ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের প্রভাবে সৃষ্ট ঝোড়ো হাওয়া ও দমকা বাতাসে উপকূলীয় জেলা ভোলার ৫টি উপজেলার ১১ হাজার ঘরবাড়ি বিধ্বস্ত হয়েছে। এর মধ্যে আশিংক বিধ্বস্ত হয়েছে ৭ হাজার ৭৩০টি ঘর। সম্পূর্ণভাবে বিধ্বস্ত হয়েছে ৩ হাজার ৫৭৯টি ঘর।
এ ছাড়া পূর্ণিমার প্রভাবে নদীর পানি এখনও বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হওয়ায় জেলার ২৩টি চরের ৬৮ হাজার মানুষ এখনও পানিবন্দি অবস্থায় আছে। জোয়ার-ভাটার ওপর নির্ভর করে তাদের জীবন পরিচালনা করতে হচ্ছে। প্রশাসনের পক্ষ থেকে পানিবন্দি এসব মানুষের কাছে ত্রাণ পৌঁছে দেয়ার কথা বলা হলেও এখনও ত্রাণ পায়নি হাজারো মানুষ। অর্ধাহারে-অনাহারে অনেকটা মানবতর দিন কাটছে তাদের।
অন্যদিকে বাঁধ ভেঙে লোকালয়ে পানি ঢুকে পড়ায় তলিয়ে গেছে শত শত পুকুর ও মাছের অর্ধশতাধিক ঘের। যদিও জেলা প্রশাসক বলছেন, ক্ষতি নিরূপণের কাজ চলমান আছে এবং শেষ হলে ক্ষতিগ্রস্তদের আর্থিক সহায়তা করা হবে।
ঝড়ের প্রভাবে লণ্ডভণ্ড হয়ে গেছে ভোলার উপকূল। উপকূলের বেশির ভাগ এলাকায় এখন ঝড়ের ক্ষতচিহ্ন।
ঘরবাড়ি, মাছের ঘের, দোকানপাট আর গবাদিপশু হারিয়ে অনেকেই এখন দিশেহারা। পানিবন্দি হয়ে খোলা আকাশের নিচে মানবেতর দিন কাটাচ্ছেন অনেকে।
সাগর উপকূলের দ্বীপচর চরফ্যাশনের ঢালচর, কুকরি-মুকরি ও মনপুরা উপজেলায় ক্ষতির পরিমাণ অনেক বেশি। অনেকের ঘরে ঠিকমতো রান্নাও হচ্ছে না। জীবন বাঁচাতে অনেকে সাইক্লোন শেল্টারে আশ্রয় নিলেও তারা হারিয়েছেন সহায়-সম্বল।
সাগরমোহনায় ঢালচর ইউনিয়নের মর্জিনা বেগম বলেন, ‘আমাগো খোঁজখবর কেউ রাহে না। গত তিনডা দিন ধইরা পানির লগে যুদ্ধ কইরা টিক্কা আছি। পানি উঠলে আমাগো কষ্টের শেষ নাই। রান্না করতো পারি না, খাইতো পারি না। পোলাইন-ছাওল লইয়া অনেক কষ্টের মইধ্যে আছি। বানের পানি তো আমাগো ঘর পইড়া গেছে। এহন ঘর কেমনে ঠিক করমু পোলাইন-ছাওল লইয়া কোন জায়গা থাকমু, সেই চিন্তায়ও বাঁচি না। শুধু আমি না, আমাগো মতো অনেক মাইনষের ঘর-দুয়ার পানিতে ভাসাইয়া লয়া গেছে, মাথা গোঁজানোর মতো জায়গা নাই। এহন সরকার যদি আমাগো দিকে চায়, তাইলে আমাগো কিছুডা রক্ষা হইব।’
মর্জিনার মতো একই অবস্থা ঢালচরের শতাধিক পরিবারের। ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের প্রভাবে প্রচণ্ড বাতাস ও তীব্র পানির চাপে ঘরের মাটি নরম হয়ে ঘর পড়ে গেছে। এখন খোলা আকাশের নিচে জীবন কাটাচ্ছে ঢালচরের হাজারো মানুষ। প্রশাসনের পক্ষ থেকে শুকনা খাবার ছাড়া তেমন কিছুই জোটেনি তাদের ভাগ্যে।
বিধ্বস্ত ঘরের মালিক মামুন মাঝি বলেন, ‘নদীর পাড়ে থাকি আমরা। মাছ ধরন বন্ধ থাকায় এমনেই বইসা রইছি। তার উপর তুফানে বাড়িটা ফালায়া দিল। পোলাইন-ছাওল লইয়া কই থাহুম। টাকা নাই ঘর যে আবার নতুন কইরা করুম।’
চরফ্যাশন উপজেলার ঢালচর ইউপির চেয়ারম্যান আব্দুস সালাম হাওলাদার বলেন, ‘গত বছর ঘূর্ণিঝড় আম্পানে আমাদের ঢালচরের অনেক ক্ষতি হয়েছে। বছর ঘুরতেই আবারও দুর্যোগের হানা। ইয়াসের প্রভাবে এই ইউনিয়নের শতাধিক ঘরবাড়ি বিধ্বস্ত হয়েছে। ভাসিয়ে নিয়ে গেছে ফসলি জমি, মাছের ঘের, মৎস্য আড়তসহ গবাদিপশু। পানি এখনও ওঠার কারণে মানুষ এখন খাদ্যসংকটে আছে। তাই প্রশাসনের কাছে অনুরোধ, ঢালচরবাসীর জন্য যেন দ্রুত সহায়তা পাঠায়।’
চরফ্যাশনের আহম্মদপুর ইউনিয়নের আব্দুল হামিদ বলেন, ‘ইয়াসের প্রভাবে প্রচণ্ড বাতাসে নদীর পানি ঢুকে আমার মাছের ৬টি ঘেরের লক্ষ লক্ষ টাকার মাছ ভেসে গেছে। ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়ে মাছের চাষাবাদ করছিলাম। কোনো কিছু বুঝে ওঠার আগে শুরুতেই সব শেষ হয়ে গেল পানির কারণে।’
একই এলাকার এনায়েত পাটারী বলেন, ‘নদীতে পানি বাড়তে থাকায় সেই পানি খাল দিয়ে ঢুকে আমাদের ঘেরের মাছ সব ভাসিয়ে নিয়ে গেছে। এখন ধারদেনা কীভাবে শোধ করব, তা নিয়ে দুশ্চিন্তায় আছি।’
প্রবল জোয়ারের চাপে জেলার ১৫টি পয়েন্টে বন্যানিয়ন্ত্রণ বাঁধ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ভেঙে গেছে বাঁধের ৪০ মিটার।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী বাবুল আক্তার জানান, বাঁধের বাইরে যেসব নিচু এলাকা রয়েছে, সবগুলো তলিয়ে গেছে। ইতিমধ্যে শহর রক্ষা বাঁধের জন্য ৩৫ হাজার জিও ব্যাগ মজুত করা রয়েছে। পানি উন্নয়ন বোর্ড ক্ষতিগ্রস্ত বাঁধগুলো দ্রুত সংস্কার করছে।
জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা মোতাহার হোসেন বলেন, ইয়াসের প্রভাবে ভোলার ২৩টি দুর্গম এলাকায় ৬৮ হাজারের মতো মানুষ পানিবন্দি হয়ে আছে। জোয়ারের কারণে পানি উঠছে আবার নামছে। এসব এলাকায় শুকনা খাবার বিতরণ করা হচ্ছে। ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের তালিকা তৈরির পর জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে পুনর্বাসন করা হবে।
তিনি জানান, ভোলায় ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোকে পুনর্বাসন করার জন্য ১ কোটি ৯৪ লাখ টাকার ফান্ড রয়েছে। ৪২ মেট্রিক টন ভিজিএফ চাল মজুত রয়েছে। এ ছাড়া ইতিমধ্যে বিভিন্ন উপজেলায় ক্ষতিগ্রস্তদের মাঝে খাদ্য বিতরণ ও যাতায়াত খরচের জন্য সাড়ে ১৭ লাখ টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়েছে।
আরও পড়ুন:গাইবান্ধার সাদুল্লাপুরে বারুনীর মেলায় রাতভর জুয়ার আসর চালানোর অভিযোগে জামালপুর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) এক সদস্যের নামে মামলা করা হয়েছে।
সাদুল্লাপুর থানার ওসি মো. শফিকুল ইসলাম বুধবার রাতে মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
এর আগে গত মঙ্গলবার দুপুরে ওই ইউপি সদস্যের নামে সাদুল্লাপুর থানায় পুলিশ বাদী হয়ে জুয়া আইনে মামলা করেন।
অভিযুক্ত ইউপি সদস্যের নাম আল-আমিন সরকার, যিনি সাদুল্লাপুর উপজেলার জামালপুর ইউনিয়ন পরিষদের ৩ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য।
জামালপুর ইউনিয়নের কল্যাণপুরে গত ১৫ এপ্রিল রাতে বারুনীর মেলা উপলক্ষে জামুডাঙ্গা গ্রামের গোলজারের বাড়ির সামনে জুয়া বসান আল-আমিন।
জুয়ার আসরের একটি ভিডিও এরই মধ্যে ছড়িয়ে পড়েছে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে।
জুয়া খেলার সময় প্রত্যক্ষদর্শী একজনের ধারণ করা ১৭ সেকেন্ডের ভিডিওতে দেখা যায়, জুয়ার বোর্ডে বসে আল-আমিন নিজেই গুনে গুনে টাকা নিচ্ছেন।
ইউপি সদস্যের জুয়ার আসর বসানোর ঘটনাটি ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ায় স্থানীয়দের মধ্যে নানা সমালোচনা ও ক্ষোভের সৃষ্টি হয়।
অভিযোগের বিষয়ে মোবাইলে কল করে জানতে চাইলে অভিযুক্ত ইউপি সদস্য আল-আমিন সরকার তার নেতৃত্বে জুয়া বসানোর বিষয়টি অস্বীকার করেন।
তিনি মেলা উপলক্ষে জুয়ার আসরে যাওয়ার কথা স্বীকার করে বলেন, ‘আমি জুয়ার আসরে ছিলাম, কিন্তু জুয়া আমি বসাইনি।’
মামলার বিষয়ে সাদুল্লাপুর থানার ওসি শফিকুল ইসলাম মোবাইল ফোনে নিউজবাংলাকে বলেন, ‘কল্যাণপুরের বারুনীর মেলায় জুয়া খেলার অভিযোগে সোমবার রাতে অভিযান চালিয়ে সাত জুয়াড়িকে আটক করে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
‘এই জুয়ার আসর বসানোর অভিযোগে ইউপি সদস্য আল-আমিনের বিরুদ্ধে জুয়া আইনে মামলা করা হয়েছে, তবে ঘটনার পর থেকে আল-আমিন পলাতক। তাই গ্রেপ্তার করা সম্ভব হয়নি। পুলিশের অভিযান চলমান রয়েছে।’
আরও পড়ুন:মানিকগঞ্জ পৌরসভায় জমিসংক্রান্ত বিরোধের জেরে দুই ভাইয়ের হাতাহাতিতে একজন নিহত হয়েছেন।
পৌরসভার ৬ নম্বর ওয়ার্ডে বুধবার বিকেলে এ ঘটনা ঘটে।
প্রাণ হারানো কমল রায় (৬২) মানিকগঞ্জ পৌরসভার ৬ নম্বর ওয়ার্ডের পূর্বদাশড়া এলাকার প্রয়াত কৃষ্ণ রায়ের ছেলে। এ ঘটনায় ছোট ভাই মিঠু রায়কে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করেছে পুলিশ।
স্বজন ও স্থানীয়দের বরাতে পুলিশ জানায়, জমিসংক্রান্ত বিরোধের জেরে কমল রায়ের সঙ্গে ছোট ভাই মিঠু রায়ের কথাকাটাকাটি হয়। এর একপর্যায়ে দুই ভাইয়ের মধ্যে হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। হাতাহাতিতে বড় ভাই কমল রায় অসুস্থ হয়ে পড়লে স্থানীয়রা তাকে মানিকগঞ্জ সদর হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখানে চিকিৎসক তাকে মৃত বলে জানান।
মানিকগঞ্জ সদর থানার ওসি হাবিল হোসেন বলেন, ‘খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। ময়নাতদন্তের জন্য মরদেহটি মানিকগঞ্জ সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে।
‘এ ঘটনায় নিহতের ছোট ভাই মিঠু রায়কে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করা হয়েছে। অভিযোগ পেলে আইনি ব্যবস্থা নেয়া হবে।’
আরও পড়ুন:ঝালকাঠিতে সিমেন্টবাহী একটি ট্রাক কয়েকটি গাড়িকে ধাক্কা দিয়েছে, এতে নিহতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৪ জনে।
সদর উপজেলার গাবখান সেতুর টোল প্লাজায় বরিশাল-পিরোজপুর আঞ্চলিক মহাসড়কে বুধবার দুপুরে এ দুর্ঘটনা ঘটে।
ঝালকাঠির পুলিশ সুপার (এসপি) মো. আফরুজুল হক এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
পুলিশ জানিয়েছে, দুর্ঘটনায় অন্তত ১৫ জন আহত হয়েছেন। আহতদের ১০ জনকে বরিশাল শের-ই বাংলা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। বাকিদের রাখা হয়েছে ঝালকাঠি সদর হাসপাতালে।
এদিকে নিহতদের মধ্যে তিনজনের পরিচয় শনাক্ত করা হয়েছে। এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন ঝালকাঠির সিভিল সার্জন ডা. এইচ এম জহিরুল ইসলাম।
শেখেরহাট হাট ইউনিয়ন পরিষদে কর্মরত গ্রাম পুলিশ মো. কামাল হোসেন বলেন, আমরা চারটি ইজিবাইক এবং একটি মাইক্রো গাড়িতে শেখেরহাট গ্রামে বিয়ের অনুষ্ঠানে যাচ্ছিলাম। গাবখান সেতুর টোলে আসার পর বিপরীত দিক থেকে আসা একটি ট্রাক আমাদেরকে সামনো থেকে চাপা দেয়। এতে আমার ছোট ভাই দশম শ্রেণিতে পড়ুয়া আতিকুর রহমান সাদি নিহত হয়েছে।
প্রত্যক্ষদর্শী মাইনুল হোসেন বলেন, বেপরোয়া গতিতে আসা ট্রাকটি ব্রেক ফেল করে চারটি ইজিবাইক এবং একটি মাইক্রোবাসকে সামনে থেকে ধাক্কা দেয়। এতে ঘটনাস্থলেই ১১ জন বিয়ের যাত্রী মারা যান।
কক্সবাজারের চকরিয়ায় আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে সেলিম ও শফিউল আলম নামে দুই যুবককে কুপিয়ে হত্যা করেছে একদল সশস্ত্র সন্ত্রাসী। এই হত্যাকাণ্ডের নেপথ্যে গত ইউপি নির্বাচনের সৃষ্ট বিরোধের জের রয়েছে বলে জানা গেছে।
মঙ্গলবার রাত ৮টার দিকে উপজেলার সুরাজপুর মানিকপুর ইউনিয়নের ১ নম্বর ওয়ার্ডের উত্তরপাড়ায় এই জোড়া হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। নিহত সেলিম ওই এলাকার নূর মোহাম্মদের ছেলে। অপরজন শফিউল আলম একই এলাকার আবু সালামের ছেলে।
নিহত সেলিমের পিতা নুর মোহাম্মদ জানান, স্থানীয় ১ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য জাহেদুল ইসলাম ও সেলিমের মধ্যে গত ইউপি নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করা নিয়ে দ্বন্দ্ব চলে আসছে দীর্ঘদিন ধরে। এর জের ধরে মঙ্গলবার রাত ৮টার দিকে মানিকপুর উত্তরপাড়া বাজার এলাকার নবীন ক্লাবের সামনে দাঁড়িয়ে থাকা অবস্থায় জাহেদুল ইসলামের নেতৃত্বে একদল ভাড়াটে সন্ত্রাসী অতর্কিত হামলা চালায় নিহতদের ওপর।
ধারালো অস্ত্রের আঘাতে গুরুতর আহত সেলিমকে স্থানীয় লোকজন উদ্ধার করে চকরিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লক্সে নিলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। অপরজন শফিউল আলমের অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় তাকে চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে রেফার করা হয়। সেখানে নেয়ার পথে রাত সাড়ে ১২টার দিকে শফিউল আলমের মৃত্যু হয়।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেনে সুরাজপুর মানিকপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আজিমুল হক।
প্রসঙ্গত, বিগত ইউপি নির্বাচনে বর্তমান মেম্বার জাহেদুল ইসলামের সঙ্গে সেলিম ও শফিউল আলমের বড় ভাই শামসুল আলম প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। নির্বাচনের দিন দু’পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। ওই ঘটনার জের ধরে এই জোড়া হত্যাকাণ্ড ঘটেছে বলে ধারণা স্থানীয়দের।
চকরিয়া থানার ওসি শেখ মোহাম্মদ আলী বলেন, ‘নিহত দুজনই একটি হত্যা মামলার আসামি। এলাকায় আধিপত্য বিস্তার নিয়ে দুপক্ষের মধ্যে দ্বন্দ্বের জের ধরে এই হত্যার ঘটনা ঘটেছে। হত্যাকাণ্ডে জড়িতদের ধরতে পুলিশ অভিযান চালাচ্ছে।’
আরও পড়ুন:কুড়িগ্রামের নাগেশ্বরী উপজেলায় পুকুরে মাছ ধরতে গিয়ে পুকুরের পানিতে ডুবে আহাদ ও আফরোজা নামের যথাক্রমে ৫ ও ৭ বছরের দুই শিশু নিহত হয়েছে।
বুধবার দুপুরে উপজেলার নেওয়াশি ইউনিয়নের পশ্চিম সুখাতি গ্রামের বোর্ডঘর এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। নিহত শিশুদুটি সম্পর্কে খালাতো ভাইবোন।
নিহত আহাদ নাগেশ্বরীর আমতলা এলাকার মমিনুল ইসলামের ছেলে এবং বাবা-মায়ের বিচ্ছেদের পর আফরোজা ওই এলাকায় মায়ের সঙ্গে নানা বাড়িতে থাকত।
স্থানীয়রা জানান, দুপুরে বাড়ির পাশের পুকুরে মাছ ধরতে যায় আহাদ ও আফরোজাসহ তিন শিশু। নানা বাড়ির পাশের পুকুরে মাছ ধরার জন্য ফাঁসি জাল ফেলে রাখে আহাদ ও আফরোজা। সেখানে ওই তিন শিশু জাল থেকে মাছ ধরতে যায়। এ সময় বাড়ির লোকজন সবাই কাজে ব্যস্ত থাকায় তাদের খবর রাখতে পারেননি। কিছুক্ষণ পর এক শিশু বাড়িতে ফিরে আসলেও বাকি দুজনের খোঁজ পাওয়া যাচ্ছিল না। পরে ওই শিশুকে জিজ্ঞাসা করলে বাকি দুজন পুকুরের পানিতে পড়েছে বলে জানতে পারে পরিবারের লোকজন।
পরে পুকুরে নেমে খোঁজার এক পর্যায়ে দুজনকে পানিতে ডুবন্ত অবস্থায় উদ্ধার করে পরিবারের সদস্যসহ স্থানীয়রা। এরপর তাদের নাগেশ্বরী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিলে দ্বায়িত্বরত চিকিৎসক তাদের মৃত ঘোষণা করেন।
নাগেশ্বরী থানার ওসি রুপ কুমার সরকার ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, ‘ঘটনাস্থলে রয়েছি। বিষয়টির খোঁজখবর নিয়ে পরবর্তী প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।’
ভারতে লোকসভা নির্বাচনের কারণে ১৭, ১৮ ও ১৯ এপ্রিল পঞ্চগড়ের বাংলাবান্ধা-ফুলবাড়ি স্থলবন্দর দিয়ে বাংলাদেশ, নেপাল ও ভুটানের সঙ্গে পাথরসহ সকল প্রকার আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য বন্ধ ঘোষণা করেছে ভারত। পাশাপাশি ইমিগ্রেশন চেকপোস্ট দিয়ে পাসপোর্টধারী যাত্রী পারাপারও বন্ধ থাকবে।
ভারতের পশ্চিমবঙ্গের জলপাইগুড়ি জেলা ম্যাজিস্ট্রেট শামা পারভীন স্বাক্ষরিত চিঠিতে এ সিদ্ধান্তের কথা জানানো হয় ।
এদিকে বাংলাবান্ধা স্থলবন্দর লিমিটেডের ইনচার্জ আবুল কালাম আজাদ বুধবার দুপুরে ৩ দিন বন্ধের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
তিনি বলেন, ‘ভারতের লোকসভা নির্বাচন কারনে বাংলাবান্ধা স্থলবন্দর দিয়ে আজ (বুধবার) থেকে শুক্রবার বন্দর দিয়ে দুই দেশের মাঝে সব ধরনের বাণিজ্য বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। তবে এ সময় অফিস যথারীতি খোলা থাকবে।’
শনিবার (২০ এপ্রিল) সকালে স্থলবন্দর দিয়ে পুনরায় আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রম শুরু হবে বলেও জানান এ কর্মকর্তা।
বাংলাবান্ধা স্থলবন্দর ইমিগ্রেশন চেকপোস্ট কর্মকর্তা অমৃত অধিকারী জানান, দুই দেশের আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য বন্ধের সঙ্গে পাসপোর্টধারী যাত্রী যাওয়া-আসাও বন্ধ থাকবে।
হঠাৎ করে এমন সিদ্ধান্তের কারণে দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে এই বন্দর দিয়ে পার হতে আসা যাত্রীরা পড়েছেন বিপাকে। বিশেষ করে, জরুরি চিকিৎসার জন্য যাতায়াতকারী মানুষের দূর্ভোগ বেড়েছে।
আরও পড়ুন:কুমিল্লার হোমনায় এক নারীকে তার ছেলে হত্যা করেছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
উপজেলার নিলখী ইউনিয়নের লালবাগ এলাকায় বুধবার বেলা ১১টার দিকে তার মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ।
প্রাণ হারানো রায়জুলের নেসা (৬৫) হোমনা থানার নিলখী ইউনিয়নের লালবাগ এলাকার প্রয়াত চাঁদ মিয়ার স্ত্রী। এ ঘটনায় ছেলে আবুল হোসেনকে (৪৫) আটক করেছে পুলিশ।
হোমনা থানার ওসি জয়নাল আবেদীন বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, আবুল হোসেন তার মাকে নিয়ে একই ঘরে থাকতেন। মঙ্গলবার রাতে তিনি তার মায়ের সঙ্গে ছিলেন।
তিনি জানান, রায়জুলের নেসার মাথায় ধারালো অস্ত্র দিয়ে আঘাত করা হয়েছে। মরদেহ উদ্ধারের সময় ছেলে আবুল হোসেন ঘরে ছিলেন না। পরে সকালে পুলিশ তাকে আটক করে।
স্থানীয়দের বরাত দিয়ে হোমনা থানার ওসি জয়নাল আবেদীন বলেন, ‘ওই ছেলে তার মায়ের সঙ্গে একাই থাকত। তাই আমরা তদন্তের স্বার্থে তাকে আটক করেছি। মরদেহ কুমিল্লা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। এ বিষয়ে তদন্ত চলমান।’
মন্তব্য