সিরাজগঞ্জের এনায়েতপুর এলাকার শ্বশুরবাড়ি থেকে গত ২২ জুন জামালপুরে দাদাবাড়ি যাওয়ার পথে দিনদুপুরে নিখোঁজ হন সাব্বির আহম্মেদ (২৪) নামের এক যুবক, যার খোঁজ আজও পাননি স্বজনরা।
সাব্বিরের নিখোঁজ হওয়ার ঘটনায় এনায়েতপুর থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করা হয়, র্যাব-১৪ কার্যালয়ে লিখিত অভিযোগও করা হয়। এ ছাড়া তাকে অপহরণের অভিযোগ এনে মামলা (পিটিশন নং-০৮/২১) করা হয় জেলা জজ আদালতে। আদালত ঘটনা তদন্ত করে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দিয়েছে পিবিআইকে।
তদন্তসংশ্লিষ্টরা বলছেন, টাঙ্গাইলের সরকারি করটিয়া সা’দত কলেজের অনার্স দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র সাব্বির অপহৃত হননি। প্রতারক চক্র বিশেষ প্রযুক্তির সহাতায় তার ফোন নম্বর ক্লোন করে সেই নম্বর দিয়ে স্ত্রীর কাছে মুক্তিপণ দাবি করেছিল। মুক্তিপণ বাবদ ৩০ হাজার টাকাও নেয় তারা। এই প্রতারকদের সঙ্গে নিখোঁজ সাব্বিরের কোনো সম্পর্ক নেই।
থানা-পুলিশ, র্যাবের কাছে করা অভিযোগ ও মামলার এজাহারের তথ্যানুযায়ী, গত ২২ জুন দুপুর ২টার দিকে সিরাজগঞ্জের এনায়েতপুর কেজির মোড় থেকে সিএনজিচালিত অটোরিকশায় চড়েন সাব্বির। সেখান থেকে জেলার কড্ডার মোড়ে গিয়ে জামালপুরগামী বাসে দাদাবাড়ি যাওয়ার কথা ছিল তার। কিন্তু বিকেল ৪টার দিকে সাব্বিরের মোবাইল নম্বরে ফোন করে সেটি বন্ধ পান তার স্ত্রী আনিকা।
নিউজবাংলাকে তিনি বলেন, ‘উনি অটোরিকশা নিয়ে কড্ডার মোড় পর্যন্ত যেতে পেরেছিলেন কি না কিংবা বাসে উঠেছিলেন কি না, সেসবের কোনো তথ্য জানতে পারি নাই। কারণ বাসা থেকে বের হওয়ার প্রায় দুই ঘণ্টা পর তাকে ফোন করলে বন্ধ পাই। জামালপুরে দাদাবাড়ি ও বিভিন্ন স্বজনের কাছে ফোন করা হয়। কিন্তু তারা কোনো তথ্য দিতে পারেননি। এরপর সবাই মিলে বিভিন্ন জায়গায় খোঁজাখুঁজি করেও তার সন্ধান পাইনি। ঘটনার দুই দিন পর ২৪ জুন এনায়েতপুর থানায় জিডি করি।’
আনিকা আরও বলেন, ‘জিডির পর আমার স্বামীর ব্যবহৃত ফোন নম্বর দিয়ে আমার ফোনে ফোন করা হয়। মুক্তিপণের জন্য ৩০ হাজার টাকা চায়। সেই টাকা রকেটের মাধ্যমে দেয়ার পর তাদের ফোন বন্ধ হয়ে যায়।’
সাব্বিরের বড় ভাই মো. শাহেদ নিউজবাংলাকে বলেন, ‘নিখোঁজ হওয়ার পর প্রথম দুই দিন তেমন গুরুত্ব দিই নাই। মনে হয়েছে, মোবাইল ফোন নষ্ট হয়ে যেতে পারে, তাই ফোন বন্ধ। তৃতীয় দিনে মনে হয়েছে, মলম বা অজ্ঞান পার্টির খপ্পরে পড়ে কোথাও পড়ে আছে। চতুর্থ দিনে অপহরণকারীরা মুক্তিপণ চাইলে মনে হয় অপহরণের শিকার হয়েছে।
‘পরবর্তী সময়ে র্যাবের কাছে গেলে জিডিমূলে থানায় মামলা করতে বলা হয়। থানায় মামলা না নিলে কোর্টে মামলা করি। সেই মামলার কপি র্যাব ও পিবিআইকে দেয়া হয়েছে। কিন্তু এখনো কেউই ভাইয়ের কোনো সন্ধান দিতে পারেনি। উল্টো পুলিশ ফোন করে জানতে চায় কোনো তথ্য পেয়েছি কি না।’
স্বজন ও স্থানীয় লোকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, শেরপুরের শ্রীবরদী উপজেলার উত্তর শ্রীবরদী গ্রামের লোকমান উদ্দিনের প্রথম স্ত্রীর ঘরে তিন ছেলে। তাদের মধ্যে সাব্বির মেজো। প্রথম স্ত্রী মারা যাওয়ার পর লোকমান উদ্দীন দ্বিতীয় বিয়ে করেন। সেই ঘরে এক ছেলে ও এক মেয়ে রয়েছে।
টাঙ্গাইলের সরকারি করটিয়া সা’দত কলেজের ম্যানেজমেন্ট বিভাগের অনার্স দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র সাব্বির আহম্মেদ প্রায় আট মাস আগে এনায়েতপুরে বিয়ে করেন। করোনায় কলেজ বন্ধ থাকায় করটিয়া হাটে কিছুদিন বোরকা বিক্রি করেন। এরপর জামালপুরে দাদাবাড়িতে তার এক চাচার কারখানায় কাজ করছিলেন। নিখোঁজ হওয়ার পর থেকে সাব্বিরকে সবাই খুঁজছেন। তার সঙ্গে কারও ব্যক্তিগত বা পারিবারিক দ্বন্দ্ব নেই।
সহপাঠীরা নিউজবাংলাকে জানান, সাব্বির কোনো রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিলেন না। মাঝেমধ্যে ‘দাওয়াতের’ কাজ করতেন। তবে সেটা তাবলিগ জামাত কি না, তা নিশ্চিত করতে পারেননি তারা।
সাব্বিরের মোবাইল নম্বর দিয়ে মুক্তিপণ দাবি!
স্বজনরা জানান, সাব্বির নিখোঁজ হওয়ার ঘটনায় ২৪ জুন জিডি করা হয়। পরদিন ২৬ জুন আনুমানিক রাত সাড়ে ১১টার দিকে সাব্বিরের স্ত্রী আনিকার ফোনে ফোন আসে সাব্বিরেরই দুটি নম্বর থেকে। অপর প্রান্ত থেকে মুক্তিপণ হিসাবে ৩০ হাজার টাকা দাবি করা হয়। বলা হয়, সেই টাকা পাওয়ার পর সাব্বিরকে ছেড়ে দেয়া হবে। কিন্তু টাকা দেয়া হলেও সাব্বিরকে পাওয়া যায়নি।
সিরাজগঞ্জের এনায়েতপুর থানার ওসি মো. আনিসুর রহমান নিউজবাংলাকে জানান, সাব্বিরকে উদ্ধার করার জন্য প্রযুক্তির সহায়তা নেয়া হচ্ছে। ঘটনার ছায়া তদন্তে নেমেছে পুলিশ ব্যুরো অফ ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)।
সিরাজগঞ্জের পিবিআই পুলিশ সুপার রেজাউল করিম নিউজবাংলাকে বলেন, ‘নিখোঁজ সাব্বিরের স্ত্রীর করা মামলার কাগজপত্র এখনও আমাদের কাছে আসেনি। তবে কাগজপত্র আসার আগেই আমরা তদন্ত শুরু করে দিয়েছি। প্রযুক্তিগত সহায়তায় সাব্বিরকে উদ্ধারের চেষ্টা চলছে। এরপর ম্যানুয়ালি চেষ্টা করব।’
তিনি বলেন, ‘স্বজনদের কাছে নিখোঁজ সাব্বিরের মোবাইল ফোন নম্বর দিয়েই মুক্তিপণ দাবি করা হয়েছিল। সেসব নম্বর বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, প্রতারক চক্র বিশেষ প্রযুক্তির সহায়তায় নিখোঁজ ব্যক্তির মোবাইল ফোন নম্বর ক্লোন করে সেই নম্বর দিয়ে পরিবারের সদস্যদের কাছে টাকা দাবি করেছিল। আমাদের তদন্তে মনে হয়েছে, এটা প্রতারক চক্রের কাজ। এই প্রতারকদের সঙ্গে নিখোঁজ সাব্বিরের কোনো সম্পর্ক নেই বলেই তথ্যপ্রমাণ মিলেছে।’
আরও পড়ুন:রাজধানীতে চামড়ার দাম প্রতি ফুটে ৫ থেকে ১০ টাকা বাড়িয়েছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। তবে তার প্রভাব পড়েনি বাস্তবে, আগেরবারের মতো এবারও কম দামে গরুর চামড়া বিক্রি করতে হয়েছে বলে অভিযোগ ব্যবসায়ীদের।
প্রতি বর্গফুট গরুর চমড়ার দাম বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ৬০ থেকে ৬৫ টাকা নির্ধারণ করে দিলেও চামড়া বিক্রি হয়েছে গতবারের মতোই ৫৫ থেকে ৬০ টাকায়। কিছু কিছু ক্ষেত্রে বর্গফুটের হিসাবে চামড়ার দাম আরও কম পড়েছে।
চামড়া ব্যবসায়ীরা জানান, কুরবানিদাতাদের থেকে তারা সর্বোচ্চ ৫০০ থেকে ৭৫০ টাকায় গরুর চামড়া কিনেছেন এবং ট্যানারি মালিকদের কাছে বিক্রি করেছেন ৬০০ থেকে ৯০০ টাকায়।
উত্তরার চামড়া ব্যবসায়ী হেফাজ উল্লাহ বলেন, ‘কুরবানিদাতাদের থেকে ৭৫০ টাকায় চামড়া সংগ্রহ করে রীতিমতো বিপদে পড়তে হয়েছে। এই এলাকায় ভালো মানের চামড়ার দাম উঠেছে সর্বোচ্চ ৮০০ থেকে ৮২০ টাকা। এর ওপরে কোনোভাবেই চামড়া বিক্রি করা যায়নি।’
বাড্ডার চামড়া ব্যবসায়ী সিরজা বলেন, ‘কাঁচা চামড়ার চাহিদা এবারও তলানিতে। ভালো দামে চামড়া বিক্রি করতে পারিনি। একটি ভ্যান আর দুইজন লেবার নিয়ে যে খরচ হয়েছে তার তুলনায় মুনাফা হয়নি বললেই চলে। সারাদিনের কষ্ট বৃথা।’
খিলক্ষেতের চামড়া ব্যবসায়ী মিজানুর বলেন, ‘আগে জানলে এত দাম দিয়ে চামড়া কিনতাম না। প্রতিবারই ট্যানারি মালিকরা চামড়ার দাম দিতে অনাগ্রহ দেখায়। এতে আমাদের মধ্যেও দাম দিয়ে চামড়া কেনার প্রবণতা দিন দিন কমে যাচ্ছে।’
তবে এ ব্যাপারে ট্যানারি পরিচালক ও এজেন্টরা জানান, বাণিজ্য মন্ত্রণালয় লবণ দেয়া প্রস্তুতকৃত চামড়ার দাম নির্ধারণ করেছে। অনেক ক্ষেত্রে ট্যানারি থেকে কাঁচা চামড়া কেনায় দাম কম পড়েছে। তবে ৭০০ থেকে ৯০০ টাকায় সব চামড়া কেনা হয়েছে; এমন তথ্য ভুল দাবি করেছেন তারা। অনেক ভালো মানের চামড়া ১ হাজার ২০০ থেকে ১ হাজার ৫০০ টাকায়ও কেনা হয়েছে বলে জানান ট্যানারি সংশ্লিষ্টরা।
এদিকে, গতবারের মতো এবারেও ছাগলের চামড়া চাহিদা নেই বললেই চলে। অনেকেই বিনামূল্যে ছাগলের চামড়া দিয়ে দিয়েছেন, অনেকক্ষেত্রে দাম উঠেছে ১৫ থেকে ৩০ টাকা পর্যন্ত।
এবারের ঈদে সবমিলিয়ে ৮০ থেকে ৮৫ লাখ চামড়া সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে ট্যানারি মালিকরা যার সিংহভাগ সংগ্রহ হয়েছে ঈদের প্রথম দিনেই।
নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজারে ফেরি থেকে সিএনজিচালিত অটোরিকশা ছিটকে নদীতে পড়ে নিখোঁজের সাড়ে ১৩ ঘণ্টা পর দুই নারীর লাশ উদ্ধার করেছে ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরি দল।
শনিবার ভোরে উপজেলার বিশনন্দী ফেরিঘাটে অটোরিকশাটি মেঘনা নদীতে পড়ে গিয়েছিল। খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের একটি ডুবুরি দল সন্ধ্যা ৬টার দিকে নদী থেকে অটোরিকশাটি উদ্ধার করে। অটোরিকশার ভেতর থেকে দুজনের লাশ উদ্ধার করে। আড়াইহাজার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সাজ্জাদ হোসেন ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।
মৃত দুই নারী হলেন ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগর থানার রসুলাবাদ এলাকার মোসাদ্দেক হোসেনের স্ত্রী খালেদা বেগম (৪০) ও তাঁর ছেলে সাগর হোসেনের স্ত্রী ফারজানা বেগম (১৯)।
নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজারে ফেরি থেকে সিএনজিচালিত অটোরিকশা ছিটকে নদীতে পড়ে নিখোঁজের সাড়ে ১৩ ঘণ্টা পর দুই নারীর লাশ উদ্ধার করেছে ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরি দল।
শনিবার ভোরে উপজেলার বিশনন্দী ফেরিঘাটে অটোরিকশাটি মেঘনা নদীতে পড়ে গিয়েছিল। খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের একটি ডুবুরি দল সন্ধ্যা ৬টার দিকে নদী থেকে অটোরিকশাটি উদ্ধার করে। অটোরিকশার ভেতর থেকে দুজনের লাশ উদ্ধার করে। আড়াইহাজার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সাজ্জাদ হোসেন ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।
মৃত দুই নারী হলেন ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগর থানার রসুলাবাদ এলাকার মোসাদ্দেক হোসেনের স্ত্রী খালেদা বেগম (৪০) ও তাঁর ছেলে সাগর হোসেনের স্ত্রী ফারজানা বেগম (১৯)।
পবিত্র ঈদুল আজহার দিনে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বিভিন্ন এলাকায় কোরবানির পশু জবাই ও মাংস কাটতে গিয়ে অসাবধানতাবশত শতাধিক ব্যক্তি আহত হয়েছেন।
শনিবার(৭ জুন) সকাল থেকে বিকাল সাড়ে ৩টা পর্যন্ত ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেনারেল হাসপাতালের জরুরি বিভাগে আহতদের চিকিৎসা দেওয়া হয়।
জেলা সদরসহ আশপাশের অঞ্চল থেকে আসা আহতদের মধ্যে বেশিরভাগই ধারালো ছুরি, চাপাতি বা দা ব্যবহারে অদক্ষ থাকায় হাত-পা ও শরীরের বিভিন্ন অংশে কেটে যায়। যদিও অধিকাংশ আহতের অবস্থা আশঙ্কাজনক নয় বলে চিকিৎসকরা জানিয়েছেন।
আহতদের মধ্যে রয়েছেন—ফুলবাড়িয়া এলাকার পাবেল মিয়া (২৭), ঘাটুরা গ্রামের সেলিম (৪৫), চাঁনপুরের আরস মিয়া (২৬), জহিরুল হক (৫০), মো. মিলন (২৩), আজিজুল (২১), শাকিব (২৮), জীবন (৪০), সুমন (২৬), রামরাইলের আলামিন (২৩), আক্কাস (৪৫), উবায়দুল (৩৩), ইউবিন (২২), রহমত আলী (৫৫), সুলতানপুর এলাকার আবু সুফিয়ান (১৫), সাদেক (১৮) সহ অনেকেই। কারও হাতে, কারও বা পায়ে গভীর ক্ষতের সৃষ্টি হয়েছে।
আহত সুফিয়ান বলেন, পায়ের নিচে রাখা মাংস কাটতে গিয়ে অসতর্কভাবে ছুরির কোপ পায়ে লাগে। পরে হাসপাতালে এসে সেলাই নিতে হয়।
আরেকজন, রিকশাচালক আরস মিয়া বলেন, মাংস কাটার সময় হাত ফসকে ছুরি লেগে যায়। হাসপাতালে তিনটি সেলাই দেওয়া হয়েছে।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেনারেল হাসপাতালের জরুরি বিভাগের কর্তব্যরত চিকিৎসক ডা. শুভ্র রায় বলেন, ঈদের দিন সকাল থেকে বেলা ২টা পর্যন্ত অন্তত ১০০ জন রোগী আমাদের এখানে এসেছেন। এদের প্রায় সবাই কোরবানির পশুর মাংস কাটতে গিয়ে আহত হয়েছেন। সবাইকে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে বাড়ি পাঠানো হয়েছে। গুরুতর কেউ নয়।
ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের ৭৫টি ওয়ার্ডে একযোগে কোরবানির বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কার্যক্রম শুরু হয়েছে। কোরবানির বর্জ্য দ্রুত অপসারণ কার্যক্রম পরিদর্শন করার জন্য কলাবাগান শিশু পার্ক সংলগ্ন সেকেন্ডারি ট্রান্সফার স্টেশন (এসটিএস) পরিদর্শন করেন স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের মাননীয় উপদেষ্টা জনাব আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া। এ সময় স্থানীয় সরকার বিভাগের সম্মানিত সচিব জনাব মো: রেজাউল মাকছুদ জাহেদী এবং ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন প্রশাসক জনাব মো. শাহজাহান মিয়া উপস্থিত ছিলেন।
পরিদর্শনকালে উপদেষ্টা বলেন, শহরে কোরবানির বর্জ্য পরিষ্কার করা একটি বড় চ্যালেঞ্জ। সময়মতো বর্জ্য অপসারণ না হলে দুর্গন্ধ ছড়ায়, এমনকি রোগ-জীবাণু সৃষ্টি হতে পারে। ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন ১২ ঘন্টা সময়ের মধ্যেই সকল বর্জ্য অপসারণ করতে পারবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করে উপদেষ্টা বলেন এ বছর কোরবানির বর্জ্যের কারণে নগরবাসীর ঈদ আনন্দ বাঁধাগ্রস্ত হবে না।
কোরবানির বর্জ্য অপসারণে ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের প্রায় ১০০০০ হাজারের অধিক জনবল মাঠ পর্যায়ে কাজ করছে। ২০৭টি ডাম্প ট্রাক, ৪৪টি কম্পেক্টর, ৩৯টি কন্টেইনার ক্যারিয়ার, ১৬টি পে-লোডারসহ বর্জ্য অপসারণ কার্যক্রমে ৭৫টি ওয়ার্ডে মোট ২০৭৯টি যানবাহন নিয়োজিত রয়েছে।
কোরবানির বর্জ্য অপসারণ কার্যক্রম ব্যবস্থাপনায় ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের জরুরি পরিচালন কেন্দ্রে একটি নিয়ন্ত্রণ কক্ষ স্থাপিত হয়েছে এবং সার্বক্ষণিক তদারকি করা হচ্ছে।
পরিদর্শনকালে স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের মাননীয় উপদেষ্টার একান্ত সচিব জনাব মো: আবুল হাসান, ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের সচিব জনাব মুহাম্মদ শফিকুল ইসলাম, প্রধান বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কর্মকর্তা এয়ার কমডোর মোঃ মাহাবুবুর রহমান তালুকদারসহ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাগণ উপস্থিত ছিলেন।
ঈদুল আজহা উপলক্ষে কোরবানির পশুর কাঁচা চামড়া পাচার রোধে সীমান্ত এলাকাগুলোতে কঠোর অবস্থান নিয়েছে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)।
বিজিবির জনসংযোগ কর্মকর্তা (পিআরও) শরীফুল ইসলাম ইউএনবিকে জানান, সীমান্ত নিরাপত্তা ও অভ্যন্তরীণ আইন-শৃঙ্খলা রক্ষার পাশাপাশি কাঁচা চামড়া পাচার ও ভারতে পুশ-ইনের যেকোনো অপচেষ্টা প্রতিহত করতে বিজিবি সর্বোচ্চ সতর্ক অবস্থানে রয়েছে।
বিজিবি সূত্রে জানা গেছে, ঈদ মৌসুমে কাঁচা চামড়া পাচার অর্থনীতিতে নেতিবাচক প্রভাব ফেলে। এমন বাস্তবতায় সীমান্তজুড়ে নজরদারি ও টহল জোরদার করা হয়েছে।
পাশাপাশি, ভারতের দিক থেকে যেকোনো পুশ-ইন ঠেকাতে সর্বোচ্চ সতর্কতায় রয়েছে সীমান্তরক্ষী এই বাহিনী।
বিজিবির পিআরও আরও জানান, ঈদের দিনেও ‘সীমান্তের অতন্দ্র প্রহরী’ হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন বিজিবির সদস্যরা। টহল ও নজরদারি কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে।
তিনি বলেন, কোরবানির পশুর চামড়া যাতে বৈধ বাণিজ্য চ্যানেলের মধ্য দিয়ে জাতীয় অর্থনীতিতে অবদান রাখতে পারে, সেজন্য স্থানীয় প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সমন্বয়ে কাজ করছে বিজিবি।
জাতীয় স্বার্থ রক্ষায় যেকোনো অপচেষ্টা প্রতিহত করতে বিজিবি দৃঢ় প্রতিশ্রুতিবদ্ধ এবং ঈদ মৌসুমজুড়েই তারা সর্বোচ্চ সতর্কতায় থাকবে বলে জানানো হয়।
ঈদুল আজহার ছুটিকে কেন্দ্র করে পর্যটকদের ভিড় সামলাতে প্রস্তুত করা হয়েছে সিলেটের সাতটি প্রধান পর্যটন স্পট। প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের লীলাভূমি হিসেবে পরিচিত এই অঞ্চলের টিলা, চা-বাগান, ঝরনা ও স্বচ্ছ জলের ধারায় মুগ্ধ হতে ছুটে আসছেন সারা দেশের ভ্রমণপিপাসুরা।
সিলেট মহানগরীর আকর্ষণীয় স্থানগুলোর মধ্যে রয়েছে ঐতিহাসিক কিন ব্রিজ, আলী আমজাদের ঘড়ি, শাহজালাল (রহ.) ও শাহপরান (রহ.) মাজার, খাদিমনগর জাতীয় উদ্যান, শাহী ঈদগাহ ও গৌর গোবিন্দের টিলা। তবে নগরীর বাইরে ছড়িয়ে থাকা প্রাকৃতিক দর্শনীয় স্থানগুলোই সবচেয়ে বেশি পর্যটকের মনোযোগ কাড়ছে।
সাদাপাথর (ভোলাগঞ্জ, কোম্পানীগঞ্জ): সিলেট শহর থেকে প্রায় ৩৫ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত সাদাপাথরে চোখে পড়ে দিগন্তজোড়া সাদা পাথরের মেলা, স্বচ্ছ নীল জল, আর পাহাড়ের কোলে ঝরনার ধারা। ধলাই নদীর জলে মিশে প্রকৃতি এখানে যেন তার রঙের খেলায় ব্যস্ত।
রাতারগুল: দেশের একমাত্র স্বীকৃত জলাবন রাতারগুল বর্ষায় ২০ থেকে ৩০ ফুট পানিতে ডুবে থাকে। ৭৩ প্রজাতির গাছগাছালিতে ঘেরা এ বনাঞ্চলে নৌকাভ্রমণ পর্যটকদের প্রধান আকর্ষণ।
জাফলং: মেঘালয়ের পাদদেশে পিয়াইন নদীর তীরে অবস্থিত জাফলং পর্যটকদের কাছে বছরের পর বছর ধরে প্রিয় গন্তব্য। পাথরের স্তূপ, ঝরনা ও খাসিয়া সংস্কৃতির পাশাপাশি শ্রীপুর চা-বাগান ও ইকোপার্কের সৌন্দর্য জাফলং সফরকে স্মরণীয় করে তোলে।
রাংপানি (গোয়াইনঘাট): সাদা পাথর ও পাহাড়ি ঝরনার মিলনস্থল রাংপানির পাশে খাসিয়াদের ঐতিহ্যবাহী গ্রাম মোকামপুঞ্জি অবস্থিত। সিলেট শহর থেকে এর দূরত্ব প্রায় ৫৪ কিলোমিটার।
উৎমাছড়া (কোম্পানীগঞ্জ): ঝরনার স্বচ্ছ জলের ধারা, সবুজ পাহাড় এবং বিশাল পাথরের বিছানায় ঘেরা উৎমাছড়ায় ঈদের ছুটিতে পর্যটকদের আনাগোনা বাড়তে শুরু করেছে।
লালাখাল (কানাইঘাট): নীলজলের লালাখাল ঈদের ছুটিতে পর্যটকদের অন্যতম গন্তব্য। আঁকাবাঁকা নদীপথ, পাশের পাহাড়ি বন ও চা-বাগান লালাখালকে করেছে ছবির মতো সুন্দর।
লোভাছড়া (কানাইঘাট): ঐতিহাসিক লোভাছড়া চা-বাগান ও তার আশপাশের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য, ঝুলন্ত সেতু, ঝরনা, খাসিয়া গ্রাম এবং ব্রিটিশ আমলের স্থাপনাগুলো একসঙ্গে দেখতে পাওয়া যায় এখানে। সুরমা ও লোভা নদীর মিলনস্থলও এ অঞ্চলের একটি গুরুত্বপূর্ণ আকর্ষণ।
পর্যটন সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ঈদের ছুটিকে কেন্দ্র করে এসব এলাকায় পর্যাপ্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে এবং পর্যটকদের জন্য বিভিন্ন সহায়তাও নিশ্চিত করা হয়েছে।
লালমনিরহাটের পাটগ্রাম উপজেলায় পারিবারিক কলহের জেরে এ্যামি বেগম নামে এক গৃহবধূকে গলাকেটে হত্যা করার অভিযোগ উঠেছে স্বামীর বিরুদ্ধে।
শনিবার (৭ জুন) সকালে উপজেলার কুচলিবাড়ি ইউনিয়নের ৬ নম্বর ওয়ার্ডে এ নৃশংস হত্যাকাণ্ড ঘটে। ঘটনার পর থেকেই অভিযুক্ত স্বামী হাসিবুল পলাতক রয়েছেন।
নিহত এ্যামি বেগম একই ইউনিয়নের ইসরাক হোসেনের মেয়ে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, বেশ কিছুদিন ধরে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে পারিবারিক কলহ চলছিল। এর জেরে শনিবার ঈদের দিন সকালে হাসিবুল ধারালো অস্ত্র দিয়ে স্ত্রী এ্যামি বেগমের গলাকেটে হত্যা করে পালিয়ে যায়। পরে পরিবারের সদস্যরা বিষয়টি জানতে পেরে পাটগ্রাম থানা পুলিশকে খবর দেন। পুলিশ দ্রুত ঘটনাস্থলে গিয়ে নিহতের লাশ উদ্ধার করে এবং সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরি করে।
পাটগ্রাম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মিজানুর রহমান বলেন, প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, পারিবারিক কলহের কারণেই এ হত্যাকাণ্ড ঘটেছে। ঘটনার পর থেকেই অভিযুক্ত হাসিবুলকে গ্রেপ্তারের জন্য অভিযান অব্যাহত আছে। ইতোমধ্যে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য দুজনকে আটক করা হয়েছে।
মন্তব্য