ভোলায় এক নারীকে ধর্ষণের পর তার শিশুসন্তানকে হত্যার অভিযোগ উঠেছে।
এ ঘটনায় ওই নারী ও তার স্বামীকে থানায় নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করছে পুলিশ। ময়নাতদন্ত শেষে শিশুটিকে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়েছে।
নিউজবাংলাকে এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন ভোলা সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এনায়েত হোসেন।
ওই নারীর বরাত দিয়ে তিনি বলেন, মঙ্গলবার মধ্যরাতে দরজা কেটে চারজন ঘরে ঢুকে ওই নারীকে হাত-পা, মুখ বেঁধে ধর্ষণ করে। এ সময় তার সন্তান কেঁদে উঠলে শিশুটির মুখ চেপে বাড়ির পাশের ডোবায় ফেলা হয়। তবে ঘটনার সময় ওই নারীর স্বামী ওই ঘরেই ঘুমাচ্ছিলেন।
দুর্বৃত্তরা যাওয়ার সময় এক ভরি স্বর্ণালংকার ও টাকা লুট করে নিয়ে যায়।
ওই নারীর গোঙানি শুনে পাশের ঘর থেকে শাশুড়ি এসে তার ছেলেকে ডেকে তোলেন। এরপর তারা ঘরের মেঝেতে তাকে হাত-পা, মুখ বাঁধা অবস্থায় পান।
স্বামী ও শাশুড়িকে বিষয়টি জানালে তারা ডোবা থেকে শিশুটির মরদেহ উদ্ধার করেন।
ওসি এনায়েত হোসেন নিউজবাংলাকে জানান, এ ঘটনায় ধর্ষণ ও হত্যা মামলা হবে। এরই মধ্যে ওই নারীর শারীরিক পরীক্ষা সম্পন্ন হয়েছে। জড়িতদের দ্রুত আইনের আওতায় আনা হবে।
মৌলভীবাজারের কুলাউড়ায় চোরাচালানবিরোধী অভিযানে বিপুল পরিমাণ ভারতীয় বিড়ি ও সিগারেট জব্দ করেছে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)। গত রোববার গভীর রাতে উপজেলার আলীনগর ও লালারচক সীমান্তবর্তী এলাকা থেকে বিড়ি ও সিগারেট জব্দ করা হয়।
৪৬ বিজিবি সূত্রে জানা যায়, নিয়মিত টহলের অংশ হিসেবে গত রোববার রাতে উপজেলার বিভিন্ন সীমান্ত এলাকায় অভিযান পরিচালনা করা হয়। এ সময় মালিকবিহীন অবস্থায় ৩ লাখ ১ হাজার টাকা মূল্যের ১ হাজার ২৮০ প্যাকেট ভারতীয় সিগারেট ও ৯০০ প্যাকেট নাসির পাতার বিড়ি জব্দ করা হয়।
৪৬ বিজিবি ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল এ এস এম জাকারিয়া বলেন, মৌলভীবাজার জেলার কুলাউড়া, কমলগঞ্জ ও শ্রীমঙ্গল উপজেলার ১১৫ কিলোমিটার সীমান্ত এলাকায় বিজিবি সদস্যরা দিবারাত্রী ২৪ ঘণ্টা টহল ও চোরাচালানবিরোধী অভিযান পরিচালনা করছেন। সীমান্ত সুরক্ষার পাশাপাশি এ কার্যক্রম আরও জোরদার করা হবে।
চলতি মৌসুমে নরসিংদী জেলার ৬টি উপজেলায় ২,৫৬৭ হেক্টর জমিতে গ্রীষ্মকালীন শাকসবজির চাষ করা হয়েছে। আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় গ্রীষ্মকালীন শাকসবজি ভাল ফলন হওয়ায় এবং উপযুক্ত দাম পাওয়ায় কৃষকের মুখে হাসির ঝলক ফুটে উঠেছে।
নরসিংদী জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, চলতি মৌসুমে নরসিংদী জেলার ৬টি উপজেলায় ২৫৬৭ হেক্টর জমিতে গ্রীষ্মকালীন শাকসবজির চাষ করা হয়েছে। তার মধ্যে নরসিংদী সদর উপজেলার ১৫৫ হেক্টর, পলাশে ১৫৩ হেক্টর, শিবপুরে ৪০০ হেক্টর, মনোহরদীতে ৮৫ হেক্টর, বেলাবতে ১১৪৪ হেক্টর এবং রায়পুরা উপজেলায় ৬৩০ হেক্টর জমিতে গ্রীষ্মকালীন শাকসবজির চাষ করা হয়েছে। গ্রীষ্মকালীন শাকসবজির মধ্যে রয়েছে কাঁকরোল, বেগুন, ঢেঁড়শ, শশা, সিম, চাল কুমড়া, মূলা, ডাটা, মূলাশাক, ডাঁটাশাক, লাউ, পুঁইশাক, পালংশাক, পাটশাক, কলমীশাক, বরবটি, ঝিংগা, চিচিঙ্গা, ধুন্দুল, করলা, উচ্ছে, সজিনা, পটল, কাঁচকলা, মুথীকচু, পানিকচু এবং পেঁপে ইত্যাদি। সরেজমিনে ঘুরে দেখা গেছে, সবুজ রঙের শাকসবজিতে ভরে গেছে খেত।
গ্রীষ্মকালীন শাকসবজি চাষ করেও লাভবান হয়েছেন এখানকার কৃষকরা। গত সেপ্টেম্বর মাসের প্রথম দিক থেকে বিভিন্ন এলাকায় এরই মধ্যে বাজারে বিক্রি শুরু হয়েছে এই সকল শাকসবজি। ভালো দাম পাওয়ায় খুশি কৃষকরা।
শিবপুর উপজেলার কোন্দারপাড়া গ্রামের কৃষক আব্দুল জলিল জানান, ধান চাষ করে আমরা খুব একটা লাভবান হতে পারিনি। তাই এ বছর গ্রীষ্মকালীন শাকসবজির চাষ করেছি। বর্তমান বাজারে দামও পাচ্ছি বেশ ভাল। তিনি আরো জানান, ‘এ বছর তিনি দুই বিঘা জমিতে শাকসবজির চাষ করেছি। বিঘা প্রতি খরচ হয়েছে ১০ থেকে ১২ হাজার টাকা। এ পর্যন্ত আমি দুই বিঘা জমি থেকে প্রায় ২৫ হাজার টাকার সবজি বিক্রি করেছি।’
রায়পুরা উপজেলার বারৈচা গ্রামের অপর এক চাষি আব্দুল জব্বার জানায়, ‘অন্যান্য ফসলের তুলনায় গ্রীষ্মকালীন শাকসবজি চাষ অধিক লাভজনক। আমি এক বিঘা জমিতে সবজির চাষ করেছি। এ পর্যন্ত আমি প্রায় ১২ হাজার টাকার সবজি বিক্রি করেছি।’
নরসিংদী জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক মো. আজিজুল হক জানান, চলতি মৌসুমে জেলার সর্বত্র আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় গ্রীষ্মকালীন শাকসবজির ফলন খুব ভাল হয়েছে এবং কৃষকরা দামও ভালো পাচ্ছে।
“সমন্বিত উদ্যোগ, প্রতিরোধ করি দুর্যোগ” এই প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে "আন্তর্জাতিক দুর্যোগ প্রশমন দিবস-২০২৫” উপলক্ষে ময়মনসিংহের নান্দাইল উপজেলায় ভূমিকম্প ও অগ্নিকাণ্ড বিষয়ে মহড়া, র্যালি ও আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়।
সোমবার (১৩ অক্টোবর ২০২৫ খ্রিঃ) বেলা ১১টায় নান্দাইলের সমূর্ত্ত জাহান মহিলা ডিগ্রি কলেজ মাঠে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে উপজেলা প্রশাসন ও উপজেলা দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা বিভাগ, নান্দাইল, ময়মনসিংহ। সহযোগিতায় ছিল ওয়ার্ল্ড ভিশন বাংলাদেশ, নান্দাইল এরিয়া অফিস।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শারমিনা সাত্তার।
বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সহকারী কমিশনার (ভূমি) রেবেকা সুলতানা সাথী, সমূর্ত্ত জাহান মহিলা ডিগ্রি কলেজের অধ্যক্ষ মাজেদা বেগম, প্রফেসর কামরুল হুদা, বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ আনোয়ার মাষ্টার, প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা আহসানউল্লাহ, ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স নান্দাইল স্টেশনের কর্মকর্তা সাইদুল ইসলাম, ওয়ার্ল্ড ভিশন নান্দাইল এপির ম্যানেজার সাগর জন কস্তা এবং অরপনা গাগরা।
এছাড়াও অনুষ্ঠানে কলেজের শিক্ষক-শিক্ষার্থী, স্থানীয় জনপ্রতিনিধি, সামাজিক সংগঠনের প্রতিনিধি, গণ্যমান্য ব্যক্তি, ইলেকট্রনিক ও প্রিন্ট মিডিয়ার সাংবাদিকসহ সমাজের বিভিন্ন শ্রেণী-পেশার মানুষ উপস্থিত ছিলেন।
র্যালি শেষে নান্দাইল ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা ভূমিকম্প ও অগ্নিকাণ্ডকালীন সময়ে করণীয় বিষয়ে বাস্তব মহড়া প্রদর্শন করেন। তারা উপস্থিত শিক্ষার্থী ও সাধারণ জনগণকে দুর্যোগকালে আতঙ্কিত না হয়ে কীভাবে নিরাপদে আত্মরক্ষা করতে হয়, সে বিষয়ে ব্যবহারিক নির্দেশনা দেন।
অনুষ্ঠানে বক্তারা বলেন, “দুর্যোগের ক্ষয়ক্ষতি কমাতে সচেতনতা ও প্রস্তুতির বিকল্প নেই। সরকার ও জনগণের সমন্বিত উদ্যোগের মাধ্যমেই দুর্যোগ মোকাবিলা করা সম্ভব।”
প্রধান অতিথির বক্তব্যে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শারমিনা সাত্তার বলেন,
“দুর্যোগ মোকাবিলায় সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো সচেতনতা ও প্রস্তুতি। প্রতিটি পরিবার ও প্রতিষ্ঠান যদি নিজেদের প্রস্তুত রাখে, তবে বড় ক্ষয়ক্ষতি এড়ানো সম্ভব।”
অনুষ্ঠানটি সমাপ্ত হয় ফায়ার সার্ভিসের মহড়া প্রদর্শনের মাধ্যমে, যা উপস্থিত সবাইকে দুর্যোগ মোকাবিলায় বাস্তব ধারণা প্রদান করবে।
ঢালিউড অভিনেত্রী পরীমনি সিনেমা থেকে অনেকটা দূরে আছেন। অভিনয়ে খুব একটা না থাকলেও সামাজিক মাধ্যমে নেটিজেনদের মাঝে তিনি সবসময় আলোচনায় থাকেন। এবার আলোচনায় এলেন নিজের কারাগারে বন্দিজীবন নিয়ে। অভিনেত্রী কারাগারে বন্দিজীবনের কঠিন অধ্যায় নিয়ে এবার বড়পর্দায় আসতে যাচ্ছেন বলে জানিয়েছেন পরীমনি।
চার বছর আগে মাদক মামলায় গ্রেফতার হওয়ার পর রিমান্ড ও কারাবাসের যে বাস্তব অভিজ্ঞতা পরীমনি পেয়েছিলেন, সেটিই এবার রুপালি পর্দায় নেওয়ার কথা চিন্তা করছেন তিনি। ২০২১ সালে র্যাবের হাতে গ্রেফতার হয়েছিলেন পরীমনি।
সেদিন তার বাসায় প্রায় চার ঘণ্টা অভিযান চালিয়ে বিভিন্ন আলামত জব্দ করে সংস্থাটি। পরে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে মামলা হয় তার বিরুদ্ধে। সেই ঘটনায় পরীমনি তিন দফায় মোট সাত দিনের রিমান্ডে ছিলেন।
সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে সেই সময়ে কারাগারে বন্দিজীবনের ঘটনার অভিজ্ঞতার কথা বললেন পরীমনি। কারাবাসের সময়কার অনুভূতি প্রসঙ্গে অভিনেত্রী বলেন, জেলখানা নিয়ে আমি কোনো দিন কিছু বলিনি। বলতেও চাই না। কারণ সত্যিটা মানুষ জানলে আইনের ওপর শ্রদ্ধা হারাবে। তিনি বলেন, ‘রিমান্ড একটা ফালতু জিনিস। সেখানে মানুষকে ভয় দেখানোর জন্য বড় বড় ছবি লাগানো থাকে। কিন্তু এগুলো দেখে কেউ ভয় পায় না। আমি বলেছিলাম— এগুলো বদলানো উচিত।
আটক প্রসঙ্গে পরীমনি বলেন, আমাকে কেন আটক করা হয়েছিল, তারাই জানত না। একজন আরেকজনকে জিজ্ঞেস করত। ওরা নিজেরাই বিভ্রান্ত ছিল। তিনি বলেন, জেল থেকে মুক্তি পাওয়ার পরপরই তিনি নিজের অভিজ্ঞতা নিয়ে একটি বই লিখেছেন। সেই বই ভবিষ্যতে প্রকাশ করবেন তার ছেলে। একই সঙ্গে বইয়ের গল্প থেকেই সিনেমা তৈরির ইঙ্গিত দেন তিনি। অভিনেত্রী বলেন, আমার ছেলে বড় হয়ে বইটা প্রকাশ করবে। চাইলে এটাকে সিনেমা বানাতেও পারি।
তালাবাটি কম্বল, জেলখানার সম্বল— এ প্রসঙ্গে পরীমনি বলেন, জেলখানার খাবার অনেক স্বাস্থ্যকর। এমনকি অনেক সময় নষ্টও হয়। রান্না হয় ফ্রেশভাবে, পুরো জায়গাটা বেশ ওয়েল মেইনটেইন বলে জানান অভিনেত্রী।
প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস আন্তর্জাতিক কৃষি উন্নয়ন তহবিলকে (আইএফএডি) বাংলাদেশের তরুণ কৃষি উদ্যোক্তা, নারী, কৃষক ও খাদ্য প্রক্রিয়াজাতকারীদের সহায়তার জন্য একটি সামাজিক ব্যবসা তহবিল গঠনের আহ্বান জানিয়েছেন।
রোববার ইতালির রোমে ওয়ার্ল্ড ফুড ফোরামের ইভেন্টের ফাঁকে আইএফএডির প্রেসিডেন্ট আলভারো লারিওর সঙ্গে বৈঠকে তিনি এ আহ্বান জানান।
অধ্যাপক ইউনূস বলেন, ‘আমি আপনাদের একটি সামাজিক ব্যবসা তহবিল গঠনের আহ্বান জানাই। এমন তহবিল দারিদ্র্যসীমার নিচে থাকা মানুষের স্বাস্থ্যসেবা, তরুণ, কৃষক, নারী ও মৎস্য খাতের উদ্যোক্তাদের সহায়তা দেবে।’
বৈঠকে দুই নেতা বিভিন্ন কৌশলগত বিষয় নিয়ে আলোচনা করেন। এর মধ্যে ছিল বাংলাদেশের গভীর সমুদ্রে মৎস্য শিল্প গড়ে তোলা, আম ও কাঁঠালের রপ্তানি সম্প্রসারণ, জলবায়ু সহনশীল কৃষি উদ্যোক্তা তৈরি এবং মহিষের দুধ দিয়ে মোজারেলা চিজসহ দুগ্ধজাত পণ্য উৎপাদনে সহায়তা।
অধ্যাপক ইউনূস আইএফএডি প্রেসিডেন্টকে বাংলাদেশ সফরের আমন্ত্রণ জানান এবং কৃষি, সামাজিক ব্যবসা ও প্রযুক্তি খাতে সহযোগিতার সম্ভাবনা যাচাইয়ে একটি বিশেষজ্ঞ দল পাঠানোর অনুরোধ করেন।
প্রত্যুত্তরে আইএফএডি প্রেসিডেন্ট আলভারো লারিও বাংলাদেশের বেসরকারি খাতের সঙ্গে যৌথভাবে সামাজিক ব্যবসা উদ্যোগে কাজ করার ব্যাপারে গভীর আগ্রহ প্রকাশ করেন। তিনি জানান, বর্তমানে আইএফএডি বাংলাদেশের কৃষিখাতে অর্ধডজনেরও বেশি প্রকল্পে অর্থায়ন করছে।
প্রধান উপদেষ্টা ফল প্রক্রিয়াকরণ, কোল্ড স্টোরেজ, গুদাম সুবিধা ও আম-কাঁঠালের বৃহৎ পরিসরে রপ্তানিতে প্রযুক্তিগত সহায়তা ও বিনিয়োগের প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দেন।
তিনি বলেন, ‘আমরা ইতোমধ্যে আম রপ্তানি শুরু করেছি, তবে পরিমাণ এখনো কম। চীন বাংলাদেশ থেকে বিপুল পরিমাণ আম ও কাঁঠাল আমদানির আগ্রহ দেখিয়েছে।’
বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা ফরিদা আখতার। তিনি জানান, বাংলাদেশের নারী দুগ্ধ খামারিরা মহিষের দুধ দিয়ে মোজারেলা চিজ তৈরি করছেন। তিনি এ খাত সম্প্রসারণে আইএফএডির সহায়তা চান।
বঙ্গোপসাগরে গভীর সমুদ্রের মৎস্যসম্পদ নিয়ে আলোচনায় অধ্যাপক ইউনূস বলেন, বিনিয়োগ ও প্রযুক্তিগত জ্ঞানের অভাবে বাংলাদেশের জেলেরা এখনো অগভীর পানিতেই সীমাবদ্ধ।
তিনি বলেন, ‘আমরা এখনো গভীর সমুদ্রে যেতে সাহস পাই না। আইএফএডি এই খাতে অর্থায়ন ও প্রযুক্তি সহায়তার মাধ্যমে বড় ভূমিকা রাখতে পারে।’
বাংলাদেশে ১৯৭৮ সালে কার্যক্রম শুরুর পর থেকে আইএফএডি ৩৭টি প্রকল্পে অংশীদার হয়েছে, যার মোট প্রকল্প ব্যয় ৪ দশমিক ২৬ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। এর মধ্যে ১ দশমিক ১৩ বিলিয়ন ডলার সরাসরি আইএফএডি অর্থায়ন করেছে। বর্তমানে ৪১২ মিলিয়ন ডলারের ছয়টি প্রকল্প চলমান এবং আরও একটি প্রকল্প প্রক্রিয়াধীন।
অধ্যাপক ইউনূস স্থানীয় সময় রোববার বিকেল ৫টার দিকে রোমে পৌঁছেন। তিনি জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থা (এফএও) আয়োজিত ওয়ার্ল্ড ফুড ফোরামে অংশ নেবেন এবং সেখানে মূল অধিবেশনে বক্তব্য দেবেন।
বৈঠকে আরও উপস্থিত ছিলেন খাদ্য উপদেষ্টা আলী ইমাম মজুমদার, এসডিজি বিষয়ক মুখ্য সমন্বয়ক ও সিনিয়র সচিব লামিয়া মোরশেদ, পররাষ্ট্র সচিব আসাদ আলম সিয়াম এবং আইএফএডির এসোসিয়েট ভাইস প্রেসিডেন্ট ডোনাল ব্রাউন। সূত্র: বাসস
৫ মে শাপলা চত্বর গণহত্যা দিবস ঘোষণাসহ পাঁচ দফা দাবি জানিয়েছে হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশ। দাবিগুলোর মধ্যে রয়েছে- প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সংগীত শিক্ষক নিয়োগের বিধিমালা বাতিল করে ধর্মীয় শিক্ষক নিয়োগের বিধিমালা জারি এবং পবিত্র কোরআন ও ধর্ম অবমাননার বিরুদ্ধে সর্বোচ্চ আইন করা। এছাড়া জুলাই সনদেও ২০১৩ সালের ৫ মে শাপলা গণহত্যাকাণ্ড এবং ২০২১ সালের মোদিবিরোধী আন্দোলনে হত্যাকাণ্ডের উল্লেখ রাখার কথা বলেছে সংগঠনটি।
সোমবার বেলা সাড়ে ১১ টার দিকে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব দাবি জানানো হয়।
সংবাদ সম্মেলনে হেফাজতের মহাসচিব মাওলানা মুহাম্মদ সাজিদুর রহমানের পক্ষ থেকে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা আজিজুল হক ইসলামাবাদী।
এ সময় হেফাজত মহাসচিব সাজিদুর রহমান বলেন, কোন অভিভাবক তার সন্তানকে নাচ-গান শেখাতে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ভর্তি করেন না। সংগীতের চেয়ে মুসলমানদের সন্তানদের ধর্ম শিক্ষা জরুরি। কোরআন আবমাননার জন্য শাস্তিযোগ্য আইন করতে হবে।
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে হেফাজতের যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা মামুনুল হক বলেন, হেফাজতে ইসলাম অরাজনৈতিক ধর্মীয় একটি সংগঠন। কোন দলীয় রাজনৈতিক সাংগঠনিক কাজের সঙ্গে সম্পৃক্ততা নেই। নির্বাচন নিয়ে হেফাজতের নিজস্ব কোন তৎপরতা বা জোট করা হেফাজতের মৌলিক নীতির পরিপন্থি। তবে হেফাজতে রাজনৈতিক-অরাজনৈতিক, দেশপ্রেমিক ব্যক্তিরা আছেন। তারা যার যার রাজনৈতিক বক্তব্য ও এজেন্ডা বাস্তবায়ন করেন। এর সঙ্গে হেফাজতের কোন সম্পর্ক নেই, হেফাজত কোন দায় নেবে না।
ভোট নিয়ে হেফাজত আমিরের একটি বক্তব্য প্রসঙ্গে মামুনুল হক বলেন, হেফাজত আমির দেশের একজন শীর্ষ আলেম ও মুরব্বি। তিনি তার মুরব্বির জায়গা থেকে ধর্মীয় নির্দেশনা দিয়ে থাকেন।
তবে ধর্মীয় দৃষ্টিতে কাকে ভোট দেয়া যাবে বা যাবে না-এ বিষয়ে হেফাজতের বক্তব্য জানতে চাইলে তিনি বলেন, ভোটের সময় এ বিষয়ে হেফাজত তার দৃষ্টিভঙ্গি তুলে ধরবে।
বিভিন্ন মাজারে হামলা প্রসঙ্গে প্রসঙ্গে মামুনুল হক বলেন, বিভিন্ন মাজারে ইসলাম ও সমাজবিরোধী এবং অনৈতিক কর্মকাণ্ড হয় বলে শোনা যায়। এসব কর্মকাণ্ড বন্ধে আমরা সরকারকে ব্যবস্থা নেয়ার দাবি জানাই। তবে হেফাজত আইন হাতে তুলে নেবে না।
সংবাদ সম্মেলনে দোয়া ও মোনাজাত করেন হেফাজতের আমির আল্লামা মুহিব্বুল্লাহ বাবুনগরী, নায়েবে আমির মুফতি জসিম উদ্নি, মাওলানা আব্দুল আউয়াল, মাওলানা মাহফুজুল হক, মাওলানা আহমদ আলী কাসেমী, সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা জুনায়েদ আল হাবীব, যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা ফজলুল করিম কাসেমী, খালেদ সাইফুল্লাহ আইয়ুবী, সহকারী মহাসচিব মুফতি সাখাওয়াত হোসাইন রাজি প্রমুখ।
চব্বিশের গণ-অভ্যুত্থান পরবর্তী ‘জুলাই জাতীয় সনদ-২০২৫’ স্বাক্ষর অনুষ্ঠান হবে ১৭ অক্টোবর শুক্রবার। জাতীয় সংসদ ভবনের দক্ষিণ প্লাজায় ওইদিন বিকালে এ অনুষ্ঠান হবে।
জুলাই সনদ বাস্তবায়নের পদ্ধতিতে গণভোটের সময়সূচি নিয়ে মতবিরোধ থাকলেও সনদে সইয়ের জন্য প্রস্তুতি নিয়েছে বিএনপি, জামায়াতে ইসলামী ও জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)। সনদে কারা সই করবেন, সেটিও দলগুলো ঠিক করে রেখেছেন। তবে সংশ্লিষ্ট রাজনৈতিক দলগুলোর একাধিক নেতা জানিয়েছেন, তারা ‘জুলাই জাতীয় সনদ-২০২৫’-এর চূড়ান্ত কপি দেখে তারপরই সইয়ের বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবেন।
বিএনপির সূত্র জানিয়েছে, দলটি জুলাই সনদে স্বাক্ষরের জন্য প্রস্তুত। দলের পক্ষে দুজন নেতা এ সনদে স্বাক্ষর করবেন। তারা হলেন- বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ও স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ। জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে আলোচনায় বিএনপির পক্ষে নেতৃত্ব দিয়েছেন সালাহউদ্দিন আহমদ। আর সার্বিকভাবে গত ১৭ বছর রাজপথের আন্দোলনে বিএনপির সাংগঠনিক বিষয়গুলো তদারকি করেছেন মহাসচিব মির্জা ফখরুল। দলের স্থায়ী কমিটি তাদের মনোনয়ন চূড়ান্ত করে আরও আগেই নাম পাঠিয়েছে ঐকমত্য কমিশনে।
মন্তব্য