সাভারের আমিনবাজার এলাকায় মেরামত ও পরীক্ষার জন্য সালেহপুর সেতুর ঢাকামুখী লেনে যানচলাচল সাময়িকভাবে বন্ধ ঘোষণা করেছে সড়ক ও জনপথ (সওজ) বিভাগ। এর ফলে সকাল থেকে ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের ওই সেতুর বিপরীত লেনে হেমায়েতপুর পর্যন্ত তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়েছে।
শনিবার সকাল থেকেই সেতুর হেমায়েতপুরগামী লেনে উভয়মুখী যানচলাচলের কারণে প্রায় সাড়ে ৬ কিলোমিটার দীর্ঘ যানজট দেখা গেছে।
ট্রাফিক পুলিশ ও সওজ কর্তৃপক্ষ জানায়, শনিবার রাতের মধ্যে কাজ শেষ হলে রাতেই অথবা রোববার সকাল থেকেই সেতু দিয়ে স্বাভাবিকভাবে যানচলাচল করতে পারবে।
আমিনবাজার ট্রাফিক পুলিশের পরিদর্শক মোহাম্মদ জালাল উদ্দিন রুমি নিউজবাংলাকে বলেন, ‘এর আগে এই ব্রিজের ত্রুটি সারাতে সংস্কারকাজ হয়েছিল। সেতুটা এখন টেস্ট (পরীক্ষা) করতেছে সওজ। আগের ত্রুটিটা ঠিক হইছে কি না, আগের পজিশনে (জায়গা) কোনো সমস্যা আছে কি না, তা দেখা হবে। যদি খারাপ পজিশন না হয় তাহলে ওনারা আজকেই ছেড়ে দিবে। ওনারা তো (সওজ) অফিশিয়ালি বলতেছে রাত ৮টার আগে ছাড়ার কথা। না হলে আগামীকাল সকালের মধ্যে ছেড়ে দিবেন।’
‘যানজট দুই দিকেই। সাধারণ মানুষ যানজটে কষ্ট করছে। তারপরে ভিআইপির কথা তো বললামই না। আমরা একসাইড ধরি, একসাইড ছাড়ি। অন্য কোনো ভিআইপির মুভমেন্ট থাকলে তাহলে সেইভাবে ওইপাশটা (সাভারমুখী) বেশি করে চালাই।’
সড়ক ও জনপথের ঢাকা বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী শামিম আল মামুন বলেন, ‘ভোর ৬টা থেকেই আমরা কাজ শুরু করেছি। ব্রিজের ওপরে আমরা টেস্ট ও চেক করছি। নিচের দিকটায় ছোটখাটো রিপেয়ার করছি। ব্রিজটা কী রকম পারফর্ম করতেছে সেটা দেখছি। একই সাথে কিছু ত্রুটি ছিল, সেগুলো রিপেয়ার করছি এই সুযোগে। আজকের পরে ঠিক হয়ে যাবে। কালকে থেকে গাড়ি স্বাভাবিকভাবে চলবে।’
এর আগে, গত ১৩ জানুয়ারি সেতুটির ঢাকামুখী একটি লেনের গার্ডারে ফাটল দেখা দিলে তখন যানচলাচল বন্ধ করে দেয় সওজ কর্তৃপক্ষ। পরে সংস্কারকাজ শেষে চার সপ্তাহ পর ২০ ফেব্রুয়ারি যানচলাচলের জন্য উন্মুক্ত করা হয় সেতুটি।
শেরপুরের শ্রীবরদী উপজেলার ঝগড়ারচর বাজারে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে তিনটি দোকানের প্রায় দুই কোটি টাকার মালামাল পুড়ে ভস্মীভূত হয়েছে।
৩০ জুন সোমবার ভোরে এ ঘটনা ঘটে।
এতে মুরাদ স্টোর, শিহাব স্টোর ও অনু স্টোরের প্রায় দুই কোটি টাকার মালামাল পুড়ে আগুনে ভস্মীভূত হয়।
দোকান মালিকরা জানান, ভোরে ঘুমের ভেতর জানতে পারেন দোকানে আগুন লেগেছে। খবর পেয়ে দ্রুত দোকানে এসে দেখেন আগুন জ্বলছে। আগুনের তীব্রতা বেশি থাকায় কোন মালামাল বের করতে পারে নাই। পরে শ্রীবরদী ফায়ার সার্ভিসে খবর দিলে শ্রীবরদী ও পার্শ্ববর্তী জামালপুর জেলার বকশিগঞ্জ উপজেলা ফায়ারসার্ভিসের কর্মীরা এসে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনেন। মালামাল ও দোকান ঘর সম্পূর্ণ আগুনে ভস্মীভূত হওয়ায় সবকিছু হারিয়ে পথে বসে গেছেন ব্যবসায়ীরা।
শ্রীবরদী ফায়ার সার্ভিস সাব স্টেশন অফিসার আশরাফ হোসেন জানান, সম্ভবত বৈদ্যুতিক শর্ট সার্কিট থেকে এই আগুনের সুত্রপাত হয়েছিল। খবর পেয়ে শ্রীবরদী ও বকশীগঞ্জের ফায়ার সার্ভিসে দুটি ইউনিট যৌথভাবে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে।
গাজীপুরের গাছা এলাকায় অভিযান চালিয়ে ডাকাতি মামলার তিন আসামিকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। এ সময় তাদের কাছ থেকে দেশীয় অস্ত্র জব্দ করা হয়।
রবিবার (২৯ জুন) সন্ধ্যায় গাছা থানার ঝাজর এলাকা থেকে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়।
গ্রেপ্তাররা হলেন— হবিগঞ্জের মাজিশাইল গ্রামের মো. কাউছার মিয়া (৩৫), ময়মনসিংহের চরমদাখালী গ্রামের সাব্বির হোসেন রাজিব (২৫) এবং গাজীপুরের কোমোন গ্রামের শাখাওয়াত ওরফে সৈকত (২৬)।
পুলিশের তথ্যমতে, গ্রেপ্তার কাউছার ও শাখাওয়াতের নামে দেশের বিভিন্ন থানায় একাধিক মামলা রয়েছে।
গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের (জিএমপি) গাছা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আমিনুল ইসলাম জানান, গত সোমবার (২৩ জুন) দিবাগত রাত আড়াইটার দিকে গাছা থানাধীন ঈশ্বড্ডা এলাকায় অবস্থিত ‘আপন প্লাস্টিক ইন্ডাস্ট্রিজ’ নামের একটি কারখানায় ১০–১২ জনের একটি ডাকাত দল হানা দেয়।
ডাকাতরা কারখানাটি থেকে ১১৩ ব্যাগ প্লাস্টিক কাঁচামাল (যার বাজারমূল্য আনুমানিক ৬ লাখ টাকা), প্রায় ২ লাখ টাকার ৪০টি ডাইস, আইপিএস, ব্যাটারি, দুটি বড় স্ট্যান্ড ফ্যান, দুটি গ্রাইন্ডিং মেশিন, নগদ ৫ হাজার টাকা এবং ৩টি মোবাইল ফোনসহ প্রায় ১০ লাখ টাকার মালামাল লুট করে নিয়ে যায়।
এ ঘটনায় কারখানা কর্তৃপক্ষ থানায় মামলা করে। পরে তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তা ও অভিযান চালিয়ে রবিবার সন্ধ্যায় ঝাজর এলাকা থেকে মামলার তিন আসমিকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
ওসি আমিনুল ইসলাম আরও জানান, গ্রেপ্তারদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে এবং তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ প্রক্রিয়াধীন।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় রংপুরে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আবু সাঈদ হত্যার ঘটনায় মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলার আনুষ্ঠানিক অভিযোগ (ফরমাল চার্জ) আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে জমা দেওয়া হয়েছে।
চিফ প্রসিকিউটরের পক্ষ থেকে ট্রাইব্যুনালের রেজিস্ট্রার বরাবর আজ এই আনুষ্ঠানিক অভিযোগ জমা দেওয়া হয়। আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-২ এ এই আনুষ্ঠানিক অভিযোগ আমলে নেওয়ার জন্য উপস্থাপন করা হবে।
গত বৃহস্পতিবার আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম সাংবাদিকদের বলেন, তদন্ত সংস্থা আবু সাঈদ হত্যার যে তদন্ত প্রতিবেদন আমাদের কাছে জমা দিয়েছে, সেখানে ৩০ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হয়েছে। তদন্ত প্রতিবেদনটি যাচাই-বাছাই করে ট্রাইব্যুনাল-২ এ আনুষ্ঠানিক অভিযোগ হিসেবে উপস্থাপন করা হবে।
এই মামলায় গ্রেফতার চার আসামির মধ্যে পুলিশের সাবেক সহকারী উপ-পরিদর্শক (এএসআই) আমির হোসেন, সাবেক কনস্টেবল সুজন চন্দ্র রায়কে আগামী ১৮ জুন এবং বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক প্রক্টর শরিফুল ইসলাম ও নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগ নেতা ইমরান চৌধুরী আকাশকে ১৯ জুন জিজ্ঞাসাবাদের অনুমতি দেন ট্রাইব্যুনাল-১।
২০২৪ সালে সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কারের দাবিতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন যখন সারা দেশে ছড়িয়ে পড়ে, তখন ১৬ জুলাই দুপুরে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে পার্ক মোড়ে গুলিবিদ্ধ হয়ে শহীদ হন আবু সাঈদ (২৫)। তিনি বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের ১২তম ব্যাচের শিক্ষার্থী ছিলেন।
আবু সাঈদ কোটা সংস্কার আন্দোলনের বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্যতম সমন্বয়ক ছিলেন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে পুলিশের গুলিতে তার হত্যাকাণ্ডের ঘটনার ভিডিও ছড়িয়ে পড়লে সারা দেশে ব্যাপক প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়। এই হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদেই সোচ্চার হন ছাত্র-জনতা। এতে আরও গতিশীল হয় কোটা সংস্কার আন্দোলন। ওই আন্দোলনের ধারাবাহিকতায় ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের মুখে গত ৫ আগস্ট প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করে ভারতে পালিয়ে যান শেখ হাসিনা।
কুমিল্লার মুরাদনগরে ধর্ষণের ঘটনায় ভুক্তভোগী নারী আত্মহত্যা করেছেন বলে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে যে তথ্য ছড়িয়ে পড়েছে, তা পুরোপুরি ভিত্তিহীন বলে জানিয়েছে স্বাধীন ফ্যাক্ট-চেকিং প্রতিষ্ঠান ফ্যাক্টওয়াচ।
ফ্যাক্টওয়াচের অনুসন্ধানে দেখা যায়, আত্মহত্যার খবরটি সঠিক নয়। কুমিল্লা জেলার একাধিক সাংবাদিক ও মুরাদনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জাহিদুর রহমান ফ্যাক্টওয়াচকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
দাবিটির সত্যতা যাচাইয়ে প্রাসঙ্গিক কি-ওয়ার্ড সার্চে ভুক্তভোগী ওই নারীর আত্মহত্যার বিষয়ে জাতীয় ও কুমিল্লার আঞ্চলিক সংবাদমাধ্যমে কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি।
ফেসবুকে প্রচারিত পোস্টগুলোতেও দাবিটির পক্ষে কোনো সূত্র উল্লেখ করা হয়নি। অর্থাৎ, ফেসবুকে দাবিটি সূত্রহীনভাবেই প্রচার হচ্ছে।
পরে এ বিষয়ে অধিকতর যাচাইয়ে জাতীয় সংবাদমাধ্যমে কর্মরত কুমিল্লার একাধিক সাংবাদিকের সঙ্গে যোগাযোগ করে ফ্যাক্টওয়াচ। কুমিল্লা জেলা ও স্থানীয় সাংবাদিকরা জানান, ভুক্তভোগী ওই নারীর আত্মহত্যার খবরটি গুজব।
এছাড়া মুরাদনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জাহিদুর রহমানের সঙ্গে দাবিটি সম্পর্কে জানতে যোগাযোগ করা হয়। তিনি ফ্যাক্টওয়াচকে জানান, তিনি ঘটনাস্থলেই আছেন। ভুক্তভোগী নারীর আত্মহত্যার দাবিটি গুজব।
ফ্যাক্টওয়াচ জানায়, সুনির্দিষ্ট বস্তুনিষ্ঠ তথ্যের ভিত্তিতে এটা নিশ্চিত যে, কুমিল্লার মুরাদনগরের ধর্ষণের আলোচিত ঘটনায় ভুক্তভোগী নারী আত্মহত্যার দাবিটি কোনো সূত্র ছাড়াই ভিত্তিহীনভাবে ফেসবুকে প্রচার হচ্ছে। এর কোনো সত্যতা পাওয়া যায়নি। তাই ফ্যাক্টওয়াচ দাবিটিকে মিথ্যা হিসেবে চিহ্নিত ও প্রমাণ করছে।
দেশে বিভিন্ন বিষয়ে গুজব, অপতথ্য ও ভুল তথ্যের বিভ্রান্তিকর অপপ্রচার বৃদ্ধি পেয়েছে, যা বিভিন্ন ফ্যাক্টচেক প্রতিষ্ঠান শনাক্ত করছে।
বাংলাদেশে গুজব, ভুয়া খবর ও অপতথ্য প্রতিরোধ এবং জনগণের কাছে সঠিক তথ্য পৌঁছে দেওয়ায় দায়িত্ব পালন করছে ফ্যাক্টওয়াচ। এটি লিবারেল আর্টস বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় (ইউল্যাব) অনুমোদিত এবং সেন্টার ফর ক্রিটিক্যাল অ্যান্ড কোয়ালিটিভেটিভ স্টাডিজ (সিকিউএস) দ্বারা পরিচালিত।
কুড়িগ্রামের চরবেষ্টিত উপজেলা চিলমারীসহ বিভিন্ন দুর্গম স্থানে ডাকাতি ও অপরাধ প্রতিরোধে আকাশ ও নদীপথে প্রযুক্তিনির্ভর নজরদারি শুরু করেছে পুলিশ। দুর্গম চরাঞ্চল ও ব্রহ্মপুত্র নদের ঝুঁকিপূর্ণ রুটে পুলিশের টহল জোরদার করার পাশাপাশি আকাশে ড্রোন উড়িয়ে নজরদারি চলছে প্রতিনিয়ত।
বিশেষ করে, হাটের দিন চিলমারী-রৌমারী-রাজিবপুর নৌরুটে পুলিশের একাধিক ইউনিট—গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি), নৌপুলিশ ও থানা পুলিশ সমন্বিতভাবে নিরাপত্তা নিশ্চিতে মাঠে থাকছে।
জেলা পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, অতীতে বিভিন্ন সময় চিলমারী-রৌমারী-রাজিবপুর রুটে একাধিক ডাকাতির ঘটনা ঘটেছে। এসব ঘটনার পর থেকেই নৌপথ ও চরাঞ্চলের প্রতি বিশেষ গুরুত্ব দিয়ে নজরদারি বাড়ানো হয়। বর্তমানে শুধুমাত্র টহল নয়, আধুনিক ড্রোন প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে চরাঞ্চলের জঙ্গলাকীর্ণ ও নজরদারির বাইরে থাকা এলাকাগুলোতেও তৎপরতা চালানো হচ্ছে।
ড্রোন ক্যামেরায় চরাঞ্চলে ঝোপঝাড় কিংবা গোপন জায়গায় অপরাধীরা অবস্থান করলেও সহজেই শনাক্ত করা সম্ভব হচ্ছে। এই প্রযুক্তি ব্যবহারে ডাকাতি ও মাদকপাচারের মত অপরাধ নিয়ন্ত্রণে গুরুত্বপূর্ণ অগ্রগতি হয়েছে।
উপজেলার জোড়গাছ এলাকায় প্রতি সপ্তাহের রবিবার ও বুধবার বড় হাট বসে। এসব দিনে চরাঞ্চল ও আশপাশের উপজেলা থেকে ব্যবসায়ী ও ক্রেতারা নৌপথে হাটে আসেন।
জেলা পুলিশ জানায়, হাটের দিনগুলোতে জোড়গাছ হাট, রমনা ঘাট, কাঁচকোল, ফকিরের হাট ও চিলমারী ইউনিয়নের চরাঞ্চলগুলোতে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়। এসব পয়েন্টে ড্রোন ব্যবহার ছাড়াও নৌপুলিশ ও থানা পুলিশের আলাদা টহল দল সক্রিয় থাকে।
চিলমারী ইউনিয়নের বাসিন্দা আজগর আলী মণ্ডল (৬৫) বলেন, ‘আগে মাঝেমধ্যেই ডাকাতি হতো। এখন তা প্রায় নেই বললেই চলে। আকাশে ড্রোন উড়তে দেখলে বুঝি, পুলিশ সব জায়গা নজরদারি করছে। এতে নিরাপত্তা অনেক বেড়েছে।’
জোড়গাছ এলাকার ব্যবসায়ী শফিকুল ইসলাম জানান, ‘আগে হাটে আসার সময় ভয় লাগত, কিন্তু এখন নৌকায় পুলিশের টহল, নদীতে উপস্থিতি ও ড্রোন নজরদারি দেখে আমরা অনেকটাই নিশ্চিন্ত। পুলিশের এমন নজরদারির খবর ছড়িয়ে পড়ায় অপরাধীরা ভীত-সন্ত্রস্ত হয়েছে। তারা অপরাধ ঘটানোর সাহস পাচ্ছে না। এতে আমরাও নিরাপদ।’
কুড়িগ্রাম জেলা পুলিশ সুপার (এসপি) মাহফুজুর রহমান বলেন, ‘চিলমারী নদীবন্দর ও আশপাশের নৌরুটে অপরাধ দমনে ড্রোন ব্যবহারের মাধ্যমে সর্বক্ষণ মনিটর (পর্যবেক্ষণ) করা হচ্ছে। পুলিশের নিয়মিত টহল ও গোয়েন্দা নজরদারির ফলে দীর্ঘদিন ধরে নৌ-ডাকাতি নেই বললেই চলে। আমরা প্রযুক্তিনির্ভর পুলিশিংয়ের মাধ্যমে চিলমারীকে নিরাপদ রাখতে বদ্ধপরিকর।’
পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (পবিপ্রবি) দুইদিনব্যাপী ‘ক্যারিয়ার ফেস্ট ২০২৫’ উৎসবমুখর পরিবেশে অনুষ্ঠিত হয়েছে।
শুক্র ও শনিবার ২৭ ও ২৮ জুনের এই আয়োজনে শিক্ষার্থীদের ক্যারিয়ার সচেতনতা, দক্ষতা উন্নয়ন এবং বাস্তবমুখী অভিজ্ঞতা অর্জনের লক্ষ্য সামনে রেখে বিভিন্ন কর্মসূচি ও সেশন আয়োজন করা হয়।
২৭ জুন সকাল থেকে দিনব্যাপী নানা কার্যক্রমে উৎসবে মুখর থাকে ক্যাম্পাস। সকালে আনুষ্ঠানিক উদ্বোধনের পর ইউএনডিপি’র বিশেষ সেশন এবং দেশের খ্যাতনামা ক্যারিয়ার বিশেষজ্ঞ আসিফ ইকবালের দিকনির্দেশনামূলক আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়।
এরপর এক্সটেম্পোর বক্তৃতা প্রতিযোগিতায় শিক্ষার্থীরা তাৎক্ষণিকভাবে নিজেদের চিন্তা ও বক্তব্য উপস্থাপনের দক্ষতা প্রদর্শনের সুযোগ পান।
দুপুরের পর শিক্ষার্থীদের প্রস্তুতির অংশ হিসেবে মক ইন্টারভিউ সেশন অনুষ্ঠিত হয়, যেখানে বাস্তব ইন্টারভিউ পরিস্থিতির অনুশীলনের সুযোগ তৈরি হয়। এরপর শুরু হয় ব্যবসায়িক কেস প্রতিযোগিতা, যেখানে অংশগ্রহণকারীরা বাস্তবভিত্তিক সমস্যা সমাধানে নিজেদের দক্ষতা তুলে ধরেন। দিনব্যাপী নানা আয়োজনে শেষ ভাগে ছিল আকর্ষণীয় ট্রেজার হান্ট এবং ক্যারিয়ার বিষয়ক কুইজ প্রতিযোগিতা। নানা আয়োজনের মধ্য দিয়ে প্রাণবন্ত পরিবেশে সম্পন্ন হয় ক্যারিয়ার ফেস্টের প্রথম দিনের কার্যক্রম।
২৮ জুন ক্যারিয়ার ফেস্টের আয়োজনে দেশের বিভিন্ন খাতের অভিজ্ঞ পেশাজীবীরা অংশ নেন এবং শিক্ষার্থীদের ক্যারিয়ার গঠনের বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ পরামর্শ ও বাস্তব অভিজ্ঞতা তুলে ধরেন। শিক্ষার্থীরা তাদের আলোচনা থেকে কর্পোরেট দুনিয়া, উদ্যোক্তা উন্নয়ন এবং বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি খাতের চাকরির সুযোগ-চ্যালেঞ্জ সম্পর্কে বাস্তব ধারণা লাভ করেন।
বিভিন্ন বিষয়ে সেশন নেন ও বক্তব্য প্রদান করেন খন্দকার তানভির আহসান, সাবেক এইচআর ও অ্যাডমিন, PLAMPAY; মাহমুদ হাসান প্রিন্স, সায়েন্টিস্ট, ইস্পাহানি গ্রুপ; ফজলে রাব্বি, সহকারী প্রোগ্রামার, পল্লী উন্নয়ন বোর্ড (PDBF), স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়; রাহুল দত্ত, ট্রেনিং অফিসার (WIS), ব্রিটিশ আমেরিকান টোব্যাকো (BAT) বাংলাদেশ; মীর মোহাম্মদ আলী, সহকারী অধ্যাপক ও সাবেক চেয়ারম্যান, ফিশারিজ ও মেরিন সায়েন্স অনুষদ, শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়; জাভেদ মিয়াঁদাদ, ম্যানেজার, Anticipatory Action, সেভ দ্য চিলড্রেন বাংলাদেশ; আদনান নাসের ধ্রুব, বিজনেস ডেভেলপমেন্ট প্রফেশনাল ও উদ্যোক্তা; মো. আসিকুর রহমান আসিক, রিজিওনাল অপারেশন হেড, বিডি অ্যাপস (BDAPPS), বরিশাল বিভাগ; মাহবুবুর নাহিদ, সাহিত্যিক, কলামিস্ট, ১৭টি গ্রন্থের লেখক, নেক্সট বিডি’র নির্বাহী সম্পাদক এবং স্পোর্টস ২৪৭ মিডিয়া হাউসের সম্পাদক; এবং রুহান জুনাইদুল ইসলাম, প্রতিনিধি, ম্যারিকো বাংলাদেশ লিমিটেড।
দুইদিনব্যাপী ক্যারিয়ার ফেস্টে অংশগ্রহণ করে শিক্ষার্থীরা বাস্তব অভিজ্ঞতায় সমৃদ্ধ হন এবং নিজেদের ক্যারিয়ার পরিকল্পনা নিয়ে আরও সচেতন ও আত্মবিশ্বাসী হয়ে ওঠেন। আয়োজক কমিটির পক্ষ থেকে জানানো হয়, ভবিষ্যতে আরও বড় পরিসরে এ ধরনের ক্যারিয়ার উন্নয়নমূলক অনুষ্ঠান আয়োজনের পরিকল্পনা রয়েছে, যাতে আরও বেশি শিক্ষার্থী ও পেশাজীবী এতে সম্পৃক্ত হতে পারেন।
উত্তর-পশ্চিম বঙ্গোপসাগর এবং সংলগ্ন পশ্চিমবঙ্গ ও বাংলাদেশের উপকূলীয় এলাকায় অবস্থানরত লঘুচাপটি একই এলাকায় অবস্থান করছে। এর প্রভাবে দেশের সমুদ্রবন্দরগুলোকে ৩ নম্বর স্থানীয় সতর্ক সংকেত দেখাতে বলেছে আবহাওয়া অফিস।
সোমবার (৩০ জুন) আবহাওয়াবিদ ওমর ফারুকের সই করা আবহাওয়ার সামুদ্রিক সতর্কবার্তায় এ তথ্য জানানো হয়েছে।
বার্তায় বলা হয়েছে, লঘুচাপের প্রভাবে উত্তর বঙ্গোপসাগরে বায়ুচাপের তারতম্যের আধিক্য বিরাজ করছে। এর ফলে উত্তর বঙ্গোপসাগর, বাংলাদেশের উপকূলীয় এলাকা ও সমুদ্র বন্দরগুলোর ওপর দিয়ে দমকা অথবা ঝড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে।
চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, মোংলা ও পায়রা সমুদ্র বন্দরকে ৩ নম্বর স্থানীয় সতর্ক সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে।
উত্তর বঙ্গোপসাগরে অবস্থানরত সব মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারকে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত উপকূলের কাছাকাছি থেকে সাবধানে চলাচল করতে বলা হয়েছে।
নদীবন্দরে ১ নম্বর সংকেত
এদিকে, আজ সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত দেশের অভ্যন্তরীণ নদীবন্দরগুলোর জন্য আবহাওয়ার পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, খুলনা, বরিশাল, পটুয়াখালী, কুমিল্লা, নোয়াখালী, চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার অঞ্চলসমূহের ওপর দিয়ে দক্ষিণ-পূর্ব কিংবা পূর্ব দিক থেকে ঘণ্টায় ৪৫ থেকে ৬০ কিলোমিটার বেগে দমকা অথবা ঝড়োহাওয়াসহ অস্থায়ীভাবে বৃষ্টি অথবা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে।
এসব এলাকার নৌবন্দরগুলোকে ১ নম্বর সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে।
মন্তব্য