× হোম জাতীয় রাজধানী সারা দেশ অনুসন্ধান বিশেষ রাজনীতি আইন-অপরাধ ফলোআপ কৃষি বিজ্ঞান চাকরি-ক্যারিয়ার প্রযুক্তি উদ্যোগ আয়োজন ফোরাম অন্যান্য ঐতিহ্য বিনোদন সাহিত্য শিল্প ইভেন্ট উৎসব ধর্ম ট্রেন্ড রূপচর্চা টিপস ফুড অ্যান্ড ট্রাভেল সোশ্যাল মিডিয়া বিচিত্র সিটিজেন জার্নালিজম ব্যাংক পুঁজিবাজার বিমা বাজার অন্যান্য ট্রান্সজেন্ডার নারী পুরুষ নির্বাচন রেস অন্যান্য আফগানিস্তান ১৫ আগস্ট কী-কেন স্বপ্ন বাজেট আরব বিশ্ব পরিবেশ বিশ্লেষণ ইন্টারভিউ মুজিব শতবর্ষ ভিডিও যৌনতা-প্রজনন মানসিক স্বাস্থ্য অন্যান্য উদ্ভাবন প্রবাসী আফ্রিকা ক্রিকেট শারীরিক স্বাস্থ্য আমেরিকা দক্ষিণ এশিয়া সিনেমা নাটক মিউজিক শোবিজ অন্যান্য ক্যাম্পাস পরীক্ষা শিক্ষক গবেষণা অন্যান্য কোভিড ১৯ ইউরোপ ব্লকচেইন ভাষান্তর অন্যান্য ফুটবল অন্যান্য পডকাস্ট বাংলা কনভার্টার নামাজের সময়সূচি আমাদের সম্পর্কে যোগাযোগ প্রাইভেসি পলিসি

সারা দেশ
সারা দেশে শাটডাউন
google_news print-icon

চলাচল ঠেকাতে কঠোর অবস্থান সারা দেশেই

চলাচল-ঠেকাতে-কঠোর-অবস্থান-সারা-দেশেই-
‘আমরা লকডাউন বাস্তবায়নে খুবই কঠোর অবস্থানে রয়েছি। বিনা কারণে যারাই বের হচ্ছে, তাদের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ গ্রহণ করছি।’ শাটডাউনের প্রথম দিনে কুমিল্লা জেলা প্রশাসকের এমন বক্তব্যের প্রতিফলন ছিল সারা দেশেই। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর তৎপরতায় রাস্তায় মানুষের উপস্থিতি ছিল কম। গণপরিবহন না থাকায় গন্তব্যে পৌঁছাতে ভোগান্তির শিকার হয়েছেন পোশাকশ্রমিকরা।

করোনাভাইরাস নিয়ন্ত্রণে দেশজুড়ে চলা শাটডাউনের প্রথম দিনে বেশির ভাগ বিভাগীয় শহর ও জেলায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও সেনাসদস্যদের টহল ছিল চোখে পড়ার মতো। বৃহস্পতিবার বিকেল চারটায় এই প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত সড়কে গণপরিবহন ও মানুষের উপস্থিতি ছিল কম।

যানবাহন না থাকায় গন্তব্যে পৌঁছাতে ভোগান্তিতে পড়েন পোশাক কারখানার শ্রমিকরা। বিধিনিষেধের কারণে কাজ না পেয়ে বিপাকে পড়েছেন খেটে খাওয়া মানুষ।

আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা জানান, প্রথম দিনে তারা সতর্ক করেছেন। এর পরও যারা নির্দেশনা অমান্য করবেন, তাদের বিরুদ্ধে নেয়া হবে কঠোর ব্যবস্থা।

নির্দেশনা অমান্য করায় চট্টগ্রামসহ বেশ কিছু স্থানে অনেকে আটকও হন। পরে মুচলেকা দিয়ে তারা ছাড়া পেয়েছেন।

রাজশাহী

করোনায় রাজশাহীতে প্রতিদিনই বাড়ছে মৃতের সংখ্যা। রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের করোনা ইউনিটে গত এক মাসে প্রায় প্রতিদিনই অন্তত ১০ জনের মৃত্যু হয়েছে।

সবশেষ বৃহস্পতিবার সকাল পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় করোনা ইউনিটে মৃত্যু হয়েছে ২২ জনের। এ অবস্থায় এই বিভাগে শাটডাউন বেশ কঠোরভাবেই চলছে।

চলাচল ঠেকাতে কঠোর অবস্থান সারা দেশেই

রাজশাহীতে বুধবার সকালে বেশির ভাগ সড়ক ফাঁকা দেখা গেছে। সাহেববাজার, রেলগেট, নিউমার্কেটসহ গুরুত্বপূর্ণ সব রাস্তায় টহল দিতে দেখা গেছে পুলিশ, বিজিবি ও র‌্যাব সদস্যদের। বিধিনিষেধ মানাতে এসব রাস্তায় ঘুরছে ভ্রাম্যমাণ আদালতের টিমও।

অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট আবু আসলাম জানান, শহরে চারজন ম্যাজিস্ট্রেটের নেতৃত্বে চারটি মোবাইল টিম কাজ করছে। আর প্রতিটি উপজেলায় দুটি করে ভ্রাম্যমাণ আদালত মাঠে রয়েছে।

একই চিত্র ছিল নাটোরে। প্রবল বৃষ্টির মধ্যেই জেলার কানাইখালি, নিচাবাজার, চকরামপুর, মাদ্রাসা মোড়ে টহল দিতে দেখা গেছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের।

শহরের প্রবেশমুখ বড়হরিশপুর বাইপাস এলাকায় বরাবরের মতোই ছিল তল্লাশি। এখানে আসা সব গাড়ি ও পথচারীকে থামিয়ে ঘর থেকে বের হওয়ার কারণ ও গন্তব্য জিজ্ঞাসা করতে দেখা গেছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের।

শাটডাউন দেখতে জয়পুরহাটে সকালে অনেকেই রাস্তায় বের হন। তবে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর তৎপরতায় তারা ফিরে যান। লোকসমাগম দেখা যায়নি বগুড়া, চাঁপাইনবাবগঞ্জ ও সিরাজগঞ্জে। বেশির ভাগ রাস্তা ফাঁকা দেখা গেছে। সরব উপস্থিতি ছিল আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের।

খুলনা

খুলনা বিভাগে গত এক সপ্তাহে করোনায় ১৯৩ জনের মৃত্যু হয়েছে। রাজশাহীর পর এই বিভাগে করোনায় মৃত্যুর সংখ্যা বাড়ছে।

জেলার বিভিন্ন সড়কে সকালে বাঁশ দিয়ে অবরোধ করতে দেখা গেছে পুলিশ সদস্যদের। বেলা ১১টা থেকে টহলে নামেন সেনাসদস্যরা। সকাল থেকে টানা বৃষ্টি ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর তৎপরতার কারণে রাস্তায় লোকজনের উপস্থিতি ছিল কম।

সাতক্ষীরায় শাটডাউনের নির্দেশনা মেনে সব ধরনের কার্যালয়, বিপণিবিতান ও দোকানপাট বন্ধ রাখতে দেখা গেছে। ফাঁকা রাস্তায় চলাচল করছে কেবল জরুরি ও পণ্যবাহী যান।

যশোরে রাস্তায় প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর টহল সত্ত্বেও দিনভর চলাফেরা করতে দেখা গেছে সাধারণ মানুষকে। কুষ্টিয়ায় সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত ছিল টানা বৃষ্টি। এ কারণে মানুষের চলাচল ছিল কম। রাস্তায় বিভিন্ন পয়েন্টে শেডের নিচে অবস্থান নিতে দেখা গেছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের। বৃষ্টি ছিল মেহেরপুরেও। জেলা শহর ও উপজেলায় ছিল পুলিশের তল্লাশি। বাইরে বের হওয়া মানুষকে পুলিশের জেরার মুখে পড়তে হয়েছে।

চট্টগ্রাম

চট্টগ্রাম বিভাগজুড়ে সকাল থেকে সড়কে কড়া নজরদারি ছিল সেনাসদস্যদের। তৎপরতা দেখা গেছে পুলিশ ও প্রশাসনেরও।

চলাচল ঠেকাতে কঠোর অবস্থান সারা দেশেই

চট্টগ্রাম নগরীর বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, সড়কে কোনো গণপরিবহন চলছে না। রাস্তায় বা নগরের গুরুত্বপূর্ণ এলাকাগুলোতে জনসমাগম নেই তেমন। তবে সকাল থেকে রিকশা চলতে দেখা গেছে।

নগরীর অক্সিজেন এলাকার রিকশাচালক নাছির উদ্দীন নিউজবাংলাকে বলেন, ‘বেইন্নেত্তুন দুই-তিনবার পুলিশর দৌড়ানি খাই। পুলিশে দৌড়াইলিও ক্যান গইজ্জুম, পেড়র জ্বালায় ত রাস্তাত থাহন পরের।’

শাটডাউনের মধ্যে বিনা কারণে বাইরে বের হওয়ায় নগরীর ডবলমুরিং থানার আগ্রাবাদ বাদামতলী মোড় থেকে ২১ জনকে আটক করে পুলিশ। ডবলমুরিং থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ মহসীন বলেন, আটক ব্যক্তিদের দাবি, তারা লকডাউন দেখতে বের হয়েছেন। দোষ স্বীকার করায় দুই ঘণ্টা আটকে রেখে মুচলেকা নিয়ে তাদের ছেড়ে দেয়া হয়।

কুমিল্লা নগরীর প্রধান সড়কে সেনা ও পুলিশের টহলের পাশাপাশি ছিল ভ্রাম্যমাণ আদালতও। অন্য যানবাহন না চললেও রিকশার আধিক্য ছিল বিভিন্ন এলাকায়।

জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ কামরুল নিউজবাংলাকে বলেন, ‘আমরা লকডাউন বাস্তবায়নে খুবই কঠোর অবস্থানে রয়েছি। বিনা কারণে যারাই বের হচ্ছে, তাদের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ গ্রহণ করছি।’

চলাচল ঠেকাতে কঠোর অবস্থান সারা দেশেই

ফেনীর বেশির ভাগ রাস্তা প্রায় ফাঁকা দেখা গেছে। সেনাবাহিনী ও বিজিবির কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, তারা শুরুতে সতর্কবার্তা দিচ্ছেন। মানুষকে সচেতন করতে জেলা-উপজেলায় মাইকিং করা হচ্ছে। এরপরও বিনা প্রয়োজনে ঘোরাঘুরি করতে দেখা গেলে আইনি পদক্ষেপ নেয়া হবে। একই সতর্কবার্তা দিয়েছেন জেলা প্রশাসক আবু সেলিম মাহমুদ উল হাসান।

সড়ক ফাঁকা লক্ষ্মীপুরেও। জেলার গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টগুলোতে পুলিশি তৎপরতা দেখা গেছে। যারা বের হচ্ছেন, তারা পড়ছেন জেরার মুখে।

সিলেট

সিলেট বিভাগেও শাটডাউনের প্রথম দিন ছিল তুমুল বৃষ্টি। বৃহস্পতিবার দুপুর পর্যন্ত নগরীর রাস্তাঘাট ছিল প্রায় ফাঁকা। মাঝেমধ্যে চলতে দেখা গেছে রিকশা ও মোটরসাইকেল। মোড়ে মোড়ে টহল দিচ্ছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও প্রশাসনের কর্মকর্তারা।

পুলিশ ও র‌্যাবের কয়েকটি গাড়িতে মাইক লাগিয়ে সচেতনতামূলক প্রচার চালানো হয়েছে। বিভিন্ন সড়কে চেকপোস্টও বসানো হয়েছে। বিভাগের অন্য তিন জেলারও প্রায় একই চিত্র।

সিলেট নগরীর কোর্ট পয়েন্ট এলাকায় স্বাস্থ্যবিধি না মানায় রিকশায় থাকা দুই আরোহীকে ২০০ টাকা করে জরিমানা করেছেন সিটি করপোরেশনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সুনন্দা রায়। সেখানে অবস্থান নিতে দেখা গেছে সিটি মেয়র আরিফুল হক চৌধুরীকে। সেখানে পথচারীদের মাস্ক বিতরণ করা হয়েছে।

চলাচল ঠেকাতে কঠোর অবস্থান সারা দেশেই

বিধিনিষেধে বিপাকে পড়েছে দিনমজুররা। নগরের আম্বরখানা এলাকায় কাজ পেতে অপেক্ষায় থাকা দিনমজুর ইর্শাদ মিয়া বলেন, ‘ঘরে থাকলে তো আমরার পেট চলত নায়। তাই ঘর থাকি বার অইতে অয়। কিন্তু আইজ বার অইয়াও কোনো লাভ অইছে না। কামকাজ মিলছে না।’

সুনামগঞ্জ শহরে বাজার করতে বের হওয়া লোকজন ভোগান্তির অভিযোগ করেছেন। স্থানীয় ফরিদা বেগম বলেন, ‘লকডাউন দিয়া আমরার কষ্ট ভারি গেছে। আগে বাসার সামনে উবাইলে গাড়ি পাওয়া যাইত, এখন সকাল থকি নাই।’

মৌলভীবাজারে সকালে জেলা প্রশাসক মীর নাহিদ আহসানের নেতৃত্বে বিজিবি, র‌্যাব ও পুলিশের একটি বিশাল বহর শহরের প্রধান প্রধান সড়কে মহড়া দেয়। শহরের কুসুমবাগ মোড়ে পৌর মেয়র ফজলুর রহমানের নেতৃত্বে কমিশনাররা বাইরে বের হওয়া লোকজনকে জিজ্ঞাসাবাদ করেন।

রংপুর

শাটডাউনে রংপুর বিভাগের বিভিন্ন জেলায় সড়কে যানবাহনের তেমন দেখা যায়নি। তবে অলিগলিতে কিছু রিকশা চলেছে। শহরকেন্দ্রিক দোকানপাট বন্ধ থাকলেও গ্রামের হাটবাজারগুলোতে কিছু দোকানপাট খোলা রয়েছে। তবে গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টির কারণে মানুষজন খুব একটা বাইরে বের হয়নি।

রংপুর জেলার আট উপজেলায় আটটি ও সিটি করপোরেশনে একটি সেনাবাহিনীর টহল দল কাজ করছে। পুলিশ ও র‌্যাব জনসচেতনতায় বিভিন্ন রাস্তায় মাইকিং করেছে।

চলাচল ঠেকাতে কঠোর অবস্থান সারা দেশেই

কুড়িগ্রামে প্রয়োজন ছাড়া ঘর থেকে বের হতে দেখা যায়নি লোকজনকে। তবে গ্রামের দিকে মানুষ হাটবাজারে বের হচ্ছেন। নীলফামারী শহরের গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টগুলোতে দেখা গেছে পুলিশের চেকপোস্ট। পঞ্চগড়েও রাস্তা ছিল প্রায় ফাঁকা।

তবে ঠাকুরাগাঁও ও গাইবান্ধায় শাটডাউনের তেমন প্রভাব দেখা যায়নি। গণপরিবহন বন্ধ থাকলেও সড়কগুলো ছিল অটোরিকশার দখলে। বেলা বাড়তে থাকলে অটোরিকশার পাশাপাশি মোটরসাইকেলও বাড়তে থাকে সড়কে।

বরিশাল

শাটডাউনের প্রভাব সবচেয়ে কম বরিশাল বিভাগে।

বরিশাল জেলায় গণপরিবহন না থাকলেও রিকশা ও মোটরসাইকেলের পাশাপাশি সড়কে লোকজনের উপস্থিতি ছিল ব্যাপক। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী বিভিন্ন জায়গায় টহল দিলেও অলিগলিতে রীতিমতো ছোট ছোট দলে আড্ডা দিতে দেখা গেছে অনেককে। তাদের বাইরে বের হওয়ার কারণ জিজ্ঞেস করলে সবারই এক কথা- শাটডাউন দেখতে তারা বের হয়েছেন।

চলাচল ঠেকাতে কঠোর অবস্থান সারা দেশেই

ঝালকাঠি, পটুয়াখালী, ভোলা ও বরগুনায় কঠোর অবস্থানে দেখা যায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে। তাদের নজর এড়িয়েই অনেকে বের হয়েছেন রাস্তায়। শহরের বেশির ভাগ দোকানপাট বন্ধ থাকলেও বাজারগুলোতে দেখা গেছে মানুষের ভিড়।

নিষেধাজ্ঞার মধ্যেও লক্ষ্মীপুর থেকে ফেরি ও ট্রলারে করে শত শত যাত্রী ভোলায় ইলিশাঘাট ভিড়েছেন। ভোলা শহরে দুপুরে নিষেধ না মেনে বের হওয়ায় দুজনকে আটক করা হয়েছে এবং ২৩ জনকে জরিমানা করা হয়েছে।

আরও পড়ুন:
শাটডাউন: অলিগলিতেও পুলিশি টহল
শাটডাউন দেখতে বেরিয়ে রাজধানীতে শতাধিক আটক
রাজপথে সেনাদের টহল
বাজারে ঢিলেঢালা স্বাস্থ্যবিধি
ফেরিতে পার হচ্ছে পণ্যবাহী যান, অ্যাম্বুলেন্স

মন্তব্য

আরও পড়ুন

সারা দেশ
Election schedule to be announced in first half of December CEC

ডিসেম্বরের প্রথমার্ধেই নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা হবে: সিইসি

ডিসেম্বরের প্রথমার্ধেই নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা হবে: সিইসি

আগামী ডিসেম্বরের প্রথমার্ধে ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফশিল ঘোষণা হবে বলে জানিয়েছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এএমএম নাসির উদ্দিন।
গতকাল শনিবার বিকেলে বরিশাল সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা জানান।
এর আগে, তিনি বরিশাল বিভাগ এবং জেলা প্রশাসনসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাবাহিনীর কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলোচনা সভা করেন।
এএমএম নাসির উদ্দিন বলেন, যেহেতু আওয়ামী লীগের সকল কর্মকাণ্ড সরকার নিষিদ্ধ করেছে, তাই বিচার সম্পন্ন হওয়ার আগে আওয়ামী লীগ নির্বাচনে অংশ নিতে পারবে না। তবে, যদি নির্বাচনের আগে বিচার সম্পন্ন হয় তখন সেটা দেখা যাবে।
এনসিপির শাপলা প্রতীকের দাবির প্রশ্নে সিইসি বলেন, নির্বাচন কমিশনের তালিকায় না থাকায় শাপলা প্রতীক দেওয়ার সুযোগ নেই।
তিনি বলেন, কোনো গোয়েন্দা সংস্থা দ্বারা প্রভাবিত হবে না নির্বাচন কমিশন। সভায় বরিশালের বিভাগীয় কমিশনার, ছয় জেলার জেলা প্রশাসকসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ঊধ্বর্তন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

মন্তব্য

সারা দেশ
A monument will be built in Shapla square in the name of martyrs of Hefazat Asif Mahmud

শাপলা চত্বরে হেফাজতের শহীদদের নামে হবে স্মৃতিস্তম্ভ:আসিফ মাহমুদ

শাপলা চত্বরে হেফাজতের শহীদদের নামে হবে স্মৃতিস্তম্ভ:আসিফ মাহমুদ  স্থানীয় সরকার উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া গতকাল শনিবার রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে হেফাজত ইসলামের মহাসমাবেশে শহীদদের পরিবারকে আর্থিক অনুদান প্রদান অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন। ছবি: সংগৃহীত

স্থানীয় সরকার উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া বলেছেন, ‘রাজধানীর মতিঝিলে শাপলা চত্বরে ২০১৩ সালের হেফাজতে ইসলামের শহীদদের নামে স্মৃতিস্তম্ভ তৈরি করা হবে। যাতে দেশের মানুষ তাদের আজীবন স্মরণ করে।
গতকাল শনিবার রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে হেফাজত ইসলামের মহাসমাবেশ ও মোদিবিরোধী আন্দোলনে শহীদদের পরিবারকে আর্থিক অনুদান প্রদান অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
আসিফ মাহমুদ বলেন, ২০১৩ সালে হেফাজত ইসলামের আন্দোলনেই ফ্যাসিবাদবিরোধী আন্দোলনের সূচনা হয়েছিল। সেদিন সরকার নিরপরাধ ও নিরীহ হেফাজত কর্মীদের হত্যা করে ভেবেছিল, দেশ থেকে ইসলামকে নিশ্চিহ্ন করা যাবে। জুলুম-নির্যাতনের বিরুদ্ধে গণমানুষের আন্দোলনকে স্তব্ধ করে হত্যা করা যাবে। কিন্তু এই অনুষ্ঠান প্রমাণ করে, জুলুম ও নির্যাতন কখনো স্থায়ী হয় না।
তিনি আরও বলেন, হেফাজত ইসলামের সেই আন্দোলনের সূত্র থেকেই ২০২৪ সালে ফ্যাসিবাদবিরোধী আন্দোলনের জন্ম। ছাত্র-জনতার তীব্র আন্দোলনের মুখে ফ্যাসিবাদের নেত্রী শেখ হাসিনা পালিয়ে যেতে বাধ্য হন।
উপদেষ্টা বলেন, ২০১৩ সালে নবম শ্রেণিতে পড়তাম। টেলিভিশনে দেখেছি লাখো জনতা কীভাবে আন্দোলনে ঝাঁপিয়ে পড়েছিল। কিন্তু সেদিনের প্রকৃত তথ্য জাতিকে জানানো হয়নি।
তিনি আরও জানান, হেফাজত ইসলামের শহীদদের নামের তালিকা সম্বলিত একটি স্থায়ী স্মৃতিস্তম্ভ শাপলা চত্বরে তৈরি করা হবে। এতে এই আন্দোলন আগামী প্রজন্মের জন্য প্রেরণা যোগাবে।
অনুষ্ঠানে ২০১৩ সালের ৫ মে শাপলা চত্বরে হেফাজতে ইসলামের মহাসমাবেশকে কেন্দ্র করে সংঘটিত হত্যাযজ্ঞে শহীদ ৫৮ জন এবং ২০২১ সালের মার্চে মোদিবিরোধী বিক্ষোভ কর্মসূচিতে শহীদ ১৯ জনের পরিবারের কাছে ১০ লাখ টাকা করে অনুদানের চেক হস্তান্তর করা হয়।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে ধর্ম উপদেষ্টা ড. আ. ফ. ম. খালিদ হোসেন বলেন, ২০১৩ সালে শাপলা চত্বরে হেফাজত কর্মীদের নৃশংসভাবে হত্যা করে তৎকালীন সরকার মনে করেছিল জুলুম-নির্যাতনবিরোধী আন্দোলন দমন করা যাবে।
ওই আন্দোলনে শহীদ ও আহতদের একটি তালিকা প্রস্তুত করার হেফাজত ইসলামের নেতাদের প্রতি আহ্বান জানান তিনি। এ বিষয়ে ধর্ম মন্ত্রণালয় সব ধরনের সহযোগিতা করবে বলেও আশ্বাস দেন।
তিনি অভিযোগ করে বলেন, সেদিন শাপলা চত্বরে সাত হাজারের বেশি পুলিশ, র‌্যাব ও বিজিবির সদস্যরা হেফাজত কর্মীদের ওপর হামলা চালিয়েছিল। প্রায় দেড় লাখ গুলি খরচ করা হয়েছিল। তারপরও ইতিহাস থেকে সেই ঘটনা মুছে ফেলা যায়নি।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের সচিব রেজাউল মাকসুদ জাহিদী। আরও উপস্থিত ছিলেন হেফাজত ইসলাম বাংলাদেশের আমীর মুহিবুল্লাহ বাবুনগরী, মহাসচিব মাওলানা মাজেদুর রহমান, জামায়াত ইসলামের কেন্দ্রীয় সেক্রেটারি অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরোয়ার, খেলাফতে ইসলামের নেতা মাওলানা মামুনুল হক, গণধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক নূর প্রমুখ।

মন্তব্য

সারা দেশ
We are behind the collective lies

সম্মিলিত মিথ্যার পিছনেই আমরা

সাকিব রায়হান
সম্মিলিত মিথ্যার পিছনেই আমরা

আমি তখন কলেজে পড়ি। স্যারের বাসায় যত সিনসিয়ারলি যাই তত সিনসিয়ারলি পড়ালেখা করি না। পুরা শহর ঘুরে বেড়ানোয় যত মনোযোগ ততটা মনোযোগ কলেজে যাওয়ায় না। তবে নিঃসন্দেহে দারুণ সময় পার করছিলাম। একদিন আমি কোনো এক কাজে রিকশায় করে ফরেস্ট ঘাটের দিকে যাচ্ছিলাম। যথারীতি রিকশা চালকের সাথে নানবিধ গল্প করছি। রাজনীতি, শহর, দেশসহ প্রায় সব গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ই আমাদের আলোচনায় স্থান পাচ্ছিল। রিকশা চালকের চিন্তা এবং জ্ঞান দেখে আমি বেশ মুগ্ধই হয়েছিলাম। মনে মনে ভাবছিলাম যে আমাদের সমাজে আসলেই অনেক সুচিন্তাশীল মানুষ আছে যারা অন্যের দৃষ্টি আকর্ষণ করে না। কিছুক্ষণের মধ্যেই একটা ঘটনা ঘটলো যেটা আমার চিন্তাশক্তিকে কিছুক্ষণের জন্যে অবশ করে দিলেও পরবর্তীতে একটা কঠিন সত্যকে জানতে সাহায্য করেছিল। ফরেস্ট ঘাটের কাছাকাছি একটা জায়গায় পৌঁছেতেই কিছু দূরে একটা জটলা মত পেলাম এবং একজন পথচারীর কাছ থেকে জানতে পারলাম তিনি আর কেউ না, শহরের সবচেয়ে কুখ্যাত টেরর (যার নাম বললে আপনারা সবাই চিনবেন)। আমি কেন যেন আর অগ্রসর হতে চাইলাম না। রিকশা চালককে ওখানেই আমাকে নামিয়ে দিতে বললাম। ঘৃণা থেকেই হোক বা অজানা শঙ্কায় হোক সে মুহূর্তে ওই মানুষটার কাছাকাছি যেতে আমার ইচ্ছা হচ্ছিল না। আমি রিকশা থেকে নেমে যখন ভাড়া মিটাচ্ছিলাম তখন দেখি আমার সেই রিকশাচালক বেশ রাগান্বিত হয়ে পাশে দাঁড়িয়ে থাকা এক রিকশা চালককে তার হাতের বিড়িটা ফেলে দিতে বলছে। প্রায় ধমকের স্বরেই বলেছিল, ‘বিড়ি ফ্যাল ব্যাটা। সামনে একজন সম্মানিত মানুষ দেখা যায় সেটার খেয়াল নেই?’ আমি বেশ ভালো রকমের ধাক্কা খেলাম। অনেকটা বিড়বিড় করে বললাম, ‘সামনে কোনো সম্মানিত লোক আছে যে এখানে দাঁড়িয়ে এই রিকশাচালক বিড়ি খেতে পারবে না?’ তখন আমার সেই রিকশাচালক আমার উপর বিরক্ত হয়েই বলেছিল, ‘ভাইরে চিনেন না?’ আমি আর কোন কথা না বলে যতটা সম্ভব দ্রুত হেঁটে বিপরীত দিকে চলে গিয়েছিলাম। মজার বিষয় হচ্ছে আমাদের রিকশা থেকে সেই সম্মানিত(!) লোক এতটুকু দুরুত্বে ছিল যে আরেকজন রিকশাচালক বিড়ি খেলে সেটা দেখতে পাবে না। তার মানে সে ভয় থেকে কথাটা বলে নি। বরং তার চোখে মুখে এক ধরনের মুগ্ধতা দেখেছিলাম। কিছুক্ষণ আগেও যে রিকশাচালককে আমি বুদ্ধিমান, বিবেকবান মনে করেছিলাম তার প্রতি আমার দৃষ্টি ভঙ্গিটাই মুহূর্তে পালটে গিয়েছিল।

এটুকু পড়ে হয়তো অনেকেই ভাবছেন এটাতে কি আর এমন ঘটনা আছে যে এত বছর পরে এসে আমাকে লিখতে হবে? আসলে এটা আমার একটা ভিন্ন চিন্তা শক্তিকে উন্মুক্ত করেছিল। এরপর থেকে একটা বিষয় আমি খুব ভালোভাবে বুঝার চেষ্টা করি। আমরা কম বেশি সবাই নীতি কথা বলি, বিবেকের কথা বলি; কিন্তু অসৎ এবং খারাপ মানুষদের কেন এক গোপন সমর্থন দিয়ে যাই? কেন অনেক ক্ষেত্রেই সমাজের সবচেয়ে খারাপ মানুষদের একজনকে ভোট দিয়ে আমরা নির্বাচিত করি? কোনো এক ব্যাক্তি যদি অশ্লীল কথা বলে তারপরেও কেন আমরা তাকে পছন্দ করি এবং সোশ্যাল মিডিয়ায় তাকে ফলো করে যাই? তারচেয়েও যেটা আমাকে বেশি ভাবতে সাহায্য করেছিল যে আমাদের চোখের সামনে পরিষ্কার অনিয়ম, অন্যায় দেখতে পেলেও কেন আমরা তার প্রতিবাদ তো করিই না বরং কোন কোন ক্ষেত্রে আমরা তার নীরব সমর্থনও দিয়ে যাই? আর এই অনিয়মের অংশ কিন্তু মূর্খ, জ্ঞানহীন বা অবুঝ মানুষজনই শুধু না বরং শিক্ষিত, মার্জিত, বুদ্ধিমানেরাও। কখনো কি ভেবে দেখেছেন, কেন আমরা সম্মিলিতভাবে অন্যায়কে মেনে নেই?

আমরা সবসময় আমাদের স্বার্থ নিয়েই ভাবি। আমাদের কম্ফোর্ট নষ্ট হয় এমন কিছুকে ইচ্ছা করেই এড়িয়ে চলি। আর সবচেয়ে ভয়ঙ্কর বিষয় হচ্ছে আমরা সত্য খুঁজি না, আমাদের কম্ফোর্ট খুঁজি। অর্থাৎ, যে ঘটনা বা তথ্য আমাদেরকে ডিসকম্ফোর্ট দিবে সেটাকে আমরা দেখেও না দেখার ভাণ করি। মনে করেন আপনি একটা গাড়িতে বসে আছেন। সেই গাড়িটা যদি ট্রাফিক নিয়ম ভঙ্গ করে বা কাউকে বোকা বানিয়ে আপনাকে বেশ কিছুটা পথ এগিয়ে দেয় তখন কিন্তু আপনি মনে মনে খুশী হবেন। আবার ঠিক বিপরীতভাবে, আপনার পাশ দিয়ে আপনাকে বোকা বানিয়ে যদি আরেকটা গাড়ি নিয়ম ভঙ্গ করে কোন ব্যানিফিট নেয় তাহলে তার উদ্দেশে নৈতিক কথা বলবেন এবং সে যে অন্যায় করেছে সেটার জন্যে আপনি কথা শুনিয়ে দিবেন। তার মানে ন্যায় এবং সত্য আপনার স্বার্থের সাথে সমন্বয় করে চলে। কোনো অসৎ এবং খারাপ মানুষের কাছ থেকে আপনি যদি সুবিধা পেয়ে থাকেন তাহলে তার সেই অসততা আপনি মনে মনে মেনে নেবেন।

এখন প্রশ্ন উঠতে পারে যে তাহলে কি সবাই অন্যায়ের সাথেইে আপস করে চলে? না, সবাই আপস করে না। সংখ্যায় খুব অল্প হলেও অনেকেই অন্যায়ের বিরুদ্ধে মতামত প্রদান করে। তবে এর ফলে তাকে অনেকটাই সমাজচ্যুত হতে হয়। এখন হয়তো ভাবছেন কয়টা বিষয়ে কজনা রাস্তায় নেমে প্রতিবাদ করছে? এই প্রতিবাদ শুধুমাত্র আন্দোলনে না। এর অনেক রূপ আছে। মজার বিষয় হচ্ছে সেসব প্রতিবাদীরা আইসোলোটেড হয়ে যায়, কারণ আমি আপনিই নিয়মের জালে তাদের একলা করে দেই। সোশ্যাল মিডিয়া, ইলেকট্রনিক মিডিয়া, প্রিন্টিং মিডিয়া সব জায়গায় দেখবেন চটুল লোকদের জয়জয়কার। যারা ন্যায়ের কথা বলছে, সমাজ ও দেশের কথা বলছে তাদের অস্তিত্ব থাকছে না। সবচেয়ে বিপজ্জনক বিষয় হচ্ছে ন্যায়ের কথা বলা লোকজনেরা শুধুমাত্র কোণঠাসাই হয় না, কোনো কোনো ক্ষেত্রে আক্রমণের স্বীকারও হয়।

ম্যাসাচুসেটস ইউনিভার্সিটির এক গবেষণায় দেখা গেছে সবচেয়ে ভালো ও জনপ্রিয় ছাত্রটিই সাধারনত সবচেয়ে ভালো মিথ্যাবাদী। অন্যভাবে বললে যে যত সুন্দরভাবে গুছিয়ে এবং কনভিন্সিংলি মিথ্যা বলতে পারে সে তত জনপ্রিয় হয়ে উঠে। এমনকি গবেষকরা বলেছেন যে বর্তমান সমাজে বুঝিয়ে মিথ্যা বলতে পারাটা দারুণ একটা স্কিল হিসাবে গন্য হতে পারে। যারা এই মতবাদে বিশ্বাসী না তাদের অনুরোধ করব একটু ভালো করে আমাদের সোশ্যাল মিডিয়া পর্যবেক্ষণ করেন। অনেক ক্ষেত্রেই ডিসিভাররা দারুণভাবে জনপ্রিয়। তারা সুন্দরভাবে গুছিয়ে মিথ্যা বলে আমাদেরকে মিথ্যা গিলিয়ে দিচ্ছে। তাদের মিথ্যা ধরার মতো ক্ষমতা বেশিরভাগ মানুষেরই নেই। যারা মিথ্যাকে ধরতে পারছে তারা প্রতিবাদ করছে না কারণ এতে করে তারা আক্রমণের স্বীকার হবে। এটাই আমাদের সমাজের অদ্ভুত নিষ্ঠুরতা। সত্য যখন আমাদেরকে ডিসকম্ফোর্ট দেয় কিংবা আনসেটেল্ড করে দেয় তখন আমরা সত্যবাদীকে মিথ্যা অপবাদ দিয়ে আক্রমণ করে বসি।

এখন প্রশ্ন আসতে পারে যে কেন সত্যের চেয়ে মিথ্যা বেশি প্রসারিত এবং জনপ্রিয়। এর সবচেয়ে সহজ ব্যাখ্যা হচ্ছে, সত্য উপলব্ধি করার জন্যে জ্ঞানের প্রয়োজন হয়, সত্যকে যাচাই করে নিতে হয়। সত্য কখনো কখনো রূঢ় এবং বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই সত্য আমাদের ডিস্কম্ফোর্ট দেয়, আমাদের স্বার্থে আঘাত হানে। অন্যদিকে মিথ্যা হচ্ছে সহজ এবং চটুল। মিথ্যাকে যাচাই করতে হয় না, মিথ্যাকে ধারণ করার জন্যে কোন জ্ঞানের প্রয়োজন হয় না। মিথ্যার সবচেয়ে বড় শক্তি হচ্ছে মিথ্যা আপনাকে কম্ফোর্ট দিবে, কঠিন বাস্তবতার মুখোমুখি করে দিবে না। সত্য র‍্যাশিওনাল আর্গুমেন্টকে উৎসাহিত করে আর মিথ্যা আবেগকে ম্যানিপুলেট করে। যেটা আবেগকে ম্যানিপুলেট করতে পারে তার জয় তো হবেই, তাই না?

কগনিটিভ ডিসোন্যান্স নামে সাইকলোজিতে একটা পরিস্থিতি আছে। এটা হচ্ছে নিজের ভেতরে নিজের আরেকটা ভিন্নমত। আমার মনে হয় কম বেশি আমরা সবাই এই সমস্যাতে ভুগি। এটার মাত্রা বেড়ে গেলে তখন হয়তো রোগাক্রান্ত হিসাবে বিবেচিত হয়। অনেক সত্যই আমরা জানি কিন্তু সেই সত্যকে আরেকটা যুক্তি দিয়ে আমরা নিজের কাছে নিজেই আশ্বস্ত হতে চাই। একটা উদাহরণ দেই যেটা আমাদের আগে আলোচনার সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ। একজন অসৎ এবং খারাপ মানুষ অনেক ক্ষেত্রেই আমরা নেতা হিসাবে মেনে নেই। একজন সন্ত্রাসী, চাঁদাবাজকে দেখবেন পিএইচডি করা এক ব্যাক্তি ভোট দিচ্ছে। এসবই হচ্ছে কম্ফোর্ট দেয়া মিথ্যার আশ্রয় নেয়া। একজন খারাপ মানুষকে যখন আমরা সমর্থন করি তখন নিজের কাছে নিজেই যুক্তি দেই যে, অমুক তো এর চেয়েও বেশি খারাপ কাজ করেছে। তমুক তো, এই ভালো কাজটা করেনি। অতএব, আমি যে খারাপ মানুষটাকে সমর্থন করছি সেটা করাই যায়। আমাদের সমাজ নৈতিক অবক্ষয়ের এক চূড়ান্ত জায়গায় এসে উপনীত হয়েছে। আমরা নিজ স্বার্থে মিথ্যাকে আকড়ে ধরে পরবর্তী প্রজন্মের জন্যে বসবাস অনুপযোগী এক সমাজ ব্যবস্থা রেখে যাচ্ছি। আমরা সম্মিলিতভাবে মিথ্যাকে মেনে নিয়েছি। আমরা সবাই কগনিটিভ ডিসোন্যান্সে সংক্রমিত।

লেখক: কথাশিল্পী ও নাট্যকার।

মন্তব্য

সারা দেশ
Award distribution of Dr Hamdu Mia Memorial Scholarship in Nabinagar

নবীনগরে ডা. হামদু মিয়া স্মৃতি শিক্ষাবৃত্তির পুরস্কার বিতরণ

নবীনগরে ডা. হামদু মিয়া স্মৃতি শিক্ষাবৃত্তির পুরস্কার বিতরণ

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগরে ডা. হামদু মিয়া স্মৃতি শিক্ষা বৃত্তি–২০২৪-এর পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়েছে। শনিবার সকালে উপজেলার ইব্রাহিমপুর উত্তর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে এ অনুষ্ঠান আয়োজন করা হয়।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের চিকিৎসক ডা. মো. কামরুজ্জামান। তিনি অনুষ্ঠানের সভাপতিত্বও করেন।

বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন নবীনগর উপজেলা বিএনপির সহ-সভাপতি গোলাম হোসেন খান টিটু, ইব্রাহিমপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আবু মোছা, সাবেক চেয়ারম্যান মো. নোমান চৌধুরী, ইব্রাহিমপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. জাকির হোসেন, প্রধান শিক্ষক শাহানাজ আক্তার, আল আমিন খন্দকার, মো. আলী মাহমূদুর রহমান রাছেল ও মাজেদুল হকসহ স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ।

অনুষ্ঠানের সার্বিক সহযোগিতায় ছিল ফ্রেন্ডস অ্যাসোসিয়েশন ৯৬ ব্যাচ।

শেষে বৃত্তিপ্রাপ্ত শিক্ষার্থীদের হাতে পুরস্কার তুলে দেওয়া হয়।

মন্তব্য

সারা দেশ
Sonaimuri police station in various crises

নানা সংকটে সোনাইমুড়ী থানা পুলিশ

নানা সংকটে সোনাইমুড়ী থানা পুলিশ

একটি ‘ক’ শ্রেণির পৌরসভা ও ১০টি ইউনিয়ন নিয়ে নোয়াখালীর সোনাইমুড়ী উপজেলা। সোনাইমুড়ীর আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ২০০৬ সালে পুলিশ ফাঁড়ি থেকে থানায় রূপান্তরিত হয়। বর্তমানে থানা এলাকার ভবন অত্যন্ত পুরাতন, জরাজীর্ণ ও বসবাসের অনুপযোগী। এখানকার সব ভবনই ঝুঁকিপূর্ণ।

জানা যায়, সোনাইমুড়ী থানা পুলিশ পরিত্যক্ত ভবনে কোনোরকমে গাদাগাদি করে থাকতে হয়। এছাড়াও নেই দৈনন্দিন ব্যবহার ও খাওয়ার জন্য বিশুদ্ধ পানির ব্যবস্থাও। ১৭০.৪২ বর্গ কিলোমিটার আয়তনের সোনাইমুড়ী থানায় ২০২২ সালের জনশুমারী অনুযায়ী রয়েছে মোট জনসংখ্যা ৩,৬৮,৮৪২। এই জনসংখ্যার জন্য নিয়োজিত রয়েছেন ১জন ওসি, ১ জন ওসি তদন্ত, এসআই ৮ জন, এএসআই ১০ জন ও ২৮ জন কনস্টেবল সহ প্রায় ৫০ জন। গত ৫'ই আগস্ট ২০২৪ পর্যন্ত থানায় ৪ টি গাড়ি থাকলেও বর্তমানে রয়েছে মাত্র ২টি গাড়ি। গাড়িতে ব্যবহারের জন্য ২৫ থেকে ৩০ লিটার জ্বালানি তেলের চাহিদা থাকলেও সরকারিভাবে বরাদ্দ রয়েছে মাত্র ৫ লিটারের। ২০০৬ সালে পুলিশ তদন্ত কেন্দ্র থেকে থানায় রূপান্তরিত হলেও বর্তমানে এখানে নেই প্রয়োজনীয় জনবল। তাই এই এলাকায় গঠিত অপরাধ দমনে প্রতিনিয়ন হিমসিম খেতে হচ্ছে থানা কর্তৃপক্ষের। থানা ভবনের দ্বিতীয় তলায় টিন সেট ঘর নির্মাণ করে ফোর্সের আবাসিক ব্যবস্থা করা হয়। সেখানে ৫ জনের স্থানে গাদাগাদি করে রাত্রি যাপন করে ৮/১০ জন। থানা পুলিশের ব্যারাকে ১৫ জনের মধ্যে থাকে ২০-২৫ জন। আর অফিসারদের জন্য কোন থাকার ব্যবস্থা নেই। ১৫ আগস্টে পুড়িয়ে দেওয়া থানা ভবন ও অন্যান্য ভবন কোনরকম পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন করে থাকছে পুলিশ সদস্যরা। আগত সেবা-প্রার্থীদের বসার কোন স্থান নেই।

থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) মনির হোসেন জানান, এই থানায় জনবল অনুযায়ী নেই বসবাসের সুব্যবস্থা। একটি পরিত্যক্ত ভবনে কোনো রকম গাদাগাদি করে থাকতে হয়। বিশুদ্ধ পানিরও রয়েছে চরম সংকট। বরাদ্দকৃত গাড়ির জন্য ২৫ থেকে ৩০ লিটার জ্বালানি তেলের চাহিদা থাকলেও সরকারিভাবে বরাদ্দ রয়েছে মাত্র ৫ লিটার তেল। এ অবস্থায় অপরাধ নিয়ন্ত্রণে হিমসিম খেতে হচ্ছে থানা পুলিশের।

সোনাইমুড়ী থানার ওসি মোরশেদ আলম বলেন, নানা সংকটে সোনাইমুড়ী থানা পুলিশ। এটা সত্য। ডিউটি করতে পুলিশের গাড়ি সংকট রয়েছে। এখানকার কর্তব্যরত পুলিশ সদস্যরা সব সংকট মোকাবিলা করে থানার কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে। এলাকার আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি উন্নতির দিকে। চুরি ছিনতাইসহ সকল অপরাধ নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। ইতোপূর্বে কয়েকটি ডাকাতি ও চাঞ্চল্যকর খুনের ঘটনা উদঘাটন হয়েছে।

মন্তব্য

সারা দেশ
The construction of the bridge in Sakhipur was not completed even in five years

সখীপুরে পাঁচ বছরেও শেষ হয়নি ব্রিজের নির্মাণকাজ

ভোগান্তিতে হাজার হাজার মানুষ
সখীপুরে পাঁচ বছরেও শেষ হয়নি ব্রিজের নির্মাণকাজ

টাঙ্গাইলের সখীপুর উপজেলার করটিয়াপাড়া বাজারের উত্তর পাশে কাঁকড়ার ঝোড়ার ওপর ২ কোটি ২৮ লাখ ৭০ হাজার ৭৩১ টাকা ব্যয়ে

নির্মাণাধীন ব্রিজের কাজ দীর্ঘ ৫ বছরেও শেষ হয়নি। ২০২১ সালের ১৬ ফেব্রুয়ারি শুরু হয় ব্রিজের নির্মাণকাজ। ২০২২ সালের ১৭ ফেব্রুয়ারি শেষ হওয়ার কথা থাকলেও তা দীর্ঘ সময়েও শেষ হয়নি ব্রিজের কাজ।

উপজেলার কালিদাস-বহুরিয়া সড়কের করটিয়াপাড়া বাজারের উত্তর পাশে কাঁকড়ার ঝোড়া নামক স্থানে ২৫ মিটার দৈর্ঘ্যের ওই পিএসসি গার্ডার ব্রিজ নির্মাণ কাজ থেমে থেমে চলছে। একটানা যতদিন কাজ চলে তার কয়েক গুণ বেশি সময় বন্ধ থাকে নির্মাণ কাজ।

যানবাহন যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন থাকায় চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন ব্রিজের দুই পাড়ের হাজারো মানুষ। দৈনন্দিন প্রয়োজনে উপজেলা শহর বা অন্য কোথাও যেতে চাইলে ১৪ থেকে ১৫ কিলোমিটার ঘুরে যাতায়াত করতে হচ্ছে স্থানীয়দের। এতে অর্থ ও সময় দুই-ই বেশি ব্যয় হচ্ছে তাদের।

উপজেলা এলজিইডি সূত্রে জানা যায়, ২ কোটি ২৮ লাখ ৭০ হাজার ৭৩১ টাকা ব্যয়ে নির্মানাধীন ২৫ মিটার দৈর্ঘ্যের পিএসসি গার্ডার ব্রিজটির কাজ পায় মাইন উদ্দিনবাসী নামক ঢাকার একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। ২০২১ সালের ১৬ ফেব্রুয়ারি কাজটি শুরু হয়ে ২০২২ সালের ১৭ ফেব্রুয়ারি শেষ হওয়ার কথা থাকলেও কাজটি এখনো চলমান। এলজিইডির কাগজপত্রে ৮০ ভাগ কাজ সম্পন্ন হওয়ার তথ্যও পাওয়া গেছে।

ওই সড়ক ব্যবহার করে স্থানীয় বহুরিয়া ইউনিয়ন পরিষদের বিভিন্ন সেবা গ্রহীতা ও উপকারভোগীদের একটি বৃহৎ অংশ যাতায়াত করে। বিকল্প সড়ক ঘুরে আসতে অনেক সময় লেগে যায়। এতে বয়োবৃদ্ধ,নারী -শিশুসহ সকল শ্রেণি পেশার মানুষের সীমাহীন দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।

স্থানীয়দের সাথে কথা হলে তারা বলেন, কাঁকড়ার ঝোড়া ব্রিজটি সম্পূর্ণ না হওয়ার কারণে কালিদাস, ঠকাইনাপাড়া, ফুলঝুড়িপাড়া, করটিয়া পাড়া, বেলতলী, হারিঙ্গাচালা, হতেয়া-রাজাবাড়ি, কালমেঘা, ছলংগা ও বহুরিয়া চতলবাইদসহ অন্তত ১৫ থেকে ২০টি গ্রামের মানুষ চরম ভোগান্তির শিকার। ঠিকদারি প্রতিষ্ঠান কিছুদিন কিছু কাজ করে বেশ কয়েকবার লাপাত্তা হয়ে গেছে। গত কয়েক মাস ধরেও বন্ধ রয়েছে ব্রিজের কাজ।

তারা আরো বলেন, ব্রিজটি সম্পন্ন না হওয়ায় যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন থাকায় আমাদের সন্তানেরা স্কুল-কলেজ ও মাদ্রাসায় সময় মতো যেতে পারছে না। অসুস্থ রোগীদের নিয়ে পড়তে হয় চরম বিপাকে। দ্রুত শহরের হাসপাতালে নেওয়ার উদ্দেশে কাঁধে করে তাদের পার করতে হয়। আমাদের প্রয়োজনে কোনো কাজের মালামাল আনতে পারি না। ফল-ফসল ও শাকসবজি ক্রয় বিক্রয়ের ক্ষেত্রেও এই ব্রিজের কারণে আমরা খুবই সমস্যায় আছি। ছোট খাটো মালামাল হলে আমরা কাঁধে ও মাথায় করে পার করি। আমরা সকলে মিলে টাকা তুলে সাময়িক পারাপারের জন্য ব্রিজের পশ্চিম পাশ দিয়ে একটি কাঠের সাঁকো তৈরি করেছি। অথচ সাময়িক পারাপারের ব্যবস্থাও সরকারিভাবে ঠিকাদারের করার কথা বলে আমরা জানি। সরকারের কাছে আমাদের দাবি খুব তাড়াতাড়ি যেন এই ব্রিজের কাজটি সম্পন্ন হয়।

ব্রিজের দুই পাড়ের দুটি বাজার কালিদাস ও করটিয়া পাড়া বাজারের একাধিক ব্যবসায়ীরা বলেন, মালামাল পরিবহন করা কষ্টকর, সময় সাপেক্ষ ও ব্যয়বহুল হয়ে উঠেছে। প্রায় পাঁচ বছর যাবত আমরা কষ্ট, অতিরিক্ত সময় ও ব্যয়ভার বহন করছি। আমরা এর থেকে নিস্তার চাই।

এ বিষয়ে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের সাথে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলেও তা সম্ভব হয়নি।

সখীপুর উপজেলা এলজিইডি প্রকৌশলী মো. আরিফুর রহমান জানান, পিএসসি গার্ডার ব্রিজটির ৮০ ভাগ কাজ সম্পন্ন হয়েছে। বর্তমানে বৃষ্টির কারণে কাজটি সাময়িকভাবে বন্ধ রয়েছে। আশা করছি খুব শিগগিরই কাজটি শুরু হবে এবং আগামী দুই তিন মাসের মধ্যে আমরা কাজটি শেষ করতে পারব।

মন্তব্য

সারা দেশ
Law and order and development discussion meeting of Alokbali Union

আলোকবালী ইউনিয়নের আইনশৃঙ্খলা ও উন্নয়নবিষয়ক মতবিনিময় সভা

নরসিংদী জেলা প্রশাসনের উদ্যোগ
আলোকবালী ইউনিয়নের আইনশৃঙ্খলা ও উন্নয়নবিষয়ক মতবিনিময় সভা

স্থানীয় প্রশাসন ও জনপ্রতিনিধিদের হস্তক্ষেপে এক অন্ধকার অধ্যায়ের অবসান ঘটিয়ে অবশেষে আলোর মুখ দেখলো নরসিংদীর সদর উপজেলার আলোকবালীর মানুষ। বিশ্ব যখন আধুনিকতার জয় গানে মুখরিত। ঠিক তখনি এক মধ্যযুগীয় বর্বরতার চোরাবালিতে আটকে ছিল আলোকবালী ইউনিয়নের মানুষের ভাগ্য।

সদর উপজেলার প্রত্যন্ত চরাঞ্চল আলোকবালীতে আধিপত্য বিস্তার, মেঘনা নদী থেকে বালু উত্তোলন, রাজনৈতিক কোন্দল এবং তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে প্রতিনিয়ত ঘটে আসছিল খুন, হত্যা, চাঁদাবাজি আর রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ। ইতোপূর্বে এ এলাকার মানুষ টেঁটা ব্যবহার করে মারামারি করত। বর্তমানে তারা বন্ধুক, পিস্তল এবং অবৈধ ভারী আগ্নেয়াস্ত্র ব্যবহার করে এলাকার পরিস্থিতিকে আরো জটিল করে তুলেছিল। ইতোমধ্যে বিভিন্ন দ্বন্দ্বের কারণে গত ১৮ সেপ্টেম্বর ইদন মিয়া (৬০) নামে এক বিএনপির কর্মী, ১৯ সেপ্টেম্বর ফেরদৌসি বেগম (৩৬) নামে এক গৃহবধূ এবং ২৯ সেপ্টেম্বর সাদেক হোসেন (৪২) নামে এক যুবদল নেতা গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যায়। এ সকল ঘটনায় আরো অন্তত ২৫-৩০ জন আহত হয়।

এ এলাকার শান্তি ফিরিয়ে আনার লক্ষ্যে গতকাল শনিবার সকালে নরসিংদী জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে আলোকবালী ইউনিয়ন পরিষদ প্রাঙ্গনে আইনশৃংখলা ও উন্নয়ন কার্যক্রমসহ সার্বিক বিষয়ে এক মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়। নরসিংদী জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আনোয়ার হোসাইনের সভাপতিত্বে মতবিনিময় সভায় অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ম মহাসচিব ও নরসিংদী জেলা বিএনপির সভাপতি খায়রুল কবির খোকন, নরসিংদী পুলিশ সুপার মো. মেনহাজুল আলম পিপিএম, নরসিংদী সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার আসমা জাহান সরকার, সদর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) সিনথিয়া হোসেন, পূজা উদযাপন ফ্রন্টের আহ্বায়ক দীপক কুমার বর্মন প্রিন্স ও বিভিন্ন সরকারি দপ্তরের কর্মকর্তারা।

বক্তারা উপস্থিত সর্বস্তরের জনগণকে আশ্বাস দিয়ে বলেন, ‘আজ (গতকাল শনিবার) থেকে আলোকবালীতে কোনো অস্ত্রবাজ, চাঁদাবাজ এবং বালু লুটেরার স্থান হবেনা। তাদেরকে অতিদ্রুত আইনের আওতায় আনা হবে। তারা যেকোন দলেরই হউক না কেনো তাদেরকে বিন্দুমাত্র ছাড় দেওয়া হবেনা। জেলা প্রশাসনের এ মহৎ উদ্যোগটি অভিজ্ঞ মহল এবং এলাকাবাসী সাধুবাদ জানিয়েছে। পাশাপাশি এলাকার সাধারণ মানুষের মধ্যে স্বস্তির নিশ্বাস ফিরে এসেছে।

মন্তব্য

p
উপরে