চট্টগ্রামের লোহাগড়ায় মসজিদের ৪৫ লাখ টাকা আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে এক জামায়াত নেতার বিরুদ্ধে।
উপজেলার আমিরাবাদ ইউনিয়নের পশ্চিম আমিরাবাদের খৈয়ারখীল এলাকার পশ্চিম আমিরাবাদ জামে মসজিদ কমিটির সেক্রেটারি জামায়াত নেতা মাহমুদুল হক পিয়ারুর বিরুদ্ধে এ অভিযোগ করেন স্থানীয়রা।
লোহাগড়া উপজেলার পশ্চিম আমিরাবাদ কেন্দ্রীয় জামে মসজিদের নির্মাণকাজ চলছে। ভবনের দ্বিতীয় তলার ছাদ ঢালাই শেষ হয়েছে। বাকি আছে আর এক তলা। তবে অর্থ সংকটের জন্য রমজানের ঈদের পর থেকে কাজ বন্ধ আছে।
স্থানীয়দের অভিযোগ, মসজিদ নির্মাণের জন্য অনুদান সংগ্রহ করে বেশির ভাগই আত্মসাৎ করেছেন পিয়ারু।
পিয়ারু হজ এজেন্সিস অ্যাসোসিয়েশন অফ বাংলাদেশ (হাব) ও অ্যাসোসিয়েশন অব ট্রাভেল এজেন্সিস অব বাংলাদেশের (আটাব) চট্টগ্রাম মহানগরের সাধারণ সম্পাদক। তিনি জামায়াতের রাজনীতিতে জড়িত বলে নিউজবাংলাকে জানিয়েছেন।
মাহমুদুল হক পিয়ারু জামায়াতের কেন্দ্রীয় নেতা ও সাতকানিয়া-লোহাগাড়া আসনের সাবেক এমপি শাহাজাহান চৌধুরীর টাইগার ক্লাবের সক্রিয় সদস্য ছিলেন। ২০১৯ সালে আমিরাবাদ ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে জামায়াতের সমর্থনে চেয়ারম্যান পদে নির্বাচন করেন। তবে সেই নির্বাচনে তিনি জিততে পারেননি।
মসজিদের দাতা সদস্য স্থানীয় বাসিন্দা ফরিদুল ইসলাম নিউজবাংলাকে জানান, এলাকার মসজিদটি জরাজীর্ণ হয়ে যাওয়ায় পুনঃনির্মাণের প্রয়োজন হয়। তখন মাহমুদুল হক পিয়ারুকে এলাকার সবাই মিলে মসজিদ নির্মাণের উদ্যোগ নেয়ার অনুরোধ করেন। এরপর তিনি অনুদান সংগ্রহ করে মসজিদ নির্মাণ শুরু করে।
তবে এর মধ্যে এলাকার কাউকে না জানিয়ে নিজেকে সাধারণ সম্পাদক ও এলাকার আরেকজনকে সভাপতি করে নতুন একটি কমিটি করেন পিয়ারু। ওই কমিটির মাধ্যমেই চলে নির্মাণ কাজ।
ফরিদুল জানান, রোজার ঈদের দিন জুমার নামাজের সময় মসজিদের খতিবের মাধ্যমে পিয়ারু ঘোষণা করেন, এখন পর্যন্ত ৯০ লাখ টাকার অনুদান সংগ্রহ করা হয়েছে এবং তা মসজিদ নির্মাণে খরচও হয়ে গেছে।
এলাকাবাসী এ সময় হিসাব চাইলে তিনি কোনো হিসাব দেখাতে পারেননি। বিষয়টি সন্দেহজনক মনে হওয়ায় একজন প্রকৌশলীকে ভবন পর্যবেক্ষণে আনলে তিনি জানান, সর্বোচ্চ ৪৫ লাখ টাকার কাজ হয়েছে।
ফরিদ অভিযোগ করে বলেন, ‘মসজিদ ও মসজিদ সংলগ্ন মাদ্রাসা আমার পূর্বপুরুষ নিজেদের জমিতে প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। এরপর এই জমি তারা বংশধরদের নামে লিখে যান। সেই হিসেবে মসজিদ-মাদ্রাসার বর্তমান জমির মালিক আমরা, কিন্তু পিয়ারু ইদানীং বলে বেড়ায় আমরা মসজিদের কেউ না।
‘তা ছাড়া মসজিদের নতুন ভবন নির্মাণের সময় পুরোনো মসজিদের পেছনের আমার দখলীয় দেড় কড়া জায়গা চলে যায়। পরে আমাকে এই জমির লিখিত কাগজ দেয়ার কথা বললেও এখন সেটাও অস্বীকার করছে।’
ফরিদুল ইসলামের ভাতিজা মো. সেলিম নিউজবাংলাকে বলেন, ‘আমি মসজিদ কমিটির সহসভাপতি ছিলাম। এলাকায় প্রভাব বিস্তারের উদ্দেশ্যে আমাকেসহ পুরোনো কমিটির কয়েকজনকে বাদ দিয়ে পিয়ারু গোপনে নতুন কমিটি করেছে। সে বলে বেড়াচ্ছে আমরা নাকি মসজিদের কেউ না। তাই আমাদের মসজিদের নির্মাণকাজের হিসাব দেবে না।’
আবুল কালাম নামে দাতা পরিবারের আরেক সদস্য বলেন, ‘আমরা মসজিদ নির্মাণের হিসাব চাওয়ায় সে (পিয়ারু) ক্ষিপ্ত হয়ে নতুন সভাপতি হারুনকে দিয়ে আমাদের নামে মসজিদের রড, সিমেন্ট চুরির মিথ্যা মামলা করেছে। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা তদন্ত করে কিছু না পেয়ে ফিরে যান। এতে তারা লজ্জিত হয়ে মামলাটা তুলে নেন।’
পিয়ারুর বিরুদ্ধে মসজিদের নাম পরিবর্তনেরও অভিযোগ এনেছেন স্থানীয় বাসিন্দা অওরঙ্গজেব সাগর।
সাগর জানান, পিয়ারু কমিটিতে ঢোকার পর হঠাৎ মসজিদের নামও পরিবর্তন করে ফেলেছেন। আগে মসজিদের নাম ছিল পশ্চিম আমিরাবাদ কেন্দ্রীয় জামে মসজিদ। কিছুদিন আগে দেওয়ান আলী জামে সমজিদ নামে কয়েকটি ব্যানার টাঙানো হয়েছে।
সাগর বলেন, ‘কে এই দেওয়ান আলী আমরা জানি না, কোনোদিন নামও শুনিনি।’
মসজিদের অর্থ আত্মসাতের বিষয়ে আমিরাবাদ ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান এম এস ইউনুস বলেন, ‘এই বিষয়টি আমি লোকমুখে শুনেছি, কিন্তু কেউ আমার কাছে লিখিত অভিযোগ করেনি।
‘কিন্তু মাহমুদুল হক পিয়ারু নামের ওই ব্যক্তির বিরুদ্ধে ভিসা দেয়ার কথা বলে ১৭ লাখ টাকা আত্মসাতের অভিযোগ করেছে দুইজন। আমি তাকে কয়েক দফায় নোটিশ দেয়ার পরও তিনি হাজির না হওয়ায় ভুক্তভোগীরা মামলাটা আদালতে নিয়ে গেছে।’
তবে অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ অস্বীকার করেছেন পিয়ারু। তিনি বলেন, ‘এলাকার কয়েকটি পরিবার তার বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ করছে। তাদের ভোগদখলে থাকা জমির মসজিদ জরাজীর্ণ হয়ে যাওয়ায় ও মাদ্রাসার ছাত্র কমে যাওয়ায় এলাকার মানুষের সিদ্ধান্তে তাদের কমিটি থেকে বাদ দেয়া হয়েছে।’
তিনি দাবি করেন, ‘পার্শ্ববর্তী একটি রেল প্রকল্পে মসজিদের দুই কানি জমি পড়েছে। মাদ্রাসা কমিটি থেকে বাদ পড়া নূর হেলাল ওই জমি অধিগ্রহণের ১ কোটি ২৭ লাখ টাকা তুলে আত্মসাৎ করেছে। সে কথা এমপি ও ওসিকে জানানোয় তারা এখন আমার বিরুদ্ধে পাল্টা অভিযোগ করছে।’
এ অভিযোগের বিষয়ে হেলাল নিউজবাংলাকে বলেন, ‘আমি মসজিদ-মাদ্রাসার সাধারণ সম্পাদক ছিলাম। আমাকে না জানিয়ে পিয়ারু কমিটি করে নিজে দায়িত্ব নিয়েছেন। আমি উত্তরাধিকার সূত্রে রেল অধিগ্রহণের কিছু টাকা তুলেছি। তাদের টাকার ভাগ না দেয়ায় আত্মসাতের কথা বলছে। জায়গাটা মূলত আমাদের পরিবারের নামে ওয়াকফ করা।’
ওয়াকফ সম্পত্তির বিষয়টি মসজিদ কমিটির বর্তমান সভাপতি হারুনুর রশিদও জানিয়েছে।
তিনি বলেন, ‘আমার জানা মতে যে জমির কথা বলা হচ্ছে সেটা হেলালের পারিবারিক। মানে তার পূর্বপুরুষ ৫০ বছর আগে পরিবারের নামে ওয়াকফ করে গেছে। দানপত্রে লেখা আছে মসজিদের ব্যয় মিটিয়ে বাকি টাকা হেলালের পরিবার ভোগদখল করে খেতে পারবে। এ বিষয়ে কারো কোনো অভিযোগ নেই।’
মসজিদ নির্মাণের টাকা আত্মসাতের অভিযোগের বিষয়ে পিয়ারু বলেন, ‘ওরা যে হিসাব চাইতেছে ওদের কেন আমি হিসাব দিব? ওরা তো মসজিদের কেউ না, তাই আমি ওদের হিসাব দিতে বাধ্য না।’
তিনি দাবি করেন, মসজিদটি নির্মাণ করা হচ্ছে নিজেদের পারিবারিক অর্থায়নে। তবে কেউ অনুদান দিলে তাও সংগ্রহ করা হচ্ছে। আর এখন পর্যন্ত ঠিক কত টাকা খরচ হয়েছে তার হিসাব করা হয়নি।
তবে এর সঙ্গে ভিন্নমত রয়েছে মসজিদ কমিটির নতুন সভাপতি হারুনুর রশিদের। তিনি বলেন, ‘এটা আসলে ঠিক তাদের (পিয়ারু) পারিবারিক অর্থায়ন না। এলাকার মানুষ ও আরও কিছু দাতার অনুদানে মসজিদটি নির্মাণ করা হচ্ছে। শুধু ফুলকলির মালিকই দিয়েছেন প্রায় ১৫ লক্ষ টাকা।’
নাম পরিবর্তনের বিষয়ে পিয়ারু বলেন, ‘১৯৫১ সালে মসজিদ-মাদ্রাসার এই ১ কানি ১৭ গন্ডা জমি দেওয়ান আলী নামের এক ব্যক্তি মসজিদের জন্য দান করে গেছেন। তিনি ওয়াকফনামায় মসজিদটি তার নামে করার কথা উল্লেখ করেছেন। তাই মসজিদটি শুরু থেকেই এই নামে ছিল।’
মসজিদের খতিব দেলোয়ার হোসেন নিউজবাংলাকে বলেন, ‘ঈদের দিন জুমার খুতবায় মসজিদে আনুমানিক ৮০ থেকে ৯০ লাখ টাকা খরচ হয়েছে বলেছি ঠিক আছে। কিন্তু তা তো বিতর্কের জন্য বলিনি, মসজিদ নির্মাণের অর্থ সংগ্রহের জন্য বলেছি।
‘আর এটা আমাকে কেউ বলতেও বলেনি। দোকানে এলাকার মানুষের আলোচনা থেকে শুনে এটা বলেছি, যেন সবার অংশগ্রহণে মসজিদটির নির্মাণ কাজ দ্রুত শেষ হয়ে যায়।’
আরও পড়ুন:গাজীপুরের শ্রীপুরে বহুতল ভবনের ফ্ল্যাট থেকে এক দম্পতির মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। এ সময় টেবিলের ওপরে একটি চিরকুট পাওয়া যায়।
উপজেলার মুলাইদ গ্রামের ফারুক খানের বহুতল ভবনের নিচ তলার একটি ফ্ল্যাট থেকে শুক্রবার সকালে তাদের মরদেহ উদ্ধার করা হয়।
প্রাণ হারানো ইসরাফিল (১৭) শেরপুর জেলার ঝিনাইগাতি থানান হলদি গ্রামের বাসিন্দা ও তার স্ত্রী রোকেয়া খাতুনের (১৫) বাবার বাড়ি ময়মনসিংহ জেলার ঈশ্বরগঞ্জ থানার পস্তারি গ্রাম।
পরিবার সূত্রে জানা যায়, প্রেমের সম্পর্কে জড়িয়ে গত সাত থেকে আট মাস আগে তারা পরিবারের অমতে বিয়ে করেন। তারা দুজনই শ্রীপুরের মুলাইদ গ্রামের ফারুক হোসেনের বহুতল ভবনে ভাড়া থাকতেন। ইসরাফিল স্থানীয় একটি ওয়ার্কসপে ও রোকেয়া স্থানীয় একটি কারখানায় কাজ করতেন।
রোকেয়ার ভাই বোরহান উদ্দিন বলেন, ‘সাত থেকে আট মাস আগে পরিবারের অমতে তারা বিয়ের সম্পর্কে জড়িয়েছিল। বিয়ের পর তাদের সম্পর্ক ভালোই চলছি। সম্প্রতি ইসরাফিল তার বাবা-মায়ের সঙ্গে ঝগড়া করে বাড়ি থেকে চলে গিয়েছিল। পরে বৃহস্পতিবার তাদের বুঝিয়ে বাসায় আনা হয়। সকালে তাদের মৃত্যুর খবর পাই।’
ইসরাফিলের বাবা মফিজুল হক জানান, পাশাপাশি ফ্ল্যাটে বসবাস করতেন তারা। পরিবারের রান্নার কাজ তারা ইসরাফিলের ফ্ল্যাটে করতেন। শুক্রবার সকালে তাদের ফ্ল্যাটের দরজা খোলা দেখতে পেয়ে ভেতরে যান এবং ইসরাফিলকে ওড়নায় পেঁচানো ঝুলন্ত অবস্থায় এবং রোকেয়ার মরদেহ খাটের ওপর বিছানায় দেখতে পান।
শ্রীপুর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) সাখাওয়াত হোসেন জানান, ‘খবর পেয়ে একটি ফ্ল্যাট থেকে স্বামী-স্ত্রীর মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, প্রথমে স্ত্রী আত্মহত্যা করে। স্ত্রীর আত্মহত্যার বিষয়টি স্বামী সইতে না পেরে তিনিও আত্মহত্যা করেন।’
এ বিষয়ে আইনি ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে বলে জানান পুলিশের এ কর্মকর্তা।
আরও পড়ুন:পটুয়াখালীর কুয়াকাটা সংলগ্ন বঙ্গোপসাগর মোহনায় জেলের জালে এবার ধরা পড়েছে ২৬ কেজি ২৫০ গ্রাম ওজনের একটি কোরাল মাছ।
পরে সেই মাছটি কুয়াকাটা পৌর মাছ বাজারে বিক্রি করা হয়েছে ৩২ হাজার ৭৫০ টাকায়।
কুয়াকাটা পৌর মাছ বাজারের ‘কুয়াকাটা ফিস পয়েন্টের’ পরিচালক নাসির উদ্দিন বৃহস্পতিবার দুপুরে মাছটি কেনেন।
তিনি বলেন, ‘সাগর মোহনায় সচরাচর এত বড় মাছ পাওয়া যায় না। আজ দুপুরে মাছটি মার্কেটে আসার পর এক হাজার ২৫০ টাকা কেজি দরে কিনে নেই।’
স্থানীয় জেলেরা জানান, গত মঙ্গলবার কুয়াকাটার বাবলাতলা এলাকার জেলে রাসেল ‘মায়ের দোয়া’ নামের তার ট্রলারটি নিয়ে গভীর সমুদ্রে ইলিশ মাছ ধরতে রওনা হন। পরবর্তীতে বলেশ্বর নদীর সাগর মোহনায় রাত ২টার দিকে রাসেলের জালে এ বিশাল কোরাল মাছটি ধরা পড়ে।
রাসেল বলেন, ‘তীব্র তাপদাহ শুরুর পর থেকে সাগরে মাছ পড়ে না। ভাগ্য সহায় বলে এত বড় মাছ আল্লাহ দিয়েছেন। মাছটি তীরে নিয়ে আসলে স্থানীয় মাছ ব্যবসায়ীরা মাছটি ক্রয় করতে চেয়েছেন। পরে কুয়াকাটা মাছ বাজারে এক হাজার ২৫০ টাকা কেজি দরে মাছটি বিক্রি করেছি।’
জানতে চাইলে কলাপাড়া উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা অপু সাহা জানান, নদ-নদী এবং সাগরে বিভিন্ন মাছ পাওয়া যায়। সব সময় বড় মাছ ধরা পড়ছে না। সামুদ্রিক কোরাল এর চেয়েও অনেক বড় হয়।
সরকারের দেয়া ৬৫ দিন সাগরে সব ধরনের মাছ ধরার সফল কার্যক্রমের কারণেই এ ধরনের মাছ জেলেদের জালে ধরা পড়ছে বলে জানান তিনি।
আরও পড়ুন:পাবনার সাঁথিয়ায় অগ্রণী ব্যাংকের কাশিনাথপুর শাখার ভল্ট থেকে ১০ কোটি ১৩ লাখ ৬২ হাজার ৩৭৮ টাকা আত্মসাতের অভিযোগ পাওয়া গেছে।
এ ঘটনায় ওই ব্যাংকের প্রধান তিন কর্মকর্তাকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
অগ্রণী ব্যাংকের কাশিনাথপুর শাখা থেকে বৃহস্পতিবার দুপুরের দিকে তিনজনকে আটক করা হয়। দিনভর নানা তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহ ও জিজ্ঞাসাবাদ শেষে রাতে তাদের সাঁথিয়া থানায় নিয়ে আসে পুলিশ। তিনজনকে ৫৪ ধারায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে।
গ্রেপ্তার তিনজন হলেন অগ্রণী ব্যাংক কাশিনাথপুর শাখার প্রিন্সিপাল অফিসার আবু জাফর, ব্যবস্থাপক হারুন বিন সালাম ও ক্যাশিয়ার সুব্রত চক্রবর্তী, যাদের বাড়ি পাবনার বিভিন্ন উপজেলায়।
পুলিশের ভাষ্য, টাকা আত্মসাতের কথা স্বীকার করেছেন ক্যাশিয়ার সুব্রত চক্রবর্তী।
সাঁথিয়া থানা ও অগ্রণী ব্যাংক সূত্রে জানা যায়, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে খবর পেয়ে অগ্রণী ব্যাংক রাজশাহী বিভাগীয় ও পাবনা আঞ্চলিক শাখা থেকে পাঁচ কর্মকর্তা বৃহস্পতিবার সকাল ১০টার দিকে আকস্মিক অডিটে আসেন অগ্রণী ব্যাংক কাশিনাথপুর শাখায়। অডিট শেষে সেখানে ১০ কোটি ১৩ লাখ ৬২ হাজার ৩৭৮ টাকার আর্থিক অনিয়ম দেখতে পান তারা। পরে অডিট কর্মকর্তা সাঁথিয়া থানাকে অবহিত করলে পুলিশ অভিযুক্ত তিনজনকে আটক করে থানায় নিয়ে যায়।
এ ঘটনায় অগ্রণী ব্যাংক পাবনা আঞ্চলিক শাখার উপমহাব্যবস্থাপক রেজাউল শরীফ বাদী হয়ে সাঁথিয়া থানায় অভিযোগ করেন।
সংশ্লিষ্ট একটি সূত্র জানায়, বৃহস্পতিবার সকালে বিভাগীয় অফিস থেকে পাঁচ সদস্যের অডিট টিম ব্যাংকে অডিট শুরু করে। ওই টিমের পাশাপাশি পুলিশ সদস্যরা দিনভর জিজ্ঞাসাবাদ করে তিনজনের কাছ থেকে নানা তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহ করেন। পরে রাতে তিনজনকে আটক করে থানায় নিয়ে যায় পুলিশ।
সাঁথিয়া থানার ওসি আনোয়ার হোসেন জানান, আটককৃতদের ৫৪ ধারায় গ্রেপ্তার করা হয়েছে। শুক্রবার তাদের আদালতে পাঠানো হবে।
তিনি আরও বলেন, অর্থ আত্মসাতের বিষয়ে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবে।
আরও পড়ুন:কক্সবাজারের টেকনাফের সাবরাং ইউনিয়নের শাহপরীর দ্বীপে ঘরে ঢুকে এক নারী ও তার মেয়েকে বিবস্ত্র করে নির্যাতনের লিখিত অভিযোগ করা হয়েছে।
গত সোমবারের ঘটনায় বৃহস্পতিবার টেকনাফ মডেল থানায় অভিযোগটি করেন ছেনুয়ারা বেগম নামের নারী।
লিখিত অভিযোগে বলা হয়, গত সোমবার রাত দুইটার দিকে শাহপরীর দ্বীপের পূর্ব উত্তরপাড়া এলাকার নুর মোহাম্মদের স্ত্রী ছেনুয়ারা বেগমের ঘরের দরজা ভেঙে আয়ুব খানের নেতৃত্বে ১০ থেকে ১৫ জন প্রবেশ করেন। তারা ছেনুয়ারা ও তার মেয়ের হাত-পা বেঁধে মুখে কাপড় ঢুকিয়ে এলোপাতাড়ি লাথি ও ঘুষি মারেন। একপর্যায়ে মা ও মেয়ে উভয়কে বিবস্ত্র করেন আয়ুব ও তার লোকজন।
অভিযোগে আরও বলা হয়, হামলাকারীরা ভয়ভীতি প্রদর্শন করে স্বর্ণ ও টাকা ছিনিয়ে নিয়ে যান। যাওয়ার সময় তাদের বিরুদ্ধে নির্যাতনের বিষয়ে কাউকে জানানো হলে প্রাণনাশের হুমকি দিয়ে চলে যান৷
এ বিষয়ে ছেনুয়ারা বেগম বলেন, ‘সন্ত্রাসী আয়ুব খানের নেতৃত্বে ১০ থেকে ১৫ জন যুবক আমার বাড়িতে ভয়ভীতি দেখিয়ে প্রবেশ করে। পরে বাড়ি থেকে আমাকে জোরপূর্বক কয়েকজন লোক বের করে রশি দিয়ে বেঁধে রাখে এবং আমার মেয়েকে নির্যাতন করে স্বর্ণ ও টাকা নিয়ে যায়। তাদের বিরুদ্ধে ঘটে যাওয়া বিষয়ে কাউকে বললে মেরে ফেলা হবে বলে চলে যায়।’
থানায় অভিযোগের পর আয়ুব হুমকি দিয়েছে জানিয়ে ছেনুয়ারা বলেন, ‘সেই আয়ুব খান মোবাইল ফোনের মাধ্যমে বলে, মামলা হলে কী হবে? জামিন নিয়ে বাহির হয়ে আমাকে আর আমার মেয়েকে মেরে ফেলা হবে বলে প্রাণনাশের হুমকি-ধমকি দিচ্ছে। এ বিষয়ে আমি টেকনাফ মডেল থানায় লিখিত অভিযোগ করেছি।’
এ বিষয়ে সাবরাং ইউনিয়নের ৮ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য রেজাউল করিম রেজু বলেন, ‘আমি বিষয়টি শুনেছি এবং সঠিক তদন্তে পুলিশকে সহযোগিতা করব।’
অভিযোগ তদন্ত কর্মকর্তা উপপরিদর্শক (এসআই) মোহাম্মদ সোহেল বলেন, ‘আমি ঘটনার সত্যতা পেয়েছি এবং আমি মামলা করার জন্য ওসি বরাবর সুপারিশ করেছি।’
টেকনাফ মডেল থানার ওসি ওসমান গণি বলেন, ‘আরও গভীরভাবে তদন্ত করে দোষীদের গ্রেপ্তার করা হবে।’
আরও পড়ুন:মৌলভীবাজারে বিশেষ ক্ষমতা আইনে করা নাশকতা মামলায় জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক সাবেক উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান মিজান ও জেলা যুবদলের সাধারণ সম্পাদক এমএ মুহিতসহ ১৪ নেতাকর্মীকে কারাগারে পাঠিয়েছে আদালত।
বৃহস্পতিবার দুপুরে মৌলভীবাজার জেলা ও দায়রা জজ আদালতে হাজির হয়ে জামিন আবেদন করলে তা নামঞ্জুর করে বিচারক তাদের কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।
উচ্চ আদালতের মঞ্জুরকৃত জামিন শেষ হওয়ায় তারা আদালতে হাজির হন।
মৌলভীবাজার মডেল থানায় ২০২৩ সালের নভেম্বর ও ডিসেম্বর মাসে করা দুটি রাজনৈতিক মামলার ১৪ জন আসামি হাজির হলে আদালত তাদের সবার জামিন নামঞ্জুর করে কারাগারে প্রেরণ করে।
মামলার অন্যান্য আসামিরা হলেন- জেলা বিএনপির সহ-সাধারণ সম্পাদক মুহিতুর রহমান হেলাল, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক মাহমুদুর রহমান, জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলে সাবেক সভাপতি ও পৌর কাউন্সিলর স্বাগত কিশোর দাস চৌধুরী, জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সদস্য সচিব আহমেদ আহাদ, যুবদলের এমএ নিশাদ, যুবদলের সিরাজুল ইসলাম পিরুন, স্বেচ্ছাসেবক দলের নুরুল ইসলাম, যুবদলের ওয়াহিদুর রহমান জুনেদ, স্বেচ্ছাসেবক দলের আব্দুল হান্নান, স্বেচ্ছাসেবক দলের রোহেল আহমেদ, স্বেচ্ছাসেবক দলের মামুনুর রশিদ ও যুবদলের জাহেদ আহমেদ।
মৌলভীবাজার জেলা আদালত পুলিশের পরিদর্শক মো. ইউনুছ মিয়া জানান, ২০২৩ সালে নাশকতার অভিযোগে করা মামলায় মৌলভীবাজার জেলা ও দায়রা জজ আদালতে হাজির হয়ে জামিন আবেদন করেন আসামিরা। আদালত শুনানি শেষে আবেদন নামঞ্জুর করে তাদের কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
রাঙ্গামাটির বাঘাইছড়ি থানাধীন সাজেকে শ্রমিকবাহী ডাম্প ট্রাক খাদে পড়ে নিহতের সংখ্যা বেড়ে ৯ জনে দাঁড়িয়েছে।
বাঘাইছড়ি থানার সহকারী পুলিশ সুপার আবদুল আওয়াল বুধবার রাতে বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
তিনি জানান, আহত শ্রমিকদের উদ্ধার করে খাগড়াছড়ি হাসপাতালে নেয়ার পর চিকিৎসক তিনজনকে মৃত বলে জানান।
এর আগে বিকেলে সাজেকের উদয়পুর সীমান্ত সড়কের ৯০ ডিগ্রি এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে।
পুলিশের ভাষ্য, খাগড়াছড়ি থেকে সাজেকের উদয়পুর সীমান্তবর্তী সড়ক নির্মাণের জন্য ডাম্প ট্রাকে ১৪ জন শ্রমিক জামান ইঞ্জিনিয়ারিং কোম্পানির সেতুর কাজে যাচ্ছিলেন। পথে গাড়িটি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে পাহাড়ের ঢালে পড়ে যায়। এতে ঘটনাস্থলে ছয়জনের মৃত্যু হয়।
বাঘাইছড়ি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শিরিন আক্তার সাংবাদিকদের জানান, যেখানে দুর্ঘটনাটি ঘটেছে, সেটি খুবই দুর্গম এলাকা। আহত শ্রমিকদের উদ্ধার করে খাগড়াছড়ি জেনারেল হাসপাতালে পাঠিয়েছে পুলিশ ও সেনাবাহিনী, তবে তাৎক্ষণিকভাবে কারও নাম-পরিচয় জানা যায়নি।
আরও পড়ুন:মৌলভীবাজার জেলার রাজনগর উপজেলায় ৭ (সাত) বছরের একটি শিশুকে ধর্ষণের অভিযোগে সৈয়দ সরাফত আলী নামের এক ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ ব্যুরো অফ ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)।
পিবিআইয়ের পরিদর্শক রিপন চন্দ্র গোপের নেতৃত্বে একটি অভিযানিক দল বুধবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে শ্রীমঙ্গল রেলওয়ে স্টেশন এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করে।
৬০ বছর বয়সী সৈয়দ সরাফত আলী রাজনগর থানার করিমপুর চা বাগান এলাকার বাসিন্দা।
পিবিআই জানায়, শিশুটিকে বাঁশের বাঁশি বানিয়ে দেয়ার লোভ দেখিয়ে গত ১৪ এপ্রিল বেলা পৌনে দুইটার দিকে সৈয়দ সরাফত আলী তার বাড়ির পাশের বাঁশ ঝাড়ের নিচে নিয়ে যান। সেখানে তাকে মাটিতে ফেলে ধর্ষণ করেন। বিষয়টি নিয়ে এলাকায় আলোড়ন সৃষ্টি হলে তিনি আত্নগোপন করেন।
অসুস্থ অবস্থায় শিশুটিকে গত প্রথমে রাজনগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও পরে মৌলভীবাজার ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতাল ভর্তি করে চিকিৎসা করানো হয়।
এ বিষয়ে শিশুটির বাবা বাদী হয়ে রাজনগর থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা করেন।
পিবিআই মৌলভীবাজার পুলিশ সুপার এহতেশামুল হক বলেন, ‘শিশু ধর্ষণের ঘটনায় অপরাধীর পার পাওয়ার সুযোগ নেই। আইনের আওতায় এনে তাদের বিচার করা হবে। মামলার খুঁটিনাটি বিষয় বিবেচনায় রেখে নিখুঁত তদন্ত প্রতিবেদন আদালতে দাখিল করা হবে।’
আরও পড়ুন:
মন্তব্য