চট্টগ্রাম ও ফেনিতে বজ্রাঘাতে পাঁচজনের মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্যে আছে এক শিশুও।
দুই জেলাতেই রোববার সকালে ঝড়-বৃষ্টি চলাকালে এই ঘটনা ঘটে।
চট্টগ্রামের ফটিকছড়ি উপজেলার কাঞ্চননগর ইউনিয়নের ছমুরহাট এলাকায় সকাল ৮টার দিকে বজ্রাঘাতে মারা গেছেন ভানুমিত দাশ ও লাকি রানী দাশ। এ সময় আহত হয়েছেন মালতী দাশ ও শোভা রানী দাশ।
তাদের বাড়ি কাঞ্চননগর ইউনিয়নের মানিকপুর গ্রামে।
ছমুরহাট বাজার কমিটির সভাপতি মাওলানা আনিছুর রহমান জানান, ওই চারজন কৃষিশ্রমিক। সকালে ছমুরহাট বাজারের পাশে একটি জমিতে কাজ করছিলেন তারা। সে সময় হঠাৎ বজ্রপাত হলে তারা আহত হন। তাদের উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে চিকিৎসক ভানুমিত ও লাকিকে মৃত ঘোষণা করেন। বাকিদের চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে।
ফটিকছড়ি থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মোহাম্মদ ইলিয়াছ ফোনে নিউজবাংলাকে বলেন, ‘বজ্রপাতে দুই নারীর মৃত্যুর খবর পেয়েছি। এখন ঘটনাস্থলে আছি।’
উপজেলার জ্যৈষ্ঠপুরা পাহাড়ের গরজংগিয়া এলাকায় লেবু বাগানে কাজ করার সময় বজ্রাহত হন জাহাঙ্গীর। তাকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
ফেনীর সোনাগাজী উপজেলার বগাদানা ইউনিয়নের আলমপুরে সকাল সাড়ে ১০টার দিকে বজ্রাঘাতে এক শিশু ও এক কিশোরী মারা গেছে।
মৃতরা হলো ৬ বছর বয়সী আল আমিন ও ১৫ বছর বয়সী তামান্না আক্তার।
সোনাগাজী মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সাজেদুল ইসলাম জানান, সকালে উপজেলার আলমপুর গ্রামের আনু ফরাজি বাড়ির সোলেমানের মেয়ে তামান্না আক্তার ও বাহার উল্লার ছেলে আল আমিন বৃষ্টির সময় ঘর থেকে বের হয়। তখনই বজ্রপাত হলে তারা আহত হয়। স্বজনরা তাদের উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
ওসি জানান, কোনো অভিযোগ না থাকায় মরদেহ দুটি তাদের স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।
আরও পড়ুন:
মিয়ানমার থেকে ছোড়া গুলিতে কক্সবাজারের টেকনাফে ছেনুয়ারা বেগম (৩৫) নামে এক নারী গুলিবিদ্ধ হয়ে গুরুতর আহত হয়েছেন। শনিবার (২৫ অক্টোবর) সন্ধ্যা ৬টার কিছু আগে উপজেলার হোয়াইক্যং ইউনিয়নের সীমান্ত সংলগ্ন লম্বাবিল গ্রামের বাঘঘোনা এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
আহত ছেনুয়ারা বেগম স্থানীয় বাসিন্দা আক্তার হোসেনের স্ত্রী। পরিবার ও স্থানীয় সূত্র জানায়, পায়ে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় তাকে প্রথমে স্থানীয় স্বাস্থ্যকেন্দ্রে এবং পরে কক্সবাজার সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
ছেনুয়ারার স্বামী আক্তার হোসেন বলেন, “বাড়ি ফেরার পথে হঠাৎ আমার স্ত্রীর পায়ে গুলি লাগে। এখন সে কক্সবাজার সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।”
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শেখ এহেসান উদ্দিন। তিনি বলেন, “মিয়ানমার থেকে ছোড়া গুলিতে নারী আহত হওয়ার খবর পেয়েছি। বিজিবির সঙ্গে যোগাযোগ রাখা হচ্ছে। সীমান্ত এলাকায় জননিরাপত্তা নিশ্চিত করতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।”
এ ঘটনার সময় স্থানীয় একটি দোকানের ছাউনিতেও গুলি বিদ্ধ হওয়ার খবর পাওয়া গেছে।
স্থানীয়দের ভাষ্য, কয়েক দিন ধরে মিয়ানমারের ওপারে মংডু জেলার ঢেকুবনিয়া এলাকায় নিয়মিত গুলির শব্দ শোনা যাচ্ছে। ধারণা করা হচ্ছে, সেখানে মিয়ানমারের বিদ্রোহী গোষ্ঠী আরাকান আর্মি ও রোহিঙ্গা সংগঠনগুলোর মধ্যে সংঘর্ষ চলছে।
স্থানীয় শিক্ষক রুহুল আমিন বলেন, “সম্প্রতি ওপারে সংঘর্ষ বেড়েছে। আমরা সীমান্তের লোকজন আতঙ্কে আছি। প্রশাসন ও বিজিবির আরও কঠোর নজরদারি দরকার।”
বিজিবির একটি দায়িত্বশীল সূত্র জানিয়েছে, সীমান্তের ওপারে সংঘর্ষ ও গুলিবিনিময়ের ঘটনা ঘটছে এবং এ ঘটনায় বাংলাদেশের এক নারী আহত হয়েছেন। সীমান্তে নজরদারি বাড়ানো হয়েছে এবং অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতি এড়াতে সার্বক্ষণিক তৎপরতা অব্যাহত রয়েছে।
রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন কমিশনের সামনে ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে। এ সময় শুভ (১৭) নামে এক যুবককে আটক করেছে পুলিশ। শনিবার দিবাগত রাত পৌনে ২টার দিকে বিষয়টি নিশ্চিত করেন তেজগাঁও বিভাগের উপপুলিশ কমিশনার মো. ইবনে মিজান।
শনিবার রাত সাড়ে ১১টার দিকে একটি মোটরসাইকেলে করে তিনজন ব্যক্তি নির্বাচন কমিশনের দিকে ককটেল ছুড়ে মারলে সেটি সঙ্গে সঙ্গে বিস্ফোরিত হয়। ঘটনা ঘিরে আতঙ্ক সৃষ্টি হলেও দ্রুত টহল দিচ্ছে পুলিশের উপস্থিতি।
পালানোর সময় পুলিশের টহল দল ধাওয়া করে শুভ নামে এক যুবককে হাতেনাতে আটক করে। আটককৃত যুবকের কাছ থেকে আরও বেশ কয়েকজনের নাম জানা গেছে। পুলিশ তাদের ধরার জন্য অভিযান চালাচ্ছে।
উপপুলিশ কমিশনার মো. ইবনে মিজান জানান, “নির্বাচন ঘনিয়ে আসায় কিছু দুষ্কৃতিকারী বোমা সদৃশ ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটাচ্ছে। এটি একটি বিচ্ছিন্ন ঘটনা, জনমনে আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই। আমরা বিষয়টি কঠোরভাবে দেখছি এবং পুলিশের বিভিন্ন ইউনিট দুষ্কৃতিকারীদের আইনের আওতায় আনার জন্য কাজ করছে।”
তিনি আরও বলেন, আটককৃত যুবকের কাছ থেকে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে অন্য সংশ্লিষ্টদেরও দ্রুত শনাক্ত এবং গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।
এ ধরনের ঘটনা নির্বাচনের আগে জনমনে নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে। তবে পুলিশ আশ্বস্ত করেছে, রাজধানীজুড়ে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে এবং সাধারণ মানুষ নিরাপদে তাদের দৈনন্দিন কাজকর্ম চালাতে পারবে।
ঢাকা শহরের বাতাসের মান আজ মারাত্মক অবনতিতে রয়েছে। আন্তর্জাতিক এয়ার কোয়ালিটি ইনডেক্স অনুযায়ী রাজধানীর বায়ুদূষণ আজ বিশ্বের শহরের মধ্যে চতুর্থ স্থানে অবস্থান করছে।
আজকের স্কোর ১৬৩, যা ‘অস্বাস্থ্যকর’ হিসেবে চিহ্নিত। বিশেষ করে মিরপুরের দক্ষিণ পল্লবী ও ইস্টার্ন হাউজিং এলাকায় বাতাসের মান ‘খুবই অস্বাস্থ্যকর’ পর্যায়ে পৌঁছেছে।
ঢাকার বায়ুদূষণের মূল কারণ হল পিএম ২.৫, অর্থাৎ বাতাসে অতিক্ষুদ্র ক্ষুদ্র কণার উপস্থিতি। আজ সকালে এই কণার পরিমাণ বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মানের চেয়ে প্রায় ১৪ গুণ বেশি রেকর্ড করা হয়েছে।
এছাড়া কল্যাণপুর (১৮৩), বেচারাম দেউড়ি (১৬৭), গুলশানের গ্রেস ইন্টারন্যাশনাল স্কুল (১৬৩), তেজগাঁওয়ের শান্তা ফোরাম (১৬২), মাদানি সরণি বেজ এজওয়াটার (১৬০) ও গোড়ান (১৫৭) এলাকায় বাতাসের মান ‘অস্বাস্থ্যকর’ পর্যায়ে রয়েছে।
বিশ্বের দূষিত শহরের তালিকায় পাকিস্তানের লাহোর শীর্ষে রয়েছে, যেখানে বাতাসের মান ‘দুর্যোগপূর্ণ’। ভারতের দিল্লি দ্বিতীয় স্থানে, যেখানে বায়ু ‘খুবই অস্বাস্থ্যকর’।
আইকিউএয়ারের মান অনুযায়ী, শূন্য থেকে ৫০ স্কোর হলে বাতাসের মান ভালো, ৫১–১০০ হলে মাঝারি বা সহনীয়। সংবেদনশীলদের জন্য অস্বাস্থ্যকর হিসেবে বিবেচিত হয় ১০১–১৫০ স্কোর, ১৫১–২০০ স্কোর অস্বাস্থ্যকর, ২০১–৩০০ খুবই অস্বাস্থ্যকর, এবং ৩০১-এর বেশি হলে পরিস্থিতি দুর্যোগপূর্ণ বলে গণ্য করা হয়।
কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামে তিন হাজার টাকার বিনিময়ে নিজের স্ত্রীকে বন্ধুদের কাছে দিয়ে দেয় এক ইটভাটা শ্রমিক। এরপর তিন দিন ধরে পালাক্রমে ধর্ষণের শিকার ওই নারী থানায় অভিযোগ দেয়। এতে পুলিশ তাৎক্ষণিক অভিযান চালিয়ে স্বামীসহ পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করেছে।
ঘটনাটি ঘটেছে উপজেলার কালিকাপুর ইউনিয়নের মিরশ্বানী এলাকার ইসলামিয়া ব্রিকস ফিল্ডের শ্রমিকদের থাকার ঘরে।
আটক ব্যক্তিরা হলো ভুক্তভোগীর স্বামী নোয়াখালী জেলার সুধারাম (সদর) থানার রামহরিতালুক গ্রামের আবুল কাশেমের ছেলে রাজু আহমেদ (২৬), একই এলাকার মৃত সিরাজ মাঝির ছেলে বেলাল হোসেন (৩৫), আবুল কাশেমের ছেলে মো. হৃদয় (২৫), চাঁন মিয়া মাঝির ছেলে মহিন উদ্দিন (২৬) ও মুন্সীতালুক গ্রামের শাহ আলমের ছেলে আবুল কালাম (৪৫)।
থানায় দায়ের করা মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, রাজুর সঙ্গে তার স্ত্রীর বিয়ে হয় ২০২৩ সালে। রাজু মাদকাসক্ত হওয়ায় বিয়ের পর থেকেই দাম্পত্য জীবনে অশান্তি বিরাজ করছিল। একপর্যায়ে স্ত্রী বাবার বাড়ি নোয়াখালীর মান্দারতলী গ্রামে ফিরে যান। চলতি মাসের শুরুতে সালিশ বৈঠকের পর রাজু আবারও স্ত্রীকে বাড়ি নিয়ে আসে।
গত ১৫ অক্টোবর রাজু কুমিল্লা শহরে থাকার কথা বলে স্ত্রীকে নিয়ে আসে চৌদ্দগ্রামের কালিকাপুর ইউনিয়নের মিরশ্বানীর ইসলামিয়া ব্রিকস ফিল্ডে। সেখানে গিয়ে সে স্ত্রীকে শ্রমিক বেলাল হোসেনের একটি ঘরে থাকার ব্যবস্থা করে দেয়।
ভুক্তভোগীর অভিযোগ, ১৬ অক্টোবর রাতে বেলাল হোসেন রাজুর উপস্থিতিতে তাকে প্রথমবার জোরপূর্বক ধর্ষণ করে। এরপর ১৮ অক্টোবর রাতে রাজুর দুই বন্ধু হৃদয় ও মহিন উদ্দিন একইভাবে পালাক্রমে ধর্ষণ করে। ২০ অক্টোবর রাতে হৃদয় আবার ধর্ষণের চেষ্টা করলে ভুক্তভোগী চিৎকার দিলে সে পালিয়ে যায়।
ঘটনার পর রাজু স্ত্রীকে হুমকি দেয়, বিষয়টি কাউকে জানালে তাকে হত্যা করে লাশ গুম করে ফেলবে। ভয়ে ভুক্তভোগী মুখ না খুললেও একই ইটভাটায় কাজ করা এক সহকর্মী বিষয়টি তার পিতাকে জানায়। খবর পেয়ে পিতা ঘটনাস্থলে গিয়ে মেয়েকে উদ্ধার করেন।
পরে শুক্রবার রাতে ভুক্তভোগী নারী চৌদ্দগ্রাম থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করলে পুলিশ বিশেষ অভিযান চালিয়ে রাজু ও তার চার সহযোগীকে গ্রেপ্তার করে।
চৌদ্দগ্রাম থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোহাম্মদ হিলাল উদ্দিন আহমেদ বলেন, “অভিযোগ পাওয়ার পরপরই পুলিশ অভিযান চালিয়ে আসামিদের গ্রেপ্তার করে। শনিবার বিকালে তাদের আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে প্রেরণ করা হয়েছে।”
পাবনার সদরে মালবাহী ট্রাকের চাপায় বিদ্যালয়ের দুই শিক্ষার্থী তিনজন নিহত হয়েছে। এ ঘটনায় আরও দুইজন গুরুতর আহত হয়েছে।
রোববার (২৬ অক্টোবর) সকাল সাড়ে ৭টার দিকে সদরের গয়েশপুর ইউনিয়নের বাঙ্গাবাড়িয়া এলাকায় ঢাকা-পাবনা মহাসড়কে এ ঘটনা ঘটে।
নিহতরা হলেন- পাবনা কলেজিয়েট স্কুল অ্যান্ড কলেজের চতুর্থ শ্রেণির ছাত্রী তাসমিয়া আক্তার, পঞ্চম শ্রেণির ছাত্র আবু তোহা ও ভ্যানচালক আকরাম হোসেন।
পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, স্কুল শিক্ষার্থীদের নিয়ে একটি ভ্যান পুষ্পপাড়া নামক স্থান থেকে জালালপুরের দিকে আসছিল। এ সময় বিপরীত দিক থেকে বাঁশবোঝায় একটি ট্রাক আসছিল। ঘটনাস্থলে পৌঁছালে আরেকটি গাড়িকে বাঁচাতে ব্রেক করতেই ট্রাকটি ভ্যানের ওপরে উল্টে পড়ে। এতে ঘটনাস্থলেই দুই শিক্ষার্থী ও ভ্যান চালক নিহত হোন। এঘটনায় আহত সদর উপজেলার মধুপুর গ্রামের আব্দুর রশিদের ছেলে সাদ হোসেনকে পাবনা জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
মাধপুর হাইওয়ে থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোস্তাফিজুর রহমান ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, ভ্যানের ড্রাইভারসহ তিনজন নিহত ও দুজন চায়ের দোকানে থাকা ব্যক্তি আহত হয়েছে। নিহতদের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। ট্রাক জব্দ করা হয়েছে। আইনগত ব্যবস্থা পক্রিয়াধীন।
ইসকনকে অবিলম্বে নিষিদ্ধ এবং দেশের বিভিন্ন জায়গায় মুসলিম তরুণীদের টার্গেট করে করে হিন্দু সঙ্ঘবদ্ধচক্র কর্তৃক পালাক্রমে ধর্ষণ ও গাজীপুরে মসজিদের ইমামকে গুম করার ঘটনার প্রতিবাদে শনিবার নেত্রকোনা বড়বাজার শাহী মসজিদের সামনে খেলাফত আন্দোলনের ঘণ্টাব্যাপী প্রতিবাদী মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিল অনুষ্ঠিত হয়। বড়বাজার শাহী মসজিদের সামনে শুরুতে মানববন্ধন কর্মসূচি পালিত হয় এরপর একটি বিক্ষোভ মিছিল শহরের গুরুত্বপূর্ণ রাস্তাগুলো প্রদক্ষিণ করে বারহাট্টা রোডের জামিয়া ইসলাম উলুম মাদ্রাসার সামনে গিয়ে শেষ হয়।
মানববন্ধন চলাকালে বক্তব্য রাখেন, খেলাফত আন্দোলনের কেন্দ্রীয় সহকারী মহাসচিব মাওলানা গাজী মুহাম্মাদ আব্দুর রহীম রুহী, ইসলাম ঐক্যজোটের জেলা সভাপতি মাওলানা শরিফ উদ্দিন ও সেক্রেটারি মাওলানা আবু সায়েম খান, জেলা হেফাজতে ইসলামের সদস্য সচিব মাওলানা মাজহারুল ইসলাম, খেলাফত আন্দোলন নেতা মাওলানা মুস্তাফা জেহাদী, মুফতি আরিফুজ্জামান, হাফেজ জাকির হোসেন, মুফতি মুসা শেখ, মাওলানা আতাউর রহমান কমলপুরী, মাওলানা শরিফুল ইসলাম, মাওলানা ইজহারুল ইসলাম, মাওলানা আব্দুল মোতালিব, হাফেজ সাকিব আল হাসান প্রমুখ।
এ সময় খেলাফত আন্দোলনের কেন্দ্রীয় সহকারী মহাসচিব গাজী মোহাম্মদ আব্দুর রহিম রহিম বলেন, ইসকন ধর্ম প্রচারের নামে দীর্ঘদিন যাবত বাংলাদেশে একের পর এক উস্কানিমূলক কর্মকাণ্ড পরিচালনা করে আসছে, দেশের বিভিন্ন জায়গায় সাম্প্রদায়িক উস্কানি দিয়ে শান্ত এই ভূমিকে বিদেশি ইন্দনে অশান্ত করে তোলার ফন্দি এঁকেছে। চট্টগ্রামে আদালত প্রাঙ্গণে প্রকাশ্যে অ্যাডভোকেট আলিফ হত্যাকাণ্ড তার জ্বলন্ত উদাহরণ। সাম্প্রতিক সময়ে গাজীপুরে মাদ্রাসার ১৩ বছরের এক ছাত্রীকে হিন্দু একটি চক্র পালাক্রমে ধর্ষণ করেছে। টঙ্গীতে একজন মসজিদের ইমামকে হত্যার উদ্দেশে গুম করে নিয়ে পঞ্চগড়ে ফেলে রেখেছে।
গো-খাদ্যের মূল্যবৃদ্ধি পাওয়ায় কুমিল্লায় লোকসানে খামারিরা। গেল ৬ বছরে বন্ধ হয়ে গেয়ে আড়াইশ খামার। যেসব বাড়িতে সকালের ব্যস্ত শুরু হতো গরুর জন্য ঘাস কাটা, গরুর গোছল করানো ও দুধ দোহন। সেসব বাড়ি ও খামারে এখন সুনশান নীরবতা। দুধ উৎপাদনে লোকসান গুণতে হয় বলে গৃহস্থ ও খামারিরা এখন অন্য পেশায় ঝুঁকছেন।
সরেজমিনে কুমিল্লা লালমাই উপজেলার দুধের গ্রাম হিসেবে পরিচিত ছিলোনিয়া গ্রামে ঘুরে দেখা যায়, অল্প কিছু বাড়িতে ব্যস্ত সময় পার করছেন খামারি ও গৃহস্থরা। অথচ বছর দশেক আগেও এটিসহ আশপাশের ১২টি গ্রামে ঘরে ঘরে এক সময় দুধ উৎপাদন হতো। গরু পালন, দুধ বিক্রি করে স্বাবলম্বী হয়েছেন কয়েক হাজার মানুষ। ছিলোনিয়া গ্রামে আড়াই শতাধিক পরিবার দুধ উৎপাদন করতেন। তবে গো-খাদ্যের মূল্য বৃদ্ধিতে লোকসানে পড়েন খামারিরা। এরপর অনেকে খামার বন্ধ করে দিয়েছেন। শুধু এ গ্রামেই ৬ বছরে আড়াইশ খামারের মধ্যে ২০০টি বন্ধ হয়ে গেছে। দুধের গ্রাম হিসেবে পরিচিত ছিলোনিয়া এখন অনেকটা নীরব-নিস্তব্ধ। এর পাশের গজারিয়া, হাপানিয়া, উৎসব পদুয়া, মাতাইনকোট, দোসারি চৌ, জামমুড়া, শাসনমুড়া, আটিটি, বাটোরা গ্রামেও এখন আর তেমন দুধ সংগ্রহ ও বিক্রির উৎসব হয় না।
স্থানীয়রা জানান, ছিলোনিয়া গ্রামে আগের মতো উৎসবের আমেজ নেই, অনেক খামার খালি পড়ে আছে।
ছিলোনিয়া গ্রামের মো. হোসেন, আবুল মিয়াসহ অন্তত ১০ জন খামারি জানান, করোনার আগে পর্যন্ত ভালোই চলছিল তাদের খামার। তারপরেই গো-খাদ্যর দাম বাড়তে থাকে। তবে সে তুলনায় বাড়েনি দুধের দাম। গড়ে ১ কেজি দানাদার খাবারের দাম ৭০-৮০ টাকা হলে ১ কেজি দুধের দাম হয় ৬০-৭০ টাকা। লোকসান গুণতে গুণতে বন্ধ হয়ে যায় ওই এলাকার অন্তত দুইশ দুগ্ধ উৎপাদন খামার।
বাংলাদেশ ডেইরি ফার্মার্স অ্যাসোসিয়েশনের কুমিল্লা জেলার সাধারণ সম্পাদক মো. আবদুল আজিজ জানান, ২০০৬ সালে ডেইরি ফার্ম শুরু হয় ছিলোনিয়া গ্রামে। ২০১৯ পর্যন্ত ভালো অবস্থা ছিল। ২০২০ সালে করোনার ধাক্কায় পিছিয়ে যায় দুগ্ধ উৎপাদন। গো-খাদ্যের চেয়ে দুধের দাম কম হওয়ায় ক্ষতির মুখে পড়েন খামারি ও গৃহস্থরা। ২৫০টি খামার থেকে এখন তা ৬০টিতে চলে এসেছে। সরকার দৃষ্টি না দিলে বাকি খামারিরাও হারিয়ে যাবেন।
কুমিল্লা প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের প্রশিক্ষণ কর্মকর্তা মোহাম্মদ ইসমাইল হোসেন জেলা জানান, খামার বন্ধ হয়ে যাওয়ায় দুধের উৎপাদন কমেছে কুমিল্লায়। কুমিল্লা জেলায় দুধের বার্ষিক চাহিদা ৫.৩৪ লাখ মেট্রিক টন। উৎপাদন ৫.০৩ লাখ মেট্রিক টন। উৎপাদনে বাড়াতে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে জেলা প্রাণিসম্পদ বিভাগ। খামারের বিদ্যুৎ বিল কৃষির আওতায় আনা এবং খাদ্যে ভর্তুকির বিষয়ে উপদেষ্টারা অবগত বলে জানান জেলা এই কর্মকর্তা।
মন্তব্য