× হোম জাতীয় রাজধানী সারা দেশ অনুসন্ধান বিশেষ রাজনীতি আইন-অপরাধ ফলোআপ কৃষি বিজ্ঞান চাকরি-ক্যারিয়ার প্রযুক্তি উদ্যোগ আয়োজন ফোরাম অন্যান্য ঐতিহ্য বিনোদন সাহিত্য শিল্প ইভেন্ট উৎসব ধর্ম ট্রেন্ড রূপচর্চা টিপস ফুড অ্যান্ড ট্রাভেল সোশ্যাল মিডিয়া বিচিত্র সিটিজেন জার্নালিজম ব্যাংক পুঁজিবাজার বিমা বাজার অন্যান্য ট্রান্সজেন্ডার নারী পুরুষ নির্বাচন রেস অন্যান্য আফগানিস্তান ১৫ আগস্ট কী-কেন স্বপ্ন বাজেট আরব বিশ্ব পরিবেশ বিশ্লেষণ ইন্টারভিউ মুজিব শতবর্ষ ভিডিও যৌনতা-প্রজনন মানসিক স্বাস্থ্য অন্যান্য উদ্ভাবন প্রবাসী আফ্রিকা ক্রিকেট শারীরিক স্বাস্থ্য আমেরিকা দক্ষিণ এশিয়া সিনেমা নাটক মিউজিক শোবিজ অন্যান্য ক্যাম্পাস পরীক্ষা শিক্ষক গবেষণা অন্যান্য কোভিড ১৯ ইউরোপ ব্লকচেইন ভাষান্তর অন্যান্য ফুটবল অন্যান্য পডকাস্ট বাংলা কনভার্টার নামাজের সময়সূচি আমাদের সম্পর্কে যোগাযোগ প্রাইভেসি পলিসি

সারা দেশ
ভালোবাসার টানে হলেন রোহিঙ্গা খাটলেন জেল
google_news print-icon

প্রেমের টানে বাঙালি তরুণীর ‘অভিশপ্ত’ রোহিঙ্গা জীবন   

প্রেমের-টানে-বাঙালি-তরুণীর-অভিশপ্ত-রোহিঙ্গা-জীবন-  
চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে জামিনে মুক্ত সিরাজ খাতুন। ছবি: নিউজবাংলা
মুক্তির পর সিরাজ বলেন, ‘পাসপোর্ট অফিস থেকে গ্রেপ্তার করে নিয়ে যাওয়ার সময় বার বার বলছিলাম, আমি রোহিঙ্গা না, প্রতারণার শিকার হয়েছি। কিন্তু তারা বিশ্বাস করেনি। আমি ২০০৮ সালে বাংলাদেশে ভোটার হয়েছি। আমি বাংলাদেশি। আমি তার (স্বামী) বিচার চাই। রোহিঙ্গা তালিকা থেকে মুক্তি চাই।’

রোহিঙ্গা যুবককে ভালোবেসে ছেড়েছিলেন স্বজন, পরিবার। বাঙালি পরিচয় বদলে বেছে নেন রোহিঙ্গা জীবন। তবে যার জন্য ঘর ছাড়া সেই যুবকই এক সময় ছেড়ে যায় তরুণীকে। তত দিনে জন্ম নিয়েছে দুই সন্তান। দুই চোখে অন্ধকার দেখা তরুণী টিকে থাকার জন্য পাড়ি জমানোর চেষ্টা করেন মধ্যপ্রাচ্যে। তবে পাসপোর্ট করতে গিয়ে ‘মিথ্যা পরিচয়ের’ অভিযোগ ধরা পড়ে যেতে হয় কারাগারে।

সিনেমার কাহিনিকে হার মানানো এই তরুণীর নাম সিরাজ খাতুন। ২৫ দিন জেল খাটার পর মঙ্গলবার তিনি মুক্তি পেয়েছেন চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে।

মানবাধিকার সংস্থার হস্তক্ষেপে জামিনে মুক্ত হয়ে মঙ্গলবার সাংবাদিকদের তিনি শোনান বিভীষিকাময় জীবনের গল্প।

স্থানীয় সংসদ সদস্যের জিম্মায় গত ১৬ জুন সিরাজ খাতুনকে জামিন দেন চট্টগ্রাম মহানগর হাকিম শফি উদ্দিন। এর পর মঙ্গলবার বেলা ১১টার দিকে চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে তিনি মুক্তি পান।

প্রেম যেভাবে পরিণত প্রতারণায়

রাঙ্গুনিয়ার উত্তর পদুয়া এলাকায় প্রায় এক যুগ আগে পরিচয় গোপন করে মসজিদে মুয়াজ্জিনের কাজ করতেন রোহিঙ্গা যুবক মো. সিদ্দিক। পাশাপাশি অন্যের ফসলি জমিতে চাষাবাদও করতেন। সিদ্দিকের সঙ্গে ওই এলাকার সিরাজ খাতুনের প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে।

২০১০ সালে তারা পালিয়ে বিয়ে করেন। এরপর সিরাজ জানতে পারেন, তার স্বামী রোহিঙ্গা। শুরু হয় পুলিশের হাত থেকে পালিয়ে বেড়ানোর জীবন।

প্রেমের টানে বাঙালি তরুণীর ‘অভিশপ্ত’ রোহিঙ্গা জীবন

সিরাজ জানান, চট্টগ্রামের নানা জায়গায় ঘুরেও কোথাও থিতু হতে পারছিলেন না তারা। ২০১৭ সালে পটিয়ায় থাকার সময় ধরা পড়েন পুলিশের কাছে। পুলিশ তাদের পাঠিয়ে দেয় উখিয়ার পালংখালী রোহিঙ্গা ক্যাম্পে। সেখানে বিভিন্ন দাতা সংস্থার ত্রাণের আশায় সিরাজকে রোহিঙ্গা হিসেবে তালিকাভুক্ত করেন সিদ্দিক। সিরাজের নতুন নাম তখন সালমা খাতুন।

ক্যাম্পে নতুন চেহারা পায় সিদ্দিকের, নিয়মিত সিরাজকে নির্যাতন করতেন তিনি। এরই মধ্যে জন্ম নেয় দুই সন্তান। ২০১৯ সালে সিদ্দীক স্ত্রী-সন্তানদের রেখে হঠাৎ উধাও হয়ে যান। অসহায় সিরাজ দুই সন্তানকে নিয়ে ফিরে যান রাঙ্গুনিয়ায় বাবার বাড়িতে।

মিথ্যা পরিচয়ের অভিযোগে কারাবাস

সিরাজ নিউজবাংলাকে বলেন, ‘পরিবার জানত না আমি রোহিঙ্গাকে বিয়ে করেছি। সব শুনে তারা হতভম্ব হয়ে পড়ে। মানসম্মান রক্ষায় আমাকে ওমান পাঠিয়ে দেয়ার পরিকল্পনা করা হয়।’

ওমান যাওয়ার জন্য ৩ জুন পাসপোর্ট বানাতে ডবলমুরিংয়ের মনসুরাবাদ কার্যালয়ে যান সিরাজ। তবে পাসপোর্ট অফিসের কর্মকর্তারা তাকে আটক করেন। সিরাজের ফিঙ্গার প্রিন্টে দেখা যায়, তিনি একজন রোহিঙ্গা, নাম সালমা খাতুন।

এরপর এক বছর বয়সী সন্তানসহ তাকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। আদালতের মাধ্যমে পাঠানো হয় কারাগারে।

ঘটনাটি জানাজানি হওয়ার পর সিরাজকে সহায়তায় এগিয়ে আসে চট্টগ্রামভিত্তিক বেসরকারি মানবাধিকার সংগঠন বিএইচআরএফ। আইনি সহায়তা দিয়ে আদালতে বিষয়টি তুলে ধরে জামিন আবেদন করা হয়। বিচারক বিষয়টি আমলে নিয়ে সিরাজকে জামিন দেন।

বিএইচআরএফ চট্টগ্রামের সভাপতি অ্যাডভোকেট এ এম জিয়া হাবীব আহসান নিউজবাংলাকে বলেন, ‘দুই দফা আবেদন করেও সিরাজ খাতুনের জামিন হয়নি। তবে তৃতীয়বার আদালতের কাছে সিরাজ খাতুনের অসহায়ত্ব সম্পূর্ণ তুলে ধরলে বিচারক তা বুঝতে পারেন। অবশেষে তিনি কারাগার থেকে জামিনে মুক্তি পেলেন।’

মুক্তির পর সিরাজ বলেন, ‘পাসপোর্ট অফিস থেকে গ্রেপ্তার করে নিয়ে যাওয়ার সময় বার বার বলছিলাম, আমি রোহিঙ্গা না, প্রতারণার শিকার হয়েছি। কিন্তু তারা বিশ্বাস করেনি। পরে আমার পরিবার আইনজীবীর মাধ্যমে আদালতে বিষয়টি তুলে ধরে।

‘আমি ২০০৮ সালে বাংলাদেশে ভোটার হয়েছি। আমি বাংলাদেশি। আমি তার (স্বামী) বিচার চাই। রোহিঙ্গা তালিকা থেকে মুক্তি চাই।’

আরও পড়ুন:
ভাসানচর থেকে পালানোর সময় ১৪ রোহিঙ্গা আটক
রোহিঙ্গাদের জন্য ক্যাম্প করবেন শরণার্থী থেকে ফুটবলার নাদিয়া ‍
রোহিঙ্গা ক্যাম্পে ৭০ ভরি স্বর্ণ জব্দ
মিয়ানমারে কেন ফিরতে চান না রোহিঙ্গারা
জাতিসংঘের প্রস্তাবে হতাশ বাংলাদেশ

মন্তব্য

আরও পড়ুন

সারা দেশ
February elections will be the institutional form of empowerment of the people the chief adviser

ফেব্রুয়ারির নির্বাচন হবে জনগণের ক্ষমতায়নের প্রাতিষ্ঠানিক রূপ: প্রধান উপদেষ্টা

* ক্ষুধামুক্ত বিশ্ব গঠনে ছয় দফা প্রস্তাব * ‘তিন-শূন্য বিশ্ব’ গড়ার আহ্বান
ফেব্রুয়ারির নির্বাচন হবে জনগণের ক্ষমতায়নের প্রাতিষ্ঠানিক রূপ: প্রধান উপদেষ্টা ছবি: সংগৃহীত

প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস বৈশ্বিক খাদ্য ও অর্থনৈতিক ব্যবস্থার পূর্ণ সংস্কারের আহ্বান জানিয়ে ক্ষুধামুক্ত বিশ্ব গঠনের জন্য ছয় দফা প্রস্তাব দিয়েছেন। তিনি বলেছেন, ‘ক্ষুধা কোনো অভাবের কারণে নয়, এটি আমাদের তৈরি করা অর্থনৈতিক কাঠামোর ব্যর্থতা। আমাদের এই ব্যবস্থা বদলাতে হবে।’
গতকাল সোমবার ইতালির রোমে জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থার (এফএও) সদর দপ্তরে আয়োজিত বিশ্ব খাদ্য ফোরাম (ডব্লিউএফএফ) ২০২৫-এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের মূল বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
বৈশ্বিক খাদ্য ও অর্থনৈতিক কাঠামো সংস্কারের ছয় দফা প্রস্তাবে অধ্যাপক ইউনূস প্রথমেই বলেন, ‘যুদ্ধ বন্ধ করুন, সংলাপ শুরু করুন এবং সংঘাতপূর্ণ অঞ্চলে খাদ্য পৌঁছানোর ব্যবস্থা নিশ্চিত করুন’—এর মাধ্যমে ক্ষুধা ও সংঘাতের দুষ্টচক্র ভাঙতে হবে।
দ্বিতীয় প্রস্তাবে তিনি বলেন, টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এসডিজি) অর্জনে অর্থায়নের অঙ্গীকার পূরণ করতে হবে, জলবায়ু সংকট মোকাবিলায় কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে এবং ঝুঁকিপূর্ণ জনগোষ্ঠীকে টিকে থাকার সক্ষমতা গড়ে তুলতে সহায়তা করতে হবে।
তৃতীয় প্রস্তাবে তিনি বলেন, আঞ্চলিক খাদ্য ব্যাংক গঠন করে খাদ্য সরবরাহ চেইন স্থিতিশীল রাখতে হবে।
চতুর্থ প্রস্তাবে অধ্যাপক ইউনূস বলেন, তরুণ কৃষি উদ্যোক্তা ও স্থানীয় ব্যবসায়ীদের অর্থায়ন, অবকাঠামো ও বৈশ্বিক অংশীদারত্বের মাধ্যমে সহায়তা দিতে হবে।
পঞ্চম প্রস্তাবে তিনি রপ্তানি নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের আহ্বান জানিয়ে বলেন, বাণিজ্যনীতিকে খাদ্য নিরাপত্তার সহায়ক হতে হবে, বাঁধা নয়।
ষষ্ঠ প্রস্তাবে তিনি বলেন, প্রযুক্তি ও উদ্ভাবনের সুযোগ নিশ্চিত করতে হবে, বিশেষ করে গ্লোবাল সাউথের তরুণ কৃষক ও উদ্যোক্তাদের জন্য।
অধ্যাপক ইউনূস বলেন, ‘২০২৪ সালে ৬৭৩ মিলিয়ন মানুষ ক্ষুধার্ত ছিল, অথচ আমরা যথেষ্ট খাদ্য উৎপাদন করেছি। এটি উৎপাদনের ব্যর্থতা নয়— এটি অর্থনৈতিক ব্যবস্থার ব্যর্থতা, নৈতিক ব্যর্থতা।’

তিনি বলেন, ‘ক্ষুধা দূর করতে যেখানে কয়েক বিলিয়ন ডলার জোগাড় করা যায়নি, সেখানে অস্ত্র কিনতে বিশ্ব ব্যয় করেছে ২ দশমিক ৭ ট্রিলিয়ন ডলার। একে কি আমরা অগ্রগতি বলব?’

অর্থনৈতিক ব্যবস্থার মৌলিক পরিবর্তনের ওপর জোর দিয়ে তিনি বলেন, ‘আমাদের পুরো অর্থনৈতিক ব্যবস্থা পুনর্বিবেচনা করতে হবে। পুরোনো মুনাফাভিত্তিক ব্যবসা পদ্ধতি কোটি কোটি মানুষকে পিছনে ফেলে দিয়েছে।’

তিনি বলেন, ‘আমাদের এমন এক নতুন ব্যবসা পদ্ধতি গড়ে তুলতে হবে— সামাজিক ব্যবসা, যা ব্যক্তিগত মুনাফার জন্য নয়, বরং সমাজের সমস্যা সমাধানের জন্য।’

অধ্যাপক ইউনূস তার স্বপ্নের ‘তিন-শূন্য বিশ্ব’ (শূন্য দারিদ্র্য, শূন্য বেকারত্ব ও শূন্য কার্বন নিঃসরণ) ধারণা ব্যাখ্যা করে বলেন, ‘এটি কোনো কল্পনা নয়, এটি অপরিহার্য— বিশ্ব বাঁচানোর একমাত্র পথ।’

তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশে সামাজিক ব্যবসার সাফল্য আমরা দেখেছি। গ্রামীণ ব্যাংক দেখিয়েছে, দরিদ্র নারীরাও উদ্যোক্তা হতে পারেন। গ্রামীণ দানোন শিশু অপুষ্টির বিরুদ্ধে কাজ করছে। বিশ্বজুড়ে এমন বহু সামাজিক ব্যবসা মানুষের জীবন বদলে দিচ্ছে।’

তিনি বলেন, ‘তরুণ, নারী, কৃষক, কৃষিুউদ্যোক্তা ও প্রযুক্তি উদ্ভাবকদের সহায়তায় সামাজিক ব্যবসা তহবিল গঠন করতে হবে। এই ধরনের উদ্যোগের জন্য আইনগত ও আর্থিক কাঠামো তৈরি করতে হবে, বাঁধা নয়।’

তরুণদের ভূমিকা তুলে ধরে অধ্যাপক ইউনূস বলেন, ‘আজকের তরুণ প্রজন্ম আগের তুলনায় অনেক বেশি সংযুক্ত, সৃজনশীল ও প্রযুক্তিনির্ভর। তাদের চাকরি খোঁজার কথা বলবেন না, বরং চাকরি সৃষ্টির ক্ষমতায়ন করুন।’

তিনি বলেন, ‘তরুণদের বিনিয়োগ তহবিল ও সামাজিক ব্যবসা তহবিলের মাধ্যমে মূলধনে প্রবেশাধিকার দিতে হবে। কৃষি-উদ্ভাবন কেন্দ্র, কৃষিুপ্রযুক্তি, চক্রাকার খাদ্য ব্যবস্থা ও জলবায়ু স্মার্ট উদ্যোক্তা তৈরিতে সহায়তা দিতে হবে।’

তিনি যোগ করেন, ‘যুব সমাজের ওপর বিনিয়োগ করলে শুধু বিশ্বকে খাদ্য দিতে পারব না, বিশ্বকেই বদলে দিতে পারব।’

অধ্যাপক ইউনূস বলেন, ‘বাংলাদেশ ক্ষুধা ও দারিদ্র্যের বিরুদ্ধে বৈশ্বিক জোটের (গ্লোবাল অ্যালায়েন্স অ্যাগেইনস্ট হাঙ্গার অ্যান্ড পোভার্টি) প্রতিষ্ঠাতা সদস্য। আমরা এফএও ও জি-২০-এর সঙ্গে মিলিতভাবে প্রযুক্তিগত, আর্থিক ও নৈতিক সহায়তা দিতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।’

তিনি আহ্বান জানান, ‘আসুন, একটি তিন-শূন্য বিশ্ব গড়ে তোলার জন্য আমরা একসঙ্গে কাজ করি।’

অধ্যাপক ইউনূস বলেন, ‘এই ফোরামের তিনটি স্তম্ভ—যুব, বিজ্ঞান ও বিনিয়োগ—শুধু স্লোগান নয়, এটি আমাদের খাদ্যব্যবস্থা ও সমাজ রূপান্তরের প্রধান হাতিয়ার।’

তিনি বলেন, ‘বিশ্বে সম্পদ ও প্রযুক্তি রয়েছে, ভবিষ্যতে আরও উন্নত প্রযুক্তি আসবে। এখন দরকার সৃজনশীল চিন্তা ও সঠিক ব্যবসা কাঠামো—যার মাধ্যমে আমরা নতুন বিশ্ব গড়ে তুলতে পারব। আমরা যদি কল্পনা করতে পারি, আমরা তা বাস্তবেও সৃষ্টি করতে পারব।’

বক্তৃতার শুরুতে অধ্যাপক ইউনূস বলেন, ‘এফএও’র ৮০ বছর পূর্তি শুধু উদযাপন নয়, এটি ভবিষ্যতের প্রস্তুতির আহ্বান।’

তিনি বলেন, ‘এ বছরের প্রতিপাদ্য— ‘হাত ধরে হাতে, উন্নত খাদ্য ও উন্নত ভবিষ্যতের পথে’—আমাদের মনে করিয়ে দেয়: খাদ্য শুধু ক্যালরির ব্যাপার নয়, এটি মর্যাদার, ন্যায়ের এবং আমরা কেমন পৃথিবীতে বাস করতে চাই তার প্রতিচ্ছবি।’

তিনি এফএওর নোবেল শান্তি পুরস্কারজয়ী খাদ্য নিরাপত্তা ও শান্তি জোটের প্রশংসা করে বলেন, এটি ভবিষ্যতেও বৈশ্বিক খাদ্য নিরাপত্তায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলে তিনি আশা করেন।

প্রধান উপদেষ্টা ২০২৪ সালের বাংলাদেশের শান্তিপূর্ণ তরুণ নেতৃত্বাধীন আন্দোলনের কথা স্মরণ করে বলেন, ‘তরুণরা সাহস ও আশায় ভরপুর হয়ে গণতন্ত্র, শান্তি ও মানবাধিকারের জন্য লড়াই করেছে। তাদের দাবি ছিল ক্ষমতা জনগণের কাছে ফিরিয়ে দেওয়া, ন্যায়, অন্তর্ভুক্তি ও আস্থার ভিত্তিতে সমাজ গঠন।’

তিনি যোগ করেন, ‘এ তরুণরাই এখন নতুন বাংলাদেশ গঠনে কাজ করছে—যেখানে জনগণ শাসনের কেন্দ্রে। আগামী ফেব্রুয়ারিতে জাতীয় নির্বাচন হবে, যার মাধ্যমে আমরা ন্যায় ও জনগণের ক্ষমতায়নের প্রতিশ্রুতি প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দেব।’

অধ্যাপক ইউনূস বলেন, ‘বাংলাদেশ আজ ১৭ কোটি মানুষের খাদ্য নিশ্চিত করছে এবং মিয়ানমারের সহিংসতা থেকে পালিয়ে আসা ১৩ লাখ রোহিঙ্গাকেও আশ্রয় ও খাদ্য সহায়তা দিচ্ছে।’

তিনি বলেন, ‘আমরা ধান উৎপাদনে স্বয়ংসম্পূর্ণ হয়েছি। বিশ্বের শীর্ষ দেশগুলোর মধ্যে আছি ধান, সবজি ও স্বাদুপানির মাছ উৎপাদনে। কৃষকরা ফসলের নিবিড়তা ২১৪ শতাংশে উন্নীত করেছেন এবং আমরা জলবায়ু সহনশীল ১৩৩ প্রজাতির ধান উদ্ভাবন করেছি।’

তিনি বলেন, ‘আমরা কৃষিতে যান্ত্রিকীকরণ করেছি, ৭০ শতাংশ পর্যন্ত ভর্তুকি দিচ্ছি, শক্তিশালী খাদ্য বিতরণ ব্যবস্থা গড়ে তুলেছি, অপুষ্টি কমিয়েছি, খাদ্যাভ্যাসে বৈচিত্র্য এনেছি এবং কৃষিকে সবুজ করেছি— মাটি, পানি ও জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণে কাজ করছি।’ বাসস

মন্তব্য

সারা দেশ
Sheikh Hasina to Colonel Rajiv This time there is no more talk at the beginning

কর্নেল রাজিবকে শেখ হাসিনা: ‘এবার আর কোনো কথা নাই, শুরুতেই দিবা’

* ট্রাইবুনালে ফোনালাপ উপস্থাপন
কর্নেল রাজিবকে শেখ হাসিনা: ‘এবার আর কোনো কথা নাই, শুরুতেই দিবা’

একে একে প্রকাশিত হচ্ছে ক্ষমতাচ্যুত সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ফোনালাপ। তাপস-ইনুর পর এবার প্রকাশ পেল উপ-সামরিক সচিব (ডিএসপিএম) কর্নেল রাজিবের সঙ্গে তৎকালীন এই প্রধানমন্ত্রীর কথোপকথন। জুলাই-আগস্ট আন্দোলনে ছাত্র-জনতার ওপর সরাসরি গুলির নির্দেশনা দেওয়া হয় এই ফোনালাপেও। তাদের সেই কথোপকথনটি শোনানো হয় আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে।
গতকাল সোমবার জুলাই-আগস্টে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে বিচার শুরু হওয়া সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালসহ তিনজনের বিরুদ্ধে দ্বিতীয় দিনের যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শুরু হয়।
ট্রাইব্যুনাল ১-এর চেয়ারম্যান বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের বিচারিক প্যানেলে যুক্তিতর্ক উপস্থাপন করেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম।
শুরুতে জুলাই-আগস্ট আন্দোলন নিয়ে নির্মিত ডেইলি স্টারের একটি প্রামাণ্যচিত্র তুলে ধরেন চিফ প্রসিকিউটর। এ ভিডিওতে ছাত্র-জনতার আন্দোলন দমনে সরকারপ্রধান হিসেবে শেখ হাসিনার ভূমিকাসহ আওয়ামী লীগের দুর্গ ভেঙে পড়ার বিবরণ দেওয়া হয়। ওই ভিডিওতে একজন ল এনফোর্সমেন্ট এজেন্সির এক কর্মকর্তার সঙ্গে শেখ হাসিনার একটি ফোনালাপের কথা বলা হয়। পরে প্রসিকিউশনের পক্ষ থেকে শোনানো হয় সেই অডিও রেকর্ড।
ফোনালাপটির শুরুতে স্যার সম্বোধন করে সালাম দেন একজন। তারপর সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে বলতে শোনা যায়, ‘ওরা কিন্তু জায়গায় জায়গায় এখন জমায়েত হতে শুরু করেছে। মিরপুর, যাত্রাবাড়ী, উত্তরা, ব্র্যাক ইউনিভার্সিটি এবং বিভিন্ন জায়গায়। শুরুতেই কিন্তু ইয়ে…করতে হবে, একদম শুরুতেই। ধাওয়া দিলে এরা গলিতে গলিতে থাকবে। এবার আর কোনো কথা নাই। এবার শুরুতেই দিবা।’
এ প্রসঙ্গে ট্রাইব্যুনালকে চিফ প্রসিকিউটর বলেন, শেখ হাসিনার সঙ্গে কথোপকথনের অপরপ্রান্তের ব্যক্তি হলেন কর্নেল রাজিব। তিনি তৎকালীন প্রধানমন্ত্রীর ডেপুটি মিলিটারি সেক্রেটারি ছিলেন। বর্তমানে তিনি বাংলাদেশে নেই। গত বছরের ২৯ জুলাই ফোনের মাধ্যমে কর্নেল রাজিবকে এ নির্দেশ দিয়েছেন শেখ হাসিনা। তার শেষ কথা হচ্ছে- এবার আর কোনো কথা নাই। এবার শুরুতেই দিবা। মানে আসামাত্রই গুলি করা হবে। এটাই ছিল নির্দেশনা।
গত রোববার এ মামলায় যুক্তিতর্ক শুরু হয়। বেলা পৌনে ১২টা থেকে বিকেল পর্যন্ত চলে রাষ্ট্রপক্ষের উপস্থাপন। এতে আওয়ামী লীগ সরকারের দীর্ঘ শাসনামলের ইতিহাস তুলে ধরেন চিফ প্রসিকিউটর। একইসঙ্গে গুম-খুনসহ নারকীয় সব ঘটনার বর্ণনা দেন। এসব বিবরণ এ মামলার জন্য গুরুত্বপূর্ণ বলে জানান তাজুল ইসলাম।

মন্তব্য

সারা দেশ
Millions of people suffer from the bridge construction of the bridge

৪ বছরেও শেষ হয়নি সেতু নির্মাণ, চরম ভোগান্তিতে লাখো মানুষ

৪ বছরেও শেষ হয়নি সেতু নির্মাণ, চরম ভোগান্তিতে লাখো মানুষ সড়কের বেহাল দশা। ছবি: সংগৃহীত

পরপর দুই দফায় সময় বাড়ানো হলেও চার বছরেও শেষ হয়নি রাঙামাটির কুতুকছড়ি সেতুর নির্মাণকাজ। কাজের ধীরগতির কারণে রাঙামাটি-মানিকছড়ি-মহালছড়ি-খাগড়াছড়ি আঞ্চলিক মহাসড়কে যাতায়াতকারী পাহাড়ের লাখো মানুষ পড়েছে চরম দুর্ভোগে।

রাঙামাটি সড়ক ও জনপথ (সওজ) বিভাগের আওতায় সেতুটি নির্মাণ করা হচ্ছে কুতুকছড়ি এলাকায়। এর মাধ্যমে উত্তর ও দক্ষিণ পার্বত্য চট্টগ্রামকে সংযুক্ত করছে গুরুত্বপূর্ণ এই আঞ্চলিক মহাসড়কটি।

২০২২ সালের ১১ আগস্ট সেতুর নির্মাণকাজের কার্যাদেশ দেওয়া হয়। তবে ২০২৪ সালের জুন মাসে প্রথম মেয়াদ শেষে কাজ অসম্পূর্ণ থাকায় আরও এক বছর সময় বাড়ানো হয়। তবুও অগ্রগতি মাত্র ৩৫ শতাংশ।

সরেজমিনে দেখা যায়, নির্মাণকাজের ধীরগতির কারণে বর্তমানে বিকল্প সড়ক ও ঝুঁকিপূর্ণ অস্থায়ী সেতু ব্যবহার করতে হচ্ছে সাধারণ মানুষকে। চলমান বর্ষা মৌসুমে নদীর পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় বিকল্প পথেও চলাচল বিপজ্জনক হয়ে উঠেছে। উপচে পড়া পানিতে প্রায়ই দুর্ঘটনা ঘটছে। এতে ব্যাহত হচ্ছে যাতায়াত, কৃষিপণ্য পরিবহন ও জরুরি চিকিৎসাসেবা।

স্থানীয়দের অভিযোগ, ভাঙা এই রাস্তা দিয়ে রোগী বা মেডিকেল টিম আসা-যাওয়া করা খুবই কষ্টকর। বিকল্প যে রাস্তা তৈরি হয়েছে, সেটাও এখন পানিতে তলিয়ে যাচ্ছে। চলাফেরায় সমস্যা হচ্ছে, দুর্ঘটনাও ঘটছে প্রায়ই।

সেতুটির দৈর্ঘ্য ৮১.৩১৫ মিটার। নির্মাণ ব্যয় নির্ধারণ করা হয়েছে ১৪ কোটি ২৯ লাখ টাকা। ২০২১ সালে কুতুকছড়ির পুরনো বেইলি ব্রিজটি একটি পাথর বোঝাই ট্রাকসহ ভেঙে পড়ার পর নতুন সেতু নির্মাণের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। এরপর ‘সরদার এন্টারপ্রাইজ’ এবং ‘রাঙামাটি ট্রেডার্স’ নামে দুটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান কাজ শুরু করে।

রাঙামাটি ট্রেডার্সের স্বত্বাধিকারী নিজাম উদ্দিন মিশু বলেন, নদীতে পানি থাকায় কাজ বাঁধাগ্রস্ত হচ্ছে। আমরা সময় বৃদ্ধির জন্য আবেদন করেছি। পানি কমে গেলে স্বল্প সময়ের মধ্যেই কাজ শেষ করার চেষ্টা করব।

তবে রাঙামাটি সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী সবুজ চাকমা বলেন, পর পর দুবার সময় বাড়ানো হলেও এখনো কাজের অগ্রগতি মাত্র ৩৫ শতাংশ। চুক্তির শর্ত অনুযায়ী আমরা ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে চুক্তি বাতিলের জন্য উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে ইতোমধ্যে পত্র পাঠিয়েছি। অনুমোদন পেলে নতুন ঠিকাদার নিয়োগ দিয়ে অবশিষ্ট কাজ সম্পন্ন করা হবে।

এই সড়ক দিয়ে প্রতিদিন হাজার হাজার মানুষ যাতায়াত করে। এটি পাহাড়ের কৃষিপণ্য, ফলমূল, এবং অন্যান্য পণ্য পরিবহনের গুরুত্বপূর্ণ পথ। সেতুর নির্মাণ দীর্ঘ সময় ধরে ঝুলে থাকায় স্থানীয় পর্যটন, ব্যবসা-বাণিজ্য এবং সাধারণ মানুষের জীবনযাত্রাও ব্যাহত হচ্ছে।

মন্তব্য

সারা দেশ
The loss of billions of rupees in agriculture in Chuadanga

চুয়াডাঙ্গায় কৃষিতে বছরে ক্ষতি কোটি কোটি টাকা

চুয়াডাঙ্গায় কৃষিতে বছরে ক্ষতি কোটি কোটি টাকা সেচের জন্য গভীর নলকূপ দিয়ে পানি উত্তোলন করা হচ্ছে। ছবি: সংগৃহীত

বৈশ্বিক জলবায়ু পরিবর্তনের অভিঘাত সরাসরি পড়েছে বাংলাদেশের সীমান্তবর্তী জেলা চুয়াডাঙ্গায়। বিশেষ করে গত পাঁচ বছর ধরে গ্রীষ্ম মৌসুমে এপ্রিল থেকে জুন পর্যন্ত তাপমাত্রা প্রায় প্রতিদিনই ৩৬ থেকে ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের ঘরে পৌঁছেছে বা তা অতিক্রম করেছে। অতিরিক্ত এই গরমে জেলার কৃষি, পরিবেশ, প্রাণিসম্পদ, মৎস্য ও সাধারণ মানুষের জীবন-জীবিকায় মারাত্মক প্রভাব ফেলেছে। এমনকি শীত মৌসুমে সর্বনিম্ন তাপমাত্রাও গত ৫ বছর সবখাতেই প্রভাব ফেলছে।

চুয়াডাঙ্গা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের হিসাবে, জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে গত ৫ বছরের মধ্যে জেলার কৃষিতে ক্ষতির পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৮ কোটি ৪১ লাখ ৪৫ হাজার ৭৫০ টাকা।

তবে সম্প্রতি বেসরকারি এনজিও ওয়েব ফাউন্ডেশন ও রিসোর সমীক্ষায় উঠে এসেছে ভিন্ন তথ্য। তাদের সমীক্ষা অনুযায়ী, জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে এ জেলায় প্রতি বছরই ক্ষতির পরিমাণ দুই থেকে তিনশো কোটি টাকার বেশি।

সমীক্ষা বলছে, বৈশ্বিক উষ্ণতা বৃদ্ধির প্রভাব সরাসরি অনুভূত হচ্ছে এই জেলাটিতে। এতে জেলায় খরা, ঝড় ও অতিবৃষ্টির কারণে কৃষিখাত ক্রমাগত ক্ষতির মুখে পড়ছে। এছাড়া জলবায়ু এই প্রভাবে নির্মাণশ্রমিক, কৃষক, দিনমজুর, রিকশাচালকসহ খোলা আকাশের নিচে কাজ করা শ্রমজীবী মানুষেরা পড়েছেন চরম বিপাকে। গত পাঁচ বছরে জেলায় বোরো ধান, গম, ভুট্টা, শীতকালীন সবজি, তামাক, পেঁয়াজ, কলা, পেঁপে, পানবরজ ও ফলবাগানে আঘাত হানে প্রাকৃতিক দুর্যোগ।

জেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, ২০২০ সাল থেকে ২০২৪ সালের মধ্যে খরা, অতিবৃষ্টি ও ঝড়ের কারণে প্রতিবছর ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে হাজারো কৃষক। এসব দুর্যোগে বারবার বিপর্যস্ত হয়ে পড়ছে জেলার প্রধান ফসল উৎপাদন ব্যবস্থা।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক (ডিডি) মাসুদুর রহমান সরকার জানান, ২০২২ সাল সবচেয়ে বেশি ক্ষতির বছর ছিল। শুধু ওই বছরেই কৃষিতে ক্ষতি হয় ৪ কোটি ২২ লাখ টাকার বেশি। ২০২৩ ও ২০২৪ সালেও প্রায় অর্ধ কোটি টাকার বেশি ক্ষতি হয়েছে। তবে আমরা ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের পুনরুদ্ধারে প্রণোদনা ও পুনর্বাসন কর্মসূচির আওতায় সহায়তা দিয়ে যাচ্ছি।

বছরভিত্তিক কৃষিতে ক্ষতির পরিমাণ

২০২০ সালে ক্ষতি ১ কোটি ১৬ লাখ ৮১ হাজার ৭ শত ৫০ টাকা, ২০২১ সালে ক্ষতি ২ কোটি ৩৬ লাখ ১৬ হাজার ৫ শত টাকা, ২০২২ সালে ক্ষতি ৪ কোটি ২২ লাখ ২৬ হাজার ৮ শত টাকা, ২০২৩ সালে ক্ষতি ৪২ লাখ ৭০ হাজার টাকা, ২০২৪ সালে ক্ষতি ২৩ লাখ ৫০ হাজার ৭ শত টাকা।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক (ডিডি) মাসুদুর রহমান সরকার জানান, ২০২২ সাল সবচেয়ে বেশি ক্ষতির বছর ছিল। শুধু ওই বছরেই কৃষিতে ক্ষতি হয় ৪ কোটি ২২ লাখ টাকার বেশি। ২০২৩ ও ২০২৪ সালেও প্রায় অর্ধ কোটি টাকার বেশি ক্ষতি হয়েছে। তবে আমরা ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের পুনরুদ্ধারে প্রণোদনা ও পুনর্বাসন কর্মসূচির আওতায় সহায়তা দিয়ে যাচ্ছি।

সরকারি প্রণোদনা কর্মসূচির আওতায় কৃষকদের সহায়তা

২০২০ সালে ২ কোটি ৫৫ লাখ ১৮ হাজার ৬০ টাকা সহায়তা দেওয়া হয়েছে, ২০২১ সালে ৭ কোটি ১ লাখ ৮৯ হাজার ৫ শত ৫০ টাকা সহায়তা দেওয়া হয়েছে, ২০২২ সালে ৫ কোটি ৩০ লাখ ১২ হাজার ৯ শত ৯০ টাকা সহায়তা দেওয়া হয়েছে, ২০২৩ সালে ৬ কোটি ৪২ লাখ ৫৯ হাজার ৪ শত ৮৮ টাকা সহায়তা দেওয়া হয়েছে, ২০২৪ সালে ৯ কোটি ৭৬ লাখ ৪১ হাজার ৩ শত ৩২ টাকা সহায়তা দেওয়া হয়েছে।

এছাড়া প্রণোদনা ও পুনর্বাসন কর্মসূচির আওতায় কৃষকদের বোরো, আউশ, আমন ধানের বীজ, গম, ভুট্টা, মুগ, মসুর, মাসকলাই, সরিষা, সবজি ও পেঁয়াজসহ নানা মৌসুমী ফসলের বীজ ও সার দেওয়া হয়।

মাসুদুর রহমান সরকার আরো বলেন, আমরা চলতি মৌসুমেও অর্থাৎ এই ২০২৫ সালেও আউশ প্রণোদনা, আমন প্রণোদনা, মুগ, তুলা, গ্রীষ্মকালীন পেঁয়াজসহ ১০টির বেশি প্রকল্প বাস্তবায়ন করছি। বিশেষ করে খরার সময় কৃষকদের সহনশীল জাত চাষে উৎসাহ দিচ্ছি।

তবে মাঠপর্যায়ের কৃষকদের অভিযোগ, অনেক সময় ক্ষতিপূরণ দীর্ঘসূত্রতায় পেতে হয়। এছাড়া তালিকা তৈরিতে অনেকেই বাদ পড়ে যান। সময়মতো পর্যাপ্ত প্রণোদনা পান না তারা।

সদর উপজেলার সরিষাডাংগা গ্রামের এক কৃষক বলেন, ঝড়ে আমার কলাবাগান শেষ হয়ে যায়। সেসময় ইউপি চেয়ারম্যান তালিকা করলেও এখনো কোনো প্রণোদনা পাইনি। অনেক সময় এই তালিকা রাজনৈতিক হয়।

উপজেলার মাছচাষি হাসান বলেন, পুকুর শুকিয়ে গেলে মাছের খাবার খরচও ওঠে না। কৃষিতে তো কিছু প্রণোদনা আসে, কিন্তু মৎস্য খাতে সে রকম কিছু পাই না।

এদিকে চুয়াডাঙ্গায় গত পাঁচ বছরে (২০২০ থেকে ২০২৪) তাপমাত্রা বেড়েছে বিপজ্জনক হারে। একইসঙ্গে কমেছে গড় বৃষ্টিপাত। এ প্রবণতা জলবায়ু পরিবর্তনের সরাসরি প্রভাব বলে মনে করছেন পরিবেশবিদ ও আবহাওয়াবিদরা। দীর্ঘমেয়াদে এই ধারা অব্যাহত থাকলে কৃষি, মাছ, প্রাণিসম্পদ ও জনস্বাস্থ্য হুমকির মুখে পড়তে পারে বলে আশঙ্কা করছেন বিশেষজ্ঞরা।

মন্তব্য

সারা দেশ
BNPs exceptional free discussion and 5 point public relations with the participation of women in Sonargaon

সোনারগাঁওয়ে নারীদের অংশগ্রহণে বিএনপির ব্যাতিক্রমী মুক্ত আলোচনা ও ৩১ দফার গণসংযোগ

সোনারগাঁওয়ে নারীদের অংশগ্রহণে বিএনপির ব্যাতিক্রমী মুক্ত আলোচনা ও ৩১ দফার গণসংযোগ সোনারগাঁওয়ে বিএনপির গণসংযোগ।

রাষ্ট্রকাঠামো মেরামতের রূপরেখার ৩১ দফা বাস্তবায়নের লক্ষ্যে নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁওয়ে নারীদের অংশগ্রহণে একটি উঠান বৈঠক, মুক্ত আলোচনা ও ৩১ দফার লিফলেট বিতরণ করেছে উপজেলা মহিলা দল।

সোমবার বিকেলে উপজেলার বৈদ্দ্যেরবাজার ইউনিয়নের পঞ্চবটি এলাকার মতিউর রহমান হাইস্কুল প্রাঙ্গণে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়।

বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য, সোনারগাঁও উপজেলা বিএনপির সভাপতি ও নারায়ণগঞ্জ-৩ আসনের বিএনপির মনোনয়ন প্রত্যাশী আজহারুল ইসলাম মান্নানের নির্দেশনায় অনুষ্ঠানটি পরিচালনা করেন উপজেলা বিএনপির মহিলাবিষয়ক সম্পাদক সালমা আক্তার কাজল।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন আজহারুল ইসলাম মান্নানের ছেলে ও নারায়ণগঞ্জ জেলা যুবদলের সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক খাইরুল ইসলাম সজিবের সহধর্মিণী সাদিয়া ইসলাম জুঁই।

বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বোন মারিয়া ইসলাম মুন্নি। তারা সভায় এলাকার সাধারণ নারীদের সঙ্গে সরাসরি মতবিনিময় করেন।

সাদিয়া ইসলাম জুঁই বলেন, আজকের নারী শুধু সংসার সামলায় না, দেশও সামলায়। আমরা চাই এমন বাংলাদেশ, যেখানে আমাদের সন্তানরা নিরাপদ থাকবে, যেখানে ভোট দিতে পারব নিজের ইচ্ছায়, যেখানে ন্যায়ের শাসন ফিরবে। বিএনপি সেই স্বপ্নের রাজনীতি করছে- মানুষের অধিকার ফিরিয়ে আনার রাজনীতি।’ আপনাদের সবাইকে ধানের শীষে ভোট দিয়ে বিএনপিকে রাষ্ট্র পরিচালনায় সহযোগিতা করার অনুরোধ করছি।

মারিয়া ইসলাম মুন্নি তার আবেগঘন বক্তব্যে বলেন, এই দেশটা আমাদের; কিন্তু আজ আমরা আমাদেরই অধিকার থেকে বঞ্চিত। আমাদের মা-বোনেরা কষ্টে আছে, ন্যায্য মূল্য পাচ্ছে না। তাই ৩১ দফা শুধু রাজনৈতিক প্রতিশ্রুতি নয়, এটা আমাদের বাঁচার স্বপ্ন। আমরা সবাই মিলে সেই স্বপ্ন বাস্তবায়ন করব। তারেক রহমানের সে স্বপ্ন বাস্তবায়নে আমার বাবা তার পুরো জীবন আপসহীনভাবে জনগণের স্বার্থে অন্যায়ের বিরুদ্ধে লড়ে গেছেন। আশা করি আপনারা বিএনপির পাশে থাকবেন। একই সাথে সোনারগাঁও আসনটি তারেক রহমানকে উপহার দেবেন।

অন্যান্য বক্তারা বলেন, তারেক রহমানের নেতৃত্বে বাংলাদেশ আবারও গণতন্ত্র, মানবাধিকার ও ন্যায়বিচারের পথে ফিরবে। জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠা ছাড়া দেশের মুক্তি নেই।

অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, বৈদ্দ্যেরবাজার ইউনিয়নের সভাপতি তাজুল ইসলাম সরকার, সাধারণ সম্পাদক মোশাররফ হোসেন, মোস্তাক হোসেন, রাকিব হাসান, কাউসার আহমেদ, সোহেল প্রধান, সেলিম হোসেন দিপু, আলিনুর বেপারী, মাহফুজ ইসলামসহ কয়েকশ নেতারা।

অনুষ্ঠান শেষে উপস্থিত নারীদের হাতে হাতে ৩১ দফা বাস্তবায়নের লিফলেট বিতরণ ও ধানের শীষে ভোট দেওয়ার আহ্বান করেন।

মন্তব্য

হাসপাতালের বেহাল দশা

হাসপাতালের বেহাল দশা ঠাকুরগাঁওয়ের ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতাল। ছবি: সংগৃহীত

ঠাকুরগাঁওয়ের ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতাল উত্তরাঞ্চলের ঠাকুরগাঁওসহ আশেপাশে দুই জেলার প্রায় ৪০ লাখ মানুষের চিকিৎসার প্রধান ভরসাস্থল। কিন্তু যে স্থানে মানুষ আসে সুস্থতার আশায়, সেই স্থানই এখন যেন রোগ উৎপত্তির কেন্দ্রস্থল। নোংরা পরিবেশ, অস্বাস্থ্যকর অবস্থা আর অব্যবস্থাপনায় ভরে গেছে হাসপাতালটি।

রোগীরা বলছেন, এখন এই হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে এসে মানুষ সুস্থ নয়, বরং আরও অসুস্থ হয়ে পরে। অন্যদিকে ধারণক্ষমতার দুই থেকে তিন গুণ বেশি রোগী ভর্তি থাকায় চিকিৎসাসেবা ব্যাহত হচ্ছে বলে জানিয়েছেন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।

তারা বলছেন, জনবল সংকট ও অব্যবস্থাপনার কারণে কাঙ্ক্ষিত সেবা প্রদান করা সম্ভব হচ্ছে না। এদিকে স্থানীয় সচেতন নাগরিক ও সেবাগ্রহীতারা মনে করছেন ঠাকুরগাঁওয়ে দ্রুত একটি মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল স্থাপন ছাড়া স্বাস্থ্যসেবার মানোন্নয়নের বিকল্প নেই।

সরেজমিনে দেখা যায়, ঠাকুরগাঁও জেনারেল হাসপাতালের ধারণক্ষমতা ২৫০ শয্যা হলেও প্রতিদিন ভর্তি থাকে প্রায় ৬০০ থেকে ৭০০ রোগী। রোগীর চাপে বেড তো পাওয়া যায় না, অনেক সময় ফ্লোরেও জায়গা মেলে না। চিকিৎসাসেবা দিতে গিয়ে হিমশিম খেতে হয় ডাক্তার ও নার্সদের।

অন্যদিকে হাসপাতালের করিডোর, বাথরুম এমনকি রোগী ওয়ার্ড সব খানেই নোংরা পরিবেশ। নোংরা অবস্থা এমন পর্যায়ে পৌঁছেছে যে, সুস্থ মানুষও সেখানে প্রবেশ করলে অসুস্থ হয়ে পড়ার আশঙ্কা থাকে। অন্যদিকে দুটি লিফটের মধ্যে একটি নষ্ট হয়ে আছে দীর্ঘদিন ধরে। ফলে চাপের ভীরে গুরুতর রোগী বা বয়স্কদের সিঁড়ি বেয়ে উঠতে হয় তীব্র কষ্টের মধ্যে। দীর্ঘদিন ঘরে বালতি ও পাত্রে জমে থাকা নোংরা পানি । যেখান থেকে জন্ম নিতে পারে এডিস মশাসহ বিভিন্ন ধরনের রোগ। এছাড়া হাসপাতালের। ভেতরে কুকুরের বিচরণ তো আছেই। যার মাধ্যমে ছড়াতে পারে জলাতঙ্ক রোগ। এমনকি আইসিইউ, ডায়ালাইসিস ইউনিট এবং পিসিআর ল্যাবের জন্য নির্ধারিত ভবন ও স্থান থাকলেও, প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি ও জনবল না থাকায় দীর্ঘদিন ধরেই সেগুলো চালু হয়নি।

রোগী ও স্বজনদের অভিযোগ, এই হাসপাতালে অধিকাংশ পরীক্ষার রিপোর্ট বাইরে থেকে করাতে হয়। যেসব ওষুধ হাসপাতল থেকে দেওয়ার কথা সেসব ওষুধ নিতে রোগীদের ছুটতে হয় বাইরের ফার্মেসিতে। আর অনেক রোগীকে দিনাজপুর, রংপুর বা ঢাকায় রেফার করেন। রোগীকে নিয়ে যাওয়ার সময় অনেকেই মৃত্যুর মুখে পতিত হন। এছাড়া এখানে ডাক্তার পাওয়া যায় না ঠিকমতো। বাথরুমগুলোতে ঢোকা যায় না। বেসিনগুলোতে হাত ধোয়ার অবস্থা নেই। এখানে রোগী নিয়ে আসলে সুস্থ মানুষই আমরা অসুস্থ হয়ে যাচ্ছি এমন অবস্থা এখানকার বলে জানান তারা।

মো. মুজাহিদ বলেন, এখানকার পরিবেশ এতটাই নোংরা যে বলার মতো না। যেখানে-সেখানে পানি ও ময়লা আবর্জনা পড়ে থাকে। আর হাসপাতালে অনেক টেস্ট হয় না। রোগী নিয়ে টেস্ট করাতে বাইরে যেতে হয়। এভাবে আমরা চরম ভোগান্তিতে পরি। এছাড়া এখানে রোগীর সংখ্যা অনুযায়ী সেবা দেওয়ার মতো জনবল দেখছি না। জনবল বৃদ্ধি করলে হয়তো কিছুটা কাঙ্ক্ষিত সেবা পাওয়া যাবে।

বালিয়াডাঙ্গী উপজেলা থেকে অসুস্থতাজনিত কারণে মাকে নিয়ে হাসপাতালে গিয়েছেন মেহেদী হাসান। তিনি বলেন, ‘যেগুলো ওষুধ হাসপাতাল থেকে দেওয়ার কথা ওই ওষুধগুলোয় আবার আমাদের বাইরে থেকে কিনতে হচ্ছে। তাহলে সরকার যে ওষুধ দিচ্ছে সেই ওষুধগুলো যাচ্ছে কোথায়।’

শহীদুল ইসলাম উজ্জল তার ছেলেকে নিয়ে ভর্তি আছেন হাসপাতালে তিনি বলেন, ‘ধরতে গেলে এই হাসপাতালে চিকিৎসা বলতে তেমন কিছুই হয় না। সময় মতো ডাক্তার পাওয়া যায় না। নার্সরা ঠিক মতো কথা শোনছেন না। তাদের কোনো কিছু বলতে গেলে বিরক্ত বোধ করেন। এছাড়া দীর্ঘদিন থেকে এখানকার লিফট নষ্ট হয়ে পড়ে আছে। এদিকে কেউ নজর দিচ্ছেন না। তাই আমি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষসহ স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের এ বিষয়গুলো দেখার জন্য অনুরোধ করছি।’

রিক্তা পারভীন নামে এক নারী বলেন, ‘হাসপাতালের টয়লেটের অবস্থা এতটাই খারাপ যে আমরা সেগুলো ব্যবহার করতে পারছি না। ছোট ছোট বাচ্চাদের নিয়ে এসে বেসিনগুলোতে তাদের হাত ধুয়ে যে খাওয়াব সেটাও করতে পারি না এতটাই নোংরা। এখানে আমরা আসি সুস্থতার জন্য কিন্তু রোগীর সাথে যারা আসি তারাই মনে হয় অসুস্থ হয়ে পড়ছি এমন অবস্থা।’

বাঁধন নামে এক যুবক বলেন, ‘এখানে রোগী নিয়ে আসলেই অধিকাংশ রোগীকেই শুধু রেফার করে দেওয়া হয় দিনাজপুর, রংপুরসহ ঢাকায়। অনেক ক্ষেত্রে দেখা যায়, দীর্ঘ সময়ের রাস্তা হওয়ায় রোগীকে নিয়ে যেতে যেতেই অনেকের মৃত্যু হয়। এ জন্য ঠাকুরগাঁওয়ে একটি ভালোমানের মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল জরুরি হয়ে পড়েছে।’

স্থানীয় নাগরিক হিমেলসহ অনেকে বলেন, ‘হাসপাতালটিতে আশেপাশের কয়েকটি জেলার মানুষ সেবা নিতে ছুটে আসেন। তাই এখানে একটি মেডিকেল কলেজ না হলে মানসম্মত চিকিৎসা পাওয়া অসম্ভব। তাই ঠাকুরগাঁওয়ে মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল স্থাপনের দাবি জানান তারা।’

হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের তথ্য মতে, এই হাসপাতালে প্রথম শ্রেণির চিকিৎসক ৫৯ জনের বিপরীতে কর্মরত আছেন মাত্র ৪০ জন। দ্বিতীয় শ্রেণির ৩টি পদেই শূন্য। দ্বিতীয় শ্রেণির নার্সের পদ সংখ্যা মাত্র ৯১ জন। তার বিপরীতে কর্মরত আছেন ৮৮ জন। তৃতীয় শ্রেণির পদ সংখ্যা ৪২ জন হলেও আছেন মাত্র ২০ জন। এখনো শূন্য পদ ২২টি। চতুর্থ শ্রেণির লোকবল ২৫ জনের বিপরীতে আছেন ১৭ জন। ২৫০ শয্যার হাসপাতালে মঞ্জুরীকৃত মোট পদের সংখ্যা মাত্র ২২১টি। এর মধ্যে আবার এখনো শূন্য হয়ে পরে আছে ৫৬ জনের পদ।

মন্তব্য

সারা দেশ
Shabnam Vegetable Oil Match again

শবনম ভেজিটেবল অয়েল মিলে আবারও অগ্নিকাণ্ড

২ ঘণ্টার প্রচেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে
শবনম ভেজিটেবল অয়েল মিলে আবারও অগ্নিকাণ্ড আগুন নিয়ন্ত্রণের চেষ্টায় দমকলকর্মীরা।

রূপগঞ্জ থানার তারাব পৌরসভার শবনম ভেজিটেবল অয়েল মিলস লিমিটেডে আবারও ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। সোমবার ভোররাত আনুমানিক সাড়ে ৩টার দিকে কারখানার তেল উৎপাদন প্লান্টে আগুন লাগে। প্রায় দুই ঘণ্টার চেষ্টায় দমকলকর্মীরা আগুন নিয়ন্ত্রণে আনেন।

কারখানার কর্তৃপক্ষ থেকে ঘটনার খবর পেয়ে ডেমরা ফায়ার স্টেশন, কাঁচপুর ফায়ার স্টেশন এবং নারায়ণগঞ্জ জোন-২ থেকে মোট পাঁচটি ইউনিট ঘটনাস্থলে পৌঁছে আগুন নেভানোর চেষ্টা চালায়। ২ ঘন্টার সম্মিরিত চেষ্টায় সাড়ে পাঁচটার দিকে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে।

রূপগঞ্জ থানা পুলিশ ও ইন্ডাস্ট্রিয়াল পুলিশও আগুন নিয়ন্ত্রণে সহযোগিতা করে । ভোর সাড়ে পাঁচটার দিকে আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, শর্ট সার্কিট থেকেই অগ্নিকাণ্ডের সূত্রপাত ঘটে।

শবনম ভেজিটেবল অয়েল মিলসের ম্যানেজার মেজর আশিকুর রহমান বলেন, আগুন লাগার সঙ্গে সঙ্গে আমরা নিরাপত্তাকর্মী ও ফায়ার সার্ভিসকে খবর দিই। দ্রুত ব্যবস্থা নেয়ার ফলে বড় ধরনের প্রাণহানি এড়ানো গেছে। ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ নিরূপণ করা হচ্ছে।

কারখানাটিতে প্রায় ৩২০ জন কর্মী কর্মরত রয়েছেন, এর মধ্যে ৩০০ জন শ্রমিক (পুরুষ ২৯০ ও নারী ১০ জন) এবং ২০ জন স্টাফ। অগ্নিকাণ্ডের সময় অধিকাংশ শ্রমিক উপস্থিত না থাকায় বড় ধরনের দুর্ঘটনা এড়ানো সম্ভব হয়েছে বলে জানা গেছে।

ডেমরা ফায়ার সার্ভিসের স্টেশন অফিসার মোহাম্মদ আলী বলেন, ৩০০ মেট্রিক টনের ওয়েল রিফাইনারিতে আগুন লাগে।

প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, শর্ট সার্কিটের কারণে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটতে পারে। ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ এখনো নিরূপণ করা যায়নি। পরিস্থিতি বর্তমানে স্বাভাবিক রয়েছে।

মন্তব্য

p
উপরে