করোনার উচ্চ সংক্রমণ পরিস্থিতিতে রংপুর জেলায় কোরবানির ঈদ উপলক্ষে ৩৫টি গরুর হাট বসছে। প্রতিদিনই জেলার বিভিন্ন উপজেলায় বসছে বড় অন্তত ১০টির বেশি হাট। কোথাও স্বাস্থ্যবিধি মানার বালাই নেই। হাটে হাটে হুমড়ি খেয়ে পড়েছে ক্রেতা-বিক্রেতা।
স্বাস্থ্য বিভাগ জানায়, রংপুর বিভাগে গত ১২ দিনে করোনায় আক্রান্ত হয়ে ১৯৭ জনের মৃত্যু হয়েছে। প্রতিদিন আক্রান্ত হচ্ছে অন্তত ৫০০ মানুষ। করোনা উপসর্গের রোগী গ্রামের ঘরে ঘরে। অথচ এখনও সচেতনতা আসছে না সাধারণ মানুষের মধ্যে।
১৫ জুলাই থেকে লকডাউন শিথিল করে প্রজ্ঞাপন জারি করে সরকার। এর পরপরই মানুষের ঢল নামে হাটবাজারে।
শুক্রবার পীরগাছার দেউতি হাট, রংপুরের নিশবেতগঞ্জ, কাউনিয়ার হারাগাছ খানসামা হাটসহ কয়েকটি হাটে দেখা গেছে উপচে পড়া ভিড়। হাটে আসা কেউ স্বাস্থ্যবিধি মানছে না। গাদাগাদি করে বসেছে পশুর হাট। মুখে মাস্ক তো দূরের কথা, একে অপরের সঙ্গে গায়ে গা লাগিয়ে হাটে প্রবেশ করেছে। প্রতিটি হাটে হাজারো মানুষের ভিড়।
স্থানীয় লোকজন জানান, ইজারাদারের পক্ষ থেকে সুরক্ষাব্যবস্থা নেই, প্রবেশপথে রাখা হয়নি হাত ধোয়ার পানি ও সাবান। শরীরের তাপমাত্রা মাপার যন্ত্র নেই। হাটজুড়ে রয়েছে শিশু-বৃদ্ধসহ সব বয়সী মানুষের অবাধ চলাচল।
পশুর হাট পরিচালনায় সরকারের পক্ষ থেকে স্বাস্থ্যবিধি মানার কঠোর নির্দেশনা রয়েছে। তবে রংপুরজুড়ে সে আদেশ নিষেধ পুরোপুরি উপেক্ষিত।
রংপুরের দেউতি হাটে গরু কিনতে বগুড়া থেকে এসেছেন সৈইফুর রহমান। তার মুখে মাস্ক নেই। তিনি বলেন, ‘এই যে মাস্ক আছে পকেটে। মাস্ক পরা আমাদের জন্য ভালো, কিন্তু গরমে পরা যায় না। স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা দরকার।’
সাকিব আকন্দ নামে একজন বলেন, ‘কেমন করি হাটোত স্বাস্থ্যবিধি মানবে। স্বাস্থ্যবিধি মানতে হলে হাটের জায়গা বড় করতে হবে। জায়গা কম, খালি স্বাস্থ্যবিধি মানবের কইলে তো হবে না। ছোট জায়গায় মানুষ বেশি। তা ছাড়া মানুষ যদিল না মানে প্রশাসন কী করবে?’
নিশবেতগঞ্জ হাটে জব্বার আলী নামের একজন বলেন, ‘কোরবানির জন্য গরু কিনতে এসেছি। কিন্তু হাটে তো কোনো স্বাস্থ্যবিধি নেই। এত মানুষ দেখে ভয়ও লাগছে। পুরো হাটে মানুষে মানুষে একাকার। যেহেতু লকডাউন নেই, তাই হাটে-বাজারে মানুষ বেড়েছে।’
তিনি বলেন, ‘প্রশাসনের নজর দেয়া উচিত। তা না হলে ঈদের পর হাসপাতালে জায়গা খুঁজতে খুঁজতে অনেককে তার প্রিয়জন হারাতে হবে।’
রংপুর বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালক (ভারপ্রাপ্ত) আবু মো. জাকিরুল ইসলাম জানান, ‘রংপুর বিভাগে গত চার দিনে সংক্রমণ কমেছে। কিন্তু মানুষ হাটে যেভাবে চলাফেরা করছে, তাতে সংক্রমণ বাড়তে পারে। মানুষকে সচেতন করার জন্য হাট কর্তৃপক্ষকে কঠোর হতে হবে, মাইকে প্রচার করতে হবে। আমরা সংক্রমণ বাড়ার শঙ্কায় আছি।’
রংপুরের জেলা প্রশাসক আসিব আহসান বলেন, ‘ভ্রাম্যমাণ আদালত কাজ করছে। শুধু আইন নয়, মানুষকে সচেতন হতে হবে।’
চার দিনের সরকারি সফরে যুক্তরাজ্যের উদ্দেশে দেশ ছেড়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস।
আজ সোমবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় আমিরাতের একটি ফ্লাইটে যুক্তরাজ্যের উদ্দেশে ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর ত্যাগ করেন তিনি।
প্রধান উপদেষ্টার উপপ্রেস সচিব আবুল কালাম আজাদ মজুমদার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
জানা যায়, এই সফরে বাকিংহাম প্যালেসে ব্রিটিশ রাজা তৃতীয় চার্লসের সঙ্গে দেখা করবেন প্রধান উপদেষ্টা। এ সময় তিনি রাজা চার্লসের হাত থেকে গ্রহণ করবেন ‘কিংস চার্লস হারমনি অ্যাওয়ার্ড’।
সফরসঙ্গী হিসেবে প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে রয়েছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর ও দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) চেয়ারম্যান ড. আবদুল মোমেন।
এ ছাড়া, দুই দেশের সম্পর্ককে নতুন করে পুনরুজ্জীবিত এবং অর্থনীতি, বাণিজ্য ও বিনিয়োগের ক্ষেত্রে আরও ঘনিষ্ঠ সহযোগিতা গড়ার লক্ষ্যে এই সফর অনুষ্ঠিত হবে।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ভারপ্রাপ্ত পররাষ্ট্র সচিব রুহুল আলম সিদ্দিকী বলেন, ‘এটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ সফর। প্রধান উপদেষ্টা ৯ জুন ঢাকা থেকে লন্ডনের উদ্দেশে রওনা দেবেন এবং ১৪ জুন দেশে ফিরবেন।’
সম্প্রতি ভারতে করোনায় সক্রিয় আক্রান্তের সংখ্যা ছয় হাজার ছাড়িয়ে গেছে। দেশটিতে নতুন করে গত ২৪ ঘণ্টায় আরও ৩৫৮ জন করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন। এতে দেশটিতে সক্রিয় আক্রান্তের সংখ্যা ৬ হাজার ৪৯১ জনে পৌঁছেছে। তাই করোনা ভাইরাসের সংক্রমণের আগাম সতর্কতা হিসেবে ভারত থেকে যেসব রুটের ফ্লাইট ঢাকায় অবতরণ করে, সেসব ফ্লাইটের সব যাত্রী স্ক্রিনিং শুরু করেছে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ।
বর্তমানে ভারতের চেন্নাই, কলকাতা, দিল্লি, হায়দ্রাবাদ, মুম্বাই থেকে ঢাকায় ফ্লাইট আসে। এই ফ্লাইটগুলো পরিচালনা করে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স, ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্স, এয়ার ইন্ডিয়া, ইন্ডিগো।
হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের নির্বাহী পরিচালক গ্রুপ ক্যাপ্টেন এসএম রাগীব সামাদ গণমাধ্যমকে জানান, পার্শ্ববর্তী দেশে করোনা সংক্রমণ ফের বাড়তে থাকায় হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরেও জোরদার করা হয়েছে স্বাস্থ্য সুরক্ষা ব্যবস্থা। গত ২ জুন থেকেই বিমানবন্দরে আগত যাত্রীদের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে নেওয়া হয়েছে একাধিক পদক্ষেপ। ভারত থেকে আগত যাত্রীদের স্ক্রিনিং করা হচ্ছে। বিমানবন্দরে পর্যাপ্ত সংখ্যত মাস্ক এবং পিপিই রাখা হয়েছে। বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ সর্বোচ্চ সতর্ক অবস্থায় আছে। পাশাপাশি বিমানবন্দরে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের কর্মকর্তারাও সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে দায়িত্ব পালন করছেন।
বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, আন্তর্জাতিক ফ্লাইট থেকে আগত যাত্রীদের ইমিগ্রেশন প্রবেশপথে বসানো হয়েছে থার্মাল স্ক্যানার।
বিমানবন্দরে আগত যাত্রীদের মধ্যে সচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে করোনা প্রতিরোধ সংক্রান্ত নির্দেশনা ও সতর্কতা প্রচারও চলছে। কর্তৃপক্ষ বলছে, পরিস্থিতির উন্নতি না হওয়া পর্যন্ত এ সতর্কতামূলক ব্যবস্থাগুলো কার্যকর থাকবে।
ভারতের স্বাস্থ মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, এখন সবচেয়ে বেশি সংক্রমণ দেখা যাচ্ছে কেরালায়। সেখানে বর্তমান সক্রিয় আক্রান্তের সংখ্যা ১ হাজার ৯৫৭ জন। অপরদিকে গুজরাটে এই সংখ্যা ৯৮০ জন, পশ্চিমবঙ্গে ৭৪৭ জন, দিল্লিতে ৭২৮ জন কর্ণাটকে ৪২৩ জন এবং মহারাষ্ট্রে ৬০৭ জন।
সতর্কতার অংশ হিসেবে ইনফ্লুয়েঞ্জার মতো রোগ এবং শ্বাসপ্রশ্বাসজনিত সমস্যায় আক্রান্ত ব্যক্তিদের নজরদারিতে রাখা হয়েছে বলে জানিয়েছে ভারতের স্বাস্থ্য অধিদপ্তর।
ভোলা সদর উপজেলার ইলিশা ও সামান্দা ইউনিয়নে বাংলাদেশ কোষ্টগার্ড ভোলা বেইস ও পুলিশের সমন্বয়ে পৃথক দুটি অভিযান পরিচালনা করা হয়। অভিযান চলাকালে ২৭৪ পিছ ইয়াবা ও ১৫ গ্রাম গাঁজা সহ এক মাদককারবারী কে গ্রেফতার করা হয়েছে।
সোমবার মধ্যরাত ৩টায় গোপন সংবাদের ভিত্তিতে ভোলা সদর উপজেলার সামান্দা ইউনিয়নে সামান্দা গ্রাম থেকে ১ লক্ষ ৪১ হাজার ৫ শত টাকা মূল্যের ২৭৪ পিস ইয়াবা ও ১৫ গ্রাম গাঁজা এবং নগদ ১২ হাজার ৮ শত ৪৫ টাকা সহ মাদক ব্যাবসায়ী আব্বাস (৩৮) কে গ্রেফতার করা হয়।
পরবর্তী আইনানুগ ব্যাবস্থা গ্রহনের জন্য আসামীকে জব্দকৃত সকল আলামত সহ ভোলা সদর থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।
বাংলাদেশ কোষ্টগার্ড দক্ষিণ জোন এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানায়, মাদকের বিরুদ্ধে সরকারের জিরো টলারেন্স নীতি বাস্তবায়নে কাজ করে যাচ্ছে বাংলাদেশ কোষ্ট গার্ড। উপকূলীয় এবং নদী তীরবর্তী অঞ্চলের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি এবং চোরাচালান রোধে অনেকাংশে উন্নত হয়েছে। সীমান্তে চোরাচালান রোধে কোষ্টগার্ড কতৃক ভবিষ্যতেও এ ধরনের অভিযান অব্যাহত থাকবে।
কুষ্টিয়ার দৌলতপুর উপজেলার তারাগুনিয়া এলাকার একটি বেসরকারি ক্লিনিকে সিজারিয়ান ডেলিভারির সময় আখি খাতুন (২২) নামের এক প্রসূতির মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে। অভিযোগ রয়েছে, ক্লিনিক কর্তৃপক্ষ স্থানীয় এক রাজনৈতিক নেতার মাধ্যমে টাকার বিনিময়ে ঘটনাটি ধামাচাপা দেয়ার চেষ্টা করে এবং দ্রুত লাশ দাফনের পরামর্শ দেন।
নিহত আখি খাতুন উপজেলার ফিলিপনগর ইউনিয়নের পূর্ব কবিরাজ পাড়া গ্রামের ইমনের স্ত্রী।
পরিবার সূত্রে জানা গেছে, রোববার (৮ জুন) বেলা সাড়ে ১২টার দিকে আখিকে প্রথমে থানার মোড় এলাকার ‘আলসেফা ডায়াগনস্টিক সেন্টার ও হাসপাতাল’-এ নেওয়া হয়। সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসকরা রোগীর জটিল অবস্থা বুঝে উন্নত পরীক্ষার পরামর্শ দেন। তবে রোগীর স্বজনদের অভিযোগ, আলসেফা হাসপাতালের পরামর্শ উপেক্ষা করে তারাগুনিয়া ক্লিনিকের দালালদের প্ররোচনায় তাকে সেখানে নেওয়া হয়।
নিহতের মা ও খালা জানান, তারাগুনিয়ার আবুলের ক্লিনিকে (তারাগুনিয়া ক্লিনিক) নেওয়ার পর কয়েকজন চিকিৎসক আখিকে সিজারিয়ান অপারেশনের জন্য নিয়ে যান। সিজার শেষ করে বেডে আনার পর থেকেই রোগীর অবস্থা অস্বাভাবিক ছিল। চিকিৎসকরা একপর্যায়ে তার পেটে চাপাচাপি করে, পরে অবস্থার অবনতি দেখে কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে রেফার করেন, কিন্তু সেখানকার চিকিৎসকরা আখিকে মৃত ঘোষণা করেন। মৃতের পরিবার আরও বলেন, ক্লিনিকেই আঁখি মারা গিয়েছে কিন্তু ক্লিনিক মালিক দায়ভার এড়াতে কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে রেফার্ড এর নাটক করে।
পরে মৃতদেহ আবার ক্লিনিকে ফেরত আনা হয় এবং মৃতের পরিবার ও এলাকাবাসী ক্লিনিকের সামনে হট্টগোল করে ও ক্লিনিক ভাঙচুরের চেষ্টা করলে ঘটনাটি ধামাচাপা দিতে স্থানীয় এক প্রভাবশালী নেতার বাড়িতে ডেকে নিয়ে টাকার বিনিময়ে মীমাংসা করেন এবং রাত ৮ টার সময় দাফন সম্পন্ন করা হয়।
ঘটনার বিষয়ে ওই দিন ব্যবহৃত অ্যাম্বুলেন্স চালক ফারুক হোসেন বলেন, "আমাকে ক্লিনিক থেকে রোগী গাড়িতে তুলে দেওয়া হয়। কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে নেওয়ার পর চিকিৎসকরা জানান, রোগী মারা গেছে। এরপর তারা জোরাজুরি করে ইসিজি করেন ও সদর হাসপাতাল থেকেই ডেট সার্টিফিকেট নিয়ে আবার ক্লিনিকে ফিরিয়ে আনা হয়।"
সিজারিয়ান অপারেশনে অংশ নেওয়া চিকিৎসকের সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।
এদিকে, ক্লিনিক মালিকের ছেলে এবং মাছরাঙা টেলিভিশনের কুষ্টিয়া প্রতিনিধি তাশরিক সঞ্চয় ঘটনার বিষয়ে সংবাদ প্রকাশ না করতে সাংবাদিকদের ফোন করে নিরুৎসাহিত করেন। তিনি স্বীকার করেন, “রোগীর মৃত্যুর ঘটনা আমাদের ক্লিনিকে ঘটেছে।”
অন্যদিকে, আলসেফা ডায়াগনস্টিক সেন্টার ও হাসপাতাল’ থেকে রোগী কেন ফিরিয়ে দেওয়া হয়েছে এবিষয় ওই প্রতিষ্ঠানের ব্যাবস্থাপক সুজন হোসেন জানান, “রোগীর শারীরিক সমস্যা বুঝতে পেরে আমরা উন্নত পরীক্ষা-নিরীক্ষার পরামর্শ দিই। তবে রোগীর স্বজনরা আমাদের পরামর্শ না নিয়ে অন্য ক্লিনিকে চলে যান।”
এ বিষয়ে দৌলতপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. আব্দুল হাই সিদ্দিকী বলেন, নিয়ম অনুযায়ী সিজারের ৬ ঘন্টা পূর্ব পর্যন্ত খাবার খাওয়া নিষেধ থাকলেও রোগী খাবার খেয়ে সেটা ডক্টরের কাছে গোপন রাখে যার ফলে সিজার পরবর্তী সমস্যা হয় ও রোগী মারা যায়।
অনভিজ্ঞতার কারণে অনেকে চামড়ায় দেরিতে লবণ দিয়েছেন। এতে করে চামড়া নষ্ট হওয়ায় এবং মান কমে যাওয়ায় অনেকে কাঙ্ক্ষিত দাম পাননি বলে মন্তব্য করেছেন শিল্প উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খান।
আজ সোমবার সাভার চামড়া শিল্পনগরী পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে এক মতবিনিময় সভায় চামড়ার দর কমে যাওয়া নিয়ে আড়তদার ও মৌসুমি ব্যবসায়ীদের পাল্টাপাল্টি অভিযোগের প্রেক্ষিতে তিনি এসব কথা বলেন।
আদিলুর জানান, এ পর্যন্ত ৩ লাখ ৭৮ হাজার পিস চামড়া এসেছে শিল্পনগরীতে। ঢাকায় আছে সাড়ে ৭ লাখ পিস।
চলতি বছর ৩০ হাজার টন লবণ বিতরণ করা হয়েছে উল্লেখ করে উপদেষ্টা বলেন, ‘কোনোভাবেই যাতে চামড়া না পঁচে বা দাম পড়ে না যায় তাই সরকারের পক্ষ থেকে পর্যাপ্ত লবণ সরবরাহ করা হয়েছে। কিন্তু তারপরও অনভিজ্ঞতার কারণে কিছু চামড়া নষ্ট হয়েছে, যদিও এর পরিমাণ কম। যাদের চামড়া নষ্ট হয়েছে এবং মান কমে গেছে তারা দাম কম পেয়েছেন।’
তিনি দাবি করেন, ‘চামড়ায় লবণ দেওয়ার একটি নির্দিষ্ট সময় আছে। অনেকেই দেরিতে লবণ দিয়েছেন, যার প্রভাব চামড়ার মানে পড়েছে। ফলে দামও কমেছে অনেক ক্ষেত্রে। তবে সরকারের তৎপরতার কারণে এ বছর খুব অল্পসংখ্যক চামড়াই নষ্ট হয়েছে।’
এ ছাড়া, গবাদি পশুর ল্যাম্পি স্কিন রোগের কারণে চলতি বছর ৩০ শতাংশ চামড়া নষ্ট হওয়ার আশঙ্কা আছে বলেও উল্লেখ করা হয় সংবাদ সম্মেলনে।
শেরপুরের ঝিনাইগাতীর দুটি গুচ্ছগ্রাম - গোমড়া ও কান্দুলীর বাসিন্দারা দীর্ঘদিন ধরে কুরবানীর মাংস থেকে বঞ্চিত ছিল। গোমড়া গুচ্ছগ্রামের বাসিন্দারা এক যুগ এবং কান্দুলী গুচ্ছগ্রামের বাসিন্দারা গত ৬ বছর ধরে কুরবানীর মাংস পায়নি। তবে এবার ‘দৈনিক বাংলাদেশের খবর’ পত্রিকায় বিষয়টি প্রকাশিত হওয়ার পর স্থানীয় সংগঠন ও দাতাদের উদ্যোগে এই দুটি গ্রামের মানুষ কোরবানির মাংস পেয়েছে।
গোমড়া গুচ্ছগ্রামের স্বামী পরিত্যাক্তা আঙ্গুরী বেগম (৭০) বলেন, ‘১২ বছর ধরে আমরা কোরবানির মাংসের স্বাদ পাইনি। এবার রক্তসৈনিক ফাউন্ডেশন আমাদের জন্য গরু দিয়েছে। আল্লাহ তাদের ভালো রাখুন।’
গুচ্ছগ্রামের সাধারণ সম্পাদক আলী বলেন, ‘আমাদের এলাকার অনেক গরিব মানুষ আছে যারা কোরবানি দিতে পারে না। এই উদ্যোগ আমাদের জন্য আশীর্বাদ স্বরূপ। আমরা সংগঠনটির কাছে কৃতজ্ঞ।’
ঝিনাইগাতী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আশরাফুল আলম রাসেল বলেন, ‘গুচ্ছগ্রামের দুঃস্থ মানুষেরা দীর্ঘদিন ধরে কোরবানির মাংস থেকে বঞ্চিত ছিল। স্থানীয় সংগঠন ও দাতাদের এই উদ্যোগ প্রশংসনীয়। আমরা সামাজিক সংগঠনগুলোর সঙ্গে কাজ করে সবাইকে কোরবানির মাংসের আওতায় আনার চেষ্টা করব। আমাদের বিভাগীয় কমিশনার স্যারও গোসত পাঠাচ্ছেন। যদি কোনো অসহায় মানুষ কোরবানির মাংস না পেয়ে থাকে, আমরা নিশ্চিত করব যেন তারা গোসত পায়।’
পত্রিকায় খবর প্রকাশের পর রক্তসৈনিক বাংলাদেশ ফাউন্ডেশন সংগঠনটি বিষয়টি নজরে নিয়ে তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নেয়। সংগঠনের সভাপতি রাজিয়া সামাদ ডালিয়া গোমড়া গুচ্ছগ্রামের বাসিন্দাদের জন্য একটি গরু কোরবানির ব্যবস্থা করেন।
অন্যদিকে কান্দুলী গুচ্ছগ্রামে শাহ অলি উল্লাহ ইসলাম সেন্টার বাংলাদেশের তত্ত্বাবধানে এবং অরফান শেল্টার ফাউন্ডেশন, যুক্তরাজ্যের আর্থিক সহায়তায় একটি গরু কোরবানি দেওয়া হয়। স্থানীয়রা জানান, গত ৬ বছর ধরে এই গ্রামে কুরবানীর মাংস বণ্টন হয়নি। এবার দাতাদের সহযোগিতায় গ্রামবাসী মাংস পেয়ে খুশি।
এই উদ্যোগের মাধ্যমে ঝিনাইগাতীর দুটি গুচ্ছগ্রামের বাসিন্দারা দীর্ঘদিন পর কুরবানীর মাংস পেয়ে আনন্দিত। স্থানীয়রা আশা প্রকাশ করেছেন, ভবিষ্যতে আর কেউ যেন কুরবানীর মাংস থেকে বঞ্চিত না হয়।
থাইল্যান্ডে চিকিৎসা শেষে দেশে ফিরেছেন আওয়ামী লীগ সরকারের সাবেক রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ।
রবিবার (৮ জুন) দিবাগত রাত ১টা ২৫ মিনিটে থাই এয়ারলাইন্সের একটি ফ্লাইটে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করেন। রাত তিনটার দিকে তিনি বিমানবন্দর ছাড়েন বলে বিমানবন্দরের একটি নির্ভরযোগ্য সূত্র ইউএনবিকে নিশ্চিত করেছেন।
এর আগে, ৮ মে গভীর রাতে থাই এয়ারওয়েজের একটি ফ্লাইটে চিকিৎসার জন্য ব্যাংককের উদ্দেশে ঢাকা ছাড়েন সাবেক এই রাষ্ট্রপতি ।
আবদুল হামিদের বিরুদ্ধে গত ১৪ জানুয়ারি কিশোরগঞ্জ সদর থানায় একটি মামলাটি দায়ের হয়। মামলাটিতে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, শেখ রেহানা, সজীব ওয়াজেদ জয়, সায়মা ওয়াজেদ পুতুল, ওবায়দুল কাদেরের নামও রয়েছে।
আবদুল হামিদের দেশত্যাগের ঘটনায় পুলিশের অতিরিক্ত মহাপরিদর্শককে (প্রশাসন) প্রধান করে তিন সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়।
এছাড়া এই ঘটনায় ইমিগ্রেশন পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (এসপি) তাহসিনা আরিফকে প্রত্যাহার করা হয়েছে। একইসঙ্গে মো. আবদুল হামিদের বিরুদ্ধে কিশোরগঞ্জের সদর থানায় দায়ের করা মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই মো. আজহারুল ইসলাম ও এসবির এটিএসআই মো. সোলায়মাকেও সাময়িক বরখাস্ত করা হয়।
মন্তব্য