বিয়ের প্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় এক যুবকের যৌনাঙ্গ কেটে দেয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে।
দুর্গাপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাহ নূর এ আলম বুধবার রাতে নিউজবাংলাকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। গত মঙ্গলবার সন্ধ্যায় দুর্গাপুর উপজেলার চন্দ্রকোনা ব্রিজের পাশে নদীর চরে এ ঘটনা ঘটে।
ওই যুবক বর্তমানে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। তার বাড়ি নেত্রকোনার দুর্গাপুর উপজেলার নলুয়াপাড়া গ্রামে।
পুলিশ জানায়, নলুয়াপাড়া চায়না মোড়ে ওই যুবকের মোবাইল সার্ভিসিংয়ের দোকানে প্রায়ই বিভিন্ন কাজে আসা-যাওয়া করতেন চন্দ্রকোনা গ্রামের ওই নারী। একপর্যায়ে ওই নারী বিয়ের প্রস্তাব দিলে তাতে তিনি অসম্মতি জানান।
মঙ্গলবার দুপুরে ফোনে আবারও তাকে বিয়ে করার প্রস্তাব দিলে পুনরায় অসম্মতি জানানোয় ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন ওই নারী। ওই দিন সন্ধ্যায় ওই নারীর লোকজন হাত-মুখ বেঁধে ওই যুবককে অপহরণ করে তুলে নিয়ে যায়। তাকে চন্দ্রকোনা ব্রিজের পাশে নদীর চরে নিয়ে বাঁধন খুলে দিলে ওই নারী ধারালো ছুরি দিয়ে তার যৌনাঙ্গ কেটে দেয়। এ সময় ওই যুবক অজ্ঞান হয়ে মাটিতে পড়ে গেলে মরে গেছে ভেবে তারা পালিয়ে যায়।
একপর্যায়ে চেতনা ফিরে এলে ওই যুবক তার ভাইকে ফোন করেন। পরে তাকে প্রথমে স্থানীয় দুর্গাপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এবং পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
এ বিষয়ে দুর্গাপুর থানার ওসি শাহ নূর এ আলম বলেন, এ ঘটনায় ওই যুবকের ভাই বাদী হয়ে ওই নারীসহ তার বাবা এবং দুই ভাইয়ের বিরুদ্ধে দুর্গাপুর থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। অভিযুক্ত ব্যক্তিদের গ্রেপ্তার করে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।
বাগেরহাটের ফকিরহাটে দেশের একমাত্র মহিষ প্রজনন ও উন্নয়ন খামারে বৃহস্পতিবার ১৮টি মহিষের রহস্যজনক মৃত্যু হয়েছে।
সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত খামারের মাঠ ও শেডে মহিষগুলোর মৃত্যু হয়।
কর্তৃপক্ষের দাবি, খাদ্যে বিষক্রিয়ায় মহিষগুলোর মৃত্যু হতে পারে।
সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ জানায়, প্রতিদিনের মতো সকালে ঘাস খাওয়ানোর জন্য খামারের অভ্যন্তরে লেকের পুকুর সংলগ্ন মাঠে নেয়া হয় পূর্ণবয়স্ক মহিষগুলোকে। কিছুক্ষণ পরই মহিষগুলো ছটফট করতে শুরু করে। একপর্যায়ে ১৮টি মহিষ মারা যায়। তখন খুব দ্রুত অবশিষ্ট মহিষগুলোকে শেডে নিয়ে আসা হয়।
মহিষ প্রজনন খামারের কর্মী আক্তার হোসেন বলেন, ‘সকাল ছয়টায় প্রজনন কেন্দ্রের শেড থেকে মহিষগুলোকে বাইরে বের করা হয়। ১০টার দিকে হঠাৎ দেখতে পাই কিছু মহিষ মাঠের ভেতর ছটফট করছে। সাথে সাথেই কিছু মহিষ মারা যায়। দ্রুত সুস্থ মহিষগুলোকে শেডে ফিরিয়ে নিয়ে যাই।’
মৃত্যুর কারণ জানতে বাগেরহাট জেলা ভেটেরিনারি কর্মকর্তা ডা. মনোহর চন্দ্র মন্ডলের নেতৃত্বে কয়েকটি মহিষের ময়নাতদন্ত সম্পন্ন হয়েছে। মহিষগুলোর প্রয়োজনীয় অঙ্গ পরীক্ষার জন্য ফরেনসিক ল্যাবে পাঠানো হয়েছে।
সেখান থেকে প্রাপ্ত ফলাফলে মৃত্যুর কারণ জানা যাবে বলে জানান ডা. মনোহর চন্দ্র মন্ডল।
তিনি বলেন, ‘মহিষের মৃত্যুর খবর পেয়ে দ্রুত প্রজনন খামারে ছুটে আসি। এসে দেখতে পাই বেশ কিছু মহিষ মারা গেছে। মহিষগুলোর বিভিন্ন অর্গান স্যাম্পল সংগ্রহ করা হয়েছে।
‘তিনটি মহিষ এখনও অসুস্থ অবস্থায় চিকিৎসাধীন রয়েছে। মহিষের মৃত্যুর সঠিক কারণ আমরা এখনও জানতে পারিনি। অর্গান স্যাম্পল পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে মহিষের মৃত্যুর সঠিক কারণ জানা যাবে।’
স্থানীয় রাজু নামের এক ব্যক্তি বলেন, ‘খামারের ভেতরে যে পুকুর রয়েছে ওই পুকুরে খামারের কিছু কর্মচারী মাছ চাষ করেন। ওই মাছের জন্য রাখা পচা খাবার খেয়ে এই মহিষগুলো মারা গেছে। আর দীর্ঘদিন ধরে এখানের যারা দায়িত্বে আছেন, তারা তাদের ইচ্ছেমতো প্রতিষ্ঠান পরিচালনা করেন, যার কারণে পচা ও মানহীন খাবার খেয়ে মাঝে মাঝেই মহিষ অসুস্থ হয়।’
মহিষের মৃত্যুর বিষয়ে মহিষ প্রজনন ও উন্নয়ন খামারের সিনিয়র সহকারী পরিচালক আহসান হাবীব বলেন, ‘মহিষগুলোকে শেড থেকে মাঠে নেয়ার পর কিছু মহিষ রহস্যজনকভাবে অসুস্থ হয়ে পড়ে। এ পর্যন্ত ১৮টি মহিষের মৃত্যু হয়েছে, দুটি মুমূর্ষ অবস্থায় রয়েছে। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি জানানো হয়েছে।’
খবর শুনে খামার পরিদর্শন করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের আশ্বাস দিয়েছেন জেলা প্রাণিসম্পদ বিভাগের শীর্ষ কর্মকর্তা ডা. সাহেব আলী।
আরও পড়ুন:কক্সবাজারের সাবেক সংসদ সদস্য (এমপি) আবদুর রহমান বদির বন্ধু মোহাম্মদ জাফরকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব)।
গ্রেপ্তার জাফর স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের তালিকাভুক্ত শীর্ষ মাদক কারবারি ও টেকনাফ উপজেলার সাবেক চেয়ারম্যান।
গ্রেপ্তারের বিষয়টি শুক্রবার নিশ্চিত করেন র্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার সহকারী পরিচালক আল আমিন।
তিনি বলেন, ‘জাফর স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের তালিকাভুক্ত শীর্ষ মাদক কারবারি। তিনি টেকনাফ উপজেলার চেয়ারম্যান ছিলেন। এ ছাড়া বিতর্কিত সাবেক সংসদ সদস্য আবদুর রহমান বদির বন্ধু ও ম্যানেজার হিসেবে পরিচিত ছিলেন।’
এর আগে গত ২০ আগস্ট চট্টগ্রামে অভিযান চালিয়ে আবদুর রহমান বদিকে গ্রেপ্তার করে র্যাব।
নেত্রকোণা জেলা শহরের সাতপাই (বিএডিসি) এলাকার বাসিন্দা, বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থার (বাসস) সিনিয়র স্টাফ রিপোর্টার সাংবাদিক গোলাম মঈনউদ্দীনের মা মাহমুদা খানম (৮০) আর নেই।
বার্ধক্যজনিত অসুস্থতা ও নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হয়ে ঢাকার হেলথ অ্যান্ড হোপ হাসপাতালের ইনটেনসিভ কেয়ার ইউনিটে (আইসিইউ) চিকিৎসাধীন অবস্থায় বুধবার রাত দেড়টার দিকে তার মৃত্যু হয়।
পরে বৃহস্পতিবার জেলা শহরের সাতপাই রেলওয়ে স্টেশন জামে মসজিদের সামনে তার প্রথম জানাজা হয়।
নেত্রকোণা সদর উপজেলার ঠাকুরাকোণা ইউনিয়নের বাঘরুয়া গ্রামের বাড়িতে বাদ জোহর দ্বিতীয় জানাজা শেষে পারিবারিক কবরস্থানে মাহমুদা খানমের দাফন হয়।
মাহমুদা খানম দুই মেয়ে ও দুই ছেলেসহ অসংখ্য গুণগ্রাহী রেখে গেছেন।
শেরপুরের নালিতাবাড়ীতে ধানক্ষেত ও পাহাড়ের ঢালে কৃষকদের দেয়া জেনারেটরের তারে জড়িয়ে একটি বন্যহাতির মৃত্যু হয়েছে।
উপজেলার সীমান্তবর্তী পোড়াগাঁও ইউনিয়নের বাতকুচি গ্রামে বৃহস্পতিবার রাত ৯টার দিকে এ ঘটনা ঘটে।
সেখান থেকে গতকাল রাতেই বন বিভাগ ঘটনাস্থল থেকে একজনকে জেনারেটরসহ আটক করে।
আটককৃত শহিদুল ইসলাম জেনারেটরের অপারেটর। সে জেনারেটর জব্দ করে মধুটিলা রেঞ্জ অফিসে রাখা হয়েছে।
এসব তথ্য শুক্রবার সকালে নিশ্চিত করেন ময়মনসিংহ বন বিভাগের মধুটিলা ইকো পার্কের রেঞ্জ কর্মকর্তা রফিকুল ইসলাম।
বন বিভাগ ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়, এক সপ্তাহ ধরে ২৫ থেকে ৩০টি বন্যহাতির পাল উপজেলার সীমান্তবর্তী গারো পাহাড়ের বিভিন্ন টিলা ও জঙ্গলে অবস্থান করছে। দিনের বেলায় টিলা বা জঙ্গলে অবস্থান করলেও সন্ধ্যা নামার পর হাতির পাল দল বেঁধে ধানক্ষেতে, লোকালয়ে নেমে আসে। এ জন্য কৃষকরা ফসলরক্ষায় ধানক্ষেত ও তার আশেপাশে জেনারেটরের লাইন দিয়ে পুরো এলাকা বৈদ্যুতিক জিআই তারের মাধ্যমে ঘিরে রাখে।
স্থানীয়রা মশাল জ্বালিয়ে, ঢাক-ঢোল পিটিয়ে হাতির পাল প্রতিরোধের চেষ্টা করছেন।
বাতকুচি গ্রামের টিলাপাড়া এলাকায় পাহাড়ের ঢালে গতকাল রাতে হাতির পাল ফসল ক্ষেতে হানা দেয়। ওই সময় একটি হাতি পাহাড়ের ঢালে ধানক্ষেতের পাশে পাহাড়ের উঁচু স্থানে বৈদ্যুতিক জিআই তারে জড়িয়ে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে ঘটনাস্থলেই মারা যায়। ওই সময় অন্য হাতিগুলো মৃত হাতিটিকে ঘিরে রাখে।
রাত ১২টার দিকে বন বিভাগের কর্মীরা ঘটনাস্থল থেকে জেনারেটর জব্দ করে নিয়ে যান। শুক্রবার সকালে মৃত হাতিটি রেখে অন্য হাতিগুলো জঙ্গলে ফিরে যায়।
শেরপুরের সহকারী বন সংরক্ষক মো. সাদেকুল ইসলাম খান বলেন, ‘বন্যহাতি যেন মারা না যায়, এ জন্য আমাদের জনসচেতনতা কার্যক্রম অব্যাহত আছে। আমাদের শেরপুর জেলায় ৩৪টি এআরটি টিম আছে। আমরা এআরটি টিমের মাধ্যমে জনসচেতনতা তৈরি করছি, যেন হাতি-মানুষের দ্বন্দ্ব কমানো যায়।
‘গতকাল রাত নয়টার সময় আমরা জানতে পারি, বাতকুচি নামক স্থানে হাতি মারা গেছে। পরে আমরা এসে দেখি ধানক্ষেত রক্ষা করার জন্য এখানে জেনারেটর দিয়ে একটা লাইন দিয়েছে। সেখানে তারে পেঁচিয়ে একটা হাতি মারা গেছে। আমরা সাথে সাথে একজনকে আটক করি এবং জেনারেটর ও তার জব্দ করি।’
তিনি আরও বলেন, ‘এ ঘটনার সাথে ১০ থেকে ১২ জন জড়িত। তাদের খোঁজা হচ্ছে। তাদের বিরুদ্ধে আমরা ব্যবস্থা গ্রহণ করব।
‘হাতিটা কিছুদিন আগে একটা বাচ্চা দিয়েছে। এটা মাদি হাতি। মৃত হাতির ময়নাতদন্ত করা হবে।’
আরও পড়ুন:চট্টগ্রামের নিউমার্কেট মোড়ে স্বাধীনতা স্তম্ভে জাতীয় পতাকার উপরে গেরুয়া পতাকা লাগিয়ে জাতীয় পতাকাকে অবমাননা করায় দুই যুবককে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। ইসকনের ওই দুই সদস্যকে বুধবার রাতে গ্রেপ্তার করা হয়। সূত্র: ইউএনবি
বন্দর নগরীর মোহরা এলাকার বাসিন্দা ফিরোজ খান বাদী হয়ে বুধবার রাতে কোতোয়ালি থানায় তাদের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহ মামলা করেন।
ইসকনের সাংগঠনিক সম্পাদক চন্দন কুমার ধর ওরফে চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারীসহ মামলায় ১৯ জনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে। অজ্ঞাত আসামি করা হয়েছে আরও ১৫ থেকে ২০ জনকে।
রাষ্ট্রদ্রোহের অভিযোগে বুধবার রাতে নগরী সদরঘাট এলাকা থেকে রাজেশ চৌধুরী ও হৃদয় দাশ নামে ওই দুই যুবককে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
চট্টগ্রামে মেট্রোপলিটন পুলিশের (সিএমপি) অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার (মিডিয়া) কাজী মো. তারেক আজিজ বলেন, নিউমার্কেট মোড়ে জাতীয় পতাকার উপরে গেরুয়া পতাকা লাগিয়ে অবমাননা করার ঘটনায় রাষ্ট্রদ্রোহ মামলায় দু’জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। সিসি টিভির ফুটেজ বিশ্লেষণ ও গোপন সংবাদের ভিত্তিতে তাদেরকে গ্রেপ্তার করা হয়।
মামলার অভিযোগে জানা গেছে, ২৫ অক্টোবর শুক্রবার নগরীর লালদীঘির মাঠে ধর্মীয় সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের সমাবেশ চলাকালে নিউমার্কেটের গোল চত্বরে একটি বাঁশ দিয়ে বাংলাদেশের পতাকার উপরে গেরুয়া পতাকা লাগানো হয়। এই ঘটনার ছবিটি নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ব্যাপক সমালোচনা হয়।
জাতীয় পতাকা বিধিমালা-১৯৭২ (সংশোধিত ২০১০)-এ বলা আছে, বাংলাদেশের পতাকার উপরে অন্য কোনো পতাকা বা রঙিন পতাকা উত্তোলন করা যাবে না।
নিউমার্কেটের স্বাধীনতা স্তম্ভে গেরুয়া পতাকা উত্তোলনের মাধ্যমে এই বিধিমালা লঙ্ঘন করা হয়েছে।
কক্সবাজারের মহেশখালীতে বুধবার গভীর রাতে ঘরে ঢুকে এক নারীকে গুলি করে হত্যা করেছে দুর্বৃত্তরা।
উপজেলার কালারমারছড়া ইউনিয়নের নুনাছড়ির ফকিরারঘোনা এলাকায় বুধবার গভীর রাতে এ ঘটনা ঘটে বলে জানান মহেশখালী থানার ওসি কায়সার হামিদ।
নিহত ফরিদা ইয়াসিন সৈয়দা (৩০) ওই এলাকার প্রয়াত ছৈয়দ আহমেদের মেয়ে।
স্থানীয়দের বরাতে কায়সার হামিদ বলেন, ‘মধ্যরাতে অজ্ঞাত একদল দুর্বৃত্ত ঘরে প্রবেশ করে ওই নারীকে উপর্যুপরি কয়েকটি গুলি করে হত্যা করে। এ সময় গোলাগুলির খবর শুনে স্থানীয়রা এগিয়ে এলে দুর্বৃত্তরা পালিয়ে যায়।
‘পরে খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে গুলিবিদ্ধ এক নারীর মরদেহ উদ্ধার করেছে।’
কায়সার জানান, স্বামী পরিত্যক্তা এ নারীকে কারা, কী কারণে গুলি করে হত্যা করেছে, তা নিশ্চিত হওয়া যায়নি। তারপরও ঘটনায় জড়িতদের চিহ্নিত করে গ্রেপ্তারে পুলিশ অভিযান চালাচ্ছে।
নিহত নারীর স্বজনরা এ হত্যার জন্য কালারমারছড়ার ইউপি চেয়ারম্যান ও মহেশখালী উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক তারেক বিন ওসমান শরীফের সমর্থকদের দায়ী করছে বলেও জানান তিনি।
ওসি জানান, ময়নাতদন্তের জন্য মরদেহ কক্সবাজার জেলা সদর হাসপাতালের মর্গে রয়েছে।
আরও পড়ুন:বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের (ববি) শিক্ষার্থী মাইশা ফৌজিয়া মিম বাসচাপায় নিহত হওয়ার ঘটনায় বিক্ষুব্ধ ক্যাম্পাস। যথাযথ ক্ষতিপূরণ ও দায়ীদের বিচারের দাবিতে বৃহস্পতিবার দিনভর বিশ্ববিদ্যালয়ের মেইন গেট সংলগ্ন ঢাকা-কুয়াকাটা মহাসড়ক অবরোধ করেন শিক্ষার্থীরা৷
সকাল ১০টায় অবরোধ করে ৮ ঘণ্টা পর সন্ধ্যা ৬টায় অবরোধ তুলে নেন শিক্ষার্থীরা। রাত ১১টার মধ্যে বাসচালক ও মালিক গ্রেপ্তার না হলে পুনরায় মহাসড়ক অবরোধের ঘোষণা দেন তারা।
এদিকে দুপুর ১২টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের মেইন গেটের সামনে মহাসড়কেই মাইশা ফৌজিয়া মিমের জানাজা আদায় করেন শিক্ষার্থীরা। জানাজায় নিহত মাইশার বাবা-মামাসহ পরিবারের লোকজন অংশগ্রহণ করেন।
জানাজা শেষে দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য, বিভাগীয় কমিশনার ও বরিশালের জেলা প্রশাসক কথা বলেন শিক্ষার্থীদের সঙ্গে। কিন্তু শিক্ষার্থীরা দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত মহাসড়ক ছাড়তে রাজি হননি।
শিক্ষার্থীরা বলেন, ‘আমাদের দশটি দাবির একটিও পূরণ হয়নি। এখন পর্যন্ত খুনি বাসচালককে গ্রেপ্তার করতে পারেনি প্রশাসন। বাস মালিককেও হাজির করতে পারেননি তারা। দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আমরা মহাসড়ক ছাড়ব না।’
অবরোধকারী শিক্ষার্থীদের একজন রুবেল মোল্ল্যা বলেন, ‘আমাদের বোন নিহত হয়েছে গতকাল। কিন্তু প্রশাসন এখন পর্যন্ত ঘাতক বাসচালককে আটক করতে পারেনি। বাস মালিককেও আনতে পারেনি। এমনকি ক্ষতিপূরণ দেয়ার ব্যবস্থাও হয়নি।
‘এসব দাবি পূরণ না হওয়ায় আমরা মহাসড়ক অবরোধ করেছি। আর যেন এভাবে কোনো শিক্ষার্থীর প্রাণ সড়কে না ঝরে সে জন্য ফুটপাত ও ফুটওভার ব্রিজ নির্মাণসহ আমরা সমস্যাগুলোর স্থায়ী সমাধান চাই।’
নিহত ছাত্রীর বাড়ি নেত্রকোনায়। তিনি মা-বাবার একমাত্র সন্তান। বড় হয়েছেন ঢাকায় মায়ের সঙ্গে মামাদের তত্ত্বাবধানে। মাইশার বাবা মোহাম্মদ আলী সবার কাছে তার সন্তানের আত্মার মাগফিরাত কামনা করে দোয়া চান এবং এই হত্যার যথাযথ বিচার দাবি করেন।
জানাজা শেষে পরিবারের কাছে মরদেহ হস্তান্তর করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।
প্রক্টর সহযোগী অধ্যাপক রাহাত হোসাইন ফয়সাল বলেন, ‘জানাজা নামাজ শেষে দুপুর ১২টার পর নিহত শিক্ষার্থীর পরিবারের কাছে মরদেহ হস্তান্তর করা হয়েছে। শিক্ষার্থীদের দেওয়া দশ দফা দাবি নিয়ে আমরা কাজ শুরু করেছি। ইতোমধ্যে আমরা অধিকাংশ দাবি আদায় করেছি। কিছু দাবির কাজ চলমান। শিক্ষার্থীদের আমরা আশ্বস্ত করেছি সব দাবি আমরা পূরণ করব অতি দ্রুত।’
বিভাগীয় কমিশনার শওকত আলী বলেন, ‘শিক্ষার্থীদের করা দাবি অনুযায়ী আমরা পদক্ষেপ নেয়া শুরু করেছি। সংশ্লিষ্ট গাড়ির চালককে আটক করতে বুধবার রাত থেকেই আমাদের পুলিশ কমিশনার তৎপর আছেন। আমরা আজ রাতের মধ্যে তাকে গ্রেপ্তার করব। স্পিডব্রেকার দেয়ার কাজ চলমান রয়েছে। ট্রাফিক ব্যবস্থাও জোরদার করা হয়েছে।’
বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. শুচিতা শরমিন বলেন, ‘শিক্ষার্থীদের প্রতিটি দাবি আমারও দাবি। আমি গতকাল রাত থেকেই দাবিগুলো পূরণে কাজ করছি। ইতোমধ্য কিছু কাজ আমরা করেছি৷
‘বিআরটিএ ও বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন থেকে ১০ লাখ টাকা দেয়ার ব্যবস্থা হয়েছে। সড়কে স্পিড ব্রেকার নির্মাণের কাজ ইতোমধ্যে শুরু হয়েছে। বাসচালক ও সহকারীকে ধরতে পুলিশ কাজ শুরু করেছে। আশা করছি শিগগির তাদেরকে আটক করা সম্ভব হবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমি চাই না এভাবে আর কোনো শিক্ষার্থীর প্রাণ সড়কে ঝরুক। তার জন্য যা করার প্রয়োজন আমি করব।’
জানা গেছে, ঢাকায় পারিবারিকভাবে মামাদের তত্ত্বাবধানে জানাজা শেষে মরদেহ দাফন করা হবে।
প্রসঙ্গত, বুধবার রাত সাড়ে ৯টায় বিশ্ববিদ্যালয় সংলগ্ন ভোলা রোডে পুলিশ বক্সের পাশে ঢাকা-কুয়াকাটা মহাসড়ক পার হওয়ার সময় নারায়ণগঞ্জ ট্রাভেলসের একটি পরিবহন মাইশাকে চাপা দেয়। শেরে বাংলা মেডিক্যালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
আরও পড়ুন:
মন্তব্য