কক্সবাজারের পেকুয়ায় সিএনজিচালিত অটোরিকশার সিলিন্ডার বিস্ফোরণে ছয়জন দগ্ধ হয়েছেন। তাদের মধ্যে তিনজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে জানিয়েছেন চিকিৎসক।
শুক্রবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে এ দুর্ঘটনা ঘটে।
আহতরা হলেন মো. শামীম, রুহুল আমিন, নুরুল আলম, তানিম, তৌহিদ ও তারেক।
পেকুয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) ডা. মুজিবুর রহমান বলেন, গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফোরণে দগ্ধ ছয়জনকে হাসপাতালে আনা হয়। এদের মধ্যে তিনজনের শরীরের ৩০ শতাংশের বেশি পুড়ে যাওয়ায় তাদেরকে চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। বাকিদের উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে।
আহদের বরাতে মুজিবুর রহমান বলেন, দুপুরে গ্যারেজে একটি সিএনজিচালিত অটোরিকশা মেরামতের জন্য আনা হয়। এ সময় গ্যাস সিলিন্ডার বের করতে গেলে সেটি বিকট শব্দে বিস্ফোরণ হয়। এ সময় গ্যারেজের কর্মীসহ ছয়জন দগ্ধ হন।
চট্টগ্রাম হাসপাতাল পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ জহিরুল হক বলেন, কক্সবাজারের পেকুয়া গ্যারেজে কাজ করার সময় সিএনজি সিলিন্ডার বিস্ফোরণে আহত ৬ জনকে বিকেল ৪টার দিকে হাসপাতালে আনা হয়। তাদেরকে বার্ন ইউনিটে ভর্তি করা হয়েছে।
মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ফরিদা আখতার বলেছেন, বাংলাদেশে খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে খাদ্য অপচয় ও ক্ষতি রোধ করতে হবে। তিনি বলেন, একদিকে অনেক মানুষ খাদ্যের অভাবে অনাহারে থাকছে, অন্যদিকে উৎপাদিত বিপুল খাদ্যের একটি বড় অংশ অপচয় হচ্ছে- যা দুঃখজনক।
উপদেষ্টা আজ সকালে রাজধানীর প্যান প্যাসিফিক সোনারগাঁও হোটেলে সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ (সিপিডি) আয়োজিত “Towards Zero Food Waste and Loss: Building a Sustainable Food Value Chain in Bangladesh” -শীর্ষক জাতীয় সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন।
মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা বলেন, বিশ্ব খাদ্য সংস্থা ১৯৯৬ সাল থেকে খাদ্যের নিরাপত্তা নিয়ে কথা বলেছে। তখন খাদ্য প্রাপ্ততা বড় বিষয় ছিল। এখন খাদ্য নিরাপত্তার সঙ্গে পুষ্টিও যুক্ত হয়েছে। দেশে বর্তমানে মাছের উৎপাদন সম্পর্কে তিনি বলেন, আগে যেখানে প্রাকৃতিক উৎস থেকে ৬০ শতাংশ ও চাষ থেকে ৪০ শতাংশ আসতো বর্তমানে চাষ থেকে আসছে ৬০ শতাংশ ও প্রাকৃতিক উৎস থেকে ৪০ শতাংশ। আর তাই প্রাকৃতিক মাছ নষ্ট হওয়া প্রতিরোধে কাজ করতে হবে।
উপদেষ্টা বলেন, কৃষি, প্রাণিসম্পদ ও মৎস্য খাতের পণ্য পচনশীল হওয়ায় সংরক্ষণ ও বাজারজাতকরণে অবকাঠামোগত দুর্বলতা এবং ন্যায্য মূল্য নিশ্চিত না হওয়ায় কৃষকরা বড় ধরনের ক্ষতির মুখে পড়ছেন। ফলে দুধ, ডিম, মাছ ও মাংসসহ নানা খাদ্যপণ্য অপচয়ের শিকার হচ্ছে।
মৎস্য উপদেষ্টা উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেন, সামুদ্রিক মৎস্য খাতে অনিয়ন্ত্রিত ও অবৈধ জাল ব্যবহার, লক্ষ্যভিত্তিক মাছ ধরা এবং অপ্রচলিত প্রজাতি বাজারজাতের অভাবে বিপুল পরিমাণ মাছ ফেলে দিতে হচ্ছে।
তিনি আরো বলেন, মাছের বৈচিত্র্য হারিয়ে যাচ্ছে; একসময় ২৬৭ প্রজাতির দেশীয় মাছ পাওয়া যেত, এখন তা ক্রমেই হ্রাস পাচ্ছে। এটি দীর্ঘমেয়াদে খাদ্য নিরাপত্তায় মারাত্মক প্রভাব ফেলবে।
উপদেষ্টা আশা প্রকাশ করে বলেন, ২০৩০ সালের মধ্যে খাদ্য অপচয় ও ক্ষতি উল্লেখযোগ্য হারে কমাতে পারলে খাদ্য নিরাপত্তা, পুষ্টি সুরক্ষা ও জনগণের সার্বিক কল্যাণ নিশ্চিত করা সম্ভব হবে।
সিপিডির নির্বাহী পরিচালক ড. ফাহমিদা খাতুনের সঞ্চালনায় স্বাগত বক্তব্য রাখেন করেন বাংলাদেশে ডেনমার্ক দূতাবাসের চার্জ দ্য অ্যাফেয়ার্স মি. অ্যান্ডায়ার্স কার্লসেন ( Mr. Anders Karlsen), খাদ্য ও কৃষি সংস্থা (এফএও)-এর ডেপুটি প্রতিনিধি মি. দিয়া সানু ( Mr. Dia Sanou), ওয়ার্ল্ড ফুড প্রোগ্রাম (ডব্লিউএফপি)-এর ডেপুটি কান্ট্রি ডিরেক্টর মি. জেসে উড ( Mr. Jsse Wood) । অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন খাদ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মোহাম্মদ ইয়াসিন।
বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত মার্কিন বিনিয়োগকারী ও স্ন্যাপচ্যাটের সাবেক প্রধান কৌশলগত কর্মকর্তা (সিএসও) ইমরান খান সাক্ষাৎ করেছেন।
নিউইয়র্কের স্থানীয় সময় শনিবার তিনি সাক্ষাৎ করেন। এ সময়ে ইমরান খান বাংলাদেশে বিনিয়োগের আগ্রহ প্রকাশ করেন।
ইমরান খানের বর্তমানের বয়স ৪৮ বছর। তিনি ১৮ বছর বয়সে উচ্চশিক্ষার জন্য যুক্তরাষ্ট্রে পাড়ি জমান এবং প্রযুক্তি কোম্পানিতে বিনিয়োগ ব্যাংকার হিসেবে খ্যাতি অর্জন করেন। বর্তমানে তিনি আলেফ হোল্ডিং-এর বোর্ড চেয়ারম্যান।
অধ্যাপক ইউনূস বাংলাদেশে দ্রুত বর্ধনশীল ফিনটেক, স্বাস্থ্যসেবা ও সামাজিক ব্যবসা খাতে বিনিয়োগের আহ্বান জানান। ইমরান খান বলেন, দারিদ্র্য দূরীকরণে ইউনূসের আজীবন মিশন তাঁকে গভীরভাবে অনুপ্রাণিত করেছে এবং এখনই মাতৃভূমিতে বিনিয়োগের উপযুক্ত সময়।
তিনি অধ্যাপক ইউনূসকে উদ্দেশ্য করে বলেন, ‘আমি আপনার কাজের একজন বড় ভক্ত। আপনি আমাদের জাতীয় গর্ব।’
জেপি মরগান ও ক্রেডিট সুইসে বিনিয়োগ ব্যাংকার হিসেবে কর্মজীবন শুরু করা ইমরান আলিবাবার রেকর্ড ভাঙা আইপিও-তে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকার মাধ্যমে বিশ্বব্যাপী পরিচিতি পান। পরবর্তীকালে স্ন্যাপচ্যাটের সিএসও হিসেবে কয়েক মাসের মধ্যেই কোম্পানির মূল্য শূন্য থেকে ৭২৮ মিলিয়ন মার্কিন ডলারে উন্নীত করেন।
আলোচনায় ইমরান খান জানান, অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে তিনি বাংলাদেশে বিনিয়োগ পরিবেশ নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করছেন। তাঁর ভাষায়, ‘সময়টি অনুকূল। নিয়ন্ত্রক পরিবেশ এখন আরও সহায়ক হয়েছে।’
তিনি বিশেষভাবে ফিনটেক খাতের দ্রুত বিকাশ নিয়ে আশা প্রকাশ করেন এবং সঠিক সুযোগ তৈরি হলে বিনিয়োগের আশ্বাস দেন। ‘বাংলাদেশ একটি ফ্রন্টিয়ার মার্কেট। এখানে ফিনটেক খাতে প্রবৃদ্ধির সম্ভাবনা বিপুল। তরুণ জনগোষ্ঠী বিশাল এবং সুযোগ সীমাহীন।’
ইমরান খান ২০১৮ সালে প্রাইম অ্যাসেট নামে একটি বিনিয়োগ প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলেন, যা মূলত প্রযুক্তি-নির্ভর রূপান্তরের মধ্য দিয়ে যাওয়া খাতে বিশেষ বিনিয়োগ করে, বিশেষ করে ফিনটেক ক্ষেত্রে। তাঁর পোর্টফোলিওতে পেমেন্টস, ডিজিটাল অবকাঠামোসহ একাধিক খাত রয়েছে।
অধ্যাপক ইউনূস ইমরান খানকে শিগগিরই বাংলাদেশ সফরের আমন্ত্রণ জানান, যেন তিনি নিজে এসে বিনিয়োগ সম্ভাবনা ঘনিষ্ঠভাবে দেখতে পারেন। জবাবে ইমরান খান আগামী মাসগুলোতে বাংলাদেশ সফরের পরিকল্পনার কথা জানান।
অধ্যাপক ইউনূস বলেন, ‘বাংলাদেশের তরুণদের জন্য আপনার মতো রোল মডেল প্রয়োজন। দেশে এখন উদ্দীপনামূলক সময় চলছে—আপনি নতুন প্রজন্মকে অনুপ্রাণিত করতে পারেন।’
সাক্ষাৎকালে প্রধান উপদেষ্টা যুক্তরাষ্ট্রের শীর্ষ বিনিয়োগকারীদের প্রতি তাঁদের মোট বিনিয়োগের এক শতাংশ সামাজিক ব্যবসায় ব্যয় করার অথবা সমমনাদের অংশগ্রহণে একটি সামাজিক ব্যবসা তহবিল গঠনের প্রস্তাব দেন। ইমরান খান এ প্রস্তাবকে স্বাগত জানান এবং এতে ভবিষ্যতে সম্পৃক্ত হওয়ার আগ্রহ প্রকাশ করেন।
সাক্ষাৎকালে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ের এসডিজি বিষয়ক মুখ্য সমন্বয়ক লামিয়া মোরশেদ উপস্থিত ছিলেন।
মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা ফরিদা আখতার বলেছেন, ইলিশের ডিম ছাড়া ও প্রজননের জন্য এ বছর ৪ থেকে ২৫ অক্টোবর পর্যন্ত ২২ দিন মা ইলিশ রক্ষায় বিশেষ অভিযান পরিচালনা করা হবে। এ সময় ইলিশ আহরণ, পরিবহন, বিপণন ও মজুত নিষিদ্ধ করা হয়েছে।
উপদেষ্টা আজ দুপুরে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে ইলিশের প্রধান প্রজনন মৌসুমে "মা ইলিশ সংরক্ষণ অভিযান ২০২৫" এবং সারাদেশে ইলিশের প্রাপ্যতা, আহরণ, মূল্য এবং রপ্তানি পরিস্থিতি নিয়ে সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন।
মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা বলেন, মা ইলিশ রক্ষা করতে বিজ্ঞানভিত্তিক প্রজনন সময় বিবেচনায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। মৎস্য অধিদপ্তর, বাংলাদেশ মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউট (বিএফআরআই) এবং অন্যান্য সংশ্লিষ্ট সংস্থা, বিশেষ করে মৎস্যজীবীদের মতামত অনুযায়ী এই সময়সীমা নির্ধারণ করা হয়।
মৎস্য উপদেষ্টা বলেন, ইলিশের প্রধান প্রজনন মৌসুমে ১৯ আশ্বিন থেকে ৯ কার্তিক ১৪৩২ (৪ থেকে ২৫ অক্টোবর ২০২৫ )। আশ্বিনী পূর্ণিমার পূর্বের ৪ দিন এবং অমাবস্যার পরের ৩ দিনকে অন্তর্ভুক্ত করে মোট ২২ দিন এই অভিযান চলবে। প্রজনন মৌসুমের পূর্ণিমা ও অমাবস্যা উভয় সময়ই ডিম পাড়ার জন্য গুরুত্বপূর্ণ হওয়ায়, দুটি পর্যায় অন্তর্ভুক্ত করে সর্বোচ্চ প্রজনন নিশ্চিত করা হয়েছে। এই কর্মসূচি “মা ইলিশ সংরক্ষণ অভিযান ২০২৫” নামে পরিচিত। অভিযান পরিচালনায় মৎস্য কর্মকর্তাদের পাশাপাশি নৌ পুলিশ, কোস্ট গার্ড, নৌবাহিনী এবং বিমান বাহিনীসহ সকল আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী অংশগ্রহণ করবে।
জেলেদের জন্য সরকারের উদ্যোগ সম্পর্কে উপদেষ্টা বলেন, ৩৭টি জেলার ১৬৫টি উপজেলার ৬ লাখ ২০ হাজার ১৪০ জেলে পরিবারকে ভিজিএফ (চাল) দেওয়া হবে, পরিবার প্রতি বরাদ্দ থাকবে ২৫ কেজি করে চাল, যা পুরো কার্যক্রমে মোট ১৫ হাজার ৫০৩.৫০ মেট্রিক টন চাল প্রয়োজন হবে। তিনি আরো বলেন, এ অভিযানের সময় জলসীমার বাইরে মাছ ধরা ট্রলারের অনুপ্রবেশ কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রণ করা হবে। নদীতে এই সময় ড্রেজিং সম্পূর্ণভাবে বন্ধ রাখা হবে। একইসাথে সমুদ্র, উপকূল ও মোহনায়ও প্রধান প্রজনন মৌসুমে ২২ দিন ধরে ইলিশ আহরণ সম্পূর্ণভাবে বন্ধ থাকবে।
উপদেষ্টা আরো বলেন, বিএফআরআই'র গবেষণা অনুযায়ী, ২০২৪ সালের নিষেধাজ্ঞার ফলে ৫২.৫% মা ইলিশ নিরাপদে ডিম ছেড়েছিল। এর ফলে ৪৪.২৫ হাজার কোটি জাটকা/রেণু ইলিশ পরিবারে যুক্ত হয়েছে। এই ডিম থেকে উৎপন্ন রেণু বা পোনা (জাটকা) ভবিষ্যতে পরিপক্ক ইলিশে পরিণত হবে।
ইলিশ আহরণ সম্পর্কে উপদেষ্টা বলেন, গত ৫ বছরে ইলিশ আহরণ কমেছে প্রায় ১০ শতাংশ। ২০২০-২১ থেকে ২০২৪-২৫ পর্যন্ত ইলিশ আহরণ ক্রমাগত হ্রাস পেয়েছে। তিনি বলেন, চলতি বছরের জুনের মাঝামাঝি সময়ে সারা দেশের ইলিশের জাটকা ইলিশ আহরণের নিষেধাজ্ঞা শেষ হওয়ার পর আশা করা হয়েছিল বাজারে ইলিশের প্রাপ্যতা বৃদ্ধি পাবে। তবে মৎস্য অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, জুলাই ও আগস্ট মাসে ইলিশ আহরণ ২০২৪ সালের তুলনায় যথাক্রমে ৩৩.২০% এবং ৪৭.৩১% কম হয়েছে। এই দুই মাসে মোট আহরণ হয়েছে ৩৫,৯৯৩.৫০ মেট্রিক টন, যা ২০২৪ সালের তুলনায় ২২,৯৪১.৭৮ মেট্রিক টন (৩৮.৯৩%) কম।
তিনি আরো বলেন, বাংলাদেশ থেকে ইলিশ রপ্তানি উল্লেখযোগ্যভাবে ২০১০-১১ ও ২০১১-১২ অর্থবছরে সম্পন্ন হয়েছিল। ২০১০-১১ সালে ৮,৫৩৮.৭৭ মেট্রিক টন ইলিশ রপ্তানির মাধ্যমে ৩৫২.৪৯ কোটি টাকা বৈদেশিক মুদ্রা অর্জিত হয়েছিল। ২০২০-২১ অর্থবছরে রপ্তানির জন্য অনুমোদনের পরিমাণ ১,৮৭৫ মেট্রিক টন আর প্রকৃত রপ্তানি হয়েছিল ১,৮৭৫ মেট্রিক টন যার রপ্তানি মূল্য ছিল ১৫৪ কোটি টাকা। ২০২১-২২ অর্থবছর রপ্তানির জন্য অনুমোদনের পরিমাণ ৪,৬০০ মেট্রিক টন আর প্রকৃত রপ্তানি হয় ১,২১১ মেট্রিক টন যার রপ্তানি মূল্য ১১৩ কোটি টাকা। ২০২২-২৩ অর্থবছরে রপ্তানির জন্য অনুমোদনের পরিমাণ ৩,০০০ মেট্রিক টন আর প্রকৃত রপ্তানি হয় ১,৩৭৬ মেট্রিক টন যার রপ্তানি মূল্য ১৪৮ কোটি টাকা। ২০২৩-২৪ অর্থবছরে রপ্তানির জন্য অনুমোদনের পরিমাণ ৩,৫৫০ মেট্রিক টন আর প্রকৃত রপ্তানি হয় ৬৬৫ মেট্রিক টন যার রপ্তানি মূল্য ৮৫ কোটি টাকা। ২০২৪-২৫ অর্থবছরে রপ্তানির জন্য অনুমোদনের পরিমাণ ২,৪২০ মেট্রিক টন আর প্রকৃত রপ্তানি হয় ৫৭৪ মেট্রিক টন যার রপ্তানি মূল্য ৬৮ কোটি টাকা। ২০২৫-২৬ অর্থবছরে রপ্তানির জন্য অনুমোদনের পরিমাণ ১,২০০ মেট্রিক টন -প্রকৃত রপ্তানি চলমান। সামগ্রিকভাবে দেখা যায়, অনুমোদিত পরিমাণের তুলনায় প্রকৃত রপ্তানি ধীরে ধীরে কমে আসছে।
উপদেষ্টা বলেন, বাণিজ্য মন্ত্রণালয় নির্ধারিত প্রতি কেজি ইলিশের রপ্তানি মূল্য ১২.৫০ ডলার (প্রতি ডলার = ১২১.৭২ টাকা)। এ হিসাবে বেনাপল স্হল বন্দর দিয়ে ৮১,৪৩৮ কেজি ইলিশের বাজার মূল্য দাঁড়ায় ১২ কোটি ৩৯ লাখ ৭ হাজার ৯১৭ টাকা। এ ছাড়া, আখাউড়া স্থলবন্দর দিয়ে ২২.২৬ মেট্রিক টন ইলিশ রপ্তানি হয়েছে, যার বাজার মূল্য ৩ কোটি ৩৮ লাখ ১৫৪ টাকা।
একটি মহল খাগড়াছড়ি পরিস্থিতি ঘোলাটে করার চেষ্টা করছে বলে মন্তব্য করেছেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী। তিনি বলেন, একটি মহল শান্তিপূর্ণভাবে যাতে দুর্গাপূজা না হয়, সেই চেষ্টা চালাচ্ছে। এই মহলই খাগড়াছড়িতে এসব করছে। ভারত বা ফ্যাসিস্টদের ইন্ধনে এই ঘটনা ঘটছে।
এই ঘটনা যাতে না ঘটে, সর্বোচ্চ ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।
সোমবার (২৯ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর রমনায় ডিএমপির পাঁচটি থানার ভবন নির্মাণকাজের উদ্বোধন শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এ কথা বলেন তিনি।
স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার দাবি, দেশে দুর্গাপূজা যেন উৎসবমুখর না হয়, সে জন্যই খাগড়াছড়িতে এমন ঘটনা ঘটানো হয়েছে।
তিনি বলেন, খাগড়াছড়িসহ পার্বত্য অঞ্চলে অস্থিতিশীল পরিস্থিতিতে আটকা পড়া পর্যটকদের বেশির ভাগকে ফিরিয়ে আনা হয়েছে।
খাগড়াছড়ি পরিস্থিতি এখন সন্তোষজনক।
দেশে ধর্মীয় উৎসব দুর্গাপূজা শুরু হয়েছে। এই উৎসবের সময় কেউ যেন বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি না করে এবং পূজা যেন নির্বিঘ্নে আয়োজিত হয়, এ জন্য সবাইকে সহায়তা করার আহ্বান জানান স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা।
টাঙ্গাইলের সখীপুর উপজেলার বাঘবেড়-গজারিয়া সড়কের গোহালিয়া খালের ওপর ঝুঁকিপূর্ণ কাঠের সাঁকোতে পারাপার হচ্ছে এলাকাবাসী। তাদের দীর্ঘ দিনের দাবি ওই কাঁচা সড়কটি ও ভাঙ্গাচোরা নড়বড়ে কাঠের সাঁকোটি পাকাকরণের। কিন্তু, সে দাবি এখনও পূরণ হয়নি। ফলে ঝুঁকি নিয়েই ওই রাস্তা দিয়ে চলাচল করতে হচ্ছে জনসাধারণের।
সরেজমিনে দেখা যায়, গোহালিয়া খালের উত্তরের শেষ সীমানায় কাঠের সাঁকোটিতে ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছে লোকজন। ঝুঁকিপূর্ণ কাঠের সাঁকো দিয়ে ভ্যান গাড়িসহ কোনো ধরনের যানবাহন চলে না। মালামাল পরিবহন করতে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হয় গ্রামবাসীর।
ওই গ্রামের অজুফা খাতুন বলেন, আমাদের বাচ্চাদের স্কুলে যেতে সমস্যা হয়। সাধারণ মানুষের চলাচল করতে অসুবিধা হয়। সরকার যদি আমাদের ব্রীজটা তাড়াতাড়ি করে দিতো, তাহলে খুব উপকার হতো।
কে.জি.কে উচ্চ বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণির শিক্ষার্থী মারিয়া বলেন, বর্ষাকালে এই সাঁকোটা পানির নিচে ডুবে থাকে। তখন ঝুঁকি নিয়েই আমাদের পারাপার হতে হয়। অনেক সময় আমাদের স্কুলে যাওয়া হয়না। এতে আমরা পড়াশুনায় পিছিয়ে যাই।
গজারিয়া গ্রামের বাসিন্দা রতন মিয়া বলেন, ব্রীজ না থাকায় আমাদের হাঁটে বাজারে যেতে কষ্ট হয়। এমনকি কোন রোগী হাসপাতালে নেওয়া আরও কষ্ট হয়ে যায়। এই এলাকার কৃষিপণ্য ধান, সবজি, কলা এগুলো বিক্রি করার জন্য ৩-৪ কিলোমিটার ঘুরে বাজারে যেতে হয়।
বাঘবেড় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ফারুক হোসেন বলেন, খালের ওই পাড়ে আমাদের স্কুলের অনেক শিক্ষার্থী আছে। এই সাঁকোটা বিভিন্ন সময় বাঁশ-কাঠ দিয়ে তৈরি করা হয়েছে। এই সাঁকোটার যদি স্থায়ী একটা সমাধান হতো, তাহলে ছেলে মেয়েরা নিরাপদে স্কুলে আসা যাওয়া করতে পারতো।
গজারিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান এডভোকেট আনোয়ার হোসেন বলেন, বাঘবেড়-গোহালিয়া খালের উপর সাঁকোটি খুব গুরুত্বপূর্ণ। আশেপাশের কয়েকটি গ্রামের মানুষ ওই সাঁকো দিয়ে ঝুঁকি নিয়েই চলাচল করে। আশাকরি দ্রুত সময়ের মধ্যে সেতুটি পাকা হবে।
সখীপুর উপজেলা প্রকৌশলী মো. আরিফুর রহমান বলেন, গোহালিয়া খালের উপর যে কাঠের সাঁকোটি রয়েছে, বর্তমানে এলজিইডির কোন প্রজেক্টে অন্তর্ভুক্ত নেই। এটা ভবিষ্যতে নির্মাণের জন্য আমরা উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে কারিগরি রিপোর্ট প্রদান করবো। আশা করি অনুমোদন সাপেক্ষে পরবর্তীতে উন্নয়ন কাজ সাধিত হবে।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার আব্দুল্লাহ্ আল রনী বলেন, স্থানীয় জন প্রতিনিধিদের সাথে কথা দ্রুত সময়ের মধ্যে সেতুটি পাকা করা হবে।
নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজারে চাঁদাবাজির অভিযোগে সোহেল মেম্বার (৩৮) নামের এক ব্যক্তিকে গণপিটুনি দিয়ে হত্যা করেছে বিক্ষুব্ধ গ্রামবাসী। সোমবার (২৯ সেপ্টেম্বর) সকাল সাড়ে ৯টার দিকে উপজেলার ব্রাহ্মন্দী ইউনিয়নের বালিয়াপাড়া স্ট্যান্ড বটতলা এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
নিহত সোহেল মেম্বার উপজেলার বালিয়াপাড়া গ্রামের মৃত মকবুল হোসেনের ছেলে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, সকালে সোহেল মেম্বার অজ্ঞাত তিনজন সহযোগীকে নিয়ে বালিয়াপাড়া এলাকার মৃত হাফেজ সাহেবের ছেলে শরিফের বাড়িতে চাঁদা আদায়ের জন্য যায়। এসময় শরিফের পরিবারের লোকজনের সঙ্গে সোহেল মেম্বারের বাকবিতণ্ডা হয়। একপর্যায়ে শরিফের পরিবার স্থানীয়দের সহায়তায় সোহেল মেম্বারকে আটক করে এবং গ্রামবাসীকে খবর দেয় ।
খবর ছড়িয়ে পড়লে উত্তেজিত গ্রামবাসী ঘটনাস্থলে জড়ো হয়ে সোহেল মেম্বারকে হাত-পা বেঁধে মারধর শুরু করে। এতে তিনি গুরুতর আহত হন এবং ঘটনাস্থলেই মারা যান। এ সময় তার সঙ্গে থাকা তিন সহযোগী পালিয়ে যায়।
সংবাদ পেয়ে আড়াইহাজার থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে পরে মরদেহ নারায়ণগঞ্জ সরকারি ভিক্টোরিয়া হাসপাতালের মর্গে পাঠানোর ব্যবস্থা নেয়।
আড়াইহাজার থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) খন্দকার নাসির উদ্দীন জানান, “ আমরা সংবাদ পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে নিহতের মরদেহ উদ্ধার করি। তবে কি কারণে তাকে মারা হলো বিষয়টা এখনও জানা যায়নি।প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, চাঁদাবাজির অভিযোগকে কেন্দ্র করে এ হত্যাকাণ্ড ঘটেছে। পরিস্থিতি বর্তমানে শান্ত রয়েছে এবং আইনশৃঙ্খলা বাহিনী এলাকায় টহল দিচ্ছে। ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের শনাক্তের চেষ্টা চলছে।”
প্রসঙ্গত, সোহেল মেম্বার আড়াইহাজারের শীর্ষ সন্ত্রাসী ও মাদক কারবারি হিসেবে পরিচিত ছিলেন। র্যাবের তথ্য অনুযায়ী, তার বিরুদ্ধে সন্ত্রাস, মাদক, অপহরণ, চুরি ও হত্যা চেষ্টাসহ অন্তত ১৪-১৫টি মামলা রয়েছে। গত ১৩ জুন কুমিল্লার দাউদকান্দি ব্রিজ টোল প্লাজা এলাকায় অভিযান চালিয়ে র্যাব-১১ তাকে সহযোগী ফজলুল হক ফজু সহ গ্রেপ্তার করেছিল।
লক্ষ্মীপুরের রামগতিতে সরকারি নির্দেশ অমান্য করে বিনামূল্যের টাইফয়েড ভ্যাকসিন নিবন্ধনে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে টাকা নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে এক প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে। ঘটনাটি ঘটেছে উপজেলার চরগাজী ইউনিয়নের চরলক্ষ্মী গ্রামের আবদুল ওয়াহেদ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ওমর ফারুকের বিরুদ্ধে। এই ঘটনায় শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।
জানা যায়, ৯ মাস থেকে ১৫ বছর বয়স পর্যন্ত সকল শিক্ষার্থী ও শিশু-কিশোরদের বিনামূল্যে টাইফয়েড ভ্যাকসিনের টিকা দিবে সরকার। টিকা নিতে প্রত্যেক শিশু ও কিশোর-কিশোরীকে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অ্যাপসের মাধ্যমে নিবন্ধন করতে হবে। এতে গত আগস্ট মাসে প্রধান শিক্ষকদের সভা করে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা। প্রাথমিক ও মাধ্যমিক বিদ্যালয় পড়ুয়া শিক্ষার্থীদের নিবন্ধন সম্পন্ন করতে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকদের নির্দেশনা দেন ইউএনও। পহেলা আগস্ট থেকে এই নিবন্ধন কার্যক্রম শুরু হয়। তবে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বিনামূল্যে এই নিবন্ধন করার নির্দেশ দিলেও রামগতি উপজেলার চরগাজী ইউনিয়নের ৬ নম্বর ওয়ার্ডের চরলক্ষ্মী গ্রামের আবদুল ওয়াহেদ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ওমর ফারুক শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে ৫০ টাকা করে নিয়ে নিবন্ধন করাচ্ছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। শ্রেণি শিক্ষকরা এসব টাকা উত্তোলন করে প্রধান শিক্ষক ওমর ফারুককের হাতে তুলে দেন।
এদিকে অনলাইনে একজন শিশুর টিকার নিবন্ধন করে প্রিন্ট দিতে সর্বোচ্চ ৫ টাকা খরচ হয়। যা বিদ্যালয়ের বহন করার কথা। কিন্তু বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে হাতিয়ে নিচ্ছে ৫০ টাকা করে।
নাম প্রকাশের অনিচ্ছুক তিনজন অভিভাবক অভিযোগ করে বলেন, ওই বিদ্যালয়ে প্রায় ২৫০ জন শিক্ষার্থীর নিবন্ধন করতে ১২ হাজার টাকা আদায় করছেন প্রধান শিক্ষক ওমর ফারুক। তাহলে বিদ্যালয়ে সরকার প্রদত্ত বছরে লাখ টাকা কোথায় যায়। সরকার থেকে টিআর কাবিখা সহ উন্নয়নের নামে নানা প্রকল্প এনে তা আত্মসাৎ করার অভিযোগ রয়েছে ওমর ফারুকের বিরুদ্ধে।
এদিকে বিদ্যালয়টির সহকারী শিক্ষিকা সালমা সুলতানা রিমার স্বামী স্থানীয় প্রভাবশালী হওয়ায় স্কুলে একনায়কতন্ত্র কায়েম করে রেখেছেন রিমা। স্কুলে অনুপস্থিত থাকা সহ নানান ধরনের অনিয়মের অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে।
এসব বিষয়ে অভিভাবকরা প্রতিবাদ করলে শিশুদের ফেল করার হুমকি দেন প্রধান শিক্ষক। তাই ভয়ে কেউ সরাসরি প্রতিবাদ করার সাহস পাচ্ছেনা।
শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে ৫০ টাকা নেওয়ার কথা স্বীকার করে প্রধান শিক্ষক ওমর ফারুক বলেন, উপজেলা শিক্ষা অফিসকে টাকা দিতে হয়। এজন্য আমি ৫০ টাকা করে নিয়েছি।
উপজেলা শিক্ষা অফিসার মু.সাইদুর রহমান স্বপন বলেন, বিনামূল্যে টিকা দিবে সরকার। এতে কোন টাকা পয়শা নেওয়ার প্রশ্নই উঠেনা। আমার নাম বিক্রি করে টাকা নিলে ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে দাপ্তরিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
মন্তব্য