১৮ জেলায় বজ্রপাতে ৩২ জনের মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্যে সিরাজগঞ্জ ও চট্টগ্রামেই মারা গেছেন ১০ জন।
মৃতদের মধ্যে নারী, শিশু ও শ্রমিক রয়েছেন।
এর আগে বজ্রাঘাতে শনিবার ৭ জন ও শুক্রবার ৯ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। নিউজবাংলার হিসাবে এ নিয়ে গেল তিন দিনে মৃত্যু হলো ৪৮ জনের।
সিরাজগঞ্জের চার উপজেলায় বজ্রপাতে স্কুলছাত্রসহ পাঁচজনের মৃত্যু হয়েছে।
উল্লাপাড়ার আগদিঘল, বেলকুচির চর সমেশপুর, সলঙ্গার আঙ্গারু এবং শাহজাদপুরের চর আঙ্গারু ও বাতিয়া গ্রামে রোববার বিকেল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত এই প্রাণহানির ঘটনা ঘটে।
মৃতরা হলেন উল্লাপাড়া উপজেলার আগদিঘল গ্রামের নবম শ্রেণির ছাত্র ফরিদুল ইসলাম, বেলকুচির চর সমেশপুর গ্রামের লাইলি বেগম, সলঙ্গার আঙ্গারু গ্রামের রফিকুল ইসলাম ও শাহজাদপুর উপজেলার চর আঙ্গারু গ্রামের কৃষক জুয়েল রানা ও বাতিয়া গ্রামের কৃষক আলহাজ পণ্ডিত।
উল্লাপাড়া উপজেলার উধুনিয়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আব্দুল জলিল নিউজবাংলাকে জানান, ফরিদুল মাঠে ধান কাটা শেষে বাড়ি ফেরার সময় আগদিঘল গ্রামের কবরস্থানের কাছে পৌঁছালে বজ্রপাতে তার মৃত্যু হয়।
শাহজাদপুর উপজেলায় দুই কৃষকের মৃত্যুর বিষয়টি কায়েমপুর ইউপির চেয়ারম্যান হাসিবুল হক হাসান ও নরিনা ইউপির চেয়ারম্যান ফজলুল হক, বেলকুচিতে একজনের মৃত্যুর বিষয়টি বেলকুচি থানার ওসি গোলাম মোস্তফা, সলঙ্গায় একজনের মৃত্যুর বিষয়টি সলঙ্গা থানার ওসি আব্দুল কাদের জিলানী নিশ্চিত করেছেন।
বজ্রাঘাতে পাঁচজনের মৃত্যু হয়েছে চট্টগ্রামেও।
ফটিকছড়ি উপজেলার কাঞ্চননগর ইউনিয়নের ছমুরহাট এলাকায় সকাল ৮টার দিকে বজ্রাঘাতে মারা গেছেন ভানুমিত দাশ ও লাকি রানী দাশ। এ সময় আহত হয়েছেন মালতী দাশ ও শোভা রানী দাশ।
তাদের বাড়ি কাঞ্চননগর ইউনিয়নের মানিকপুর গ্রামে।
ছমুরহাট বাজার কমিটির সভাপতি মাওলানা আনিছুর রহমান জানান, ওই চারজন কৃষিশ্রমিক। সকালে ছমুরহাট বাজারের পাশে একটি জমিতে কাজ করছিলেন তারা। সে সময় হঠাৎ বজ্রপাত হলে তারা আহত হন। তাদের উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে চিকিৎসক ভানুমিত ও লাকিকে মৃত ঘোষণা করেন। বাকিদের চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে।
ফটিকছড়ি থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মোহাম্মদ ইলিয়াছ ফোনে নিউজবাংলাকে বলেন, ‘বজ্রপাতে দুই নারীর মৃত্যুর খবর পেয়েছি। এখন ঘটনাস্থলে আছি।’
জেলার বোয়ালখালীতে বেলা ১১টার দিকে বজ্রাঘাতে মারা গেছেন মো. জাহাঙ্গীর নামের এক দিনমজুর। উপজেলার জৈষ্ঠ্যপুরা পাহাড়ের গরজংগিয়া এলাকায় লেবু বাগানে কাজ করার সময় বজ্রাঘাতে আহত হন জাহাঙ্গীর। তাকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
সীতাকুণ্ডে শিপইয়ার্ডে কাজ করার সময় বজ্রপাতে এক শ্রমিকের মৃত্যু হয়েছে।
চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় সন্ধ্যা সাতটায় মৃত্যু হয় তার।
মৃত মোহাম্মদ জলিল আহাম্মদ উপজেলার বার আউলিয়ার হাফিজ জুট মিল এলাকার মৃত নুরুল আলমের ছেলে। তার বয়স ৪০ বছর।
হাসপাতাল পুলিশ ফাঁড়ির সহকারী উপপরিদর্শক এএসআই শীলব্রত বড়ুয়া নিউজবাংলাকে বলেন, ‘বার আউলিয়ার একটি শিপইয়ার্ডে কাজ করার সময় বজ্রপাতে গুরুতর আহত হন তিনি। পরে তাকে উদ্ধার করে তার ভাই ফয়েজ আহম্মেদ চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজে হাসপাতালে নিয়ে এলে সন্ধ্যা সাতটার দিকে তার মৃত্যু হয়।’
তার মরদেহ হাসপাতালের মর্গে রয়েছে বলে জানান শীলব্রত বড়ুয়া।
এ ছাড়া মিরসরাইয়ে সাজ্জাদ হোসেন নামে এক যুবকের মৃত্যু হয়েছে। সাহেরখালী ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য আইয়ুব আলম এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
মানিকগঞ্জের ঘিওরে বজ্রাঘাতে এক কলেজছাত্রের মৃত্যু হয়েছে। আহত হয়েছেন তার মা।
উপজেলার বৈলট এলাকায় রোববার বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে এই প্রাণহানির ঘটনা ঘটে।
১৮ বছর বয়সী শাহীন হোসেন ঘিওর ইউনিয়নের বাসিন্দা। তিনি শিবালয়ের মহাদেবপুর ইউনিয়ন ডিগ্রি কলেজে পড়তেন।
ঘিওর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা রিয়াজ উদ্দিন আহমেদ বিপ্লব বলেন, শাহীন ও তার মা ধানক্ষেতে কাজ করছিলেন। বৃষ্টি শুরু হলে বাড়ি ফেরার সময় বজ্রপাতে শাহীনের মৃত্যু হয়। আহত হন তার মা।
এদিকে দৌলতপুরে বজ্রপাতে দিনমজুরের মৃত্যু হয়েছে।
উপজেলার বাঁচামারা ইউনিয়নের চরভারাঙ্গা এলাকায় রোববার বিকেল সাড়ে ৫ টার দিকে এই প্রাণহানির ঘটনা ঘটে।
মৃত গোলাম মোস্তফা চরকাঠুরী এলাকায় আব্দুল বাতেন মিয়ার ছেলে। তিনি মহিষের গাড়ি চালাতেন।
ইউনিয়নের ৪ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য রমজান আলী বলেন, বাদাম আনতে বিকেলে চরভারাঙ্গা এলাকায় যান গোলাম মোস্তফা। এ সময় হঠাৎ বজ্রাঘাতে ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয়। স্থানীয়রা তার মরদেহ উদ্ধার করে।
সাতক্ষীরা সদর উপজেলার ভোমরা ইউনিয়নে বজ্রাঘাতে দুইজনের মৃত্যু হয়েছে। আহত হয়েছে আরও তিনজন।
চৌবাড়িয়া ও তালা উপজেলার খলিশখালী ইউনিয়নে হরিণখোলা গ্রামে রোববার বিকেলে এই ঘটনা ঘটে।
মৃতরা হলেন- হরিণখোলা গ্রামের আশুতোষ মন্ডলের ছেলে কিশোর মন্ডল ও চৌবাড়িয়া গ্রামের বজলুর রহমানের মেয়ে রাবেয়া খাতুন। আহতদের পরিচয় জানা যায়নি।
ফেনীর সোনাগাজী উপজেলার বগাদানা ইউনিয়নের আলমপুরে সকাল সাড়ে ১০টার দিকে বজ্রাঘাতে এক শিশু ও এক কিশোরী মারা গেছে।
মৃতরা হলো ৬ বছর বয়সী আল আমিন ও ১৫ বছর বয়সী তামান্না আক্তার।
সোনাগাজী মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সাজেদুল ইসলাম জানান, সকালে উপজেলার আলমপুর গ্রামের আনু ফরাজি বাড়ির সোলেমানের মেয়ে তামান্না আক্তার ও বাহার উল্লার ছেলে আল আমিন বৃষ্টির সময় ঘর থেকে বের হয়। তখনই বজ্রপাত হলে তারা আহত হয়। স্বজনরা তাদের উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
ওসি জানান, কোনো অভিযোগ না থাকায় মরদেহ দুটি তাদের স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।
পটুয়াখালীতে বজ্রপাতে দুইজনের মৃত্যু হয়েছে।
সদর ও মির্জাগঞ্জ উপজেলায় রোববার বিকেলে এই প্রাণহানির ঘটনা ঘটে।
মৃতরা হলেন সদর উপজেলার মরিচবুনিয়া গ্রামের প্রয়াত মুনসুর আলী হাওলাদারের ছেলে মজিবর রহমান এবং মির্জাগঞ্জ উপজেলার তারাবুনিয়া গ্রামের প্রয়াত সেরজন আলী হাওলাদারের ছেলে আবদুল জলিল হাওলাদার।
জলিল পেশায় একজন কৃষক এবং মজিবর শ্রমিক ছিলেন।
মির্জাগঞ্জ ও সদর থানা পুলিশ এসব তথ্য নিশ্চিত করেছে।
সদর উপজেলার মরিচবুনিয়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মো. দেলোয়ার হোসেন বলেন, বিকেল ৪টার দিকে মজিবর বাজার থেকে বাড়িতে ফিরছিল। এসময় রাস্তায় বজ্রপাতে তার মৃত্যু হয়।
মির্জাগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মহিবুল্লাহ জানান, মুষলধারে বৃষ্টির মধ্যে জলিল নিজ বাড়ির পাশে কৃষি জমিতে বীজ রোপণ করছিলেন। হঠাৎ বজ্রপাতে ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয়।
টাঙ্গাইলের নাগরপুরে বজ্রপাতে দুইজনের মৃত্যু হয়েছে।
উপজেলার ভাদ্রা ও বেকড়া ইউনিয়নে এই প্রাণহানির ঘটনা ঘটে।
মৃতরা হলেন ভাদ্রার গাংবিহালী গ্রামের বক্তার খানের ছেলে আলমাস খান এবং বেকড়ার বেকড়া মধ্যপাড়া গ্রামের মৃত পলান মিয়ার ছেলে সোনা মিয়া।
স্থানীয় ইউপি সদস্য মুসলেম উদ্দিন বলেন, বিকেলে গাংবিহালী চকে ধানের খড় শুকাচ্ছিলেন আলমাস। এসময় বজ্রবৃষ্টি শুরু হলে তিনি বাড়ি ফিরে আসতে থাকেন। পথে বজ্রপাতে তার মৃত্যু হয়।
বেকড়া মধ্যপাড়ার সোনা মিয়া রাতে নিজ বাড়ির উঠানে বজ্রপাতে মারা যান।
নাগরপুর থানার ওসি (তদন্ত) বাহালুল খান বাহার এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
বগুড়ার ধুনটে আম কুড়ানোর সময় বজ্রপাতে এক শিশুর মৃত্যু হয়েছে। আহত হয়েছে আরেক শিশু।
উপজেলার কালেরপাড়া ইউনিয়নের নিত্তিপোতা গ্রামে রোববার সন্ধ্যায় এ ঘটনা ঘটে।
মৃত ৮ বছর বয়সী আদিল হোসেনের বাবার নাম আব্দুল মোমিন। আহত হয়েছে সাত বছরের আরমান হোসেন।
ধুনট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা কৃপা সিন্ধুবালা বলেন, আদিল ও আরমানের বাড়ি পাশাপাশি। ঝড়ের সময় আদিলের বাড়ির উঠানে দুজনই আম কুড়াচ্ছিল।
এ সময় বজ্রপাতে ঘটনাস্থলেই আদিল মারা যায়। আহত হয় আরমান। আরমানকে উদ্ধার করে প্রথমে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেয়া হয়। প্রাথমিক চিকিৎসা দেয়ার পর তাকে বগুড়ার শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
মাদারীপুরের শিবচরে বজ্রপাতে এক নারীর মৃত্যু হয়েছে।
উপজেলার চরজানাজাত ইউনিয়নের বালুরটেকে এলাকায় রোববার বিকেল ৪টার দিকে এ ঘটনা ঘটে।
মৃত ৫০ বছর বয়সী আয়েশা বেগম ওই এলাকার ছোরফান হাওলাদারের স্ত্রী।
শিবচর থানার ওসি মিরাজ হোসেন জানান, দুপুরে আয়েশা বেগম নিজ জমিতে বাদাম তুলতে যান। বিকেলের দিকে হঠাৎ বৃষ্টি শুরু হয়। এ সময় বজ্রপাতে ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয়।
মেহেরপুরের মুজিবনগরে বজ্রপাতে এক কৃষকের মৃত্যু হয়েছে।
দারিয়াপুর ইউনিয়নে রোববার বিকেলে এই প্রাণহানির ঘটনা ঘটে।
মৃত ফরিদ নওদা ওই ইউনিয়নের পুরুন্দপুর গ্রামের প্রয়াত বক্স নওদার ছেলে।
মুজিবনগর থানার ওসি আবুল হাশেম নিউজবাংলাকে বলেন, বিকেলে নটগাড়ির মাঠে নিজ আবাদি জমির ফসল দেখতে যান ফরিদ। এ সময় বজ্রপাতে ঘটনাস্থলে মৃত্যু হয় তার। পরে পুলিশের সহায়তায় তার মরদেহ উদ্ধার করে বাড়িতে নিয়ে আসা হয়।
নোয়াখালীর হাতিয়ার সোনাদিয়া ইউনিয়নে বজ্রপাতে এক ব্যবসায়ীর মৃত্যু হয়েছে।
উপজেলা সোনাদিয়া ইউনিয়নের মাইজচরা গ্রামে রোববার বিকেল ৫টায় এই প্রাণহানির ঘটনা ঘটে।
মৃত আবদুল মান্নান মাইজচরা গ্রামের মৌলভী সৈয়দ আহমেদের ছেলে এবং স্থানীয় মাইজদী বাজারের পান ব্যবসায়ী।
হাতিয়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. ইমরান হোসেন বলেন, রোববার বিকেলে গুঁড়িগুঁড়ি বৃষ্টির মধ্যে মাঠ থেকে গরু আনতে যান খোকন। এ সময় হঠাৎ বজ্রপাতে ঘটনাস্থলেই মারা যান তিনি। পরে আশপাশের লোকজন এসে তার মরদেহ উদ্ধার করে।
পাবনার আটঘরিয়ায় বজ্রপাতে এক ছাত্রীর মৃত্যু হয়েছে।
মৃত যুথি খাতুন পাবনা সদর উপজেলার মালঞ্চি ইউনিয়নের পাইকেল গ্রামের নজরুল ইসলামের মেয়ে।
আটঘরিয়া থানার ওসি হাফিজুর বলেন, বিকেলে বাড়ির পাশের বাগানে আম কুড়াতে গেলে বজ্রপাতে যুথির মৃত্যু হয়। মেয়েটি কয়রাবাড়ী বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয়ে পড়ত।
মাগুরার মহম্মদপুর উপজেলায় বজ্রপাতে এক নারীর মৃত্যু হয়।
তার নাম ছকিরন বেগম। তিনি বিনোদপুর ইউনিয়নের ঘুল্লিয়া গ্রামের সুরমাউন শেখের স্ত্রী।
ঘুল্লিয়া ঠাকুর পাড়ায় রোববার সন্ধ্যা ৬টার দিকে এ ঘটনা ঘটে।
স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান শিকদার নিউজবাংলাকে বলেন, বিকেল থেকেই বৃষ্টিসহ বজ্রপাত হচ্ছিল। এ সময় উঠানে কাজ করছিলেন ছকিরন। হঠাৎ বজ্রপাত হলে ঘটনাস্থলে মৃত্যু হয় তার।
মহম্মদপুর থানার ওসি তারক বিশ্বাস নিউজবাংলাকে বলেন, ‘আমি মৃত্যুর খবর শুনেছি। ঝড়বৃষ্টি থামলে পুলিশ পাঠাব।’
শরীয়তপুরে বজ্রপাতে এক শিক্ষার্থীর মৃত্যু হয়েছে।
জাজিরা উপজেলায় রোববার সন্ধ্যা ৭টায় তার মৃত্যু হয়।
মৃত আতিকুর রহমান জাজিরা উপজেলার ছোট কৃষ্ণনগর গ্রামের মো. ফারুক মাদারের ছেলে।
জাজিরা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মাহবুবুর রহমান বলেন, বৃষ্টি ও বজ্রপাতের সময় বাড়ি ফিরছিল আতিকুর। বজ্রপাতে তার মৃত্যু হয়।
বরিশালের উজিরপুরে বজ্রাঘাতে এক শ্রমিকের মৃত্যু হয়েছে। আহত হয়েছে আরও এক শ্রমিক।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন উজিরপুর মডেল থানার পুলিশের সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই) সুমন হোসেন।
সাতলা ইউনিয়নের সাতলা গ্রামে রোববার বিকেলে এই প্রাণহানির ঘটনা ঘটে।
মৃত নান্টু বালী ওই এলাকার ইউনুস বালীর ছেলে। আহত সুমন একই এলাকার পল্টু খানের ছেলে।
এএসআই সুমন বলেন, বিকেলে ঝড় ও বৃষ্টির মধ্যে কচা নদী থেকে ড্রেজারের মাধ্যমে বালু তুলছিলেন নান্টু ও সুমন। এ সময় বজ্রপাতে তারা দুজনেই গুরুতর আহত হন।
স্থানীয়রা তাদের উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে চিকিৎসক নান্টুকে মৃত ঘোষণা করেন। আশঙ্কাজনক অবস্থায় সুমনকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বরিশালের শের-ই-বাংলা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
এছাড়া বরিশালের মুলাদীতে বজ্রপাতে কৃষক হাচেন আলী সরদারের মৃত্যু হয়েছে। মুলাদী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ফয়েজ উদ্দিন আহমেদ এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
চুয়াডাঙ্গার আলমডাঙ্গায় বজ্রপাতে এক কৃষকের মৃত্যু হয়েছে।
আলমডাঙ্গা উপজেলার রুইথনপুর গ্রামে রোববার বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে ওই প্রাণহানির ঘটনা ঘটে।
মৃত কোরবান আলী একই গ্রামের মৃত ফকির আলীর ছেলে।
আলমডাঙ্গা থানার ওসি আলমগীর কবীর জানান, বিকেলে বৃষ্টি শুরু হলে রুইথনপুর গ্রামের মাঠে যান কৃষক কোরবান। তার নিজ কচুক্ষেতে সার ছিটানোর সময় বজ্রপাতে ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয়। পরে মাঠের অন্য কৃষকরা তার মরদেহ উদ্ধার করে বাড়ি নেয়।
মুন্সিগঞ্জের সিরাজদিখানে বৃষ্টির মধ্যে মাঠে খেলতে গিয়ে বজ্রপাতে কলেজছাত্রের মৃতু হয়েছে। আহত হয়েছে আরও দুইজন।
শেখরননগর মাঠে ফুটবল খেলতে গিয়ে রোববার বিকেল ৩টায় দিকে এই প্রাণহানির ঘটনা ঘটে। আহত দুজনকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
মৃত অপূর্ব বর্মন উপজেলার শেখরনগর ইউনিয়নের শেখরনগর জেলে পাড়া গ্রামের স্বপন বর্মনের ছেলে এবং আলী আজগর অ্যান্ড আব্দুল্লাহ কলেজের এইচ এসসির পরীক্ষার্থী। আহতরা হলেন অপু বর্মন ও পরিচয় বর্মন।
শেখরনগর ইউপি চেয়ারম্যান মো. নজরুল ইসলাম ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।
রংপুরের গঙ্গাচড়ায় বজ্রপাতে এক কৃষকের মৃত্যু হয়েছে।
উপজেলার কোলকোন্দ ইউনিয়নের চর মটুকপুর গ্রামে রোববার বিকেল সোয়া ৩টার দিকে এই প্রাণহানির ঘটনা ঘটে।
মৃত আমিনুর রহমান ওই গ্রামের মফিজ উদ্দিনের ছেলে।
গংগাচড়া মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সুশান্ত কুমার সরকার বলেন, জমিতে কাজ শেষে বাড়িতে ফেরার পথে বজ্রাঘাতে মৃত্যু হয় তার। এ ঘটনায় জিডি হয়েছে।
আরও পড়ুন:ময়লা-আবর্জনা আর অবৈধ দখলের কারণে অস্তিত্ব সংকটে ভুগছে লক্ষ্মীপুরের কমলনগর উপজেলার জনগুরুত্বপূর্ণ জারিরদোনা শাখা খালটি। এ জন্য যথাযথ ব্যবস্থাপনার অভাব ও প্রশাসনের উদাসীনতাকে দুষছেন এলাকাবাসী।
উপজেলা সদর হাজিরহাট বাজার অংশে জারিরদোনা খাল দখল করে গড়ে তোলা হয়েছে ছোট-বড় বহু দোকানপাট ও বহুতল ভবন। কোনো ধরনের অনুমোদন ছাড়াই খালের পানি বাধাগ্রস্ত করে ইচ্ছামতো সরু পুল, কালভার্ট নির্মাণ করেছেন প্রভাবশালীরা। সেই সঙ্গে গড়ে তুলেছেন অবৈধ দোকানপাট। এ ছাড়া এলাকার কিছু প্রভাবশালী বাজারের আবর্জনা দিয়ে উদ্দেশ্যমূলকভাবে খালটি ভর্তি করে ফেলেছেন। যাতে করে পরে সময় সুযোগ বুঝে ওই স্থান দখলে নেওয়া যায়।
এলাকাবাসী জানান, চরফলকন, চরলরেন্স, হাজিরহাট ও সাহেবেরহাট ইউনিয়নসহ উপজেলার বিস্তীর্ণ অঞ্চলের কৃষিকাজ এ খালের পানি প্রবাহের ওপর নির্ভরশীল। পানির স্বাভাবিক চলাচল বাধাগ্রস্ত হওয়ায় শুষ্ক মৌসুমে যেমন পানি সংকটে কৃষিকাজ ব্যাহত হয়, তেমনি বর্ষা মৌসুমে পানি নিষ্কাশনজনিত সমস্যায় সয়াবিন, ধান, মরিচ, বাদাম ও সবজীসহ বিভিন্ন ফসল ও বীজতলা ক্ষতিগ্রস্ত হয়। জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়ে মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়ে। বর্তমান এ অঞ্চলে ভয়াবহ বন্যা চলছে। খালটি দখলের কারণে পানি নিষ্কাশনের পথ বন্ধ থাকায় জীবনযাত্রা চরম দূর্বিষহ হয়ে উঠেছে মানুষের। বন্যার পানি না নামার কারণ হিসেবে খাল দখলকে দায়ী করছেন ভুক্তভোগী পরিবারগুলো।
হাজিরহাট এলাকার বীর মুক্তিযোদ্ধা আবু নূর সেলিম বলেন, জারিরদোনা শাখা খালটির সংযোগ সরাসরি মেঘনা নদীর সঙ্গে। আশির দশক পর্যন্ত এ খালটি গুরুত্বপূর্ণ নৌপথ হিসেবেই বিবেচিত ছিল। এ অঞ্চলের ব্যবসা বাণিজ্যেও এর অবদান ছিল অনস্বীকার্য। ওই সময়ে কাঁচা রাস্তা দিয়ে বাস-ট্রাক যাতায়াত করা ছিল দুর্সাধ্য। এমনকি ৬০-এর দশকের মাঝামাঝি সময় পর্যন্ত মূল ভূখণ্ডের সঙ্গে এ অঞ্চলের সড়ক পথই ছিল না।
এদিকে লক্ষ্মীপুর জেলা প্রশাসক কার্যালয় থেকে ৮০ দখলবাজের কবজা থেকে খালটি উদ্ধার করতে উচ্ছেদের আদেশ হলেও কার্যকর পদক্ষেপ নিচ্ছে না স্থানীয় প্রশাসন। তারা খাল উদ্ধারে গড়িমসি করে সময় পার করছেন বলে অভিযোগ স্থানীয়দের।
উপজেলা ভূমি অফিসের তথ্যমতে, পিএস জরিপে হাজিরহাট বাজার অংশে খালের প্রশস্ততা ছিল গড়ে প্রায় ৩২ ফুট। বর্তমান আরএস জরিপে তা দাঁড়িয়েছে মাত্র ২০ ফুটে। কিন্তু কিছু ইমারত (ভবন) এমনভাবে তৈরি করা হয়েছে ওই সব অংশে খালের প্রশস্ততা বর্তমানে ২ থেকে ৩ ফুটের বেশি নেই।
হাজিরহাট বাজার ব্যবস্থাপনা কমিটির সাধারণ সম্পাদক মো. কামরুল হাছান বলেন, ‘এলাকার বৃহত্তর স্বার্থে খালটি সংস্কার করে পানির প্রবাহ ঠিক রাখা একান্ত জরুরি। পুরো খাল দখল করে যারা ইমারত তৈরি করেছেন তাদের বিরুদ্ধে প্রশাসনিক ব্যবস্থা নিয়ে খালটি দখলমুক্ত করা এ অঞ্চলের মানুষের প্রাণের দাবি।’
উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মুহাম্মদ আরাফাত হুসাইন বলেন, ‘জারিরদোনা খাল দখলমুক্ত করতে ইতোমধ্যে আদেশ হয়েছে। আমরা দ্রুত কাজ শুরু করব।’
এ বিষয়ে কমলনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রাহাত-উজ জামান বলেন, খালটি সংস্কার ও অবৈধ দখল উচ্ছেদ করতে প্রক্রিয়া শুরু করা হয়েছে।
গত মার্চের ১৯ তারিখে চাল না দেওয়া ও চাল সংগ্রহে চুক্তি না করায় রাজশাহী বিভাগে ৯১৩টি চালকলের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে সুপারিশ করে খাদ্য বিভাগ। রাজশাহী আঞ্চলিক খাদ্য বিভাগ থেকে চাল সংগ্রহ মৌসুম শেষ হওয়ার পর সম্প্রতি খাদ্য মন্ত্রণালয়ে এই সুপারিশ পাঠানো হয়। সরকারের সঙ্গে চুক্তি করেও চাল সরবরাহ না দেওয়ায় রাজশাহী বিভাগের ৬১টি চালকলের লাইসেন্স বাতিল করা হয়েছে। চুক্তিবদ্ধ হয়েও কোনো চাল সরবরাহ করেনি এসব চালকল মালিকরা। এছাড়া চাল সংগ্রহ কার্যক্রমে অসহযোগিতাকারী ৯১৩টি চালকলকেও সাবধান করা হয়েছে।
খাদ্য বিভাগের সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, সরকারের সাথে চুক্তি করেও ঠিকভাবে চাল সরবরাহ দেয়নি এমন চালকলের সংখ্যা ১৬২টি। এর মধ্যে চুক্তির ৮০ ভাগ চাল দিয়েছে এমন চালকলের সংখ্যা ৩০টি। ৫০ ভাগ চাল দিয়েছে- এমন চালকলের সংখ্যা ৭১টি। আর চুক্তিবদ্ধ হয়েও কোনো চালই দেয়নি এমন চালকলের সংখ্যা ৬১টি। এছাড়া, ব্যবসা করলেও চাল সরবরাহের চুক্তি না করা চালকলগুলোরও লাইসেন্স বাতিল করেছে খাদ্য বিভাগ।
রাজশাহী খাদ্য অফিসের তথ্যমতে, রাজশাহী বিভাগে আমন সংগ্রহ ২০২৪-২০২৫ মৌসুমে ধান সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা ৫৬,৩৫৯ টন, সংগ্রহ হয়েছে মাত্র ৩৯৫ টন (লক্ষ্যমাত্রার মাত্র ৭%), সিদ্ধ চাল সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ১ লাখ ১১ হাজার ২৬৩ মেট্রিক টন। এর মধ্যে সংগ্রহ হয়েছে ৯৪ হাজার ৭০৭ মেট্রিক টন। আর আতপ চাল সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ২১ হাজার ৮৯১ মেট্রিক টন। সংগ্রহ হয়েছে ১৯ হাজার ৫২৯ মেট্রিক টন।
৬১টি চালকলের মধ্যে যারা সিদ্ধচালের কোনো চালই প্রদান করেনি- এমন চালকল রাজশাহীর একটি, নওগাঁয় ৮টি, চাঁপাইনবাবগঞ্জ তিনটি, পাবনায় ১১টি, বগুড়ায় ৩৪টি ও জয়পুরহাটে তিনটি। আর আতব চাল দেয়নি চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার একটি মিল। এর আগে এসব চালকল মালিকদের ব্যাখ্যা তলব করা হয়। ব্যাখ্যা সন্তোষজনক না হওয়ায় এসব চালকলের লাইসেন্স বাতিল করা হয়েছে।
রাজশাহী খাদ্য অধিদপ্তরের বিভাগীয় কার্যালয়ের সহকারি উপপরিচালক ওমর ফারুক বলেন, সরকারি যেকোনো কাজে চুক্তিবদ্ধ হলে তা বাস্তবায়ন না করতে পারলে অপরাধ বলে গণ্য হবে। যেসব মিল চুক্তি করেও ৫০ থেকে ৮০ শতাংশ চাল সরবরাহ করেছে, তাদের জামানত থেকে জরিমানা কেটে নেওয়ার আর যারা কোনো চাল সরবরাহ করেনি, তাদের লাইসেন্স বাতিলের সুপারিশ করেছিলাম। রাজশাহী বিভাগের যে সব মিল চাল দেয়নি বা চুক্তিযোগ্য ছিল কিন্তু চুক্তি করেনি- এমন মিল ৯১৩টি মিলের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের সুপারিশ মন্ত্রণালয়ে দিয়েছিলাম। এদের মধ্যে ৬১টি চালকলের লাইসেন্স বাতিল করা হয়েছে। বাকিদের শোকজ করা হয়েছে। পরে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। যারা চাল সরবরাহে ব্যর্থ হয়েছে, তাদের লাইসেন্স বাতিল করা হয়েছে।
নীলফামারীর জলঢাকায় ইজারাবিহীন খাসে যাওয়া মীরগঞ্জ হাট-বাজারে গরু-ছাগল ক্রেতা বিক্রেতাদের কাছ থেকে অতিরিক্ত টোল আদায়ের অভিযোগ উঠেছে। গত শনিবার সরেজমিনে গিয়ে অতিরিক্ত টোল আদায়ের বিষয়ে সত্যতা পাওয়া যায়। সেখানে দেখা যায়, সরকারি খাস খতিয়ানে যাওয়া মীরগঞ্জ হাট-বাজারের পশুরহাটে প্রশাসনের চোখ ফাঁকি দিয়ে গরু ক্রেতার কাছ থেকে রশীদ ফি ৬০০ টাকা ও বিক্রেতার কাছ থেকে অতিরিক্ত ২০০ টাকা চাঁদাসহ গরু প্রতি মোট ৮০০ টাকা আদায় করছেন হাট-বাজারের দায়িত্বে থাকা কর্তৃপক্ষ। এ হাট-বাজারে প্রশাসনের কাউকে দেখা না গেলেও সাংবাদিকদের উপস্থিতি টের পেয়ে দুইজন ইউনিয়ন উপসহকারী ভূমি কর্মকর্তা তাৎক্ষণিক হাট বাজারের অফিসে উপস্থিত হতে দেখা যায়। তারা হলেন গোলনা ইউনিয়ন উপসহকারী ভূমি কর্মকর্তা জহুরুল ইসলাম ও কাঁঠালী ইউনিয়ন উপসহকারী ভূমি কর্মকর্তা নজরুল ইসলাম। মীরগঞ্জ হাট-বাজারের টোল আদায়ের মুল দায়িত্বে ছিলেন ইউনিয়ন ভূমি কর্মকর্তা জহুরুল ইসলাম। তিনি বলেন, ‘আমরা সঠিক সময়ে হাটে এসেছি। তারা আমাদের চাপে ফেলে হাটের টোল আদায় করছেন। আমরা তাদেরকে সহযোগিতা করেছি।
তারা কারা- জানতে চাইলে তিনি বলেন, ওরা বিএনপি-জামায়াতের লোকজন। সংবাদকর্মীদের দেখে হাট-বাজারের থাকা ক্রেতা বিক্রেতা এগিয়ে এসে বলেন, গত ৩টা হাটে শুধু গরু ক্রেতার কাছে রশীদের ফি বাবদ ৬০০ টাকা নিয়েছেন। আর যারা গরু বিক্রেতা ছিলাম আমাদের কাছ তেকে কোন প্রকার চাঁদা নেয়নি। কিন্তু আজকের হাটে গরু ক্রেতার কাছে রশীদের মাধ্যমে ৬০০ টাকা এবং বিক্রেতার কাছে বিধি পরিপন্থি অতিরিক্ত ২০০ টাকা চাঁদা নেয়। হাটের লোকজন আমাদের কাছে জোরপূর্বক ভয়ভীতি দেখিয়ে অতিরিক্ত ২০০ টাকা চাঁদা নিচ্ছেন। একপর্যায়ে একদল লোক দৌড়ে এসে সংবাদকর্মীদের ওপর চড়াও হয় এবং আক্রোশমুলক গালমন্দ করতে থাকেন। এছাড়া বিভিন্ন হয়রানিমূলক মামলা এবং হত্যার হুমকি প্রদর্শন করেন।
লোকমুখে জানা যায়, তারা উপজেলা বিএনপির একাংশ একটি গ্রুপের বাহিনী। উপজেলা প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, চলতি অর্থ বছরের বাংলা ১৪৩২ সালে উপজেলার ২৬টি হাট ইজারা দেওয়ার দরপত্র আহ্বান করা হয়। এরমধ্যে ১৭টি হাটের দরপত্র জমা হলে বিধিমোতাবেক দরপত্র দর দাতাদের মধ্যে হাট-বাজার গুলো বুঝিয়ে দেওয়া হয়। এদিকে ৯টি হাটের কোন দরপত্র জমা না হওয়ায় হাট-বাজার গুলো খাস খতিয়ানে চলে যায়। খাস খতিয়ানে যাওয়া হাট-বাজার গুলো হলো, মীরগঞ্জ হাট-বাজার, পাঠানপাড়া হাট-বাজার, হলদিবাড়ী নালারপাড় হাট-বাজার, হলদিবাড়ী জয়বাংলা হাট-বাজার, নবাবগঞ্জ হাট-বাজার, ডিয়াবাড়ী হাট-বাজার, বালারপুকুর চৌধুরীর হাট-বাজার, হরিশ্চন্দ্রপাঠ হাট-বাজর, খুটামারা রহমানিয়া হাট-বাজার ইত্যাদি। এই হাটগুলো বর্তমানে উপজেলা প্রশাসন তাদের নিজেদের নিয়োগকৃত জনবল দিয়ে হাট-বাজারের টোল আদায় করছেন। এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. জায়িদ ইমরুল মোজাক্কিন বলেন, লিখিতভাবে কাউকে হাট-বাজার দেওয়া হয়নি। কিন্তু খাস খতিয়ানের হাট-বাজারে কিছু লোকের সহযোগিতা নিয়ে টোল আদায় করা হচ্ছে। অতিরিক্ত ২০০ টাকা টোল আদায়ের কোন এখতিয়ার নেই। যদি এরকম কোনো প্রমাণ আপনারা দিতে পারেন তাহলে তাদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
যশোরের শার্শা উপজেলায় ১০টি সোনার বারসহ শুভ ঘোষ (৩৫) নামে যুবককে আটক করেছে পুলিশ। রবিবার (৪ মে) দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে উপজেলার বাগআচড়া ইউনিয়ন পরিষদ এলাকা থেকে তাকে আটক করা হয়।
আটকের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন শার্শা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রবিউল ইসলাম।
আটক শুভ ঘোষ মনিকগঞ্জের সুনীল ঘোষের ছেলে।
পুলিশ জানায়, পুলিশের একটি দল বাঁগআচড়া ইউনিয়ন পরিষদের সামনে থেকে শুভ ঘোষ নামে এক যুবককে আটক করে। পরে তার দেহ তল্লাশি করে প্যান্টের পকেট থেকে স্কচটেপ দিয়ে মোড়ানো অবস্থায় ১০টি স্বর্ণের বার পাওয়া যায়। স্বর্ণের বারগুলো সীমান্ত দিয়ে ভারতে পাচারের উদ্দেশ্যে শুভ ঘোষ মনিকগঞ্জ থেকে বাঁগআচড়ায় আসে।
এছাড়া জব্দ করা স্বর্ণের ওজন এক কেজি ১৯২ গ্রাম। যার আনুমানিক বাজারমূল্য প্রায় এক কোটি ২০ লাখ টাকা বলে জানায় পুলিশ।
শার্শা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রবিউল ইসলাম বলেন, ‘যুবকের বিরুদ্ধে মামলা প্রক্রিয়াধীন এবং আদালতে সোর্পদ করা হবে। স্বর্ণের বারগুলো ট্রেজারি শাখায় জমা দেওয়া হবে।’
বরগুনায় এক নারীকে ধর্ষণের চেষ্টাকালে দুই শিশুসন্তান বাধা দেওয়ায় তাদের হত্যা মামলায় ইলিয়াস পহলান নামে এক আসামিকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন আদালত। পাশাপাশি তাকে দুই লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে।
রবিবার (২৭ এপ্রিল) দুপুরে বরগুনা নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক বেগম লায়লাতুল ফেরদৌস এ আদেশ দেন। রায় ঘোষণার সময় আসামি কাঠগড়ায় উপস্থিত ছিলেন।
মো. ইলিয়াস পহলান (৩৪) বরগুনা সদর উপজেলার পূর্ব কেওড়াবুনিয়া গ্রামের আবুল হোসেনের ছেলে।
মামলা পরিচালনায় রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী ছিলেন রঞ্জু আরা শিপু, আসামি পক্ষের আইনজীবী ছিলেন আহসান হাবীব স্বপন। আইনজীবী রঞ্জু আরা শিপু বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
মামলা সূত্রে জানা যায়, ২০২৩ সালের ৪ আগস্ট রাতে বরগুনা সদর উপজেলার ওই নারী তার মেয়ে তাইফা (৩) ও ছেলে হাফিজুলকে (১০) নিয়ে ঘরে ঘুমিয়ে ছিলেন। এ সময় ইলিয়াস তাকে ধর্ষণের উদ্দেশ্যে ঘরে ঢুকে পড়েন। বিষয়টি টের পেয়ে বাধা দেন ওই নারী। এ সময় তাইফা ও হাফিজুলের ঘুম ভেঙে গেলে ইলিয়াস ধারালো অস্ত্র দিয়ে তিনজনকেই কুপিয়ে আহত করেন। এতে ঘটনাস্থলেই মারা যায় হাফিজুল নিহত হয়, আর বরিশালে নেওয়ার পথে মারা যায় শিশু তাইফা।
তবে গুরুতর আহত ওই নারী দীর্ঘ চিকিৎসার পর প্রাণে বেঁচে যান। ঘটনার পরই ইলিয়াসকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। পরে তার বিরুদ্ধে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা হয়।
তদন্ত শেষে পুলিশ আদালতে আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দাখিল করলে বরগুনা নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাব্যুনাল সাক্ষীদের সাক্ষ্যগ্রহণ ও জেরা শেষে ইলয়াস পহলানের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় আদালত দোষী তাকে সাব্যস্ত করে ফাঁসির আদেশ দেন। একই সঙ্গে দুই লাখ টাকা জরিমানার আদেশ দেন আদালত।
এ ছাড়াও ভুক্তভোগীকে ধর্ষণের চেষ্টা ও কুপিয়ে আহত করার অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় ১০ বছর করে আরও ২০ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়।
ঝিনাইদহের মহেশপুর সীমান্তের ওপারে ভারতের অভ্যন্তরে বিএসএফের গুলিতে ওবাইদুর রহমান (৩৭) নামে এক যুবক নিহত হয়েছেন।
রবিবার (২৭ এপ্রিল) সকালে ভারতের চব্বিশ পরগনা জেলার মধুপুর নামক স্থান থেকে লাশটি উদ্ধার করেছে ভারতের পুলিশ।
নিহত ওবাইদুর মহেশপুর উপজেলার গোপালপুর গ্রামের হানেফ মন্ডলের ছেলে।
স্থানীয়রা জানায়, গতরাতে মহেশপুর উপজেলার গোপালপর গ্রামে ৭ থেকে ৮ জন লোক অবৈধভাবে ভারতে যায়। রাত দেড়টার দিকে তারা বিএসএসএফের সামনে পড়ে। সেসময় বিএসএফ তাদের লক্ষ্য করে গুলি ছোড়ে। তখন তারা পালিয়ে আবারো বাংলাদেশের ভিতরে চলে আসে। কিন্তু ওবাইদুর রহমানসহ দু’জন আসতে পারেনি। ওবাইদুর রহমানকে বিএসএফ ধরে ফেলে। বিএসএফ তাকে বস্তায় জড়িয়ে অমানুষিক নির্যাতন করে গুলি করে হত্যা করে।
সকালে ভারতের অভ্যন্তরে মধুপুর নামক স্থানে একজনের লাশ পড়ে থাকতে দেখে এলাকাবাসী। ওই লাশটি ওবাইদুর রহমানের হতে পারে বলে সূত্র জানিয়েছে। লাশটি ভারতের বাগদা থানার পুলিশ উদ্ধার করে নিয়ে গেছে। আরেকজনের খবর এখনো পাওয়া যায়নি।
স্থানীয় গ্রাম পুলিশ ওমর আলী জানান, খবর পেয়ে তিনি ওবাইদুরের বাড়িতে যান। বাড়িতে সবাই কান্নাকাটি করছেন। তিনি জানান, রাত ১টার দিকে ওপারে গোলগুলির শব্দ শুনেছে গ্রামবাসী। এতে ধারণা করা হচ্ছে ওবাইদুরকে গুলি করে হত্যা করা হয়েছে।
যাদবপুর ইউনিয়নের মেম্বর বাবুল হোসেন জানান, তিনিও সীমান্তের ওপারে গোলাগুলির সংবাদ শুনেছেন। এ ঘটনার পর থেকেই শোনা যাচ্ছে গোপালপুর গ্রামের ওবাইদুর নিখোঁজ রয়েছেন। ওপারে পড়ে থাকা লাশটি ওবাইদুরের হতে পারে।
মহেশপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ইয়াসমিন মনিরা জানান, ভারতের অভ্যন্তরে একজনের লাশ পড়ে আছে বলে আমি বিজিবির মাধ্যমে জানতে পেরেছি।
বিজিবির যাদবপুর বিওপির কমান্ডার হাবিলদার মফিজুল ইসলাম জানান, লোকমুখে তিনি এমন খবর পেয়ে সীমান্তে খোঁজ খবর নিচ্ছেন। তবে এখনো কোনো পরিবার তাদের দপ্তরে অভিযোগ করেনি।
মহেশপুর ৫৮ বিজিবির অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল রফিকুল আলম জানান, রবিবার সাকাল ৮টা ৫০ মিনিটের দিকে ভারতের মধুপর বিএসএফের ব্যাটালিয়ন কমান্ডার ফোন করে তাকে জানিয়েছে, ভারতের সীমানার মধ্যে একটি লাশ পড়ে আছে। সেটা বাংলাদেশি না ভারতীয় বোঝা যাচ্ছে না। ভারতের বাগদা থানার পুলিশ লাশ উদ্ধার করে নিয়ে গেছে।
উল্লেখ্য, ঝিনাইদহের মহেশপুর উপজেলার পলিয়ানপুর সীমান্তে গত ৮ এপ্রিল ওয়াসিম নামে এক বাংলাদেশি যুবককে হত্যা করে ইছামিত নদীতে ফেলে দেয় বিএসএফ। ১৯ দিন পার হলেও তার লাশ এখনো বিএসএফ ফেরৎ দেয়নি। নিহত ওয়াসিম বাঘাডাঙ্গা গ্রামের রমজান আলীর ছেলে।
ওয়াসিমের ভাই মেহেদী হাসান দাবি করেন, গত ৮ এপ্রিল ওয়াসিমসহ কয়েকজন সীমান্ত পেরিয়ে ভারতে যায়। ভারত থেকে ফেরার সময় ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফ) তাদের ধাওয়া করলে মহেশপুরের সলেমানপুর গ্রামের আব্দুস সোবহান, কাঞ্চনপুর গ্রামের রাজু, শাাবুদ্দিন, মানিক ও বাঘাডাঙ্গা গ্রামের আব্দুল ওয়াহেদ ফিরে আসলেও তার ভাই বিএসএফের হাতে ধরা পড়ে। তাকে নির্যাতনে হত্যার পর লাশ ইছামতি নদীতে ফেলে দেয়। বিজিবি লাশ ফেরৎ চাইলেও ভিসা ও আইনি জটিলতার কারণে ১৯ দিনেও লাশ ফেরৎ পায়নি পরিবার।
ভারতীয় পুলিশ বিজিবিকে উপযুক্ত প্রমাণ দিয়ে লাশ নেওয়ার কথা জানিয়েছে। কিন্তু ভারতে গিয়ে লাশ শনাক্ত করার সক্ষমতা ওয়াসিমের পরিবারের নেই বলে জানা গেছে।
অপহরণের সাতদিন পর মুক্তি পেয়েছেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঁচ পাহাড়ি শিক্ষার্থী। তবে বুধবার (২৩ এপ্রিল) তাদের ছেড়ে দেওয়া হলেও বিষয়টি প্রকাশ্যে আসে একদিন পর বৃহস্পতিবার।
পার্বত্য চট্টগ্রাম পাহাড়ি ছাত্র পরিষদ (পিসিপি) পাঁচ শিক্ষার্থীর মুক্তির বিষয়টি নিশ্চিত করে বিবৃতি দিয়েছে। অপহরণকারীদের কবল থেকে মুক্ত হওয়া পাঁচ শিক্ষার্থী বর্তমানে তাদের গ্রামের বাড়িতে অবস্থান করছেন।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে খাগড়াছড়ির পুলিশ সুপার আরেফিন জুয়েল বার্তা সংস্থা ইউএনবি বলেন, ‘পাহাড়ি ছাত্র পরিষদ বিবৃতি দিয়েছে যে তারা তাদের সংগঠনের শিক্ষার্থীদের ফিরে পেয়েছে। আমরা ওই ছাত্র-ছাত্রীদের পরিবারে সাথে যোগাযোগ করেছি। তারাও নিজেদের পরিবার সদস্যদের ফিরে পাওয়ার কথা জানিয়েছেন। তাহলে এখন মোটামুটি ধরে ধরে নেওয়া যায় যে ওই ছাত্র-ছাত্রীরা তাদের পরিবারের হেফাজতে আছেন।’
বিজু উৎসব উদ্যাপন শেষে ফেরার পথে ১৬ এপ্রিল সকালে খাগড়াছড়ির গিরিফুল এলাকা থেকে পাঁচ শিক্ষার্থী ও তাদের বহন করা অটোরিকশার চালককে অজ্ঞাতনামা স্থানে তুলে নিয়ে যাওয়া হয়।
অপহৃত শিক্ষার্থীরা হলেন পিসিপির চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সদস্য ও আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের ছাত্র রিশন চাকমা, চারুকলা বিভাগের শিক্ষার্থী মৈত্রীময় চাকমা ও অলড্রিন ত্রিপুরা, নাট্যকলা বিভাগের দিব্যি চাকমা ও প্রাণিবিদ্যা বিভাগের লংঙি ম্রো। তারা বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০২৩-২৪ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী। অপহরণকারীরা চালককে ওই সময় ছেড়ে দিয়েছিল।
পাঁচ পাহাড়ি শিক্ষার্থী অপহরণের ঘটনায় শুরু থেকে ইউপিডিএফকে দায়ী করে আসছে জেএসএস–সমর্থিত পাহাড়ি ছাত্র পরিষদের সভাপতি নিপুন ত্রিপুরা। তবে ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগ অস্বীকার করে আসছেন ইউপিডিএফের অন্যতম জেলা সংগঠক অংগ্য মারমা।
মন্তব্য