ভারী বৃষ্টি মানেই যে চট্টগ্রামবাসীর ভোগান্তি, সেটি দেখা গেল আরও একবার।
রোববার দুপুর পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় ৭৫ মিলিমিটার বৃষ্টিতে নগরীর বেশিরভাগ এলাকাই তলিয়েছে পানিতে। কর্মদিবসে এই সমস্যায় ত্যক্ত-বিরক্ত নগরবাসী।
নগরের জিইসি, দুই নম্বর গেইট, প্রবর্তক মোড়, চকবাজার, বাকলিয়া, হালিশহর, আগ্রাবাদ সিডিএসহ বিভিন্ন এলাকায় কোথাও হাটু পর্যন্ত, কোথাও কোমড় পর্যন্ত পানি উঠেছে সড়কে। সকালে রাস্তায় গণপরিবহন কমে যাওয়ায় দুর্ভোগে পড়ে অফিসগামীরা।
রোববার সকাল ৯টা থেকে বেলা ১১টা পর্যন্ত বৃষ্টি হয় নগরীতে। এর পর দুপুর পর্যন্ত গুড়ি গুড়ি বৃষ্টি চলতে থাকে। পতেঙ্গা আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে, রোববার দুপুর ১২টা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় ৭৫ দশমিক ৪ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে।
নগরীর চকবাজার এলাকায় একটি বেসরকারি ব্যাংকে কাজ করেন সানজিদা মাহি। নিউজবাংলাকে তিনি বলেন, ‘একদিকে এমন বৃষ্টি, অন্যদিকে গাড়িও পাচ্ছি না। তাই বাধ্য হয়ে রিকশা নিয়ে যেতে হচ্ছে। কিন্তু মুরাদপুর-চকবাজার এলাকায় জলাবদ্ধতার কারণে ওরা ভাড়া চাইছে দ্বিগুনেরও বেশি।’
পতেঙ্গা আবহাওয়া দপ্তরের প্রধান আবহাওয়াবিদ শহিদুল ইসলাম বলেন, ‘বর্ষা না আসলেও এখন যে বৃষ্টিপাত হচ্ছে তা মূলত দক্ষিণ-পশ্চিম মৌসুমি বায়ুর প্রভাবে।’
আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে, সকাল বেলা ভাটা থাকায় নগরের জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়নি। তবে বিকেলে জোয়ার আসলে জলাবদ্ধতার সম্ভাবনা রয়েছে।
পতেঙ্গা আবহাওয়া অফিসের পূর্বাভাস অনুযায়ী, রোববার বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে চট্টগ্রামে দ্বিতীয় জোয়ার শুরু হবে। তখন জোয়ারের পানি বিভিন্ন খাল হয়ে নগরে ঢুকে পড়তে পারে। এতে করে নগরের নিচু এলাকা আগ্রাবাদ, সিডিএ আবাসিক, বহদ্দারহাট, জিইসিসহ বিভিন্ন এলাকায় জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হতে পারে।
তবে বৃষ্টি কমে গেলে নগরের ২ নম্বর গেট, মুরাদপুর, বহদ্দারহাট এলাকায় দুপুরে পানি নেমে গেছে। তবে নিচু এলাকা বাকলিয়া, হালিশহর ঈদগাহ, আগ্রাবাদ সিডিএসহ কয়েকটা এলাকা দুপুর পর্যন্ত পানিতে তলিয়ে আছে।
চট্টগ্রাম মহানগরের দীর্ঘদিনের সমস্যা জলাবদ্ধতা। ইতোমধ্যে চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (সিডিএ), চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন ও পানি উন্নয়ন বোর্ড জলাবদ্ধতা নিরসনে চারটি প্রকল্প নিয়েছে। এর মধ্যে সবচেয়ে বড় প্রকল্পটি সিডিএর। জলাবদ্ধতা নিরসনে খাল পুনর্খনন, সম্প্রসারণ, সংস্কার ও উন্নয়নে পাঁচ হাজার ৬১৬ কোটি ৪৯ লাখ ৯০ হাজার টাকার প্রকল্প নেয়া হয়েছে। এখনেও এর কাজ শেষ হয়নি।
প্রকল্প পরিচালক ও সিডিএর নির্বাহী প্রকৌশলী আহমদ মাঈনুদ্দিন বলেন, প্রকল্পের কাজ ৫৫ শতাংশ শেষ হয়েছে। এই বছর সুফল না মিললে ২০২২ সালে সুফল মিলবে। কাজের জন্য খালে বাঁধ দেয়াতে নগরের কিছু কিছু জায়গায় জলাবদ্ধতা হচ্ছে।
এদিকে কর্ণফুলী নদীর তীর কালুরঘাট সেতু থেকে চাক্তাই খাল পর্যন্ত সাড়ে আট কিলোমিটার সড়ক ও স্লুইস গেট নির্মাণের আরেকটি প্রকল্পও বাস্তবায়ন করছে সিডিএ। দুই হাজার ৩১০ কোটি টাকা ব্যয়ে বাস্তবায়িত প্রকল্পের অগ্রগতি ৪৮ শতাংশ।
প্রকল্প পরিচালক ও সিডিএর নির্বাহী প্রকৌশলী রাজীব দাশ বলেন, ‘আমার প্রকল্পের আওতায় ৮টি স্লুইস গেট নির্মাণ করা হবে। সব গেটের কাজ শুরু হয়েছে। তিনটি গেট নির্মাণ কাজ শেষ। চাক্তাই খালের মুখের গেটের কাজ শেষ হওয়াতে এবার খাতুনগঞ্জে জলাবদ্ধতা হচ্ছে না। বাকিগুলোর কাজ শেষ হলে সুফল মিলবে।’
চট্টগ্রাম মহানগরে নতুন করে একটি খাল খননের প্রকল্প নিয়েছে সিটি করপোরেশন। বারইপাড়া থেকে কর্ণফুলী নদী পর্যন্ত ২ দশমিক ৯ কিলোমিটার লম্বা ও ৬৫ ফুট চওড়া হবে এই খাল। এ প্রকল্পের ব্যয় ধরা হয়েছে এক হাজার ২৫৬ কোটি টাকা। তবে এর কাজ এখনও শুরু হয়নি।
চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের নির্বাহী প্রকৌশলী মোহাম্মদ জসীম উদ্দিন বলেন, ‘টাকার অভাবে আমরা ভূমি অধিগ্রহণ করতে পারছি না। সরকার টাকা বরাদ্দ দিচ্ছে না।’
বন্দর নগরীর জলাবদ্ধতা নিরসনে আরেকটি প্রকল্প নিয়েছে পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো)। এক হাজার ৬২০ কোটি ৭৩ লাখ টাকা ব্যয়ে এ প্রকল্পটিরও কাজ শুরু হয়নি।
পাউবো চট্টগ্রামের নির্বাহী প্রকৌশলী ত্রয়ন ত্রিপুরা বলেন, প্রকল্পের অবকাঠামো কাজে সহযোগিতা করবে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী। বর্ষার পর এর কাজ শুরু হবে।
পতেঙ্গা আবহাওয়া অফিসের আবহাওয়াবিদ ডক্টর শহিদুল ইসলাম বলেন, প্রাক মৌসুমী বায়ুর প্রভাবে চট্টগ্রামে বৃষ্টি হচ্ছে। সোমবার পর্যন্ত বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। রোববার আরও ভারী বর্ষণ হতে পারে। সোমবার বৃষ্টির মাত্রা কমতে পারে।
আরও পড়ুন:বুধবার, ১৭ সেপ্টেম্বর বিকেলে এই সহায়তা প্রদান করা হয়। প্রতিটি পরিবারকে চাল, ডাল, তেল, লবণ, চিনি এবং অন্যান্য নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী দেওয়া হয়।
উল্লেখ্য, গত ১০ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যায় পদ্মা নদীর প্রবল ভাঙনে উদয়নগর বিওপির দুই-তৃতীয়াংশ এলাকা, ফসলি জমি ও বহু বসতবাড়ি নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যায়। ১৫ সেপ্টেম্বর সকালে অবশিষ্ট অংশটিও নদীতে তলিয়ে যায়।
ঝুঁকি বিবেচনায় বিজিবির সদর দপ্তরের নির্দেশে ১৩, ১৪ ও ১৫ আগস্ট তারিখে উদয়নগর বিওপির অধিকাংশ স্থানান্তরযোগ্য সরঞ্জাম পাশ্ববর্তী চরচিলমারী বিওপিতে সরিয়ে নেওয়া হয়। পরবর্তীতে ১১ সেপ্টেম্বর ভোরে অবশিষ্ট অস্ত্র, গোলাবারুদ, অফিসিয়াল নথিপত্র, যানবাহন ও জনবল নৌকা, ট্রলার ও স্পিডবোটের মাধ্যমে নিরাপদে স্থানান্তর করা হয়।
বর্তমানে উদয়নগর বিওপির সকল সদস্য ও গুরুত্বপূর্ণ কন্ট্রোল আইটেম নিরাপদে রয়েছে বলে বিজিবি জানিয়েছে।
বিজিবি আরও জানায়, প্রাকৃতিক দুর্যোগের মধ্যেও সীমান্ত সুরক্ষা কার্যক্রম স্বাভাবিক রয়েছে এবং কোনো ধরনের বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হয়নি। বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) সবসময় মানবিক দৃষ্টিকোণ থেকে ক্ষতিগ্রস্তদের পাশে রয়েছে এবং ভবিষ্যতেও থাকবে।
সীমান্ত সুরক্ষার স্বার্থে উদয়নগর বিওপি সংলগ্ন এলাকায় অস্থায়ী ক্যাম্প স্থাপন করে টহল কার্যক্রম অব্যাহত রাখা হয়েছে। বড় ইঞ্জিনচালিত নৌকা, স্পিডবোট ও রেসকিউ বোটের মাধ্যমে টহল আরও জোরদার করা হয়েছে। এছাড়া, পূর্ববর্তী অবস্থানের নিকটবর্তী এলাকায় একটি নতুন ও উন্নত মানের বিওপি নির্মাণের প্রক্রিয়াও শুরু হয়েছে।
৪৭ বিজিবি ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মাহবুব মোর্শেদ রহমান জানান, “বিজিবি দেশের সীমান্ত সুরক্ষায় সবসময় অটল ও প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। প্রাকৃতিক দুর্যোগ অবকাঠামো নষ্ট করতে পারে, কিন্তু আমাদের মনোবল বা দায়িত্ব পালনের অঙ্গীকার কখনোই দুর্বল করতে পারবে না ইনশাআল্লাহ। সীমান্ত নিরাপত্তা, চোরাচালান প্রতিরোধ এবং জনগণের স্বার্থে বিজিবি আগের মতোই নিরলসভাবে কাজ করে যাবে।”
সপ্তাহের সবচেয়ে ব্যস্ত দিন বৃহস্পতিবার। রাজধানী ঢাকার রাস্তায় আজ নামছে সাতটি রাজনৈতিক দল। একই দাবিতে ঘোষিত এই সমাবেশ ও বিক্ষোভে বিকেল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত শহরের বিভিন্ন এলাকায় ব্যাপক যানজটের শঙ্কা তৈরি হয়েছে।
আগামীকাল শুক্রবার অনুষ্ঠিত হবে বিসিএস প্রিলিমিনারি পরীক্ষা। শুধু ঢাকাতেই কয়েক লাখ পরীক্ষার্থী ইতোমধ্যে অবস্থান নিচ্ছেন। তাদের সঙ্গে আজকের রাজনৈতিক কর্মসূচি মিলিয়ে রাজধানীর সড়কগুলোতে চরম ভোগান্তির আশঙ্কা করছে সাধারণ মানুষ ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী।
কোন এলাকায় কর্মসূচি
জানা যায়, জামায়াতে ইসলামী, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ, খেলাফত আন্দোলন, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস (মামুনুল হক), খেলাফত মজলিস (ড. আহমদ আবদুল কাদের), নেজামে ইসলাম পার্টি ও জাতীয় গণতান্ত্রিক পার্টি (জাগপা)—এই সাত দল আজ ঢাকায় প্রথম দিনের সমাবেশ করছে।
বায়তুল মোকাররম, পল্টন, প্রেসক্লাব, বিজয়নগর, কাকরাইল, নাইটিঙ্গেল ও শাহবাগ এলাকায় এসব সমাবেশ ও মিছিল অনুষ্ঠিত হবে। দুপুর থেকে রাত পর্যন্ত চলবে কর্মসূচি।
জামায়াতে ইসলামী: বিকেল সাড়ে ৪টায় দক্ষিণ গেটে সমাবেশ; এরপর পল্টন, বিজয়নগর, কাকরাইল হয়ে শাহবাগে মিছিল।
ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ: জোহরের পর বায়তুল মোকাররমের উত্তর গেটে সমাবেশ; প্রেসক্লাব হয়ে পল্টন মোড়ে কর্মসূচির সমাপ্তি।
বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস (মামুনুল হক): আসরের পর সমাবেশ; এরপর পল্টন–বিজয়নগর–কাকরাইল–নাইটিঙ্গেল পর্যন্ত মিছিল।
খেলাফত আন্দোলন: প্রেসক্লাবের সামনে বিকাল ৩টায় সমাবেশ; এরপর মিছিল নিয়ে বায়তুল মোকাররম।
জাগপা: বিকেল সাড়ে ৪টায় বিজয়নগরে সমাবেশ; মিছিল নিয়ে প্রেসক্লাব এবং আবারও বিজয়নগরে ফেরা।
নেজামে ইসলাম: বিকেল ৫টায় প্রেসক্লাবে সমাবেশ।
অন্য দলগুলোও পল্টন–গুলিস্তান–প্রেসক্লাব ও শাহবাগ ঘিরে অবস্থান নেবে।
যানজট ও জনভোগান্তি
রাজধানীর ব্যস্ততম এলাকায় কর্মসূচি হওয়ায় অফিসগামী ও ফেরত কর্মচারীরা ভোগান্তিতে পড়বেন। মতিঝিলের ব্যাংকপাড়া, সচিবালয়ের কর্মকর্তা, গুলিস্তান ও শাহবাগ হয়ে যাতায়াতকারীরা বিকল্প রাস্তায় চাপ সৃষ্টি করবেন।
শাহবাগ বন্ধ হয়ে গেলে নিউমার্কেট, ধানমন্ডি, কারওয়ান বাজার, বাংলামোটরসহ আশপাশের এলাকায়ও অচলাবস্থা দেখা দিতে পারে। সবচেয়ে বিপাকে পড়বে হাসপাতালগামী রোগীরা। ঢাকা মেডিকেল, বারডেম, বিএসএমএমইউ, ল্যাবএইডসহ একাধিক হাসপাতালে রোগী আনা–নেওয়া ব্যাহত হতে পারে।
পুলিশের সতর্কতা
ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) ট্রাফিক বিভাগের উপ–কমিশনার মো. রফিকুল ইসলাম জানান, ট্রাফিক পুলিশ যানবাহন নিয়ন্ত্রণে রাখতে সর্বোচ্চ চেষ্টা করছে। তবে রাজনৈতিক সমাবেশ ও মিছিল শুরু হলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখা কঠিন হয়ে পড়ে।
তিনি বলেন, “ঢাকা এমনিতেই ব্যস্ত শহর। যেকোনো রাস্তায় কর্মসূচি মানেই জনদুর্ভোগ। এতে সময়ের অপচয়, আর্থিক ক্ষতি, এমনকি জরুরি রোগী পরিবহনও ব্যাহত হয়।” রাজনৈতিক দলগুলোকে জনদুর্ভোগ এড়াতে বিকল্প কর্মসূচি নিতে অনুরোধ করা হলেও বড় দলগুলোর কর্মসূচি ঠেকানো সম্ভব হয় না বলেও জানান তিনি।
জুলাই জাতীয় সনদের সংবিধান সম্পর্কিত প্রস্তাবগুলো সংবিধান আদেশের মাধ্যমে বাস্তবায়নের চূড়ান্ত সুপারিশ দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা। আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনের দিন গণভোটের মাধ্যমে জনগণের বৈধতা নেওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন তারা।
গতকাল বুধবার ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে জুলাই সনদ বাস্তবায়ন পদ্ধতির উপায় নির্ধারণে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে হওয়া তৃতীয় ধাপের সংলাপের তৃতীয় দিনে এটি উত্থাপন করে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন।
কমিশন গত রোববার বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে বৈঠক করে। সেখানে তারা জুলাই ঘোষণাপত্রের ২২ ধারা অনুযায়ী সংবিধান আদেশের মাধ্যমে জুলাই সনদের সংবিধান সম্পর্কিত বিষয়গুলো বাস্তবায়ন করতে বলে।
বিশেষজ্ঞদের প্রস্তাবে বলা হয়েছে, অন্তর্বর্তীকালীন সরকার জুলাই সনদ ২০২৫ এ মূল সংস্কারগুলো অন্তর্ভুক্ত করে জুলাই ঘোষণাপত্রের ২২ অনুচ্ছেদের ক্ষমতাবলে একটি ‘সংবিধান আদেশ’ (কনস্টিটিউশনাল অর্ডার) জারি করতে পারে। ওই সংবিধান আদেশ তাৎক্ষণিকভাবে কার্যকর হবে।
এ বিষয়ে বিশেষজ্ঞরা আরও বলেন, সংবিধান আদেশকে একটি গণভোটে উপস্থাপন করা যেতে পারে, যা আগামী সাধারণ নির্বাচনের একই দিনে অনুষ্ঠিত হবে। সংবিধান আদেশে গণভোটের বিধানও অন্তর্ভুক্ত করা যেতে পারে। যদি সংবিধান আদেশ জনগণের অনুমোদন পায় গণভোটের মাধ্যমে, তবে তা প্রণয়নের তারিখ থেকেই বৈধ বলে গণ্য হবে।
উল্লেখ্য, বিশেষজ্ঞ প্যানেল একাধিক বৈঠকে বিভিন্ন ধরনের বিকল্প বিবেচনা করে প্রাথমিক পর্যায়ে পাঁচ পদ্ধতিতে বাস্তবায়নের জন্যে সুপারিশ করে। এগুলো হচ্ছে: অধ্যাদেশ, নির্বাহী আদেশ, গণভোট, বিশেষ সাংবিধানিক আদেশ এবং ১০৬ অনুচ্ছেদের মাধ্যমে সুপ্রিম কোর্টের মতামত চাওয়া।
পরবর্তীতে আরও বিস্তারিত আলোচনার পরিপ্রেক্ষিতে ‘জুলাই জাতীয় সনদ ২০২৫-এ অন্তর্ভুক্ত হওয়া বিষয়গুলো (যার মধ্যে ভিন্নমত বা নোট অব ডিসেন্ট আছে) সেগুলো চারভাবে বাস্তবায়নের জন্যে পরামর্শ দিয়েছেন আলোচকরা। এগুলো হচ্ছে: অধ্যাদেশ, নির্বাহী আদেশ, গণভোট এবং বিশেষ সাংবিধানিক আদেশ।
এক মাসের মধ্যেই বাস্তবায়ন শুরুর আশা আলী রীয়াজের
এক মাসের মধ্যে জুলাই সনদ প্রকাশের পাশাপাশি বাস্তবায়ন প্রক্রিয়ায় শুরু করার আশা প্রকাশ করেছেন জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহসভাপতি আলী রীয়াজ। গতকাল বুধবার দুপুরে ফরেন সার্ভিস একাডেমির মিলনায়তনে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে বৈঠকের স্বাগত বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
আলী রীয়াজ বলেন, ‘কমিশনের মেয়াদ এক মাস বৃদ্ধি করা হয়েছে। আমরা কোনো অবস্থাতেই এক মাস সময় নিয়ে এই আলোচনা অব্যাহত রাখতে উৎসাহী নই। আমরা মনে করি না যে আগামী এক মাস ধরে এ বিষয়ে আমাদের আলোচনা করতে হবে। আমরা খুব দ্রুত একটা ঐকমত্যের জায়গায় উপনীত হতে পারব।’
১৫ ফেব্রুয়ারি থেকে কাজ শুরু করা এ কমিশনের মেয়াদ ছিল ১৫ অগাস্ট পর্যন্ত। এরপর প্রথমবার এক মাস সময় বাড়িয়ে ১৫ সেপ্টেম্বর করা হয়। গত সোমবার দ্বিতীয় দফা মেয়াদ বাড়ানো হয় আরও এক মাস।
সময় বাড়ানোর কারণ ব্যাখ্যা করে তিনি বলেন, ‘যেকোনো কার্যালয় যদি প্রায় এক বছর ধরে অব্যাহত থাকে, সেটা গুটিয়ে তুলতেও খানিকটা সময় লাগে। আমরা যেন মেয়াদের মধ্যেই সেটা গুটিয়ে তুলতে পারি, সেটাও সরকারের পক্ষ থেকে বিবেচনা করা হয়েছে। সেই পরিস্থিতিতেই আমরা এখানে আজকে (বুধবার) উপস্থিত হয়েছি।’
এতদিনের আলোচনায় রাজনৈতিক দলগুলো মোট ৮৪টি সংস্কার প্রস্তাবের বিষয়ে (নোট অব ডিসেন্টসহ) একমত হলেও বাস্তবায়ন প্রক্রিয়া নিয়ে স্পষ্ট মতবিরোধ রয়েছে রয়েছে এনসিপি, জামায়াত এবং বিএনপির মধ্যে।
চলতি বছর জুন থেকে আগস্ট পর্যন্ত বাংলাদেশসহ বিশ্বের বহু দেশে অস্বাভাবিক তাপপ্রবাহে কোটি কোটি মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এর মধ্যে বাংলাদেশ অন্যতম ক্ষতিগ্রস্ত দেশ। শুধু বাংলাদেশেই ৬ কোটি মানুষ (৫৭ মিলিয়ন) এক মাসেরও বেশি সময় ধরে ‘ঝুঁকিপূর্ণ তাপমাত্রার মুখোমুখি হয়েছে। গতকাল বুধবার আন্তর্জাতিক গবেষণা সংস্থা ক্লাইমেট সেন্ট্রালের প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে এ তথ্য ওঠে এসেছে।
প্রতিবেদন অনুযায়ী, জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে বাংলাদেশে ৩০ মিলিয়ন মানুষ অতিরিক্ত ৩০ দিন পর্যন্ত চরম গরম সহ্য করেছেন। বিশ্বব্যাপী ‘ঝুঁকিপূর্ণ তাপমাত্রায় ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকায় বাংলাদেশ রয়েছে দশম স্থানে।
রাজধানী ঢাকা বিশ্বের মেগাসিটিগুলোর মধ্যে দশম স্থানে, যেখানে ৫২ দিন তাপমাত্রা জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে দ্বিগুণ হারে সম্ভাব্য হয়ে উঠেছে। এর মধ্যে ২৩ দিন ছিল স্বাস্থ্য ঝুঁকিপূর্ণ, যার মধ্যে ১৫ দিন সরাসরি জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে।
ঢাকায় ৫২ দিন তাপমাত্রা দ্বিগুণ সম্ভাবনাময়, ২৩ দিন ঝুঁকিপূর্ণ গরম, যার ১৫ দিন জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে। চট্টগ্রামে দেশে সর্বোচ্চ ৫৯ দিন জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব (CSI 2+) দেখা গেছে। খুলনা, রাজশাহী ও গাজীপুরে প্রত্যেক শহরেই দ্বিঅঙ্কের সংখ্যায় ঝুঁকিপূর্ণ গরমের দিন বৃদ্ধি পেয়েছে।
এই গ্রীষ্মে প্রতিদিন বিশ্বের প্রতি ৫ জন মানুষের একজন, অর্থাৎ ১৮০ কোটির বেশি মানুষ, তাপপ্রবাহে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। এর মধ্যে প্রায় ৯৫৫ মিলিয়ন মানুষ ৩০ দিনের বেশি সময় ঝুঁকিপূর্ণ তাপমাত্রা সহ্য করেছেন।
মোট ১৮৩টি দেশে কমপক্ষে এক মাসের মতো সময় ধরে এমন তাপমাত্রা দেখা গেছে, যা জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে দ্বিগুণ সম্ভাব্য ছিল। ইউরোপ ও এশিয়ায় এই গরম ছিল সবচেয়ে অস্বাভাবিক।
ক্লাইমেট সেন্ট্রালের ভাইস প্রেসিডেন্ট ড. ক্রিস্টিনা ডাহল বলেন, ‘এই বিশ্লেষণ প্রমাণ করে জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব এখনই দেখা দিচ্ছে। এটি ভবিষ্যতের হুমকি নয়, বর্তমান বাস্তবতা।’
তিনি আরও বলেন, ‘অস্বাভাবিক গরম এখনই মানুষের স্বাস্থ্য, অর্থনীতি ও পরিবেশকে ক্ষতিগ্রস্ত করছে। কার্বন নিঃসরণ কমাতে বিলম্ব হলে ক্ষতির মাত্রা আরও বাড়বে।’
রিপোর্টে তাপপ্রবাহের বৈশ্বিক অবস্থা সম্পর্কে বলা হয়েছে, এই মৌসুমে প্রতিদিন বিশ্বের প্রতি ৫ জন মানুষের ১ জন বা অন্তত ১.৮ বিলিয়ন মানুষ- জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে তীব্র প্রভাবিত তাপমাত্রার মুখোমুখি হয়েছে। প্রায় ৯৫৫ মিলিয়ন মানুষ অতিরিক্ত ৩০ দিনেরও বেশি ঝুঁকিপূর্ণ গরম সহ্য করেছে।
মোট ১৮৩টি দেশের মানুষ অন্তত ৩০ দিন এমন তাপমাত্রার সম্মুখীন হয়েছে, যা জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে অন্তত দ্বিগুণ সম্ভাবনাময় ছিল। ইউরোপ ও এশিয়ায় সবচেয়ে অস্বাভাবিক গরম রেকর্ড করা হয়েছে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা না থাকলে এবং তাপপ্রবাহের মতো জলবায়ু সংকটে প্রস্তুতি না থাকলে ভবিষ্যতে জনস্বাস্থ্য, কৃষি ও অর্থনীতি আরও বিপর্যয়ের মুখে পড়বে।
তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা শিক্ষার্থীদের ‘রাজাকারের বাচ্চা’ এবং ‘রাজাকারের নাতিপুতি’ আখ্যায়িত করায় সারাদেশের ছাত্রছাত্রীরা অপমানিত বোধ করেছিলেন বলে জবানবন্দিতে উল্লেখ করেছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম।
জুলাই গণঅভ্যুত্থানের সময় সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের ঘটনায় শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে করা মামলায় ৪৭তম সাক্ষী হিসেবে নাহিদ ইসলাম গতকাল বুধবার তার জবানবন্দিতে এ কথা বলেন।
শেখ হাসিনার পাশাপাশি এ মামলার অপর দুই আসামি হলেন- সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান ও সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন। এর মধ্যে চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন দোষ স্বীকার করে এ মামলায় ‘অ্যাপ্রুভার’ (রাজসাক্ষী) হয়ে জবানবন্দি দিয়েছেন। গতকাল বুধবার তাকে ট্রাইব্যুনালে হাজির করা হয়।
এ মামলায় আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ এ গতকাল বুধবার আংশিক জবানবন্দি দেন নাহিদ ইসলাম। আজ বৃহস্পতিবার আবার তার জবানবন্দি দেওয়ার কথা রয়েছে।
জবানবন্দিতে নাহিদ ইসলাম বলেন, গত বছরের ১৪ জুলাই শেখ হাসিনা একটি সংবাদ সম্মেলনে আন্দোলনকারী ছাত্রদের রাজাকারের বাচ্চা এবং রাজাকারের নাতিপুতি অভিহিত করে কোটাপ্রথার পক্ষে অবস্থান নেন। মূলত এই বক্তব্যের মাধ্যমে আন্দোলনকারীদের ওপর আক্রমণের একটি বৈধতা প্রদান করা হয়। কারণ, তারা সব সময় দেখেছেন, সরকারের বিরুদ্ধে কোনো ন্যায্য আন্দোলন করা হলে তাদের রাজাকারের বাচ্চা আখ্যা দিয়ে আন্দোলনের ন্যায্যতা নস্যাৎ করা হতো। ছাত্রদের রাজাকারের বাচ্চা এবং রাজাকারের নাতিপুতি আখ্যায়িত করায় সারাদেশের ছাত্রছাত্রীরা অপমানিত বোধ করেন। সেই রাতেই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ দেশের অন্যান্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ছাত্র-ছাত্রীরা প্রতিবাদমুখর হয়ে রাস্তায় নেমে আসেন।
গত বছরের ১৭ জুলাই ডিজিএফআই তাদের কর্মসূচি প্রত্যাহার করার এবং সরকারের সঙ্গে সংলাপের জন্য চাপ দেয় বলেও উল্লেখ করেন নাহিদ ইসলাম। তিনি বলেন, তাদের বিরুদ্ধে শাহবাগ থানায় মামলা দেওয়া হয়। সারাদেশেই এ ধরনের বাধা সৃষ্টি করা হয়েছিল। তবু সব বাধা অতিক্রম করে তারা আন্দোলন অব্যাহত রাখেন।
নাহিদ ইসলাম বলেন, গত বছরের ১৭ জুলাই রাতে দেশব্যাপী ‘কমপ্লিট শাটডাউন’ কর্মসূচি ঘোষণা করেন। তাদের ঘোষণার পরিপ্রেক্ষিতে পরদিন (১৮ জুলাই) সারা দেশের সর্বস্তরের ছাত্র-জনতা রাস্তায় নেমে আসেন। বিশেষত প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয় ও মাদ্রাসার ছাত্র-ছাত্রীরা সেদিন রাজপথে ব্যাপক প্রতিরোধ গড়ে তোলেন। আন্দোলনের নেতাদের জীবন হুমকির মুখে পড়ে এবং গ্রেপ্তার এড়াতে তারা আত্মগোপনে চলে যান। সেদিন সারাদেশে অনেক ছাত্র-জনতা আহত ও নিহত হন। সেদিন রাতে সারাদেশে ইন্টারনেট বন্ধ করে দেওয়া হয়। একইভাবে ১৯ জুলাই পুলিশ এবং আওয়ামী সন্ত্রাসীরা আন্দোলনরত ছাত্র-জনতার ওপর নির্বিচার গুলি চালায়। এতে অনেক ছাত্র-জনতা আহত ও নিহত হন।
জবানবন্দিতে নাহিদ ইসলাম বলেন, ১৯ জুলাই তারা বোঝতে পারেন যে সরকার ইলেকট্রনিক মিডিয়াকে সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণে নিয়ে গেছে। তাদের আন্দোলন এবং হতাহতদের কোনো খবর কোনো মিডিয়ায় প্রচার হচ্ছিল না।
ভারতের রাজধানী নয়াদিল্লির তীব্র বায়ুদূষণের কারণে শহরের অন্যতম ঐতিহাসিক মোগল স্থাপনা লালকেল্লার দেওয়ালে ‘কালো আবরণ’ তৈরি হয়েছে বলে এক গবেষণায় ওঠে এসেছে।
গবেষকরা জানিয়েছেন, লাল বেলেপাথরের এই স্থাপনার দেওয়ালে রাসায়নিক বিক্রিয়ার ফলে জমে থাকা এই স্তরের পুরুত্ব ০.০৫ মিলিমিটার থেকে ০.৫ মিলিমিটার পর্যন্ত। দ্রুত ব্যবস্থা না নিলে এটি স্থাপনার সূক্ষ্ম নকশা ও খোদাইয়ের ক্ষতি করতে পারে। এটি ১৭০০ শতকের এই স্থাপনার ওপর বায়ুদূষণের প্রভাব নিয়ে করা প্রথম পূর্ণাঙ্গ গবেষণা।
বিশ্বের সবচেয়ে দূষিত শহরগুলোর মধ্যে অন্যতম দিল্লি এর বায়ু মানের অবনতির জন্য প্রায়ই খবরে আসে, বিশেষ করে শীতকালে। সংরক্ষণবিদরা আগেই সতর্ক করেছিলেন, দূষণ রাজধানীসহ কয়েকটি রাজ্যের ঐতিহ্যবাহী স্থাপনাগুলোর ক্ষতি করছে।
২০১৮ সালে ভারতের সুপ্রিম কোর্ট বলেছিলেন, সাদা মার্বেল পাথরে নির্মিত বিখ্যাত ১৭০০ শতকের সমাধি তাজমহল বায়ু ও পানিদূষণের কারণে হলদে এবং সবুজাভ-বাদামি হয়ে গেছে। তারা উত্তর প্রদেশ সরকারকে সংরক্ষণমূলক ব্যবস্থা নিতে বলেছিলেন।
লালকেল্লা নিয়ে গবেষণাটি পিয়ার-রিভিউ করা ওপেন অ্যাক্সেস বৈজ্ঞানিক জার্নাল হেরিটেজে ২০২৪ সালের জুনে প্রকাশিত হয়। এটি ২০২১ থেকে ২০২৩ সালের মধ্যে ভারত ও ইতালির গবেষকরা পরিচালনা করেন।
মোগল সম্রাট শাহজাহান নির্মিত লালকেল্লা দিল্লির অন্যতম ঐতিহ্যবাহী স্থাপনা ও জনপ্রিয় পর্যটনকেন্দ্র। ব্রিটেন থেকে স্বাধীনতার এক দিন পর ১৯৪৭ সালের ১৬ আগস্ট ভারতের প্রথম প্রধানমন্ত্রী জওয়াহেরলাল নেহরু এখান থেকে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করেন।
এর পর থেকে স্বাধীনতা দিবসে প্রধানমন্ত্রীরা কেল্লার প্রাচীর থেকে ভাষণ দিয়ে আসছেন।
গবেষকরা ২০২১ থেকে ২০২৩ সাল পর্যন্ত দিল্লির বায়ুমানের তথ্য বিশ্লেষণ করেন। পরে কেল্লার বিভিন্ন দেওয়াল থেকে কালো আবরণ সরিয়ে তার রাসায়নিক গঠন পরীক্ষা করেন। তারা দেখতে পান, বাতাসে থাকা ধুলিকণা ও অন্যান্য দূষক কেল্লার দেওয়ালে কালো স্তর তৈরি করেছে এবং এর গম্বুজ, খিলান ও সূক্ষ্ম পাথরের খোদাইসহ স্থাপত্যের নানা অংশে ক্ষতি করেছে। তারা দেওয়ালে ফোস্কা ও খোসা ওঠার প্রমাণও পেয়েছেন।
গবেষণাটি বলছে, ‘পিএম ২.৫ ও পিএম ১০ (ধুলিকণার ধরন) সাধারণত পরিবেশে থাকা পাথরের পৃষ্ঠে ধুলিকণা জমার প্রধান কারণ হিসেবে বিবেচিত হয়। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে এরা জমে দৃশ্যমান কালচে রং ধারণ করে।’
গবেষকরা কেল্লা রক্ষায় সময়মতো সংরক্ষণ কৌশল গ্রহণের সুপারিশ করেছেন। তাদের মতে, ‘কালো আবরণের সৃষ্টি একটি ধীরে ধীরে অগ্রসরমান প্রক্রিয়া, যা প্রথমে পাতলা কালো স্তর হিসেবে শুরু হয়- প্রাথমিক পর্যায়ে এটি সরানো সম্ভব।’
তারা আরও পরামর্শ দিয়েছেন, পাথরের সুরক্ষামূলক আবরণ বা সিল্যান্ট প্রয়োগ করে সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় এই কালো স্তর গঠনের গতি কমানো বা প্রতিরোধ করা যেতে পারে।
সূত্র: বিবিসি
আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তার পরিবারের সদস্যরা ভোট দিতে পারবেন না। গতকাল বুধবার নির্বাচন কমিশনের (ইসি) সচিব আখতার আহমেদ বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
গত এপ্রিলে হাসিনাসহ শেখ পরিবারের ১০ সদস্যের জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) ‘লক’ করে নির্বাচন কমিশনের (ইসি) অধীন জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন অনুবিভাগ। যার কারণে তারা প্রবাসে বসে ভোট দিতে পারবেন না।
ইসি সচিব বলেন, ‘যাদের এনআইডি লক আছে তারা কেউই প্রবাসে বসে ভোট দিতে পারবেন না।’
এনআইডি লক হওয়া শেখ পরিবারের সদস্যরা হলেন- শেখ হাসিনা, সজীব আহমেদ ওয়াজেদ, সায়মা ওয়াজেদ, রেহানা সিদ্দিক (শেখ রেহানা), টিউলিপ রিজওয়ানা সিদ্দিক, আজমিনা সিদ্দিক, শাহিন সিদ্দিক, বুশরা সিদ্দিক, রাদওয়ান মুজিব সিদ্দিক ও তারিক আহমেদ সিদ্দিক।
ইসি সচিব বলেন, ‘সংসদ নির্বাচনে ইন কান্ট্রি ও আউট অব কান্ট্রি ভোট হবে। যারা প্রবাসে আছেন, তারা অনলাইনে নিবন্ধন করবেন।
এ জন্য সিস্টেম ডেভেলপ করা হচ্ছে।’ শেখ হাসিনা ভোট দিতে পারবেন কি না, জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘তার তো এনআইডি লক আছে। যাদের এনআইডি লক আছে তারা কেউই ভোট দিতে পারবেন না।’
মামলার কারণে বা অন্য কোনো কারণে পালিয়ে বা অন্যভাবে বিদেশে অবস্থান করছেন, তাদের ভোট দিতে কোনো অসুবিধা নেই। তবে তাদের এনআইডি আনলক অবস্থায় থাকতে হবে।
তিনি আরও বলেন, ‘প্রবাসে বসে ভোট দিতে হলে অনলাইনে নিবন্ধন করতে হবে এনআইডি নম্বর দিয়ে। এ ক্ষেত্রে পাসপোর্ট নয়, এনআইডি বাধ্যতামূলক হবে। তাই যার এনআইডি লক থাকবে তিনি কী করে অনলাইনে নিবন্ধন করবেন? তিনি তো পারবেন না। যারা এনআইডি দিয়ে নিবন্ধন করবেন তারাই কেবল এই সুযোগ পাবেন।’
গত বছরের ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানের মুখে দেশ ছেড়ে ভারতে পালিয়ে যান তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তার সরকারের মন্ত্রী-এমপিরা।
এছাড়া তার দল আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরাও অনেকে বিভিন্ন দেশে পালিয়েছেন।
মন্তব্য