বজ্রপাতে নেত্রকোণায় আটজনসহ ছয় জেলায় মৃত্যু হয়েছে ১৭ জনের।
মঙ্গলবার বেলা ৩টা থেকে সন্ধ্যা ৬টার মধ্যে এসব প্রাণহানির ঘটনা ঘটে। এ সময় আহত হয় অন্তত ছয়জন।
মৃতদের মধ্যে শিশু, নারী ও স্কুলছাত্র রয়েছে।
নেত্রকোণায় আটজনের মধ্যে খালিয়াজুরীতেই মৃত্যু হয়েছে তিনজনের। দুইজন করে মারা গেছেন কেন্দুয়া ও মদনে। আর একজনের মৃত্যু হয়েছে পূর্বধলায়।
পুলিশ ও স্থানীয় প্রশাসন এসব তথ্য নিশ্চিত করেছে।
কেন্দুয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কাজী শাহ নেওয়াজ নিউজবাংলাকে বলেন, বেলা সাড়ে ৩টার দিকে বজ্রসহ বৃষ্টি শুরু হয়। এ সময় জমিতে কাজ করছিলেন বৈরাটি গ্রামের বায়েজিদ ও কুণ্ডলী গ্রামের ফজলু মিয়া। বজ্রপাতে মৃত্যু হয় তাদের।
খালিয়াজুরী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আরিফুল ইসলাম বলেন, ঝড়-বৃষ্টির সময় পুটিয়ার খালে জগন্নাথপুর গ্রামের ওয়াছেক মিয়া, বিপুল মিয়া ও বাতুয়াইল গ্রামের মনির হোসেন মাছ ধরছিলেন। বজ্রপাতে ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় তাদের।
মদন থানার ওসি জানান, মাঠে খেলার সময় বজ্রপাতে মৃত্যু হয় ফতেপুর গ্রামের আতাবুর ও শরিফের।
এ ছাড়া ঘরের বাইরে অবস্থানকালে বজ্রাঘাতে আহত হন রবিন, সুরমা আক্তার ও রোমান। তাদের স্থানীয় হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
পূর্বধলা থানার ওসি শিবিরুল ইসলাম বলেন, ধলামূলগাও ইউনিয়নের পাকই গ্রামের জুনায়েদ বাড়ির সামনে খেলছিল। বজ্রপাতে ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় তার।
জেলা প্রশাসক কাজি মো. আব্দুর রহমান বলেন, ‘বজ্রপাতে নিহতদের পরিবারকে ১৫ হাজার টাকা করে সহায়তা দেয়া হচ্ছে। আহতরা পাচ্ছেন ২ হাজার টাকা করে।’
ফরিদপুরে বজ্রপাতে নারীসহ চারজনের মৃত্যু হয়েছে।
সদর উপজেলার নর্থ চ্যানেল, পৌরসভার পশ্চিম গঙ্গাবর্দী, মোল্লা ডাঙ্গী মহল্লায় ও মধুখালী উপজেলার চাঁদপুরে এই প্রাণহানির ঘটনা ঘটে।
ফরিদপুর কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
তিনি জানান, পৌরসভার মোল্লাডাঙ্গী মহল্লায় বজ্রপাতে মৃত্যু হয়েছে আনোয়ারা বেগমের। ধান নিয়ে বাড়িতে ফেরার পথে প্রাণ হারান তিনি।
ধান নিয়ে মাঠ থেকে বাড়ি ফেরার পথে বজ্রপাতে মৃত্যু হয়েছে কৃষক কবির মোল্লারও। তিনি পৌরসভার পাঁচ নম্বর ওয়ার্ডের পশ্চিম গঙ্গাবর্দী মহল্লার গোপাল মোল্লার ছেলে।
নর্থ চ্যানেল ইউনিয়নে বজ্রাঘাতে মৃত্যু হয়েছে কৃষক দুলাল খানের। ঝড়-বৃষ্টির সময় তিনি মাঠে কাজ করছিলেন।
এ ছাড়া মধুখালী উপজেলার চাঁদপুরে কবির শেখ নামে এক কৃষক বজ্রপাতে মারা গেছেন।
মানিকগঞ্জ সদর ও ঘিওরে বজ্রপাতে মৃত্যু হয়েছে দুইজনের।
মৃতরা হলেন ঘিওর উপজেলার বরটিয়া রাহাতহাতি গ্রামের আহাম্মদ আলী ও সদর উপজেলার গিলন্ড এলাকার আসিফ হোসেন।
মানিকগঞ্জের ইউএনও মোহাম্মদ ইকবাল হোসেন এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
তিনি জানান, বিকেলে পৌরসভার পৌর এলাকার জমি থেকে ধান কেটে বাড়ি ফেরার সময় বজ্রপাতে মৃত্যু হয় দিনমজুর আহাম্মদ আলীর।
সদর উপজেলার গিলন্ড এলাকায় বন্ধুদের সঙ্গে ঘুড়ি ওড়ানোর সময় বজ্রাঘাতে মৃত্যু হয় স্কুলছাত্র আসিফ হোসেনের। এ সময় আহত হয় তার তিন বন্ধু। আহত আব্দুল্লা ও অনিককে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। শিহাবকে স্থানীয় হাসপাতালে চিকিৎসা শেষে বাড়িতে নেয়া হয়েছে।
বজ্রপাতে এক কৃষি শ্রমিকের মৃত্যু হয়েছে কুমিল্লায়।
হোমনা উপজেলা এ ঘটনা ঘটে।
মৃত কৃষি শ্রমিক আব্দুল মোমেন চান্দেরচর ইউনিয়নের সীতারামপুর গ্রামের তোফাজ্জল হোসেনের ছেলে।
চান্দেরচর ইউপির চেয়ারম্যান আবুল বাশার জানান, গরু আনার জন্য বাড়ির পাশের জমিতে গিয়ে বজ্রাঘাতে মৃত্যু হয় তার।
ময়মনসিংহের তারাকান্দায় বৃষ্টির মধ্যে ফুটবল খেলার সময় বজ্রপাতে আতিকুল নামে এক যুবকের মৃত্যু হয়েছে। এ সময় আহত হয়েছে আরও একজন।
তাকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে।
তারাকান্দা থানার ওসি আবুল খায়ের বলেন, মাঠে ফুটবল খেলার সময় হঠাৎ করেই বজ্রপাতে আতিকুলের মৃত্যু হয়। এ দুর্ঘটনায় থানায় অপমৃত্যু মামলা করা হবে।
বজ্রপাতে এক কৃষিশ্রমিকের মৃত্যু হয়েছে কুমিল্লায়।
হোমনা উপজেলায় এ প্রাণহানির ঘটনা ঘটে।
মৃত কৃষিশ্রমিক আব্দুল মোমেনের বাড়ি চান্দেরচর ইউনিয়নের সীতারামপুর গ্রামে।
এ তথ্য নিশ্চিত করেন চান্দেরচর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আবুল বাশার।
তিনি জানান, আকাশে মেঘ দেখে মোমেন গরু আনার জন্য বাড়ির পাশের জমিতে যান। সেখানে বজ্রপাতে মৃত্যু হয় তার। পরে পরিবারের সদস্যরা মরদেহ উদ্ধার করে বাড়ি নিয়ে আসে।
সুনামগঞ্জের দোয়ারাবাজারে বজ্রপাতে আবু তাহের নামের এক যুবকের মৃত্যু হয়েছে।
দোয়ারাবাজার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের সামনে এ ঘটনা ঘটে।
মারা যাওয়া যুবক দোয়ারাবাজার সদর ইউনিয়নের তেগাঙ্গা গ্রামের তাজ উদ্দিনের ছেলে।
দোয়ারা বাজার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো.নাজির আলম বলেন, তাহের কেনাকাটা করার জন্য দোয়ারাবাজার সদরে আসেন। হঠাৎ করে ঝড়বৃষ্টি শুরু হলে তিনি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ভেতরে আশ্রয় নিতে যান। এ সময় বজ্রাঘাতে ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় তার।
আরও পড়ুন:পাবনার ঈশ্বরদীতে দুই ট্রাকের মুখোমুখি সংঘর্ষে সবুজ প্রামানিক (৩৫) নামে এক ট্রাকচালক নিহত হয়েছেন। এতে আহত হয়েছেন আরও তিনজন।
বৃহস্পতিবার (২ অক্টোবর) সকাল সাড়ে ৬টার দিকে ঈশ্বরদী-পাবনা মহাসড়কের পৌর এলাকার অরণকোলা হারুখালির মাঠসংলগ্ন বটতলায় এ দুর্ঘটনা ঘটে।
নিহত সবুজ প্রামানিক পাবনা সদর উপজেলার মালিগাছা ইউনিয়নের টেবুনিয়া বড়মাটিয়া গ্রামের খোকন প্রামানিকের ছেলে। আহতরা হলেন ফরিদপুর জেলার নগরকান্দা উপজেলার চুকাই গ্রামের নাজমুল হোসেন (৩০), একই উপজেলার কৃষ্টপুর গ্রামের বাবু মিয়া (৩০) এবং মুন্সীগঞ্জ জেলার গজারিয়া উপজেলার আশরাফুল ইসলাম (৩৫)।
সংবাদ পাওয়ার পর সকাল ৬টা ৪০ মিনিটে ঈশ্বরদী ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স স্টেশন থেকে তিনটি ইউনিট দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে যায়। সকাল ৬টা ৪৫ মিনিটে উদ্ধার কাজ শুরু হয় এবং প্রায় এক ঘণ্টা চলার পর সকাল ৭টা ৫৫ মিনিটে উদ্ধার কার্যক্রম শেষ হয়। উদ্ধার কাজে নেতৃত্ব দেন স্টেশনের ওয়্যারহাউজ ইনস্পেক্টর মীর আমিরুল ইসলাম।
তিনি জানান, ঈশ্বরদী ট্রাকস্ট্যান্ড থেকে ছেড়ে যাওয়া একটি খালি ট্রাক পাবনাগামী ছিল। ঘটনাস্থলে পৌঁছালে ঢাকা থেকে আসা একটি পণ্যবাহী ট্রাক নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে বিপরীতমুখী ট্রাকের সাথে মুখোমুখি সংঘর্ষে লিপ্ত হয়। এতে ট্রাকচালক সবুজ প্রামানিক ঘটনাস্থলে নিহত হন এবং অন্য ট্রাকের চালক-হেলপারসহ তিনজন আহত হন। আটকে পড়া সকলকে উদ্ধার করে আহতদের ঈশ্বরদী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে পাঠানো হয় এবং নিহত সবুজের মরদেহ ট্রাকের ভেতর থেকে উদ্ধার করে পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়।
ঈশ্বরদী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুন নূর বলেন, “দুই ট্রাকের মুখোমুখি সংঘর্ষে এক চালক নিহত হয়েছেন এবং তিনজন আহত হয়েছেন। মরদেহ উদ্ধার করে সুরতহাল শেষে ময়নাতদন্তের জন্য পাবনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। পরে স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হবে। এ ঘটনায় সড়ক দুর্ঘটনা আইনে মামলা হয়েছে।”
সড়কের এই অংশটি (পাবনা-লালপুর হাইওয়ে) দুর্ঘটনাপ্রবণ বলে স্থানীয়রা জানিয়েছেন। যানবাহনের অতিরিক্ত গতি ও ঢিলেঢালা নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা দুর্ঘটনা বাড়াচ্ছে বলে এলাকার মানুষের অভিযোগ।
সারাদেশে দিনের তাপমাত্রা কিছুটা কমতে পারে। তবে রাতের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকবে।
আজ (বৃহস্পতিবার) সকাল ৯টা থেকে পরবর্তী ২৪ ঘণ্টার আবহাওয়ার পূর্বাভাসে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
এতে বলা হয়েছে, রংপুর, রাজশাহী, ময়মনসিংহ, ঢাকা, খুলনা, বরিশাল, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের অধিকাংশ জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা হাওয়াসহ হালকা থেকে মাঝারি ধরনের বৃষ্টি বা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে।
পাশাপাশি সারাদেশের কোথাও কোথাও ভারী থেকে অতি ভারী বর্ষণ হতে পারে।
আবহাওয়ার সিনপটিক অবস্থায় বলা হয়েছে, পশ্চিম-মধ্য বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন এলাকায় অবস্থানরত সুস্পষ্ট লঘুচাপ উত্তর-পশ্চিম দিকে অগ্রসর ও ঘন হয়ে প্রথমে নিম্নচাপে এবং পরে গভীর নিম্নচাপে পরিণত হয়েছে।
আজ ভোরে এটি পশ্চিম-মধ্য বঙ্গোপসাগর ও উত্তর-পশ্চিম বঙ্গোপসাগরে অবস্থান করছে এবং আরও পশ্চিম দিকে অগ্রসর হতে পারে। লঘুচাপের বর্ধিতাংশ ভারতের উত্তর প্রদেশ, বিহার, পশ্চিমবঙ্গ এবং বাংলাদেশের দক্ষিণাঞ্চল হয়ে আসাম পর্যন্ত বিস্তৃত রয়েছে। মৌসুমি বায়ু বাংলাদেশের ওপর সক্রিয় এবং উত্তর বঙ্গোপসাগরে প্রবল অবস্থায় রয়েছে।
সকালে ঢাকায় ঢাকায় বাতাসের গতি ছিল দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পশ্চিম দিক থেকে ঘণ্টায় ১০-১৫ কিমি। বাতাসের আপেক্ষিক আর্দ্রতা ছিল ৯৭ শতাংশ।
গতকাল (বুধবার) দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল নরসিংদীতে ৩৫.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
ঢাকায় আজ সূর্যাস্ত হবে সন্ধ্যা ৫টা ৪৫ মিনিটে এবং আগামীকাল সূর্যোদয় হবে ভোর ৫টা ৫১ মিনিটে।
ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে নারায়ণগঞ্জের কাঁচপুর ব্রিজে সড়ক দুর্ঘটনায় দুই ট্রাক চালক নিহত হয়েছেন। বৃহস্পতিবার ভোরে এ দুর্ঘটনা ঘটে।
শিমরাইল হাইওয়ে পুলিশের ইনচার্জ জুলহাস উদ্দিন ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, তারা দুজন একই মালিকের দুটি ট্রাক চালান। ঢাকামুখী দুটি ট্রাকের একটি মহাসড়কের উপর বিকল হয়ে পড়লে অপর ট্রাক সেটিকে টেনে নিয়ে যাচ্ছিল। এক পর্যায়ে ট্রাকটি সেতুর ওপর ঢাকামুখী লেনের সড়ক বিভাজকে আটকে যায়। ধারণা করা হচ্ছে তখন দুই ট্রাকের চালক সড়কে নেমে বিষয়টি পর্যবেক্ষণ করছিলেন। তখনই অজ্ঞাত কোনো গাড়ি তাদের চাপা দেয়। এতে ঘটনাস্থলেই দুজনের মৃত্যু হয়।
তিনি আরও বলেন, ভোর ৪টা থেকে পৌনে ৬টার মধ্যে যেকোনো সময় ঘটনাটি ঘটেছে।
পুলিশ জানায়, নিহতদের বয়স ২৪ থেকে ২৫ বছরের মধ্যে। এদের একজনের পরিচয় নিশ্চিত হওয়া গেছে। তিনি হলেন ময়মনসিংহের রহমতপুর এলাকার রাকিব, যিনি সচল ট্রাকটির চালক ছিলেন।
দুর্ঘটনার পর ট্রাক মালিকের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছে এবং তিনি দ্রুত ঘটনাস্থলে আসছেন বলে পুলিশ জানিয়েছে।
ফেনীর দাগনভূঞা উপজেলার সিলোনিয়া বাজারে যাত্রীবাহী বাস উল্টে তিনজন নিহত হয়েছেন। এতে অন্তত ১০ জন গুরুতর আহত হয়েছেন।
বৃহস্পতিবার (২ অক্টোবর) সকাল সাড়ে দশটার দিকে ফেনী-নোয়াখালী আঞ্চলিক মহাসড়কে এ দুর্ঘটনা ঘটে।
নিহতরা হলেন- দাগনভূঞা উপজেলার জায়ালস্কর ইউনিয়নের দক্ষিণ জায়ালস্কর গ্রামের আবদুল মতিনের ছেলে মো. শ্রাবণ (২০), একই ইউনিয়নের খুশিপুর গ্রামের মো. শহীদুল্লাহর স্ত্রী শামীম আরা বেগম (৫০) ও অজ্ঞাত যুবক (৩০) পরিচয় জানা যায়নি।
পুলিশ ও স্থানীয়রা জানায়, সুগন্ধা পরিবহনের একটি যাত্রীবাহী বাস ফেনী থেকে নোয়াখালীর দিকে যাচ্ছিল। সিলোনিয়া বাজারে পৌঁছালে বাসটি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে বৈদ্যুতিক খুঁটিতে ধাক্কা দিয়ে উল্টে যায়। পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিস ঘটনাস্থলে পৌঁছার আগেই স্থানীয়রা বাস থেকে আহতদের উদ্ধার করে ফেনী জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যায়। সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক তিনজনকে মৃত ঘোষণা করেন।
২৫০ শয্যা ফেনী জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) শোয়েব ইমতিয়াজ নিলয় সড়ক দুর্ঘটনায় তিনজন নিহত হওয়ার তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
মহিপাল হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হারুন উর রশিদ জানান, মৃত্যু ও গুরুতর আহতের খবর পেয়েছি, তবে এর সংখ্যা এখনো জানতে পারিনি। আমাদের পুলিশ কাজ করছে। কী কারণে এমন দুর্ঘটনা হতে পারে তা এখনো নিশ্চিত হওয়া যায়নি।
মৌলভীবাজারের কুলাউড়া পৌর শহরে যৌথ বাহিনীর মোবাইল কোর্টের অভিযানে ৪০ হাজার টাকা জরিমানা আদায় করা হয়েছে।
বুধবার ( ০১ অক্টোবর) কুলাউড়া উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো: আনিসুল ইসলামের নেতৃত্বে যৌথ বাহিনীর অভিযান চলাকালে হেলমেট ও কাগজপত্র বিহীন অবস্থায় মটর সাইকেল চালানোর অপরাধে সড়ক পরিবহন আইন, ২০১৮ এর আওতায় ১২ টি মামলায় মোট ৪০ হাজার টাকা জরিমানা আদায় করা হয় এবং ভবিষ্যতে সকল নিয়ম কানুন মেনে রাস্তায় চলাচল করার জন্য সতর্ক করে দেয়া হয়। মোবাইল কোর্টের অভিযানে সেনাবাহিনী ও পুলিশ বাহিনীর সদস্যরা অংশ গ্রহণ করেন।
দুর্গাপূজা এবং সাপ্তাহিক ছুটি মিলিয়ে টানা চার দিনের ছুটিতে ঢাকা যেন জনমানবশূন্য। ব্যস্ত নগরী হয়ে পড়েছে অনেকটা শান্ত-নিরিবিলি। নেই যানজটের চিরচেনা রূপ, সড়কগুলো রয়েছে প্রায় যানবাহনশূন্য।
সাপ্তাহিক ছুটির সঙ্গে দুর্গাপূজার ছুটি মিলিয়ে বুধবার (১ অক্টোবর) থেকে শনিবার (৪ অক্টোবর) পর্যন্ত ছুটি রয়েছে সরকারি অফিস, ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোতে।
স্বাভাবিক দিনের তুলনায় আজ সড়কে গণপরিবহনসহ অন্যান্য গাড়ির সংখ্যা অনেক কম। জরুরি প্রয়োজনে যারা বের হয়েছেন গণপরিবহন কম থাকায় কিছুটা দুর্ভোগে পড়েছেন তারা। তবে সড়কগুলো অনেকটা ফাঁকা থাকলেও মেট্রোরেলে রয়েছে যাত্রীদের চাপ।
সড়কে রিকশা ও অটোরিকশার আনাগোনাও চোখে পড়ার মতো। স্বল্প দূরত্বে যাতায়াতের জন্য মানুষ এ বাহনগুলোকেই বেছে নিচ্ছেন। তবে যাত্রী কম থাকায় অনেক চালকই অলস সময় পার করছেন। আবার কোথাও কোথাও বিনা অজুহাতে অতিরিক্ত ভাড়া চাওয়ার অভিযোগও পাওয়া গেছে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, রাজধানীর মিরপুর, ফার্মগেট, কারওয়ান বাজার, শাহবাগ, রামপুরা, বনানী, খিলক্ষেত ও উত্তরাসহ রাজধানীর অধিকাংশ সড়কে সকালের দৃশ্য এমনই।
রাস্তাঘাটে তেমন দেখা মিলছে না যানবাহনের। ছুটির দিন হওয়ায় বাসে যাত্রীদের সংখ্যা কম। বাসের হেল্পাররা স্টপেজগুলোতে দীর্ঘ সময় দাঁড়িয়ে যাত্রীদের ডাকছেন। যেখানে অন্যদিনগুলোতে সাধারণ যাত্রীরা জোর করেও কোনো কোনো পরিবহনের দরজা খুলতে পারেন না।
গুলিস্তান থেকে মিরপুরে আসা যাত্রী শাহরিয়ার হাসানের সঙ্গে কথা হয়। তিনি মিরপুরের একটি প্রাইভেট ক্লিনিকে চাকরি করেন। শাহরিয়ার বলেন, প্রতিদিনের মতো আজও মিরপুরে অফিসের উদ্দেশ্যে বের হই। কিন্তু ছুটির দিন হওয়ায় অন্যান্য দিনের মতো তেমন চোখে পড়ছে না যানবাহন। মানুষের ভিড়ের কারণে যেখানে যাতায়াতে ভোগান্তি হতো সেখানে আজ বাসের সিটগুলো প্রায় লোকশূন্য। মোড়ে হাঁকডাক করেও যাত্রী পাচ্ছেন না হেল্পাররা।
শ্যামলী থেকে শাহবাগ আসেন আব্দুর রাজ্জাক। তিনি বলেন, ব্যক্তিগত কাজে শাহবাগের উদ্দেশ্যে বের হই। শ্যামলী থেকে শাহবাগ যেতে যেখানে সময় লাগতো প্রায় এক ঘণ্টা; সেখানে আজ ছুটির দিন হওয়ায় ২০ মিনিটে পৌঁছে যাই। বাসেও তেমন কোনো ভিড় নেই। বেশিরভাগ সিটই ফাঁকা।
দুর্গাপূজা এবং সাপ্তাহিক ছুটি মিলিয়ে চারদিনের ছুটি পাওয়ায় অনেকেই পরিবারের সঙ্গে সময় কাটানোর জন্য ঢাকা ছেড়েছেন। অনেকে বিনোদনের জন্য পরিবারকে সঙ্গে নিয়ে বিভিন্ন দর্শনীয় স্থানে ভ্রমণে গেছেন। এতে ব্যস্ত নগরী ঢাকা যেন শূন্য হয়ে পড়েছে।
শাহবাগ মোড়ে ট্রাফিকের দায়িত্বপ্রাপ্ত সদস্য মো. আব্দুস ছামাদ জানান, শাহবাগ অত্যন্ত ব্যস্ততম মোড়। কিন্তু আজ দুদিন যেন ফাঁকা হয়ে গেছে। কিছু অ্যাম্বুলেন্স ছাড়া অন্য যানবাহন অনেক কম।
তবে আজ দুর্গাপূজার বিসর্জন উপলক্ষে দুপুরের পর থেকে মানুষ ও যানবাহনের সংখ্যা বাড়তে পারে বলে তিনি জানান।
চাকরি বিধি লঙ্ঘনের অভিযোগে আরও ২০০ জন কর্মীকে ছাঁটাই করেছে ইসলামী ব্যাংক। এ নিয়ে চলতি সপ্তাহে ব্যাংকটিতে ৪০০ জনের চাকরি গেল। এদিকে মূল্যায়ন পরীক্ষায় অংশ নেওয়াদের মধ্যে ৩৬৪ জন বা ৮৮ শতাংশ উত্তীর্ণ হয়েছে। বাকিদের সক্ষমতা বাড়ানোর প্রশিক্ষণ দিয়ে পুনর্মূল্যায়ন করা হবে। আর গত শনিবার পরীক্ষায় অংশ নিতে ব্যর্থদের মধ্যে যারা আবেদন করেছেন, তাদের জন্য ফের পরীক্ষা নেওয়া হবে।
ইসলামী ব্যাংকের একটি সূত্র জানায়, অযোগ্যতা বা অন্য কোনো বিবেচনায় কাউকে ছাঁটাই করা হয়নি। বরং যারা মূল্যায়ন পরীক্ষাকে কেন্দ্র করে সামাজিক মাধ্যমে অপপ্রচার ছড়াচ্ছে, পরীক্ষায় অংশ না নিয়ে উল্টো অন্যদের বাধা দিয়েছে কিংবা ব্যাংকের বিরুদ্ধে বিভিন্ন সমাবেশ করেছে– এ রকম ব্যক্তিরা তালিকায় রয়েছেন। ২০১৭ সালে এস আলম গ্রুপ ইসলামী ব্যাংক নিয়ন্ত্রণে নেওয়ার পর থেকে গত বছরের আগস্ট পর্যন্ত ব্যাংকটিতে প্রায় ১১ হাজার লোক নিয়োগ হয়। এর মধ্যে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি ও পরীক্ষা ছাড়াই নিয়োগ হয় ৮ হাজার ৩৪০ জন। সেখান থেকে ৫ হাজার ৩৮৫ জনের যোগ্যতা মূল্যায়নে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইবিএর মাধ্যমে গত শনিবার পরীক্ষা নেয় ব্যাংক। এতে অংশ নেন মাত্র ৪১৪ জন। বাকি ৪ হাজার ৯৫৩ জন পরীক্ষায় অংশ না নেওয়ায় তাদের ওএসডি করে ব্যাংক কর্তৃপক্ষ।
ইসলামী ব্যাংকের এই বিশেষ যোগ্যতা মূল্যায়ন পরীক্ষার উদ্যোগ বাতিল চেয়ে গত ২১ আগস্ট হাইকোর্টে একটি রিট করেন ব্যাংকটির চট্টগ্রামের চাক্তাই শাখার সিনিয়র প্রিন্সিপাল অফিসার মো. জিয়া উদ্দিন নোমান। বিষয়টি জরুরি ভিত্তিতে নিষ্পত্তির জন্য গত ২৭ আগস্ট বাংলাদেশ ব্যাংককে নির্দেশ দেন আদালত। এর পর গত ২৫ সেপ্টেম্বর বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে রিটকারীকে চিঠি দিয়ে জানানো হয়, বিশেষ যোগ্যতা মূল্যায়ন পরীক্ষা নেওয়া এবং চাকরিতে কাউকে রাখা বা না রাখার বিষয়টি ব্যাংকের নিজস্ব এখতিয়ারভুক্ত।
ইসলামী ব্যাংকের অতিরিক্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও মানবসম্পদ উন্নয়ন বিভাগের দায়িত্বে থাকা ড. কামাল উদ্দীন জসীম বলেন, যোগ্যতা মূল্যায়ন পরীক্ষাকে কেন্দ্র করে নানা অপপ্রচার ছড়ানো হয়েছে। কাউকে চাকরিচ্যুত করা তাদের উদ্দেশ্য নয়। বরং দক্ষতা উন্নয়নের মাধ্যমে বৈধতা দেওয়া তাদের প্রধান লক্ষ্য। তিনি বলেন, আইবিএর মাধ্যমে অনুষ্ঠিত পরীক্ষায় অংশ নেওয়াদের ৮৮ শতাংশই উত্তীর্ণ হয়েছেন। বাকি যারা উত্তীর্ণ হননি, তাদের দক্ষতা উন্নয়নে প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে। এ ছাড়া গত ২৭ সেপ্টেম্বরের বাধার কারণে অনেকেই পরীক্ষায় অংশ নিতে পারেননি। তাদের মধ্য থেকে যারা আবেদন করেছেন, তাদের পরীক্ষা নেওয়া হবে।
জানা গেছে, যোগ্যতা মূল্যায়ন পরীক্ষার পাশাপাশি এসব কর্মীকে একাডেমিক সনদ যাচাই করছে ইসলামী ব্যাংক কর্তৃপক্ষ। প্রথম ধাপে বেসরকারি ছয়টি বিশ্ববিদ্যালয়ের মোট ২ হাজার ২১৪ জনের সনদ যাচাইয়ের জন্য ৬টি টিম গঠন করে দেওয়া হয়েছে। এসব টিম বিশ্ববিদ্যালয়ে গিয়ে সনদ যাচাই করছে। এরই মধ্যে ৩০ জনের জাল সনদ চিহ্নিত করেছে ব্যাংক।
মন্তব্য