারবো।
ছদ্মবেশে সরেজমিন ঘুরে দেখা যায়, ঘরের মধ্যে ৪টি গ্রুপ এবং ঘরের বাইরে ১৫-এর অধিক গ্রুপ গোল করে গানের আড্ডা ও জুয়ার আসর বসিয়েছে। নিয়ন্ত্রণকারী সিন্ডিকেটের সদস্যরা গাঁজা এবং গাঁজা প্রস্তুতির সরঞ্জাম সরবরাহ করছে।
প্রতিবেদককে দেখে সন্দেহ হওয়ায় কয়েকজন মানুষ তাকে কঠোর নজরদারিতে রাখতে থাকে।
সিন্ডিকেটের সদস্যরা কল্পকাহিনী শোনানোর এক পর্যায়ে জানান, এখানকার গাছের ডাল ভাঙলে মানুষের সাথে সাথে গলায় রক্ত বের হয়ে মৃত্যু হয়। কিন্তু বিষয়টি খতিয়ে দেখতে গাছের ডাল ভাঙলেও বাস্তবে তেমন কিছু ঘটেনি।
নৌকা চালক চান মিয়া জানান, প্রফেসরের বাপে এখানের নিয়ন্ত্রণ করে! তিনি বর্তমানে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন। তবে সেই প্রফেসরের নাম তিনি বলেননি।
গোপালপুর থানা অফিসার ইনচার্জ গোলাম মুক্তার আশরাফ উদ্দিন জানান, এ বিষয়ে তার কাছে কোনো তথ্য নেই। তিনি খোঁজ নিয়ে দেখবেন।
জুগীর ঘোপা নিয়ে লোকমুখে সবচেয়ে প্রচলিত কল্পকাহিনী হলো, কোনো অনুষ্ঠানের প্রয়োজনে বাসন-কোসনের জন্য নগ্ন গায়ে ও নগ্ন পায়ে প্রার্থনা করলে সাথে সাথে প্রয়োজনীয় বাসন-কোসন পাওয়া যেত। অনুষ্ঠানের শেষে বাসনগুলো ধুয়ে মুছে ওই স্থানে ফেরত দিয়ে আসতে হতো। একবার একজন লোক সব বাসন ফেরত না দেওয়ায় পরবর্তী সময়ে আর বাসন পাওয়া যায়নি। তবে এই দাবির কোনো সত্য ভিত্তি পাওয়া যায়নি।
পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয় এবং পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেছেন, ওজোনস্তর রক্ষায় রাজনৈতিক সদিচ্ছা ও আন্তর্জাতিক সহযোগিতা অপরিহার্য। তিনি বলেন, ওজোনস্তর ক্ষয়ের ফলে মানবস্বাস্থ্য, কৃষি উৎপাদন ও প্রাণিজগৎ ঝুঁকির মুখে পড়েছে। তবে মন্ট্রিয়ল প্রটোকলের মতো কার্যকর আন্তর্জাতিক আইন প্রণয়ন ও বাস্তবায়নের কারণে পৃথিবী আজ ক্ষতিকর রাসায়নিক পদার্থ নিয়ন্ত্রণে সফল হয়েছে। এটি একটি দৃষ্টান্ত যে, রাজনৈতিক সদিচ্ছা থাকলে আন্তর্জাতিক আইনও কার্যকরভাবে বাস্তবায়ন করা যায়, বলেন পরিবেশ উপদেষ্টা।
মঙ্গলবার বিশ্ব ওজোন দিবস উপলক্ষ্যে রাজধানীর আগারগাঁওয়ে পরিবেশ অধিদপ্তরে আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে পরিবেশ উপদেষ্টা এসব কথা বলেন।
সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান আরও বলেন, উন্নত দেশগুলো অর্থ ও প্রযুক্তিগত সহায়তার মাধ্যমে উন্নয়নশীল দেশগুলোকে সহায়তা করায় ওজোনস্তর রক্ষায় বৈশ্বিক সাফল্য এসেছে। জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায়ও একইভাবে উন্নত দেশগুলোর প্রতিশ্রুতি ও সহযোগিতা অপরিহার্য। আমরা চাই, সমালোচনাকে ইতিবাচক দৃষ্টিতে নিয়ে কার্যকর পদক্ষেপে রূপান্তরিত করা হোক। ব্যক্তিগত ও প্রাতিষ্ঠানিক আচরণে পরিবর্তন আনলেই টেকসই ভবিষ্যৎ নিশ্চিত করা সম্ভব, তিনি যোগ করেন।
আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন পরিবেশ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ড. মো. কামরুজ্জামান। বক্তব্য রাখেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (জলবায়ু পরিবর্তন) মোহাম্মদ নাভিদ শফিউল্লাহ, পরিবেশ অধিদপ্তরের পরিচালক মো. জিয়াউল হক এবং ইউএনডিপির প্রতিনিধি প্রমুখ । মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন প্রকল্প পরিচালক মহিউদ্দিন মানিক,
অনুষ্ঠানে বিশ্ব ওজোন দিবস উপলক্ষ্যে আয়োজিত চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতার বিজয়ীদের মাঝে পুরস্কার বিতরণ করা হয়।
নড়াইল সদর উপজেলার ভবানীপুর আরবিএফএম মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শরিফুল ইসলামকে লাঞ্ছিত করার অভিযোগ পাওয়া গেছে। একই সময়ে বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক এস এম জিয়াউল হককে মারধর করে বিদ্যালয় থেকে বের করে দেয়া হয়েছে । ঘটনার এক সপ্তাহ অতিবাহিত হলেও ভয় ও আতঙ্কে জিয়াউল হক বিদ্যালয়ে আসতে পারছেন না । এ বিষয়ে যথাযথ পদক্ষেপ ও প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য ভুক্তভোগী প্রধান শিক্ষক শরিফুল ইসলাম গত রোববার (১৪ সেপ্টেম্বর) জেলা প্রশাসক ও শিক্ষা অফিসার বরাবর লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন ।
অভিযোগে জানা যায়, গত ৯ সেপ্টেম্বর শিক্ষার মানোন্নয়নে সাধারণ সভা চলাকালে বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি শরীফ তছিকুল ইসলাম পূর্বপরিকল্পিত ভাবে মূল আলোচ্য বিষয় বাদ দিয়ে অপ্রাসঙ্গিক বিষয়ে আলোচনা শুরু করেন। একপর্যায়ে সভাপতি বহিরাগত লোকজন নিয়ে ‘মব সৃষ্টি’ করে প্রধান শিক্ষক শরিফুল ইসলামকে লাঞ্ছিত করেন। এ সময় ভয় ও আতঙ্কে বেশির ভাগ অভিভাবক সভাস্থল ত্যাগ করেন। বিদ্যালয়ের অন্য শিক্ষকরাও আতঙ্কিত হয়ে পড়েন।
এদিকে, বিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান বিষয়ের শিক্ষক আজিজুর রহমানের এমপিওভুক্তি অবৈধ । এই মর্ম্মে বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক এস এম জিয়াউল হক মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের পরিচালক, উপ-পরিচালক এবং খুলনাঞ্চলের উপ-পরিচালক বরাবর অভিযোগ দাখিল করেন। এ অভিযোগ প্রত্যাহার করে নেয়ার জন্য গত ৯ সেপ্টেম্বর অনুষ্ঠিত সভায় জিয়াউল হককে চাপ দেয়া হয়। আজিজুরের বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগটি প্রত্যাহারে অনীহা প্রকাশ করেন জিয়াউল হক। এ সময় ‘মব সৃষ্টি’ করে জিয়াউল হককে মারধর করে বিদ্যালয় থেকে বের করে দেয়া হয় বলে অভিযোগ রয়েছে। সভাপতি শরীফ তছিকুল ইসলামসহ শিক্ষক আজিজুর রহমান বহিরাগতদের জড়ো করে শিক্ষকদের প্রতি এমন নিষ্ঠুর আচরণ করেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
অপরদিকে, আজিজুর রহমানের অবৈধ এমপিওভুক্তির বিরুদ্ধে অভিযোগের বিষয়ে গত ২৯ জুলাই জেলা শিক্ষা অফিসার বিদ্যালয়ে উপস্থিত হয়ে বিষয়টি তদন্তপূর্বক প্রতিবেদন খুলনায় প্রেরণ করেন। এছাড়া শিক্ষক আজিজুর রহমানের বিরুদ্ধে জেলা প্রশাসক বরাবর অভিযোগ দায়ের করা হলে গত ১ সেপ্টেম্বর বিষয়টি তদন্ত হয়েছে। একই বিষয়ে সোমবার (১৫ সেপ্টেস্বর) জেলা শিক্ষা অফিসারের কক্ষে আজিজুর রহমানের বিরুদ্ধে আরেকটি তদন্ত হয়েছে।
এ ব্যাপারে জেলা শিক্ষা অফিসার (ভারপ্রাপ্ত) মোঃ মহীউদ্দিন জানান, শিক্ষক আজিজুর রহমানের বিরুদ্ধে অভিযোগের বিষয়টি এখনো নিষ্পত্তি হয়নি। তদন্ত কার্যক্রম চলমান রয়েছে।
এদিকে বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি শরীফ তছিকুল ইসলাম বলেন, ৯ সেপ্টেম্বর অনুষ্ঠিত সভায় শিক্ষক আজিজুর রহমানকে পুনর্বহালের কথা বলা হলে হট্টগোলের একপর্যায়ে বিদ্যালয়ের বারান্দায় অবস্থানরত লোকজন শিক্ষক জিয়াউল হককে মারধর করেন। আমি পরিস্থিতি সামাল দেয়ার চেষ্টা করি। এ ঘটনার সঙ্গে আমার কোনো সম্পৃক্ততা নেই বলে দাবি করেন তিনি।
বিষয়টি জানতে প্রধান শিক্ষক শরিফুল ইসলামকে ফোন করলে ফোন বন্দ পাওয়া যায় ।
সারা দেশে আগামী পাঁচ দিন টানা বৃষ্টি ঝরতে পারে। সেই সঙ্গে কোথাও কোথাও অতিভারি বর্ষণ হওয়ার আশঙ্কা করছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। সংস্থাটি বলছে, মৌসুমি বায়ুর অক্ষের বর্ধিতাংশ রাজস্থান, হরিয়ানা, উত্তর প্রদেশ, বিহার, পশ্চিমবঙ্গ ও বাংলাদেশের উত্তরাঞ্চল হয়ে আসাম পর্যন্ত বিস্তৃত রয়েছে। মৌসুমি বায়ু বাংলাদেশের ওপর সক্রিয় এবং উত্তর বঙ্গোপসাগরে মাঝারি অবস্থায় রয়েছে— এ অবস্থায় আগামী ২৪ ঘণ্টায় রাজশাহী, রংপুর, ময়মনসিংহ, ঢাকা, খুলনা, বরিশাল, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের অধিকাংশ জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা হাওয়াসহ হালকা থেকে মাঝারি ধরনের বৃষ্টি বা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে।
পাশাপাশি সারা দেশের কোথাও কোথাও মাঝারি ধরনের ভারি থেকে অতিভারি বর্ষণ হতে পারে। এ ছাড়া সারা দেশে দিন ও রাতের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে।
মঙ্গলবার সকাল ৯টা থেকে পরবর্তী ১২০ ঘণ্টার জন্য দেওয়া পূর্বাভাসে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
এতে আরো বলা হয়েছে, আগামীকাল বুধবার (১৭ সেপ্টেম্বর) সকাল ৯টা থেকে পরবর্তী ৪৮ ঘণ্টায় রংপুর, রাজশাহী, ময়মনসিংহ ও সিলেট বিভাগের অধিকাংশ জায়গায় এবং ঢাকা, খুলনা, বরিশাল ও চট্টগ্রাম বিভাগের অনেক জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা হাওয়াসহ হালকা থেকে মাঝারি ধরনের বৃষ্টি বা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে।
সেই সঙ্গে রংপুর, রাজশাহী, ময়মনসিংহ ও সিলেট বিভাগের কোথাও কোথাও মাঝারি ধরনের ভারি থেকে ভারি বর্ষণ হতে পারে। এ ছাড়া সারা দেশে দিনের ও রাতের তাপমাত্রা সামান্য বাড়তে পারে।
আগামী শুক্রবার (১৯ সেপ্টেম্বর) সকাল ৯টা থেকে পরবর্তী ২৪ ঘণ্টায় রংপুর ও রাজশাহী বিভাগের অনেক জায়গায় এবং ঢাকা, ময়মনসিংহ, খুলনা, বরিশাল, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের কিছু কিছু জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা হাওয়াসহ হালকা থেকে মাঝারি ধরনের বৃষ্টি বা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। সেই সঙ্গে রাজশাহী ও রংপুর বিভাগের কোথাও কোথাও মাঝারি ধরনের ভারি থেকে ভারি বর্ষণ হতে পারে।
এ সময় সারা দেশে দিন ও রাতের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে।
এ ছাড়া আগামী শনিবার (২০ সেপ্টেম্বর) সকাল ৯টা থেকে পরবর্তী ২৪ ঘণ্টায় রংপুর, রাজশাহী, ময়মনসিংহ ও সিলেট বিভাগের কিছু কিছু জায়গায় এবং ঢাকা, খুলনা, বরিশাল ও চট্টগ্রাম বিভাগের দু-এক জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা হাওয়াসহ হালকা থেকে মাঝারি ধরনের বৃষ্টি বা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। সেই সঙ্গে সারা দেশের কোথাও কোথাও মাঝারি ধরনের ভারি বর্ষণ হতে পারে। এ সময়ের মধ্যে সারা দেশে দিন ও রাতের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে।
বর্ধিত পাঁচ দিনের আবহাওয়ার অবস্থা সম্পর্কে বলা হয়েছে, এ সময়ের মধ্যে উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন নেই।
মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর (ডিএনসি) মাদক চক্রের পাঁচ সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে। তারা যুক্তরাজ্য থেকে ‘খ’ শ্রেণির ভয়ংকর মাদক এমডিএমএসহ বিভিন্ন মাদক সরবরাহ করছিল।
গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন- মো. জুবায়ের (২৮), জি এম প্রথিত সামস (২৫), আসিফ মাহবুব চৌধুরী (২৭), সৈয়দ শায়ান আহমেদ (২৪) ও অপূর্ব রায় (২৫)। তাদের কাছ থেকে বিপুল পরিমাণ মাদকসহ মোবাইল ফোন, ল্যাপটপ ও নগদ টাকা জব্দ করা হয়েছে।
গতকাল সোমবার রাজধানীর সেগুনবাগিচায় মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের (ডিএনসি) প্রধান কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান অধিদপ্তরের মহাপরিচালক (ডিজি) মো. হাসান মারুফ।
মো. হাসান মারুফ বলেন, বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের উচ্চশিক্ষিত ও প্রযুক্তি দক্ষ এক উচ্চবিত্ত মাদক চক্র এই অবৈধ কর্মকাণ্ড চালাচ্ছিল। তারা গাঁজা, কুশ, এমডিএমএ এবং কেটামিন মাদকগুলো যুক্তরাজ্য থেকে পার্সেল মাধ্যমে বাংলাদেশে নিয়ে আসত এবং ঢাকাসহ বিভিন্ন মহানগরের অভিজাত ডিজে পার্টি ও সোসাইটিতে সরবরাহ করত।
গোপন সংবাদের ভিত্তিতে ডিএনসি গত রোববার পল্টনের পুরাতন ডাক ভবন থেকে যুক্তরাজ্য থেকে আসা একটি এয়ার পার্সেল তল্লাশি করে। সেখানে বিভিন্ন ব্র্যান্ডের চকলেটের নিচে লুকানো অবস্থায় লালচে এমডিএমএ ট্যাবলেট উদ্ধার হয়। এরপর সংশ্লিষ্ট তথ্য ও প্রযুক্তির সাহায্যে মাদক চক্রের হোতা মো. জুবায়েরকে ঢাকা উদ্যান এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়।
জিজ্ঞাসাবাদে জুবায়ের জানায়, পার্সেলটি যুক্তরাজ্য থেকে তার পূর্বপরিচিত অরণ্য ডাকযোগে অরণ্যের বন্ধু অপূর্ব রায়ের নাম, ঠিকানা ও মোবাইল নম্বর ব্যবহার করে পাঠিয়েছে। যা তাকে রিসিভ করে তার আরেক বন্ধু জি এম প্রথিত সামসের নিকট পৌঁছে দেওয়ার জন্য অনুরোধ করে। এর বিনিময়ে তাকে ৫০ হাজার টাকা দেবে বলে জানায়। কাজটি করার জন্য অরণ্যের কথায় প্রথিত তাকে বিকাশের মাধ্যমে তিন বারে ১৫-১৬ হাজার টাকা অগ্রিম প্রদান করে। তারা মোবাইল ফোনে হোয়াটসঅ্যাপ, টেলিগ্রামসহ এনক্রিপ্টেড অ্যাপ ব্যবহার করে যোগাযোগ করত।
পরে জি এম প্রথিত সামস, আসিফ মাহবুব চৌধুরী, অপূর্বর ও সৈয়দ শায়ান আহমেদকে গ্রেপ্তার করা হয়। তাদের কাছ থেকে এমডিএমএ ট্যাবলেট ৩১৭ পিস, কুশ ১ দশমিক ৬৭৬ কেজি, গাঁজা ২৫০ গ্রাম এবং কেটামিন ৫০ মিলিলিটারসহ বিপুল মাদক উদ্ধার করা হয়েছে। পাশাপাশি ৬টি মোবাইল ফোন ও একটি ল্যাপটপ এবং নগদ ৭ লাখ ১১ হাজার টাকা জব্দ করা হয়েছে।
মহাপরিচালক বলেন, ‘আমরা এই ধরনের মাদক চক্রের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করে চলেছি। আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করে দেশের মাদক ব্যবসাকে রুখতে কাজ করছি।’
ডিএনসি গ্রেপ্তারকৃতদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নিচ্ছে বলেও জানান তিনি।
ভারতের শীর্ষ আদালত মুসলিমদের সম্পত্তি নিয়ে একটি বিতর্কিত আইনের মূল ধারাগুলো স্থগিত করেছে। তবে আইনটিকে সম্পূর্ণরূপে বাতিল করতে অস্বীকৃতি জানানো হয়েছে।
গত এপ্রিল মাসে ভারতের পার্লামেন্ট প্রণীত ওয়াকফ (সংশোধনী) আইনটিতে মুসলিমদের দান করা এবং কোটি কোটি ডলার মূল্যের সম্পত্তি পরিচালনার পদ্ধতিতে পরিবর্তন আনা হয়। এর বিরুদ্ধে মুসলিম সংগঠন এবং বিরোধী দলগুলোর আনা আবেদনের শুনানি করেছে দেশটির সুপ্রিম কোর্ট।
আবেদনকারীরা বলছেন, আইনটি মুসলিম সম্প্রদায়ের অধিকার লঙ্ঘন করে। কিন্তু সরকারের যুক্তি হলো, এর লক্ষ্য মুসলিমদের সম্পত্তির ব্যবস্থাপনা আরও স্বচ্ছ করা। ইসলামী ঐতিহ্যে ওয়াকফ হলো সম্প্রদায়ের কল্যাণের জন্য মুসলমানদের প্রদত্ত একটি দাতব্য বা ধর্মীয় দান। এই ধরনের সম্পত্তি বিক্রি বা অন্য কোনো উদ্দেশে ব্যবহার করা যাবে না।
মসজিদ, মাদ্রাসা, কবরস্থান এবং এতিমখানার জন্য এগুলো ব্যবহার করা হয় বলে ভারতের ২০ কোটি মুসলমানের কাছে এগুলো গুরুত্বপূর্ণ।
ঐতিহাসিকভাবে এই সম্পত্তিগুলো ১৯৯৫ সালের ওয়াকফ আইনের মাধ্যমে পরিচালিত হয়ে এসেছে। এগুলো পরিচালনার জন্য রাজ্য-স্তরের ওয়াকফ বোর্ড গঠন বাধ্যতামূলক করা হয়েছিল।
কিন্তু এই বছরের শুরুর দিকে ক্ষমতাসীন ভারতীয় জনতা পার্টির (বিজেপি) নেতৃত্বাধীন সরকার আইনটি সংশোধন করে এতে নতুন বিধান যুক্ত করে। ওয়াকফ সম্পত্তি কীভাবে নির্ধারণ এবং পরিচালনা করা হবে, তাতে পরিবর্তন আনা হয়েছিল। ভারতে মুসলিমদের দান করা জমি নিয়ে অবিরাম আইনি লড়াই।
গতকাল সোমবার ভারতের প্রধান বিচারপতি বিআর গাভাই এবং বিচারপতি এজি মাসিহের একটি বেঞ্চ পুরো আইনটি বাতিল করতে অস্বীকৃতি জানিয়েছে। তবে তারা একটি বিতর্কিত বিধান স্থগিত করেছে, যে বিধান সরকারকে সিদ্ধান্ত নিতে দেয় যে, বিতর্কিত সম্পত্তি ওয়াকফ কিনা।
ঐতিহাসিকভাবে মৌখিক ঘোষণা বা সম্প্রদায়ের রীতিনীতির মাধ্যমে দান করা অনেক সম্পত্তি মুসলিম সম্প্রদায়ের ক্রমাগত ব্যবহারের কারণে ওয়াকফ সম্পত্তি হিসাবে বৈধতা পেয়েছে।
সরকারি তথ্য থেকে জানা যায়, ভারতে (কাগজে) ৮৭২৮৫২টি ওয়াকফ সম্পত্তির মধ্যে কমপক্ষে ১৩২০০টি আইনি লড়াইয়ে জড়িয়ে আছে। ৫৮ হাজার ৮৮৯টি দখল করা হয়েছে এবং ৪৩৬০০০টিরও বেশি সম্পত্তির অবস্থা অস্পষ্ট।
নতুন আইনের অধীনে, ওয়াকফ বোর্ডগুলোকে কোনো সম্পত্তি ওয়াকফ হিসেবে দাবি করার জন্য বৈধ নথি সরবরাহ করতে হবে। বিরোধের ক্ষেত্রে, চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত সরকারের ওপর নির্ভর করবে।
আদালত বলেছে, সরকারকে নাগরিকের অধিকার নির্ধারণের অনুমতি দেওয়া ভারতীয় সংবিধানের অধীনে নির্বাহী ও বিচার বিভাগের মধ্যে ক্ষমতা পৃথকীকরণের পরিপন্থি।
আরেকটি বিতর্কিত ধারা বাতিল করা হয়েছে, যেটির অধীনে ওয়াকফ দাতাকে কমপক্ষে পাঁচ বছর ধরে একজন ‘ধর্মপ্রাণ মুসলিম’ হতে হবে।
বর্তমানে ওয়াকফ সম্পত্তিগুলো রাজ্য-স্তরের বোর্ড এবং একটি কেন্দ্রীয় কাউন্সিলের মাধ্যমে পরিচালিত হয়, যেখানে রাজ্য সরকারের মনোনীত সদস্য, মুসলিম আইনপ্রণেতা, রাজ্য বার কাউন্সিলের সদস্য ও ইসলামী পণ্ডিতরা এই সম্পত্তিগুলোর ব্যবস্থাপকরা থাকেন।
বিচারকরা ওয়াকফ বোর্ডে অমুসলিমদের যুক্ত করার বিধান স্থগিত রাখতে অস্বীকৃতি জানিয়েছে। তবে তারা ২২ সদস্যের ফেডারেল বোর্ডে অমুসলিম সদস্যের সংখ্যা চার জন এবং ১১ সদস্যের রাজ্য বোর্ডে তিন জনের মধ্যে সীমাবদ্ধ রেখেছেন।
আদালত আরও বলেছে, ‘মুসলিম সম্প্রদায়ের মধ্য থেকে বোর্ডের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা নিয়োগের চেষ্টা করা উচিত।’
মুসলিম গোষ্ঠী এবং বিরোধী দলগুলোর ব্যাপক সমালোচনার মধ্যে পার্লামেন্টে আইনটি পাস হওয়ার পরপরই এপ্রিলের গোড়ার দিকে মামলাটি শীর্ষ আদালতে গড়ায়।
তথ্য: বিবিসি
মন্তব্য