ভারত থেকে করোনাভাইরাসের নতুন ধরন আসা ঠেকাতে সীমান্ত বন্ধের ঘোষণার পর সোমবার যশোরের বেনাপোল বন্দরে অপরপাশে ভারতের পেট্রাপোল বন্দরে দেশে ফেরার অপেক্ষায় রয়েছেন প্রায় ২০০ বাংলাদেশি। এদের অধিকাংশই মেডিক্যাল ভিসা নিয়ে চিকিৎসার জন্য ভারতে গিয়েছিলেন।
স্বাধীনতার পর এই প্রথমবারের মতো যশোরের বেনাপোল স্থলবন্দরে ভারতের সঙ্গে পাসপোর্টধারী যাত্রী চলাচল পুরোপুরি বন্ধ হয়ে গেছে।
রোববার ১৪ দিনের জন্য সীমান্ত বন্ধের সিদ্ধান্তের কথা জানান স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল।
তবে সরকার জানিয়েছে চিকিৎসা বা অন্য কোনো কাজে ভারতে অবস্থানরত বাংলাদেশিদের ভিসার মেয়াদ যদি ১৫ দিনের কম থাকে, সেক্ষেত্রে ১৪ দিনের জন্য সীমান্ত বন্ধ থাকলেও তারা দেশে ফিরতে পারবেন।
নয়াদিল্লি, কলকাতা এবং আগরতলায় অবস্থিত বাংলাদেশ মিশনের অনুমতি নিয়ে বেনাপোল, আখাউড়া এবং বুড়িমারী হয়ে তারা দেশে আসতে পারবেন। তবে অবশ্যই তাদের পিসিআর টেস্টের মাধ্যমে করোনা নেগেটিভ সনদ থাকতে হবে। সেই পরীক্ষার সময়সীমা বাংলাদেশে প্রবেশের ৭২ ঘণ্টার মধ্যে হতে হবে।
সীমান্ত বন্ধের ঘোষণার পর থেকেই দুই দেশের আটকে পড়া যাত্রীরা ছুটতে থাকেন সীমান্তের দিকে।
সোমবার সকালে বাংলাদেশ সীমান্তে আটকা পড়েন ছয় মেডিকেল ছাত্রসহ প্রায় ২০ ভারতীয়। অন্যদিকে, ভারতের পেট্রাপোল সীমান্তে বাংলাদেশে ঢোকার অপেক্ষায় আটকা পড়ে আছেন প্রায় ২০০ বাংলাদেশি।
আটকা পড়া যাত্রীদের একজন মনির হোসেন জানান, দশ বছরের শিশুকে নিয়ে হার্টের চিকিৎসার জন্য চেন্নাই গিয়েছিলেন তিনি। অপারেশন শেষে আজ ভোরে পেট্রাপোলে পৌঁছে সীমান্ত বন্ধের খবর পেয়েছেন। ভারতে থাকার মতো বাড়তি কোনো টাকাও নেই তাদের কাছে।
সুকুমার দেবনাথ নামে এক বাংলাদেশি বলেন, ‘মেডিক্যাল ভিসায় ভারতে চিকিৎসার জন্যে যাচ্ছিলাম কিন্তু এখানে এসে আটকে গেলাম।'
ভারতের একটি সূত্র জানায়, প্রচণ্ড গরমের মধ্যে আটকে পড়া বাংলাদেশি যাত্রীরা সকাল থেকে না খেয়ে আছে। ভারতের সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফ) বাংলাদেশীদের ফেরত পাঠানোর চেষ্টা চালাচ্ছে।
বেনাপোল ইমিগ্রশনের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আহসান হাবিব জানান, ‘আটকে পড়া যাত্রীদের দেশে ফেরত নেয়ার বিষয়ে সকাল থেকে কোনো নতুন কোন নির্দেশনা পাওয়া যায়নি। তবে ভারতীয় ছাত্রদের বিষয়ে নির্দেশনা আসতে পারে।’
এদিকে দুপুর ১২টার দিকে কোলকাতার ডেপুটি হাই কমিশনের অফিস সহকারি সাদিয়া শারমিন বদলিজনিত কারণে বিশেষ ছাড়পত্র নিয়ে পরিবারসহ বাংলাদেশে প্রবেশ করলে ইমিগ্রেশন তাদের প্রবেশের অনুমতি দেয়।
যাত্রী পারাপার বন্ধ থাকলেও বেনাপোল-পেট্রাপোলে আমদানি-রপ্তানি স্বাভাবিক রয়েছে বলে জানিয়েছেন বেনাপোল কাস্টমস হাউসের কমিশনার মো. আজিজুর রহমান। তবে তিনি জানান, অন্যদিনের চেয়ে আমদানি-রপ্তানির পরিমাণ কম।
ভারত-ভুটান থেকে পণ্য আসছে বুড়িমারীতে
সোমবার সকাল থেকে লালমনিরহাটের বুড়িমারী স্থলবন্দর দিয়ে কোনো যাত্রী দেশে ঢোকেনি বা ভারতে যায়নি। তবে স্বাস্থ্যবিধি মেনে ভারত ও ভুটান থেকে পণ্য পরিবহন চালু রয়েছে।
বুড়িমারী স্থলবন্দর আমদানি-রপ্তানি কারক সমিতির সভাপতি ও পাটগ্রাম উপজেলা চেয়ারম্যান রুহুল আমিন বাবুল জানান, সরকারি নির্দেশনা অনুযায়ী যাত্রী আসা-যাওয়া বন্ধ থাকলেও স্বাস্থ্যবিধি মেনে আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রম চলছে।
ভারতে চালকদের করোনা নমুনা পরীক্ষা করছে স্বাস্থ্য বিভাগ এবং চালকদের সনদও দিচ্ছে। অপরদিকে বাংলাদেশি চালকদেরও করোনা পরীক্ষায় সনদ দিচ্ছে স্বাস্থ্য বিভাগ। যাদের করোনা নেগেটিভ রয়েছে তারাই পণ্য নিয়ে যাতায়াত করছে।
বুড়িমারী স্থলবন্দরের সহকারী কমিশনার কেফায়েত উল্লাহ মজুমদার বলেন, সরকারি নির্দেশনা অনুযায়ী যাত্রী চলাচল বন্ধ রয়েছে। তবে স্বাস্থ্য বিধি মেনে করোনা পরীক্ষা করে আমদানি-রপ্তানি চলছে।
সাতক্ষীরা সীমান্তে বেড়েছে বিজিবির টহল
সাতক্ষীরার ভোমরা ইমিগ্রেশন দিয়ে এক বছর ধরে বন্ধ রয়েছে যাত্রী পারাপার। তবে করোনাভাইরাস প্রতিরোধে সীমান্ত বন্ধ ঘোষণার পরে বেড়েছে বিজিবির টহল। অবৈধ যাতায়াত বন্ধে ব্যাপক উদ্যোগের কথা জানিয়েছেন বিজিবির কর্মকর্তারা।
সাতক্ষীরা ৩৩ বিজিবির অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল আল মাহমুদ জানান, সীমান্তে বিজিবির টহল ও লোকবল বাড়ানো হয়েছে। অবৈধ যাতায়াত বন্ধে জিরো টলারেন্স নীতি গ্রহণ করা হয়েছে।
সীমান্তে কর্মরত বিজিবির কর্মকর্তারা জানান, ইছামতিসহ সীমান্ত কিছু নদীর কারণে অবৈধ অনুপ্রবেশ ঠেকাতে বিজিবিকে বেশ বেগ পেতে হয়।
করোনাভাইরাস ঠেকাতে গত বছরের এপ্রিল থেকে বন্ধ রয়েছে ভোমরা ইমিগ্রেশন পুলিশ চেকপোস্ট। এর আগে প্রায় এক হাজার যাত্রী প্রতিদিন ভোমরা বন্দর দিয়ে যাতায়াত করতেন। চিকিৎসা, ব্যবসা, কেনাকাটা ও পর্যটনের প্রয়োজনে এসব ব্যক্তিরা ভারতে যেতেন।
সীমিত সংখ্যক ভারতীয় ব্যবসার জন্য অথবা আত্মীয়ের বাড়ি বেড়াতে আসতেন। এক বছরেরও বেশি সময় ভোমরা স্থলবন্দর ইমিগ্রেশন বন্ধ থাকায় বিড়ম্বনায় পড়তে হচ্ছে এ অঞ্চলের নাগরিকদের। চিকিৎসার জন্য ভারতে যাওয়া ব্যক্তিদের দুর্ভোগ বেড়েছে কয়েকগুণ। ভোমরা হয়ে যেতে না পেরে বাধ্য হয়ে বেনাপোল দিয়ে ভারতে যাচ্ছেন তারা।
ভোমরা ইমিগ্রেশন পুলিশের কর্মকর্তা বিশ্বজিৎ মণ্ডল বলেন, ‘ইমিগ্রেশন পুলিশ চেকপোস্ট বন্ধ থাকলেও পণ্যবাহী ট্রাকের ভারতীয় চালকদের যাতায়াত রয়েছে। তারা স্বাস্থ্যবিধি মেনেই যাতায়াত করেন।’
আরও পড়ুন:বাল্কহেডের স্টাফদের সহায়তায় লুট হওয়া কোটি টাকার ডিএপি সার উদ্ধার করেছে নৌপুলিশ। এঘটনায় ৩জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। কুমিল্লার নিকটবর্তী ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগর উপজেলায় এই ঘটনা ঘটে। রবিবার ঢাকা নৌ পুলিশ সুপার আব্দুল্লাহ আল মামুন এই তথ্য নিশ্চিত করেন।
গ্রেফতার করা হয় মূল আসামি (মাস্টার মাইন্ড) নরসিংদীর আলমগীর (৩৬), কিশোরগঞ্জের জসিম উদ্দিন (৩৭) এবং বাগেরহাটের মোঃ আঃ রহিম খানকে ।
আব্দুল্লাহ আল মামুন জানান,গত ০৮ অক্টোবর মুন্সিগঞ্জের মুক্তারপুর হতে বাল্কহেড এম.বি. হাসান নৌ পরিবহন, এম-২৫২৭৪ যোগে ৬৩৪০ বস্তা আমদানি করা কোটি টাকার ডিএপি সার সুনামগঞ্জের বিএডিসি গোডাউনের উদ্দেশ্যে রওয়ানা করে। সার বোঝাই বাল্কহেড ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার নবীনগর থানার মানিকনগর ঘাটে নোঙর করে। ইঞ্জিনের ত্রুটির কথা বলে ০৯ অক্টোবর পর্যন্ত একই ঘাটে অবস্থান করে। গত ১০ অক্টোবর বাল্কহেডটি পুনরায় চলা শুরু করে। আনুমানিক ঘন্টা খানেক চলার পরে মেঘনা নদীতে বাল্কহেডের গতি কমিয়ে দিলে একটা ট্রলার উক্ত বাল্কহেডের সাথে রশি দিয়ে বেঁধে আরও ২ জন বাল্কহেডে থাকা স্টাফদের সাথে যোগ দেয়। পরবর্তীতে সারের ডিলারের এজেন্টকে হাত-মুখ বেঁধে ভয় দেখিয়ে ট্রলারে উঠায়। এদিকে সার বহনকারী বাল্কহেড অন্যত্র চলে যায়। সে সময়ে উক্ত ট্রলারে থাকা ২ জনের সাথে বাল্কহেডের ২ জন স্টাফও ট্রলারে নেমে যায়। সারের ডিলারের প্রতিনিধকে নিয়ে ট্রলারটা মেঘনা নদীতে বিভিন্ন স্থান ঘোরাঘুরি করে ঐ দিন বিকালে নরসিংদী জেলার রায়পুরা থানার আব্দুল্লাহর চর নামক স্থানে তাকে মারধর করে নামিয়ে দেয়। এরপর থেকে উক্ত বাল্কহেডের কোন স্টাফের সাথে সারের ডিলার এবং তাদের অফিসের কেউ কোন প্রকার যোগাযোগ করেতে পারেননি। সকল স্টাফের মোবাইল ফোন বন্ধ পাওয়া যায়। অভিযোগ পেয়ে নৌ পুলিশের একাধিক টিম প্রযুক্তির সহায়তায় ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার নবীনগর থানার নোয়াগাঁও বাজার সংলগ্ন তিতাস নদীর শাখা দেওজুড়ী খালের মধ্য হতে সার বহনকারী বাল্কহেড, স্থানীয় বাজারের এক গোডাউন এবং তিতাস নদী তীরবর্তী গ্রামের এক বাড়ি থেকে লুণ্ঠিত সার উদ্ধার করে।
এ ঘটনায় নরসিংদী জেলার রায়পুরা থানায় নিয়মিত মামলা দায়ের করা হয়। পরবর্তীতে মূল আসামিদের গ্রেফতার করা হয়। ডাকাত আলমগীরের বিরুদ্ধে ডাকাতি/ চাঁদাবাজির ০৭টি, ডাকাত জসিম উদ্দিনের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজির ০১ টি, ডাকাত আঃ রহিমের (৪৩) বিরুদ্ধে মারামারি/ নারী ও শিশু আইনে ০২ টি মামলা রয়েছে । অন্যান্য আইনী পদক্ষেপ গ্রহণসহ পলাতক আসামি গ্রেফতারে নৌ পুলিশ, ঢাকা অঞ্চলের অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা শেখ বশির উদ্দীন বলেন, আমদানি করা যত পণ্য ছিল সব আগুনে পুড়ে ধ্বংস হয়েছে। অর্থনৈতিক ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ কত সেটা আমরা খাতভিত্তিক নির্দিষ্ট করার চেষ্টা করছি।
রোববার দুপুরে শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের পুড়ে যাওয়া কার্গো ভিলেজ কমপ্লেক্স পরিদর্শনে এসে তিনি এসব কথা বলেন।
সাংবাদিকদের তিনি বলেন, যত ধরনের অভিযোগ আছে, প্রত্যেকটা অভিযোগ আমলে নিয়ে অনুসন্ধান চলছে। এখানে কারো কোনও ব্যত্যয় আছে কিনা সব বিষয় খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
উপদেষ্ট আরো বলেন, আমাদের একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। তারা আগুনের পূর্ববর্তী এবং বর্তমান অবস্থান পুরো ঘটনা অনুসন্ধান করবে। তারপর অংশীজনের সঙ্গে আলোচনা করে, গোয়েন্দা সংস্থা থেকে শুরু করে সব তদন্ত সংস্থার সবাইকে একত্র করে এ রহস্য উদঘাটন করব।
তিনি বলেন, এখন যেসব পণ্য আসছে, কার্গো থেকে এসব পণ্য সরবরাহে যাতে কোনও জটিলতা সৃষ্টি না হয় সেজন্য আগামী সাতদিন ২৪ ঘণ্টা করে কাজ করবো। যারা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে তাদের ইন্সুরেন্স কভারেজ কী আছে এবং আমাদের বিমানবন্দরের ইন্সুরেন্স কাভারেজ কী আছে সবকিছু আমলে নিয়ে আমরা সিদ্ধান্তে উপনীত হব।
তিনি বলেন, গতকালকে ২১টির মত ফ্লাইট ক্যানসেল হয়েছে। এসব ফ্লাইটের কারণে যারা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন আগামী তিন দিন অতিরিক্ত ফ্লাইটের সব ধরনের চার্জ মওকুফ করেছে সরকার।
বিদেশ যেতে না পেরে ক্ষোভে মাইক ভাড়া করে পুরো এলাকাবাসীকে গালাগাল করেছেন কিশোরগঞ্জের হোসেনপুর উপজেলার এক যুবক। পরে সেই ভিডিও নিজের ফেসবুক আইডিতে পোস্ট করলে মুহূর্তেই তা ভাইরাল হয়ে যায়।
ঘটনাটি ঘটেছে হোসেনপুর উপজেলার গোবিন্দপুর ইউনিয়নের দক্ষিণ পানান গ্রামে। ওই যুবকের নাম সারোয়ার হোসেন রাব্বি। তিনি দীর্ঘদিন ধরে সৌদি আরবে যাওয়ার চেষ্টা করছিলেন। কিন্তু প্রয়োজনীয় অর্থের অভাবে তিনি বিদেশ যেতে পারেননি।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, রাব্বি বিভিন্ন এনজিও ও সমাজের বিত্তবানদের কাছে সাহায্যের আবেদন করেছিলেন। কিন্তু কেউ সহযোগিতা না করায় তার মধ্যে ক্ষোভ জন্ম নেয়। শুক্রবার (১৭ অক্টোবর) দুপুরের দিকে তিনি ক্ষোভের বশে ৫০০ টাকা খরচ করে একটি মাইক ভাড়া নেন এবং পুরো গ্রামজুড়ে মাইকযোগে এলাকাবাসীর বিরুদ্ধে গালাগাল করেন।
পরে তিনি গালাগালের ভিডিও নিজ ফেসবুক আইডিতে আপলোড করেন। ভিডিওতে রাব্বি অভিযোগ করেন, তিন-চার মাস ধরে সৌদি যাওয়ার জন্য চেষ্টা করেও মাত্র এক লাখ টাকা জোগাড় করতে না পারায় তার ভিসা ও মেডিকেল মেয়াদ (৩০ অক্টোবর) শেষ হতে যাচ্ছে।
বিভিন্ন সমিতির কাছে ঋণ চাইলেও কেউ সহযোগিতা করেনি। এমনকি প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক থেকেও লোন নিতে গেলে ২৫ হাজার টাকা ঘুষ চাওয়া হয় বলে দাবি করেন তিনি।
রাব্বি বলেন, “মানুষের কারণে আগেও দু’বার আমার ভিসা নষ্ট হয়েছে। এবারও কেউ সাহায্য করল না। তাই রাগের মাথায় ভুল করেছি।”
ভিডিওর ক্যাপশনে তিনি দুঃখ প্রকাশ করে লিখেছেনন “প্রথমে ক্ষমা চাইছি। আমি অনেক খারাপ ভাষায় গালাগাল করেছি। আমি কেন এমন করেছি, শুনুন।”
রাব্বি জানান, তিনি বিবাহিত এবং এক ছোট সন্তানের পিতা। জীবিকার তাগিদে তিনি অটোরিকশা চালানোর পাশাপাশি বিকাশের কাজ করেন।
এ ঘটনায় এলাকাবাসীরা প্রথমে বিষয়টি গুরুত্ব না দিলেও পরে ভিডিওটি ভাইরাল হলে অনেকে বিস্মিত ও ক্ষুব্ধ হন। কেউ কেউ আবার রাব্বির মানসিক কষ্ট ও পারিবারিক চাপের প্রতি সহানুভূতিও প্রকাশ করেছেন।
একজন স্থানীয় বাসিন্দা বলেন, “এমন ঘটনা আগে কখনো ঘটেনি। তবে এখন চায়ের দোকান থেকে ঘরোয়া আড্ডা সব জায়গায় রাব্বির ঘটনাই আলোচনার বিষয়।”
জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আবদুল্লাহ বলেছেন, নির্বাচন কমিশনের কার্যক্রম স্বৈরাচারের মতো, তাদের রিমোট কন্ট্রোল অন্যের হাতে।
রোববার দুপুরে নির্বাচন কমিশনের সিনিয়র সচিব আখতার আহমেদের সঙ্গে বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, রাজনৈতিক কর্মসূচি দিয়ে শাপলা অর্জন করা হবে। মধ্যযুগীয় রাজা বাদশাদের মতো আচরণ করছে নির্বাচন কমিশন। গণবিশ্বাসী ও জনবান্ধব আচরণ হওয়া উচিত ছিল।
এনসিপির এ নেতা বলেন, সুষ্ঠু গ্রহণযোগ্য নির্বাচন করার মতো বর্তমান কমিশনের কোনো যোগ্যতা নেই। নুরুল হুদার মতো পরিণতি যাতে না হয় এমন সিদ্ধান্ত থেকে বিরত থাকার আহ্বান জানাচ্ছি।
রাজনৈতিক দলের জন্য তৈরি করা প্রতীক তালিকায় শাপলা না থাকায় এনসিপির আবেদন বারবারই নাকচ করে দিয়েছে নির্বাচন কমিশন।
নিরাপদ ও দখলমুক্ত সড়কের দাবিতে ফার্মগেটে বিক্ষোভ করেছে দুই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা। বিক্ষোভে সরকারি বিজ্ঞান কলেজ ও সরকারি সাইন্স হাই স্কুলের শিক্ষার্থীরা অংশ নিয়েছে।
রোববার (১৯ অক্টোবর) দুপুরে ফার্মগেট মোড়ে শিক্ষার্থীরা ব্যানার নিয়ে প্রথমে মানববন্ধন করে। পরে বিক্ষোভ মিছিল করে শিক্ষার্থীরা।
শিক্ষার্থীরা জানায়, আমাদের স্কুল ও কলেজের সামনে অটোরিকশাগুলো জ্যাম তৈরি করে। গেটের সামনে রিকশাগুলো লাইন ধরে থাকে। এই এলাকায় স্কুল, কলেজ ও বেশ কয়েকটি কোচিং সেন্টার রয়েছে। প্রায় ২ হাজার শিক্ষার্থী এই রাস্তা দিয়ে পারাপার করতে হয়। অটোরিকশা একটার পর একটা থাকায় জ্যাম সৃষ্টি করে। রাস্তা পারাপারের সমস্যা হয়। রাস্তা যখন ফাঁকা থাকে, তখন তারা ৪০-৫০ কিলোমিটার গতিতে গাড়ি চালায়। অটোরিকশার যে ব্রেক, তা দিয়ে কন্ট্রোল করা সম্ভব না। অনেক সময় তারা শিক্ষার্থীর উপরে রিকশা তুলে দেয়। ঝুঁকি নিয়ে শিক্ষার্থীদের রাস্তা পার হতে হয়।
পাঁচ দাবি জানিয়ে শিক্ষার্থীরা বলেন, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোর সামনের সড়কে অবিলম্বে স্পিড ব্রেকার স্থাপন করতে হবে। পর্যাপ্ত ল্যাম্প পোস্ট লাগাতে হবে। লেন ডিভাইডার এবং ট্রাফিক আইল্যান্ড স্থাপন করতে হবে। ফুটপাথ থেকে সব অবৈধ দোকান, অস্থায়ী স্থাপনা, পার্কিং স্থায়ীভাবে উচ্ছেদ করতে হবে।
বাড়িভাড়ার ৫ শতাংশ বাড়ানোর বিষয়ে দেওয়া অর্থ মন্ত্রণালয়ের প্রজ্ঞাপন প্রত্যাখ্যান করে আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন দেশের বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারীরা।
রোববার (১৯ অক্টোবর) অর্থ মন্ত্রণালয়ের আদেশ জারির পরপরই এ নিয়ে এক প্রতিক্রিয়ায় এ ঘোষণা দেন এমপিওভুক্ত শিক্ষা জাতীয়করণ প্রত্যাশী জোটের সদস্য সচিব অধ্যক্ষ দেলোয়ার হোসেন আজিজী।
নিজের ফেসবুক আইডিতে দেওয়া পোস্টে তিনি লেখেন, ৫ শতাংশ বাড়িভাড়া ভাতার প্রজ্ঞাপন আমাদের আন্দোলনের প্রাথমিক বিজয়। কিন্তু ২০ শতাংশ বাড়িভাড়া, ১৫০০ টাকা মেডিকেল ভাতা ও ৭৫ শতাংশ উৎসব ভাতার প্রজ্ঞাপন জারি না করা পর্যন্ত আমাদের সব কর্মসূচি অব্যাহত থাকবে।
এদিকে রোববার (১৯ অক্টোবর) জাতীয় শহিদ মিনারে ৮ম দিনের মতো অবস্থান ও অনশন কর্মসূচি চালিয়ে যাচ্ছেন শিক্ষক-কর্মচারীরা। নতুন কর্মসূচি হিসেবে দুপুর ১২টায় শিক্ষাভবন অভিমুখে ভুখা মিছিলের ঘোষণা দিয়েছেন তারা।
বাড়ি ভাড়া ভাতা ২০ শতাংশ, মেডিকেল ভাতা ১ হাজার ৫০০ টাকা ও উৎসব ভাতা ৭৫ শতাংশ বৃদ্ধি করে প্রজ্ঞাপন জারি না করা পর্যন্ত আন্দোলন চালানোর হুঁশিয়ারি দিয়েছেন শিক্ষকরা।
এর আগে এদিন সকালে বাড়ি ভাড়া ভাতা মূল বেতনের ৫ শতাংশ হারে এবং সর্বনিম্ন ২০০০ টাকা বৃদ্ধিতে সম্মতি দেয় অর্থ বিভাগ।
উপসচিব মিতু মরিয়মের স্বাক্ষর করা এক অফিস আদেশে বলা হয়, ৬ শর্ত পালন সাপেক্ষে বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে কর্মরত এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারীদের বাড়ি ভাড়া ভাতা মূল বেতনের ৫ শতাংশ হারে (সর্বনিম্ন ২ হাজার টাকা) দেওয়া হবে। আদেশ আগামী ১ নভেম্বর থেকে কার্যকর হবে। তবে তা প্রত্যাখ্যান করেন এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারীরা।
ঢাকার হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের ১ নং গেটের কার্গো ভিলেজ আগুনে পুড়ে যাওয়ার ২১ ঘণ্টা পরও ধ্বংসস্তূপ থেকে ধোঁয়া বের হচ্ছে। তবে ধ্বংসস্তূপ ভবনে এখনও পানি ছিটাচ্ছেন ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা।
রোববার (১৯ অক্টোবর) বেলা ১১টার পরও এমন চিত্র দেখা গেছে।
ফায়ার সার্ভিসের নিয়ন্ত্রণ কক্ষের ডিউটি অফিসার লিমা খানম বলেন, আগুন এখনও পুরোপুরি নির্বাপণে আসেনি। এজন্য ধোঁয়া উড়ছে। তবে আমাদের ২২ ইউনিট আগুন নির্বাপণের কাজ করছে। আগুন যেন বাড়তে না পারে সেজন্য অনবরত পানি ছিটানো হচ্ছে।
এদিকে, সকাল থেকেই বিমানবন্দরের কার্গো ভিলেজে ধ্বংসস্তূপ দেখতে আসছেন ভুক্তভোগীরা। উৎসুক জনতার ভিড়ও দেখা গেছে। তবে ভেতরে কাউকে প্রবেশ করতে দিচ্ছেন না আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা।
সিঅ্যান্ডএফ এজেন্টে কর্মরত রেজাউল করিম রনি বলেন, শুক্র-শনিবার আমদানি বন্ধ থাকে। কিন্তু রপ্তানি সবসময় খোলা থাকে। সেই সুবাদে শনিবার দিন সকালে আমি এক্সপোর্ট করতে আসি। বৃহস্পতিবার আমরা টাকাও জমা দিয়েছি। কিন্তু মালামাল নিতে পারিনি। রোববার নেওয়ার কথা ছিল। এর আগেই সব পুড়ে ছাই হয়ে গেছে।
তিনি আরো বলেন, আগুনের প্রভাব পড়বে দেশের তৈরি পোশাক কারখানায়। কারণ এখানে এমন পণ্য সবচেয়ে বেশি ছিল। তবে শনিবার বা ছুটির দিন এমন ঘটনা স্বাভাবিক মনে হচ্ছে না। এছাড়া আগুনে হাজারও কোটি টাকার ক্ষয়ক্ষতির সম্ভাবনা রয়েছে।
এর আগে শনিবার দুপুর সোয়া ২টায় বিমানবন্দরের কার্গো ভিলেজে আগুন লাগে। আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ করে ফায়ার সার্ভিসের ৩৭টি ইউনিট। একইসঙ্গে কাজ করেন নৌবাহিনী, বিমানবাহিনী, সিভিল অ্যাভিয়েশন, দুই প্লাটুন বিজিবিসহ পুলিশ-আনসার সদস্যরা।
সূত্র বলছে, বিমানবন্দরের কার্গো ভিলেজটি মূলত পোস্ট অফিস ও হ্যাঙ্গারের মাঝামাঝি জায়গায় বা আট নম্বর গেটের পাশে। আর আগুন লেগেছে আমদানির কার্গো কমপ্লেক্স ভবনে। এখানে আমদানি করা পণ্য রাখা হয়। আগুনে এখানকার প্রায় সব মালামাল পুড়ে গেছে বলে জানা গেছে।
ভয়াবহ আগুনের কারণে বিমানবন্দরে সব ধরনের উড়োজাহাজ ওঠানামা সাময়িকভাবে বন্ধ রাখে কর্তৃপক্ষ। একইসঙ্গে ঢাকার বদলে সব বিমান চট্টগ্রাম ও সিলেটে অবতরণের নির্দেশনা দেওয়া হয়। এর মধ্যে আটটি ফ্লাইট চট্টগ্রামে, তিনটি ফ্লাইট সিলেটে, চেন্নাই ও দিল্লি থেকে দুটি ফ্লাইট কলকাতায় অবতরণ করে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হওয়ায় রাত ৯টার পর উড়োজাহাজ ওঠানামা শুরু হয়। তবে ছয় ঘণ্টায় ২৩টি আন্তর্জাতিক ফ্লাইট অন্য বিমানবন্দরে অবতরণ করে। এতে ভোগান্তিতে পড়েন শত শত যাত্রী।
তথ্য মতে, আগুন নেভাতে গিয়ে ফায়ার ফাইটার, সিভিল অ্যাভিয়েশন, আনসারসহ ৩৫ জন আহত হয়েছেন। এর মধ্যে আনসার সদস্যই রয়েছেন ২৫ জন। তাদের সিএমএইচ ও কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালে পাঠানো হয়।
বিমানবন্দরের সূত্রমতে, তৈরি পোশাক কারখানার জন্য আমদানি করা বিপুল পরিমাণ কাপড় ও বিভিন্ন ধরনের দাহ্য পদার্থ ছিল আগুন লাগা ভবনে। এ কারণে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে বেশি সময় লেগেছে। কবে নাগাদ ফের কার্গো ভিলেজ চালু করা যাবে তা পরে বলা যাবে বলে জানিয়েছেন বিমানবন্দরের এক কর্মকর্তা।
মন্তব্য