লালমনিরহাট জেলার হাতীবান্ধা উপজেলার তিস্তা ব্যারাজের ডালিয়া পয়েন্টে তিস্তার পানি বাড়তে শুরু করেছে। ভারী বৃষ্টি আর উজানের পাহাড়ি ঢলে বেড়েছে তিস্তার পানিপ্রবাহ।
বুধবার সকাল ৯টায় লালমনিরহাটের হাতীবান্ধা উপজেলার সেচ প্রকল্প তিস্তা ব্যারাজ ডালিয়া পয়েন্টে তিস্তার পানিপ্রবাহ রেকর্ড করা হয় ৫২ দশমিক ৫১। অর্থাৎ বিপৎসীমার মাত্র ৯ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
পানি বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে তলদেশ ভরাট হয়ে তিস্তা নদীর দুই পাড়ের চরাঞ্চলগুলো প্লাবিত হয়ে ভাঙতে শুরু করেছে সমতল এলাকাগুলো। এরই মধ্যে চরাঞ্চলের ভুট্টা, বাদাম, মিষ্টি কুমড়াসহ নানান সবজির ফসল ডুবে গেছে।
তিস্তা ব্যারাজের ডালিয়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের প্রকৌশলী রবিউল ইসলাম বলেন, ‘বুধবার হঠাৎ তিস্তা নদীর পানিপ্রবাহ বেড়েছে। উজানের ঢেউ ও বৃষ্টিপাতে এমনটি হয়েছে। যে অবস্থা দেখছি তাতে পানি আরও বাড়তে পারে।’
স্থানীয়রা জানান, উজানের পাহাড়ি ঢল ও কয়েক দিনের বৃষ্টিতে তিস্তা নদীর পানি প্রবাহ বৃদ্ধি পেয়েছে। এতে শুকিয়ে যাওয়া তিস্তা আবারও যৌবন ফিরে পেয়েছে। জেলার পাটগ্রাম উপজেলার দহগ্রাম; হাতীবান্ধার সানিয়াজান, গড্ডিমারী, সিন্দুর্না, পাটিকাপাড়া, সিংগিমারী; কালীগঞ্জ উপজেলার ভোটমারী, কাকিনা; আদিতমারী উপজেলার মহিষখোচা, পলাশী ও সদর উপজেলার খুনিয়াগাছ, রাজপুর, গোকুন্ডা, ইউনিয়নে তিস্তা নদীর তীরবর্তী নিম্নাঞ্চলের প্রায় ১০ হাজার পরিবারের পানিবন্দি হয়ে পড়ার আশঙ্কা রয়েছে।
তবে হঠাৎ তিস্তায় পানিপ্রবাহ বৃদ্ধি পাওয়ায় সৃষ্ট বন্যায় চরাঞ্চলের সবজি, বাদাম ও ভুট্টাসহ ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। সবকিছু পানিতে ডুবে গেছে। আর ভাঙতে শুরু করেছে নিম্নাঞ্চলগুলো। এ কারণে চিন্তিত তিস্তাপাড়ের মানুষরা। পানিবন্দি পরিবারগুলো শিশু, বৃদ্ধ ও গবাদি পশুপাখি নিয়ে পড়েছে বিপাকে। তারা তাদের বাড়িঘর নিয়ে যাচ্ছে দূরের কোনো এক অজানা বাঁশঝাড়ে । অনেকে ঠাঁই নিচ্ছেন অন্যের বাড়িতে। তিস্তাপাড়ের ফাতেমা আহাজারি করে বলেন, ‘হামাক বাঁচান ব্যাড়ে, হামার শোগ শ্যাষ। সব নদীত ভাঙ্গিয়া গেইছে ব্যাড়ে। হামাক বাঁচান। হামরা কৈ যাম কি খামা করি করম শোগ নদী ভাঙি নিয়া যাবার লাগছে। সরকার এগুলা কি কইরবার লাগছে। হামাক বাঁচান ব্যাড়ে, হামা বাঁচান।’
তিস্তাপাড়ের বালাপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ৪র্থ শ্রেণির শিক্ষার্থী সজল বলন, ‘হামার বাড়ি ভাঙ্গি যাবার লাগছে তাই যাতে নদীর পানি ভুঁই বাঠিত না যায় তার জন্য আইল দিবার লাগছি। নদী ত কয়েকবার ভাঙ্গচে। সব তো শেষ। এখন আইল কি আর টিকে। তাপ দেই।’
তিস্তাপাড়ের শিক্ষার্থী আবু সায়েম বলেন, ‘তিস্তা নদীর কাজ কিছুতেই হচ্ছে না। সবাই আশা দেয় কিছু করতেছে না। আজ নদীর পানি বাড়তেছে গরু, ছাগল, হাঁস, মুরগি নিয়ে কই যাব আমরা। এই যে দেখেন নদী ভাঙতে ভাঙতে আমাদের বাড়ির পাশে এসেছে। কই যাব আমরা। সবাই শুধু সান্ত্বনা দেয়। আমাদের জায়গা জমি ত সব নদীতে চলে গেছে। কি করব আমরা?’
হাসান আলী বলেন, ‘নদীর মাঝখানে আমার বাড়ি ছিল। বাড়ি ভাঙতে ভাঙতে আজ যেখানে বাড়ি দেখতেছেন তার পাশ পর্যন্ত ভাঙন আসছে। আমার বাড়িটা যেকোনো সময় ভাঙতে পারে। কাচারত আসছে ভাঙন। শুধু প্রশাসন আমাদেক সান্ত্বনা দেয়। যদি শুকনো মৌসুমে বালুর বস্তা দিত তা হলে আর ভাঙত না। গতবারের মতন আজ আবার পানি বাড়তে শুরু করেছে। আমরা কই যাব, যাওয়ার তো জায়গা নাই।’
তিস্তাপাড়ের দুলাল মিয়া (৫৫) বলেন, ‘আমরা রিলিপ-টিলিপ কিছু চাই না। বালুর বান্ধ থাকি শুরু করি নদীর পাশে যদি বস্তা দিত তাহল আর নদী ভাঙত না।’ আমরা বালুর বান্দ চান্দা কালেকশন করিয়া বান্দিছি। ডিসি মহোদয় আসিয়া কইছে আমি বস্তা দিব। কিন্তু কোনো বস্তা দেয়নি। সব ভাঙি যাবার লাগছে। আমরা নিজেরা উদ্যোগ নিয়া বালুর বাধ দিবার লাগছি। কিন্তু বাধ দেয়া শেষ কোনো মন্ত্রী এমপি আসল না। বালুর বান্দ থাকি পুরা ৪ ও ৫ নম্বর ওয়াড নদী ভাঙবার লাগছে। কিন্তু কাও খোঁজ করে না। কাও ভাল করে না। বারবার নদী ভাঙ্গে খালি দেখি যায় কিন্তু ভালো করার কোন অ্যাকশন নেয় না। থাইকপার জায়গা নাই, জমি নাই সব ভাঙি নিয়া গেইছে তিস্তা।’
তিস্তাপাড়ের মহিষখোচা বালাপাড়ার রজব পাড়ার আব্দুল হাসিব (৬০) বলেন, ‘আজ পানি বাড়তেছে। আমাদের বাড়িঘর থাকে না। খালি ভাঙি যায়। আমাদের জমি নাই জায়গা নাই। আমরা যাব কোথায়। আমাদের যাবার স্থান নাই। নদীতে যদি কিছু বস্তা দেয়া যায়, তাহলে নদীটা টিকসই হবে আর ভাঙনটাও কমবে।’
শোভা বলেন, ‘আমাদের ভুট্টাবাড়ী ৪ দোন মাটি আবাদ কচ্চি। খুব কষ্ট করি। বাড়ি পাকা করছি তায়ও শোগ ভাঙ্গি যাবার নাগছে। তোমরা বোল্ডার ফেলে দেও। তা হলে ভাল হবে। ৫০০ টাকার জন্য কি ভোট দেই তোমাক। হামার শরম লজ্জা থুইয়া হামরা ভোট দেই। বয়স্ক দেন, বিদুয়া দেন, আরও বাউরা হবে। আর খ্যায় লোব বাড়ি যাইবে। ওগলা বেবাক বন্দ করি দেন। ওই টাকা দেয়া বন্দ করি দেন। ওই টাকা দিয়া তোমরা বস্তা দেও বোল্ডার ফেলান। মানুষের জাহান বন্ধ হয়া যাবার লাগছে কাবিল হয়া। কিসের না চিড়া গুর ধরি আইসেনি। চিনি গুর খ্যায়া মাইনসে হাবরে আরও বেশি হয়া যায়। আরও বাউরা হয়্যা যায়। আমি যদি শেখ হাসিনা হনু হয় তাইলে এই দুনিয়া ঠাণ্ডা করি দিলাম হয়।’
ফরিদা বলেন, ‘হামরা রাস্তার মুরিত বাড়ি করি আছি। এখন সেটে পানি ভরা হবার নাগছে। হামরা কোটে যেয়া থাকম কোটে যেয়া খামো তার কোন ভইয়াকার নাই। ৪ মাসে ৬ মাসে কি এক না দেয় ওমাকে না আটে।’
মর্জিনা বলেন, ‘কি করম কোনো বুদ্ধি নাই। আমার যে কোনো বাস্তবে টাকা পয়সা তা নাই। হাতে করি পেটে খাই। এই বাস্তটা একনা তাও ভাঙ্গি যাবার লাগছে। এই যে বাইরে পাক কইরবার লাগছি। সরকার একটা ঘর দিছে তাও ভাঙি যাবার লাগছে। বাল বাচ্চা নিয়া কি করম। দুইটা ঘর তারও একটা রাস্তাত থুয়া আছি। আমি করি খাইতে পাই না দেখি সরকার আমাক ঘর দিছে। মানুষের ঋণও এখন শোধ কইরবার পাই নাই ফির ভাঙিবার লাগছে। সামনে বস্তা ফেলা চলো ভাঙে নাই। এখন বস্তাগুলো পানিত গেছে তাই ভাঙিবার লাগছে। এই মুহূর্তে যদি বস্তা ফেলায় তাহলে একনা নিন পাইরবার পামো। না হলে শোগ রাইতোতে ধুয়া নিয়া যাবে নদী।’
বালাপাড়ার মোহাম্মদ আলী (৬০) বলেন, ‘তেরো বার বাড়ি ভাঙছে। বাড়ি ভাঙতে ভাঙতে ওপার থাকি মহিষখোচা পর্যন্ত আসিয়া গেছি। মহিষখোচা আসিয়াও আমরা পানি টানি বাঙ্গরি টাংরি হায় হুলাচতুল। এই গরু বাচুর মানুষ আমরা অসহায় যাব কোথায়। কোথায় খাব। ৫০ বছর থাকি শুনবার লাগছি নদী খনন হবে। খননও নাই কোন নদীর ব্যবস্থাও নাই। কি আমার সরকার কি কইরবার লাগছে। আমরা যাব কোথায়? বাড়িঘর সব ভাসি যাবার লাগছে। এ যে ভূট্টা ৪ দোন ৫ দোন সব ভাসি যাবার লাগছে। কোথায় যাবার মতো জায়গা নাই।’
লালমনিরহাট পানি উন্নয়ন বোর্ডের প্রধান প্রকৌশলী মো. মিজানুর রহমান বলেন, ‘আমরা বাঁধ নির্মাণের জন্য বাজেটের আবেদন করেছি, কিন্তু এখন পর্যান্ত বাজেট পাইনি। কিছু বস্তা ফেলা হয়েছে, কিন্তু তা পর্যাপ্ত নয়। নদীর পানি বাড়ছে এবং বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে নদীর ভাঙনও বাড়ছে। আমরা তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নিচ্ছি, যাতে করে ভাঙন রোধ করা যায়।’
এ বিষয়ে জেলা প্রশাসক মো. আবু জাফর বলেন, ‘আজ পানি বাড়ছে কি না তা বলতে পারছি না। তবে একটা মিটিং আছে, শেষ হলেই আমি সেখানে যাব। আর তাৎক্ষণিক কোনো ব্যবস্থা করা লাগলেও করা হবে। যদি বস্তা হলে ভাঙন রোধ হয়, তা হলে আমরা সেই ব্যবস্থাও করব। আর পানি উন্নয়ন বোর্ডের প্রধান প্রকৌশলী ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা পরিদর্শন করেছেন এবং ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য পর্যাপ্ত খাবার মজুত আছে, ভাঙনকবলিত এলাকায় দ্রুত সেসব বিতরণ করা হবে।’
আরও পড়ুন:পটুয়াখালীর কুয়াকাটা সংলগ্ন বঙ্গোপসাগর মোহনায় জেলের জালে এবার ধরা পড়েছে ২৬ কেজি ২৫০ গ্রাম ওজনের একটি কোরাল মাছ।
পরে সেই মাছটি কুয়াকাটা পৌর মাছ বাজারে বিক্রি করা হয়েছে ৩২ হাজার ৭৫০ টাকায়।
কুয়াকাটা পৌর মাছ বাজারের ‘কুয়াকাটা ফিস পয়েন্টের’ পরিচালক নাসির উদ্দিন বৃহস্পতিবার দুপুরে মাছটি কেনেন।
তিনি বলেন, ‘সাগর মোহনায় সচরাচর এত বড় মাছ পাওয়া যায় না। আজ দুপুরে মাছটি মার্কেটে আসার পর এক হাজার ২৫০ টাকা কেজি দরে কিনে নেই।’
স্থানীয় জেলেরা জানান, গত মঙ্গলবার কুয়াকাটার বাবলাতলা এলাকার জেলে রাসেল ‘মায়ের দোয়া’ নামের তার ট্রলারটি নিয়ে গভীর সমুদ্রে ইলিশ মাছ ধরতে রওনা হন। পরবর্তীতে বলেশ্বর নদীর সাগর মোহনায় রাত ২টার দিকে রাসেলের জালে এ বিশাল কোরাল মাছটি ধরা পড়ে।
রাসেল বলেন, ‘তীব্র তাপদাহ শুরুর পর থেকে সাগরে মাছ পড়ে না। ভাগ্য সহায় বলে এত বড় মাছ আল্লাহ দিয়েছেন। মাছটি তীরে নিয়ে আসলে স্থানীয় মাছ ব্যবসায়ীরা মাছটি ক্রয় করতে চেয়েছেন। পরে কুয়াকাটা মাছ বাজারে এক হাজার ২৫০ টাকা কেজি দরে মাছটি বিক্রি করেছি।’
জানতে চাইলে কলাপাড়া উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা অপু সাহা জানান, নদ-নদী এবং সাগরে বিভিন্ন মাছ পাওয়া যায়। সব সময় বড় মাছ ধরা পড়ছে না। সামুদ্রিক কোরাল এর চেয়েও অনেক বড় হয়।
সরকারের দেয়া ৬৫ দিন সাগরে সব ধরনের মাছ ধরার সফল কার্যক্রমের কারণেই এ ধরনের মাছ জেলেদের জালে ধরা পড়ছে বলে জানান তিনি।
আরও পড়ুন:পাবনার সাঁথিয়ায় অগ্রণী ব্যাংকের কাশিনাথপুর শাখার ভোল্ট থেকে ১০ কোটি ১৩ লাখ ৬২ হাজার ৩৭৮ টাকা আত্মসাতের অভিযোগ পাওয়া গেছে।
এ ঘটনায় ওই ব্যাংকের প্রধান তিন কর্মকর্তাকে আটক করেছে পুলিশ।
অগ্রণী ব্যাংকের কাশিনাথপুর শাখা থেকে বৃহস্পতিবার দুপুরের দিকে তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়। দিনভর নানা তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহ ও জিজ্ঞাসাবাদ শেষে রাতে তাদের সাঁথিয়া থানায় নিয়ে আসে পুলিশ।
আটক তিনজন হলেন অগ্রণী ব্যাংক কাশিনাথপুর শাখার প্রিন্সিপাল অফিসার আবু জাফর, ব্যবস্থাপক হারুন বিন সালাম ও ক্যাশিয়ার সুব্রত চক্রবর্তী। তাদের তিনজনেরই বাড়ি পাবনা জেলায়।
পুলিশের ভাষ্য, টাকা আত্মসাতের কথা স্বীকার করেছেন ক্যাশিয়ার সুব্রত চক্রবর্তী।
আরও আসছে…
আরও পড়ুন:
কক্সবাজারের টেকনাফের সাবরাং ইউনিয়নের শাহপরীর দ্বীপে ঘরে ঢুকে এক নারী ও তার মেয়েকে বিবস্ত্র করে নির্যাতনের লিখিত অভিযোগ করা হয়েছে।
গত সোমবারের ঘটনায় বৃহস্পতিবার টেকনাফ মডেল থানায় অভিযোগটি করেন ছেনুয়ারা বেগম নামের নারী।
লিখিত অভিযোগে বলা হয়, গত সোমবার রাত দুইটার দিকে শাহপরীর দ্বীপের পূর্ব উত্তরপাড়া এলাকার নুর মোহাম্মদের স্ত্রী ছেনুয়ারা বেগমের ঘরের দরজা ভেঙে আয়ুব খানের নেতৃত্বে ১০ থেকে ১৫ জন প্রবেশ করেন। তারা ছেনুয়ারা ও তার মেয়ের হাত-পা বেঁধে মুখে কাপড় ঢুকিয়ে এলোপাতাড়ি লাথি ও ঘুষি মারেন। একপর্যায়ে মা ও মেয়ে উভয়কে বিবস্ত্র করেন আয়ুব ও তার লোকজন।
অভিযোগে আরও বলা হয়, হামলাকারীরা ভয়ভীতি প্রদর্শন করে স্বর্ণ ও টাকা ছিনিয়ে নিয়ে যান। যাওয়ার সময় তাদের বিরুদ্ধে নির্যাতনের বিষয়ে কাউকে জানানো হলে প্রাণনাশের হুমকি দিয়ে চলে যান৷
এ বিষয়ে ছেনুয়ারা বেগম বলেন, ‘সন্ত্রাসী আয়ুব খানের নেতৃত্বে ১০ থেকে ১৫ জন যুবক আমার বাড়িতে ভয়ভীতি দেখিয়ে প্রবেশ করে। পরে বাড়ি থেকে আমাকে জোরপূর্বক কয়েকজন লোক বের করে রশি দিয়ে বেঁধে রাখে এবং আমার মেয়েকে নির্যাতন করে স্বর্ণ ও টাকা নিয়ে যায়। তাদের বিরুদ্ধে ঘটে যাওয়া বিষয়ে কাউকে বললে মেরে ফেলা হবে বলে চলে যায়।’
থানায় অভিযোগের পর আয়ুব হুমকি দিয়েছে জানিয়ে ছেনুয়ারা বলেন, ‘সেই আয়ুব খান মোবাইল ফোনের মাধ্যমে বলে, মামলা হলে কী হবে? জামিন নিয়ে বাহির হয়ে আমাকে আর আমার মেয়েকে মেরে ফেলা হবে বলে প্রাণনাশের হুমকি-ধমকি দিচ্ছে। এ বিষয়ে আমি টেকনাফ মডেল থানায় লিখিত অভিযোগ করেছি।’
এ বিষয়ে সাবরাং ইউনিয়নের ৮ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য রেজাউল করিম রেজু বলেন, ‘আমি বিষয়টি শুনেছি এবং সঠিক তদন্তে পুলিশকে সহযোগিতা করব।’
অভিযোগ তদন্ত কর্মকর্তা উপপরিদর্শক (এসআই) মোহাম্মদ সোহেল বলেন, ‘আমি ঘটনার সত্যতা পেয়েছি এবং আমি মামলা করার জন্য ওসি বরাবর সুপারিশ করেছি।’
টেকনাফ মডেল থানার ওসি ওসমান গণি বলেন, ‘আরও গভীরভাবে তদন্ত করে দোষীদের গ্রেপ্তার করা হবে।’
আরও পড়ুন:মৌলভীবাজারে বিশেষ ক্ষমতা আইনে করা নাশকতা মামলায় জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক সাবেক উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান মিজান ও জেলা যুবদলের সাধারণ সম্পাদক এমএ মুহিতসহ ১৪ নেতাকর্মীকে কারাগারে পাঠিয়েছে আদালত।
বৃহস্পতিবার দুপুরে মৌলভীবাজার জেলা ও দায়রা জজ আদালতে হাজির হয়ে জামিন আবেদন করলে তা নামঞ্জুর করে বিচারক তাদের কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।
উচ্চ আদালতের মঞ্জুরকৃত জামিন শেষ হওয়ায় তারা আদালতে হাজির হন।
মৌলভীবাজার মডেল থানায় ২০২৩ সালের নভেম্বর ও ডিসেম্বর মাসে করা দুটি রাজনৈতিক মামলার ১৪ জন আসামি হাজির হলে আদালত তাদের সবার জামিন নামঞ্জুর করে কারাগারে প্রেরণ করে।
মামলার অন্যান্য আসামিরা হলেন- জেলা বিএনপির সহ-সাধারণ সম্পাদক মুহিতুর রহমান হেলাল, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক মাহমুদুর রহমান, জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলে সাবেক সভাপতি ও পৌর কাউন্সিলর স্বাগত কিশোর দাস চৌধুরী, জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সদস্য সচিব আহমেদ আহাদ, যুবদলের এমএ নিশাদ, যুবদলের সিরাজুল ইসলাম পিরুন, স্বেচ্ছাসেবক দলের নুরুল ইসলাম, যুবদলের ওয়াহিদুর রহমান জুনেদ, স্বেচ্ছাসেবক দলের আব্দুল হান্নান, স্বেচ্ছাসেবক দলের রোহেল আহমেদ, স্বেচ্ছাসেবক দলের মামুনুর রশিদ ও যুবদলের জাহেদ আহমেদ।
মৌলভীবাজার জেলা আদালত পুলিশের পরিদর্শক মো. ইউনুছ মিয়া জানান, ২০২৩ সালে নাশকতার অভিযোগে করা মামলায় মৌলভীবাজার জেলা ও দায়রা জজ আদালতে হাজির হয়ে জামিন আবেদন করেন আসামিরা। আদালত শুনানি শেষে আবেদন নামঞ্জুর করে তাদের কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
রাঙ্গামাটির বাঘাইছড়ি থানাধীন সাজেকে শ্রমিকবাহী ডাম্প ট্রাক খাদে পড়ে নিহতের সংখ্যা বেড়ে ৯ জনে দাঁড়িয়েছে।
বাঘাইছড়ি থানার সহকারী পুলিশ সুপার আবদুল আওয়াল বুধবার রাতে বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
তিনি জানান, আহত শ্রমিকদের উদ্ধার করে খাগড়াছড়ি হাসপাতালে নেয়ার পর চিকিৎসক তিনজনকে মৃত বলে জানান।
এর আগে বিকেলে সাজেকের উদয়পুর সীমান্ত সড়কের ৯০ ডিগ্রি এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে।
পুলিশের ভাষ্য, খাগড়াছড়ি থেকে সাজেকের উদয়পুর সীমান্তবর্তী সড়ক নির্মাণের জন্য ডাম্প ট্রাকে ১৪ জন শ্রমিক জামান ইঞ্জিনিয়ারিং কোম্পানির সেতুর কাজে যাচ্ছিলেন। পথে গাড়িটি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে পাহাড়ের ঢালে পড়ে যায়। এতে ঘটনাস্থলে ছয়জনের মৃত্যু হয়।
বাঘাইছড়ি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শিরিন আক্তার সাংবাদিকদের জানান, যেখানে দুর্ঘটনাটি ঘটেছে, সেটি খুবই দুর্গম এলাকা। আহত শ্রমিকদের উদ্ধার করে খাগড়াছড়ি জেনারেল হাসপাতালে পাঠিয়েছে পুলিশ ও সেনাবাহিনী, তবে তাৎক্ষণিকভাবে কারও নাম-পরিচয় জানা যায়নি।
আরও পড়ুন:মৌলভীবাজার জেলার রাজনগর উপজেলায় ৭ (সাত) বছরের একটি শিশুকে ধর্ষণের অভিযোগে সৈয়দ সরাফত আলী নামের এক ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ ব্যুরো অফ ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)।
পিবিআইয়ের পরিদর্শক রিপন চন্দ্র গোপের নেতৃত্বে একটি অভিযানিক দল বুধবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে শ্রীমঙ্গল রেলওয়ে স্টেশন এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করে।
৬০ বছর বয়সী সৈয়দ সরাফত আলী রাজনগর থানার করিমপুর চা বাগান এলাকার বাসিন্দা।
পিবিআই জানায়, শিশুটিকে বাঁশের বাঁশি বানিয়ে দেয়ার লোভ দেখিয়ে গত ১৪ এপ্রিল বেলা পৌনে দুইটার দিকে সৈয়দ সরাফত আলী তার বাড়ির পাশের বাঁশ ঝাড়ের নিচে নিয়ে যান। সেখানে তাকে মাটিতে ফেলে ধর্ষণ করেন। বিষয়টি নিয়ে এলাকায় আলোড়ন সৃষ্টি হলে তিনি আত্নগোপন করেন।
অসুস্থ অবস্থায় শিশুটিকে গত প্রথমে রাজনগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও পরে মৌলভীবাজার ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতাল ভর্তি করে চিকিৎসা করানো হয়।
এ বিষয়ে শিশুটির বাবা বাদী হয়ে রাজনগর থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা করেন।
পিবিআই মৌলভীবাজার পুলিশ সুপার এহতেশামুল হক বলেন, ‘শিশু ধর্ষণের ঘটনায় অপরাধীর পার পাওয়ার সুযোগ নেই। আইনের আওতায় এনে তাদের বিচার করা হবে। মামলার খুঁটিনাটি বিষয় বিবেচনায় রেখে নিখুঁত তদন্ত প্রতিবেদন আদালতে দাখিল করা হবে।’
আরও পড়ুন:চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জে সোনামসজিদ স্থলবন্দরে দায়িত্ব পালনকালে রুহুল আমিন নামে এক ট্রাফিক ইন্সপেক্টরের মৃত্যু হয়েছে। তার বাড়ি যশোরের বেনাপোলে। বাবার নাম কোরবান আলী।
নৌ-পরিবহন মন্ত্রণালয়ের বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষের অধীন সোনামসজিদ স্থলবন্দরে ট্রাফিক ইন্সপেক্টরের দায়িত্ব পালন করছিলেন তিনি।
শিবগঞ্জ থানার ওসি সাজ্জাদ হোসেন জানান, সোনামসজিদ স্থলবন্দরের পানামা পোর্ট লিংক লিমিটেডের মধ্যে ট্রাক পরিদর্শন শেষে দুপুর পৌনে ১টার অফিস কক্ষে ফিরে অসুস্থ হয়ে পড়েন রুহুল আমিন। সহকর্মীরা তাকে দ্রুত শিবগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
চাঁপাইনবাবগঞ্জের সিভিল সার্জন এসএম মাহমুদুর রশিদ জানান, ট্রাফিক ইন্সপেক্টর রুহুল আমিন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আনার আগেই মারা যান। হাসপাতালে যারা নিয়ে এসেছিলেন তারা বলেছেন যে তিনি তৃষ্ণার্ত ছিলেন, পানি খেতে চেয়েছিলেন।
তবে তার মৃত্যু যে হিট স্ট্রোকে হয়েছে এটা এখনই নিশ্চিত করে বলা যাবে না। অন্য কোনো রোগেও তার মৃত্যু হয়ে থাকতে পারে। তবে এখন যেহেতু প্রচণ্ড গরম চলছে তাই এটার প্রভাব থাকতে পারে।
মন্তব্য