হেফাজতে ইসলামের নেতা মামুনুল হকের পক্ষে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে স্ট্যাটাস দেয়ায় বগুড়ার ধুনট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স জামে মসজিদের ইমাম মুর্শিদুল ইসলামকে চাকরিচ্যুত করা হয়েছে।
মসজিদ কমিটির সভাপতি উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা হাসানুল হাছিব স্বাক্ষরিত অব্যাহতির চিঠি মঙ্গলবার দুপুরে পান মুর্শিদুল। এর আগে তাকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছিল।
স্থানীয় লোকজন জানান, মুর্শিদুল প্রায় ১২ বছর ধরে ওই মসজিদে ইমামতি করে আসছেন। চাকরির সুবাদে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের কোয়ার্টারেই পরিবার নিয়ে বসবাস করতেন। হেফাজতের কেন্দ্রীয় যুগ্ম মহাসচিব মামুনুল নারী নিয়ে নারায়ণগঞ্জের একটি রিসোর্টে অবরুদ্ধ হওয়ার দিন তার পক্ষে ফেসবুকে স্ট্যাটাস দেন মুর্শিদুল।
তারা আরও জানান, বিষয়টি মসজিদ পরিচালনা কমিটি এবং স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের নজরে আসলে উত্তেজনা দেখা দেয়। পরে তাকে সাময়িকভাবে চাকরি থেকে বরখাস্ত করা হয়।
গত রোববার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও), মসজিদ কমিটির সদস্য ও ক্ষমতাসীন দলের স্থানীয় নেতাকর্মীরা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে বৈঠক করে সর্বসম্মতিক্রমে তাকে চাকুরিচ্যুত করার সিদ্ধান্ত নেন।
এ বিষয়ে মুর্শিদুল বলেন, ‘হেফাজতের নেতা মামুনুল হককে হেনস্তা করার দৃশ্য দেখে ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়েছিলাম। সেই স্ট্যাটাসে সরকারবিরোধী কোনো কথা ছিল না।
‘পরবর্তীতে ভুল বুঝতে পেরে ফেসবুক থেকে সেই স্ট্যাটাস মুছে ফেলে মসজিদ কমিটির সদস্যদের কাছে ক্ষমা চেয়েছিলাম। কিন্তু তারা আমাকে ক্ষমা না করে চাকুরিচ্যুত করেছেন।’
উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. হাসানুল হাছিব বলেন, ‘মসজিদ কমিটির সদস্য, উপজেলা প্রশাসন ও সরকারি দলের নেতাকর্মীদের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, মুর্শিদুল ইসলামকে চাকরি থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। একই সাথে তাকে সরকারি বাসা ছেড়ে যেতে বলা হয়েছে।’
নড়াইল-মাগুরা পাশাপাশি দুটি জেলা । গ্রামীণ সড়ক পথে দুটি জেলার যোগাযোগ ব্যবস্থা সহজ করতে ২০ বছর আগে নড়াইল অংশের লাহুড়িয়া ইউনিয়নের ঝামারঘোপ খালের ওপর একটি কালভার্ট নির্মাণ করা হয়। নড়াইলের লোহাগড়া উপজেলার নলদী ইউনিয়নের দুইটি ও লাহুড়িয়া ইউনিয়নের তিনটি এবং মাগুরার মোহম্মদপুর উপজেলার ২টি গ্রাম মোট সাতটি গ্রামের ৩০ হাজার মানুষ এই পথ দিয়ে নিয়মিত চলাচল করে আসছে। ব্যবসায়ী, স্কুল-কলেজ শিক্ষার্থী, মুমূর্ষু রোগীসহ সাধারণ মানুষ এ পথ দিয়ে চলাচল করে থাকে।
এলাকার মানুষ জানায়, দুই বছর আগে নির্মিত কালভার্টের উপরিভাগের বেশ কিছু অংশ ভেঙে যায় । সংস্কার না করায় তার ওপর দিয়ে সাধারণ মানুষ, স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীসহ যানবাহন চলাচলে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে । মুমূর্ষু রোগীদের হাসপাতালে যেতে ঘুরপথে নিতে হচ্ছে।
সরেজমিনে দেখা গেছে, নড়াইলের লোহাগড়া উপজেলা শহর থেকে লাহুড়িয়া ইউনিয়নের ঝামারঘোপ এলাকার দূরত্ব প্রায় ২২ কিলোমিটার। কালভার্টের পাটাতনের উপরিভাগের একাংশ ভেঙে পড়ায় ভেতরের লোহার রড বেরিয়ে গেছে । এলাকার মানুষ তার ওপর কাঠের তকতা দিয়ে কোন রকম চলাচলের ব্যবস্থা করলেও ঝুঁকি রয়েছে। দিনের বেলায় স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীরা চলাচল করছে। মাঝে মধ্যে দুই একটা ইজিবাইক চলাচল করেছে। তবে সন্ধ্যার পরে ওই সড়কে কোনো কিছুই চলাচল করতে সাহস পায় না।
স্থানীয় প্রকৌশল অধিদপ্তর নড়াইল কার্যালয় সূত্র জানায়, বক্স কালভার্ট সংস্কারে সম্প্রতি প্রকল্প অনুমোদন পাওয়া গেছে । খুব তাড়াতাড়ি কাজ শুরু করা যাবে ।
ঝামারঘোপ গ্রামের কৃষক হোসেন আলী বলেন,সন্ধ্যার পর এই সড়ক দিয়ে কিছুই চলে না। ফলে দূর-দূরান্তের স্বজনরা খুব একটা আসতে চায় না।
লাহুড়িয়া গ্রামের সৈয়দ সরোয়ার হোসেন বলেন, ৮৫টি পাড়া নিয়েই লাহুড়িয়া ইউনিয়ন গঠিত। এক একটি পাড়া একটি গ্রামের সমান। রাস্তায় চলাচলে ঝুকি থাকায় এই ইউনিয়নের অনেক পাড়ার আত্মীয়-স্বজন বেড়াতে আসতে চায় না।
স্থানীয় স্কুল ছাত্রী রোকসানা জানায় এর ওপর দিয়ে হাঁটতে গেলে বুক কেপে ওঠে। বের হয়ে থাকা লোহার রডগুলো দেখলে থমকে দাঁড়াই। তখন মনে হয় পরে যাব।
স্থানীয় ঠিকাদার প্রিন্স জানান, কালভার্ট মেরামতের ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট দপ্তরে অনেকবার যোগাযোগ করা হলেও কোন কাজ হয়নি। তিনি বলেন, রাতের পর ওই সড়ক দিয়ে কোনো কিছুই চলাচল করে না। মুমূর্ষ রোগীদের ঘুরপথে হাসপাতালে নিয়ে যেতে হচ্ছে। এতে অনেক টাকা খরচ হচ্ছে। আর্থিকভাবে অসচ্ছল পরিবারগুলো উন্নত চিকিৎসা হতে বঞ্চিত হচ্ছেন।
স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর নড়াইলের নির্বাহী প্রকৌশলী সরকার ইকরামুল কবির বলেন, মানুষের চলাচলের জন্য অনেক আগে ঝামারঘোপ খালের ওপর একটি সাধারণ কালভার্ট নির্মাণ করা হয়। ২০০১ সালের দিকে ওই কালভার্টকে বক্স কালভার্টে পরিণত করা হয়। তিনি বলেন, ৩০ মিটার দৈর্ঘের এই বক্স কালভার্টটি মেরামতে অনুমতি পাওয়া গেছে। খুব তাড়াতাড়ি নির্মাণ কাজ শুরু করা হবে।
ভোলার চরফ্যাশনে তিন সন্তান ও দুই মেয়ে থাকার পরও ৯০ উর্ধ্ব বৃদ্ধ মায়ের ঠাঁই মেলল ছেলের গোয়াল ঘরে। সন্তানরা ঘরে ঠাঁই না দেয়ায় বৃদ্ধ মা উলফৎ নেছা আশ্রয় নেন মেঝো ছেলে নিরবের গোয়াল ঘরে। গরু রাখার পাশাপাশি ওই বৃদ্ধ মা গোয়াল ঘরে চটের মেঝেতে বিছনা পেতে কয়েক মাস যাবত দিনযাপন করছেন।
শশীভূষণ থানার এওয়াজপুর ইউনিয়নের তিন নম্বর ওয়ার্ডে ছেলের বাড়িতে এমন হৃদয়বিধারক ঘটনা ঘটে। এই ঘটনার একটি ভিডিও গত বৃহস্পতিবার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পরলে উপজেলা জুড়ে তোলপাড় শুরু হয়। ওই ছেলের প্রতি ধিক্কার জানান হাজার হাজার নেটিজেনরা।
ওই ভিডিওতে দেখা যায় বৃদ্ধ মা উলফৎ নেছা ছেলের গোয়াল করে চটের বিছনায় শুয়ে আছেন। আশেপাশে গরু বেধে রাখা আর অন্য পাশে কাপড়ের প্রাচীর দিয়ে বৃদ্ধ মায়ের আবাসস্থল। এমন ভিডিওটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যামে ছড়িয়ে পড়লে নজরে আসে কেন্দ্রীয় যুবদলের সাধারণ সম্পাদক নুরুল ইসলাম নয়নের। গতকাল শুক্রবার তিনি ওই বৃদ্ধের বাড়িতে ছুটে গিয়ে বৃদ্ধের ভরণপোষণের সকল দ্বায়িত্বভার নেন। এবং তিনি বৃদ্ধকে তার বড় মেয়ে ফজিলত বেগমের জিম্মায় রেখে আসেন।
স্থানীয় সত্রে জানা যায়, বৃদ্ধ উলফৎ নেছার ঘরে তিন ছেলেও ও দুই মেয়ে। প্রায় ২০ বছর আগে স্বামী খলিলুর রহমান মারা যান। স্বামীর মৃত্যুর পর তার স্বামীর ওয়ারিশি পাওনা ঘর ভিটে তিন সন্তান তাদের নামে লিখে নেন। অবশেষে স্বামীর শেষ সম্বল ঘর ভিটে হারিয়ে তার ঠাঁই হয় তিন সন্তান আবদুস সহিদ, মো. নিরব ও মো. বাছেদের ওপর। দিনমুজর সন্তানরা অভাবের সংসারে টানাপড়নে কর্মের সন্ধানে ছুটে যান ঢাকা ও চট্রগ্রামে। পুত্রবধুদের দোটানায় পড়ে সর্বশেষ তার ঠাঁই মেলে মেঝো ছেলে নিরবের ঘরে। বৃদ্ধ মা বিছনায় মলমুত্র ত্যাগ করে এমন অজুহাত দিয়ে ছেলে ও পুত্রবধূ নাহার মিলে তাকে বসত ঘরের পাশে মাটির গোয়াল ঘরের মেঝেতে চটের বিছানায় থাকতে দেন।
পাষন্ড ছেলে নিরব জানান, তিনি পেশায় দিনমুজুর। মা অনেক বৃদ্ধ। তাই সে বিছনায় মলমুত্র ত্যাগ করতেন। গোয়াল ঘরের পাশে থাকতে দেয়া হয়েছে। নিয়মিত তাকে পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন ও খাবার খাওয়ানো হতো।
শশীভূষণ থানার ওসি তারিক হাসান রাসেল জানান, সামজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভিডিও দেখার পরে ওই বৃদ্ধে ছেলেকে থানায় ডেকে এনে তার মাকে ঘরে তোলার জন্য বলা হয়েছে।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার রাসনা সারমিন মিথি জানান, দ্রুত সময়ের মধ্যে সমাজসেবা কর্মকর্তাকে পাঠিয়ে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
ন্যাশনাল নিউট্রিশন ও ওয়েলনেস সামিটবিষয়ক কনফারেন্সের উদ্বোধন অনুষ্ঠানে গতকাল বক্তব্য রাখেন সমাজকল্যাণ উপদেষ্টা শারমীন এস মুরশিদ। ছবি: পিআইডি
সুস্থ ভ্রুণের জন্ম দিতে নিউট্রিশন এবং মেন্টাল হেলথকে এগিয়ে নিতে তরুণ সমাজকে দায়িত্বশীল হওয়ার তাগিদ দিয়ে সমাজকল্যাণ এবং মহিলা ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা শারমীন এস মুরশিদ বলেছেন, নতুন বাংলাদেশের জন্য অবশ্যই শারীরিক ও মানসিক সুস্থতার কথা ভাবতে হবে।
গতকাল শুক্রবার রাজধানীর আগারগাঁওয়ে সমাজসেবা অধিদপ্তরের অডিটরিয়ামে আয়োজিত ন্যাশনাল নিউট্রিশন ও ওয়েলনেস সামিট বিষয়ক দুই দিনব্যাপী কনফারেন্সের উদ্বোধন অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।
সমাজকল্যাণ উপদেষ্টা বলেন, আগামীর বাংলাদেশ, নতুন বাংলাদেশের কথা ভাবতে হলে অবশ্যই ভাবতে হবে আমাদের শারীরিক ও মানসিক সুস্থতার কথা। একটি সুস্থ ভ্রুণের জন্ম দিতে নিউট্রিশন এবং মেন্টাল হেলথকে এগিয়ে নিতে তরুণ সমাজকে দায়িত্বশীল হতে হবে।
তরুণদের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘ইসলাম আমাদের যে প্রথম শিক্ষা দেয় সেটা হলো- সবাইকে নিয়ে চলা, সবাইকে সম্মান করা এবং সবাইকে গ্রহণ করা। সব ধর্মের মানুষকে নিয়েই আমার বাংলাদেশ। তোমরা যারা আজ তরুণ প্রজন্ম, তোমাদের মধ্যে বোধোদয়ের উন্নতি ঘটাতে হবে, তোমাদের সামাজিক কাজের জন্য প্রস্তুতি নিতে হবে। তাহলে তোমরা সমাজে সবাইকে নিয়ে চলতে পারবে, দেশকে এগিয়ে নিয়ে যেতে পারবে। বাংলাদেশে শতকরা ৫০ ভাগের ঊর্ধ্বে তরুণ সমাজ। তোমাদের হাতেই এ দেশের ভবিষ্যৎ।’
‘তোমরা যারা সামাজিক সংগঠন করো তোমাদেরকে নতুন করে ভাবতে হবে, ভেঙে যাওয়া দুর্নীতিগ্রস্ত সমাজ, সেই সমাজে একটা নতুন করে বাঁচার আকাঙ্ক্ষা, ইচ্ছা, একটা সুস্থ, সুন্দর দেশ গড়ার আকাঙ্ক্ষা। সেই যে স্বপ্ন আমাদের ৫৪ বছর আগে মুক্তিযুদ্ধের মধ্যে দিয়ে আমরা যে স্বপ্ন দেখেছি। হারিয়ে যাওয়া সেই স্বপ্ন বার বার আশাহত হওয়া জনগণ, আশাহত তরুণ এবং চব্বিশে ফেটে পড়া সেই রাগ ছিল তরুণদের ন্যায্য অধিকার, যা তারা বড়দেরকে আঙ্গুল দিয়ে শিখিয়ে দিয়ে গেছে’, যোগ করেন সমাজকল্যাণ উপদেষ্টা।
উদ্বোধন অনুষ্ঠানে সমাজসেবা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মো. সাইদুর রহমান খান এবং সেরাক বাংলাদেশ সংগঠনের এক্সিকিউটিভ ডিরেক্টর এস এম সৈকত বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন।
অনুষ্ঠানে যুব সংগঠনের নিরাপদ এলায়েন্সের ভাইস চেয়ারম্যান ফাতিন সাদাব লিয়ান, সাধারণ সম্পাদক মাসুম মুহাম্মদসহ, আনকোরা, মিশন গ্রিন বাংলাদেশ, হার্টওয়াইজ, নিউট্রিশন, নিউট্রিফিকেশন ও নিরাপদ অ্যালায়েন্সের সামাজিক সংগঠনসহ বিভিন্ন সামাজিক সংগঠনের নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
মাগুরা জেলার সরকারি কর্মকর্তাদের সাথে উন্নয়ন কর্মকান্ড বিষয় নিয়ে এক মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। শনিবার (২৫ অক্টোবর) সকালে মাগুরা জেলা প্রশাসনের আয়োজনে জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়।
জেলা প্রশাসক মোঃ অহিদুল ইসলামের সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ সরকারের শিল্প মন্ত্রণালয়ের শিল্প সচিব মোঃ ওবায়দুর রহমান। এ সময় জেলার সার্বিক উন্নয়ন কর্মকাণ্ড নিয়ে সরকারি সকল দপ্তরের সরকারি কর্মকর্তাদের সাথে এ মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয় এবং উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়নে পরিকল্পনা ও গৃহীত কার্যক্রমসহ বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনা হয়।
সভায় সকল সরকারি দপ্তরের কর্মকর্তা এবং প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার সাংবাদিকগণ উপস্থিত ছিলেন।
ডামি রাইফেল প্রদর্শন করে মিছিলে অংশগ্রহণের মাধ্যমে জনমনে আতঙ্ক সৃষ্টির অভিযোগে মুজাহিদুল ইসলাম চৌধুরী (৪৯) নামে এক ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করেছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের তুরাগ থানা পুলিশ।
গতকাল বিকেল আনুমানিক সাড়ে ৪টায় উত্তরা পশ্চিম থানাধীন ১২ নং সেক্টরের একটি বাসায় অভিযান চালিয়ে ডামি রাইফেলসহ তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।
ডিএমপির মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশন্স বিভাগের উপ-পুলিশ (ডিসি) মুহাম্মদ তালেবুর রহমান এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
তুরাগ থানা পুলিশের বরাত দিয়ে তিনি জানান, শুক্রবার দুপুর আনুমানিক ১টা ৫০ মিনিটে থানার একটি টহল টিম গোপন সংবাদের ভিত্তিতে জানতে পারে কয়েক জন মিলে তুরাগ থানাধীন খালপাড় পুলিশ বক্সের পাশে পাকা রাস্তায় গণজমায়েত করে অবৈধ অস্ত্র প্রদর্শনের মাধ্যমে জনসাধারণের মধ্যে ভয় ও আতঙ্ক সৃষ্টি করছে এবং আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি বিঘ্নিত করার চেষ্টা করছে। এই সংবাদের ভিত্তিতে উক্ত স্থানে অভিযান পরিচালনা করে তুরাগ থানা পুলিশ। পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে তারা পালিয়ে যায়।
তিনি আরও জানান, পরবর্তীতে স্থানীয়দের মোবাইল ফোনে ধারণকৃত ভিডিও ফুটেজ ও জিজ্ঞাসাবাদের মাধ্যমে মিছিলে অস্ত্র প্রদর্শনকারী মুজাহিদুল ইসলাম চৌধুরীকে শনাক্ত করে তুরাগ থানা পুলিশ। শুক্রবার বিকেলে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। এ ঘটনায় আজ মুজাহিদুল ইসলাম চৌধুরীর বিরুদ্ধে সন্ত্রাস বিরোধী আইনে একটি মামলা রুজু করা হয়েছে।
স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেছেন, হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কার্গো ভিলেজ এলাকায় অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা তদন্তের জন্য ইংল্যান্ড, অস্ট্রেলিয়া, চীন ও তুরস্কের বিশেষজ্ঞদের আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। তারা তদন্ত করে কারণ ও দায় নির্ধারণে সহায়তা করবেন।
শনিবার (২৫ অক্টোবর) বেলা পৌনে ১২টায় হযরত শাহজালাল (র.) আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের সাম্প্রতিক অগ্নিকাণ্ডে ক্ষতিগ্রস্ত কার্গো ভিলেজ ও ই-গেট পরিদর্শন শেষে সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, আগুন নিয়ন্ত্রণে ফায়ার সার্ভিস যথাসাধ্য চেষ্টা করেছে। ফায়ার সার্ভিস ফেল করেনি। তারা সময়মতো ঘটনাস্থলে পৌঁছে আগুন নেভাতে কাজ করেছে। এয়ারপোর্ট অথরিটির চারটি ইউনিট চার মিনিটের মধ্যেই ঘটনাস্থলে পৌঁছে যায়। ফায়ার ব্রিগেডের ইউনিটগুলোও ১৫ থেকে ২০ মিনিটের মধ্যে আসে। আগুন দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে কারণ ওই জায়গায় খাদ্যপণ্য বেশি ছিল, কেমিক্যাল নয়।
তিনি আরো বলেন, বিমানবন্দরে ইলেকট্রনিক গেট স্থাপন দ্রুত চালুর বিষয়ে আলোচনা চলছে। এছাড়া রেমিট্যান্সযোদ্ধাদের পাসপোর্ট সংক্রান্ত ভোগান্তি কমাতে সরকার পদক্ষেপ নেবে বলেও আশ্বাস দেন তিনি।
বিমানবন্দরের ফায়ার ইউনিটের সক্ষমতা নিয়ে প্রশ্নের জবাবে উপদেষ্টা বলেন, যে ফায়ার ইউনিট বিমান পরিচালনার জন্য থাকে, সেটি কার্গো ভিলেজেও কাজ করতে পারে—এতে কোনো সমস্যা নেই। যেমন আমরা বাসায় যে পোশাক পরি, তা প্রয়োজনে পরে আত্মীয়ের বাড়িতেও যাওয়া যায়।
এ সময় বাংলাদেশ বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের (বেবিচক) চেয়ারম্যান এয়ার ভাইস মার্শাল মো. মোস্তফা মাহমুদ সিদ্দিকসহ অন্যান্য কর্মকর্তারাও উপস্থিত ছিলেন।
নীলফামারীতে পঞ্চাশ বছরের পুরোনো একমাত্র চলাচলের রাস্তা দখল করে দোকান নির্মাণের অভিযোগ উঠেছে সেতু নামে স্থানীয় এক প্রভাবশালীর বিরুদ্ধে। এতে সদর উপজেলার চড়াইখোলা ইউনিয়নের নগর দাড়োয়ানী টেক্সটাইল কবিরাজ পাড়া গ্রামের ১৫টি পরিবার চরম ভোগান্তিতে পড়েছে। স্থানীয়রা জানান, রাস্তাটি দিয়ে দীর্ঘদিন ধরে তারা বাজার, স্কুল, মসজিদ ও হাসপাতালে যাতায়াত করে আসছিলেন। কিন্তু রাস্তা বন্ধ করে দেওয়ায় পুরো গ্রাম প্রায় অবরুদ্ধ। বিষয়টি নিয়ে তারা চড়াইখোলা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) কাছে অভিযোগের পরও কোনো ব্যবস্থা নেয় নি তারা।
ভুক্তভোগী আঞ্জুয়ারা সুমি বলেন, “আমরা প্রায় ৫০ বছর ধরে এই রাস্তায় চলাচল করছি। এখন সেতু দোকান তুলে পুরো পথ বন্ধ করে দিয়েছে। রাস্তাটা বন্ধ হয়ে যাওয়ায় বাচ্চাদের স্কুলে পাঠাতে কষ্ট হচ্ছে।”
রুবি বেগম বলেন, “বাড়ি থেকে বাজারে যেতে এখন অনেক দূর ঘুরে যেতে হয়। বৃদ্ধ মানুষদের জন্য এটা অনেক কষ্টকর।”
শিক্ষার্থী ফারজানা আক্তার বলেন, “রাস্তায় দোকান উঠায় স্কুলে যেতে অনেক দেরি হয়। ক্লাসও মিস করি।” নয়ন ইসলাম বলেন, “আমরা খেলাধুলা বা পড়াশোনার কাজে বাইরে যেতে পারি না, কারণ রাস্তা পুরোপুরি বন্ধ।”
এদিকে অভিযোগের বিষয়ে অভিযুক্ত সেতু বলেন,“তারা এখন পর্যন্ত আমাদের জমিতে বসবাস করতেছে। আমরা তাদের রাস্তা দিয়েছি, থাকার জমি দিয়েছি। তাদের এখন ওই রাস্তা দিয়ে চলতে দূর হয় নাকি। তারা যে অভিযোগ করছে তা সত্য নয়। তাদের চলাচলের রাস্তা রয়েছে।”
এ বিষয়ে সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. সাইফুল ইসলাম বলেন,“বিষয়টি আমার জানা নেই। অভিযোগ পেলে তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।”
মন্তব্য