দেশের উপকূলে আঘাত হানেনি ইয়াস। আছড়ে পড়েছে পাশের দেশের ওড়িশায়। তবে এই ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে মঙ্গলবার রাত থেকে বুধবার সারা দেশে চার শিশুসহ সাতজনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে।
জোয়ারে পানিতে প্লাবিত হয়েছে নিম্নাঞ্চল। ভেসে গেছে চিংড়ির ঘের। নষ্ট হয়েছে ফসলের জমি। ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা পরিদর্শন করেছেন প্রশাসনের লোকজন। বিভিন্ন স্থানে দেয়া হয়েছে সহায়তা। তবে কী পরিমাণ ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে তার সুনির্দিষ্ট তথ্য পাওয়া যায়নি।
কোন উপজেলায় কতজন পানিবন্দি
জোয়ারের পানিতে বাগেরহাটের চার উপজেলার প্রায় ৩ হাজার পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। ভেসে গেছে ২ হাজার ৯১টি চিংড়ি ঘের। তলিয়ে গেছে কাঁচা-পাকা রাস্তা।
মোরেলগঞ্জ উপজেলার পৌর সদর, বারইখালী, খাউলিয়া, বহরবুনিয়া, পুটিখালী ও বলইবুনিয়া ইউনিয়নে পানিবন্দি প্রায় ১ হাজার পরিবার।
প্রায় ১১শ পরিবার পানিবন্দি শরণখোলা উপজেলার খোন্তাকাটা, সাউথখালি ও রায়েন্দা ইউনিয়নের বগি, চালতাখালী, আশারকোল, গাবতলা, কদমতলা ও খুড়িয়াখালী গ্রামে।
উপজেলার সাউথখালি ইউনিয়নের বগি গ্রামের বাসিন্দা আব্দুর রাজ্জাক আকন বলেন, ‘দুপুরের পর থেকে জোয়ারের পানি নামতে শুরু করেছে। পানি নামতে শুরু করলেও এখনও আমরা জলমগ্ন অবস্থায় আছি। বাড়ির আশপাশে ডোবা নালা ও খালে পানি আটকে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়েছে।’
মোংলা উপজেলা চিলা, চাঁদপাই ও বুড়িরডাঙ্গা ইউনিয়নের প্রায় ৮শ পরিববার পানিবন্দি। শতাধিক পরিবার পানিবন্দি রামপাল উপজেলার হুকরা, বাঁসতলি ও পেড়িখালী ইউনিয়নের তালবুনিয়া, লাজনগর ও শ্রফলতলা গ্রামে।
বাগেরহাট পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী বিশ্বজিৎ বৈদ্য বলেন, জোয়ারের পানি নেমে যাচ্ছে। জেলার নিম্নাঞ্চলের কিছু গ্রামের মানুষ এখনও পানিবন্দি রয়েছে। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে নিম্নাঞ্চলগুলোর পানিও দ্রুত নেমে যাবে।
শরণখোলা উপজেলা চেয়ারম্যান রায়হান উদ্দিন শান্ত বলেন, ‘পানি নামতে শুরু করেছে। বলেশ্বর নদী তীরের এলাকাগুলোতে এখনও পানি রয়েছে। তবে সমস্যা হচ্ছে পানিতে ডোবা, নালা, খাল ও পুকুর পানি আটকে থেকে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়েছে।’
বাগেরহাট জেলা মৎস্য কর্মকর্তা এস. এম রাসেল বলেন, জোয়ারের পানির প্রভাবে জেলার দুই হাজার ৯১টি চিংড়ি ঘের ভেসে গেছে। এর মধ্যে রামপালে নয়শ ১৭টি, মোংলায় ছয়শ ৮৫টি, মোরেলগঞ্জে তিনশ ৪৫টি ও শরণখোলায় একশ ৪৪টি ঘের ভেসে গেছে।
মোরেলগঞ্জর নিশারবাড়ীয়া গ্রামের চাষি রুবেল শরিফ বলেন, ‘মোর ছোট বড় মিল্লাহ ৬ বিঘার দুইডা ঘের আছে। ধার দেনা কইরা দুই লাখ টাহার মাছ ছারছালাম, সব ভাসাইয়া লইয়া গেছে। মোর এহন আর কিছু নাই।’
রামপালের হুকরা গ্রামের বাসিন্দা চাষি মনোরঞ্জর ঢালি বলেন, ‘সব মিলে আমার ১২ বিঘার তিনটি ঘের রয়েছে। যার মধ্যে দুটি পুরোপুরি ভেসে গেছে। তিন লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে আমার। আমার মতো গ্রামের অন্য চাষিদেরও একই অবস্থা। আমাদের পুরো উপজেলার মাছ চাষিদের সবাই কম বেশি ক্ষতিগ্রস্ত।’
ভোলার উপকূলীয় এলাকার ৩০টি চর প্লাবিত হয়েছে। এতে পানিবন্দি হয়ে পড়েছে অন্তত ৫০ হাজার মানুষ। তলিয়ে গেছে কমপক্ষে ১০ হাজার হেক্টর জমির আউশ ধান ও সবজি।
দিনভর মেঘনার পানি বিপৎসীমার ৬৭ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে।
প্রবল জোয়ারের চাপে জেলার বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধের ৪০ মিটার অংশ ভেঙে গেছে। এ ছাড়া আরও ১৫টি পয়েন্ট ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের প্রভাবে বুধবার দুপুরের পর মেঘনায় জোয়ারের পানিতে তলিয়ে যায় বিস্তীর্ণ জনপদ। ঘরবাড়ি, রাস্তাঘাট ডুবে যাওয়ার পাশাপাশি ভেসে গেছে পুকুর ও মাছের ঘের। তলিয়ে গেছে কমপক্ষে ১০ হাজার হেক্টর জমির আউশ ধান ও সবজি।
উপকূলে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। অনেকেই আশ্রয় নিয়েছে সাইক্লোন সেন্টারে।
অতি জোয়ারে ঢালচর, কুকরি-মুকরি, চরপাতিলা, চরজ্ঞান, সোনার চর, কুলাগাজীর তালুক, চর যতিন, চর শাহজালাল ও কলাতলীর চরে ৩ থেকে ৫ ফুট উচ্চতার জলোচ্ছ্বাস হয়েছে।
সাগর মোহনায় ডালচরের ইউনিয়নের মরজিনা বেগম বলেন, ‘আমাগো খোঁজখবর কেউ রাহেনা। গত তিনডা দিন ধইরা পানির লগে যুদ্ধ কইরা টিক্কা আছি। পানি উঠলে আমাগো দুরভোগের শেষ নাই। রান্না করতো পারি না, খাইতো পারি না। পোলাই ছাউন লইয়া অনেক কষ্টের মইদ্ধে আছি। ভানের পানিতো আমাগো ঘর পইরা গেছে।
‘এহন ঘর কেমনে ঠিক করমু পোলাইন ছাউন লইয়া কোন জায়গা থাকমু সেই চিন্তায় ও বাচি না। শুধু আমি না। আমাগো মতো অনেক মাইনষের ঘর দুয়ার পানিতে ভাসাইয়া লয়া গেছে মাথা গোছানের মতো জায়গা নায়। এহন সরকার যদি আমাগো দিকে চায় তাহইলে আমাগো কিছুডা রক্ষা হইব।’
পানি উন্নয়ন বোর্ডের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী বাবুল আক্তার জানান, বাঁধের বাইরে যেসব নিচু এলাকা রয়েছে, সবগুলো তলিয়ে গেছে।
পানি উন্নয়ন বোর্ড জানিয়েছে, জেলায় ৩২৫ কিলোমিটার বাঁধের মধ্যে ৭৫ কিলোমিটার বাঁধ সিসি ও জিও ব্যাগে মোড়ানো থাকলেও ২৫০ কিলোমিটার বাঁধ মাটির তৈরি। যার মধ্যে প্রায় ২ কিলোমিটার ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
চরফ্যাশনে বাঁধের ৫টি পয়েন্ট, মনপুরায় ৩টি পয়েন্ট, বোরহানউদ্দিনে ২টি, লালমোহনে ২টি, তজুমদ্দিন, দৌলতখান ও সদরে ১টি করে পয়েন্ট ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত বাঁধ মেরামতের কাজ করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন ভোলা পানি উন্নয়ন বোর্ডের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী বাবুল আক্তার।
ইয়াসের প্রভাবে পানির উচ্চতা বৃদ্ধি পাওয়ায় কক্সবাজার জেলার নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। উপকূলীয় এলাকাগুলোতে উপড়ে পড়েছে গাছপালা। বিধ্বস্ত হয়েছে পাঁচ শতাধিক ঘরবাড়ি। জোয়ারের পানির তোড়ে ভেঙে গেছে সেন্টমার্টিনের প্রধান জেটিঘাট। টেকনাফের শাহপরীরদ্বীপে বেড়িবাঁধের ব্লকে ধস নেমেছে।
সদর, মহেশখালী, পেকুয়া, চকরিয়া ও টেকনাফের ১৬ ইউনিয়নে দুই হাজার ৯৬ টন লবণের ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।
শহরের সমিতিপাড়া, নুনিয়ারছড়া পানিরকুপপাড়া, গোদারপাড়াসহ অন্তত ৮টি এলাকায় ঘরবাড়ি প্লাবিত হয়েছে। এতে পানিবন্দি হয়ে পড়ে হাজারও মানুষ।
সেন্টমার্টিন ইউনিয়ন পরিষদের মেম্বার হাবিব খান বলেন, দ্বীপে অর্ধশতাধিক ঘরবাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। টেকসই বেড়িবাঁধ নির্মাণ করা না হলে যে কোনো সময় সেন্টমার্টিন তলিয়ে যাবে বলে শঙ্কা প্রকাশ করেন তিনি।
মাতারবাড়ির ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মাস্টার মাহমদুল্লাহ্ জানিয়েছেন, জোয়ারের পানিতে মাতারবাড়ির ইউনিয়নের ৪ কিলোমিটার বেড়িবাঁধের বিভিন্ন অংশ ভেঙে গেছে। এরইমধ্যে ৫০ থেকে ৮০টি ঘরবাড়ি ভেঙে গেছে। স্থানীয় প্রশাসনের তরফ থেকে ক্ষতিগ্রস্ত লোকজনকে খাদ্য সহায়তা দেয়া হচ্ছে।
কুতুবদিয়ার বাসিন্দা মো. সিকদার জানান, কুতুবদিয়ার উত্তর ধুরুং, আলী আকবরডেইল ও কৈয়ারবিল ইউনিয়নে অস্বাভাবিক জোয়ারের পানিতে বেড়িবাঁধ ভেঙে ২০টির বেশি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে।
এতে করে প্রায় শতাধিক ঘরবাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। পানিবন্দি হয়ে পড়েছে হাজার হাজার মানুষ।
একইভাবে মহেশখালীর ধলঘাটাসহ বিভিন্ন এলাকায় বেড়িবাঁধ ভেঙে প্রায় অর্ধশতাধিক ঘরবাড়ি তলিয়ে গেছে বলে জানিয়েছেন স্থানীয় সংবাদকর্মী রকিয়ত উল্লাহ।
চট্টগ্রামের চারটি উপজেলায় বেড়িবাঁধ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তবে কোনো হতাহতের ঘটনা ঘটেনি।
জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা সজীব কুমার চক্রবর্তী নিউজবাংলাকে বলেন, ‘উপকূলীয় চার উপজেলায় জোয়ারের পানিতে বেড়িবাঁধ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এরমধ্যে বাঁশখালী উপজেলার গণ্ডামারা, ছনুয়া ও খানখানাবাদে বেড়িবাঁধ ভাঙনের মধ্যে পড়েছে।
‘সেখানে পানি বেড়িবাঁধের ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে। সন্দ্বীপ উপজেলার সারিকাইত ইউনিয়নে বেড়িবাঁধের একটি অংশে প্রায় পাঁচ মিটার ভেঙে পানি ঢুকে পড়েছে।’
তিনি আরও বলেন, উপকূলীয় আনোয়ারা উপজেলায় সাঙ্গু নদীর তীরে রায়পুর ইউনিয়নে একটি বেড়িবাঁধ ভাঙনের ঝুঁকির মধ্যে পড়েছে। জোয়ারের পানি নদী তীরের কয়েকটি বসতঘরেও ঢুকেছে। এ ছাড়া সীতাকুণ্ড উপজেলার বাঁশবাড়িয়া ইউনিয়নের আখিলপুর এলাকায় বেড়িবাঁধ ভেঙে পানি ঢুকেছে।
অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) এস এম জাকারিয়া জানান, উপকূলীয় চার উপজেলায় বেড়িবাঁধ ভেঙে পানি ঢুকেছে। তবে ক্ষয়ক্ষতি হয়নি। যেসব বেড়িবাঁধ ভেঙেছে সেগুলো মেরামতের জন্য তাৎক্ষণিক নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
খুলনার পাইকগাছা, দাকোপ ও কয়রা উপজেলায় ঘূর্ণিঝড় ইয়াসে ক্ষতিগ্রস্ত ১১টি ইউনিয়নের ১৪টি স্থান পরিদর্শন করেছেন জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ হেলাল হোসেন।
এ সময় তিনি ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের মাঝে শিশু খাদ্য, গো-খাদ্যসহ পাঁচশত সাধারণ মানুষের মাঝে ত্রাণসামগ্রী বিতরণ করেন। সংশ্লিষ্ট সব দপ্তরের মধ্যে সমন্বয় করে পরিস্থিতি মোকাবেলার পরামর্শও দেন তিনি।
পরিদর্শনকালে খুলনার পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মাহাবুব হাসান, সিভিল সার্জন নিয়াজ মোহাম্মদ, স্থানীয় সরকার বিভাগের উপপরিচালক ইকবাল হোসেন, পাইকগাছা উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আনোয়ার ইকবাল, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী, জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলীসহ বিভিন্ন ইউনিয়নের চেয়ারম্যানগণ উপস্থিত ছিলেন।
আরও পড়ুন:
অবৈধভাবে ভারতে প্রবেশের পর নিরাপত্তাহীনতায় পুনরায় বাংলাদেশে অনুপ্রবেশের সময় গারো পাহাড় সীমান্তে মানব পাচারকারী চক্রের দুই সদস্যসহ ৭ জনকে আটক করেছে বিজিবি।
সোমবার (২৫ আগস্ট) সকাল পৌণে সাতটার দিকে শেরপুরের ঝিনাইগাতি উপজেলার নকশি সীমান্ত পথে নকশি ক্যাম্পের টহলরত বজিবি সদস্যরা তাদের আটক করে বিকেলে পুলিশের কাছে হস্তান্তর করে।
বিষয়টি ২৬ আগষ্ট সকালে বিজিবি পক্ষ থেকে নিশ্চিত করা হয়।
আটককৃতরা হলো মানব পাচারকারী চক্রের সদস্য নালিতাবাড়ী উপজেলার পোড়াগাঁও ইউনিয়নের বুরুঙ্গা গ্রামের নুরুল ইসলামের ছেলে রমজান আলী (২৪) ও আসমত আলীর ছেলে রাসেল (১৬)। আটক অনুপ্রবেশকারীরা হলো, নড়াইল জেলার কালিয়া থানার বোমবাঘ গ্রামের শামীম শেখ (২৩), আফসানা খানম (২২), রুমা বেগম (৩২), মিলিনা বিশ্বাস (২৮) ও তিন বছর বয়সী শিশু কাশেম বিশ্বাস।
বিজিবি এক প্রেসবিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে জানায়, মাথাপিছু ২০ থেকে ৩০ হাজার টাকার বিনিময়ে গত ২৩ আগস্ট রাতের আধারে নালিতাবাড়ীর সীমান্ত এলাকা দিয়ে অবৈধ পথে নারী এবং শিশুসহ ৫ বাংলাদেশীকে ভারতে পাঠায় মানব পাচারকারী রমজান আলী ও রাসেল। কিন্তু ভারতীয় পুলিশের তৎপরতায় নিরাপত্তাহীনতায় পড়ে এ পাঁচ বাংলাদেশী। এ কারণে ২৫ আগষ্ট সোমবার সকাল পৌণে সাতটার দিকে ঝিনাইগাতির নকশি সীমান্তের কালিমন্দির এলাকা দিয়ে পুনরায় তারা বাংলাদেশে প্রবেশ করে। এসময় টহলরত বিজিবি সদস্যরা টের পেয়ে সবাইকে আটক করে। পরে মানব পাচারে জড়িত দুইজনের বিরুদ্ধে মানব পাচার প্রতিরোধ ও দমন আইনে এবং অন্য ৫ জনের বিরুদ্ধে অবৈধভাবে ভারতে প্রবেশের অপরাধে নালিতাবাড়ী থানায় মামলা দায়ের করা হয় এবং সবাইকে নালিতাবাড়ী থানা পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়।
ময়মনসিংহ বিজিবি’র ৩৯ ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেঃ কর্ণেল মেহেদী হাসান বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, বিজিবির পক্ষ থেকে এ ধরনের অভিযান চলমান থাকবে।
ঝালকাঠিতে গ্রাহকদের চাহিদা বিবেচনায় এনে ব্রান্ডশপ লোটো ও লি কুপার প্রতিষ্ঠানটি তাদের ১৩২তম ফ্লাগশিপ আউটলেট উদ্বোধন করেছে।
এক্সপ্রেস লেদার প্রোডাক্ট লিঃ এর ডেপুটি ম্যানেজিং ডাইরেক্টর কাজী জাভেদ ইসলাম সহ কোম্পানির অন্যান্য কর্মকর্তাবৃন্দ ও স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গদের সাথে নিয়ে ফিতা কেটে আউটলেটটি উদ্বোধন করেন ঝালকাঠির পুলিশ সুপার উজ্জ্বল কুমার রায়।
পৌর শহরের সাধনার মোড়ে মঙ্গলবার ২৬ আগষ্ট সকাল ১০টায় লোটো ও লি কুপারের ফ্ল্যাগশিপ আউটলেটদ্বয়ের শুভ উদ্বোধন আনুষ্ঠানে ব্যবসায়ী নেতৃবৃন্দ, বিভিন্ন পর্যায়ের গ্রাহক ও গন্যমান্য ব্যক্তিবর্গ উপস্থিত ছিলেন।
ঝালকাঠিতে কোম্পানীর এ যাত্রার প্রথম দিনে স্থানীয় ফ্যাশন সচেতন তরুণ তরুণীরা তাদের পছন্দের পন্য কালেকশন বেছে নিতে ভীর জমায়।
কোম্পানীর পক্ষ থেকে জানানো হয় প্রথম তিনদিনের প্রতিদিন প্রথম ৩০ জন পাবেন ৫০% ছাড়, ২য় ৩০ জন পাবেন ৪০% ছাড়, ৩য় ৩০ জন পাবেন ৩০% ছাড়, ৪র্থ ৩০ জন পাবেন ২০% ছাড় এবং তৎপরবর্তী সকল কাস্টমার পাবেন ১০% ছাড়। এই বিশেষ ছাড় ২৬শে আগষ্ট থেকে শুরু হয়ে ২৮ তারিখ পর্যন্ত চলমান থাকবে
নওগাঁয় সপ্তম শ্রেণীর এক মাদ্রাসা শিক্ষার্থীকে আটক রেখে ধর্ষণ মামলায় আ: সালাম (৩৮) নামে এক আসামীকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছে আদালত। একই সঙ্গে এক লাখ টাকা অর্থদন্ড ও অনাদায়ে আরও ছয় মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়।
রোববার (২৪ আগস্ট) দুপুর ১২টার দিকে নওগাঁর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-২ এর বিচারক মেহেদী হাসান তালুকদার এ রায় দেন।
যাবজ্জীবনপ্রাপ্ত আ: সালাম সদর উপজেলার বর্ষাইল মধ্যপাড়া গ্রামের বাসিন্দা। রায় ঘোষণার সময় তিনি আদালতে উপস্থিত ছিলেন।
আদালত সূত্রে জানা যায়, ভিকটিম ওই শিক্ষার্থীর পরিবার পত্নীতলা উপজেলায় ভাড়া থাকতেন। ভাঙ্গারী ব্যবসার সুবাদে আসামী আ: সালামও পাশাপাশি একটি বাড়িতে ভাড়া থাকতেন। ভিকটিম মাদ্রাসায় যাওয়া আসার পথে আ: সালাম বিভিন্ন সময় কু-প্রস্তাব দিতো এবং রাস্তাঘাটে বিরক্ত করতো। বিষয়টি জানাজানি হলে আসামী আ: সালাম ওই ভিকটিমের পরিবারকে গালিগালাজ ও ভয়ভীতি দেখাতো। এরই একপর্যায়ে ২০২২ সালের ১১ জুলাই বিকেল তিনটার দিকে আসামী আ: সালাম একটি বাজার এলাকা থেকে ওই শিক্ষার্থীকে অপহরণ করে নওগাঁ সদর উপজেলার ভবানীপুর দক্ষিন পাড়া গ্রামের মোজাফ্ফর রহমানের ভাড়া বাড়িতে আটক রেখে একাধিকবার ধর্ষণ করে। বিষয়টি বুঝতে পেরে ওই শিক্ষার্থীর বাবা পত্নীতলা থানায় অভিযোগ করলে র্যাব ওই বাড়ি থেকে আসামিকে গ্রেফতার ও মেয়েকে উদ্ধার করে। পরে তদন্তকারী কর্মকর্তা তদন্ত শেষে ঘটনার সত্যতা থাকায় আসামী আ: সালামসহ চার জনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করে। আদালত ১৭ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য গ্রহন শেষে আজ আ: সালামকে যাবজ্জীবন কারাদন্ড এবং একই সঙ্গে এক লাখ টাকা অর্থদন্ড ও অনাদায়ে আরও ছয় মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেয়। বাকি আসামীদের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমানিত না হওয়ায় তাদেরকে খালাস দেওয়া হয়।
মামলার এ রায়ে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী রেজাউল করিম সন্তোষ প্রকাশ করেন। আসামী পক্ষের আইনজীবী ফাহমিদা কুলসুম উচ্চ আদালতে আপিল করার কথা জানান।
জয়পুরহাটের আক্কেলপুর উপজেলার রায়কালী ইউনিয়নের বালুকাপাড়া গ্রামে রাগের মাথায় স্ত্রীকে তালাক দিয়ে পুনরায় তাকে বিয়ে করায় এক দম্পতিকে দেড় বছর ধরে 'সমাজচ্যুত' করে রাখা হয়েছে। শুধু তাই নয়, এ বিষয়ে নালিশ দেওয়ার জের ধরে পেটানো হয় দিনমজুর আব্দুল জলিল প্রামানিককে। প্রতিপক্ষের লোকজনের মারধরে এতে তার বাম হাতের হাঁড় ভেঙে গেছে।
এঘটনায় তিনি একটি থানায় অভিযোগ করেছেন। গত মঙ্গলবার রাতে সেটি মামলাটি হিসেবে রের্কড করা হয়। তবে মামলার এজাহারে সমাজচ্যুত করে রাখার বিষয়টি উল্লেখ করা হয়নি।
সরেজমিনে বালুকাপাড়া গ্রামে গিয়ে আব্দুল জলিলকে ১৮ মাস ধরে সমাজচ্যুত করে রাখার তথ্য জানা গেছে। আব্দুল জলিলের সমাজচ্যুত করার ঘটনাটি স্থানীয় রায়কালী ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান মো. আব্দুর রশীদ মন্ডলও অবগত আছেন। তিনি দুই পক্ষকে ইউপি কার্যালয়ে ডেকেও সমাজচ্যুত করে রাখার বিষয়টি সমাধান করতে পারেনি।
গ্রামবাসী ও ভুক্তভোগী পরিবার সূত্রে জানা যায়, ২০২৪ সালের ২৭ ফেব্রুয়ারি পারিবারিক কলহের কারণে আব্দুল জলিল প্রামানিক রাগের মাথায় তার স্ত্রীকে তালাক দেন। এঘটনার ২৯ দিন পর তিনি আবারও স্ত্রীকে বিয়ে করেন। এ ঘটনায় গ্রাম্য মাতব্বরেরা ক্ষুব্ধ হয়ে আব্দুল জলিল প্রামানিকের পরিবারকে সমাজচ্যুত করে রাখেন। সেই সময় জলিল প্রামানিক বিষয়টি আক্কেলপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও)কে জানান। ইউএনও রায়কালী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুর রশীদ মণ্ডলকে বিষয়টি সমাধানের দায়িত্ব দেন। ইউপি চেয়ারম্যান উভয়পক্ষকে নিয়ে ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয়ে বৈঠকে বসেছিলেন। তবে কার্যত কোন কোনো সমাধান করতে পারেননি। এতে গ্রাম্য মাতব্বরেরা আব্দুল জলিলের ওপর আরও ক্ষুব্ধ হন। সমাজচ্যুত করে রাখা আব্দুল জলিল গত ১৫ আগস্ট রাত আটটার দিকে গ্রামের মসজিদের দিকে রওনা হন। এসময় মাতব্বরেরা তাকে দুই দফায় প্রচন্ড মারধর করেন। এতে তার বাম হাতের হাঁড় ভেঙে যায়। তিনি চিকিৎসা নিয়ে থানায় আট জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন।
বালুকাপাড়া গ্রামের বাসিন্দা আজিজুল ইসলাম বলেন, দেড় বছর আগে আব্দুল জলিল তার স্ত্রীকে তালাক দিয়েছিলেন। কয়েক দিন পর আবার সংসার শুরু করেন। এনিয়ে গ্রামের মাতব্বরেরা আব্দুল জলিল প্রামানিককে সমাজচ্যুত করেন। এনিয়ে কথা কাটাকাটির জেরে মারপিটের ঘটনা ঘটেছে।
স্থানীয় বৃদ্ধা লুৎফন নেছা বলেন, আমি কাজ করতে পারিনি। আব্দুল জলিলের বউ আমার বাড়িতে এসে জবাই করা মুরগির তরকারি রান্না করে দিয়েছিল। আমি জলিলের বাড়িতে গিয়ে এক বাটি মুরগির মাংসের তরকারি দিয়ে এসেছি। এতে আমাকেও সমাজচ্যুত করার হুমকি দিয়েছিল।
বালুকাপাড়া গ্রামের মোড়ের দোকানি হাফিজার রহমান বলেন, বউকে তালাক দেওয়ার ঘটনায় আব্দুল জলিল প্রামানিককে গ্রামের মাতব্বরেরা সমাজচ্যুত করেছেন। আব্দুল জলিল গ্রামের সামাজিক কোন কর্মকান্ডে অংশ নিতে দেয় না।
আব্দুল জলিল প্রামানিক বলেন, আমি রাগের মাথায় স্ত্রী তালাক দিয়েছিলাম। ২৯ দিন পর আবার বিয়ে পড়ে নিয়েছি। একারণে গ্রামের মাতব্বর রকি খান, মিল্টন খাঁ, আবু সুফিয়ানসহ আরও ১০-১২ জন আমাকে সমাজচ্যুত করেছেন। রাগের মাথায় স্ত্রীক। তালাক দিলে পুনরায় বিয়ে করা যাবে ঢাকার একজন মুফতির মতামত নিয়ে আসার পরও তারা মানেনি। তারা বলছে হিল্লা বিয়ে ছাড়া আমার বিয়ে বৈধ হবে না। তারা আমাকে দীর্ঘ দেড় বছর ধরে গ্রামের মসজিদে নামাজ আদায়ে করতে ও জানাজায় শরিক হতে বা দেননি। মিলাদ মাহফিল দাওয়াত দেওয়ার মাতব্বরদের চাপে পর ফিরিয়ে নেওয়া হয়েছে। এমনকি গ্রামের কারও জমিতে দিনমজুরি কাজও করতে পারব না বলে লোকজন জানিয়ে দেন। একারণে কেউ আমাকে কাজে নেয় না। সমাজচ্যুত করার জের ধরে মসজিদে যাওয়ার সময় মাতব্বরদের একাংশের লোকজন আমাকে মেরে হাত ভেঙে দিয়েছেন।
গ্রামের মাতব্বদের একজন মো. মিল্টন খাঁ। তিনি আব্দুল জলিলের দায়ের করা মামলার দুই নম্বর আসামি। তাকে তার বাড়িতে পাওয়া যায়নি। মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, আব্দুল জলিল সমাজ বিরোধী কাজ করেছেন। একারণে গ্রামের লোকজন তাকে সমাজচ্যুত করেছেন। আব্দুল জলিল সমাজ বিরোধী কি কাজ করেছেন এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, আব্দুল জলিল তার স্ত্রীকে তালাক দিয়ে আবার স্ত্রীকে নিয়েছেন। এটা সমাজ বিরোধী কাজ।
আক্কেলপুর রায়কালী ইউপির চেয়ারম্যান আব্দুর রশীদ মন্ডল বলেন, আব্দুল জলিল মুক্তিযোদ্ধার সন্তান। তিনি রাগের মাথায় স্ত্রীকে তালাক দিয়েছিলেন। এঘটনায় গ্রামের মাতব্বরেরা আব্দুল জলিলকে সমাজচ্যুত করেন। আব্দুল জলিল ইউএনও স্যারের কাছে অভিযোগ দিয়েছিলেন। ইউএনও স্যার আমাকে ঘটনাটি সমাধানের দায়িত্ব দিয়েছিলেন। উভয়পক্ষকে ইউপি কার্যালয়ে ডেকে নিয়ে বৈঠক করেছি। আব্দুল জলিল যেন সামাজিকভাবে মিশতে পারে সেটি বলেছি। সমাজচ্যুতের ঘটনার জের ধরে আব্দুল জলিলকে মারধর করা হয়েছে। এতে তার বাম হাত ভেঙেছে বলে জেনেছি।
আক্কেলপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শফিকুল ইসলাম বলেন, আব্দুল জলিল প্রামানিক থানায় একটি অভিযোগ দিয়েছিলেন। অভিযোগটি তদন্ত করে ঘটনার সত্যতা পাওয়ায় সেটি মামলা হিসেবে রের্কড করা হয়েছে। আসামি আট জনের মধ্যে ইতিমধ্যে আদালত থেকে পাঁচজন আসামি জামিন নিয়েছেন, অন্য আসামিদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
জাতীয় রাজস্ব বোর্ড ২০২৫-২০২৬ অর্থবছরের জুলাই মাসে ২৭,২৪৯ কোটি টাকা রাজস্ব আদায় করেছে। বিগত ২০২৪-২০২৫ অর্থ বছরের একই মাসে রাজস্ব আদায়ের পরিমাণ ছিল ২১,৯১৬ কোটি টাকা। জুলাই-২০২৫ মাসে বিগত জুলাই-২০২৪ মাসের তুলনায় ৫,৩৩৩ কোটি টাকা বেশি রাজস্ব আদায় হয়েছে। জুলাই ২০২৫ মাসে রাজস্ব আদায়ের প্রবৃদ্ধির হার ২৪.৩৩%।
জুলাই’২৫ মাসে সবচেয়ে বেশি রাজস্ব আদায় হয়েছে স্থানীয় পর্যায়ের মূসক থেকে। এ খাত থেকে আদায় হয়েছে ১১,৩৫২ কোটি টাকা। গত অর্থবছরের জুলাই’২৪ মাসে এই খাতে আদায়ের পরিমান ছিল ৮,৫৭১ কোটি টাকা। জুলাই ২০২৫ মাসে স্থানীয় পর্যায়ের মূসক আদায়ের প্রবৃদ্ধির হার ৩২.৪৫%।
আয়কর ও ভ্রমন কর খাতে জুলাই’২৫ মাসে রাজস্ব আদায় হয়েছে ৬,২৯৫ কোটি টাকা যা জুলাই’২০২৪ মাসের একই খাতে আদায়কৃত ৫,১৭৫ কোটি টাকার চাইতে ১,১২০ কোটি টাকা বেশি। আয়কর ও ভ্রমন করের ক্ষেত্রে জুলাই ২০২৫ মাসের আদায়ের প্রবৃদ্ধির হার ২১.৬৫%।
২০২৫-২০২৬ অর্থবছরের জুলাই মাসে আমদানি ও রপ্তানি খাতে রাজস্ব আদায় হয়েছে ৯,৬০২ কোটি টাকা। গত অর্থবছরের জুলাই’২৪ মাসে এই খাতে আদায় ছিল ৮,১৭০ কোটি টাকা, প্রবৃদ্ধির হার ১৭.৫২%।
রাজস্ব আদায়ের এ ধারা ভবিষ্যতে অব্যাহত রাখার জন্য আয়কর, মূল্য সংযোজন কর এবং কাস্টমস শুল্ক-কর আদায়ে নিয়োজিত কর্মকর্তা-কর্মচারিদের প্রচেষ্টা আরো জোরদার করার জন্য জাতীয় রাজস্ব বোর্ড নানাবিধ কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণ করবে।
সম্মানিত করদাতাগণ আইনের যথাযথ পরিপালন নিশ্চিত করে যথাযথ পরিমান কর পরিশোধের মাধ্যমে দেশ গড়ার কাজের অন্যতম অংশীদার হবেন মর্মে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড আশাবাদী।
কুমিল্লা নাঙ্গলকোটে ইউপি সদস্য আলাউদ্দিনকে বাড়ির সামনে থেকে তুলে নিয়ে গিয়ে কুপিয়ে ও গুলি করে হত্যার ঘটনায় প্রধান আসামিকে ঢাকার হাতিরঝিল রেল মগবাজার রেলগেট এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করে র্যাব। শুক্রবার দিনগত রাতে অভিযানটি শেষ করে র্যাব।
গ্রেফতারকৃত আসামী শেখ ফরিদ (৪৫) নাঙ্গলকোট উপজেলার বক্সগঞ্জ আলীয়ারা গ্রামের আবুল খায়েরের ছেলে।
শনিবার সকাল সাড়ে দশটার দিকে কুমিল্লা অশোকতলা এলাকায় র্যাব অফিসে সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য দেন
র্যাব ১১ এর কুমিল্লার কোম্পানি কমান্ডার মেজর সাদমান ইবনে আলম।
মেজর সাদমান জানান, নাঙ্গলকোটের আলিয়ারা গ্রামে দুই পরিবারের মধ্যে বংশপরম্পরায় একটি বিরোধ চলে আসছিল। গেল গেল ২৫ জুলাই গরুর ঘাস খাওয়া কে কেন্দ্র করে দুই পরিবারের মধ্যে সংঘর্ষ হয়।
সেদিন দফায় দফায় সংঘর্ষে উভয় পক্ষের ১৫ জন গুলিবিদ্ধসহ ২৫ জন আহত হয়।
এ ঘটনার রেশ ধরে গেলো ৩ আগস্ট দুপুরে আলিয়ারা গ্রামের বাসিন্দা আলাউদ্দিন তার চাচাতো ভাইয়ের জানাজার নামাজ শেষে বাড়ি ফেরার পথে দুর্বৃত্তরা তাকে একটি সিএনজিতে তুলে নিয়ে গুলি ও কুপিয়ে হত্যা করে।
পরে এ ঘটনায় ৫ আগস্ট নিহতের ছেলে বাদী হয়ে নাঙ্গলকোট থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।
কাপ্তাই হ্রদের পানির উচ্চতা বিপদসীমা অতিক্রম করায় নির্ধারিত সময়ের আগেই খোলা হয়েছে কাপ্তাই পানি বিদ্যুৎ কেন্দ্রের সব জলকপাট। সোমবার (৫ আগস্ট) রাত ১২টা ২ মিনিটে হঠাৎ পানি বাড়তে থাকায় জরুরি ভিত্তিতে কেন্দ্রের ১৬টি জলকপাট ৬ ইঞ্চি করে খুলে দেওয়া হয়।
কর্ণফুলি পানি বিদ্যুৎ কেন্দ্রের ব্যবস্থাপক প্রকৌশলী মাহমুদ হাসান জানান, রাতে লেকের পানির উচ্চতা ১০৮.০৫ ফুট ছুঁয়ে গেলে বিপদসীমা অতিক্রম করে। এতে প্রতি সেকেন্ডে ৯ হাজার কিউসেক পানি কর্ণফুলি নদীতে প্রবাহিত হচ্ছে।
তিনি বলেন, “প্রথমে সোমবার (৪ আগস্ট) বিকেল ৩টায় পানি ছাড়ার সিদ্ধান্ত নিয়ে আমরা পরের দিন মঙ্গলবার সকাল ৯টায় জলকপাট খোলার ঘোষণা দিয়েছিলাম। কিন্তু হঠাৎ অতিরিক্ত পানি প্রবাহের কারণে নির্ধারিত সময়ের আগেই সোমবার রাতেই জলকপাট খুলে দিতে হয়। তবে পরিস্থিতি এখন নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।”
তিনি আরও জানান, কাপ্তাই বিদ্যুৎ কেন্দ্রের ৫টি ইউনিট বর্তমানে সচল রয়েছে, যেগুলোর মাধ্যমে আরও ৩২ হাজার কিউসেক পানি লেক থেকে কর্ণফুলিতে গিয়ে পড়ছে। সবমিলিয়ে পানি নিঃসরণের হার এখন প্রতি সেকেন্ডে ৪১ হাজার কিউসেক।
ভাটি এলাকার জনসাধারণের উদ্দেশে তিনি বলেন, “পানি প্রবাহ বাড়লেও আতঙ্কের কোনো কারণ নেই। পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণে রয়েছে, এবং প্রয়োজনে আমরা আগেভাগেই ব্যবস্থা নেব।”
স্থানীয় প্রশাসন এবং সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকেও এ বিষয়ে আগেই অবহিত করা হয়েছে বলে নিশ্চিত করেন কর্তৃপক্ষ।
মন্তব্য