চট্টগ্রামের আনোয়ারা উপজেলায় বিপন্ন প্রজাতির একটি বনবিড়াল উদ্ধার করা হয়েছে।
উপজেলার মধ্যম চাতরী এলাকা মতি উল্লাহ মুন্সীর বাড়ির তৌহিদুল আলমের বাড়ি থেকে সোমবার রাত ২টার দিকে এটি উদ্ধার করা হয়।
সংরক্ষণের জন্য বিড়ালটিকে মঙ্গলবার দুপুরে চট্টগ্রাম চিড়িয়াখানার তত্বাবধায়ক আতিকুর রহমানের কাছে হস্তান্তর করা হয়।
তিনি বলেন, ‘এটি একটি বিপন্ন প্রজাতির বিড়াল। এটি হিংস্র নয় তবে বিলুপ্ত প্রায়। এ ধরনের বিড়াল সংরক্ষণ করা প্রয়োজন। এটিকে আমরা চিড়িয়াখানার খাঁচায় দর্শনার্থীদের জন্য রাখব।’
তৌহিদুল আলম জানান, ঘরের ছাদে অবস্থান করছিল বনবিড়ালটি। সোমবার রাত ২টার দিকে বিড়ালটি উদ্ধার করা হয়েছে। পরে চট্টগ্রাম চিড়িয়াখানায় পাঠানো হয় এটি।
মাঝারি আকারের এই বনবিড়ালটি জংলীবিড়াল, খাগড়া বিড়াল ও জলাভূমির বিড়াল নামে পরিচিত। এসব বিড়াল এশিয়ার দক্ষিণ চীন, মধ্য, দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া, পশ্চিমে নীল নদ উপত্যকায় দেখতে পাওয়া যায়।
বাংলাদেশের ১৯৭৪ ও ২০১২ সালের বন্যপ্রাণী (সংরক্ষণ ও নিরাপত্তা) আইনের তফসিল-১ অনুযায়ী এ প্রজাতিটি বিপন্ন ।
বৈশাখের শুরুতেই তীব্র দাবদাহে জনজীবন অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে। চুয়াডাঙ্গায় আজও দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে (৪০ দশমিক ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস)। এ অবস্থা সপ্তাহজুড়ে চলমান থাকার ইঙ্গিত দিয়েছে আবহাওয়া অফিস। সেইসঙ্গে জলীয়বাষ্পের কারণে ভ্যাপসা গরম অস্বস্তি বাড়াবে বলে জানানো হয়েছে।
বুধবার বিকেল ৩টায় চুয়াডাঙ্গায় দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৪০ দশমিক ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস, যা চলতি মৌসুমের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা।
এ সময় বাতাসের আর্দ্রতার পরিমাণ ছিল ২২ শতাংশ। মঙ্গলবারও এ জেলায় দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় (৪০ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস)।
প্রচণ্ড তাপদাহে ব্যাহত হচ্ছে স্বাভাবিক জীবনযাত্রা। সেইসঙ্গে বাতাসের আর্দ্রতা বেশি থাকায় অনুভূত হচ্ছে ভ্যাপসা গরম। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বাড়তে থাকে সূর্যের তাপ, তীব্র প্রখরতায় উত্তাপ ছড়াচ্ছে চারপাশে।
প্রচণ্ড গরমে নিম্ন আয়ের শ্রমজীবী মানুষেরা পড়েছেন চরম বিপাকে। নির্মাণ শ্রমিক, কৃষি শ্রমিক, ইজিবাইকচালক ও ভ্যান-রিকশাচালকদের গরমে নাভিশ্বাস উঠেছে। প্রয়োজনের তাগিদেও ঘর থেকে বেরিয়েও কাজ করতে পারছেন না তারা। ছন্দপতন ঘটছে জেলাবাসীর দৈনন্দিন কাজকর্মে।
চুয়াডাঙ্গা আবহাওয়া অফিসের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জামিনুর রহমান বলেন, ‘চুয়াডাঙ্গার ওপর দিয়ে তীব্র তাপ্রবাহ বয়ে চলছে। এ অবস্থা আরও কিছুদিন চলতে পারে। তবে এখনই বৃষ্টির সম্ভবনা নেই।’
এদিকে বুধবার সন্ধ্যা ৬টা থেকে পরবর্তী ২৪ ঘণ্টার আবহাওয়ার পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, রাজশাহী, পাবনা, বাগেরহাট, যশোর, চুয়াডাঙ্গা ও কুষ্টিয়া জেলাসমূহের ওপর দিয়ে তীব্র তাপপ্রবাহ এবং ঢাকা, রংপুর, বরিশাল বিভাগ এবং রাজশাহী ও খুলনা বিভাগের অবশিষ্টাংশের ওপর দিয়ে মৃদু থেকে মাঝারি ধরনের তাপপ্রবাহ বয়ে যাবে এবং কিছু কিছু স্থানে তা প্রশমিত হতে পারে।
এ সময়ে ঢাকা, বরিশাল, চট্টগ্রাম এবং সিলেট বিভাগের দুয়েক জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা বা ঝড়ো হাওয়াসহ বৃষ্টি ও বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। কোথাও কোথাও বিক্ষিপ্তভাবে শিলাবৃষ্টি হতে পারে বলেও পূর্বাভাসে বলা হয়েছে। এছাড়া দেশের অন্যত্র অস্থায়ীভাবে আংশিক মেঘলা আকাশসহ আবহাওয়া প্রধানত শুষ্ক থাকতে পারে।
তবে দেশের বিভিন্ন স্থানে বিক্ষিপ্তভাবে বৃষ্টিপাতে কারণে বায়ুমণ্ডলে জলীয়বাষ্পের পরিমাণ বেড়েছে। এর ফলে ভ্যাপসা গরম অনুভূত হবে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর।
বি.দ্র.: চুয়াডাঙ্গার তাপপ্রবাহের তথ্য নিউজবাংলার চুয়াডাঙ্গা প্রতিনিধি পাঠিয়েছেন।
আরও পড়ুন:মরুভূমির দেশ সংযুক্ত আরব আমিরাতে গত কয়েকদিন ধরে চলছে তীব্র বৃষ্টিপাত ও ঝড়। এ ঘটনায় সৃষ্ট জলাবদ্ধতা ও বন্যায় স্থানীয় জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। এছাড়া বন্যার কবলে পড়ে অন্তত একজন নিহত হয়েছেন বলে জানা গেছে।
বুধবার এক প্রতিবেদনে এ খবর দিয়েছে রয়টার্স।
দেশটির জাতীয় আহওয়া কেন্দ্রের বরাত দিয়ে প্রতিবেদনে বলা হয়, গত ২৪ ঘণ্টায় আমিরাতের আবুধাবি প্রদেশের ওমান সীমান্তে অবস্থিত আল আইন শহরে ২৫৪ মিলিমিটার (৮ ইঞ্চি) বৃষ্টিপাত হয়েছে। গত ৭৫ বছরে অর্থাৎ ১৯৪৯ সাল থেকে এ পর্যন্ত এটিই দেশটিতে একদিনে সর্বোচ্চ বৃষ্টিপাতের রেকর্ড।
মঙ্গলবার দিনের শেষভাগে বৃষ্টিপাত কমে এলেও বুধবার সকাল থেকেই জলাবদ্ধতার কারণে দুবাই বিমানবন্দরের কার্যক্রমে বিঘ্ন দেখা দিয়েছে। এমিরেটস এয়ারলাইন্সের বেশ কিছু ফ্লাইট স্থগিত রাখা হয়।
বিশ্বের ব্যস্ততম বিমানবন্দরের অন্যতম দুবাই আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর জানিয়েছে, ভারী বৃষ্টিপাতের কারণে তাদের ফ্লাইট শিডিউল উল্লেখযোগ্য আকারে বিঘ্নিত হয়েছে। অসংখ্য ফ্লাইটকে ভিন্ন দেশে অবতরণ করতে বলা হয়েছে বা আগমন বিলম্বিত করা হয়েছে।
দুবাই ছাড়তে আগ্রহী যাত্রীদের বিমানবন্দরের উদ্দেশে রওনা দেওয়ার আগে এয়ারলাইন্সের কাছ থেকে ফ্লাইট শিডিউল সম্পর্কে নিশ্চিত হয়ে নিতে বলা হয়েছে।
বিমানবন্দরের প্রাতিষ্ঠানিক এক্স অ্যাকাউন্টে জানানো হয়, ‘অত্যন্ত বৈরি পরিবেশে আমরা বিমানবন্দরের কার্যক্রম স্থিতিশীল করার জন্য চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি।’
দেশটির স্থানীয় গণমাধ্যমের খবরে জানানো হয়, আরব আমিরাতের ৭০ বছর বয়সী এক নাগরিক মঙ্গলবার সকালে মারা গেছেন। দেশের উত্তরের রাস আল খায়মাহ প্রদেশে আকস্মিক বন্যায় তার গাড়িটি ডুবে যায়।
আরব আমিরাতের গণমাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভারী বৃষ্টিপাতে দেশের কিছু অংশে উল্লেখযোগ্য পরিমাণ অবকাঠামোগত ক্ষয়ক্ষতির কথা জানানো হয়েছে, যার মধ্যে আছে ধসে পড়া সড়ক ও দালান। এগুলোতে বন্যার পানি প্রবেশ করেছে।
এদিকে প্রবল ঝড় বৃষ্টিতে ওমানে কমপক্ষে ১৮ জনের মৃত্যু খবর পাওয়া গেছে।
বাতাসের নিম্ন মানের দিক থেকে আইকিউ এয়ারের তালিকায় গতকাল চতুর্থ অবস্থানে থাকা ঢাকার বায়ুর মানের উন্নতি হয়েছে, তবে ‘অস্বাস্থ্যকরই’ রয়ে গেছে বাংলাদেশের রাজধানীর বাতাস।
সুইজারল্যান্ডভিত্তিক বাতাসের মানবিষয়ক প্রযুক্তি কোম্পানিটির র্যাঙ্কিংয়ে বাংলাদেশ সময় বুধবার সকাল ৯টা ৪০ মিনিটে এয়ার কোয়ালিটি ইনডেক্স (একিউআই) ১৫৪ স্কোর নিয়ে বাতাসের নিম্ন মানে ১২০টি শহরের মধ্যে ষষ্ঠ অবস্থানে ছিল ঢাকা।
একই সময়ে যথাক্রমে ১৭১ ও ১৬৮ স্কোর নিয়ে তালিকায় প্রথম ও দ্বিতীয় স্থানে ছিল ভারতের দিল্লি ও পাকিস্তানের লাহোর।
আইকিউএয়ার জানিয়েছে, আজ সকালের ওই সময়ে ঢাকার বাতাসে মানবস্বাস্থ্যের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ অতি ক্ষুদ্র কণা পিএম২.৫-এর উপস্থিতি ছিল বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) আদর্শ মাত্রার চেয়ে ১২ দশমিক ৪ গুণ বেশি।
এ সময় স্বাস্থ্যঝুঁকি এড়াতে আইকিউএয়ার চারটি পরামর্শ দিয়েছে। এক, বাইরে গিয়ে ব্যায়াম না করা; দুই, বাসা-বাড়ির জানালা বন্ধ রাখা যেন দূষিত বায়ু ঘরে প্রবেশ না করতে পারে; তিন, বাইরে বের হলে মাস্ক ব্যবহার করা এবং চার, এয়ার পিউরিফায়ার ব্যবহার করা।
নির্দিষ্ট স্কোরের ভিত্তিতে কোনো শহরের বাতাসের ক্যাটাগরি নির্ধারণের পাশাপাশি সেটি জনস্বাস্থ্যের জন্য ভালো নাকি ক্ষতিকর, তা জানায় আইকিউএয়ার।
কোম্পানিটি শূন্য থেকে ৫০ স্কোরে থাকা শহরগুলোর বাতাসকে ‘ভালো’ ক্যাটাগরিতে রাখে। অর্থাৎ এ ক্যাটাগরিতে থাকা শহরের বাতাস জনস্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর নয়।
৫১ থেকে ১০০ স্কোরে থাকা শহরগুলোর বাতাসকে ‘মধ্যম মানের বা সহনীয়’ হিসেবে বিবেচনা করে কোম্পানিটি।
আইকিউএয়ারের র্যাঙ্কিংয়ে ১০১ থেকে ১৫০ স্কোরে থাকা শহরগুলোর বাতাসকে ‘সংবেদনশীল জনগোষ্ঠীর জন্য অস্বাস্থ্যকর’ ক্যাটাগরিতে ধরা হয়।
১৫১ থেকে ২০০ স্কোরে থাকা শহরের বাতাসকে ‘অস্বাস্থ্যকর’ ক্যাটাগরির বিবেচনা করা হয়।
র্যাঙ্কিংয়ে ২০১ থেকে ৩০০ স্কোরে থাকা শহরগুলোর বাতাসকে ‘খুবই অস্বাস্থ্যকর’ ধরা হয়।
তিন শর বেশি স্কোর পাওয়া শহরের বাতাসকে ‘বিপজ্জনক’ হিসেবে বিবেচনা করে আইকিউএয়ার।
আজ সকাল ৯টা ৪০ মিনিটে ঢাকার বাতাসের স্কোর ছিল ১৫৪। এর মানে হলো ওই সময়টাতে ‘অস্বাস্থ্যকর’ বাতাসের মধ্যে বসবাস করতে হয় রাজধানীবাসীকে।
মানে সামান্য হেরফের হলেও অস্বাস্থ্যকর বাতাসের চক্রে ঘুরপাক খাচ্ছে ঢাকা।
একই সময় ১২০টি দেশের এ তালিকায় ৮ স্কোর নিয়ে সর্বশেষ অবস্থানে থাকা কানাডার মন্ট্রিলের বাতাস ছিল ‘ভালো’।
আরও পড়ুন:চুয়াডাঙ্গায় বয়ে যাচ্ছে মাঝারি থেকে তীব্র তাপপ্রবাহ। ব্যাহত হচ্ছে স্বাভাবিক জীবনযাত্রা। সে সঙ্গে বাতাসে আর্দ্রতা বেশি থাকায় অনুভূত হচ্ছে ভ্যাপসা গরম। খুব প্রয়োজন ছাড়া দিনের বেলায় মানুষ বাড়ির বাইরে বের হচ্ছে না।
মঙ্গলবার বিকেল ৩টায় চুয়াডাঙ্গা জেলায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৪০ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস, যা এই মৌসুমের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা।
তীব্র তাপপ্রবাহে সবচেয়ে বেশি বিপাকে পড়েছেন শ্রমজীবীরা। চুয়াডাঙ্গা পৌর এলাকার ভ্যানচালক সারিজুল হক বলেন, ‘এমুন তাপ সজজু করা কঠিন হয়ি পড়িচে। ভ্যান চালাতি গিয়ি সারা শরীল পুড়ি যাচ্চি। ছামায় গিয়িও কুনু লাব হচ্চি না। সব জায়গায় ভেপসা গরম।’
চুয়াডাঙ্গা আঞ্চলিক আবহাওয়া অফিসের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জামিনুর রহমান জানান, কয়েকদিন ধরে চু্য়াডাঙ্গা, মেহেরপুর ও আশপাশের অঞ্চলের ওপর দিয়ে মাঝারি তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছিল। মঙ্গলবার তা তীব্র তাপপ্রবাহে রূপ নিয়েছে। আরও কয়েকদিন এমন তাপমাত্রা অব্যাহত থাকতে পারে।
আরও পড়ুন:বিশ্বের দূষিত বাতাসের শহরের তালিকায় মঙ্গলবার সকালে ঢাকার অবস্থান চতুর্থ।
সুইজারল্যান্ডভিত্তিক বাতাসের মানবিষয়ক প্রযুক্তি কোম্পানিটির র্যাঙ্কিংয়ে বাংলাদেশ সময় সকাল ৯টা ১০ মিনিটে এয়ার কোয়ালিটি ইনডেক্স (একিউআই) স্কোর ১৫৭ নিয়ে রাজধানীর বাতাসের মান ‘অস্বাস্থ্যকর’ অবস্থায় রয়েছে।
একই সময়ে যথাক্রমে ২২৫ ও ১৭৬ স্কোর নিয়ে তালিকায় প্রথম ও দ্বিতীয় স্থানে ছিল ভারতের দিল্লি ও নেপালের কাঠমান্ডু।
আইকিউএয়ার জানিয়েছে, আজ সকালের ওই সময়ে ঢাকার বাতাসে মানবস্বাস্থ্যের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ অতি ক্ষুদ্র কণা পিএম২.৫-এর উপস্থিতি ছিল বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) আদর্শ মাত্রার চেয়ে ১৩ দশমিক ২ গুণ বেশি।
এ সময় স্বাস্থ্যঝুঁকি এড়াতে আইকিউএয়ার চারটি পরামর্শ দিয়েছে। এক, বাইরে গিয়ে ব্যায়াম না করা; দুই, বাসা-বাড়ির জানালা বন্ধ রাখা যেন দূষিত বায়ু ঘরে প্রবেশ না করতে পারে; তিন, বাইরে বের হলে মাস্ক ব্যবহার করা এবং চার, এয়ার পিউরিফায়ার ব্যবহার করা।
নির্দিষ্ট স্কোরের ভিত্তিতে কোনো শহরের বাতাসের ক্যাটাগরি নির্ধারণের পাশাপাশি সেটি জনস্বাস্থ্যের জন্য ভালো নাকি ক্ষতিকর, তা জানায় আইকিউএয়ার।
কোম্পানিটি শূন্য থেকে ৫০ স্কোরে থাকা শহরগুলোর বাতাসকে ‘ভালো’ ক্যাটাগরিতে রাখে। অর্থাৎ এ ক্যাটাগরিতে থাকা শহরের বাতাস জনস্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর নয়।
৫১ থেকে ১০০ স্কোরে থাকা শহরগুলোর বাতাসকে ‘মধ্যম মানের বা সহনীয়’ হিসেবে বিবেচনা করে কোম্পানিটি।
আইকিউএয়ারের র্যাঙ্কিংয়ে ১০১ থেকে ১৫০ স্কোরে থাকা শহরগুলোর বাতাসকে ‘সংবেদনশীল জনগোষ্ঠীর জন্য অস্বাস্থ্যকর’ ক্যাটাগরিতে ধরা হয়।
১৫১ থেকে ২০০ স্কোরে থাকা শহরের বাতাসকে ‘অস্বাস্থ্যকর’ ক্যাটাগরির বিবেচনা করা হয়।
র্যাঙ্কিংয়ে ২০১ থেকে ৩০০ স্কোরে থাকা শহরগুলোর বাতাসকে ‘খুবই অস্বাস্থ্যকর’ ধরা হয়।
তিন শর বেশি স্কোর পাওয়া শহরের বাতাসকে ‘বিপজ্জনক’ হিসেবে বিবেচনা করে আইকিউএয়ার।
আজ সকাল ৯টা ১০ মিনিটে ঢাকার বাতাসের স্কোর ছিল ১৫৭। এর মানে হলো ওই সময়টাতে ‘অস্বাস্থ্যকর’ বাতাসের মধ্যে বসবাস করতে হয় রাজধানীবাসীকে।
মানে সামান্য হেরফের হলেও অস্বাস্থ্যকর বাতাসের চক্রে ঘুরপাক খাচ্ছে ঢাকা।
একই সময় ১২২টি দেশের এ তালিকায় ০ স্কোর নিয়ে সর্বশেষ অবস্থানে থাকা আফগানিস্তানের কাবুলের বাতাস ছিল ‘ভালো’।
আরও পড়ুন:বরিশাল বিভাগের ৬ জেলার ওপর দিয়ে বয়ে যাওয়া কালবৈশাখী ঝড় ও বজ্রপাতে ৭ জনের প্রাণহানির খবর পাওয়া গেছে। এর মধ্যে পটুয়াখালীর বাউফলে দুজন, পিরোজপুরে দুজন এবং ঝালকাঠিতে তিনজন মারা গেছেন।
সংশ্লিষ্ট জেলার প্রশাসনিক কর্মকর্তারা এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
ঝড় ও বজ্রপাতে নিহতরা হলেন- রুবি বেগম, অনিল পাল, হেলেনা বেগম, মিনারা বেগম, মাহিয়া আক্তার, রাতুল ও সুফিয়া বেগম।
জানা গেছে, রোববার সকাল সাড়ে ৯টার দিকে পিরোজপুরে কালবৈশাখী ঝড়ের তাণ্ডবে লণ্ডভণ্ড হয়েছে জেলার বিভিন্ন উপজেলা।
এ সময় ঝোড়ো বাতাস ও বৃষ্টিতে গাছচাপায় রুবি বেগম নামে এক নারী মারা যান। এছাড়াও ঝড় থেমে যাওয়ার পর গ্রামের একটি খাল থেকে অনিল পাল নামে এক বৃদ্ধের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে।
শারিকতলা ডুমুরিতলা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আজমির হোসেন মাঝি বলেন, ‘রোববার সকালে ঘর থেকে বের হয়ে অনিল পাল ঝড়ের তাণ্ডবের মধ্যে পড়েন। ধারণা করছি, ঝড়ের কারণে সম্ভবত তিনি খালের মধ্যে পড়ে গিয়েছিলেন। ঝড় থামার পর তার মরদেহ উদ্ধার করা হয়।
পিরোজপুরের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ জাহেদুর রহমান বলেন, ‘ঝড়ে গাছপালা উপড়ে পড়ে পিরোজপুর সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। যাদের ঘরবাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে তাদের জন্য শুকনো খাবার ও ত্রাণের ব্যবস্থা করা হয়েছে।
‘নিহতদের পরিবারকে সরকারের তরফ থেকে আর্থিক সহযোগিতা করা হবে এবং ক্ষয়ক্ষতির প্রকৃত পরিমাণ নিরূপণ করে পরে জানানো হবে।’
পিরোজপুর সদর হাসপাতালের চিকিৎসক রমজান আলী বলেন, ‘ঝড়ের পর রুবি বেগম নামে এক নারীকে মৃত অবস্থায় হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়েছিল। এই ঝড়ে এখন পর্যন্ত ১২ থেকে ১৩ জনকে চিকিৎসা দেয়া হয়েছে।
এদিকে ঝালকাঠি সদর উপজেলার শেখেরহাট, পোনাবালিয়া ইউনিয়ন ও কাঁঠালিয়া উপজেলার আওরাবুনিয়া ইউনিয়নে ঝড়ের সময়ে মাঠ থেকে গরু আনতে গিয়ে দুই নারী ও এক কিশোরীর মৃত্যু হয়েছে।
তারা হলেন- শেখেরহাট এলাকার ফারুক হোসেনের স্ত্রী মিনারা বেগম, আওরাবুনিয়া ইউনিয়নের মৃত আলম গাজীর স্ত্রী হেলেনা বেগম ও পোনাবালিয়া এলাকার মো. বাচ্চুর ষষ্ঠ শ্রেণিতে পড়ুয়া মেয়ে মাহিয়া আক্তার ঈশান।
রোববার বেলা ১১টার দিকে ঝড় শুরু হয়।
ঝালকাঠির পুলিশ সুপার মোহাম্মদ আফরুজুল হক টুটুল বলেন, ‘ঝালকাঠিতে ঝড়ের সময় মাঠে গরু আনতে গিয়ে দুই উপজেলায় এক শিশু ও দুই নারীর মৃত্যু হয়েছে। ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। এ বিষয়ে অপমৃত্যুর মামলা হবে।’
পটুয়াখালীর বাউফল উপজেলায় সকাল সাড়ে ১০টা থেকে ১১টা ৫ মিনিট পর্যন্ত বয়ে যাওয়া ঝড়ে রাতুল নামে এক কিশোর ও সুফিয়া বেগম নামের এক বৃদ্ধা প্রাণ হারিয়েছেন।
রাতুল উপজেলার নাজিরপুর ইউনিয়নের রায় তাঁতের কাঠি গ্রামের জহির সিকদারের ছেলে। তাকে রাস্তায় মৃত অবস্থায় পাওয়া যায়। ধারণা করা হচ্ছে- বজ্রপাতের শব্দে হার্ট অ্যাটাক করে সে মারা গেছে।
আর সুফিয়া বেগম দাশপাড়া ইউনিয়নের চরআলগী গ্রামের মৃত আহম্মেদ প্যাদার স্ত্রী। ঘরের উপর গাছ পড়ে তিনি মারা যান।
বাউফল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক মারজান বলেন, ‘রাতুলকে হাসপাতালে আনার আগেই তিনি মারা যান। তার শরীরে বজ্রপাতে ঝলসানোর কোনো চিহ্ন পাওয়া যায়নি। তবে বজ্রপাতের শব্দে হার্ট অ্যাটাক করে তার মৃত্যু হয়ে থাকতে পারে।
দাশপাড়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান এনএম জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, ‘ঘরের উপর গাছ ভেঙে পড়ে সুফিয়া বেগম মারা যান।’
এছাড়া ঝড়ে বিভিন্ন এলাকায় গাছ পড়ে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে। সেগুলো সরানো হচ্ছে। পুরো এলাকা বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে।
বরিশাল বিভাগীয় আবহাওয়া অফিসের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা বশির আহম্মেদ বলেন, বিভাগের উপকূলীয় এলাকা পটুয়াখালী, পিরোজপুর ও বরগুনার ওপর দিয়ে কালবৈশাখী বয়ে গেছে।
এখন পর্যন্ত বরিশাল জেলায় ১৫ দশমিক ২ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। তবে পটুয়াখালী, বরগুনা ও পিরোজপুরে বৃষ্টি এবং বাতাসের গতি অস্বাভাবিক ছিল।
পটুয়াখালীর খেপুপাড়া আবহাওয়া অফিসের সঙ্গে যোগাযোগ করে তাদের পাওয়া যায়নি।
জানা গেছে, ঝড়ে বিভিন্ন এলাকায় বৈদ্যুতিক তারের ওপর গাছ পড়ে লাইন বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে। এজন্য পিরোজপুর ও বরগুনার তথ্য অফিসের সঙ্গে যোগাযোগ করা যায়নি।
স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, বিভাগের ৪২টি উপজেলার মধ্যে ৩০টিরও বেশি উপজেলায় কালবৈশাখী ঝড় আঘাত হানে। এসব এলাকায় শতাধিক সড়কে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে আছে। ঘরবাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে কয়েক হাজার।
আরও পড়ুন:কালবৈশাখী ঝড়ে দুই জেলায় গৃহবধূসহ দুজনের মৃত্যু হয়েছে। তাদের মধ্যে বাগেরহাটে আরিফুল ইসলাম নামে এক যুবক মারা যান এবং পৃথক ঘটনায় বাসের ওপর বিলবোর্ডের খুঁটি উপড়ে পড়লে তিনজন আহত হনে। অপর ঘটনায় পিরোজপুরে বসতঘরের ওপর গাছ ভেঙে পড়ে রুবী বেগম নামে এক গৃহবধূর মৃত্যু হয়। গুরুতর আহত হয়েছে তার ৬ বছরের শিশু সন্তান।
বাগেরহাট প্রতিনিধি জানান, রোববার সকাল সাড়ে ৯টার দিকে জেলায় কালবৈশাখী ঝড় আঘাত হানে। ঝড়ের আঘাতে শরণখোলা, মোড়েলগঞ্জ, রামপাল, কচুয়া ও বাগেরহাট সদর উপজেলার কয়েক হাজার গাছ উপড়ে পড়েছে। বিধ্বস্ত হয়েছে কয়েক শ’ কাঁচা ও আধা কাঁচা বাড়িঘর।
ঝড়ে গাছ পড়ে ও খুঁটি উপড়ে পড়ায় বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে পুরো জেলার বিদ্যুৎ সংযোগ।
ঝড়ের সময় গরু আনতে গিয়ে কচুয়া উপজেলা চরসোনাকুড় গ্রামে আরিফুল ইসলাম নামে এক যুবকের মৃত্যু হয়েছে। এছাড়া বাগেরহোট শহরের বাসস্ট্যান্ড এলাকায় বিলবোর্ডের খুঁটি ভেঙে যাত্রীবাহী বাসের ওপর পড়ে বাসের চালকসহ তিনজন গুরুতর আহত হয়েছেন।
বাগেরহাটের জেলা প্রশাসক মো. খালিদ হোসেন বলেন, ‘কালবৈশাখী ঝড়ে জেলা সদরসহ অন্যান্য উপজেলায় গুগাছপালা উপড়ে পড়ার পাশাপাশি কিছু বাড়িঘর বিধ্বস্ত হয়েছে। ঝড়ে গাছ পড়ে ও বিদ্যুৎতের খুটি উপড়ে পড়ায় বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে পুরো জেলার বিদ্যুৎ সংযোগ। জেলার প্রতিটি উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তাদের ক্ষয়ক্ষতি নিরূপণের জন্য নির্দেশ দেয়া হয়েছে। এছাড়া জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ৮ লাখ টাকা ও ৬শ টন চাল বরাদ্দ করা হয়েছে।’
পিরোজপুর প্রতিনিধি জানান, ঝড়ে বসতঘরের ওপর গাছ ভেঙে পড়ে রুবী বেগম নামে এক গৃহবধূর মৃত্যু হয়েছে। গুরুতর আহত হয়েছে তার ছয় বছরের মেয়ে। রোববার সকালে পিরোজপুর পৌরসভার মরিচাল গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
ঝড়ে সদর উপজেলার বেশ কয়েকটি এলাকায় শত শত গাছ উপড়ে পড়ে ঘরবাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। অনেক বাড়িঘরের চালা উড়ে গেছে। ঝড়ে খুঁটি উপড়ে ও তার ছিঁড়ে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে বিদ্যুৎ সরবরাহ ব্যবস্থা।
পৌরসভার মরিচাল গ্রামে বসতবাড়ির ওপর গাছ ভেঙে পড়লে রুবী বেগম ও তার মেয়ে মেহজাবিন আহত হন। স্থানীয় লোকজনতাঁদের উদ্ধার করে সদর উপজেলা হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক রুবী বেগমকে মৃত ঘোষণা করেন। রুবী বেগম পিরোজপুর পৌরসভার মরিচাল গ্রামের মিরাজ সরদারের স্ত্রী।
হাসপাতালের চিকিৎসক মো. রমজান আলী জানান, সকাল সাড়ে ১০টার দিকে আহত রুবী বেগমকে হাসপাতালে মৃত অবস্থায় আনা হয়েছিল। এ ঘটনায় গুরুতর আহত মেহজাবিনকে উন্নত চিকিৎসার জন্য খুলনা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
ঝড়ে সড়কের ওপর গাছ ভেঙে পড়ায় পিরোজপুরের সঙ্গে বরিশালের সড়ক যোগাযোগও বন্ধ হয়ে গেছে।
পিরোজপুরের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ জাহেদুর রহমান বলেন, ‘এ পর্যন্ত রুবি নামের একজনের মৃত্যুর খবর পেয়েছি। শতাধিক ঘরবাড়ি ভেঙে গেছে। যাদের ঘরবাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে তাদের জন্য শুকনো খাবার ও ত্রাণের ব্যবস্থা করা হয়েছে।’
আরও পড়ুন:
মন্তব্য