হবিগঞ্জের লাখাইয়ে গণপিটুনিতে দুই ব্যক্তি নিহত হয়েছে। গ্রামবাসীর দাবি, তারা ডাকাত ছিলেন।
উপজেলার গুণিপুর গ্রামে রোববার ভোররাতে এই ঘটনা ঘটে।
লাখাই থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সাইদুল ইসলাম এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
ঘটনার বিস্তারিত জানতে যোগাযোগ করা হয় স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান আব্দুল হাইয়ের সঙ্গে। তিনি জানান, ভোররাতে পাঁচ থেকে ছয়জনের একটি ডাকাতদল জালাল মিয়া নামের এক ব্যক্তির বাড়িতে হানা দেয়। তাদের উপস্থিতি টের পেয়ে বাড়ির লোকজন চিৎকার করলে ডাকাতরা পালিয়ে যেতে চেষ্টা করে। ধাওয়া দিয়ে দুইজনকে আটক করে পিটুনি দেয় গ্রামবাসী।
ওসি সাইদুল জানান, খবর পেয়ে পুলিশ সেখানে গিয়ে দুইজনকে মৃত অবস্থায় পায়। তাদের মধ্যে একজনের পরিচয় জানা গেছে। তার নাম হুমায়ুন মিয়া, বাড়ি মাধবপুর উপজেলার পুরাইখলা গ্রামে।
ময়নাতদন্তের জন্য মরদেহ দুটি হবিগঞ্জ সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে বলে জানান ওসি।
কিশোরগঞ্জের করিমগঞ্জে জমি নিয়ে বিরোধের জেরে থানার সামনে সালিশি দরবারে প্রতিপক্ষের ছুরিকাঘাতে মজনু মিয়া (৩০) নামে এক যুবককে হত্যার অভিযোগ উঠেছে।
শুক্রবার বিকেল সাড়ে চারটার দিকে করিমগঞ্জ থানার সামনে একটি চায়ের স্টলে এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ৪ জনকে আটক করেছে পুলিশ।
নিহত মজনু মিয়া উপজেলার জয়কা ইউনিয়নের কান্দাইল ক্ষিদিরপুর গ্রামের তোতা মিয়ার ছেলে। তিনি একজন- মুদি দোকানি।
পুলিশ জানায়,জয়কা এলাকার তোতা মিয়া ও ইসলাম উদ্দিনের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে জমি নিয়ে বিরোধ ছিল। এ নিয়ে বিভিন্ন সময় দেনদরবার হয়।
সম্প্রতি ইসলাম উদ্দিনের লোকজন প্রতি পক্ষের বাড়িঘর ভাঙচুর করলে এ নিয়ে থানায় অভিযোগ দায়ের করা হয়। অভিযোগের প্রেক্ষিতে করিমগঞ্জ থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) আব্দুল আলীম এলাকার গণ্যমানদের নিয়ে উভয় পক্ষকে থানায় ডাকেন।
শুক্রবার বিকেলে ওই পুলিশ কর্মকর্তার উপস্থিতিতে করিমগঞ্জ থানার সামনে একটি চা-স্টলে উভয় পক্ষের মধ্যে সালিশ দরবার বসে। সালিশ চলাকালে থানার সামনে দুপক্ষ মারামারিতে জড়িয়ে পড়ে।
এ সময় ছুরিকাঘাতে গুরুতর আহত হন মজনু মিয়া (৩০)। তাকে প্রথমে করিমগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেয়া হয়। সেখান থেকে আশংকাজনক অবস্থায় কিশোরগঞ্জের শহীদ সৈয়দ নজরুল ইসলাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
এ বিষয়ে করিমগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ মাহবুব মুর্শেদ কথা বলতে রাজি হননি।
আজ ৬ সেপ্টেম্বর ২০২৫, উপমহাদেশের কিংবদন্তি সংগীতজ্ঞ, শ্রদ্ধেয় সুর সম্রাট উস্তাদ আলাউদ্দিন খাঁর ৫৩তম মৃত্যুবার্ষিকী। তিনি ১৯৭২ সালের এই দিনে ভারতের মাইহারে পরলোকগমন করেন।
উস্তাদ আলাউদ্দিন খাঁ ১৮৬২ সালের ৮ অক্টোবর তৎকালীন ত্রিপুরা জেলার (বর্তমান ব্রাহ্মণবাড়িয়া) নবীনগর উপজেলার শিবপুর গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পিতার নাম সাবদর হোসেন খাঁ ওরফে সদু খাঁ এবং মাতার নাম সুন্দরী বেগম। পাঁচ ভাই ও দুই বোনের মধ্যে তিনি ছিলেন তৃতীয়। তাঁর স্ত্রীর নাম মদনী বিবি। তাঁদের এক পুত্র (বিশ্ববিখ্যাত সরোদ বাদক আলী আকবর খাঁ) ও দুই কন্যা (সরিজা ও রৌশন আরা/অন্নপূর্ণা) ছিলেন।
ছোটবেলা থেকেই সংগীতের প্রতি গভীর অনুরাগ ছিল তাঁর। মাত্র আট বছর বয়সে মায়ের অসুস্থতার অজুহাতে ১২ টাকা নিয়ে গভীর রাতে বাড়ি ছেড়ে কলকাতার উদ্দেশ্যে পাড়ি জমান। সেখানে ‘মনমোহন দেব’ নামে পরিচিত হয়ে ওস্তাদ নুলো বাবুর কাছ থেকে সংগীত শিক্ষার সূচনা করেন। সংগীতের প্রতি একাগ্রতা এতটাই প্রবল ছিল যে, তিনি এমনকি নিজের বিবাহের রাতেও স্ত্রীকে রেখে দ্বিতীয়বারের মতো কলকাতায় পালিয়ে যান।
তিনি পরবর্তী জীবনে ওস্তাদ ওয়াজির খাঁর কাছে বীণা শিক্ষা গ্রহণের মাধ্যমে প্রায় ৩৩ বছরের দীর্ঘ সংগীত শিক্ষা পর্ব শেষ করেন। সংগীত জীবনের বিভিন্ন পর্যায়ে তিনি কলকাতা, লাহোর, মাইহারসহ নানা জায়গায় সংগীত চর্চা ও শিক্ষাদান করেছেন। ১৯৫৪ সালে তিনি শেষবারের মতো জন্মস্থান শিবপুরে আসেন এবং মায়ের ইচ্ছায় একটি পুকুর খনন ও একটি পাকা মসজিদ নির্মাণ করেন।
সুর সম্রাট আলাউদ্দিন খাঁ উপমহাদেশের দ্রৌপদী ঘরানার প্রবর্তক। তিনি সংগীতকে রাজ দরবার থেকে সাধারণ মানুষের মধ্যে পৌঁছে দিয়ে গণমুখী করে তোলেন। জীবনের প্রথম প্রতিযোগিতায় কলকাতার সর্বভারতীয় সংগীতানুষ্ঠানে স্বর্ণপদক অর্জন করেন। ১৯৩৬ সালে বিশ্বভ্রমণে বের হলে লন্ডনে তাঁর পারফরম্যান্সে মুগ্ধ হয়ে ব্রিটেনের রানী তাঁকে “সুর সম্রাট” উপাধিতে ভূষিত করেন।
তাঁর রচিত উল্লেখযোগ্য রাগসমূহ:
মদিনা মঞ্জুরী, শোভাবতী, ধবলশ্রী, ভুবনেশ্বর, দুর্গেশ্বরী, হেমন্ত, উমাবতী, প্রভাতী, হেম বেহাগ, নাগার্জুন প্রভৃতি।
তাঁর অসামান্য অবদানের জন্য তিনি লাভ করেন:
পদ্মভূষণ, পদ্মবিভূষণ, দেশিকোত্তম, ডক্টরেট ডিগ্রি, বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের ফেলোশিপসহ বহু আন্তর্জাতিক ও জাতীয় সম্মাননা। তিনি ভারতের কেন্দ্রীয় শিক্ষা কমিশনের একজন গুরুত্বপূর্ণ সদস্য হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেন।
জয়পুরহাটের কালাইয়ে শিয়ালের কামড়ে একই মহল্লার যুবক ও বৃদ্ধসহ ৯ জন আহত হয়েছেন। শুক্রবার রাত সাড়ে ৮টার দিকে কালাই পৌর শহরের সড়াইল মহল্লায় এ ঘটনা ঘটে।
আহতরা হলেন, সড়াইল মহল্লার আব্দুর রশিদ (৫৬), আবু বক্কর সিদ্দিক (৬০), মোস্তাফিজুর রহমান (৩২), আতিক (২৭), সবুজ মিয়া (৩৩), জান্নাতুন (৪৪), ববিতা খাতুন (১৫), মফিজুল (৫০), আব্দুল আজিজ (৫৮)। আহতদের রাতেই কালাই উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে।
সড়াইল মহল্লায় শিয়ালের কামড়ে আহত নারী ববিতা খাতুন কালাই উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা নিতে এসে জানান, রাতে একটি শিয়াল আমাদের মহল্লায় প্রবেশ করে যাকে দেখেছে তাকেই কামড় দিচ্ছে। এমনকি ঘরের ভেতরে ঢুকেও কামড় দিয়েছে। আমাদের বাড়ির পাশে আরও ৩ জনকে কামড় দিয়েছে শিয়াল। আবার মসজিদ থেকে এশার নামাজ পড়ে মুসল্লিরা আসার পথে ওই শিয়াল ৫ জনকে কামড় দিয়ে রক্তাক্ত করেছে। রাতেই তাদের উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। শনিবার সবাইকে ভ্যাকসিনের জন্য জেলা হাসপাতালে যেতে বলেছেন চিকিৎসক।
শিয়ালের কামড়ে আহত মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, রাত সাড়ে ৮টার দিকে এশার নামাজ পড়ে মসজিদ থেকে বের হয়ে আমরা বাড়িতে যাচ্ছিলাম। এসময় একটি শিয়াল দৌঁড়ে এসে আমাকেসহ মহল্লার আরও পাঁচ-ছয়জনকে কামড় দেয়। দুইজনের কান ছিড়ে নিয়ে গেছে শিয়ালটি। বর্তমানে এলাকায় আতঙ্ক বিরাজ করছে।
কালাই উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের কর্তব্যরত চিকিৎসক ডা. ফাহমিদা আক্তার লীনা বলেন, আহতদের প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। ভ্যাকসিন না থাকায় তাদের জেলা সদর হাসপাতালে যাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে (বাকৃবি) আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের উপর বহিরাগতদের হামলার প্রতিবাদে এবং প্রশাসনের নিষ্ক্রিয়তার অভিযোগে মুখে লাল কাপড় বেঁধে মৌন মিছিল করেছেন একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ শিক্ষার্থীরা। ‘রেড মার্চ ফর জাস্টিস’ শিরোনামে এই কর্মসূচিতে শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জোর দাবি জানানো হয়। গত বৃহস্পতিবার বিকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘আমতলা’ থেকে এই মৌন মিছিল শুরু হয়। মিছিলটি ক্যাম্পাসের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিণ করে পুনরায় আমতলায় এসে শেষ হয়। সেসময় শিক্ষার্থীদের চোখেমুখে ছিল ক্ষোভ আর বিচারহীনতার বিরুদ্ধে নীরব প্রতিবাদ।
আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা জানান, গত ৩১আগস্ট ক্যাম্পাসে বহিরাগতরা শিক্ষার্থীদের উপর নৃশংস হামলা চালায়, যা তাদের নিরাপত্তাহীনতাকে চরম পর্যায়ে নিয়ে গেছে। তাদের অভিযোগ, এমন একটি ন্যক্কারজনক ঘটনার পরও বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ও শিক্ষকদের পক্ষ থেকে শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে কোনো কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। ওই নীরবতা তাদের হতাশ ও ক্ষুব্ধ করেছে।
এক শিক্ষার্থী বলেন, ‘ওই হামলা শুধু আমাদের ক্যাম্পাসের ইট-পাথরের উপর নয়- এটি আমাদের অস্তিত্ব, আমাদের স্বপ্ন এবং আমাদের নিরাপত্তার উপর সরাসরি আঘাত। যেখানে আমাদের নিরাপত্তা দেওয়ার কথা, সেখানে প্রশাসন নীরব দর্শকের ভূমিকা পালন করছে, যা কোনোভাবেই কাম্য নয়।’
কর্মসূচিতে অংশ নেওয়া শিক্ষার্থীরা হামলাকারীদের দ্রুত শনাক্ত করে আইনের আওতায় আনা এবং ক্যাম্পাসে সব শিক্ষার্থীর নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য প্রশাসনের কাছে জোর দাবি জানিয়েছেন। দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত তাদের আন্দোলন চলবে বলেও হুঁশিয়ারি দেন তারা।
ময়মনসিংহের ত্রিশাল উপজেলার সদর ইউনিয়নের ঐতিহ্যবাহী শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বাগান ইসলামিয়া আলিম মাদরাসা। ১৯৫৫ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়ে ১৯৬৫ সালে বাংলাদেশ মাদরাসা শিক্ষা বোর্ডের স্বীকৃতি লাভ করে ১৯৮৫ সালে শিক্ষা মন্ত্রণালয় কর্তৃক এমপিওভুক্ত হয়। দীর্ঘ ৭০ বছরের পথচলায় প্রতিষ্ঠানটি সরকারি বহুতল ভবনের বরাদ্দ পায়নি।
জানা গেছে, বর্তমানে মাদরাসাটি পাবলিক দাখিল পরীক্ষার কেন্দ্র (কেন্দ্র কোড ৭৮৯, নাম-ত্রিশাল-২ বাগান কেন্দ্র) হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে। তবে পর্যাপ্ত ক্লাসরুম না থাকায় নিয়মিত পাঠদান ও পরীক্ষা পরিচালনা করতে হিমশিম খেতে হচ্ছে। এতে দুর্ভোগের শিকার হচ্ছে শিক্ষার্থীরা। তাদের জন্য নেই পর্যাপ্ত আবাসন, ক্লাসরুম, মেয়েদের কমনরুম, পৃথক নামাজ ও অজুখানা। সবচেয়ে নাজুক অবস্থা স্যানিটেশন ব্যবস্থায়। যা পরীক্ষা কেন্দ্র ও শিক্ষার্থীদের মারাত্মকভাবে বিপাকে পড়তে হয়।
শিক্ষার্থী আব্দুল্লাহ বলেন, মাদরাসাটি অনেক আগে প্রতিষ্ঠিত হলেও নেই কোন বহুতল ভবন। টিনসেট আর জরাজীর্ণ হাফ বিল্ডিংয়ে কোন প্রকার চলছে পাঠদান। সরকার যদি দ্রুত বহুতল ভবন দিতো তাহলে এই সমস্যা থাকত না।’
আলিম দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী সুমাইয়া আক্তার বলেন, ‘আমরা তো আগামী বছর পরীক্ষা শেষ করে চলে যাবো অন্য কোন প্রতিষ্ঠানে ভর্তি হব। তবু চাই আমাদের পরবর্তী ভাই-বোনেরা যেন কষ্টে না পড়ে।’
মাদরাসার অধ্যক্ষ মাওলানা ফয়জুর রহমান বলেন, ‘প্রতিষ্ঠার পর থেকে আজ পর্যন্ত শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরের পক্ষ থেকে কোনো বহুতল ভবনের বরাদ্দ পাওয়া যায়নি। পুরনো ভবনে পাঠদান করতে হচ্ছে।
ত্রিশাল উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মফিজুল ইসলাম জানান, আমি আশাকরি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ দ্রুত সময়ের মধ্যে একটি বহুতল ভবন বরাদ্ধ দিবেন।’
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আব্দুল্লাহ আল বাকিউল বারী জানান, অবকাঠামো উন্নয়নের বিষয়ে আমরা শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরের সঙ্গে সমন্বয় করে দ্রুত সময়ের মধ্যে উদ্যোগ গ্রহণ করবো।
কুমিল্লা অঞ্চলের মানুষ আর চট্টগ্রাম-গাজীপুর গিয়ে কাগজপত্র আনতে হবে না। পরীক্ষার খাতা জমা দিতে হবে না। এডমিশন টেস্টের খাতা দেওয়ার জন্য আর দৌড়াতে হবে না। আপনারা কুমিল্লায় বসে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের কাজ করতে পারবেন। এই আঞ্চলিক অফিস কুমিল্লাতে আমাদের আরো আগেই করা দরকার ছিল। শুক্রবার বেলা ১১টায় জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের কুমিল্লা আঞ্চলিক কেন্দ্র উদ্বোধনী সভায় এসব কথা বলেন জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস-চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. এ এস এম আমানুল্লাহ। কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া সরকারি কলেজের অডিটোরিয়াম এ উদ্বোধনী সভা হয়।
উদ্বোধনী সভার পর কুমিল্লা হাউজিং এস্টেট এলাকায় জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের কুমিল্লা আঞ্চলিক কেন্দ্র উদ্বোধন করা হয়। সেসময় কুমিল্লা অঞ্চলের বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষকরা উপস্থিত ছিলেন।
কুমিল্লা অঞ্চলের মানুষকে নিয়ে গবেষণা হতে পারে মন্তব্য করে ড. এ এস এম আমানুল্লাহ বলেন, হাজার বছরের সংস্কৃতির শহর কুমিল্লা, বাংলাদেশের অস্তিত্বের সাথে জড়িত। কুমিল্লার সাংস্কৃতিক ইতিহাস, খাবার, মিষ্টান্ন ও কুমিল্লার মানুষদের নিয়ে শত শত পৃষ্ঠা লিখা যাবে। আমি কুমিল্লা নিয়ে গর্ববোধ করি। কুমিল্লার ছেলে মেয়েরা বিশ্বের বিভিন্ন দেশে রয়েছে। তারা চমৎকার পারফর্ম করছে। শুধু বললে হবে না। আমি নিজের চোখে দেখেছি, তারা কতটা পরিশ্রমী। যারা পরিশ্রম করে তারা তো সফল হবেই।
কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর আবুল বাসার ভূঁঞার সভাপতিত্বে উদ্বোধনী সভায় বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রেজারার প্রফেসর ড. এ টি এম জাফরুল আযম, কুমিল্লার অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক রাজিব আল মিঠু।
ড. এ এস এম আমানুল্লাহ আরো বলেন, কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া সরকারি কলেজ ল্যাংগুয়েজ ক্লাব স্থাপন হবে। যেখানে জাপানি, কুরিয়ান, ইংরেজি আরবি ভাষা শিক্ষা দেওয়া হবে। যার ফলে এই কলেজে শিক্ষার্থীদের ভাষাগত দক্ষতা বৃদ্ধি পাবে। ভিক্টোরিয়া কলেজের জিয়া অডিটোরিয়াম সংস্কার করা দরকার। এ বিষয় নিয়ে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় বসবে।
সনাতন ধর্মীয় রীতিনীতি মেনে বিয়ের লগ্ন ঠিক রাখতে হাসপাতালের বেডে শুয়েই বিয়ে সম্পন্ন করলেন সড়ক দুর্ঘটনায় আহত শয্যাশায়ী অভিজিৎ সাহা। গত বৃহস্পতিবার রাতে মানিকগঞ্জ শহরের আফরোজা বেগম জেনারেল হাসপাতালে মানিকগঞ্জ শহরের চাঁন মিয়া লেন এলাকার অভিজিৎ সাহার সঙ্গে পারিবারিকভাবে ঘিওরের বানিয়াজুরী এলাকার অর্পিতা সাহার বিয়ে সর্ম্পন্ন হয়। বিয়ে সম্পন্ন হওয়ায় বর-কনেসহ উভয়ের পরিবারের সদস্যরা আনন্দিত।
জানা যায়, কয়েকমাস পূর্বে পারিবারিকভাবে মানিকগঞ্জ শহরের চাঁন মিয়া লেন এলাকার অরবিন্দ সাহার বড় ছেলে অভিজিৎ সাহার সঙ্গে ঘিওর উপজেলার বানিয়াজুরী এলাকার সুবোধ সাহার মেয়ের অর্পিতা সাহার বিয়ে ঠিক করা হয়। কিন্তু প্রায় দুমাস আগে ঢাকা থেকে বাড়ি ফেরার পথে ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের ঢাকার ধামরাইয় এলাকায় ভয়াবহ দুর্ঘটনার শিকার হন অভিজিৎ সাহা। খবর পেয়ে তাকে উদ্ধার করে ঢাকায় চিকিৎসা করানো হয়। এরপর তার শারীরিক অবস্থা একটু উন্নতি হলে ঢাকায় থেকে গত দুই সপ্তাহ আগে তাকে মানিকগঞ্জ আফরোজা বেগম জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। বর্তমানে তিনি আফরোজা বেগম জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
এদিকে ধর্মীয় রীতিনীতি অনুযায়ী গত বৃহস্পতিবার সন্ধা ৬টা থেকে ৯টা পর্যন্ত ছিল বিয়ের লগ্ন। অপরদিকে দুর্ঘটনায় আহত হাত-পায়ে ব্যান্ডেজ নিয়ে যন্ত্রনায় বেডে কাতরাচ্ছেন শয্যাশায়ী অভিজিৎ সাহা। এরপর বর-কনের পরিবারের সিন্ধান্তে সনাতন ধর্মীয় রীতিনীতি মেনে বিয়ের লগ্ন ঠিক রাখতে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের অনুমতিতে হাসপাতালের ৩ তলার কিছু অংশ ফাঁকা করে সনাতন ধর্মীয় রীতিনীতি অনুযায়ী তাদের বিয়ে সম্পন্ন হয়।
দেখা যায়, হাসপাতালের ৩তলার ৪নম্বর বেডে হাত-পায়ে ব্যান্ডেজ পড়ে শুয়ে আছে বর অভিজিৎ সাহা আর বেডের পাশেই বসে আছে কনে। বেডের পাশেই বসে ও দাড়িয়ে বর-কনের পরিবারের সদস্যরা। সাধারণ বিয়ের মতো বরের বেডকে ফুল দিয়ে সাজানো হয়।
বরের বাবা অরবিন্দ সাহা জানান, ধর্মীয় রীতিনীতি ও বিয়ের লগ্ন অনুযায়ী বর ও কনেকে সাজানো হয়। এরপর পুরোহিত উভয় পরিবারের সদস্যদের উপস্থিতিতে বিয়ে পরানো হয়। যদিও দুর্ঘটনায় আহত ছেলের জন্য মন খারাপ। তারপরও বিয়েতে অনেক আনন্দ হয়েছে। নববধু অর্পিতা সাহা জানান, মানুষের জীবনে ভালমন্দ যাই হবে, সেটা ভগবানের পক্ষ থেকেই হবে। সেটা মেনে নিয়েছি। সবাই আমাদের নতুন সংসার ও আমার স্বামীর সুস্থতার জন্য আশির্বাদ করবেন।
হাসপাতালের মেডিকেল অ্যান্ড ইউনিট ডে ডা. সিরাজুল ইসলাম জানান, আমাদের হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার পর আমরা সঠিকভাবে চিকিৎসা দিয়ে আসছি। এরপর রোগীর পরিবার বিয়ের কথা বলায় উর্দ্বোতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করে বিয়ের জন্য রোগীর বেডের পাশে কিছু জায়গা খালি করে দেই এবং আমাদের সাধ্যমত তাদের বিয়ের জন্য ব্যবস্থা করে দেই। এমন ঘটনায় আমরাও অনেক আনন্দিত।
তবে সাধারণত! বাঙালী সনাতন ধর্মীয়দের বিয়ের অনুষ্ঠানে অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ আচার হল সাত পাকে বাঁধা। বিয়ের দিন ছাদনাতলায় বর এলে কনেকে পিঁড়িতে বসিয়ে নিয়ে আসা হয়। কনের মুখ পান পাতা দিয়ে ঢাকা থাকে। বরের চারপাশে কনেকে ঘোরানো হয় সাতবার। এক্ষেত্রে অভিজিৎ সাহা পিঁড়িতে নয়, হাসপাতাল বেডে শুয়েই সাতপাঁক উপভোগ করলেন।
মন্তব্য