নড়াইলের কালিয়ায় বৃদ্ধ ছালেহা বেগমকে পুড়িয়ে হত্যার ঘটনায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন দুই আসামি।
আদালতে বৃদ্ধার নাতি রাশেদ ও নাতজামাই মিরাজ বলেন, প্রতিপক্ষকে ফাঁসাতে পুত্র ইরুপ খন্দকার নিজেই পেট্রোল ঢেলে তার মা ছালেহা বেগমকে পুড়িয়ে হত্যা করেছেন। হত্যার সময় রাশেদ ও মিরাজ সহযোগিতা করেন।
শনিবার বিকেলে নড়াইলের জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম মোরশেদুল আলমের আদালতে ১৬৪ ধারায় তারা স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন।
রোববার আদালত তাদের কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেয়।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা কালিয়া থানার ওসি (তদন্ত) আমানুল্লাহ আল বারী জানান, রাশেদ ও মিরাজ জবানবন্দিতে বলেন, গ্রামের প্রতিপক্ষ মোল্লা গ্রুপের লোকজনকে ফাঁসাতে ছালেহা বেগমকে পুড়িয়ে হত্যার পরিকল্পনা করেন বৃদ্ধার ছেলে ইরুপ খন্দকার। সে অনুযায়ী ২১ মে রাত ১টার দিকে বৃদ্ধার শরীরে পেট্রোল ঢেলে দেন ছেলে ইরুপ খন্দকার। রাশেদ লাইটার দিয়ে আগুন ধরিয়ে দেন। আগুনে পুড়ে মৃত্যু হওয়ার পর রাত ৩টার দিকে তারা চিৎকার করলে আশপাশের লোকজন আসেন। মিরাজ তাদের সহযোগিতা করেন।
ওসি জানান, গত বৃহস্পতি ও শুক্রবার নড়াইল আমলি আদালতের জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম মোরশেদুল আলমের আদালতে ১৬৪ ধারায় হত্যার ঘটনায় জবানবন্দি দেন ছালেহা বেগমের পুত্রবধূ নার্গিস বেগম ও কুলসুম বেগম। জবানবন্দিতে তারা বলেন, কুলসুমের স্বামী আরিফ খন্দকারকে কুপিয়ে হত্যা করে প্রতিপক্ষ। একটি খুনের মামলার পর প্রতিপক্ষকে আরেকটি মামলা দিয়ে শায়েস্তা করতেই এই হত্যাকাণ্ড। ঘটনার রাত ১টার দিকে রাশেদ, মিরাজ, ইরুপসহ অজ্ঞাতপরিচয় দুই-তিনজন তাদের শাশুড়ি ছালেহা বেগমকে বিছানায় আগুন দিয়ে পুড়িয়ে মেরেছেন।
রাশেদকে আগুন জ্বালাতে নার্গিস দেখেছেন বলে জবানবন্দিতে উল্লেখ করেন।
আগুনে পুড়িয়ে ৭৫ বছর বয়সী ছালেহা বেগমকে হত্যার ঘটনায় তার মেয়ে মিনি বেগম ২৫ মে প্রতিপক্ষ আকসির, মনিরুল মোল্যাসহ ১১ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাতপরিচয় ছয়-সাতজনকে আসামি করে কালিয়া থানায় হত্যা মামলা করেন।
পুলিশ জানায়, আট মাস আগে স্থানীয় বাজার থেকে বাড়ি ফেরার পথে ছালেহা বেগমের বড় ছেলে আরিফ খন্দকারকে সন্ত্রাসীরা কুপিয়ে হত্যা করে। ওই ঘটনায় আরিফের ভাই ইরুপ খন্দকার প্রতিপক্ষ আকসির মোল্যাসহ ২৩ জনকে আসামি করে হত্যা মামলা করেন। এই মামলার আসামি রাহুল মোল্যাকে মারধর করলে ২০ মে রাহুলের মা ঝর্ণা বেগম ইরুপ খন্দকারসহ আটজনের নামে মামলা করেন। এরপরই ঘটে বৃদ্ধ ছালেহা বেগমকে আগুনে পুড়িয়ে হত্যার ঘটনা।
ওসি আমানুল্লাহ জানান, চাঞ্চল্যকর এই হত্যাকাণ্ডের শুরু থেকেই পুলিশ নিহত বৃদ্ধার পরিবারের লোকদের প্রতি সন্দেহের তির রেখেছিল। প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা হলেও নজরদারিতে ছিল বৃদ্ধার পুত্র, পুত্রবধূ, নাতি, নাতজামাইসহ কয়েকজন।
শনিবার এ মামলার বাদী ও আসামিপক্ষ নড়াইল প্রেস ক্লাবে পাল্টাপাল্টি সংবাদ সম্মেলন করে। মামলার বাদী মিনি বেগম সংবাদ সম্মেলনে দাবি করেন, মামলার দুই সাক্ষী তার দুই ভাবিকে পুলিশ থানায় নিয়ে বেধড়ক পিটিয়ে জবানবন্দি দিতে বাধ্য করেছে।
প্রতিপক্ষের মিনা খাতুন সংবাদ সম্মেলনে দাবি করেন, ‘নিজেরা বৃদ্ধাকে হত্যা করেছে কেবল আমাদের পরিবারের লোকদের হয়রানি করার জন্য।’
ছালেহা হত্যাকাণ্ডের পর থেকে তার ছেলে ইরুপ খন্দকার পলাতক রয়েছেন বলে জানান মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ওসি আমানুল্লাহ।
নড়াইলের পুলিশ সুপার প্রবীর কুমার রায় বলেন, ‘পুলিশের একাধিক সংস্থা চাঞ্চল্যকর এই হত্যাকাণ্ডের রহস্য উন্মোচনে কাজ করেছে। আমরা দ্রুত মামলাটির সমাধান করতে পারব বলে আশা করছি। হত্যাকারীদের চিহ্নিত ও গ্রেপ্তারে পুলিশের অভিযান চলছে।’
পাবনা বেড়া উপজেলায় রাতের অন্ধকারে কবরস্থান থেকে ১৫টি কঙ্কাল চুরির অভিযোগ উঠেছে।
উপজেলার আমিনপুরে সোমবার রাতে নতুন বাজার গোরস্থানে এ ঘটনা ঘটে। মঙ্গলবার সকালে বিষয়টি টের পান স্থানীয়রা।
চুরি হওয়া এক মরদেহের স্বজন মাসুদ রানা বলেন, ‘এটা ভাবতেই অবাক লাগছে। মহাসড়কের পাশে এই কবরস্থান থেকে কঙ্কাল চুরি কোনো সাধারণ ঘটনা নয়। আমাদের দাবি পুলিশ দ্রুত এই ঘটনা উদঘাটন করে দোষীদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেবেন।’
আরেক স্বজন জাহিদ হাসান বলেন, ‘এতো দিন আমরা দেখে আসছি আমাদের দেশে বেঁচে থাকা অবস্থায় মানুষের নিরাপত্তা নেই। এখন দেখছি মরে গেলেও মানুষের লাশেরও নিরাপত্তা নেই।’
বিষয়টি নিশ্চিত করে আমিনপুর থানার ওসি হারুন-উর-রশীদ বলেন, রাতের কোনো এক সময় কবর খুঁড়ে কঙ্কাল চুরি করে নিয়ে যায় দুর্বৃত্তরা। আজকে সকালে স্বজনরা কবরস্থানে দোয়া করতে গেলে সেখানে কবর খোঁড়া অবস্থায় দেখতে পান।
বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে তদন্ত করা হচ্ছে ও তদন্ত সাপেক্ষে বিস্তারিত বলা যাবে বলে জানান পুলিশের এ কর্মকর্তা।
আরও পড়ুন:কুমিল্লায় অস্বাস্থ্যকর ও নোংরা পরিবেশে মেয়াদোত্তীর্ণ সফট ড্রিংকস পাউডার তৈরি ও বিক্রির অপরাধে মেসার্স সিয়াম ফুড প্রোডাক্টসকে ৬০ হাজার টাকা জরিমানা করেছে বিএসটিআই।
ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে এ অভিযানে অবৈধভাবে তৈরিকৃত মালামাল ধ্বংস এবং সিলগালা করা হয় কারখানা।
কুমিল্লা জেলা প্রশাসন ও বিএসটিআইর যৌথ অভিযানে সোমবার কুমিল্লার আদর্শ সদর উপজেলার শুভপুর এলাকায় ওই কারখানায় মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করা হয়।
এ সময় অস্বাস্থ্যকর ও নোংরা পরিবেশে মেয়াদোত্তীর্ণ সফট ড্রিংকস পাউডার উৎপাদন ও বিক্রির অপরাধে মেসার্স সিয়াম ফুড প্রোডাক্টসকে বিএসটিআই আইন-২০১৮ এর সংশ্লিষ্ট ধারায় ৬০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড প্রদান করা হয়।
এ ছাড়া নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের উপস্থিতিতে বিপুল পরিমাণ অবৈধ মালামাল ধ্বংস করা হয় এবং কারখানার উৎপাদন সম্পূর্ণ বন্ধ রাখার নির্দেশ প্রদান করা হয়।
জেলা প্রশাসন কুমিল্লার সহকারী কমিশনার ও এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট ফরিদুল ইসলামের নেতৃত্বে পরিচালিত এ মোবাইল কোর্টে প্রসিকিউটর হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন বিএসটিআই কুমিল্লার কর্মকর্তা আমিনুল ইসলাম শাকিল।
আরও পড়ুন:বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের (ববি) ফিন্যান্স অ্যান্ড ব্যাংকিং বিভাগের এক শিক্ষার্থীর মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ।
বরগুনায় স্বামীর বাসা থেকে রোববার বিকেলে দেবশ্রী রায়ের ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করা হয়।
প্রাণ হারানো দেবশ্রী বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০১৬-১৭ শিক্ষাবর্ষের স্নাতকোত্তরের শিক্ষার্থী ছিলেন। তার গ্রামের বাড়ি সাতক্ষীরার জেলার তালা উপজেলায়।
বরগুনা সদর থানার ওসি এ কে মিজানুর রহমান বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, ‘প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, পারিবারিক কলহের জেরে দেবশ্রী আত্মহত্যা করেছে। স্বামীর সঙ্গে মনোমালিন্য ছিল বলে জেনেছি আমরা।’
তিনি জানান, এ ঘটনায় একটি অপমৃত্যুর মামলা হয়েছে। মরদেহ ময়নাতদন্ত শেষে পরিবারের কাছে পাঠানো হয়েছে।
ফিন্যান্স অ্যান্ড ব্যাংকিং বিভাগের চেয়ারম্যান সহকারী অধ্যাপক শাহাদাত হোসেন বলেন, ‘তার বাবার সঙ্গে কথা হয়। ময়নাতদন্তের পর তার মরদেহ গ্রামের বাড়ি সাতক্ষীরায় নিয়ে যাওয়া হয়েছে। তার ক্লাস প্রতিনিধি আমাকে জানিয়েছে পারিবারিক কলহের কারণে সে আত্মহত্যা করেছে।’
আরও পড়ুন:বাবা-ছেলের অর্থের দ্বন্দ্ব নিয়ে সালিসে কথা কাটাকাটির জেরে আসামিপক্ষের একজনের হাতে কামড় দিয়েছেন বাদীপক্ষের একজন।
সোমবার সকালে কিশোরগঞ্জের আদালতে আইনজীবী সমিতির ভবনে এ ঘটনা ঘটে।
আহত ব্যক্তিকে কিশোরগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। আর অভিযুক্ত ব্যক্তিকে আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদকের হেফাজতে রাখা হয়েছে।
স্থানীয়রা জানান, কিশোরগঞ্জের নিকলী উপজেলার কূর্শা পশ্চিমপাড়া এলাকার বাসিন্দা রুপালি হাজী। টাকা-পয়সার জন্য তাকে চাপ প্রয়োগ করা হয় বলে অভিযোগ তুলে দুই সন্তান নজরুল ও তাজরুলের নামে তিনি মামলা করেন আদালতে।
এ ছাড়া দীর্ঘদিন প্রবাসে থেকে বাবার কাছে আমানত রাখা টাকা-পয়সার হিসাব দেন না বলে অভিযোগ সন্তানদের। এ বিষয়টি নিয়ে আদালতে সমাধানের জন্য আসে উভয়পক্ষ।
সন্তানদের সঙ্গী হন মেয়ের জামাই শাহিন। আর রুপালি হাজীর সঙ্গী হয়ে আদালতে আসেন অভিযুক্ত হুমায়ুন। সমাধানের আলোচনার এক পর্যায়ে শুরু হয় তর্ক। তর্কের জেরেই ঘটে এমন ঘটনা।
রুপালি হাজীর ছেলে তাজরুল ইসলাম জানান, টাকা পয়সার হিসেব নিয়ে তাদের বাবার সঙ্গে বেশ কিছুদিন যাবৎ দ্বন্দ্ব চলছে। এ নিয়ে তার বাবা তাদের দুই ভাইয়ের নামে মামলা করেছেন। বিষয়টি সমাধানের জন্য তারা আদালতে এসেছিলেন।
তিনি জানান, আদালতে আসার পর বিভিন্ন বিষয় নিয়ে তাদের মধ্যে তর্ক শুরু হলে তাদের বাবার সঙ্গে থাকা এক ভাড়াটে তার ছোট বোন জামাইকে ডান হাতে কামড় দিয়ে মাংস ছিড়ে নিয়ে যায়। তার ছোট বোন জামাই শাহিন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
আহত মিনহাজ উদ্দিন শাহিন জানান, তার শ্বশুর রুপালি হাজীর সঙ্গে ছেলেদের ঝামেলা চলছিল। বিষয়টি সামাজিকভাবে সমাধানের জন্য আইনজীবী সমিতিতে এসেছিলেন তিনি। এ সময় তার শ্বশুরের সঙ্গে থাকা একজনকে বাইরে যেতে বলেন তিনি। আর তাতেই তার প্রতি ক্ষিপ্ত হয়ে কামড় দেন তাকে।
অভিযুক্ত হুমায়ুন কবীরের ভাষ্য, রুপালি হাজীর সঙ্গে ব্যক্তিগতভাবে তার ভালো সম্পর্ক। এ জন্য তার সঙ্গে আদালতে এসেছিলেন তিনি। এসে দেখেন রুপালি হাজীর ছেলেরা তার সঙ্গে তর্ক করছে। তিনি তাদেরকে থামতে বললে রুপালি হাজীর মেয়ের জামাই শাহিন তাকে ধরে ফেলেন। এক পর্যায়ে শাহিনকে কামড় দিতে বাধ্য হন তিনি।
কিশোরগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসক মো. মাকসুদুর রহমান জানান, সকালে কামড়ে আহত হয়ে শাহিন নামে একজন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। আঘাতটা বেশ গুরুতর।
তিনি বলেন, কামড় দেয়া লোকটা যদি জলাতঙ্ক রোগে আক্রান্ত হয়ে থাকেন তবে আহত ব্যক্তির আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। আহত ব্যক্তিকে আমরা প্রয়োজনীয় চিকিৎসা দিয়েছি, বর্তমানে তিনি শঙ্কামুক্ত।
কিশোরগঞ্জের আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক আমিনুল ইসলাম রতন জানান, রুপালী হাজী এবং তার ছেলেদের মধ্যে বিরোধ চলছিল। এ ঘটনায় বাবা বাদী হয়ে তার ছেলেদের বিরুদ্ধে একটি মামলা করেন। এ বিষয়টি সমাধানের জন্য তারা উভয় পক্ষ কোর্টে এসেছিল। বিভিন্ন বিষয় আলোচনার এক পর্যায়ে তাদের মধ্যে তর্ক বেধে যায়। তখন রুপালী হাজীর সাথে থাকা হুমায়ুন নামে এক লোক তার ছেলেদের সাথে থাকা মিনহাজ উদ্দীন শাহিনকে (রুপালী হাজীর মেয়ের জামাই) কামড় দেয়।
তিনি বলেন, যেহেতু বাবা-ছেলে বিষয় তাই আমরা সমাধানের চেষ্টা করছি। সমাধান না হলে এ বিষয়ে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
টাঙ্গাইলে বঙ্গবন্ধুর সেতুর পূর্বপ্রান্তে পঞ্চগড় এক্সপ্রেস ট্রেনের লাইনচ্যুত হওয়া বগি উদ্ধারের পর ওই রুটে প্রায় সাড়ে পাচ ঘণ্টা পর ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক হয়েছে।
সোমবার রাত ২টার দিকে ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক হয় বলে নিশ্চিত করেছেন পাকশি রেলওয়ে বিভাগীয় ম্যানেজার শাহ সূফী নুর মোহাম্মদ।
ট্রেন উদ্ধারের পর রাজধানীর সঙ্গে উত্তরবঙ্গের ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক হয়েছে। এ ঘটনায় চার সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটির প্রধান করা হয়েছে পাকশি রেলওয়ে বিভাগীয় পরিবহন কর্মকর্তা (ডিটিও) আনোয়ার হোসেনকে।
কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, সোমবার রাত ৯টার দিকে পঞ্চগড় এক্সপ্রেস ট্রেনটির একটি বগির চারটি চাকা লাইনচ্যুত হয়। রাত ২টার দিকে ক্রেনের সহায়তায় ক্ষতিগ্রস্ত ট্রেনের বগি উদ্ধার করে বগিটি সেখান থেকে সরিয়ে নেয়া হয়।
পরবর্তীতে রিলিফ ট্রেনের সহায়তায় বগিটি টাঙ্গাইলের ঘারিন্দা রেলস্টেশনে নিয়ে যাওয়া হয়। বগিটি লাইনচ্যুত হওয়ার ঘটনায় অন্যান্য স্টেশনে কয়েকটি বিভিন্ন গন্তব্যের ট্রেন আটকা পড়ে থাকে। এতে চরম ভোগান্তিতে পড়েন যাত্রীরা।
পাকশি রেলওয়ে বিভাগীয় ম্যানেজার শাহ সূফী নুর মোহাম্মদ বলেন, রাত দুইটার দিকে ক্রেনের মাধ্যমে বগিটি উদ্ধার করা হয়। পঞ্চগড় ট্রেন লাইনচ্যুত হওয়ার ঘটনায় চার সদস্য বিশিষ্ট কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটি সাত কর্ম দিবসের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেবে।
তিনি আরও বলেন, নতুন লাইনের জন্য এই ঘটনা কি না বা কী কারণে লাইনচ্যুত হয়েছে সেটা তদন্ত প্রতিবেদনের পরই বলা যাবে।
নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁওয়ে ডাকাত সন্দেহে মাইকে ঘোষণা দিয়ে গ্রামবাসীর সংঘবদ্ধ পিটুনিতে নিহতদের পরিচয় মিলেছে। তাদের মরদেহগুলো মর্গে পাঠিয়েছে পুলিশ। তবে নিহতের কোনো স্বজন এখন পর্যন্ত তাদের খোঁজে আসেননি।
নিহতরা হলেন- আড়াইহাজার উপজেলার কালাপাহাড়িয়া ইউনিয়নের ঝাউকান্দী নিতাইটেক গ্রামের ৪৮ বছর বয়সী আব্দুল রহিম, একই উপজেলার জালাকান্দি গ্রামের ৩৫ বছর বয়সী নবী হোসেন ও সোনারগাঁ উপজেলার মুছারচর গ্রামের ৪০ বছর বয়সী জাকির হোসেন।
আরও এক জনের পরিচয় এখনও পাওয়া যায়নি। তার পরিচয় শনাক্ত করতে কাজ করছে পুলিশের তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।
এছাড়া আহত অবস্থায় রাজধানীর জাতীয় অর্থোপেডিক হাসপাতাল ও পুনর্বাসন কেন্ত্রে (পঙ্গু হাসপাতাল) ভর্তি করা হয়েছে আড়াইহাজার উপজেলা জাঙ্গালিয়া গ্রামের ৪৫ বছর বয়সী মোহাম্মদ আলীকে।
পুলিশ জানায়, রোববার রাত একটার দিকে বাঘারী গ্রামের বিলের পাড়ে ৭/৮ জনের একটি দল ডাকাতির উদ্দেশ্যে অবস্থান নেয়। এ সময় স্থানীয়দের কয়েকজন তাদের দেখতে পেয়ে অন্যদের খবর দেন। পরে মসজিদের মাইকে ঘোষণা দিলে গ্রামের মানুষ জড়ো হয়ে তাদের ঘিরে ফেলে। এ সময় ডাকাত দলের সদস্যরা পালানোর চেষ্টা করলে স্থানীয়রা তাদের ধরে পিটুনি দেয়।
এতে ঘটনাস্থলেই মারা যান তিনজন। অন্যরা বিলে ঝাঁপ দেন। পরে বিল থেকে উঠিয়ে আরও দুজনকে পিটিয়ে গুরুতর আহত করা হয়।
খবর পেয়ে পুলিশ পৌঁছে হতাহতদের উদ্ধার করে। আহত দুজনকে হাসপাতালে নেয়ার পর আরও একজন মারা যান।
সংঘবদ্ধ পিটুনিতে নিহত চারজন ডাকাত দলের সদস্য বলে জানিয়েছেন সোনারগাঁ সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার শেখ বিল্লাল হোসেন।
তিনি বলেন, ‘নিহত তিনজনের পরিচয় মিলেছে, আরও একজনের পরিচয় শনাক্ত করতে সিআইডি কাজ করছে। যাদের পরিচয় পাওয়া গেছে, তাদের সবার নামেই মামলা আছে।’
মরদেহগুলো ময়নাতদন্ত শেষে পরিবারের লোকজন পাওয়া গেলে তাদের কাছে হস্তান্তর করা হবে বলে জানান নারায়ণগঞ্জের পুলিশ সুপার গোলাম মোস্তফা রাসেল।
ঘটনাস্থল থেকে তিনজনের মরদেহ উদ্ধার করে নারায়ণগঞ্জ সদর জেনারেল হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়। আর জাকিরের মরদেহ ঢামেকের মর্গে আছে বলে জানান তিনি।
এছাড়া নিহতের ঘটনায় থানায় মামলার পর পরবর্তী আইনি ব্যবস্থা নেয়া হবে বলেও জানান পুলিশের এ কর্মকর্তা।
এদিকে, বিকেল গড়িয়ে রাত হয়ে গেলেও নারায়ণগঞ্জ সদর হাসপাতালে নিহতদের কোনো স্বজন যোগাযোগ করেছে বলে জানা যায়নি। নিহত তিনজনের কোনো আত্মীয়-স্বজন তাদের খোঁজে বা মরদেহ বুঝে নিতে আসেননি বলে জানিয়েছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ও পুলিশ।
পাবনায় চরমপন্থী দল সর্বহারা পার্টির সাবেক এক আঞ্চলিক নেতাকে গুলি করে হত্যা করেছে দুর্বৃত্তরা।
রোববার রাত ১১টার দিকে সদর উপজেলার গয়েশপুর ইউনিয়নের মানিকনগর বাজার মোড়ে এ ঘটনা ঘটে।
নিহত ৩৮ বছর বয়সী আব্দুর রাজ্জাক শেখ গয়েশপুর ইউনিয়নের হরিনারায়ণপুর গ্রামের মৃত আজিজুল শেখের ছেলে।
রাজ্জাক নিষিদ্ধ ঘোষিত চরমপন্থী সংগঠন সর্বহারা পার্টির আঞ্চলিক নেতা ছিলেন। ২০১৯ সালে পাবনা জেলা স্টেডিয়ামে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের কাছে অন্যান্য চরমপন্থীদের সঙ্গে আত্মসমর্পণ করেছিলেন তিনি।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, সন্ধ্যায় ইফতার করে তারাবির নামাজের পর চা খাওয়ার জন্য মানিকনগর বাজারে যান আব্দুর রাজ্জাক। এরপর ওখানকার একটি চায়ের দোকানে বসেছিলেন তিনি। এমন সময় দুটি মোটরসাইকেলে ৫-৬ জন মুখোশধারী যুবক এসে পরপর তিনটি গুলি করে পালিয়ে যায়। গুরুতর অবস্থায় স্থানীয়রা পাবনা জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
পূর্ব বিরোধের জেরে তাকে হত্যা করা হয়েছে বলে ধারণা করছে পুলিশ।
পাবনার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মাসুদ আলম বলেন, আব্দুর রাজ্জাক নিষিদ্ধ ঘোষিত চরমপন্থী সংগঠন সর্বহারা পার্টির নেতা ছিলেন। ২০১৯ সালে পাবনা জেলা স্টেডিয়ামে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামানের কাছে আত্মসমর্পণ করেছিলেন।
তিনি বলেন, ঘটনার পরপরই সেখানে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। মরদেহ উদ্ধার করে পাবনা জেনারেল হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। কে বা কারা তাকে হত্যা করেছে সেটি এখনো জানা সম্ভব হয়নি। বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে তদন্ত করা হচ্ছে।
আরও পড়ুন:
মন্তব্য