বগুড়ার শেরপুর উপজেলায় প্রধানমন্ত্রীর উপহার আশ্রয়ণ প্রকল্পের দুর্যোগ-সহনীয় ঘর বসবাস শুরুর আগেই ধসে পড়ার উপক্রম হয়েছে। একই সঙ্গে নন্দীগ্রাম উপজেলার কিছু ঘরে দেখা দিয়েছে ফাটল।
বর্ষা মৌসুমে টানা দুই দিনের বৃষ্টিতে ভূমিহীনদের দেয়া এসব বাড়ির এক পাশের মাটি খালে ধসে গেছে। যদিও প্রশাসনের পক্ষ থেকে দাবি করা হচ্ছে, ঘরে বড় কোনো সমস্যা হয়নি। মেরামত করলেই বসবাসের উপযোগী হবে।
বাড়ি পাওয়া ব্যক্তিদের অভিযোগ, প্রতিটি ঘরের সঙ্গে টয়লেট দেয়ার কথা থাকলেও ২২ ঘর মিলে দেয়া হয়েছে তিনটি। আর ঘরগুলো ভেঙে পড়ার ভয়ে তারা সেখানে বসবাস করছেন না।
শেরপুর উপজেলায় তড়িঘড়ি করে খালের কিনারায় আশ্রয়ণ প্রকল্পের ২২টি ঘর নির্মাণ করা হয়। খালের মাটি কেটে বাড়ির চারপাশে দেয়া হয়। এ কারণে সামান্য বৃষ্টিতেই মাটি খালে ধসে যাওয়ায় ঘরগুলোর এই হাল হয়েছে।
উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রীর অগ্রাধিকার প্রকল্প আশ্রয়ণ-২-এর আওতায় অতিদরিদ্র ভূমিহীনদের জন্য সরকারিভাবে আধা পাকা বাড়ি নির্মাণের উদ্যোগ নেয়া হয়। সে মোতাবেক শেরপুর উপজেলায় ২ কোটি ৮৫ লাখ ২৫ হাজার টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়।
পরে দুই শতক করে খাসজমি বন্দোবস্ত দিয়ে উপজেলার আটটি ইউনিয়নে অতিদরিদ্র ১৬৩টি ভূমিহীন পরিবারকে একটি করে আধা পাকা বাড়ি নির্মাণ করে দেয়া হয়। দুই কক্ষ, রান্নাঘর, টয়লেটসহ প্রধানমন্ত্রীর উপহারের প্রতিটি বাড়ি নির্মাণে ব্যয় হয়েছে ১ লাখ ৭৫ হাজার টাকা।
এর ধারাবাহিকতায় উপজেলার খানপুর ইউনিয়নের খানপুর কয়েরখালি বুড়িগাড়ি এলাকায় খালের কিনারায় ৩৮ লাখ ৫০ হাজার টাকা ব্যয়ে ঘরগুলো নির্মাণ করা হয়। পরে সুফলভোগীদের হাতে এসব বাড়ির জমির দলিল ও বাড়ি হস্তান্তর করা হয়। কিন্তু এসব নতুন বাড়িতে ওঠার আগেই ঘটছে নানা বিপত্তি। বর্ষা মৌসুমের টানা দুই দিনের বৃষ্টিতেই দুর্যোগ-সহনীয় সাতটি ঘর ভেঙে পড়েছে।
সরেজমিনে দেখা গেছে, এই প্রকল্পের সুবিধাভোগী হায়দার আলী, আব্দুল কাদের, ছালমা বেগম, শেফালী বেগম, নদীয়ার চাঁদ, মোকছেদ আলী, সোনা উদ্দিন ও গোলাপী বেগমের বাড়ির পেছনে টয়লেট ও মাটি খালে ধসে পড়েছে। ভেঙে পড়েছে দেয়ালও। খালটিতে বাঁশের পাইলিং করে প্রকল্পের বাড়িগুলো রক্ষার চেষ্টা চালানো হয়েছিল। তবে শেষরক্ষা হয়নি।
ছাবেদ আলী বলেন, ‘আমরা জীবনের ভয়ে সরকারের দেয়া বাড়িতে উঠতে পারিনি। যেকোনো সময় আশ্রয়ণ প্রকল্পের বাকি ঘরগুলোও ভেঙে পড়তে পারে।’
শুধু বর্ষার বৃষ্টিতে ঘর ভেঙে পড়া নয়, দেয়া হয়নি এখনও বিদ্যুৎ-সংযোগ। বিশুদ্ধ খাওয়ার পানির সংকটও রয়েছে। পুরো আশ্রয়ণ প্রকল্পের ২২টি পরিবারের জন্য মাত্র একটি হস্তচালিত নলকূপ চালু রয়েছে। প্রকল্পের বাকি ১৫টি ঘর ঠিক থাকলেও এসব ঘরে কেউই থাকছেন না ধসে পড়ার আশঙ্কায়।
আরেক সুবিধাভোগী ছালমা বেগম বলেন, ‘বসবাস শুরুর আগেই বাড়ির একটি ঘর ছাড়া সবই ভেঙে পড়েছে। বাকি ঘরটির দেয়ালে ফাটল ধরেছে। মেঝের প্লাস্টার উঠে যাচ্ছে। এটিও যেকোনো সময় ভেঙে পড়তে পারে।’
খানপুর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান শফিকুল ইসলাম বলেন, ‘ঘরগুলো রক্ষায় খালের ধারে বাঁশের পাইলিং দেয়া হয়েছে। ভেঙে পড়া কয়েকটি টয়লেট ও রান্নাঘর পুনর্নির্মাণ করা হচ্ছে।’
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. ময়নুল ইসলাম নিউজবাংলাকে বলেন, ‘ঘর তো ভেঙে যায়নি। এ কারণে নতুন করে নির্মাণ করা লাগবে না। ঘরের কাছ থেকে মাটি সরে গিয়েছিল। সেগুলো পূরণ করা হচ্ছে। আর ঘরে যে আপাতত সমস্যা হয়েছে, সেগুলো সংস্কার করা হলে বসবাসের উপযোগী হবে।’
নন্দীগ্রাম উপজেলায় প্রধানমন্ত্রীর উপহারের কয়েকটি ঘরেও দেয়ালে, মেঝে ও পিলারে ফাটল দেখা দিয়েছে। ফলে আশ্রয় নেয়া সুবিধাভোগী নিম্নবিত্ত মানুষগুলো আছেন আতঙ্কে। সুবিধাভোগীদের অভিযোগ, নিম্নমানের সামগ্রী দিয়ে ঘর নির্মাণ করায় এমন হয়েছে।
আশ্রয়ণ প্রকল্প-২-এর অধীনে নন্দীগ্রাম উপজেলায় ১৫৬টি ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবার ঘর পায়। প্রতিটি ঘর নির্মাণে বরাদ্দ দেয়া হয় ১ লাখ ৭১ হাজার টাকা। উপজেলার গোছন ও গোপালপুর পুকুরপাড়ের কয়েকটি ঘরে দেয়াল, মেঝে ও বারান্দার পিলারে ফাটল দেখা দিয়েছে।
নন্দীগ্রাম উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) শিফা নুসরাত বলেন, ‘আমাদের এখানে দুয়েকটা ঘরে হালকা ফাটল দেখা দিয়েছে। সেগুলো আমরা মেরামত করে দিচ্ছি। এটা মেজর কোনো সমস্যা হয়।’
আরও পড়ুন:
ত্রয়োদশ সংসদ নির্বাচন সুষ্ঠু ও অংশগ্রহণমূলকভাবে আয়োজনের লক্ষ্যে মঙ্গলবার (৭ অক্টোবর) নির্বাচন বিশেষজ্ঞ ও নারী নেত্রীদের সঙ্গে সংলাপে বসছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। দিনব্যাপী এ সংলাপ দুই ধাপে অনুষ্ঠিত হবে।
ইসির জনসংযোগ শাখার সহকারী পরিচালক মো. আশাদুল হক জানান, সকাল সাড়ে ১০টা থেকে বেলা সাড়ে ১২টা পর্যন্ত নির্বাচন বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে এবং দুপুর আড়াইটা থেকে বিকেল সাড়ে ৪টা পর্যন্ত নারী নেত্রীদের সঙ্গে সংলাপে বসবে কমিশন।
ইসির সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিতব্য সংলাপগুলোতে সভাপতিত্ব করবেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দীন। এতে চার নির্বাচন কমিশনার এবং ইসির ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত থাকবেন।
সকালের অধিবেশনে নির্বাচন বিশেষজ্ঞদের মধ্যে সাবেক প্রধান নির্বাচন কমিশনার মোহাম্মদ আবু হেনা, সাবেক নির্বাচন কমিশনার ও অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের নৌপরিবহন উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) এম সাখাওয়াত হোসেনসহ সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা অংশ নেবেন।
বিকেলের অধিবেশনে নারী নেত্রীদের সঙ্গে সংলাপে বসবে নির্বাচন পরিচালনার দায়িত্বে থাকা সংস্থাটি। দুটি অধিবেশনে মিলিয়ে মোট ৪০ জন অংশগ্রহণকারী তাদের মতামত ও পরামর্শ দেবেন বলে জানা গেছে।
জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে ২৮ সেপ্টেম্বর থেকে বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষের সঙ্গে ধারাবাহিক সংলাপ করছে নির্বাচন কমিশন। ওইদিন সুশীল সমাজ, বুদ্ধিজীবী ও শিক্ষাবিদদের সঙ্গে সংলাপ হয়। গত ৬ অক্টোবর গণমাধ্যমের প্রতিনিধিদের সঙ্গে সভা করেছে ইসি।
আগামী দিনে মুক্তিযোদ্ধা, রাজনৈতিক দলসহ অন্যান্য অংশীজনদের সঙ্গেও বসবে কমিশন। প্রধান নির্বাচন কমিশনার জানিয়েছেন, সংলাপ থেকে পাওয়া গঠনমূলক পরামর্শগুলো বাস্তবায়নের চেষ্টা করা হবে।
রমজানের আগে ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন আয়োজনের পরিকল্পনা করছে নির্বাচন কমিশন। এ লক্ষ্যে ডিসেম্বরের প্রথমার্ধে তফসিল ঘোষণা করার কথা রয়েছে।
আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে (আইসিটি) কারো বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ দাখিল হলে তিনি সংসদ সদস্য হওয়ার বা থাকার যোগ্য হবেন না বলে প্রজ্ঞাপন জারি করেছে আইন মন্ত্রণালয়।
সোমবার (৬ অক্টোবর) আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের লেজিসলেটিভ ও সংসদ বিষয়ক বিভাগের মুদ্রণ ও প্রকাশনা শাখা এ সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন জারি করেছে।
প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ দাখিলের পর অভিযুক্ত ব্যক্তি নিম্ন লিখিত অবস্থানগুলোতে থাকার জন্য অযোগ্য বিবেচিত হবেন। তিনি জাতীয় সংসদের সদস্য হিসেবে নির্বাচিত হওয়া বা থাকার যোগ্য হবেন না। স্থানীয় সরকার সংস্থাগুলোর সদস্য, কমিশনার, চেয়ারম্যান, মেয়র বা প্রশাসক হিসেবে নির্বাচিত বা নিয়োগপ্রাপ্ত হতে বা থাকতে পারবেন না। প্রজাতন্ত্রের কোনো চাকরিতে নিয়োগপ্রাপ্ত হতে পারবেন না। এছাড়া অন্য কোনো সরকারি পদে অধিষ্ঠিত হতে পারবেন না।
এতে আরও বলা হয়েছে, উপধারা (১) এ যা কিছুই থাকুক না কেন, ট্রাইব্যুনাল কর্তৃক কোনো ব্যক্তি অব্যাহতি বা খালাসপ্রাপ্ত হলে, উক্ত ব্যক্তির ক্ষেত্রে এই ধারা প্রযোজ্য হবে না।
ভবিষ্যত বিএনপি সম্পর্কে তারেক রহমান বলেছেন, আমরা দুটো বিষয় নিয়ে খুব গর্ব ও অহংকার করি। একটি হলো বাংলাদেশের গার্মেন্টস শিল্পে, অপরটি হলো প্রবাসীদের পাঠানো রেমিটেন্স। এ দুটিই বিএনপি শুরু করেছিলো। গার্মেন্টস শিল্পের প্রসার বিএনপির আমল থেকেই শুরু হয়েছিলো। ১৯৭৪ সালে খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ করেছিলেন শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান।
মঙ্গলবার সকাল ৯টায় বিবিসি বাংলার সাক্ষাৎকারের দ্বিতীয় পর্বে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, রাজনৈতিক দৃষ্টিকোন থেকে যদি আমার দেখি। যখন সব দল নিষিদ্ধ করে বাকশাল গঠন করা হয়েছিলো। পরবর্তীতে বিএনপি ক্ষমতায় এসে বহুদলীয় গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করেছিলো। বিএনপি অতীত থেকে শিক্ষা নিয়ে ভবিষ্যত কর্মপরিকল্পনা নিয়ে এগিয়ে যাবে। বিএনপির প্রধান লক্ষ্য হবে গণতন্ত্রের শক্তিশালী বুনিয়াত তৈরি করা।
অন্তর্বর্তী সরকারের নিরপেক্ষতা নিয়ে অনেক আগে তারেক রহমান প্রশ্ন তুলেছিলেন, কেন তিনি নিরপেক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন, সে প্রসঙ্গে তারেক রহমান বলেন, আমি যখন একথাটা বলেছিলাম তখন তারা নির্বাচনের ব্যাপারে সুনির্দিষ্ট কোন রোডম্যাপ ঘোষণা করেনি, স্বাভাবিক ভাবেই সবার মনেই এই প্রশ্না জেগেছিল। তবে ড. ইউনূস যখন মোটামোটিভাবে নির্বাচনের রোডম্যাপ ঘোষণা করলেন তখন সন্দেহ অনেটাই কেটে গেল।
সিলেটের সঙ্গে সারা দেশের রেল যোগাযোগ স্বাভাবিক হয়েছে। মঙ্গলবার (৭ অক্টোবর) সকাল সাড়ে ৯টার পর সিলেট থেকে ছেড়ে আসা কালনী এক্সপ্রেস ঢাকা অভিমুখে রওনা হয়েছে।
এর আগে সকাল ৬টা ৪০ মিনিটের দিকে মোগলাবাজারে ‘উদয়ন এক্সপ্রেস’ ট্রেনের ইঞ্জিনসহ ৪ বগি লাইনচ্যুত হওয়ার পর সারা দেশের সঙ্গে রেল যোগাযোগ বন্ধ হয়ে যায়। পরে উদ্ধারকারী কর্মীরা চেষ্টা চালিয়ে ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক করে।
মোগলাবাজার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শামসুল হাবিব বলেন, আজ সকাল ৬টা ৪০ মিনিটের দিকে মোগলাবাজার মেঘনা পেট্রোলিয়াম লিমিটেড তেলের ডিপোর পশ্চিম পাশে চট্টগ্রাম থেকে সিলেটের উদ্দেশ্যে ছেড়ে আসা উদয়ন এক্সপ্রেস ট্রেন ইঞ্জিনসহ ৪ বগি লাইনচ্যুত হয়। খবর পেয়ে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ ও রেলওয়ে পুলিশসহ মোগলাবাজার থানা পুলিশের সমন্বয়ে ঘটনাস্থলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে কাজ করছে। তবে ট্রেন যোগাযোগ বর্তমানে স্বাভাবিক রয়েছে। সিলেট থেকে কালনী এক্সপ্রেস ঢাকার উদ্দেশ্যে ছেড়ে গেছে।
জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে বাংলাদেশ পুলিশে সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই-নিরস্ত্র) পদে বড় পরিসরে নিয়োগে সম্মতি দিয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে চিঠি দেওয়া হয়েছে।
সম্প্রতি অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থ বিভাগের ব্যয় ব্যবস্থাপনা অনুবিভাগের উপসচিব কাজী লুতফুল হাসান স্বাক্ষরিত এ সংক্রান্ত চিঠি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগে পাঠানো হয়েছে।
চিঠিতে বলা হয়, বাংলাদেশ পুলিশের সক্ষমতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে সাংগঠনিক কাঠামোভুক্ত বিভিন্ন ইউনিটের বিপরীতে ৪ হাজার এএসআই (নিরস্ত্র) (গ্রেড-১৪) পদে রাজস্ব খাতে অস্থায়ীভাবে সৃজনে বর্ণিত শর্তে নির্দেশক্রমে অর্থ বিভাগের সম্মতি জ্ঞাপন করা হলো।
তবে, চিঠিতে বেশকিছু শর্ত দেওয়া হয়। শর্তগুলো হলো— অর্থ বিভাগের বাস্তবায়ন অনুবিভাগ হতে যাচাইকৃত বেতনস্কেল অনুসরণ করতে হবে; প্রশাসনিক উন্নয়ন সংক্রান্ত সচিব কমিটির সুপারিশ গ্রহণ করতে হবে; এএসআই (নিরস্ত্র) (গ্রেড-১৪) ৪ হাজার পদ সৃজনের প্রস্তাব প্রশাসনিক উন্নয়ন সংক্রান্ত সচিব কমিটিতে প্রেরণের পূর্বে ৪ হাজার কনস্টেবল পদ বিলুপ্তিকরণে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সম্মতিসহ যাবতীয় আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন করতে হবে, পদসমূহ সৃজনে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টার অনুমোদন গ্রহণ করতে হবে।
সরকারের নীতিগত সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, প্রথমবারের মতো মোট ৪ হাজার এএসআই পদে নিয়োগ দেওয়া হবে। এর মধ্যে ২ হাজার পদে সরাসরি নিয়োগ এবং বাকি ২ হাজার পদে কনস্টেবলদের পদোন্নতির মাধ্যমে নিয়োগ দেওয়া হবে।
দেশের এডিস মশাবাহিত ডেঙ্গুতে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা ৫০ হাজার ছাড়িয়েছে। সর্বশেষ ২৪ ঘণ্টায় গত রোববার সকাল আটটা থেকে গতকাল সোমবার সকাল আটটা পর্যন্ত তিন জনের মৃত্যুর তথ্য জানিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। এ নিয়ে চলতি বছর দেশে ডেঙ্গুতে মৃত্যুর সংখ্যা হলো ২১৫। সর্বশেষ ২৪ ঘণ্টায় ৭৮২ জন নতুন রোগী ডেঙ্গু নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। এ নিয়ে চলতি বছর ডেঙ্গুতে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা হলো ৫০ হাজার ৬৮৯ জন। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের দেওয়া বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
এদিকে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুর সংখ্যা বাড়ছেই। গেল সেপ্টেম্বরে দেশে ডেঙ্গুতে সর্বোচ্চ মৃত্যু ও সংক্রমণ হয়েছিল। পরিস্থিতি দেখে একাধিক জনস্বাস্থ্যবিদ ও বিশেষজ্ঞ ওই মাসে বলেছিলেন, অক্টোবর বা নভেম্বরে পরিস্থিতি নাজুক হয়ে উঠতে পারে। এ মাসের শুরুতেই ডেঙ্গুর প্রকোপ বাড়তে শুরু করেছে। গত রোববার দেশে একদিনে ডেঙ্গুতে নয়জনের মৃত্যু হয়। এর আগে গত ২১ সেপ্টেম্বরও ২৪ ঘণ্টায় নয়জন মারা গিয়েছিলেন।
সোমবার স্বাস্থ্য অধিদপ্তর ডেঙ্গুতে যে ৩ জনের মৃত্যুর খবর দিয়েছে, তার মধ্যে দুজনেরই মৃত্যু হয়েছে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের এলাকার ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ও মুগদা হাসপাতালে। বাকি একজনের মৃত্যু হয়েছে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন ভর্তি হওয়া ডেঙ্গু রোগীদের মধ্যে ৪৯৫ জন পুরুষ এবং ২৮৭ জন নারী।
সর্বশেষ ২৪ ঘণ্টায় সর্বোচ্চ ২১২ জন ডেঙ্গু নিয়ে ঢাকার দুই সিটির হাসপাতালগুলোয় ভর্তি হয়েছেন। ঢাকার দুই সিটির বাইরে বিভাগভিত্তিক তথ্য অনুযায়ী, সর্বোচ্চ সংক্রমণ হয়েছে বরিশাল বিভাগে। এ বিভাগে ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গু নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি রোগীর সংখ্যা ১৭৪। এর মধ্যে বরগুনার হাসপাতালগুলোয় ভর্তি হয়েছেন ৫৩ জন।
এদিকে থেমে থেমে রোদ ও বৃষ্টির এমন আবহাওয়া এডিস মশার বংশ বিস্তারে উপযুক্ত বলে বিশেষজ্ঞরা অভিমত দেন। পাশাপাশি পূজার ছুটিতে বাসাবাড়ি, অফিসে বংশবিস্তারের উপযুক্ত পরিবেশ তৈরি হয়েছে। ফলে চলতি অক্টোবর মাসে ডেঙ্গু পরিস্থিতি ভয়াবহ হওয়ার আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন বিশেষজ্ঞরা। সেই আশঙ্কায় দেখা যাচ্ছে অক্টোবরের শুরু থেকেই ডেঙ্গুতে আক্রান্ত ও মৃত্যুর দুটোর সংখ্যাই বাড়ছে।
দেশে ২০০০ সালে যখন নতুন করে ডেঙ্গুর প্রাদুর্ভাব হয়, তখন তা ছিল মূলত রাজধানীকেন্দ্রিক রোগ। কিন্তু দিন দিন এটা ছড়িয়ে গেছে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে। গত বছর থেকেই ডেঙ্গু ঢাকার বাইরে ছড়িয়েছে ব্যাপক হারে। চলতি বছর এখন পর্যন্ত ঢাকার বাইরে আক্রান্ত হয়েছেন ৩৭ হাজার ৪৯ জন। আর ঢাকায় আক্রান্তের সংখ্যা ১৩ হাজার ৬৪০।
বাংলাদেশে গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত যে কোনো সরকারের সঙ্গে ভারত কাজ করতে প্রস্তুত বলে জানিয়েছেন প্রতিবেশী দেশটির পররাষ্ট্র সচিব বিক্রম মিশ্রি। তিনি উল্লেখ করেন, তারা যত তাড়াতাড়ি সম্ভব বাংলাদেশে একটি অবাধ, সুষ্ঠু, অন্তর্ভুক্তিমূলক এবং অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন দেখতে চান।
গতকাল সোমবার নয়াদিল্লির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে বাংলাদেশ কূটনৈতিক সংবাদদাতা সমিতির (ডিক্যাব) প্রতিনিধিদলের সঙ্গে মতবিনিময়কালে তিনি এ মন্তব্য করেন। প্রায় এক ঘণ্টাব্যাপী আলাপচারিতার সময় ভারতের পররাষ্ট্র সচিব দ্বিপক্ষীয় বিষয়, সীমান্ত সমস্যা, পানি বণ্টন সমস্যা এবং ভারতে অবস্থানরত সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সংশ্লিষ্ট বিষয়বস্তু সম্পর্কে প্রশ্নের উত্তর দেন।
ভারতের পররাষ্ট্র সচিব স্বীকার করেন, কিছু সমস্যা আছে, যা যে কোনো সম্পর্কের ক্ষেত্রেই স্বাভাবিক। তিনি বলেন, বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ রাজনৈতিক প্রক্রিয়ার পরবর্তী পদক্ষেপগুলো কেবল এই অঞ্চলেই নয়, বিশ্বব্যাপীও একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়, যা নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে।
মিশ্রি উল্লেখ করেন, ‘আমরা সকলেই বাংলাদেশের পরবর্তী নির্বাচন সম্পর্কিত ঘোষণা এবং বিবৃতি দেখেছি। আমি বুঝতে পারছি যে, এই বিষয়ে ফেব্রুয়ারির কাছাকাছি একটি সময়সীমা নির্দেশ করা হয়েছে।’
তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশি কর্তৃপক্ষ নিজেরাই নির্বাচনের সময়সূচি সম্পর্কে কথা বলেছে এবং ভারত তাদের সফল আয়োজনের জন্য অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছে - এই বিষয়টি ভারতকে উৎসাহিত করেছে।
মিশ্রি বলেন, ‘এটি একটি জনমতের মাধ্যমে নির্বাচিত সরকার হবে এবং বাংলাদেশের জনগণ যে সরকারকেই তাদের প্রতিনিধিত্ব করতে বেছে নেবে, আমরা তার সঙ্গেই কাজ করব।’
এদিকে ভারতে অবস্থানরত ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিষয়টি একটি ‘বিচারিক আইনি প্রক্রিয়া’ এবং এর জন্য দুই দেশের সরকারের মধ্যে ‘যোগাযোগ এবং পরামর্শ’ প্রয়োজন বলে মনে করে নয়াদিল্লি।
ভারতের পররাষ্ট্র বলেন, ‘আমরা এই বিষয়গুলো পরীক্ষা করছি। আমরা বিষয়গুলোতে বাংলাদেশ কর্তৃপক্ষের সাথে একসঙ্গে কাজ করার জন্য উন্মুখ।’
তিনি বলেন, এর বাইরে তিনি মনে করেন না - এই মুহূর্তে আরও কিছু বলা গঠনমূলক হবে।
এক প্রশ্নের জবাবে মিশ্রি বলেন, বাংলাদেশিদের এই ধারণা বাদ দেওয়া উচিত যে, ভারতের একজন পছন্দের ব্যক্তি আছে বা তারা একদল লোকের সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা করছে অথবা অন্য দলের লোকদের উপেক্ষা করছে।
মন্তব্য