সর্বাত্মক লকডাউনেও জমজমাট সাভারের মাছের আড়ত। ভোরের আলো ফোটার আগেই সেখানে জড়ো হতে থাকে লোকজন। সকাল ৭টা থেকে ৯টা পর্যন্ত থাকে জটলা।
গাদাগাদি করে মাছ বেচাকেনায় ব্যস্ত মানুষের মধ্যে নেই করোনার ভয়। কারও কারও মুখে কদাচিৎ দেখা যায় মাস্ক, যা নামানো থাকে থুতনিতে। কারও মাস্কটি থাকে হাতে কিংবা পকেটে। স্বাস্থ্যবিধি মানার চেষ্টা ওই পর্যন্তই।
কঠোর লকডাউন শুরুর দিন থেকেই নিউজবাংলার প্রতিবেদক নবীনগর-চন্দ্রা মহাসড়ক-ঘেঁষা আশুলিয়া থানা মৎস্য ব্যবসায়ী মার্কেট ঘুরেছেন। প্রতিদিন সকালেই সেখানে দেখা গেছে জটলা। বিভিন্ন এলাকা থেকে পাইকাররা এখানে আসেন। কেনাবেচা চলে দেদার।
লকডাউনের মধ্যে এমন সমাগমে করোনার সংক্রমণ বাড়ার আশঙ্কা যে আছে, বাজার কর্তৃপক্ষ সে বিষয়ে উদাসীন। তাদের দাবি, স্বাস্থ্যবিধি মেনে আড়ত চালানোর ব্যাপারে তারা সজাগ রয়েছেন। বাজারের বাইরে ব্যানার টাঙিয়ে মাস্ক পরে স্বাস্থ্যবিধি মেনে প্রবেশ করার আহ্বান জানানো আছে।
কিন্তু রোববার গিয়ে দেখা গেল, সেটি উল্টে আছে। ব্যানার থাকলেও নির্দেশনাগুলো মানা হচ্ছে কি না, সেই নজরদারিতে দেখা যায়নি কাউকে। বাজার থেকে কিছু দূরেই আশুলিয়া থানা। লকডাউন চলাকালে এই বাজারে কয়েক হাজার মানুষের আনাগোনা চোখে পড়ে বেশ দূর থেকেও। কিন্তু পুলিশ সদস্যদের সেখানে টহল দিতে দেখা যায়নি একবারও। উপজেলা প্রশাসনেরও নেই নজরদারি।
বাজারে মাছ বিক্রি করতে এসেছেন হাজি শাহাদাত হোসেন। করোনার মধ্যেও কেন এই ভিড়ভাট্টায় এসেছেন জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘ভোর ৫টা থেকে সকাল ৯টা পর্যন্ত মাছ বিক্রি হয়। আগের থাইকা পাইকার অনেক কম। যারা আশপাশের পাইকার এরাই শুধু আসতেছে। দূরের পাইকার আসতে পারতাছে না।’
মাস্ক কেন পরেন নাই, এমন প্রশ্নে বলেন, ‘আমি মাস্ক খুলে রাখছি এ জন্য যে আমি কথা বললে দূরের থেকে শুনতে পারে না। মাস্ক হাতে ছিল। লোকজন নাই, ফাঁকা, তাই খুলে রাখছি।’যদিও সে মূহুর্তই তার আশপাশে ছিল অন্তত অর্ধশত মানুষ।
আড়তের আরেক মাস্কহীন বিক্রেতা সাংবাদিক পরিচয় শুনে নাম জানাতে চাননি। তিনি বলেন, ‘মাছটা নামাইছি তো, সাজাইতেছি। মাস্ক পকেটে আছে তো। মাছের পানি ছিইট্টা আহে দেইখা ময়লা মাইখা যায়। মাছের পানি ছিটে প্রচুর। এর জন্য খুইলা রাখছি।’
করোনার ভয়াবহতার বিষয়ে বোঝানোর পর দ্রুত মুখে মাস্ক লাগিয়ে বলেন, ‘আমারই ক্ষতি হয়। সমস্যা আমারই এইডা। অজুহাত দেয়াটা ঠিক হয় নাই।’
অনেক মানুষের মাঝে বসে মাস্ক না পরে টাকা গুনছিলেন দেলোয়ার হোসেন নামে আরেক আড়তদার। মাস্কের বিষয়ে জানতে চাইলে দ্রুত টেবিলের ওপর পড়ে থাকা সুতাবিহীন ছেঁড়া একটি মাস্ক দেখিয়ে ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন। বলেন, ‘আরে ভাই ট্যাকা গুনতাছি। মাস্ক তো এহানে থুইছি বোঝেন না ক্যা আপনে? আরে বাবা আমার আড়ত এহানে আমি মাস্কটা এহানে খুলায় রাখছি বুঝেন না কেন? আমার মাস্ক এই যে দ্যাহেন না ছিঁড়া গ্যাছে। হপায় রাখছি আর ছিঁড়া গ্যাছে। আমি ট্যাকা নিতে গেছিলাম।’
এভাবে স্বাস্থ্যবিধি উপেক্ষা করে কেন বাজার চালানো হচ্ছে, তা জানতে চাওয়া হয় আশুলিয়া থানা মৎস্য ব্যবসায়ী মার্কেটের ম্যানেজার মোহাম্মদ আল আমিনের কাছে।
তিনি নিউজবাংলাকে বলেন, ‘আমাদের স্বাস্থ্যবিধিটার ব্যাপারে আমরা খুব সজাগ আছি। সবাইরে সচেতন করতাছি। কিন্তু দেখা যায় কিছু অসচেতন লোক থেকেই যায়, যাদের কারণে সম্ভব হচ্ছে না। তারপরেও যতটুকু সম্ভব আমরা স্বাস্থ্যবিধি মেনে চেষ্টা করতাছি কেনাবেচা করার।’
বাজারের প্রবেশমুখে সচেতনতামূলক ব্যানারটি উল্টিয়ে রাখা কেন জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমরা দুই-তিনডা ব্যানার লাগাইছি। আর পার্সোনালিভাবে আমাদের সবাইরে বলা আছে যে, তোমরা মাস্ক ছাড়া কেউ মাছ বিক্রি করতে পারবা না। আর যারা বাহির থেকে আসে তাদের তো আমরা ওইভাবে নিয়ন্ত্রণ করতে পারি না। দেখা যায়, হুট কইরা একজন লোক মাস্ক ছাড়া ঢুইকা পড়ল। জোর কইরা আমরা তাকে আটকাইয়া তো জরিমানা করতে পারি না। আমরা তো প্রশাসন না।’
সাভার উপজেলা জ্যেষ্ঠ মৎস্য কর্মকর্তা কামরুল ইসলাম নিউজবাংলাকে বলেন, ‘আসলে মাছবাজার বিষয়টাই এমন, এখানে লোকসমাগম হয়। গত বছর লকডাউনের সময় আমরা বাজারগুলোকে উন্মুক্ত স্থানে নিয়ে গেছিলাম আর কী। এটা শুধু মৎস্য অধিদপ্তরের ওপরেই নির্ভর করে না। সে ক্ষেত্রে উন্মুক্ত জায়গাটাও থাকতে হবে এবং সেখানে সবার সমন্বয়ে কাজটা করতে হবে। ‘ঢাকা জেলার অন্যান্য জায়গায় যেমন নবাবগঞ্জ, দোহারে ওরা উন্মুক্ত জায়গায় বাজার নিয়া গেছে। তবে আমি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার সঙ্গে কথা বলে জেনেছি, এখনও সাভারে এ ধরনের কোনো সিদ্ধান্ত আসেনি।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমি ইউএনও মহোদয়কে বলেছি যে, আমাদের এখানে যে আড়তগুলো আছে সেগুলোকে পুরোপুরি স্থানান্তর করা সম্ভব না। কিন্তু কোনোভাবে যদি গ্যাদারিংটাকে একটু কমানো যায় অর্থাৎ টাইমটাকে একটু শিফট করা যায়। যেমন সকালে এক দফা হইল আর বিকেলে এক দফা। তাহলে আর বাজারে মানুষের চাপটা হলো না। মানুষ অর্ধেক কমে গেলেই তো স্বাস্থ্যবিধিটা অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে চলে আসে।’
যেহেতু এই পদক্ষেপগুলো এখন বাস্তবায়ন হচ্ছে না, সেহেতু এখনকার পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে কী পদক্ষেপ নেয়া হবে, জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘মূলত গণতান্ত্রিক চিত্রে বাজার ব্যবস্থাপনায় কিন্তু বাজারের শক্তিতেই বাজার নিয়ন্ত্রিত হয়। এখন সরকার ও প্রশাসনিক পদক্ষেপ কিছু অবশ্যই নিবে।’
বাজারের কিছু দূরের আশুলিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এস এম কামরুজ্জামান নিউজবাংলাকে বলেন, 'কাল থেকে আমি নিজে মনিটরিং করব ভাই। আমরা তো সতর্ক আছি। তারপরও আপনি বললেন কালকে দেখব।'
সাভার উপজেলার আশুলিয়া সার্কেলের সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট জাহিদ হাসান প্রিন্স বলেন, ‘স্বাস্থ্যবিধি অমান্যকারীদের শিগগিরই আইনের আওতায় আনার চেষ্টা চলছে। জনসচেতনতা বৃদ্ধির জন্য নিয়মিত মোবাইল কোর্ট পরিচালিত হচ্ছে এবং হবে। আর আজকেও একটু পর বাজারগুলোতে ঢুকব।’
আরও পড়ুন:নরসিংদীতে পুলিশ কর্মকর্তার ওপর হামলার ঘটনায় সাতজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। রোববার সকাল পর্যন্ত নরসিংদী মডেল থানা ও জেলা গোয়েন্দা শাখার (ডিবি) একাধিক টিম বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করে। গ্রেপ্তারকৃতরা হলো, নরসিংদী শহরের পূর্ব ব্রাহ্মন্দী এলাকার মাহমুদুর রশিদের ছেলে ফজলুল রশিদ ওরফে আদর (৪০) ও একই এলাকার হুমায়ুন কবিরের ছেলে মো. সোহাগ মিয়া (৩৫), শহরের বৌয়াকুর এলাকার শওকত মিয়ার ছেলে তানভীর মিয়া (২২), শিবপুর উপজেলার দত্তেরগাঁও এলাকার শামসুল হক খন্দকারের ছেলে শফিকুল ইসলাম (৪৪), সদর উপজেলার হাজীপুর এলাকার বিরাজ খার ছেলে কুদরত হাসান রবিন (২৩) ও মো. রকিব খাঁ (৩০) এবং ময়মনসিংহ জেলার ফুলপুর থানার বালিয়া এলাকার শামসুল আলমের ছেলে শান্ত মিয়া (২৩)।
এর আগে শনিবার পৌর এলাকার আরশীনগরে নরসিংদীর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) আনোয়ার হোসেনের ওপর হামলার ঘটনায় রাতেই নরসিংদী শহর পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ সোহেল আহমেদ বাদী হয়ে মামলা করেন। মামলার এজাহারে পাঁচজনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাতনামা আরও ২৫-৩০ জনকে আসামি করা হয়।
জানা যায়, ঘটনার দিন সকালে আনোয়ার হোসেনের (সদর সার্কেল) নেতৃত্বে একটি টিম সদর উপজেলার বীরপুর এলাকার পুরানপাড়ায় এক নারীর মরদেহ উদ্ধারের ঘটনায় পরিদর্শনে যান। সেখান থেকে ফেরার পথে শহরের আরশীনগর মোড়ে সড়কের মাঝখান থেকে কয়েকজন ব্যক্তি যানবাহনের চালকদের কাছ থেকে জোরপূর্বক চাঁদা আদায় করছিলেন। এ সময় অতিরিক্ত পুলিশ সুপারের নেতৃত্বে পুলিশ দুজনকে হাতেনাতে আটক করে। আটকের খবর শুনে তাদের ছাড়িয়ে নিতে ৩০/৪০ জনের একটি সন্ত্রাসী দল অতিরিক্ত পুলিশ সুপারকে হুমকি দিতে থাকে। পুলিশ কর্মকর্তা তাদের ছাড়তে রাজি না হওয়ায় তারা হামলা চালায় এবং কিল, ঘুষি, লাথি মারতে থাকে। এক পর্যায়ে তিনি মাটিতে পড়ে গুরুতর আহত হন। এ সময় সন্ত্রাসীরা দুই চাঁদাবাজকে ছিনিয়ে নিয়ে যায়।
নরসিংদীর পুলিশ সুপার মো. মেনহাজুল আলম বলেন, পুলিশের ওপর হামলার ঘটনায় সাতজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। অন্যান্য আসামীদের গ্রেপ্তারী পুলিশী অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
শিশু, কিশোর-কিশোরী ও নারী উন্নয়নে সচেতনতামূলক প্রচার কার্যক্রম শীর্ষক প্রকল্পের আওতায় ইউনিসেফ বাংলাদেশ এর আর্থিক সহায়তায় সংবাদকর্মীদের অংশগ্রহণে এবং তথ্য অফিস, গাজীপুরের আয়োজনে রোববার গাজীপুর সিভিল সার্জন কার্যালয়ের হলরুমে টাইফয়েড ভ্যাক্সিনেশনবিষয়ক কনসালটেশন ওয়ার্কশপ অনুষ্ঠিত হয়েছে।
জেলা তথ্য অফিসার শামীমা নাসরিনের সভাপতিত্বে ও সহকারি তথ্য অফিসার নাঈমুল হকের সঞ্চালনায় কনসালটেশন ওয়ার্কশপে অনলাইনে প্রধান অতিথি হিসেবে যুক্ত থেকে বক্তব্য রাখেন- গণযোগাযোগ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ফায়জুল হক।
তিনি তার বক্তব্যে বলেন, টাইফয়েড একটি মারাত্মক রোগ। এ রোগে আক্রান্ত হয়ে অনেকেই শারিরিকভাবে ক্ষতির সম্মুখিন হয়েছেন। ফলে এ রোগকে চির নির্মূল করার জন্য সরকারিভাবে টিকা প্রদানের সিদ্ধান্ত গৃহিত হয়েছে।
তিনি আশা প্রকাশ করেন, এ টিকার মাধ্যমে এক সময় টাইফয়েড অবশ্যই নির্মূল হবে। সে কারণে প্রত্যেক শিশুকে অবশ্যই এ টিকা গ্রহণ করা আবশ্যক। কোন ভাবেই কোন শিশুকে এ টিকা থেকে বাদ পড়া যাবে না।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে গাজীপুরের সিভিল সার্জন মো. মামুনুর রহমান বলেন, এ টিকার তেমন ক্ষতিকর কোন দিক নেই। শুধুমাত্র অসুস্থ শিশুদেরকে এ টিকা প্রদানে বিরত থাকতে হবে। আর খালি পেটে এ টিকা নেয়া যাবে না। টিকা প্রদানের বিষয়টি ব্যপক প্রচার-প্রচারণার জন্য তিনি উপস্থিত সাংবাদিদের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখার আবেদন জানান।
ওয়ার্কসপে বিশেষ অতিথি হিসেবে আরো বক্তব্য রাখেন- গণযোগাযোগ অধিদপ্তর (প্রশাসন) ঢাকা’র উপ-পরিচালক তারিক মোহাম্মদ, গাজীপুর মেট্রোপলিটান পুলিশের অতিরিক্ত উপপুলিশ কমিশনার (সদর ও অর্থ) ইয়াসমিন সাইকা পাশা, গাজীপুর ইসলামিক ফাউন্ডেশন গাজীপুরের উপ-পরিচালক মাহবুবুল আলম প্রমুখ।
সাংবাদিকদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন- দৈনিক মুক্ত বলাকার সম্পাদক ও প্রকাশক মো. আলমগীর হোসেন, দৈনিক ইত্তেফাকের গাজীপুর প্রতিনিধি মো. মুজিবুর রহমান, ৭১ টিভি ও দৈনিক মানব জমিনের গাজীপুর প্রতিনিধি ইকবাল আহমদ সরকার, মাছরাঙ্গা টিভির গাজীপুর প্রতিনিধি ফারদিন ফেরদৌস, দৈনিক কালের কণ্ঠের গাজীপুর প্রতিনিধি শামীম আহমদ ও সাপ্তাহিক পিলসুজ সম্পাদক আবু হানিফা।
প্রতি বছর অক্টোবর মাসের প্রথম শুক্রবার বিশ্ব হাসি দিবস বা ওয়ার্ল্ড স্মাইল ডে পালন করা হয়। সারা বিশ্বে নানা কর্মসূচির মধ্য দিয়ে দিনটি উদযাপন করা হয়ে থাকে। বাংলাদেশে বিশ্ব হাসি দিবসের গোড়াপত্তন করে বাংলাদেশ কমেডি ক্লাব। ২০১৫ সাল থেকে বাংলাদেশ কমেডি ক্লাব ও তার অঙ্গ সংগঠনগুলো দিনটি নানা কর্মসূচির মধ্য দিয়ে নিয়মিত ভাবে পালন করে আসছে। এরই ধারাবাহিকতায় আজ সন্ধ্যায় বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির স্টুডিও থিয়েটার হলে স্ট্যান্ড আপ কমেডি শো এর আয়োজন করা হয়। স্ট্যান্ড আপ কমেডি শো‘তে পারফর্মেন্স করেন আবু হেনা রনি, সাইফুর রহমান সাইফুল, শাওন মজুমদার, মেহেদী তরু, ফজলুল হক সাকি, তারেক মাহামুদ, এমদাদুল হক হৃদয়, হৃদয় আল মিরু, মিজানুর রহমান ঋজু ও শৈলী।
শো এর পূর্বে বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির মূল ফটকের সম্মুখে স্ট্যান্ড আপ কমেডিয়ানরা মিলিত হয়ে বিশ্ব হাসি দিবসের প্লাকার্ড, ফেস্টুন ও ব্যানার হাতে নিয়ে সকলকে বিশ্ব হাসি দিবসের শুভেচ্ছা জানান ও দিনটি উদযাপন করেন।
‘ঢাকা বিভাগ ছাড়ব না অন্য বিভাগে যাবো না’- প্রতিপাদ্যে পালিত হয়েছে মাদারীপুরে এক পদযাত্রা, মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সভা রোববার অনুষ্ঠিত হয়েছে। এতে অংশ গ্রহন করেন বিভিন্ন সামাজিক, রাজনৈতিক, পেশাজীবি, সুশীল সমাজ, ছাত্র সংগঠন, মানবাধিকার ও সাংবাদিক সংগঠনের নেতাসহ সর্বস্তরের মানুষ। মিছিলটি শহরের প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে জেলা প্রশাসক কার্যালয় প্রাঙ্গণে মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন জাতীয়তাবাদী যুবদলের জেলা শাখার সভাপতি মনিরুজ্জামান ফুকু, জেলা আইনজীবি সমিতির যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক ও মানবাধিকার সংস্থা, আসক ফাউন্ডেশনের সাধারণ সম্পাদক এ্যাডভোকেট মশিউর রহমান পারভেজ, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক ও এনসিপির যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক মো. নেয়ামতুল্লাহ, বিশিষ্ট ক্রীড়াবিদ, কোচ ও মাদারীপুর ক্রিকেট ক্লিনিকের সভাপতি আমির বাবু, মানবাধিকার কর্মী মো. এনায়েত নান্নু সহ অন্যান্য প্রতিনিধি। এসময় মাদারীপুরে তৃণমূল থেকে শুরু করে সর্বস্তরের মানুষকেও অংশগ্রহণ করতে দেখা যায়।
প্রতিবাদ সভায় বক্তারা বলেন, মাদারীপুরের মানুষের শিক্ষা, সংস্কৃতি, কৃষ্টি-কালচার, ব্যবসা, বানিজ্য, যোগাযোগ, রাজনৈতিক ও সামাজিক প্রায় সকল কিছুই ঢাকার সাথে আত্মীকভাবে সম্পর্কিত। আমাদের ঢাকা বিভাগ স্বাধীনতার পর থেকেই ছিলো, আছে এবং থাকবে, আমরা এ বিভাগ ছেড়ে অন্য বিভাগে কোনো মতেই যেতে চাই না এবং যাবো না, প্রয়োজনে আমরা এজন্য বৃহৎ শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি দেব, রক্ত দেব, জীবন দেব কিন্তু কোনো অবস্থাতেই ঢাকা বিভাগ ছাড়ব না। আমরা আজ মাদারীপুর জেলা প্রশাসক মহোদয়ের মাধ্যমে সরকারের কাছে এতদসংক্রান্ত স্মারকলিপি প্রদান করছি, যাতে সরকার ও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ আমাদের মাদারীপুরবাসীর আবেদন ও মনের কথা বুঝতে পারেন, আমাদের মূল্যায়ন করে মাদারীপুর জেলাকে ঢাকা বিভাগেই রাখেন। আর তা হলে আমরা মাদারীপুরবাসি ওই দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত অনশনসহ আরো বড়-বড় ধরণের কর্মসূচি দিতে বাধ্য হব। এ সময় জেলা প্রশাসক মোছা. ইয়াসমিন আক্তার অন্যত্র থাকায় তার পক্ষে স্মারকলিপি গ্রহন করেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) ফাতেমা তন্বী।
গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়ায় সন্তানহারা মা আছিয়া বেগমের বাড়িতে ছুটে গেলেন ইউএনও (অতিরিক্ত দায়িত্ব) মো. মাসুম বিল্লাহ।
শনিবার রাতে উপজেলার তারাশী গ্রামে শোকাহত আছিয়া বেগমের বাড়িতে গিয়ে তাদের পরিবারের খোঁজ খবর নেন ইউএনও মাসুম বিল্লাহ। আছিয়া বেগমের হাতে নগদ টাকা ও খাদ্যসামগ্রী তুলে দেন ইউএনও। এসময় আছিয়া বেগমের প্রতিবেশিরা উপস্থিত ছিলেন। গত শুক্রবার বিকেলে মায়ের সাথে অভিমান করে গলায় ফাঁস দিয়ে আছিয়া বেগমের ১৪ বছর বয়সি মাদ্রাসাপড়ুয়া ছেলে জোনায়েদ শেখে আত্মহত্যা করে। এ ঘটনায় পুরো এলাকায় শোকের ছায়া নেমে আসে।
স্বামী মৃদুল শেখ দ্বিতীয় বিয়ে করে অন্যত্র থাকায় সরকারিভাবে পাওয়া আশ্রায়নের ঘরে দুই সন্তানকে নিয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছিল আছিয়া বেগম। এদিকে বড় ছেলের এমন মৃত্যুর ঘটনায় বাকরুদ্ধ হয়ে পড়েন তিনি।
আছিয়া বেগম কান্নাজড়িত কন্ঠে বলেন, দুই সন্তানকে আকড়ে ধরে কোন বেঁচে থাকার স্বপ্ন দেখছিলাম। অনেক কষ্টে ওদের মানুষ করে আসছি। এভাবে বড় ছেলে আমাকে ফাঁকি দিয়ে চলে যাবে তা কখনোই বুঝতে পারি নাই। ইউএনও স্যার আমার মত অসহায় মানুষের পাশে দাড়িয়েছেন এজন্য তার প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাই। আমার মত অভাগা মা যেন আর কেহ না হয়।
ইউএনও মাসুম বিল্লাহ বলেন, বড় ছেলের মৃত্যুতে দরিদ্র আছিয়া বেগম ভেঙ্গে পড়েছেন। সমাজের সকলের উচিত প্রতিবেশীদের দেখভাল করা। যাতে ভবিষ্যতে শিশু জোনায়েদের মতো এমন কারও মৃত্যু না হয়। উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে আছিয়া বেগমের জন্য কিছু নগদ অর্থ ও খাদ্য সামগ্রী পৌঁছে দিলাম।
গরিব, অসহায় ও দুস্থ নারীদের সহায়তার জন্য সরকারিভাবে চাল বরাদ্দের ভিডব্লিউবি (পূর্বে ভিজিডি) কর্মসূচি। প্রতি মাসে ৩০ কেজি চাল দেওয়ার এই কর্মসূচি দরিদ্র, দুস্থ নারীদের জন্য এক বড় সহায়তা। কিন্তু ভিডব্লিউবি দুস্থদের কার্ড নিয়ে জয়পুরহাটের ক্ষেতলাল উপজেলার বড়তারা ইউনিয়নে এই কর্মসূচির তালিকা ঘিরে উঠেছে অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ।
শুধু তাই নয়, চুড়ান্ত তালিকা প্রস্তুত হওয়ার পর শফিকুল ইসলাম বড়তারা ইউনিয়নের প্রতিটি সুবিধাভোগীর কাছ থেকে ১০০ টাকা করে প্রায় ৪৪ হাজার টাকা আদায়ও করেছেন। এসব টাকা ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান নুরুল ইসলাম ও প্যানেল চেয়ারম্যান মিলে ভাগবাটোয়ারা করে নিয়েছেন বলে দাবি স্থানীয়দের।
অভিযোগ উঠেছে, বড়তারা ইউনিয়নের ৩নং প্যানেল চেয়ারম্যান ও ৫নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য শফিকুল ইসলাম প্রভাব খাটিয়ে তালিকায় নিজের স্ত্রীসহ দুই হালি আত্মীয়ের নাম ঢুকিয়েছেন। শুধু তাই নয়, প্রকৃত সুবিধাভোগীদের কার্ড করে দেয়ার নামে প্রতিটি পরিবারের কাছ থেকে ২ থেকে ৫ হাজার টাকা পর্যন্ত আদায় করা হয়েছে।
তালিকায় দেখা যায়, শফিকুল ইসলামের ভাবি, চাচি, মামি, খালাসহ নিকট আত্মীয়দের নাম ঢুকানো হয়েছে। যাদের কারও জমি, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বা পাকা বাড়ি রয়েছে। ফলে প্রকৃত অসহায় নারীরা তালিকা থেকে বাদ পড়েছেন।
প্রস্তুতকৃত তালিকা যাচাই করে দেখা যায়, ২০২৫-২৬ অর্থ বছরের তালিকায় বড়তাড়া ইউনিয়ন পরিষদের প্যানেল চেয়ারম্যানের ৫নং ওয়ার্ডের ৫৩ জনের নাম রয়েছে। তালিকায় প্যানেল চেয়ারম্যান শফিকুল ইসলামের স্ত্রী, ভাইয়ের স্ত্রী, চাচি, মামি ও খালার নাম দেখা গেছে। তাদের মধ্যে অনেকেরই ৬-৮ বিঘা ফসলী জমি, পাকা বাড়ি, পুকুরও আছে। তালিকার ২১২ ক্রমিক নম্বরে স্থান পাওয়া মাফুজা খাতুন ও ২৩০ নং সেলিনা খাতুন তার আপন বড় ভাইয়ের দুই স্ত্রী।
২১০ নাম্বরে খোতেজা সম্পর্কে মামি এবং ২১৪ নাম্বরে রিমা বেগম, ২১৬ নাম্বরে আলেয়া বেগম, ২১৭ নাম্বরে আমেনা বেগম তার সম্পর্কে চাচি। ১৮২ নাম্বরে শেফালী বেগম সম্পর্কে খালা, ১৯১ নাম্বরে রাজিয়া সুলতানা সম্পর্কে ভাবী (চাচাত ভাইয়ের স্ত্রী)। এসবই তিনি ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যনের সাথে যোগসাজস করে করেছেন বলে দাবি এলাকাবাসীর।
বড়তারা ইউনিয়নের বাঘাপাড়া গ্রামের বাসিন্দা আব্দুর নুর বলেন, শফিকুল মেম্বার গরীবদের না দিয়ে আত্মীয়-স্বজনকে কার্ড দিয়েছে। টাকা ছাড়া সে কোনো কাজ করে না। আমরা এর বিচার চাই।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক উপকারভোগী বলেন, আমার কার্ড করার জন্য শফিকুল মেম্বার ৫ হাজার টাকা চেয়েছিল। না দিলে অন্য কাউকে করে দেবে। পরে দেখি তালিকায় তার আত্মীয়-স্বজনের নামই বেশি।
ক্ষেতলাল উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা লায়লা নাসরিন জাহান বলেন, অভিযোগ পাওয়ার পর শফিকুল ইসলামের স্ত্রী ও এক ডাক্তার ভাগ্নির নাম বাদ দেয়া হয়েছে। তাকে অফিসে ডেকে ভর্ৎসনা করা হয়েছে। নতুন করে কোনো অভিযোগ পেলে তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।
অভিযুক্ত ইউপি সদস্য শফিকুল ইসলাম অবশ্য অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, তালিকা করেছে উপজেলা মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তর। এবারে তালিকায় আমাদের কোনো হাত নেই।
এ বিষয়ে বড়তারা ইউনিয়নের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান নুরুল ইসলামের মুঠোফোনে বারবার ফোন করা হলে তার মুঠোফোন বন্ধ পাওয়ায় তার বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।
ক্ষেতলাল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আসিফ আল জিনাত বলেন, নীতিমালা অনুযায়ী তালিকা করা হয়েছে। কোথাও অনিয়ম হয়ে থাকলে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
প্রবারণা পূর্ণিমা উপলক্ষে প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময় করেছেন বৌদ্ধ ধর্মীয় নেতৃবৃন্দের প্রতিনিধিদল।
আজ রোববার রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় এ শুভেচ্ছা বিনিময় অনুষ্ঠিত হয়। এসময় বৌদ্ধ ধর্মীয় নেতারা প্রবারণা পূর্ণিমার মাহাত্ম্য বর্ণনা করে প্রধান উপদেষ্টাকে শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানান। তাঁরা প্রধান উপদেষ্টাকে বিহার পরিদর্শনেরও আমন্ত্রণ জানিয়েছেন।
এসময় রাজধানীর উত্তরায় বৌদ্ধদের শেষকৃত্যের জন্য জায়গা বরাদ্দ দেওয়ায় প্রধান উপদেষ্টাকে বিশেষভাবে কৃতজ্ঞতা জানিয়েছেন বৌদ্ধ নেতৃবৃন্দ।
বৌদ্ধ নেতৃবৃন্দ বলেন, ‘অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে বিষয়টি অবহিত করার পর ১০ দিনের মধ্যে শ্মশানের জন্য স্থান বরাদ্দ করে দেওয়া হয়েছে। এটা ইতিহাসে অনন্য।
ঢাকায় বৌদ্ধধর্মের কেউ মারা গেলে শেষকৃত্যের জন্য বহু পথ পারি দিয়ে চট্টগ্রামে যেতে হতো। এখন মৃত্যুর পরে একটা জায়গা হলো।’
বৈঠকে এ বছর কঠিন চীবর দান উদযাপনের প্রস্তুতি সম্পর্কেও প্রধান উপদেষ্টাকে অবহিত করা হয়েছে। এছাড়া সার্বক্ষণিক সহযোগিতার জন্য ধর্ম মন্ত্রণালয় ও পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের প্রতি বিশেষ কৃতজ্ঞতা ও ধন্যবাদ জানিয়েছেন বৌদ্ধ নেতৃবৃন্দ।
পাশাপাশি, তীর্থযাত্রার জন্য সরকারি ব্যবস্থাপনা, বৌদ্ধ পন্ডিত, ধর্মগুরু ও দার্শনিক অতীশ দীপঙ্করের নামে সরকারিভাবে একটি জ্ঞানচর্চা কেন্দ্র গড়ে তোলাসহ বিভিন্ন দাবির বিষয়ে প্রধান উপদেষ্টাকে অবহিত করেন বৌদ্ধ নেতৃবৃন্দ।
এসময় উপস্থিত ছিলেন ধর্মরাজিক বৌদ্ধ মহাবিহারের অধ্যক্ষ বুদ্ধপ্রিয় মহাথের, বাংলাদেশ বুদ্ধিস্ট ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক ভিক্ষু সুনন্দপ্রিয়, পার্বত্য ভিক্ষু সংঘের ভিক্ষু কল্যাণ জ্যোতি, বৌদ্ধ ধর্মীয় কল্যাণ ট্রাস্টের ভাইস চেয়ারম্যান ভবেশ চাকমা, বাংলাদেশ বৌদ্ধ সমিতির ঢাকা অঞ্চলের সাধারণ সম্পাদক স্বপন বড়ুয়া চৌধুরী, বৌদ্ধ ধর্মীয় কল্যাণ ট্রাস্টের সচিব জয় দত্ত বড়ুয়া এবং বৌদ্ধ ধর্মীয় কল্যাণ ট্রাস্টের ট্রাস্টিদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন প্রফেসর ড. সুকোমল বড়ুয়া, মং হলা চিং, সুশীল চন্দ্র বড়ুয়া, অধ্যাপক ববি বড়ুয়া, রুবেল বড়ুয়া ও রাজীব কান্তি বড়ুয়া।
পাশাপাশি ধর্ম উপদেষ্টা ড. আ ফ ম খালিদ হোসেন ও পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সুপ্রদীপ চাকমা এসময় উপস্থিত ছিলেন। সূত্র : বাসস
মন্তব্য