বরইতলা-বরগুনা-পুরাকাটা-আমতলী আঞ্চলিক মহাসড়কের তিনটি স্থান কেটে স্লুইসগেট নির্মাণ করেছে সিকো নামের একটি চীনা ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান।
মাত্র তিন ফুট প্রশস্ত এসব স্লুইসগেটের প্রতিটির জন্য সড়ক ও জনপথের (সওজ) ২৬০ ফুট সড়ক কাটা হয়েছে। কাটা সড়কের ওই অংশগুলো কেবল মাটি দিয়ে ভরাট করে প্রকল্পের কাজ শেষ করে চলেও গেছে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানটি।
এদিকে মাটি ভরাট করা অংশগুলো সামান্য বৃষ্টিতেই কাদাজলে একাকার হয়ে যাচ্ছে। এতে মহাদুর্ভোগের শিকার হতে হচ্ছে যানবাহনচালক, যাত্রী ও পথচারীদের।
স্লুইসগেটগুলো পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) আওতায় করা হলেও ওই সড়ক সংস্কার হয়নি তিন মাসেও। সওজ কর্তৃপক্ষ বলছে, পাউবো কর্তৃপক্ষ সড়কের মাটির কাজ করে দিলেই কেবল তারা সংস্কারকাজ করতে পারবে।
২০১৮ সালের মাঝামাঝিতে ‘গুরুত্বপূর্ণ আঞ্চলিক মহাসড়ক যথাযথ মান ও প্রশস্ততায় উন্নীতকরণ’ প্রকল্পের আওতায় সওজ বরগুনা কার্যালয় তিনটি প্যাকেজে পটুয়াখালী-আমতলী-বরগুনা-কাকচিড়া মহাসড়ক অংশের ২০ দশমিক ৬৫ কিলোমিটার রাস্তা প্রশস্ত করার উদ্যোগ নেয়।
প্রকল্পের ব্যয় ধরা হয় ৭৪ কোটি ৪২ লাখ ৯৫ হাজার ৯৩৭ টাকা। ঝালকাঠির মাফুজ খান লিমিটেড, বরিশালের ওয়াহিদ কনস্ট্রাকশন, মেসার্স কহিনুর এন্টারপ্রাইজ ও ওরিয়েন্ট ট্রেডিং অ্যান্ড বিল্ডার্স নামের চারটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান এই সড়ক সংস্কারকাজ করে। এদের মধ্যে মাফুজ খান লিমিটেড বিআরটিসি বাসস্ট্যান্ড থেকে ইটবাড়িয়া পর্যন্ত ৬ দশমিক ৮ কিলোমিটার এবং কহিনুর এন্টারপ্রাইজ ৪ দশমিক ০০ কিলোমিটার সড়কের সংস্কারকাজ করে। একই সময়ে এই ১০ দশমিক ৮ কিলোমিটারে হয়েছে ওই তিন স্লুইসগেট।
কার্যাদেশ অনুসারে ২০১৮ সালের ৯ আগস্ট সড়ক সংস্কারের কাজ শুরু হয়। ২০২০ সালের ৩ নভেম্বর সংস্কারকাজ শেষ করে সওজকে কাজ বুঝিয়ে দেয় সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানগুলো।
একই সময়ে বরগুনা সদর ও পাথরঘাটা উপজেলায় ৩১৬ কোটি টাকা ব্যয়ে উপকূলীয় বাঁধ উন্নয়ন প্রকল্পের (সিইআইপি) প্রথম পর্যায়ের ২ নম্বর প্যাকেজের আওতায় চংগিং ইন্টারন্যাশনাল করপোরেশন (সিকো) সড়ক ও জনপথ বিভাগের বরগুনা-পুরাকাটা সড়কের ইটবাড়িয়া এলাকা ও পুরাকাটা-ফেরিঘাট বাঁধের ওপর দুটিসহ মোট তিনটি স্লুইসগেট নির্মাণ করে।
সিইআইপি প্রকল্পের আওতায় প্রতিটি স্লুইসগেটের ব্যয় ধরা হয় ২ কোটি ৩০ লাখ টাকা। তিন ফুট প্রশস্ত এসব স্লুইসগেট নির্মাণ করতে গিয়ে ২৬০ ফুট করে সড়ক কেটে ফেলা হয়। গত ফেব্রুয়ারি মাসের শেষে দিকে স্লুইসগেট নির্মাণ শেষ হলে ওই স্থানে মাটি দিয়ে ভরাট করে দেয় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান সিকো।
সড়কটি ব্যবহার করে বরগুনা থেকে আমতলী হয়ে পটুয়াখালী ও বরিশাল এবং সমুদ্রসৈকত কুয়াকাটা, পায়রা বন্দরে যানবাহন চলাচল করে। সামান্য বৃষ্টি হলে এই সড়কে যোগাযোগ সম্পূর্ণ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। এমনকি পথচারীরাও চলাচলে অসুবিধায় পড়েন।
বরগুনা জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক তানভীর হোসাইন বলেন, ‘ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের সময় আমি পায়রা নদ-তীরবর্তী এলাকার লোকজনের অবস্থা দেখতে ওই সড়ক দিয়ে বাইক নিয়ে যাচ্ছিলাম। কিন্তু পথে দুর্ভোগের শিকার হই। কোটি কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত সড়ক ও স্লুইসগেটের কাজ শেষ হলেও সামান্য একটু রাস্তা ফেলে রেখে জনদুর্ভোগ সৃষ্টি করা হয়েছে। কে কী কাজ করবে- এটা পাবলিকের দেখার বিষয় না। যাদের দায়িত্ব তারাই দ্রুত সংস্কার করে দিক।’
বরগুনা জেলা পরিবহন শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি শাহাবুদ্দিন সাবু বলেন, ‘তিনটি স্লুইসগেটের স্থানেই মাটি ভরাট করে কাজ শেষ করা হয়েছে। মাসের পর মাস আমরা ওই সড়কে গাড়ি চলাচলে বাধাগ্রস্ত হচ্ছি।
‘বরগুনা-ঢাকা বাস পরিবহনের অন্যতম একটি রুট এই মহাসড়ক। স্লুইসগেট অংশের সড়ক সংস্কার না হওয়ায় বৃষ্টি হলেই বাস চলাচল বন্ধ রাখতে হয়।’
এ প্রসঙ্গে দৃষ্টি আকর্ষণ করলে পাউবো বরগুনা কার্যালয়ের নির্বাহী প্রকৌশলী কাইছার আলম বলেন, ‘বিশ্বব্যাংকের অর্থায়নে উপকূলীয় বাঁধ উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় স্লুইসগেট নির্মাণ করা হয়েছে। এতে স্থানীয় পানি উন্নয়ন বোর্ডের কোনো ভূমিকা বা তদারকি ছিল না।
‘আমাদের বাঁধের ওপর সওজের রাস্তা। বাঁধের কাজ আমাদেরই করে দিতে হবে। আমি বিষয়টি নিয়ে ঢাকায় কথা বলেছি। বরাদ্দ পেলে রাস্তার মাটির কাজ আমরা করে দেব।’
সওজের নির্বাহী প্রকৌশলী কামরুল আহসান (অতিরিক্ত দায়িত্বে) বলেন, ‘আমরা যখন সড়কের কাজ করছি, ঠিক একই সময়ে প্রকল্পের আওতায় স্লুইসগেট নির্মাণের কাজ চলে।
‘এ কারণে আমরা সেখানে কাজ করার সুযোগ পাইনি। পরে ওই অংশের কাজ বর্ধিত করে বিআরটিসি থেকে টাউন হল পর্যন্ত আমরা করিয়েছি। যে কারণে সড়ক সংস্কারে আমাদের আপাতত কোনো বরাদ্দ নেই। পানি উন্নয়ন বোর্ড মাটির কাজ করে দিলে আমরা সড়কের কাজও করিয়ে দিতে বরাদ্দ চাইতে পারি।’
তিনি বলেন, ‘আমি পটুয়াখালী থাকি। অতিরিক্ত দায়িত্ব পালন করেছি বরগুনায়। বিষয়টি নিয়ে উপবিভাগীয় প্রকৌশলীর সঙ্গে আলোচনা করে ব্যবস্থা নেব।’
তবে কবে নাগাদ সড়কটি যান চলাচলের উপযোগী করে দিতে পারবেন, তা নিশ্চিত করতে পারেননি তিনি।
আরও পড়ুন:পঞ্চগড় আধুনিক সদর হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) ডা. আবুল কাশেমের বিরুদ্ধে ধর্ষণের শিকার এক শিশুর অভিভাবকের সঙ্গে অত্যন্ত অশালীন ভাষা ব্যবহার ও দুর্ব্যবহারের গুরুতর অভিযোগ উঠেছে।
বৃহস্পতিবার (১৮ সেপ্টেম্বর) হাসপাতালের মহিলা সার্জারি ওয়ার্ডে ঘটা এই ঘটনার একটি বিতর্কিত ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ায় ব্যাপক ক্ষোভ ও সমালোচনার সৃষ্টি হয়েছে।
ভিডিওটিতে দেখা যায়, চিকিৎসক আবুল কাশেম চিকিৎসাধীন ধর্ষণের শিকার শিশুটির বাবা ও স্বজনদের উদ্দেশ্য করে কুরুচিপূর্ণ, অপমানজনক ও হুমকিমূলক ভঙ্গিতে কথা বলছেন।
স্থানীয় ভাষায় তাকে বলতে শোনা যায়— ‘ ‘হাসপাতালডাক তোমরা চিড়িয়াখানা পাইছ, চিড়িয়াখানার মতো ভর্তি হবার আইসো, কোনঠে সাংবাদিক আইসো, দেউনিয়া-মদ্দিনা আইসো, এলাকাবাসী আইসো, পুরুষ-মহিলা আইসো, ছোট-বড় আইসো, এইটা হরিবোল, হরিবোল দেওয়ার জায়গা নাকি? এই ছুটি বাড়ি যাও, আইজকে বিস্তিবার (বৃহস্পতিবার) আর কোথায় রাখব? তোমরা মামলা করলে করো, না করলে…(অশ্লীল ভাষায় কিছু বলেন)।’
এদিকে, বিতর্কিত ভিডিওটি সিভিল সার্জনের নজরে আসার পর রাতেই অভিযুক্ত চিকিৎসক আবুল কাশেমকে শনিবারের (২০ সেপ্টেম্বর) মধ্যে ঘটনার কারণ দর্শানোর (শোকজ) নোটিশ দেয়া হয়েছে।
এ বিষয়ে পঞ্চগড় সার্জন ডা. মো. মিজানুর রহমান জানান, কী ঘটেছিল এবং কেন রোগীর পরিবারের সঙ্গে এমন আচরণ করা হয়েছে, তার সঠিক জবাব চেয়ে নোটিশ করা হয়েছে। গত শুক্রবার ১৯ সেপ্টেম্বর সরকারি ছুটি থাকায় শনিবারের মধ্যে জবাব চাওয়া হয়েছে। বিষয়টি যেহেতু আলোচিত, তাই জবাব পাওয়ার পর তা মন্ত্রণালয়ে পাঠিয়ে পরবর্তী প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।
কুষ্টিয়ার দৌলতপুরে রোগীবাহী একটি অ্যাম্বুলেন্সে ডাকাতির ঘটনা ঘটেছে। শুক্রবার গভীর রাতে, উপজেলার খলিশাকুণ্ডি ইউনিয়নের পিপুলবাড়িয়া মাঠ এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। ডাকাতেরা রাস্তার ওপর গাছ ফেলে অ্যাম্বুলেন্সটি থামিয়ে, অস্ত্রের মুখে রোগীর স্বজনদের কাছ থেকে প্রায় ৩০ হাজার টাকা ছিনিয়ে নেয়।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, দৌলতপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে স্ট্রোকের রোগী লিটনকে কুষ্টিয়া সদর হাসপাতালে নেওয়া হচ্ছিল। পথিমধ্যে পিপুলবাড়িয়া মাঠের কাছে যাত্রীছাউনির সামনে গাছ ফেলে রাস্তা অবরোধ করে পাঁচ-ছয়জনের এক ডাকাত দল। দেশীয় অস্ত্র হাতে তারা অ্যাম্বুলেন্সের চালক ও ভেতরে থাকা চারজনকে জিম্মি করে অর্থ ছিনিয়ে নেয়।
অ্যাম্বুলেন্স চালক রতন আহমেদ জানান, রাত ১টার দিকে রোগীকে কুষ্টিয়ায় নিয়ে যাচ্ছিলাম। হঠাৎ ডাকাতেরা গাড়ি আটকে আমার গলায় ছুরি ঠেকিয়ে টাকার ব্যাগ নিয়ে যায়। তারা কাউকে কিছু না বলতে কড়া হুমকি দিয়ে ঘটনাস্থল ত্যাগ করে।
রোগীর এক স্বজন জালাল বলেন, আমরা চালককে কাতলামারী হয়ে না যেতে অনুরোধ করেছিলাম, কিন্তু তিনি ওই পথেই যান। পথে এই ঘটনা ঘটে এবং আমাদের কাছ থেকে নগদ ৩০ হাজার টাকা ছিনিয়ে নেয় ডাকাতরা।
দৌলতপুর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. তৌহিদুল হাসান তুহিন জানান, রাত সাড়ে ১২টার দিকে লিটন নামে একজন রোগী হৃদরোগ ও ডায়াবেটিসজনিত সমস্যা নিয়ে ভর্তি হন। উন্নত চিকিৎসার জন্য তাঁকে কুষ্টিয়া সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়েছিল। পথে অ্যাম্বুলেন্সে ডাকাতির ঘটনাটি অত্যন্ত উদ্বেগজনক।
এ বিষয়ে দৌলতপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সোলাইমান শেখ বলেন, এখনো পর্যন্ত আমাদের কাছে কেউ লিখিত অভিযোগ করেনি। অভিযোগ পেলে তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, বাংলাদেশকে এখনই পরিচ্ছন্ন, নিরাপদ এবং সাশ্রয়ী জ্বালানি সমাধানের দিকে এগিয়ে যেতে হবে, যাতে দেশ টেকসই অর্থনৈতিক উন্নয়নের নতুন পথে এগিয়ে যেতে পারে।
তিনি বলেন, ‘এখন সময় এসেছে বাংলাদেশকে গুরুত্ব সহকারে বিকল্প পরিচ্ছন্ন জ্বালানি বিবেচনা করার, যার মধ্যে বৃহৎ পরিসরে সৌরবিদ্যুৎ স্থাপন অন্যতম।’
গত বৃহস্পতিবার রাতে অ্যানথ্রোপোসিন ইনস্টিটিউটের চেয়ারম্যান কার্ল পেজ এবং তাঁর সহকর্মীদের সঙ্গে এক ভার্চুয়াল সম্মেলনে দেওয়া বক্তব্যে এ কথা বলেন প্রধান উপদেষ্টা।
অধ্যাপক ইউনূস বলেন, বিশ্বের ঘনবসতিপূর্ণ এবং জলবায়ু ঝুঁকিপূর্ণ দেশগুলোর একটি হিসেবে বাংলাদেশ দীর্ঘদিন জীবাশ্ম জ্বালানির ওপর নির্ভরশীল থাকার সামর্থ্য রাখে না।
কার্ল পেজ তাঁর বক্তব্যে নতুন প্রজন্মের পারমাণবিক প্রযুক্তি ও হাইব্রিড সিস্টেমের সাম্প্রতিক অগ্রগতির কথা তুলে ধরেন। তিনি বলেন, এসব প্রযুক্তি নির্ভরযোগ্য, শূন্য-কার্বন বিদ্যুৎ উৎপাদনে সক্ষম। বিশেষ করে ভাসমান বা বার্জ-মাউন্টেড রিঅ্যাক্টর তুলনামূলকভাবে কম খরচে, কম রক্ষণাবেক্ষণে, দীর্ঘ সময় ধরে বাংলাদেশের ক্রমবর্ধমান শিল্পখাতের বিদ্যুৎ চাহিদা পূরণ করতে পারবে।
পেজ বলেন, ‘পারমাণবিক শক্তি আজ আর বিশ্বব্যাংকের মতো বড় উন্নয়ন অর্থায়ন সংস্থাগুলোর কাছে নিষিদ্ধ বিষয় নয়। ইন্দোনেশিয়ার মতো দেশ ইতোমধ্যেই তাদের ক্রমবর্ধমান জ্বালানি চাহিদা পূরণে এ প্রযুক্তি গ্রহণ করছে।’
তিনি উল্লেখ করেন, উদ্ভাবনে বাংলাদেশের শক্তিশালী রেকর্ড রয়েছে, তাই দেশটি পরিচ্ছন্ন জ্বালানির রূপান্তরে নেতৃত্ব দিতে পারে। এর সুফল হবে কর্মসংস্থান সৃষ্টি, জ্বালানির দাম স্থিতিশীল রাখা এবং শিল্প খাতের প্রতিযোগিতা বৃদ্ধি।
পেজ আরও বলেন, ‘বাংলাদেশ উদীয়মান প্রযুক্তির জন্য একটি কৌশলগত কেন্দ্র এবং পারমাণবিক উদ্ভাবনে শান্তিপূর্ণ নেতৃত্বের ভূমিকায় অবতীর্ণ হতে পারে।’
অধ্যাপক ইউনূস জানান, অন্তর্বর্তী সরকার সম্প্রতি একটি নতুন জাতীয় বিদ্যুৎনীতি প্রণয়ন করেছে, যাতে সৌর জ্বালানির গ্রহণযোগ্যতা বাড়ানোকে অগ্রাধিকার দেওয়া হয়েছে।
তবে তিনি উল্লেখ করেন, পারমাণবিক বিকল্প নিয়ে যে কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে কঠোর গবেষণা ও সম্ভাব্যতা যাচাই অপরিহার্য।
তিনি বলেন, ‘আমরা অবশ্যই এসব সুযোগ অনুসন্ধান করব। তবে প্রতিশ্রুতিশীল এসব প্রযুক্তি নিয়ে গভীর গবেষণা দরকার। কোনো সন্দেহ নেই—বাংলাদেশকে জীবাশ্ম জ্বালানির ওপর নির্ভরতা দ্রুত হ্রাস করতেই হবে।’
বৈঠকে আরও উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (বিডা) নির্বাহী চেয়ারম্যান চৌধুরী আশিক মাহমুদ বিন হারুন এবং সরকারের সিনিয়র সচিব ও এসডিজি বিষয়ক মুখ্য সমন্বয়ক লামিয়া মোরশেদ।
জয়পুরহাটের ক্ষেতলাল উপজেলার শালবন গ্রামে নিখোঁজের তিন দিন পর শিশু তাসনিয়ার বস্তাবন্দি লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। শুক্রবার সন্ধ্যায় প্রতিবেশী একরামুল ইসলামের বাড়ির গোয়ালঘর থেকে তার লাশটি উদ্ধার করা হয়।
নিহত তাসনিয়া আক্তার (১১)উপজেলার শালবন গ্রামের এরশাদ আলীর মেয়ে। স্থানীয় এলাকাবাসী এ ঘটনায় উত্তেজিত হয়ে পড়লে পরিস্থিতি শান্ত করে রাতে লাশটি উদ্ধার করে থানায় নিয়ে যায় পুলিশ।
এ ঘটনায় দুই নারীকে আটক করেছে পুলিশ। আটককৃতরা হলেন, উপজেলার বড়তারা ইউনিয়নের শালবন গ্রামের একরামুল হকের স্ত্রী হাবিবা (৩০) ও একই এলাকার আব্দুল রাজ্জাকের স্ত্রী আঞ্জুয়ারা (৬২)।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্র জানায়, গত তিন দিন ধরে শিশু তাসনিয়াকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছিল না। খোঁজাখুঁজির এক পর্যায়ে শুক্রবার সন্ধ্যায় প্রতিবেশী একরামুলের গোয়ালঘরে বস্তাবন্দি অবস্থায় একটি লাশ দেখতে পান স্থানীয়রা। পরে খবর পেয়ে লাশটি উদ্ধার করে পুলিশ। এ খবর ছড়িয়ে পড়লে একরামুল বাড়ি ছেড়ে পালিয়ে যায়। তবে তার স্ত্রীকে আটক করা হয়েছে।
ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে ক্ষেতলাল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো.আব্দুল করিম বলেন, খবর পেয়ে শিশুর লাশটি উদ্ধার করা হয়েছে। সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরির পর ময়নাতদন্তের জন্য জয়পুরহাট জেনারেল হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের শনাক্ত ও আটক অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
পতাকা বৈঠকের মাধ্যমে দুই দেশের সিমান্তরক্ষী বাহিনীর যৌথ সম্মতিতে বিভিন্ন সময়ে অবৈধ পথে ভারতে গিয়ে কারাভোগ শেষে ১৮ জন বাংলাদেশী নাগরিককে ফেরত দিয়েছে বিএসএফ।
শুক্রবার রাত সাড়ে ১০টার দিকে মেহেরপুরের গাংনী উপজেলার কাজিপুর সিমান্তের ১৪৭ নম্বর আন্তর্জাতিক মেইন পিলার কাছে বিজিবি সদস্যদের হাতে তাদের হস্তান্তর করা হয়। সকলেই বাংলাদেশের বিভিন্ন জেলার বাসিন্দা।
কুষ্টিয়া বিজিবি ৪৭ ব্যাটালিয়নের অধিন কাজিপুর বিওপি-র কোম্পানী কমান্ডার সুবেদার শাহাব উদ্দিন জানান, দেশের বিভিন্ন সিমান্ত দিয়ে বাংলাদশী নাগরিকরা অভৈধ ভাবে ভারতে প্রবেশের সময় ভারতীয় সিমান্তরক্ষী বাহিনীর হাতে ধরা পড়ে।
পরে তাদের বিভিন্ন মেয়াদে দেওয়া সাজা ভোগ শেষে শুক্রবার রাত সাড়ে ১০টার দিকে পতাকা বৈঠকের মাধ্যমে বিএসএফ সদস্যরা বিজিবিকে হস্তান্তর করে।
ফেরত আসা ১৮জনের তথ্য যাচাই বাছাই শেষে গাংনী থানায় সৌপর্দ করা হবে।
ভারতের গান্দিনা বিএসএফ ১১ ব্যাটেলিয়ন ক্যাম্পের এসি সুনিল কুমার যাদব সহ অন্যান্য সদস্যরা উপস্থিত ছিল।
ভারত থেকে কারাভোগ শেষে বাংলাদেশে ফেরত আসারা হলো, পটুয়াাখালী জেলার মেহেদী, চুয়াডাঙ্গার নুরজাহান, নড়াইলের ফরিদ শেখ, ঝিনাইদহের জিসান মন্ডল, সাইদুল ইসলাম, চাঁদপুরের খোকন বেপারী, সাতক্ষীরার মাজেদা ঢালী, শামিম হোসেন, মিঠুন ঘোষ, খালিদা সরদার, মিলন কুমার, রাজশাহীর আব্দুল কুদ্দুস, যশোরের আহমেদ আলী, মৌলভীবাজারের লিটন দেব, চট্টগ্রামের শুভ মজুমদার, ঢাকার স্বাধীন রাজবংশী, মাদারিপুরের মহিউদ্দিন ফকির, নাসিমা শেখ কুষ্টিয়া।
চুরির অভিযোগে এক যুবককে আটক করে কুকুর দিয়ে কামড়ানোর একটি ভিডিও ভাইরাল হয়েছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে। মধ্যযুগীয় কায়দায় নির্যাতনের অমানবিক এমন ঘটনা ঘটেছে কুমিল্লার বুড়িচং উপজেলার ময়নামতি ইউনিয়নের দেবপুর এলাকায় সাকুরা স্টিল মিলে।
চুরির অভিযোগে নির্যাতিত হওয়া ওই যুবকের কুকুর লেলিয়ে দিয়ে নির্যাতনের এমন ভিডিওটি শ্রী জয় (৩২)। তিনি চান্দিনা উপজেলার মাইজখার গ্রামের শ্রী বিষ্ণুর ছেলে। ভিডিওতে দেখা যায়, দুটি কুকুর ওই যুবককে কামড়াচ্ছে এবং কয়েকজন ব্যক্তি লাঠি হাতে তাকে মারধর করছে। কুকুরের কামড় ও লাঠির আঘাতে অসহায় যুবক চিৎকার করতে থাকে।
স্থানীয়সূত্রে জানা যায়, সাকুরা মিলটিতে প্রায়ই চুরির ঘটনা ঘটছিল। শুক্রবার (১৯ সেপ্টেম্বর) জুমার নামাজের সময় নিরাপত্তা কর্মী ও শ্রমিকরা তাকে ধরার জন্য অপেক্ষা করে। নামাজ শুরু হলে শ্রী জয় মিলের ভেতরে প্রবেশ করলে তাকে কুকুর লেলিয়ে ধরা হয় এবং পরে শারীরিক নির্যাতন চালানো হয়।
এ ঘটনায় র্যাব ও পুলিশ যৌথভাবে অভিযান চালিয়ে শান্ত ইসলাম, মোহাম্মদ লিপু ও মো. সজিব নামে তিনজনকে আটক করেছে।
র্যাব-১১ সিপিসি-২ এর মেজর সাদমান ইবনে আলম জানান, ঘটনাটির তদন্ত চলছে। শনিবার সকাল সাড়ে ১০টায় সংবাদ সম্মেলনে বিস্তারিত জানানো হবে।
বুড়িচং থানার ওসি মোহাম্মদ আজিজুল হক বলেন, ঘটনায় মামলা দায়ের করা হয়েছে। পরে যৌথ অভিযানে তিনজনকে আটক করা হয়েছে।
রাজধানীর যাত্রাবাড়ীর ধলপুরে একটি বাসায় এসি বিস্ফোরণে একই পরিবারের চারজন দগ্ধ হয়েছেন। শুক্রবার রাত দেড়টার দিকে এ ঘটনা ঘটে।
দগ্ধদের জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে ভর্তি করা হয়েছে। তারা হলেন, মোহাম্মদ তুহিন হোসেন (৩৮), তার স্ত্রী ইভা আক্তার (৩০), দুই ছেলে ৯ বছরের তানভীর ও ৭ বছরের তাওহীদ।
তুহিনের শরীরের ৪৭ শতাংশ ও তানভীরের শরীরের ৪০ শতাংশ দগ্ধ হয়েছে। তাদের অবস্থা সংকটাপন্ন। এছাড়া তাওহীদের ৮ ও ইভা আক্তারের শরীরের ১৫ শতাংশ পুড়ে গেছে।
ইভা আক্তারের বোন ফারজানা আক্তার বলেন, ‘তার বোনসহ পরিবারের সদস্যরা রাতে বাসায় ঘুমিয়ে ছিলেন। হঠাৎ রাত দেড়টার দিকে এসি বিস্ফোরণ হয়।’
মন্তব্য